Ajker Patrika

বাকৃবি ছাত্রলীগ: দেড় বছরেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি, পদপ্রত্যাশীদের ক্ষোভ

বাকৃবি প্রতিনিধি
আপডেট : ০৯ নভেম্বর ২০২৩, ১৮: ০৭
বাকৃবি ছাত্রলীগ: দেড় বছরেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি, পদপ্রত্যাশীদের ক্ষোভ

বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) শাখার আংশিক কমিটির দেড় বছর পার হলেও গঠন হয়নি পূর্ণাঙ্গ কমিটি। এই সময়ে হলগুলোতে কমিটি দেওয়া না হলেও অনুষদ ও একটি ইনস্টিটিউটে কমিটি হয়েছে। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেন সংগঠনের পদপ্রত্যাশী নেতা–কর্মীরা। 

সর্বশেষ গত বছরের ২৯ এপ্রিল কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় এবং সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বাকৃবি শাখা ছাত্রলীগের কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে খন্দকার তায়েফুর রহমানকে সভাপতি এবং মো. মেহেদী হাসানকে সাধারণ সম্পাদক করে ১৯ সদস্যের আংশিক কমিটির করা হয়। 
 
তবে মেয়াদ শেষ হওয়ার ছয় মাস পার হলেও শাখা ছাত্রলীগের সম্মেলন বা কোনো কমিটি দেওয়া হয়নি। ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী মেয়াদ শেষ হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে সম্মেলন না হলে কমিটি বিলুপ্ত করার কথা উল্লেখ রয়েছে। 

গঠনতন্ত্রে ধারা ৯ উপজেলা শাখা ও ধারা ১০ জেলা শাখা থেকে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো জেলা শাখা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো উপজেলা শাখার সমমর্যাদা পাবে। ধারা ১০ অনুযায়ী জেলা শাখার মেয়াদকাল হবে এক বছর। জেলা শাখাকে এক বছরের মধ্যে নির্বাচিত কর্মকর্তাদের হাতে দায়িত্বভার বুঝিয়ে দিতে হবে। বিশেষ পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের অনুমোদনক্রমে ৯০ দিন সময় বৃদ্ধি করা যাবে। এই সময়ের মধ্যে সম্মেলন না হলে জেলা কমিটি বিলুপ্ত বলে গণ্য হবে। 

এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি এবং হল কমিটির ব্যাপারে বর্তমান কমিটি যথাযথ প্রস্তুতি নিয়েছেন বলেই আমরা জানি। অনুষদের শাখা ছাত্রলীগ কমিটি গঠন অন্যায়ের কিছুই নয়। সাংগঠনিক কার্যক্রম বিস্তৃতির লক্ষ্যে যেকোনো সংগঠনেরই শাখা কমিটি গঠনের এখতিয়ার আছে।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীদের সংগঠনে সব সময় আমন্ত্রণ জানাই। শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে হল ভাগাভাগির বিষয়টি নিয়ে আমরা অবগত নই। সভাপতি ও সম্পাদকের অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষের কোনো ঘটনা আমাদের কাছে আসলে আমরা তাৎক্ষণিকভাবে সেটি সমাধানের চেষ্টা করব।’ 

ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, হলগুলো সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নিয়ন্ত্রণ অনুযায়ী বিভক্ত। সভাপতি নিয়ন্ত্রণ করেন বঙ্গবন্ধু, ঈশা খাঁ হল, ফজলুল হক হল, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হল এবং শহীদ নাজমুল আহসান হল। অন্যদিকে সাধারণ সম্পাদক নিয়ন্ত্রণ করেন শহীদ শামসুল হক হল, শহীদ জামাল হোসেন, আশরাফুল এবং শাহজালাল হল। 

ছাত্রী হলগুলোর মধ্যে রোজী জামাল হল, তাপসী রাবেয়া হল এবং সুলতানা রাজিয়া হল নিয়ন্ত্রণ করেন সভাপতি। এ ছাড়া বেগম রোকেয়া হল ও ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হল নিয়ন্ত্রণ করেন সাধারণ সম্পাদক। 

আরও জানা যায়, সভাপতি মতাদর্শের কর্মীরা সম্পাদকের হলগুলোতে এবং সম্পাদকের মতাদর্শের কর্মীরা সভাপতি নিয়ন্ত্রিত হলগুলোতে থাকতে পারে না। এর আগে গত বছরের ৩০ মে ছাত্রলীগের কমিটি গঠনের পরপরই সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের হলের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে প্রায় ৫০ জনেরও বেশি আহত হয়। গত ৫ নভেম্বর তাদের নিয়ন্ত্রিত দুটি হলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে আবার মারামারি হয়। এ ছাড়া কমিটিতে বিশেষ অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের প্রাধান্য দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হল শাখা ছাত্রলীগের এক কর্মী বলেন, ‘হল কমিটি দেওয়ার আগেই অনুষদের কমিটি গঠন করা হয়েছে। যেখানে এর আগে কখনো ছাত্রলীগের কমিটি গঠন করা হয়নি। আবার অনুষদের ছাত্র সমিতিতে যারা আছেন, তারা সবাই ছাত্রলীগ কর্মী। অনুষদের ছাত্র সমিতি থাকা সত্ত্বেও আলাদা করে ছাত্রলীগ কমিটি দেওয়ার কোনো প্রয়োজনীয়তা নেই। আবার অনেকেই মনে করেন বাস্তবিক অর্থে অনুষদের ছাত্রলীগের কমিটির কোনো ভূমিকা নেই। অনুষদের ছাত্র সমিতির পদবঞ্চিত নেতাদের খুশি রাখতে অনুষদের ছাত্রলীগের কমিটি দেওয়া হয়েছে।’ 

বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহজালাল হলের পদপ্রত্যাশী এক নেতা বলেন, ‘কমিটির বয়স দেড় বছর পেরিয়ে গেছে। এখনো পূর্ণাঙ্গ কমিটি পাইনি এটি সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক। পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনে বিলম্ব হলে বেশির ভাগ সময় দেখা যায়, পূর্ণাঙ্গ করার দুই এক মাসের মধ্যেই আবার নতুন সম্মেলনের ঘোষণা চলে আসে। পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে পদ–পরিচয় যারা পেল তারা এক দেড় মাসের মধ্যেই আবার সাবেক হয়ে যাবে। এতে করে কর্মীরা সাময়িক সময়ের জন্য একটি পরিচয় পেলেও নেতৃত্ব প্রয়োগ করার সময় বা সুযোগ পায় না, অধিকার বঞ্চিত হয়।’ 

এ বিষয়ে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের ছাত্রলীগের কর্মী এ জেড এম বর্নী বলেন, ‘ছাত্রলীগ দেশের সর্ববৃহৎ ছাত্র সংগঠন হওয়ায় এখানে নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা সব সময়ই বেশি। তাই যে পর্যায়ের কমিটিই হোক না কেন, কমিটি জট আমাদের রাজনীতির সঠিক ধারাকে ব্যাহত করে, কর্মীদের হতাশ করে এবং নেতৃত্বে সংকটের সৃষ্টি করে। তাই জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে কর্মীদের মনোবল চাঙা করতে অতি দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ও হল কমিটিগুলো সম্পন্ন করা উচিত।’ 

এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ মো. মেহেদী হাসান বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্দেশ দিলেই আমরা কমিটি ঘোষণা দিয়ে দেব। আমাদের সবকিছু গোছানো আছে। ছাত্র সমিতিতে ছাত্রলীগের প্যানেল দিই আমরা। ওটা ছাত্রলীগের কমিটি না। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে উত্তরবঙ্গের শিক্ষার্থী অনেক। সে কারণে রাজনীতিতেও উত্তরবঙ্গের ছেলে–মেয়ে বেশি অংশগ্রহণ করে, যারা রাজনীতির মাঠে থাকে আমরা তাদেরই মূল্যায়ন করি। কার বাসা কোথায় এগুলো দেখে আমরা কমিটি করি না। আমরা সংগঠনের ক্ষেত্রে সবাই ছাত্রলীগের কর্মী, আমাদের মাঝে কোনো বিভাজন নেই।’ 

সভাপতি খন্দকার তায়েফুর রহমান বলেন, ‘রাজনীতিতে প্রতিযোগিতা থাকবেই। তবে আমরা কেউ কারও প্রতিদ্বন্দ্বী নই। এখনো পূর্ণাঙ্গ কমিটি দেওয়া হয় নাই, সেখানে রংপুর ভিত্তিক রাজনীতির প্রসঙ্গটা আসার কথা না। আমার পদপ্রাপ্ত কর্মীদের বেশির ভাগই ময়মনসিংহ অঞ্চলের। আমরা অনুষদের শাখা ছাত্রলীগ কমিটি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের অনুমতি নিয়েই করেছি। নির্বাচনের আগে অন্য রাজনৈতিক দলের অনুসারী ছাত্ররা ওই সব দলের অনুসারী শিক্ষকদের সঙ্গে মিলে যাতে কোনো বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করতে না পারে, সে কারণেই আলাদা করে অনুষদের কমিটি দেওয়া হয়েছে। মূলত সাংগঠনিক অবস্থা শক্তিশালী করার জন্যই এই কাজটি করা হয়েছে।’ 

পূর্ণাঙ্গ কমিটি না দেওয়া বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যেই প্রার্থীদের জীবনবৃত্তান্ত জমা নিয়েছি। মূলত রাজনীতির প্রতি মন থেকে আগ্রহী এবং যোগ্য কর্মী বাছাই করার জন্যই এ বিষয়ে একটু সময় নেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়েও কেন্দ্রীয় কমিটিকে জানানো হয়েছে। তবে আমাদের কাছে কমিটি দেওয়ার মতো যথেষ্ট প্রস্তুতি আছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাজবাড়ীতে চাঁদাবাজির সময় গণপিটুনিতে সম্রাট বাহিনীর প্রধান নিহত

রাজবাড়ী প্রতি‌নি‌ধি
সম্রাট বাহিনীর প্রধান অমৃত মন্ডল ওর‌ফে সম্রাট। ছবি: সংগৃহীত
সম্রাট বাহিনীর প্রধান অমৃত মন্ডল ওর‌ফে সম্রাট। ছবি: সংগৃহীত

রাজবাড়ীর পাংশায় চাঁদাবা‌জি করার সময় জনগ‌ণের পিটুনিতে সম্রাট বাহিনীর প্রধান অমৃত মন্ডল ওর‌ফে সম্রাট নিহত হ‌য়েছেন। এ সময় দু‌টি অস্ত্রসহ তাঁর সহ‌যো‌গী সে‌লিম শেখ‌কে আটক ক‌রে পু‌লি‌শে দি‌য়েছে জনতা। বুধবার দিবাগত রাত পৌ‌নে ১১টার দি‌কে উপ‌জেলার ক‌লিমহর ইউনিয়‌নের হো‌সেনডাঙ্গা গ্রা‌মে এই ঘটনা ঘ‌টে। নিহত সম্রাট উপ‌জেলার ক‌লিমহর ইউনিয়‌নের হো‌সেনডাঙ্গার অক্ষয় মন্ড‌লের ছে‌লে। আটক সে‌লিম একই ইউনিয়‌নের বসাকু‌ষ্টিয়া গ্রা‌মের ইসলাম শে‌খের ছে‌লে।

সম্রা‌টের সহ‌যো‌গী‌ সেলিমের কাছ থে‌কে এক‌টি পিস্তল ও এক‌টি ওয়ান শুটারগান জব্দ করে‌ছে পুলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
সম্রা‌টের সহ‌যো‌গী‌ সেলিমের কাছ থে‌কে এক‌টি পিস্তল ও এক‌টি ওয়ান শুটারগান জব্দ করে‌ছে পুলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

স্থানীয় বাসিন্দাদের বরা‌ত দিয়ে পাংশা ম‌ডেল থানার ওসি শেখ মঈনুল ইসলাম জানান, সম্রাট নিজের না‌মেই এক‌টি বা‌হিনী গড়ে তু‌লে মানুষ‌কে ভয়ভী‌তি দে‌খি‌য়ে চাঁদাবা‌জি কর‌তেন। দীর্ঘদিন ভার‌তে পা‌লি‌য়ে থাকার পর সম্প্রতি এলাকায়‌ ফি‌রে এসে এক‌টি বাড়িতে চাঁদা দা‌বি ক‌রেন। কিন্তু তারা চাঁদার টাকা দি‌তে অস্বীকৃতি জানা‌য়। গত রা‌তে সম্রাট তাঁর বা‌হিনীর সদস‌্যদের নি‌য়ে ওই বাড়িতে চাঁদার টাকা আন‌তে যান। এ সময় ওই বাড়ির লোকজন ডাকাত ডাকাত ব‌লে চিৎকার দি‌লে আশপা‌শের লোকজন এসে ধ‌রে তাঁকে গণ‌পিটু‌নি দেয়। এতে ঘটনাস্থ‌লেই তাঁর মৃত‌্যু হয়। এ সময় তাঁর অন‌্য সহ‌যো‌গীরা পালি‌য়ে গে‌লেও অস্ত্রসহ ধরা প‌ড়েন সে‌লিম না‌মের একজন।

ওসি শেখ মঈনুল ইসলাম আরও জানান, সম্রা‌টের সহ‌যো‌গী‌ সে‌লিম‌ের কাছ থে‌কে এক‌টি পিস্তল ও এক‌টি ওয়ান শুটারগান জব্দ করা হয়ে‌ছে। নিহত সম্রা‌টের না‌মে হত‌্যা, চাঁদাবা‌জিসহ একা‌ধিক মামলা র‌য়ে‌ছে। সম্রা‌টের মর‌দেহ ময়ন‌াতদন্তের জন‌্য ম‌র্গে পাঠা‌নোর প্রস্তু‌তি চল‌ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‎টঙ্গীতে যৌথ বাহিনীর অভিযানে জুলাই যোদ্ধা তাহরিমা গ্রেপ্তার

টঙ্গী (গাজীপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ৪৬
টঙ্গীর মরকুন পূর্বপাড়া চৌরঙ্গীর পাড় এলাকায় নিজ বাসা থেকে গ্রেপ্তার তাহরিমা জান্নাত সুরভী। ছবি: আজকের পত্রিকা
টঙ্গীর মরকুন পূর্বপাড়া চৌরঙ্গীর পাড় এলাকায় নিজ বাসা থেকে গ্রেপ্তার তাহরিমা জান্নাত সুরভী। ছবি: আজকের পত্রিকা

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরকার, সরকারের একাধিক উপদেষ্টা ও সেনাবাহিনীর প্রধানকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করায় মামলা দায়েরের পর গ্রেপ্তার করা হয়েছে জুলাই যোদ্ধা তাহরিমা জান্নাত সুরভীকে (২৫)। ‎বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) রাত ১টার দিকে টঙ্গীর মরকুন পূর্বপাড়া চৌরঙ্গীর পাড় এলাকায় তাঁর নিজ বাসায় অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করে যৌথ বাহিনী। পরে তাঁকে টঙ্গী পূর্ব থানায় হস্তান্তর করা হয়।

‎জানা যায়, গ্রেপ্তার তাহরিমা জান্নাত সুরভী দীর্ঘদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বর্তমান সরকার, সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ উপদেষ্টা এবং সেনাবাহিনীর প্রধানকে নিয়ে অশালীন, কুরুচিপূর্ণ ও রাষ্ট্রবিরোধী মন্তব্য করে আসছিলেন। তাঁর এসব বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়লে জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।

‎আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি সূত্র জানায়, তাহরিমা জান্নাত সুরভীর বিরুদ্ধে আগে থেকেই ওয়ারেন্ট জারি ছিল। একই সঙ্গে তাঁর অনলাইন কর্মকাণ্ড দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও রাষ্ট্রীয় স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি হতে পারে, এমন আশঙ্কায় গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার রাতে যৌথ বাহিনী অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করে।‎

‎টঙ্গী পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মেহেদী হাসান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘গ্রেপ্তার তাহরিমা জান্নাত সুরভীর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে গাজীপুরের কালিয়াকৈর থানায় একটি চাঁদাবাজির মামলা রয়েছে। ওই মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার সকালে কালিয়াকৈর থানা-পুলিশের কাছে তাহরিমাকে হস্তান্তর করা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পঞ্চগড়ে চার দিন ধরে ঘন কুয়াশা ও কনকনে শীত

পঞ্চগড় প্রতিনিধি 
আপডেট : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ০৪
ঘন কুয়াশার কারণে ভোরে হেডলাইট জ্বালিয়ে বাস চলছে। পঞ্চগড়ের তেলিপাড়া এলাকা থেকে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঘন কুয়াশার কারণে ভোরে হেডলাইট জ্বালিয়ে বাস চলছে। পঞ্চগড়ের তেলিপাড়া এলাকা থেকে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

টানা চার দিন ধরে ঘন কুয়াশা ও কনকনে শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে উত্তরের জেলা পঞ্চগড়। ভোর থেকেই জেলার সড়ক ও জনপথ ঘন কুয়াশায় ঢেকে থাকছে। কনকনে ঠান্ডা আর কুয়াশার কারণে ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। এর প্রভাব পড়েছে কর্মজীবী মানুষ থেকে শুরু করে হাসপাতালগুলোতে।

বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) সকাল ৬টায় তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ১০০ শতাংশ। ঘন কুয়াশার কারণে ভোর থেকেই যানবাহনগুলোকে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে দেখা গেছে।

ঘন কুয়াশা ও তীব্র শীতে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষেরা। ভোরে অনেকেই কাজে যেতে পারছেন না। শীত নিবারণের জন্য বিভিন্ন এলাকায় মানুষকে খড়কুটো জ্বালিয়ে আগুন পোহাতে দেখা গেছে।

নাইট কোচের চালকেরা জানান, ঘন কুয়াশার কারণে রাস্তায় কিছুই দেখা যায় না। রফিকুল আলী নামের এক চালক বলেন, ‘এত কুয়াশায় সাবধানে গাড়ি চালিয়ে আসতে হয়েছে। শীত এলেই আমাদের এই সমস্যায় পড়তে হয়। কুয়াশায় সামনে কিছুই বোঝা যায় না।’

আরেকজন চালক জানান, কুয়াশার কারণে গতি কমিয়ে গাড়ি চালাতে হয়। একটু অসতর্ক হলেই দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে।

শীতের প্রভাবে জেলার হাসপাতালগুলোতে বেড়েছে রোগীর ভিড়। সর্দি-কাশি, জ্বর, শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। সদর হাসপাতালের একজন চিকিৎসক জানান, তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তিরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। তিনি এ সময় গরম কাপড় ব্যবহার, উষ্ণ খাবার গ্রহণ এবং প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার পরামর্শ দেন।

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় জানান, ১১ থেকে ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত তেঁতুলিয়ায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে গেছে। গত শনিবার তাপমাত্রা কিছুটা বাড়লেও পরবর্তী দিনগুলোতে তা আবার কমে গেছে। বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।

জেলা প্রশাসক কাজী সাইমুজ্জামান জানান, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে প্রায় ১৫ হাজার শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। আরও শীতবস্ত্রের চাহিদা পাঠানো হয়েছে। প্রাপ্ত শীতবস্ত্রগুলো প্রতিটি উপজেলায় সমানভাবে ভাগ করে শীতার্ত মানুষের মধ্যে বিতরণ করা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পিরোজপুর-২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছেন সাবেক ভিপি মাহমুদ হোসেন

নেছারাবাদ (পিরোজপুর) প্রতিনিধি 
মাহমুদ হোসেন। ছবি: সংগৃহীত
মাহমুদ হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

পিরোজপুর-২ (কাউখালী, ভান্ডারিয়া ও নেছারাবাদ) আসনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) থেকে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন সাবেক ভিপি মাহমুদ হোসেন। মোবাইলে আলাপকালে মাহমুদ হোসেন নিজেই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মাহমুদ হোসেন ভান্ডারিয়া সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি এবং প্রখ্যাত সাংবাদিক তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়ার ভাতিজা। তিনি দীর্ঘদিন ধরে পিরোজপুর-২ আসন থেকে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। তাঁর নেতৃত্বে এই আসনে বিএনপির একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক বলয় গড়ে উঠেছে বলে স্থানীয়ভাবে জানা যায়।

উল্লেখ্য, পিরোজপুর-২ আসনে বিএনপির চূড়ান্ত মনোনয়ন পেয়েছেন আহমদ সোহেল মঞ্জুর সুমন। গত মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) মনোনয়ন চূড়ান্ত হওয়ার পরপরই মাহমুদ হোসেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

এ বিষয়ে মাহমুদ হোসেন বলেন, ‘আমি ২০২৩ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপিতে যোগ দিলেও ছাত্রজীবন থেকেই বিএনপির আদর্শে বিশ্বাসী। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের চেতনাকে ধারণ করে সব সময় দলের তৃণমূল নেতা-কর্মীদের পাশে থাকার চেষ্টা করেছি।’

মাহমুদ হোসেন আরও বলেন, ‘পিরোজপুর-২ আসনের সাধারণ মানুষ আমাকে এই আসনে নেতৃত্বে দেখতে চান। জনগণের সেই প্রত্যাশাকে প্রাধান্য দিয়েই স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বিএনপি একটি গণমানুষের দল। সেই গণমানুষের চাওয়াকেই গুরুত্ব দিয়ে সামনে এগোতে চাই।’

মাহমুদ হোসেন জানান, শিগগির তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করবেন এবং আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু করবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত