Ajker Patrika

প্রথম ও শেষবারের মতো বাবাকে সামনে দেখার অপেক্ষায় শিশু রায়হান

মাদারীপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ১৩ জুন ২০২৩, ১৬: ৪৯
প্রথম ও শেষবারের মতো বাবাকে সামনে দেখার অপেক্ষায় শিশু রায়হান

স্ত্রীর গর্ভে দুই মাসের সন্তান রেখে সৌদি আরবে পাড়ি জমিয়েছিলেন মাদারীপুরের মনির আকন (৪৫)। সেই গর্ভের সন্তানের বয়স এখন ৫ বছর, নাম রাখা হয় রায়হান। এত বছরে বাবা-ছেলে একে অপরকে দেখেছে শুধু মোবাইল ফোনে ভিডিও কলের মাধ্যমে। 

এরই মধ্যে গত শুক্রবার রাতে সৌদি আরবে মারা গেছেন মনির আকন। রাস্তায় পড়ে ছিল তাঁর লাশ। সেই ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে, পরিবার জানতে পারে সেই খবর। সড়কেই হৃদ্‌যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা পরিবারের। 

পরিবারের দাবি, সরকারিভাবে মনিরের মরদেহ দেশে আনার ব্যবস্থা করা হলে শিশু রায়হানসহ পরিবার শেষবারের মতো একনজর দেখতে পাবে। 

মনির আকন মাদারীপুর শহরের ৪ নম্বর শকুনি এলাকার মৃত সেকেন আকনের বড় ছেলে। ২০১৭ সালের জুন মাসে সৌদি আরবে পাড়ি জমান তিনি। সৌদি আরবের রিয়াদ শহরের সেফায় তাঁর আবাসস্থলের কাছেই রাস্তার ওপর তাঁর মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন সৌদি স্থানীয়রা। পরে তারাই পুলিশকে খবর দিলে, পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায়। মনির আকনের মরদেহ নিশ্চিত করেন সেখানে বসবাসরত সম্পর্কে এক খালাতো ভাই ইমন। 

আজ মঙ্গলবার সকালে নিহতের বাড়িতে গেলে দেখা যায়, বৃদ্ধা মা, স্ত্রী-সন্তান ও ছোট ভাই-বোন কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। কয়েক দিন ধরে নাওয়া-খাওয়া ছেড়েছেন তাঁরা। এখন তাঁরা শুধু মরদেহ দেশে আসার অপেক্ষায়। খবর পেয়ে আত্মীয়স্বজন ও পাড়াপ্রতিবেশীরাও ভিড় করেছেন বাড়িতে। 

পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় কিছু হৃদয়বিদারক তথ্য। মনির আকন ২০১৭ সালের জুন মাসে দুই মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে রেখে পরিবারে সচ্ছলতার আশায় ধার-দেনা করে সৌদি আরবে যান। কিন্তু সেখানে গিয়ে তেমন কোনো কাজের সুযোগ না পেয়ে প্রচণ্ড কষ্টে কেটেছে এতগুলো বছর। উল্টো বাংলাদেশ থেকে তাঁর পরিবার প্রায়ই তাঁর খরচের জন্য টাকা পাঠাতেন। আকামা করার জন্য দেশ থেকে ধার-দেনা করে টাকা পাঠালেও, ওই দেশের প্রতিষ্ঠানের মালিক তা করে দেননি। তাই দেশেও আসতে পারেননি মনির। 

এদিকে ছেলে রায়হানের বয়স সারে পাঁচ বছর হলেও সামনে থেকে বাবা-ছেলের দেখা হয়নি। বিয়ের মাত্র ৪ মাসের মাথায় স্ত্রীকে রেখে চলে যেতে হয়েছে মনিরকে। এমনকি তিনি সৌদি আরব যাওয়ার পর বাবা ও ভাই মারা গেলেও আসতে পারেননি দেশে। এ নিয়ে মনে অনেক কষ্ট থাকলেও, প্রতিনিয়ত ভাগ্য পরিবর্তনের চেষ্টায় ছিলেন। 

মনিরের পরিবার জানায়, শুক্রবার সন্ধ্যায় ছোট বোন রোমানার সঙ্গে শেষ কথা হয় মনিরের। এ সময় মনির বোনকে জানান তাঁর বুকে অনেক ব্যথা হচ্ছে। তিনি ওষুধ কিনতে ফার্মেসিতে যাচ্ছেন। এরপর আর কথা হয়নি। পরে সৌদি আরবের রিয়াদ শহরের সেফায়, যেখানে থাকতেন এর কাছেই রাস্তার ওপর মনিরের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন সৌদি স্থানীয়রা। পরে তাঁরা সেখানকার পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায়। পরে রাস্তায় পড়ে থাকা ছবি শুক্রবার রাত থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। মনিরের লাশের ছবি দেখে পরিবারের লোকজন সৌদি আরবে খোঁজ নেন। সেখানে তাঁর সম্পর্কে এক খালাতো ভাই ইমনের কাছ থেকে মনিরের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হয় পরিবার। এরপর থেকেই বাড়িতে চলছে মাতম। 

সৌদিপ্রবাসী মাদারীপুরের মনির আকন। ছবি: সংগৃহীতমনিরের বৃদ্ধা মা জাহানারা বেগম কাঁদো কাঁদো গলায় আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এই শোক আমি কীভাবে সইব? আল্লাহ আমাকে নিয়ে যেতে পারতেন, কেন আমার ছেলেকে নিয়ে গেল! এত মৃত্যু আমি সইতে পারতেছি না। গত দুই বছরে মনিরের বাবা মারা গেল, শরীয়তপুরে কারেন্টের কাজ করতে গিয়ে আমার মেজো ছেলেও মারা গেল। এখন আমার বড় ছেলেও মারা গেল। ও অনেক দেনা করে সৌদি আরব গেছিল। সেখানে থেকে আমাদেরকে সে কোনো টাকাও পাঠাতে পারে নাই। উল্টা আমরাই তাঁর জন্য টাকা পাঠাইছি। আকামা করার জন্যও ধার করে টাকা পাঠাইছিলাম, সেই আকামাও করে দেয়নি মালিক।’ 

জাহানারা বেগম আরও বলেন, ‘ওর হার্টে সমস্যা ছিল, শ্বাসকষ্টও ছিল। হয়তো ওষুধ কিনতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে রাস্তায় বসেই মারা গেছে। এখন আমাদের একটাই দাবি, ওর লাশটা যেন সরকার দেশে এনে দেওয়ার ব্যবস্থা করে দেয়।’ 

মনিরের স্ত্রী মিনি বাকরুদ্ধ প্রায়। তাঁর কাছে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিয়ের চার মাস পর উনি (মনির) সৌদি আরব চলে গেছেন। তখন রায়হান আমার পেটে, দুই মাসের গর্ভবতী ছিলাম আমি। সেই ছেলে জন্ম হলো, দেখতে দেখতে সারে ৫ বছর হয়ে গেল অথচ আমাদের এমন ভাগ্য যে, বাবা-ছেলের মুখোমুখি দেখা হলো না। এর চেয়ে কষ্ট আর কী হতে পারে! তাই আমার ছেলের মুখের দিকে চেয়ে হলেও মনিরের লাশটা যদি দেশে আনা যেত।’ 

শিশু রায়হান বাবা মারা যাওয়ার বিষয়টি তেমনভাবে না বুঝলেও, এতটুকু বুঝতে পারছে যে সে আর কোনো দিন তার বাবাকে দেখতে পাবে না। রায়হানের কাছে জানতে চাইলে সে বলে, ‘বাবাকে দেখব।’ 

সৌদিপ্রবাসী ও মনিরের প্রতিবেশী মো. মিজানুর রহমান মোবাইল ফোনে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সৌদি আরবে রাস্তায় মনিরের লাশ পড়ে থাকার ছবি ফেসবুকে দেখি। এরপর খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারি, ও মারা গেছে। এখান থেকে লাশ দেশে নেওয়ার চেষ্টা করছি। ৩ লাখ টাকা প্রয়োজন। আমরা ৫০ হাজার দেব। কিন্তু বাকি আড়াই লাখ টাকা প্রয়োজন। তাই সকলে মিলে যদি একটু সহযোগিতা করতেন, তাহলে হয়তো মনিরের লাশ দেশে নেওয়ার ব্যবস্থা করা যেত।’ 

এ বিষয়ে মাদারীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাইনউদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কেউ যদি বৈধভাবে বিদেশ যায়, তাহলে অ্যাম্বাসি থেকেই লাশ পাঠানোর ব্যবস্থা করে থাকে। আর যদি অবৈধভাবে যায়, তাহলে অ্যাম্বাসি থেকে এ দেশের অ্যাম্বাসিতে যোগাযোগ করে থাকে। এখন পর্যন্ত এ ধরনের কোনো খবর পাইনি বা কেউ আমাদের এখনো এই খবর জানায়নি। আবেদন পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চৌদ্দগ্রামে ঘন কুয়াশায় দুই লরির সংঘর্ষ, চালক ও সহযোগী নিহত

চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি 
দুমড়েমুচড়ে যাওয়া একটি লরি। ছবি: আজকের পত্রিকা
দুমড়েমুচড়ে যাওয়া একটি লরি। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে আজ ভোরে ঘন কুয়াশার কারণে দুই লরির সংঘর্ষে চালক ও তাঁর সহযোগী (হেলপার) নিহত হয়েছেন। নিহত চালক আব্দুল জব্বার (৩১) নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ থানার চরকমলা গ্রামের আবুল বাশারের ছেলে এবং হেলপার শাকিল (২২) নোয়াখালীর চরজব্বার থানার চর মহিউদ্দিন গ্রামের আলাউদ্দিনের ছেলে।

চৌদ্দগ্রাম মিয়া বাজার হাইওয়ে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ফারুক হোসেন জানান, ঘন কুয়াশার কারণে চট্টগ্রামমুখী একটি লরিকে পেছনে থাকা আরেকটি লরি ধাক্কা দেয়। এতে পেছনের লরির সামনের অংশ দুমড়েমুচড়ে গিয়ে মহাসড়কের পাশে পড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই চালক আব্দুল জব্বার মারা যান। গুরুতর আহত হেলপার শাকিলকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁরও মৃত্যু হয়।

চৌদ্দগ্রাম স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক শাহাদাত হোসেন জানান, আহত হেলপারকে আনা হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

এসআই ফারুক হোসেন জানান, লাশ উদ্ধার করে থানার ফাঁড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। স্বজনদের খবর দেওয়া হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে লাশ হস্তান্তর করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঘন কুয়াশায় শাহজালাল বিমানবন্দরে ফ্লাইট বিলম্ব

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ০৯
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ঘন কুয়াশাজনিত কারণে আজ রোববার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আগমন ও বহির্গমনকারী একাধিক ফ্লাইট নির্ধারিত সময়ের তুলনায় বিলম্বে অবতরণ ও উড্ডয়ন করেছে। তবে এদিন কোনো ফ্লাইট ডাইভার্ট (অন্য স্থানে অবতরণ) করা হয়নি।

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালকের মুখপাত্র মো. মাসুদুল হাসান মাসুদ বলেন, আজ ভোর থেকে সকাল পর্যন্ত রানওয়ের দৃশ্যমান অবস্থা কম থাকায় ফ্লাইট অপারেশনে সাময়িক বিঘ্ন ঘটে। এ কারণে কয়েকটি আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ রুটের ফ্লাইট সময়সূচি অনুযায়ী পরিচালনা করা সম্ভব হয়নি।

এদিকে সকাল গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে আবহাওয়া পরিস্থিতির উন্নতি হয়। বর্তমানে দৃশ্যমান অবস্থা স্বাভাবিক থাকায় ফ্লাইট পরিচালনা ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে।

বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নিরাপত্তা বিবেচনায় সব ফ্লাইট পরিচালনা করা হচ্ছে এবং পরিস্থিতি সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রয়েছে।

বিলম্বিত ফ্লাইটের যাত্রীদের জন্য সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইনগুলো প্রয়োজন অনুযায়ী সহায়তা প্রদান করছে বলে জানানো হয়েছে। যাত্রীদের অনাকাঙ্ক্ষিত ভোগান্তির জন্য এয়ারলাইন কর্তৃপক্ষ দুঃখ প্রকাশ করেছে এবং ভ্রমণের আগে নিজ নিজ ফ্লাইটের সর্বশেষ অবস্থা জেনে নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চাঁদা না দেওয়ায় হাতিয়ায় ব্যবসায়ীর ওপর হামলার অভিযোগ

­হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ৩৭
আহত ব্যবসায়ী মেহরাজ উদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা
আহত ব্যবসায়ী মেহরাজ উদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা

নোয়াখালীর হাতিয়ায় চাঁদা না দেওয়ায় মেহরাজ উদ্দিন নামের এক ব্যবসায়ীর ওপর বর্বরোচিত হামলার ঘটনা ঘটেছে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় স্থানান্তর করেন।

গতকাল শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতের এই ঘটনায় হাতিয়া থানায় চাঁদাবাজি ও হত্যাচেষ্টা ধারায় একটি মামলা করা হয়েছে। মামলায় স্থানীয় ইউনুছ মাঝিসহ চারজনের নাম উল্লেখ করে আসামি করা হয়েছে।

মামলার সূত্রে জানা যায়, ১৮ ডিসেম্বর অভিযুক্ত ইউনুছ মাঝি ও তাঁর সহযোগীরা মেহরাজ উদ্দিনের বাড়িতে গিয়ে ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না দিলে জানমালের ক্ষয়ক্ষতির হুমকি দেওয়া হয়। এরপর ২৪ ডিসেম্বর সকালে মেহরাজ উদ্দিন তাঁর চাল ভাঙার মেশিনে কাজ করার সময় সন্ত্রাসীরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাঁর ওপর অতর্কিত হামলা চালায়।

হামলার সময় সন্ত্রাসীরা ধারালো কিরিচ দিয়ে মেহরাজ উদ্দিনের মাথায় এলোপাতাড়ি কোপ দেয়। এতে মাথার হাড় ও খুলি মারাত্মকভাবে জখম হয়। এ ছাড়া লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে তাঁর শরীরের বিভিন্ন অংশ থেঁতলে দেওয়া হয়।

পরে স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসক জরুরি ভিত্তিতে ঢাকায় নেওয়ার পরামর্শ দেন।

হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক এ এস এম আরিফ বলেন, মেহরাজ উদ্দিনের মাথার আঘাত খুবই গুরুতর। তাঁর অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

মেহরাজ উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, কয়েক দিন ধরে ইউনুছ মাঝি, তাঁর ছেলে হাসান ও রাজু এবং পাশের এলাকার আয়াত হোসেন তাঁর কাছে চাঁদা দাবি করে আসছিলেন। টাকা না দিলে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দেওয়া হয়। এর আগেও তাঁর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হয়েছিল। এতে তিনি ও তাঁর পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তিনি দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ এবং পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানান।

এ বিষয়ে হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল আলম বলেন, মেহরাজ উদ্দিনের অভিযোগ গ্রহণ করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। এলাকায় শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে পুলিশ কঠোর অবস্থানে রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাজধানীতে ট্রেনের ধাক্কায় পোশাকশ্রমিকের মৃত্যু

ঢামেক প্রতিবেদক
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ৫১
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

রাজধানীর উত্তরার হাউস বিল্ডিং এলাকায় ট্রেনের ধাক্কায় নাজমুল ইসলাম (৩৫) নামে এক পোশাকশ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শনিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে মুমূর্ষু অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

নাজমুল ইসলামকে হাসপাতালে নিয়ে আসা প্রতিবেশী ও ভাতিজা সাকিব আলম জানান, তাঁদের গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার ওলিপুর গ্রামে। তাঁর বাবার নাম নুরনবী। বর্তমানে গাজীপুরের টঙ্গীতে থাকতেন নাজমুল। তশরিফা ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড নামে একটি পোশাক কারখানায় কোয়ালিটি সুপারভাইজার ছিলেন তিনি।

সাকিব আলম আরও জানান, রাতে গ্রাম থেকে তাঁকে ফোনে জানানো হয়, নাজমুল উত্তরার হাউস বিল্ডিংয়ের জয়নাল মার্কেট নতুন গেট এলাকায় ট্রেনের ধাক্কায় আহত হয়েছেন। পরে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে গিয়ে তাঁকে দেখতে পান। আহত অবস্থায় নাজমুলকে পথচারীরা সেখানে নিয়ে এসেছিল। উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে এলে সেখানে মৃত্যু হয় তাঁর।

পথচারীদের বরাতে সাকিব আরও বলেন, হাউস বিল্ডিং এলাকার জয়নাল মার্কেটে নতুন গেট এলাকার রেললাইনে দুই দিক থেকে দুটি ট্রেন আসায় ট্রেনের সঙ্গে ধাক্কা লেগে নাজমুল ইসলাম গুরুতর আহত হয়েছিলেন। তবে তিনি সেখান দিয়ে কোথায় যাচ্ছিলেন, কেউ তা বলতে পারেননি।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. ফারুক মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রাখা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত