Ajker Patrika

মধ্যরাতে ফোন করে জানানো হয় স্বামীকে মেরে ফেলা হয়েছে: সংবাদ সম্মেলনে গৃহবধূ

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
আপডেট : ০৭ নভেম্বর ২০২৩, ২২: ১৫
মধ্যরাতে ফোন করে জানানো হয় স্বামীকে মেরে ফেলা হয়েছে: সংবাদ সম্মেলনে গৃহবধূ

‘রাত আড়াইটায় হঠাৎ মোবাইলে ফোন করে এক ব্যক্তি বলেন, আপনার স্বামী রিপন মেম্বারকে হত্যা করা হয়েছে! রাস্তার পাশে পড়ে আছে, এসে নিয়ে যান। তখন গিয়ে দেখি রিপন রক্তাক্ত অবস্থায় কাতরাচ্ছে। সেখান থেকে তাকে সদর হাসপাতালে নিয়েও শেষ রক্ষা হয়নি, সকালেই মারা যায় সে।’ 

দুই শিশু সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ কথাগুলো বলছিলেন নিহত হাবিবুর রহমান রিপনের স্ত্রী তানিয়া খাতুন। 

নিহত হাবিবুর রহমান রিপন ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার আবাইপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক ও ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ছিলেন। তাঁর বাড়ি উপজেলার মীন গ্রামে। তাঁর স্ত্রী তানিয়া খাতুন উপজেলার মীন গ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। 

আজ মঙ্গলবার দুপুরে জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নজরুল ইসলাম দুলালের বিরুদ্ধে এই হত্যাকাণ্ডের নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগ তুলে ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে শৈলকুপা উপজেলা আওয়ামী লীগ। সেখানে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নিহত হাবিবুর রহমান রিপনের স্ত্রী তানিয়া খাতুন। 

এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিয়ার রহমান, সাধারণ সম্পাদক হাকিম আহমেদ, নিহতের বাবা ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল কালাম আজাদসহ অন্যরা। 

হাবিবুর রহমান রিপনতিন মাসের শিশু সন্তানকে কোলে নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তানিয়া খাতুন বলেন, ‘আমাদের পরিবার স্বাধীনতার আগে থেকেই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। বর্তমানে আমার শ্বশুর আবুল কালাম আজাদ আবাইপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি। ছয় ভাইয়ের মধ্যে আমার স্বামী আমার শ্বশুরের সঙ্গে বাড়ির জমি দেখাশোনা করতেন।’ 

তিনি বলেন, ‘প্রকৃত আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের ঘায়েল করতে কিছু বিএনপি ও নব্য আওয়ামী লীগ নেতারা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছেন। শুনেছি একসময় বিএনপি করলেও বর্তমানে জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি পদ পেয়েছেন বিশ্বাস বিল্ডার্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নজরুল ইসলাম দুলাল। পদ পাওয়ার পর অন্যদের সঙ্গে নিয়ে উপজেলায় তাঁর অবস্থান শক্ত করতে প্রকৃত আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হন। আমার স্বামী হাবিবুর রহমান রিপনকে তাঁরা পিটিয়ে হত্যা করেন।’ 
 
তানিয়া খাতুন আরও বলেন, ‘মৃত্যুর দুই থেকে তিন মাস আগে তাঁরা বিভিন্ন সময় রিপনকে হত্যার হুমকিও দিয়েছেন। মৃত্যুর কিছুদিন আগে একটি দাওয়াত খেয়ে বাড়ি ফেরার পথে মীন গ্রাম বাজারে তাঁকে আক্রমণও করেন তারা। তখন প্রাণে বেঁচে গেলেও এবার বাঁচতে পারেনি আমার স্বামী। মামলার পর কিছু আসামি জামিন পেয়ে ঢাকা নিউমার্কেট এলাকায় নজরুল ইসলাম দুলালের বাসায় বৈঠক করেন। আমরা জানতে পারি, পরিকল্পিতভাবেই তাঁকে হত্যার নির্দেশে ছিল নজরুল ইসলাম দুলাল ও তাঁর ভাই আবাইপুর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান হেলাল উদ্দিন বিশ্বাস। এই পরিকল্পনা তাঁদের বাড়িতেই হয়েছিল।’ 

লিখিত বক্তব্যে নিহতের স্ত্রী বলেন, ‘ঘটনার পর সুজন নামের এক ব্যক্তি ফোন করে বলে, রিপন মেম্বারকে মেরে ফেলা হয়েছে, এসে নিয়ে যান। জামিন পাওয়া আসামিরা এখন আমাদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। এ বিষয়ে থানায় একটি অভিযোগও দেওয়া হয়েছে।’ 

রিপনের স্ত্রী সংবাদ সম্মেলনে তাঁর স্বামী হত্যার নির্দেশদাতাসহ অন্যদের সঠিক বিচার দাবি করে বলেন, ‘৩ মাসের শিশু তাবিব আহনাফ ও ৫ বছরের শিশু আবিদ আহনাফ, তারা এখনো জানে না তাদের বাবা আর কখনো ফিরে আসবে না। এখন বড় ছেলে বলে বাবা কোথায় গেছে মা? কিন্তু তার প্রশ্নের কোনো উত্তর দিতে পারি না। বর্তমানে আমার দুই শিশু সন্তান খুবই অসহায়ের মতো দিন যাপন করছে।’ 

অভিযোগের বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নজরুল ইসলাম দুলাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘রিপন ঘটনাস্থলে মরেছিল নাকি হাসপাতালে আনার পথে যারা সঙ্গে ছিল তারা মেরেছে, এটা নিয়ে সন্দেহ আছে আমার। সামনে নির্বাচন, আমি মনোনয়নপ্রত্যাশী, এখন এমন নানা ষড়যন্ত্র হতেই থাকবে। তবে রিপন হত্যায় জড়িতরা শাস্তি পাক এটা আমি নিজেও চাই।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘এলাকার মানুষ বিভিন্ন সময় আমার কাছে আসে, আমি সহযোগিতা করি। তারা জামিনে মুক্ত হয়ে অফিসে এসেছে এটা দোষের কিছু না। তারা তো দোষী প্রমাণিত হয়নি।’ 

এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিয়ার রহমান ও সাধারণ সম্পাদক হাকিম আহমেদ জানান, মূলত এটি তাঁর পরিবারের সংবাদ সম্মেলন। এটাকে সমর্থন জানিয়েছে উপজেলা আওয়ামী লীগ। 

শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ঠাকুরদাস মণ্ডল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মামলার ৫ জন ব্যতীত সকল আসামি জামিনে আছে। তদন্ত শেষে দ্রুত প্রতিবেদন দাখিলে আমাদের চেষ্টা অব্যাহত আছে।’ 

উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলছিল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ঝিনাইদহ-১ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল হাই সমর্থক হাবিবুর রহমান রিপন এবং জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও ঝিনাইদহ-১ আসন থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী নজরুল ইসলাম দুলালের সমর্থকদের মধ্যে। 

এই দ্বন্দ্বের জেরে গত অক্টোবর মাসের ১৬ তারিখ ভোররাতে আবাইপুর বাজার পার হলেই প্রতিপক্ষের সমর্থকেরা হাবিবুর রহমান রিপনকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সকালেই তাঁর মৃত্যু হয়। ঘটনার পর নিহতের সমর্থকদের অর্ধশতাধিক বাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। 

পরদিন নিহতের ভাই বাদী হয়ে শৈলকুপা থানায় ৩২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ১০-১২ জনের নামে মামলা করেন। তবে এই মামলায় জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও বিশ্বাস বিল্ডার্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নজরুল ইসলাম দুলাল ও ইউপি চেয়ারম্যান হেলাল উদ্দিন বিশ্বাসের নাম নেই। 

তবে আজ মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে তাঁদের বিরুদ্ধে হত্যার নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগ করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হাদির ওপর হামলাকারীরা সীমান্ত দিয়ে পালিয়েছে কি না—তা শতভাগ নিশ্চিত নয় বিজিবি

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
বিজিবির সেক্টর কমান্ডার কর্নেল সরকার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান । ছবি: আজকের পত্রিকা
বিজিবির সেক্টর কমান্ডার কর্নেল সরকার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান । ছবি: আজকের পত্রিকা

বিজিবির সেক্টর কমান্ডার কর্নেল সরকার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান বলেছেন, ঢাকায় শরিফ ওসমান হাদির ওপর গুলি বর্ষণকারী ব্যক্তিরা ময়মনসিংহ সীমান্ত ব্যবহার করে ভারতে পালিয়েছে কি না—তা এখনো শতভাগ নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না।

সোমবার ময়মনসিংহ নগরীর খাগডহর বিজিবি ক্যাম্পে তিনি আরও জানান, শুক্রবার ৯টার মধ্যে বিজিবি সদর দপ্তরের নির্দেশনায় সম্ভাব্য পাচারের রুটগুলো চিহ্নিত করে টহল এবং চেকপোস্ট বসানো হয় সীমান্তের অধিকাংশ স্থানে। পরদিন অর্থাৎ শনিবারে পুলিশ এবং বিজিবির সমন্বয়ে যৌথ অপারেশনের প্ল্যান করা হয়। ঢাকা থেকে আগত পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে বিজিবি ময়মনসিংহ সেক্টর কমান্ডারের নিয়মিত যোগাযোগ এবং অপারেশন সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা হয়।

মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আলোচনায় দুটি স্থানে একসঙ্গে অপারেশনের প্ল্যান করা হয়। সন্দেহভাজন হিসেবে শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে অবস্থানরত ফিলিপ স্নালকে আটকের পরিকল্পনা করা হয়। পুলিশের আরেকটি টিম হালুয়াঘাট এলাকায় অপারেশনের প্ল্যান করে। হালুয়াঘাটে অপারেশনের বিষয়ে বিজিবির সোর্স এবং অন্যান্য বিষয়ে তথ্য দিয়ে পুলিশকে সহায়তা করেছে। অপর দিকে নালিতাবাড়ীর বারোমারি এলাকায় অপারেশন পরিচালিত হয় বিজিবির নেতৃত্বে এবং ঢাকা হতে আগত ও হালুয়াঘাট থানার পুলিশ সদস্যদের সমন্বয়ে। কিন্তু ফিলিপকে পাওয়া যায়নি। তবে তার স্ত্রী ডেলটা চিরান, শ্বশুর ইয়ারসন রংডি এবং মানব পাচারকারী লুইস লেংমিঞ্জাকে আটক করা হয়। তাদের বাড়ি থেকে একটি মোটরসাইকেলও উদ্ধার করা হয়।’

তাঁদের পরিবারের তিনজনসহ এ পর্যন্ত বিজিবি চারজনকে আটক করেছে। এঁদের মধ্যে সোমবার সকালে মানব পাচারকারী বেঞ্জামিন চিরামকে আটক করা হয়। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বরগুনায় স্বামীকে গলা টিপে হত্যা, স্ত্রী ও পরকীয়া প্রেমিক আটক

বরগুনা প্রতিনিধি
আটক পরকীয়া প্রেমিক আলামিন। ছবি: সংগৃহীত
আটক পরকীয়া প্রেমিক আলামিন। ছবি: সংগৃহীত

বরগুনার বামনা উপজেলায় পরকীয়া প্রেমের জেরে এক প্রবাসফেরত স্বামীকে গলা টিপে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিহত ব্যক্তির নাম মোহাম্মদ আব্দুল জলিল (৪৫)। তিনি উপজেলার রামনা ইউনিয়নের ঘোপখালী গ্রামের বাসিন্দা।

এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী নাজমা বেগম (৩৫) ও তাঁর পরকীয়া প্রেমিক আলামিনকে (৩০) আটক করেছে পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে দুজনই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। রোববার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেলে আব্দুল জলিলের নিজ বাড়িতে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে।

স্থানীয় ও থানা সূত্রে জানা যায়, প্রায় পাঁচ বছর ধরে একই এলাকার আবু খতিবের ছেলে আলামিন নিহতের বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ করতেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে নাজমা বেগমের পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রায় ১৫ দিন আগে প্রবাস থেকে বাড়িতে ফিরে স্ত্রীর সম্পর্কের বিষয়টি জানতে পারেন আব্দুল জলিল।

অভিযোগ রয়েছে, রোববার বিকেলে স্ত্রী ও ওই গৃহকর্মী মিলে ঘুমন্ত অবস্থায় আব্দুল জলিলকে গলা টিপে হত্যা করেন।

হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি জানতে পেরে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেন। পরে পুলিশ রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে মরদেহ উদ্ধার করে বামনা থানায় নিয়ে যায়। সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) সকালে মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।

বামনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে নিহতের স্ত্রী ও তাঁর পরকীয়া প্রেমিককে তাৎক্ষণিকভাবে আটক করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্ত ও জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা দুজনই হত্যার দায় স্বীকার করেছেন। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। মামলা দায়েরের পর আসামিদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মহান বিজয় দিবসে মেট্রোরেল সাময়িক বন্ধ থাকবে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

মহান বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে আগামী ১৬ ডিসেম্বর (মঙ্গলবার) মেট্রোরেল চলাচল সাময়িক বন্ধ থাকবে। ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দর এলাকায় প্যারাজাম্প অনুষ্ঠিত হওয়ার কারণে প্যারাট্রুপারদের নিরাপত্তার স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

ডিএমটিসিএল ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে জানিয়েছে, আগামী ১৬ ডিসেম্বর দুপুর ১১টা ৫০ মিনিট হতে ১২টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত, অর্থাৎ মোট ৪০ মিনিটের জন্য মেট্রোরেল চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে।

ডিএমটিসিএল সাময়িক অসুবিধার জন্য যাত্রীসাধারণের কাছে আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেছে। যাত্রীদের এই সময়সূচি মেনে প্রয়োজনীয় পরিকল্পনা করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ইডেনের সেই ছাত্রীকে বিয়ের ছয়মাস পর নোবেলের বিরুদ্ধে ধর্ষণের চার্জশিট

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
নোবেল। ছবি: সংগৃহীত
নোবেল। ছবি: সংগৃহীত

বাসায় আটকে রেখে ইডেন কলেজের এক ছাত্রীকে ধর্ষণ করার অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় গায়ক নোবেলের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে। গত ২৯ নভেম্বর ডেমরা থানার উপপরিদর্শক এসআই মুরাদ হোসেন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এই অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন প্রসিকিউশন বিভাগের উপপরিদর্শক (এসআই) ইলামনি আজ সোমবার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, আগামী ২৮ ডিসেম্বর আদালতে অভিযোগপত্রটি উপস্থাপন করা হবে। পরে এ সংক্রান্ত মামলা বিচারের জন্য নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হবে।

নোবেলের আইনজীবী মোসতাক আহমেদ জানান, এই ধর্ষণ মামলার বাদীকে বিয়ে করেছেন নোবেল। তাঁরা সংসার করছেন।

গত ১৯ মে নোবেলের বিরুদ্ধে ধর্ষণ, নির্যাতন ও পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা করেন ইডেন কলেজের ওই ছাত্রী। নোবেলকে গ্রেপ্তার করার পর কারাগারে পাঠানো হলে বিয়ের শর্তে তিনি জামিন পান। ১৯ জুন ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে বসে ১০ লাখ টাকা দেনমোহরে নোবেল ওই ছাত্রীকে বিয়ে করেন।

এই মামলায় অভিযোগ করা হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ওই ছাত্রীর সঙ্গে পরিচয় হয় নোবেলের। এরপর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ২০২৪ সালের ১২ নভেম্বর নোবেল তাঁর স্টুডিও দেখানোর কথা বলে ছাত্রীকে ডেমরার বাসায় নিয়ে যান। সেখানে আটকে রাখেন, মোবাইল ফোন ও টাকা কেড়ে নেন। এরপর ধর্ষণ ও ভিডিও ধারণ করেন। কথামতো না চললে ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ভয়ও দেখান।

অভিযোগে বলা হয়, ওই তরুণীকে ছয় মাস ধরে ডেমরার ওই বাসায় আটকে রাখা হয়, মারধর করা হতো প্রায়ই। দু-তিন জনের সহায়তায় বাদীকে চুল ধরে টেনেহিঁচড়ে একটি কক্ষে আটকে রাখেন নোবেল। ওই ঘটনার ভিডিও ছড়ালে বাদীর বাবা-মা তাঁকে চিনতে পারেন। এরপর পরিবার পুলিশের সহায়তায় তাঁকে ১৯ মে উদ্ধার করে এবং পুলিশ নোবেলকে গ্রেপ্তার করে।

অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, নোবেল বাদীকে আটক রেখে ধর্ষণ করেন এবং ধর্ষণের ভিডিও মোবাইলে ধারণ করে রাখেন। বাসায় না থাকলে ধর্ষণের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। নোবেল নেশাগ্রস্ত অবস্থায় বিভিন্ন সময়ে তাঁকে মারপিট করেছেন।

অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়েছে, বাদীর অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। আসামি নোবেল জামিনে আছেন।

তদন্ত কর্মকর্তা অভিযোগপত্রে আরও বলেছেন, বাদীকে মারধর ও ধর্ষণে আসামিকে আরও কয়েকজন সহযোগিতা করেছেন। তবে তাঁদের নাম-ঠিকানা উদ্‌ঘাটন করা সম্ভব হয়নি। অদূর ভবিষ্যতে তাঁদের নাম ঠিকানা সংগ্রহ করা সম্ভব হলে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেওয়া হবে।

এখন কী হবে:

নোবেলের আইনজীবী বলেছেন, নোবেল মামলার বাদীকে বিয়ে করে সংসার করছেন। তাই এই অভিযোগপত্রে নোবেলের কোনো সমস্যা হবে না। বিচারিক ট্রাইব্যুনালে বাদী আপসনামা দেওয়ার পর মামলা নিষ্পত্তি হবে। খালাস পাবেন নোবেল।

উল্লেখ্য, ভারতের সংগীত প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠান ‘সা রে গা মা’ দিয়ে পরিচিতি পান এই গায়ক। এর আগে মাদকে আসক্ত হয়ে সংগীত ছেড়েছিলেন তিনি। দীর্ঘ বিরতির পর আবারও শ্রোতাদের সামনে হাজির হন। সেবার নোবেল জানিয়েছিলেন, তিনি আর কখনো দর্শকদের হতাশ করবেন না। সব অতীত পেছনে ফেলে নিয়মিত গান উপহার দেবেন।

কিন্তু ২০২৩ সালে অগ্রিম টাকা নিয়ে গান গাইতে না যাওয়ায় প্রতারণার অভিযোগে রাজধানীর মতিঝিল থানায় নোবেলের বিরুদ্ধে মামলা হয়। জানা যায়, ওই বছর ১৬ মে শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ হেডকোয়ার্টার পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি ব্যাচ ২০১৬-এর অনুষ্ঠানে গান গাইতে গিয়ে ১ লাখ ৭২ হাজার টাকা অগ্রিম নেওয়ার প্রতারণায় অভিযোগে আটক হয়েছিলেন। সে সময় একদিন রিমান্ডেও ছিলেন এই গায়ক। পরে আপসের মাধ্যমে ওই মামলা থেকে অব্যাহতিও পান নোবেল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত