Ajker Patrika

সমন্বয়ক পরিচয়ে ব্যবসায়ী অপহরণ: ৫ আসামিকে কারাফটকে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ

খুলনা প্রতিনিধি
খুলনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয়ে চাঁদা দাবি ও ব্যবসায়ী নুরে আলম অপহরণ মামলায় গ্রেপ্তার আসামিরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
খুলনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয়ে চাঁদা দাবি ও ব্যবসায়ী নুরে আলম অপহরণ মামলায় গ্রেপ্তার আসামিরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

খুলনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয়ে চাঁদা দাবি ও ব্যবসায়ী নুরে আলমকে অপহরণ মামলায় যুবদল নেতা পিয়ারুল, জাতীয় নাগরিক কমিটির (জানাক) নেতা ইমনসহ পাঁচজনকে কারাফটকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন আদালত। আজ রোববার দুপুরে পুলিশ তাঁদের সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করে। পরে খুলনা সিএমএম আদালত-২–এর বিচারক মো. আল আমিন শুনানি শেষে পাঁচ আসামিকে এক দিন কারাফটকে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দেন।

অপরদিকে এ মামলার অপর দুই আসামি মাহাবুব হাসান পিয়ারুল ও জিয়াউস সাদাতের আইনজীবীরা জামিন আবেদন করলে তা নামঞ্জুর করেন আদালত।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২১ মার্চ রাতে মামলার বাদী কৌশিক আহমেদ ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা সোনাডাঙ্গা থানার বসুপাড়া এতিমখানা মোড় নর্থখাল ব্যাংক রোডের সোহরাব হোসেনের ভাড়াবাড়িতে অবস্থান করছিলেন। ওই সময়ে এ মামলার অভিযুক্ত আসামি মো. জিয়াউস সাদাত ওরফে জিয়া, ইমন মোল্লা, যুবদল নেতা মো. মাহাবুব হাসান পিয়ারুল, মো. জয় হাসান, মো. শাকিব রহমানসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৪-৫ জন আসামি বাদীর বাসার সামনে গিয়ে নিজেদের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে ঘরের দরজা খুলতে বলেন। বাদীর বাবা দরজা খুলে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আসামিরা ভেতরে প্রবেশ করে নুরে আলমকে বিভিন্ন প্রশ্ন ও মারমুখী আচরণ করতে থাকেন। একপর্যায়ে তাঁরা নুরে আলমের কাছে ১ কোটি টাকা চাঁদা দাবি করেন। না হলে ডিবি পুলিশের কাছে ধরিয়ে দেওয়ার হুমকি দেন তাঁরা।

আসামিদের সঙ্গে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে বাদীর বাবাকে ডিবি পুলিশের কাছে হস্তান্তরের কথা বলে বাসা থেকে জোরপূর্বক তুলে নেওয়া হয়। এরপর তাঁদের জানানো হয়, ১ কোটি টাকা না দিলে তাঁর বাবাকে জীবনের তরে শেষ ও পুলিশকে জানালে বাবার লাশ পাবে বলে হুমকি দেন তাঁরা। পরে এ মামলার অপর আসামি ইমন মোল্লা ২২ মার্চ রাত দেড়টার দিকে কৌশিকের বাড়িতে গিয়ে আসামিদের ব্যবহৃত হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে কল করে বাদীর বাবার সঙ্গে কথা বলার ব্যবস্থা করেন। ওই সময়ে মুক্তিপণের ১ কোটি টাকার জন্য তাঁকে চাপ দিতে থাকেন।

ওই দিন সকাল ১০টার দিকে আসামিরা আবার বাদীকে মুক্তিপণের টাকার জন্য হুমকি ধামকি দিতে থাকেন। এরপর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আসামি জিয়াউস সাদাত ফুটমার্কেটের চেম্বারে বাদীকে সমঝোতার কথা বলে ডেকে নেন। এর কিছুক্ষণ পর আসামি ইমন মোল্লাসহ অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজন জিয়াউস সাদাতের চেম্বারে আসেন। আসামিরা মুক্তিপণের ১ কোটি টাকা থেকে পরিমাণ কমিয়ে ৫০ লাখ টাকা নির্ধারণ করেন। পরে কৌশিক আসামি জিয়ার চেম্বার থেকে বের হয়ে আসার কিছুক্ষণ পর ইমন মোল্লা বাদীর ছোট ভাই আবিদ হাসানকে কল দিয়ে হুমকি দিয়ে বলতে থাকেন, দ্রুত টাকা না দিলে আপনার বাবাকে নির্যাতন করা হবে।

এদিকে বাবাকে উদ্ধারের জন্য কৌশিক খুলনা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের শরণাপন্ন হন। পরে পুলিশের ফাঁদে গতকাল শনিবার রাত সোয়া ১০টার দিকে শের-ই বাংলা রোডের স্বপ্ন রেন্ট এ কারের সামনে থেকে আসামি ইমন মোল্লা, মাহাবুব হাসান পিয়ারুল ও জয় হাসানকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে মাহাবুব হাসান পিয়ারুল ও জয় হাসানকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তাঁরা একপর্যায়ে বাদীর বাবাকে অপহরণ ও গল্লামারী কাশেম সড়কের চতুর্থ তলার একটি বাড়িতে রাখা হয়েছে বলে পুলিশের নিকট স্বীকার করেন।

তাঁদের সেখানে নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে অপহৃত ব্যক্তি নুরে আলমকে উদ্ধার করে শাকিব রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়। রাত সাড়ে ১১টার দিকে এ মামলার এক নম্বর আসামি জিয়াউস সাদাত ওরফে জিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে আসামি ইমন মোল্লা জানান, ২১ মার্চ রাতে নুরে আলমকে অপহরণ করে খুলনা সদর থানাধীন টুটপাড়া এলাকার একটি বাড়ির নিচতলায় আটকে রাখা হয়। পরে অন্যান্য আসামির পরামর্শ অনুযায়ী ইমন মোল্লার কাশেম সড়কে ভাড়া করা বাসার চতুর্থ তলায় একটি কক্ষে আটকে রাখা হয়।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা খুলনা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক মো. হেলাল উদ্দিন গ্রেপ্তার সব আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করে আদালতে পাঠান। পরে শুনানি শেষে তাঁদের এক দিন কারাফটকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন বিচারক।

জানা গেছে, অপহরণ হওয়া নুরে আলম ঢাকার গাজীপুরের শ্রীপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ব্যবসায়ী। তাঁর বিরুদ্ধে গাজীপুরের বিভিন্ন থানায় হত্যাসহ একাধিক মামলা রয়েছে। বেশ কিছু দিন আগে তিনি খুলনা আসেন এবং বানরগাতি আজাদ লন্ড্রি এলাকায় একটি বাসা ভাড়া নিয়ে পরিবার–পরিজন নিয়ে বসবাস করছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নরসিংদীতে তিন চোখ ও দুই মুখের বাছুরের জন্ম, এলাকায় চাঞ্চল্য

নরসিংদী প্রতিনিধি
পুবেরগাঁও গ্রামের একটি খামারে বাছুরটির জন্ম। ছবি: আজকের পত্রিকা
পুবেরগাঁও গ্রামের একটি খামারে বাছুরটির জন্ম। ছবি: আজকের পত্রিকা

নরসিংদীতে অদ্ভুত আকৃতির বাছুরের জন্ম হয়েছে। বাছুরটির রয়েছে দুটি মুখ, দুটি জিহ্বা, দুটি কান ও তিনটি চোখ। এর মধ্যে একটি চোখ বাছুরের কপালের মাঝখানে। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

২৩ ডিসেম্বর রাতে শিবপুর উপজেলার চক্রধা ইউনিয়নের পুবেরগাঁও গ্রামে স্থানীয় ইউপি সদস্য কাশেম খানের খামারে বাছুরটির জন্ম।

খামারমালিক কাশেম খান বলেন, বাছুরটি জন্মের পর থেকেই অসুস্থ। স্বাভাবিকভাবে দুধ পান করতে না পারায় ফিডারের মাধ্যমে দুধ খাওয়াতে হচ্ছে।

তিনি জানান, তাঁর খামারের একটি গাভি বাছুরটির জন্ম দিয়েছে। তিনি বলেন, এর আগেও গাভিটির বাছুর হয়েছে। কিন্তু এবারের মতো এমন অদ্ভুদ বাছুর আগে কখনো হয়নি।

ঘটনাটি জানাজানির পর থেকেই বাছুরটিকে একনজর দেখতে আশপাশের কৌতূহলী মানুষ খামারে আসছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল জলিল বলেন, ‘আমরা ছোটবেলা থেকে গরু-ছাগল দেখছি। কিন্তু তিন চোখ আর দুই মুখের বাছুর এই প্রথম দেখলাম। খবর পেয়ে দূর থেকে এসেছি।’

আরেক স্থানীয় নারী জরিনা বেগম বলেন, ‘বাছুরটা দেখতে অদ্ভুত লাগলেও মায়া হচ্ছে। বাছুরটির স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। অনেকেই দ্রুত প্রাণিসম্পদ বিভাগের চিকিৎসকের পরামর্শ ও চিকিৎসা নিশ্চিত করার পরামর্শ দিচ্ছেন।’

এর আগে এ ধরনের বাছুর জন্মের বিষয়ে প্রাণী বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, সাধারণত জেনেটিকস ডিফেক্টের কারণে গাভির এমন ত্রুটিপূর্ণ বাচ্চার জন্ম হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গাজীপুরে ট্রেনে কাটা পড়ে নানি-নাতনিসহ নিহত ৩

গাজীপুর প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

গাজীপুরের কালীগঞ্জে রেললাইন দিয়ে হাঁটার সময় ট্রেনে কাটা পড়ে নানি-নাতনিসহ তিন নারী নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) বিকেলে টঙ্গী-ভৈরব রেলপথের আড়িখোলা রেলস্টেশনসংলগ্ন টেকপাড়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত নারীরা হলেন কালীগঞ্জ পৌরসভার দেওয়ালেরটেক গ্রামের মোবারক হোসেনের স্ত্রী সাদিয়া বেগম (২৪), একই এলাকার বাবু মিয়ার মেয়ে অনাদি আক্তার (১৩) এবং নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার মরজাল এলাকার বাসিন্দা কমলা বেগম (৫৫)। নিহত কমলা বেগম ও অনাদি আক্তার সম্পর্কে নানি-নাতনি এবং সাদিয়া বেগম তাঁদের প্রতিবেশী ছিলেন।

স্থানীয়রা ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে আড়িখোলা রেলব্রিজ এলাকায় রেললাইনের ওপর দিয়ে তিনজন হেঁটে যাচ্ছিলেন। এ সময় ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা নোয়াখালীগামী ‘উপকূল এক্সপ্রেস’ ট্রেনটি চলে আসে। এ সময় তাঁরা রেলব্রিজের ওপর থাকায় সেখান থেকে দ্রুত সরে যাওয়ার সুযোগ পাননি। পরে ট্রেনটি তাঁদের ওপর দিয়ে চলে যায়। এতে ট্রেনে কাটা পড়ে ঘটনাস্থলেই কমলা বেগম ও সাদিয়া বেগমের মৃত্যু হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় অনাদি আক্তারকে উদ্ধার করে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক জিয়াউর রহমান জানান, অনাদি আক্তারকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কালীগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ওবায়দুল হক জানান, এটি রেলওয়ের আওতাধীন দুর্ঘটনা হওয়ায় রেলওয়ে পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় করে লাশগুলো উদ্ধার করা হয়েছে।

রেলওয়ে নরসিংদী পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) দিলীপ চন্দ্র সরকার বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশের সুরতহাল সম্পন্ন করেছি। নিহত নারীদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে বিনা ময়নাতদন্তে লাশগুলো স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আরাকান আর্মিদের জন্য নেওয়া হচ্ছিল ১৫০০ মশারি, আটক ৫

থানচি (বান্দরবান) প্রতিনিধি  
মশারিসহ জব্দ করা মালপত্র। ছবি: আজকের পত্রিকা
মশারিসহ জব্দ করা মালপত্র। ছবি: আজকের পত্রিকা

বান্দরবানের থানচি উপজেলায় দুটি ইঞ্জিনচালিত নৌকা তল্লাশি করে ১ হাজার ৫০০টি মশারি, ১২০টি নৌকার ইঞ্জিনের পাখা উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) বিকেলে তিন্দুমুখ বিজিবি চেকপোস্ট পার হওয়ার সময় নৌকাগুলো তল্লাশি করে এসব জিনিস জব্দ করে বিজিবি। এসব মশারি ও ইঞ্জিনের পাখা বান্দরবানের থানচির বড় মদক সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমারে সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির জন্য নেওয়া হচ্ছিল বলে জানিয়েছে বিজিবি। এ ঘটনায় নৌকা দুটি থেকে পাঁচজনকে আটক করা হয়। আজ বৃহস্পতিবার তাঁদের থানচি থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।

এ ঘটনায় আটক ব্যক্তিরা হলেন থোয়াই হ্লা চিং মারমা, উমং সাইং মারমা, হ্লাচিংথোয়াই মারমা, উক্যছাইন মারমা ও মো. ইউনুস।

এসব তথ্য নিশ্চিত করে বিজিবি বলিপাড়া ৩৮ ব্যাটালিয়ানের সহকারী পরিচালক মো. জাকির হোসেনের জানান, নিজস্ব গোয়েন্দা সূত্রে তাঁরা জেনেছেন, দীর্ঘদিন থেকে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ওষুধ, কাপড়, জুতা, মোজা, মশারি, নৌকা ইঞ্জিনের পাখা ও বিভিন্ন যন্ত্রাংশ মিয়ানমারের আরাকান আর্মির কাছে সরবরাহ করছে একটি সিন্ডিকেট চক্র। পাচারকারীদের ধরতে সীমান্তের বিজিবি চৌকিগুলোতে বিজিবি সদস্যরা সতর্ক রয়েছেন।

জাকির হোসেন বলেন, গতকাল বুধবার তিন্দুমুখ বিজিবি চেকপোস্ট অতিক্রম করার সময় মালবাহী তিনটি ইঞ্জিন নৌকা দেখে বিজিবির সদস্যদের সন্দেহ হয়। এ সময় নৌকা থামাতে বললে একটি নৌকা দ্রুত চলে যায়। বাকি দুটি নৌকা তল্লাশি করে ১ হাজার ৫০০টি মশারি, ১২০টি ইঞ্জিন বোটসহ অন্যান্য পণ্য পাওয়া যায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নলছিটি লঞ্চঘাট ওসমান হাদির নামে নামকরণ

ঝালকাঠি প্রতিনিধি  
নলছিটি লঞ্চঘাট ।  ছবি: আজকের পত্রিকা
নলছিটি লঞ্চঘাট । ছবি: আজকের পত্রিকা

নলছিটি উপজেলার লঞ্চঘাট এখন থেকে শহীদ শরিফ ওসমান হাদির নামে পরিচিত হবে। জন্মস্থান ও শৈশবের স্মৃতিতে গাথা এই লঞ্চঘাট তাঁর নামের সঙ্গে চিরস্থায়ীভাবে যুক্ত হলো।

বরিশাল বিআইডব্লিউটিএর নির্বাহী প্রকৌশলী আমজাদ হোসেন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় (২৫ ডিসেম্বর) জানান, শহীদ ওসমান হাদির জন্মস্থান নলছিটি। শৈশব, বেড়ে ওঠা এবং জীবনসংগ্রামের সঙ্গে লঞ্চঘাট এলাকার নিবিড় সম্পর্ক থাকার কারণে এটি তাঁর নামে নামকরণ করা হয়েছে। বর্তমানে টার্মিনালের সংস্কার ও রঙের কাজ চলমান রয়েছে।

আগামী শনিবার নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন ঘাটটি পরিদর্শন করবেন বলেও জানান তিনি।

নলছিটি লঞ্চঘাট শহীদ ওসমান হাদির জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। ঘাট থেকে মাত্র ৫০০ মিটার দূরে তার পৈতৃক বাড়ি। নদীর ধারে দাঁড়িয়ে মানুষের আসা-যাওয়া দেখা এবং লঞ্চের ভিড়ে সময় কাটানো—এই ঘাট ছিল তার বেড়ে ওঠার নীরব সাক্ষী।

ঘাট এলাকার ব্যবসায়ী রব হাওলাদার বলেন, ‘আমরা চাইছিলাম হাদির স্মরণে এমন কিছু হোক, যা প্রজন্মের পর প্রজন্ম মনে রাখবে। তার শৈশবের স্মৃতিবিজড়িত লঞ্চঘাটের নাম তার নামে হওয়া নিঃসন্দেহে স্মরণীয় সিদ্ধান্ত।’

ব্যবসায়ী শাহাদত আলম ফকির যোগ করেন, ‘এই ঘাটে আমরা হাদিকে ছোটবেলা থেকে দেখেছি। সে এখানকারই ছেলে ছিল। আজ তার নামে ঘাটের নামকরণ হওয়ায় আমরা গর্বিত।’

ওসমান হাদির প্রতিবেশী বেলায়েত হোসেন নান্নু বলেন, ‘হাদি এই এলাকার সন্তান। এই ঘাট, এই নদী, এই মানুষ—সবকিছুতেই তার স্মৃতি ছড়িয়ে আছে। লঞ্চঘাটের নাম তার নামে হওয়া মানে, সে এখানেই চিরদিন বেঁচে থাকবে।’

উল্লেখ্য, ১২ ডিসেম্বর হত্যার উদ্দেশ্যে ওসমান হাদিকে গুলি করা হয়। তাঁকে প্রথমে ঢাকায় ভর্তি করা হয় এবং পরে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৮ ডিসেম্বর মারা যান ওসমান হাদি। পরবর্তীকালে তাঁর মরদেহ দেশে আনা হয় এবং সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় জানাজা শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে (জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবরের পাশে) সমাহিত করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত