Ajker Patrika

সীমান্তে ঢুকে কিশোরকে ধরে নিয়ে নির্যাতনের পর বিএসএফের দুঃখ প্রকাশ 

পরশুরাম (ফেনী) প্রতিনিধি
আপডেট : ১০ মে ২০২৩, ১৭: ২৬
সীমান্তে ঢুকে কিশোরকে ধরে নিয়ে নির্যাতনের পর বিএসএফের দুঃখ প্রকাশ 

ফেনীর পরশুরামে বাংলাদেশি এক কিশোরকে ধরে নিয়ে চার ঘণ্টা আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) বিরুদ্ধে। পরে তাকে আহত অবস্থায় সীমান্তে ফেলে গেলে স্থানীয়রা উদ্ধার করে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যায়। ওই কিশোরের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী তাকে ফেনী সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এ ঘটনায় আজ বুধবার বিএসএফ ও বিজিবির মধ্যে পতাকা বৈঠক হয়েছে। সেখানে বিএসএফের পক্ষ থেকে এ ঘটনাকে ‘অনাকাঙ্ক্ষিত’ উল্লেখ করে দুঃখ প্রকাশ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে এমন ঘটনার আর ঘটবে না বলে বিএসএফের পক্ষ থেকে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। এসব তথ্য জানিয়েছেন বিজিবি ফেনীর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল রকিব হাসান।

গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার বাউরখুমা গ্রামের সীমান্তবর্তী এলাকায় ওই কিশোরকে নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। আহত কিশোরের নাম মো. ইউনুস হোসেন অন্তর (১৫)। সে পৌর এলাকার উত্তর বাউরখুমা গ্রামের তাজুল ইসলামের ছেলে।

ভুক্তভোগীর পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ওই কিশোর ছাগল চরাতে ভারত সীমান্তবর্তী ২৬১ নম্বর পিলারসংলগ্ন এলাকায় যায়। এ সময় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) ভারতের কাঁটাতারের গেট দিয়ে বাংলাদেশের অংশে প্রবেশ করে ওই কিশোরকে ধরে নিয়ে যায়। পরে তার হাত-পা বেঁধে নির্মমভাবে নির্যাতন করে এবং লাঠি দিয়ে পিটিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে ক্ষত করে। একপর্যায়ে বিএসএফ ওই কিশোরকে মৃত ভেবে ফেলে চলে যায়।

আহত ইউনুসের মা আকলিমা আক্তার আজকের পত্রিকাকে জানান, ছাগল চরাতে গেলে বিএসএফ ইউনুসকে ধরে নিয়ে হাত-পা বেঁধে নির্মমভাবে নির্যাতন করে এবং লাঠি দিয়ে পিটিয়ে তার ডান হাত ভেঙে দেয়। তাঁর ছেলে ২৬১ নম্বরসংলগ্ন স্থানে গেলে বিএসএফ বাংলাদেশের অংশে প্রবেশ করে তাকে ধরে হাত-পা বেঁধে লাঠি ও বন্দুকের বাঁট দিয়ে এলোপাতাড়ি পেটায়। এতে ওই কিশোরের একটি হাত ভেঙে যায় এবং শরীরে, পিঠে ও পায়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করাসহ দুই হাতের আঙুল থেঁতলে দিয়েছে।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও বাউরখুমার গ্রামের স্থানীয় কৃষক হারুন মজুমদার আজকের পত্রিকাকে জানান, গতকাল এ ঘটনার সময় তিনি ওই স্থানে ধান কাটছিলেন। এ সময় চার-পাঁজজন বিএসএফ সদস্য বাংলাদেশের অংশে ঢুকে ইউনুসকে ধরে ফেলে এবং লাঠি দিয়ে নির্মমভাবে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। এ সময় ইউনুসের চিৎকার শুনে তাকে উদ্ধারের জন্য এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে বিএসএফ গুলি করবে বলে হুমকি দেওয়ায় বাংলাদেশি কৃষকেরা পিছু হটেন।

কৃষক হারুন মজুমদার বলেন, বিএসএফ ইউনুসকে চার ঘণ্টা আটকে রেখে বিকেল সাড়ে চারটার দিকে বাংলাদেশের অংশে ফেলে রেখে চলে যায়। এ সময় গ্রামের লোকজন তাকে উদ্ধার করে বিকেলে পৌনে পাঁচটায় পরশুরাম উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে যায়।

নির্যাতনের শিকার আহত ইউনুস আজ সকালে আজকের পত্রিকাকে বলেছে, ‘গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সীমান্তবর্তী এলাকায় গেলে বিএসএফের কয়েকজন বাংলাদেশের সীমান্তে ঢুকে আমাকে ধরে নিয়ে যায়। পরে কোনো কিছু জিজ্ঞেস না করে বিএসএফের চার-পাঁচজন সদস্য লাঠি দিয়ে পিটিয়ে ডান হাত ভেঙে দেয়। একপর্যায়ে শার্ট-প্যান্ট খুলে আমাকে নির্মমভাবে পেটাতে থাকে।’

এ বিষয়ে পরশুরাম পৌর এলাকার ১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর খোরশেদ আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ইউনুস ছাগল চরাতে সীমান্তবর্তী এলাকায় গেলে বিএসএফ তাকে ধরে হাত-পা বেঁধে ফেলে এবং এলোপাতাড়ি পিটিয়ে গুরুতর আহত করে এ সময় তার ডান হাত ভেঙে যায়। পরে লোকজন উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।’

এ বিষয়ে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ফেনীর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল রকিব হাসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বাংলাদেশি কিশোর সীমান্তবর্তী এলাকায় গেলে ভারতীয় বিএসএফের হাতে ধরা পড়ে। প্রাথমিকভাবে খোঁজখবর থেকে জানা গেছে, বিএসএফ তাকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেছে। বিষয়টি নিয়ে আজ দ্বিপক্ষীয় পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে বিএসএফকে অবহিত করলে তারা অনাকাঙ্ক্ষিত বিষয়ের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে। সেই সঙ্গে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা ঘটবে না বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৭ ঘণ্টা পর ঝালকাঠির অবরোধ প্রত্যাহার, যান চলাচল স্বাভাবিক

ঝালকাঠি প্রতিনিধি  
বরিশাল–খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝালকাঠি অংশে অবরোধ সাত ঘণ্টা পর প্রত্যাহার করে নিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
বরিশাল–খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝালকাঠি অংশে অবরোধ সাত ঘণ্টা পর প্রত্যাহার করে নিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

ইনকিলাব মঞ্চের প্রতিষ্ঠাতা ও মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদিকে হত্যার প্রতিবাদে এবং খুনিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে তাঁর নিজ জেলা ঝালকাঠিতে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে ছাত্র-জনতা। সাত ঘণ্টা পর পুলিশের অনুরোধে আজ শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে অবরোধ প্রত্যাহার করা হলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

আজ জুমার নামাজ শেষে বেলা আড়াইটার দিকে বরিশাল–খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝালকাঠি কলেজ মোড় এলাকায় অবরোধ শুরু করেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ। অবরোধ চলাকালে মহাসড়কের উভয় পাশে বিপুলসংখ্যক যানবাহন আটকে পড়ে। ফলে যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। তবে রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিস, জরুরি ওষুধ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় কাঁচামাল বহনকারী যান চলাচলের সুযোগ দেওয়া হয়।

অবরোধ কর্মসূচিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, গণঅধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন। এ সময় মহাসড়কে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করা হয়।

বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য দেন এনসিপির ঝালকাঠি জেলা আহ্বায়ক মাইনুল ইসলাম মান্না, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঝালকাঠি জেলা আহ্বায়ক আল তৌফিক লিখন, যুগ্ম আহ্বায়ক ইয়াসিন ফেরদৌস ইফতি, সদস্যসচিব রাইয়ান বিন কামাল, গণঅধিকার পরিষদ ঝালকাঠি জেলা যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ঝালকাঠি-২ আসনের মনোনীত প্রার্থী মাহমুদুল ইসলাম সাগরসহ অন্য নেতারা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঝালকাঠি জেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ইয়াসিন ফেরদৌস ইফতি বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের একজন গুরুত্বপূর্ণ সহযোদ্ধাকে দুর্বৃত্তরা গুলি করে হত্যা করেছে। তিনি সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন। হামলাকারীদের ইন্টারপোলের মাধ্যমে দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। তা না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

ঝালকাঠি সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) বেলায়েত হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, বেলা আড়াইটায় অবরোধ শুরু হওয়ায় বরিশাল–খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কে ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনা করে পরিস্থিতি শান্ত করা হলে তাঁরা রাত সাড়ে ৯টার দিকে অবরোধ প্রত্যাহারে সম্মত হন। পরে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সাবেক নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ ও সাবেক মেয়রের বাড়িতে আগুন

দিনাজপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ৪৪
সাবেক প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও সেতাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র আসলাম হোসেনের বোচাগঞ্জের বাড়িতে আগুন দিয়েছেন একদল লোক। ছবি: আজকের পত্রিকা
সাবেক প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও সেতাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র আসলাম হোসেনের বোচাগঞ্জের বাড়িতে আগুন দিয়েছেন একদল লোক। ছবি: আজকের পত্রিকা

সাবেক নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও সেতাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র আসলাম হোসেনের বোচাগঞ্জের বাড়িতে আগুন দিয়েছে একদল লোক। আজ শুক্রবার রাতে দুজনের বাড়িতে আগুন লাগার সংবাদ পেয়ে বোচাগঞ্জ থানা-পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা সেখানে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

স্থানীয় জনতা ও বোচাগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও সেতাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র আসলাম হোসেনের বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়। তবে কারা আগুন দিয়েছে, এ বিষয়ে বিস্তারিত জানা যায়নি।

বোচাগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের সাব-অফিসার শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘রাত সোয়া ৮টার দিকে সাবেক মেয়র আসলামের বাড়িতে আগুন লাগার খবর পেয়ে আমরা সেখানে পৌঁছাই। বর্তমানে আগুন নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা হয়েছে।’

এ ছাড়া খালিদ মাহমুদের বাড়ির আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে জানার জন্য বোচাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও কোনো সাড়া মেলেনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ময়মনসিংহে যুবককে পিটিয়ে হত্যা: অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে মামলা

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ১৮
দিপু চন্দ্র দাস। ছবি: সংগৃহীত
দিপু চন্দ্র দাস। ছবি: সংগৃহীত

ময়মনসিংহের ভালুকায় দিপু চন্দ্র দাস (২৮) নামের এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা ও মরদেহে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। আজ শুক্রবার নিহত দিপুর ছোট ভাই অপু চন্দ্র দাস বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ভালুকা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহেদুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, বিক্ষুব্ধ জনতার হাতে নিহত হন দিপু চন্দ্র দাস। এ ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা হয়েছে।

এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার ডুবালিয়াপাড়া এলাকার পাইওনিয়ার নিট কম্পোজিট কারখানা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত দিপু চন্দ্র দাস জেলার তারাকান্দা উপজেলার মোকামিয়া কান্দা গ্রামের রবি চন্দ্র দাসের ছেলে। তিনি ওই কোম্পানির শ্রমিক ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার পত্রিকা অফিসে হামলায় র‍্যাকের নিন্দা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার পত্রিকা অফিসে হামলায় র‍্যাকের নিন্দা

কতিপয় উচ্ছৃঙ্খল ব্যক্তি দৈনিক প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকা অফিসে যে হামলা চালিয়েছে, তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে রিপোর্টার্স অ্যাগেইনস্ট করাপশন (র‍্যাক)।

অন্যদিকে, দুই গণমাধ্যমে আটকে পড়া সাংবাদিকদের উদ্ধার করতে গিয়ে নাজেহাল ও হেনস্তার শিকার হয়েছেন ইংরেজি দৈনিক দ্য নিউ এজের সম্পাদক প্রবীণ সাংবাদিক নূরুল কবীর। এ ঘটনারও তীব্র নিন্দা ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে র‍্যাক। অবিলম্বে এসব ঘটনার সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও দ্রুত তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানিয়েছে র‍্যাক।

শুক্রবার এক বিবৃতিতে সভাপতি আলাউদ্দিন আরিফ ও সাধারণ সম্পাদক তাবারুল হক বলেন, সংবাদমাধ্যম রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের অন্যতম প্রধান ভিত্তি। গণমাধ্যমের কণ্ঠ রুদ্ধ করতে সহিংসতা, ভয়ভীতি প্রদর্শন, হামলা কিংবা হেনস্তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এ ধরনের কর্মকাণ্ড গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, মতপ্রকাশের সাংবিধানিক অধিকার এবং আইনের শাসনের সম্পূর্ণ পরিপন্থী।

১৮ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) রাত ১২টার দিকে উচ্ছৃঙ্খল কতিপয় ব্যক্তি প্রথমে দৈনিক প্রথম আলো, তারপর দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকা অফিসে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে। এ সময় পত্রিকা দুটির অনেক সাংবাদিক ভবনের ভেতরে আটকা পড়েছিলেন। খবর পেয়ে সেনা, পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে হামলাকারীদের সরিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে ভবনের ভেতরে আটকে পড়া সাংবাদিকদের উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।

পত্রিকা দুটির শীর্ষ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রাতে আকস্মিক হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার পর কর্মীদের সবাইকে দ্রুত অফিস ত্যাগ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ফলে শুক্রবার ছাপা পত্রিকা বের করা সম্ভব হয়নি।

র‍্যাক নেতারা বলেন, মনে হচ্ছে একটি গোষ্ঠী অত্যন্ত সচেতনভাবে প্রতিপক্ষ বানাতে গণমাধ্যমকে টার্গেট করে হামলা চালিয়েছে। এটা খুবই দুঃখজনক ও মর্মান্তিক। স্বাধীন সাংবাদিকতায় বিশ্বাসী বর্তমান সরকারের সময় এমন ঘটনা ন্যক্কারজনক। ডিআরইউ মনে করে, ওসমান হাদি একজন দেশপ্রেমিক জুলাই যোদ্ধা ছিলেন। শহীদ ওসমান হাদিসহ ছাত্র-জনতার ত্যাগের কারণে তৎকালীন ফ্যাসিস্ট সরকার দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে।

হাদির মৃত্যুকে পুঁজি করে যারা গণমাধ্যমের ওপর হামলা করেছে, তারা হাদির অনুসারী নয়, এটা স্পষ্ট। কতিপয় মহল হাদির মৃত্যুকে ব্যবহার করে নিজেদের কদর্য চেহারা প্রকাশ করেছে। অবিলম্বে এসব ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে দৃস্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান নেতারা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত