Ajker Patrika

সহিংসতা করলে আমার দরকার নেই: ড. ইউনূস

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৮ আগস্ট ২০২৪, ২০: ২৮
সহিংসতা করলে আমার দরকার নেই: ড. ইউনূস

শেখ হাসিনা সরকার পতনের তিন দিন পর আজ বৃহস্পতিবার রাত ৯টায় শপথ নিচ্ছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। তবে এই তিন দিনে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে যে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে, সেটি দূর করা প্রধান কাজ বলে মন্তব্য করেছেন প্রস্তাবিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান ও শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

ইউনূস বলেন, ‘আপনারা আমার ওপর আস্থা রেখে আমাকে আহ্বান জানিয়েছেন। ছাত্ররা আমাকে আহ্বান দিয়েছে। সেটাতে আমি সাড়া দিয়েছি। দেশবাসীর কাছে আমার আবেদন আপনারা যদি আমার ওপর বিশ্বাস রাখেন, তাহলে নিশ্চিত করেন যে এ দেশে কোনো জায়গায় কারও ওপর হামলা হবে না। এটা আমাদের প্রথম দায়িত্ব। এটা যদি আমি করতে না পারি, আমার কথা যদি না শোনেন তাহলে এখানে আমার প্রয়োজন নাই। আমাকে বিদায় দেন।’ 

আজ বৃহস্পতিবার বেলা সোয়া ২টার দিকে ঢাকায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘আমি আমার কাজে থাকি, সেখানেই আমি ব্যস্ত থাকি। যদি আমাকে প্রয়োজন মনে করেন, আমাকে প্রয়োজন মনে করলে দেখাতে হবে যে আমার কথা আপনারা শোনেন। আমার কথা না শুনলে আমার কোনো প্রয়োজন নাই। আমার প্রথম কথা হল বিশৃঙ্খলা থেকে দেশকে রক্ষা করেন। আপনারা সহিংসতা থেকে দেশকে রক্ষা করেন। আমাদের ছাত্ররা আমাদের যে পথ দেখায় সেই পথে এগিয়ে যেতে পারি।’ 

এ সময় তরুণদের সৃজনশীলতা প্রকাশ করার আহ্বান জানান ড. ইউনূস। বিমানবন্দরে তাঁকে স্বাগত জানিয়েছেন সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, অন্য দুই বাহিনীর প্রধান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কেরা, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা। এরপর তিনি বিমানবন্দরে অপেক্ষমাণ গণমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলেন।

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদের কথা বলতে গিয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে কেঁদে ফেলেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। 

আবেগতাড়িত হয়ে তিনি বলেন, ‘আজকে আবু সাঈদের কথা মনে পড়ছে আমাদের। যে আবু সাঈদের ছবি বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের মনে গেঁথে আছে। এটা কেউ ভুলতে পারবে না! কী অবিশ্বাস্য একটা সাহসী যুবক! বন্দুকের সামনে দাঁড়িয়ে আছে! তারপর থেকে কোনো যুবক আর হার মানে নাই, গুলির সামনে এগিয়ে গেছে। বলেছে—যত গুলি মারতে পারো মারো, আমরা আছি। যার কারণে সারা বাংলাদেশে এই আন্দোলন ছড়িয়ে গেছে। যার কারণে বাংলাদেশ দ্বিতীয়বার স্বাধীনতা অর্জন করল।’

নতুন সরকারের কী ধরনের দায়িত্ব রয়েছে, তা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের দায়িত্ব হলো তারা (শিক্ষার্থী) যেটা অর্জন করে নিয়ে এসেছে, এখন তাদেরকে দিয়ে এটাকে করিয়ে দেওয়া। সমস্ত কাঠামোগুলো পরিষ্কার করে দেওয়া। সরকার বলে একটা জিনিস আছে, কিন্তু মানুষের কোনো আস্থা নেই। মানুষ মনে করে সরকার একটা দমন–পীড়নের একটা যন্ত্র। যেখানে সুযোগ পায় সেখানে কষ্ট দেওয়া সকল স্তরে। এটি হলো সরকার। এটা সরকার হতে পারে না।’ 

সরকারকে দেখে মানুষ বুক ফুলিয়ে উঠবে যে আমাদের সাহায্য করবে, রক্ষা করবে। যে সরকার হবে সে সরকার মানুষকে রক্ষা করবে, মানুষের আস্থাভাজন হবে। 

আইনশৃঙ্খলার ব্যাঘাত হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘মানুষ মানুষকে আক্রমণ করছে। ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিচ্ছে। ধন–সম্পদ জ্বালিয়ে নষ্ট করছে। চুরি হচ্ছে, নিয়ে যাচ্ছে। অফিস–আদালত আক্রমণ করছে। সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণ করছে। হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, আহমদিয়া সবার ওপর আক্রমণ চলছে। এগুলো ষড়যন্ত্রের অংশ। এগুলো আমাদের বিষয় না।

‘আমাদের কাজ হলো এগুলো রক্ষা করা। সবাইকে রক্ষা করা। প্রতিটি মানুষকে, প্রতিটি মানুষ আমাদের ভাই-বোন, তাদের রক্ষা করা। শান্তি–শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা। বিশৃঙ্খলা, সহিংসতা এগুলো হলো অগ্রগতির বড় শত্রু। আইনশৃঙ্খলা আমাদের প্রথম কাজ। এটা ফিরিয়ে না আনা পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ নিতে পারব না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তর্কে জড়ানো চিকিৎসককে বরখাস্তের নির্দেশ ডিজির

‘মানসিকভাবে অসুস্থ’ ইমরান খান ‘গাদ্দার’ শেখ মুজিবুর রহমানের ভক্ত—পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনীর ঔদ্ধত্যপূর্ণ বিবৃতি

সবকিছু প্রস্তুত হচ্ছে, তারেক রহমান ফিরবেন যেকোনো সময়: আমীর খসরু

শেখ হাসিনা যত দিন ইচ্ছা ভারতে থাকতে পারবেন কি—জবাবে যা বললেন জয়শঙ্কর

কর্মী নেবে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, নেই বয়সসীমা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৬ একর জমি নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দর ও জেলা প্রশাসনের বিরোধ, বরাদ্দ পেল সিটি করপোরেশন

আবু বকর ছিদ্দিক, চট্টগ্রাম 
বিরোধপূর্ণ জমিতে স্থাপনা পরিকল্পনার নকশা। ছবি: সংগৃহীত
বিরোধপূর্ণ জমিতে স্থাপনা পরিকল্পনার নকশা। ছবি: সংগৃহীত

কর্ণফুলী নদীর তীরঘেঁষে ফিরিঙ্গীবাজার মৌজার ৬ একর জায়গা নিয়ে বিরোধ চলছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ও জেলা প্রশাসনের। এ নিয়ে উচ্চ আদালতে মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে সেই জায়গা চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনকে এক বছরের জন্য বরাদ্দ দিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। বন্দরের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

মামলার নথি ও বন্দর সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের ৮ নভেম্বর চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ জায়গাটি ইজারার জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। মামলা চলা অবস্থায় ইজারা দেওয়ার উদ্যোগকে বেআইনি উল্লেখ করে বন্দর কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারি করেন হাইকোর্ট। গত বছরের ১২ ডিসেম্বর এই রুল জারি করা হয়।

এ অবস্থায় ইজারা দেওয়া থেকে পিছু হটে বন্দর কর্তৃপক্ষ। তবে রুল জারির দেড় মাসের মাথায় গত ২০ জানুয়ারি সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন জায়গাটি বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামানের কাছে বরাদ্দ চান। ৬ একরের ওই জায়গায় খেলার মাঠ ও পার্ক নির্মাণের কথা বলেন মেয়র।

বন্দরের বোর্ড সভার ১৯৩৯৯ নম্বর সিদ্ধান্ত মোতাবেক চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনকে একসনা (এক বছর) বরাদ্দ দেওয়া হয় জায়গাটি। ৮ ডিসেম্বর সেটি করপোরেশনকে বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য চিঠি ইস্যু করা হয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে।

জায়গার মাশুল বাবদ ৮৩ লাখ টাকা চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে চট্টগ্রাম বন্দরের অনুকূলে জমা দেওয়া হয়েছে ইতিমধ্যে। জায়গাটি বরাদ্দ দেওয়ার ক্ষেত্রে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ আইন উপদেষ্টা বা আইন কর্মকর্তার কোনো মতামত গ্রহণ করেনি বলে জানা গেছে।

এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের ভূমি শাখার সহকারী ব্যবস্থাপক (স্টেট-২) মোহাম্মদ রায়হান উদ্দিন বলেন, ফিরিঙ্গী বাজার মৌজার ৬ একর জমি খেলার মাঠ ও পার্ক নির্মাণের জন্য সিটি করপোরেশনের অনুকূলে একসনা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এই জমি নিয়ে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসন ও চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের একটি মামলা চলছে।

এই অবস্থায় জায়গা বরাদ্দের বিষেয় জানতে চাইলে মোহাম্মদ রায়হান উদ্দিন বলেন, ‘সরকারি দপ্তরের ক্ষেত্রে আদালত অবমাননা হয় না।’

জেলা প্রশাসন ও বন্দর সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালের ১২ জুলাই সিটি করপোরেশনের তৎকালীন মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী এবং চট্টগ্রামের তৎকালীন জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান ওই এলাকা পরিদর্শন করেন এবং নিজেদের মালিকানার সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেন। এ ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসনের বক্তব্য ছিল জায়গাটি ১ নম্বর খাস খতিয়ানভুক্ত।

জমি বরাদ্দ পাওয়ার বিষয়ে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ভূমি শাখার প্রধান মো. জিল্লুর রহমান বলেন, ‘যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আমরা পার্ক করার জন্য জায়গাটি বন্দরের কাছ থেকে নিয়েছি। টাকা জমা দিয়েছি। বরাদ্দপত্রটা নেওয়ার পর ৮ ডিসেম্বর জায়গাটা বুঝে নেব।’

এই জায়গা নিয়ে মামলার বিষয়টি জানতে চাইলে জিল্লুর রহমান বলেন, ‘বন্দর আমাদের লিজ দিচ্ছে। মামলা মোকদ্দমার বিষয়টি আমাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়।’

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের ভূমি শাখার তথ্যমতে, ১৮৮৫ সালে তৎকালীন সরকার বিরোধপূর্ণ জমিটি চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষকে হস্তান্তর করে। পরে ভুলবশত বিএস রেকর্ড বন্দরের নামে হয়নি। বিষয়টি নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ চট্টগ্রামের যুগ্ম জজ আদালত-১ একটি মামলা বিচারাধীন রয়েছে।

এই বিষয়ে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশনের মহাসচিব অ্যাডভোকেট জিয়া হাবিব আহসান বলেন, ‘মামলা চলা অবস্থায় এই ধরনের লিজ আদালত অবমাননার শামিল। এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে সতর্ক থাকা উচিত।’

কর্ণফুলী নদীর তীরঘেঁষে শিশুপার্ক ও খেলার মাঠ নির্মাণকে কেন্দ্র করে এই জমি নিয়ে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসন ও বন্দর কর্তৃপক্ষের বিরোধ মীমাংসায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি হয়েছিল। ২০২৩ সালের ২৩ আগস্ট নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের চট্টগ্রাম বন্দর অধিশাখার উপসচিব মো. লুৎফর রহমান স্বাক্ষরিত আদেশে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তিন সদস্যের এই কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মুন্সী মনিরুজ্জামানকে। কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন মোংলা বন্দরের উপসচিব মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান ও উপসচিব টি এ মোহাম্মদ আমিনুর রহমান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তর্কে জড়ানো চিকিৎসককে বরখাস্তের নির্দেশ ডিজির

‘মানসিকভাবে অসুস্থ’ ইমরান খান ‘গাদ্দার’ শেখ মুজিবুর রহমানের ভক্ত—পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনীর ঔদ্ধত্যপূর্ণ বিবৃতি

সবকিছু প্রস্তুত হচ্ছে, তারেক রহমান ফিরবেন যেকোনো সময়: আমীর খসরু

শেখ হাসিনা যত দিন ইচ্ছা ভারতে থাকতে পারবেন কি—জবাবে যা বললেন জয়শঙ্কর

কর্মী নেবে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, নেই বয়সসীমা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মৃত নবজাতক নিয়ে থানায় হাজির মা-বাবা, হাসপাতালে ভুল চিকিৎসার অভিযোগ

শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
মৃত নবজাতককে নিয়ে থানায় যান স্বজনেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
মৃত নবজাতককে নিয়ে থানায় যান স্বজনেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

গাজীপুরের শ্রীপুরে একটি হাসপাতালে চিকিৎসক ছাড়াই নার্সকে দিয়ে প্রসূতির সন্তান ভূমিষ্ঠের চেষ্টা করার পর নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার বিচার চেয়ে আজ শনিবার রাতে মৃত নবজাতককে নিয়েই থানায় হাজির হন মা-বাবাসহ স্বজনেরা।

এর আগে আজ দুপুরে উপজেলার মাওনা চৌরাস্তা এলাকার আল রাজি হাসপাতালে নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের আজুগিরচালা গ্রামের মো. নাজমুল ইসলাম ও শারমিন আক্তার দম্পতির সন্তান ছিল সে।

নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘আজ সকাল সাড়ে ৮টার দিকে স্ত্রী শারমিন আক্তারকে সিজারিয়ান অপারেশন করানোর জন্য মাওনা চৌরাস্তা এলাকার আল রাজি হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ১৩ হাজার টাকায় চুক্তি করা হয়। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমার স্ত্রীর সিজারিয়ান অপারেশন না করে নরমাল ডেলিভারি করানোর চেষ্টা করে সময়ক্ষেপণ করে।’ তিনি বলেন, ‘হাসপাতালে কোনো ডাক্তার ছিল না। কল্পনা নামে একজন নার্স ডেলিভারির কাজ করে। যার কারণে নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে। আমরা প্রতিবাদ করলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাদের সঙ্গে খারাপ আচার-আচরণ করে। বিচারের জন্য নবজাতকের মরদেহ নিয়ে থানায় হাজির হয়েছি।’

নবজাতকের মা শারমিন আক্তার বলেন, ‘আমাকে হাসপাতালে ভর্তি করানোর পর থেকে কয়েকটি ইনজেকশন পুশ করে। এরপর কয়েকজন নার্স আমাকে অনেক কষ্ট দেয়। একপর্যায়ে জরায়ুর মুখ কেটে মৃত নবজাতক বের করে।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আল রাজি হাসপাতালের ম্যানেজার মো. রাসেল মিয়া বলেন, ‘আজ হাসপাতালে কোনো চিকিৎসক ছিল না। তাই আমি নার্স কল্পনাকে রোগী না ভর্তি করতে নিষেধ করি। পরে কী করে রোগী হাসপাতালে ভর্তি হলো, বলতে পারব না।’

নার্স কল্পনা আক্তার বলেন, ‘আমি কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় নার্স নই। অভিজ্ঞতা রয়েছে। কয়েক বছর যাবৎ অপারেশন থিয়েটারে কাজ করছি। আজ চিকিৎসক ছিল না। রোগীর অবস্থা খারাপ ছিল, এ জন্য আমি বাচ্চা ডেলিভারি করানোর চেষ্টা করি। যখন বাচ্চা হলো, নবজাতক কোনো কান্না করেনি। অন্য হাসপাতালে শিশু বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলে চিকিৎসক জানায় নবজাতক মারা গেছে। ’

শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি অবগত হয়েছি। জেলা সিভিল সার্জন স্যারকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। সিভিল সার্জনের নির্দেশনায় পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

শ্রীপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. রবিউল ইসলাম বলেন, ‘নবজাতকের স্বজনেরা মরদেহ নিয়ে থানায় এসেছে। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। ন্যায়বিচারের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে স্বজনদের। এ বিষয়ে পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তর্কে জড়ানো চিকিৎসককে বরখাস্তের নির্দেশ ডিজির

‘মানসিকভাবে অসুস্থ’ ইমরান খান ‘গাদ্দার’ শেখ মুজিবুর রহমানের ভক্ত—পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনীর ঔদ্ধত্যপূর্ণ বিবৃতি

সবকিছু প্রস্তুত হচ্ছে, তারেক রহমান ফিরবেন যেকোনো সময়: আমীর খসরু

শেখ হাসিনা যত দিন ইচ্ছা ভারতে থাকতে পারবেন কি—জবাবে যা বললেন জয়শঙ্কর

কর্মী নেবে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, নেই বয়সসীমা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শিবচরে ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে মশাল মিছিল, অবরোধ কামাল সমর্থকদের

শিবচর (মাদারীপুর) প্রতিনিধি
কামাল জামান মোল্লার অনুসারীরা মহাসড়কে মশাল মিছিল করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
কামাল জামান মোল্লার অনুসারীরা মহাসড়কে মশাল মিছিল করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

মাদারীপুর-১ আসনে বিএনপির নতুন প্রার্থীর মনোনয়ন প্রত্যাহার চেয়ে ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে অবরোধ করেছেন কামাল জামান মোল্লার সমর্থকেরা। আজ শনিবার (৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় শিবচরের ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ের মাদবরের চর ইউনিয়নের মোল্লার বাজার এলাকায় মহাসড়ক অবরোধ করেন তাঁরা। দেড় ঘণ্টা ধরে চলা অবরোধের জেরে মহাসড়কে যানবাহন চলাচল থমকে যায়। এই সময় এক্সপ্রেসওয়ের উভয় লেনে শত শত যান আটকে পড়ে। এতে ভোগান্তিতে পড়েন চালক ও যাত্রীরা।

কামাল জামান মোল্লার অনুসারীরা মহাসড়কে মশাল মিছিল করেন। তাঁরা বিএনপির নতুন প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল করে কামাল জামান মোল্লাকে পুনরায় ধানের শীষের প্রতীকে প্রার্থী করার দাবি জানান। পরে তিন দিনের আলটিমেটাম দিয়ে অবরোধ প্রত্যাহার করেন বিক্ষুব্ধরা।

অবরোধ চলাকালে বক্তারা বলেন, ‘শিবচরে বিএনপি নেতা কামাল জামান মোল্লা একজন জনপ্রিয় নেতা। তাঁর মনোনয়ন স্থগিত করা হয়েছিল। হঠাৎ বৃহস্পতিবার অন্য একজনকে মনোনয়ন দেয় বিএনপি। আমরা এই মনোনয়ন প্রত্যাহার এবং কামাল জামান মোল্লার মনোনয়ন বহাল রাখার দাবি জানাই।’

শিবচর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সাজাহান মোল্লা সাজু বলেন, ‘আমরা কামাল জামান মোল্লার মনোনয়ন বহাল চাই। কোনো ষড়যন্ত্র মানি না। মনোনয়ন বহাল না রাখলে বড় কর্মসূচি দেওয়া হবে।’

জানা গেছে, গত ৩ নভেম্বর মাদারীপুর-১ আসনে কামাল জামান মোল্লাকে বিএনপির পক্ষ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। এক দিন পর অনিবার্য কারণে বিএনপির হাইকমান্ড তাঁর মনোনয়ন স্থগিত করে। এক মাস পর গত ৪ ডিসেম্বর মাদারীপুর-১ আসনে বিএনপির মনোনয়ন দেওয়া হয় শিবচর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নাদিরা আক্তারকে। বিএনপির এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এবং পুনরায় মনোনয়ন ফিরে পেতে কামাল জামান মোল্লার সমর্থকেরা বিক্ষোভ করছেন।

জানতে চাইলে শিবচর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহুরুল ইসলাম বলেন, সন্ধ্যার দিকে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। পরে অবরোধ প্রত্যাহার করে নিলে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তর্কে জড়ানো চিকিৎসককে বরখাস্তের নির্দেশ ডিজির

‘মানসিকভাবে অসুস্থ’ ইমরান খান ‘গাদ্দার’ শেখ মুজিবুর রহমানের ভক্ত—পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনীর ঔদ্ধত্যপূর্ণ বিবৃতি

সবকিছু প্রস্তুত হচ্ছে, তারেক রহমান ফিরবেন যেকোনো সময়: আমীর খসরু

শেখ হাসিনা যত দিন ইচ্ছা ভারতে থাকতে পারবেন কি—জবাবে যা বললেন জয়শঙ্কর

কর্মী নেবে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, নেই বয়সসীমা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শিশুর জটিল চিকিৎসা নিয়ে প্রশিক্ষণ আদান-প্রদান ৮০ চিকিৎসকের

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালে কর্মশালায় অংশ নেওয়া চিকিৎসকেরা। ছবি: সংগৃহীত
চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালে কর্মশালায় অংশ নেওয়া চিকিৎসকেরা। ছবি: সংগৃহীত

চিকিৎসকদের দক্ষতা বৃদ্ধি এবং চিকিৎসাবিজ্ঞানের নতুন নতুন বিষয়ের ওপর জ্ঞান অর্জনে চট্টগ্রামে এক কর্মশালায় অংশ নিলেন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালের ৮০ জন শিশুচিকিৎসক। শিশু ক্রিটিক্যাল কেয়ারবিষয়ক এ কর্মশালা প্রথমবারের মতো ঢাকার বাইরে চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালে অনুষ্ঠিত হয়। দুই দিনব্যাপী এ কর্মশালার শেষ দিন ছিল শনিবার (৬ ডিসেম্বর)। এর আয়োজন করে চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের শিশুস্বাস্থ্য বিভাগ ও বাংলাদেশ একাডেমি অব পেডিয়াট্রিক অ্যান্ড নিওনেটাল ক্রিটিক্যাল কেয়ার।

কর্মশালায় প্রশিক্ষক ছিলেন ঢাকা থেকে আসা দেশের প্রখ্যাত নবজাতক ও শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল অ্যান্ড ইনস্টিটিউটের পেডিয়েট্রিক একাডেমিক প্রধান অধ্যাপক মনির হোসেন, বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল অ্যান্ড ইনস্টিটিউটের নিউনেটালজির ডেপুটি একাডেমিক কো-অর্ডিনেটর অধ্যাপক মাহফুজা শিরীন, বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল অ্যান্ড ইনস্টিটিউটের পেডিয়েট্রিক কার্ডিওলজি একাডেমির সেক্রেটারি অধ্যাপক মো. আবদুল্লাহ আল মামুন, পেডিয়েট্রিক কার্ডিয়েক্ট ইনসেপটিক কেয়ার হার্ট ফাউন্ডেশন অ্যান্ড আরআইরের এম নুরুল আকতার হাসান, সহকারী অধ্যাপক আকতার হোসেন মাসুদ, সহকারী অধ্যাপক আবু তালহা, ঢাকা এভারকেয়ার হাসপাতালের পেডিয়েট্রিক ক্রিটিক্যাল কেয়ারের কনসালট্যান্ট নুরুন নাহার ও চট্টগ্রাম অ্যাপোলো ইম্পেরিয়াল হাসপাতালের পেডিয়েট্রিক ক্রিটিক্যাল কেয়ারের অ্যাসোসিয়েট কনসালট্যান্ট সাদিয়া আফরিন।

শিশুস্বাস্থ্য বিভাগের বিভাগীয়প্রধান অধ্যাপক দিদারুল আলমের সভাপতিত্বে কর্মশালার সমাপনী ও সনদপত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন হাসপাতালের কার্যনির্বাহী কমিটির প্রেসিডেন্ট সৈয়দ মোহাম্মদ মোরশেদ হোসেন, ভাইস প্রেসিডেন্ট আবদুল মান্নান রানা, জেনারেল সেক্রেটারি মোহাম্মদ রেজাউল করিম আজাদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যক্ষ লায়ন মোহাম্মদ সানাউল্লাহ, পরিচালক (প্রশাসন) মো. নূরুল হক, পরিচালক (অটিজম ও শিশু বিকাশকেন্দ্র) অধ্যাপক মাহমুদ আহমেদ চৌধুরী আরজু, ইনস্টিটিউট অব চাইল্ড হেলথের পরিচালক অধ্যাপক ওয়াজির আহমেদ, পরিচালক (মেডিকেল অ্যাফেয়ার্স) এ কে এম আশরাফুল করিম, শিশুস্বাস্থ্য বিভাগের অধ্যাপক গুলশান আরা, উপপরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মদ মোশাররফ হোসাইন, উপপরিচালক (প্রশাসন, আইসিএইচ) মো. আবু সৈয়দ চৌধুরী প্রমুখ।

কর্মশালায় কো-অর্ডিনেটরের দায়িত্বে ছিলেন চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের পেডিয়েট্রিক আইসিইউর সহকারী অধ্যাপক মিশু তালুকদার এবং সঞ্চালনায় ছিলেন শিশুস্বাস্থ্য বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ফাহিম হাসান রেজা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তর্কে জড়ানো চিকিৎসককে বরখাস্তের নির্দেশ ডিজির

‘মানসিকভাবে অসুস্থ’ ইমরান খান ‘গাদ্দার’ শেখ মুজিবুর রহমানের ভক্ত—পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনীর ঔদ্ধত্যপূর্ণ বিবৃতি

সবকিছু প্রস্তুত হচ্ছে, তারেক রহমান ফিরবেন যেকোনো সময়: আমীর খসরু

শেখ হাসিনা যত দিন ইচ্ছা ভারতে থাকতে পারবেন কি—জবাবে যা বললেন জয়শঙ্কর

কর্মী নেবে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, নেই বয়সসীমা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত