Ajker Patrika

খতনা করাতে গিয়ে শিশু আহনাফের মৃত্যু: ২ চিকিৎসকের জামিন নামঞ্জুর

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
খতনা করাতে গিয়ে শিশু আহনাফের মৃত্যু: ২ চিকিৎসকের জামিন নামঞ্জুর

রাজধানীর মালিবাগে জে এস ডায়াগনস্টিক সেন্টারে খতনা করাতে গিয়ে শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেপ্তার দুই চিকিৎসকের জামিন নামঞ্জুর করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মেহেদী হাসান জামিন নামঞ্জুর করেন। 

দুই চিকিৎসক হলেন—জে এস ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পরিচালক ডা. এস এম মুক্তাদির ও মাহাবুব মোরশেদ। আদালতের হাতিরঝিল থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা এসআই এশারত হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

গত ২১ ফেব্রুয়ারি দুজনকে কারাগারে পাঠানো হয়। সঙ্গে দুই দিন জেল গেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দেওয়া হয়। 

এর আগে গত ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে মালিবাগ চৌধুরীপাড়ার জে এস ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড মেডিকেল চেকআপ সেন্টারে খতনা করাতে গিয়ে শিশু মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী শিশুর নাম আহনাফ তাহমিদ (১০)। সে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুলে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ত। 

এ ঘটনায় শিশুর বাবা মোহাম্মদ ফখরুল আলম বাদী হয়ে রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় মামলা করেন। মামলায় তিনজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় ৩-৪ জনকে আসামি করা হয়েছে। 

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত ১৯ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ৮টার দিকে আহনাফ তাহমিদকে সুন্নতে খতনা করানোর জন্য তাঁর বাবা ফখরুল আলম হাতিরঝিল থানার জেএস হাসপাতালের চিকিৎসক এস এম মুক্তাদিরের কাছে নিয়ে যান। তিনি ওই সময় কিছু টেস্ট লিখে দেন। ওই হাসপাতালেই টেস্টগুলো করে ছেলেকে নিয়ে বাসায় চলে যান। রাতে চিকিৎসক ফোন করে জানান, রিপোর্টগুলো ভালো আছে। সুন্নতে খতনা করতে কোনো সমস্যা নেই। পরদিন ২০ ফেব্রুয়ারি রাত পৌনে ৮টায় ছেলের সুন্নতে খতনা করানোর জন্য স্ত্রী খায়রুন নাহারকে সঙ্গে নিয়ে তিনি হাসপাতালে যান। পরে ছেলেকে অপারেশন থিয়েটার নিয়ে যাওয়া হয়। আসামিরা জানান, তাদের ২০-২৫ মিনিট সময় লাগবে। তখন আহনাফের বাবা-মা বাইরে অপেক্ষা করতে থাকেন। ৩০-৩৫ মিনিট পর ওটি রুমের দরজায় নক করলে তাঁরা জানান, আরও কিছুক্ষণ সময় লাগবে। এভাবে এক ঘণ্টা পার হওয়ার পর আহনাফের বাবা ফখরুল ওটি রুমে প্রবেশ করতে চাইলে তাঁকে নিষেধ করে আরও কিছু সময় অপেক্ষা করতে বলা হয়। 

পরবর্তীতে সন্দেহ হলে ফখরুল জোর করে ওটি রুমে প্রবেশ করেন। সেখানে দেখতে পান, তাঁর ছেলে অচেতন অবস্থায় পড়ে আছে। আহনাফের বুকে হাত দিয়ে চাপাচাপি করছে এবং নাকে ও মুখে নল দিয়ে রক্ত বের হওয়া অবস্থায় দেখেন। তখন চিকিৎসক এস এম মুক্তাদিরকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি সঠিক উত্তর দেননি। ছেলের এই অবস্থা দেখে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য অন্য হাসপাতালে নিয়ে যেতে চাইলে তারা কর্ণপাত না করে নিজেরাই তার বুকে চাপাচাপি, হাত-পা মালিশ করতে থাকেন। 

তখন জোর করে তাকে ওটি রুম থেকে বের করে দেন তারা। দুই ঘণ্টা পার হলেও তারা ছেলের বর্তমান শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে সঠিক তথ্য না দিয়ে কালক্ষেপণ করতে থাকেন। পরে আবার জোর করে ওটি রুমে প্রবেশ করে ফখরুল জানতে পারেন তার ছেলে আহনাফ তাহমিদ মারা গেছে। এরপরই দুই চিকিৎসককে গ্রেপ্তার করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাসার বাথরুমে পড়ে ছিল নারী প্রভাষকের লাশ, মাথায় আঘাতের চিহ্ন

বগুড়া প্রতিনিধি
ফাবিয়া তাসনিম সিধি। ছবি: সংগৃহীত
ফাবিয়া তাসনিম সিধি। ছবি: সংগৃহীত

বগুড়ার এক বাসা থেকে ফাবিয়া তাসনিম সিধি (২৯) নামের এক প্রভাষকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে বগুড়া শহরের চক ফরিদ এলাকায় ভাড়া বাসা থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।

মৃত ফাবিয়া বগুড়ার সরকারি শাহ সুলতান কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রভাষক। বছর দেড়েক আগে তিনি কলেজটিতে যোগদান করেন।

এই তথ্য নিশ্চিত করে বগুড়া সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাহফুজার রহমান জানান, ফাবিয়া অবিবাহিত। তিনি বগুড়া শহরের চক ফরিদ এলাকায় ডা. রাশেদুল হাসানের বাড়ির তিনতলায় ভাড়া বাসায় তাঁর মায়ের সঙ্গে থাকতেন। কয়েক দিন আগে তাঁর মা গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহে যান। গতকাল দুপুরের পর থেকে মেয়েকে ফোনে না পাওয়ায় তাঁর মা রাত ১০টার দিকে বগুড়া আসেন। অনেক ডাকাডাকি করে দরজা না খোলায় পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পরে পুলিশ সেখানে গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের উপস্থিতিতে দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে বাসার বাথরুমে ফাবিয়ার লাশ দেখতে পায়।

পুলিশ জানায়, মৃত ব্যক্তির নাক দিয়ে রক্ত ঝরছিল এবং মাথার পেছনে আঘাতের চিহ্ন ছাড়াও জিবে দাঁত দিয়ে কামড় দেওয়া ছিল। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মাহফুজার রহমান বলেন, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া গেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

অটোরিকশাকে চাপা দিল বাস, প্রাণ গেল তিনজনের

ফরিদপুর প্রতিনিধি
বাসচাপায় অটোরিকশাটি ভেঙেচুরে গেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
বাসচাপায় অটোরিকশাটি ভেঙেচুরে গেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় বাসের চাপায় একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার তিন যাত্রী নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় শিশুসহ আরও চারজন আহত হয়। আজ শুক্রবার বেলা পৌনে ১২টার দিকে ফরিদপুর-ভাঙ্গা-বরিশাল মহাসড়কের কৈডুবী সদরদি রেলক্রসিং এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সোহেল মিয়া এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে দুজন নারী ও একজন পুরুষ। তাৎক্ষণিকভাবে তাঁদের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি।

খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার অভিযান চালান। আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে ভাঙ্গা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়েছে।  

হাইওয়ে থানার এসআই সোহেল মিয়া বলেন, অটোরিকশাটি ভাঙ্গা থেকে টেকেরহাটের উদ্দেশে যাচ্ছিল। কৈডুবী সদরদি রেলক্রসিং এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা নিউ মডার্ন পরিবহনের একটি বাস অটোরিকশাটিকে চাপা দেয়। এই ঘটনায় বাসটি আটক করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাতিয়ায় ৫৬০০ কেজি জাটকা ইলিশ জব্দ, এতিমখানায় বিতরণ

­হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
কোস্ট গার্ডের অভিযানে জব্দ জাটকা ইলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
কোস্ট গার্ডের অভিযানে জব্দ জাটকা ইলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

নোয়াখালীর হাতিয়ার জাগলার চর এলাকার মেঘনা নদীতে অভিযান চালিয়েছে কোস্ট গার্ড। এ সময় একটি নৌকা থেকে ৫ হাজার ৬০০ কেজি জাটকা ইলিশ জব্দ করা হয়। এই ঘটনায় আটক কয়েকজন মাঝিমাল্লার কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে কোস্ট গার্ড হাতিয়ার একটি দল এই অভিযান চালায়। জব্দ করা জাটকাগুলোর মূল্য প্রায় ২৮ লাখ টাকা।

কোস্ট গার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট মো. আবুল কাশেম জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মেঘনা নদীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে কোস্ট গার্ড। অভিযানে মেঘনা নদীর জাগলার চর এলাকায় একটি কাঠের নৌকায় তল্লাশি করা হয়। ওই নৌকা থেকে ৫ হাজার ৬০০ কেজি জাটকা জব্দ করা হয়। এ সময় মাঝিদের মুচলেকা নিয়ে নৌকা ছেড়ে দেওয়া হয়। জব্দ মাছগুলো মৎস্য কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে এতিমখানা ও দুস্থ ব্যক্তিদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। মৎস্য সম্পদ রক্ষায় কোস্ট গার্ডের এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মাঠে পড়ে ছিল মাছ ব্যবসায়ীর রক্তাক্ত লাশ

ফরিদপুর প্রতিনিধি
ঘটনাস্থলে স্থানীয় বাসিন্দারা জড়ো হন। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঘটনাস্থলে স্থানীয় বাসিন্দারা জড়ো হন। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফরিদপুরের সালথায় উৎপল সরকার (৩৫) নামের এক মাছ ব্যবসায়ীর রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের গৌরদিয়া এলাকার কালীতলা ব্রিজ-সংলগ্ন মাঠ থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় মাঠ-সংলগ্ন সেতু থেকে চোখ বাঁধা অবস্থায় থাকা ফিরোজ মোল্যা নামের এক ভ্যানচালককে জীবিত উদ্ধার করে স্থানীয় লোকজন।

নিহত উৎপল ফরিদপুর জেলা সদরের কানাইপুর ইউনিয়নের রনকাইল গ্রামের অজয় সরকারের ছেলে। তাঁর স্ত্রী ও আড়াই বছর বয়সী এক শিশুসন্তান রয়েছে।

থানা-পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ ভোরে সড়কের পাশে ফাঁকা মাঠে রক্তাক্ত অবস্থায় একটি লাশ দেখতে পায় স্থানীয় লোকজন। পাশেই একটি সেতুর সঙ্গে একই গ্রামের ভ্যানচালক ফিরোজ মোল্যাকে চোখ বাঁধা অবস্থায় বেঁধে রাখা হয়েছিল। পরে স্থানীয় বাসিন্দাদের হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি খুলে বলেন তিনি।

ভ্যানচালকের বরাত দিয়ে রনকাইল গ্রামের বাসিন্দা ও প্রতিবেশী কাজী শাহীন বলেন, উৎপল সরকার ব্যাটারিচালিত ভ্যানে করে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে মাছ কিনতে যাচ্ছিলেন। পথে অজ্ঞাতপরিচয় তিন-চার ব্যক্তি দেশীয় অস্ত্রের মুখে ভ্যানচালক ফিরোজ মোল্যাকে গামছা দিয়ে চোখ বেঁধে ব্রিজের রেলিংয়ে বেঁধে ফেলে। তারা উৎপলের সঙ্গে থাকা টাকাপয়সা লুট করে তাঁকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে সালথা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কে এম মারুফ হাসান রাসেল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দুই থেকে তিনজন দুর্বৃত্ত ঘটনাটি ঘটিয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। তবে এটাকে ডাকাতি বলা যায় না। ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত চলমান। তদন্ত শেষে মূল কারণ বলা যাবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত