Ajker Patrika

ঢাবি ছাত্রীকে যৌন হেনস্তাকারীর পক্ষে নামা ‘তৌহিদী জনতার’ আড়ালে এরা কারা

আপডেট : ০৭ মার্চ ২০২৫, ১০: ১৯
ঢাবি ছাত্রীকে যৌন হেনস্তাকারীর পক্ষে নামা ‘তৌহিদী জনতার’ আড়ালে এরা কারা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীকে ‘পর্দা না করা’ নিয়ে হেনস্তার ঘটনায় মোস্তফা আসিফ অর্ণব নামের এক ব্যক্তিকে আটক করে রাজধানীর শাহবাগ থানায় নেওয়া হয়। তবে অভিযুক্তকে ছাড়িয়ে আনতে বুধবার (৫ মার্চ) মধ্যরাতে স্বঘোষিত ‘তৌহিদী জনতা’ থানার সামনে ও ভেতরে অবস্থান নেয়। পরদিন বৃহস্পতিবার ঢাকার প্রধান মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালত থেকে তাঁকে জামিন দেওয়া হয়। এ সময়ও অর্ণবের সঙ্গে ছিল ‘তৌহিদী জনতা’।

শাহবাগ থানা ও আদালতে অবস্থান নেওয়া এই ‘তৌহিদী জনতা’ কারা? তা যাচাই-বাছাই করেছেন ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির ফ্যাক্ট চেক বিভাগের বাংলাদেশ সম্পাদক কদরুদ্দিন শিশির। এ নিয়ে তিনি নিজের ফেসবুক ওয়ালে একটি পোস্ট দিয়েছেন।

ওই পোস্টে কদরুদ্দিন লিখেছেন, হেনস্তাকারীকে বের করে এনে গলায় ফুল, হাতে পবিত্র কোরআন আর মাথায় পাগড়ি পরিয়ে মিছিল দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনাকে আরও অনেক ঘটনার মতো ‘তৌহিদী জনতার’ কাণ্ড বলে প্রচার করা হচ্ছে। এখানে ‘তৌহিদী জনতা’ বলতে ‘ধার্মিক আমপাবলিক’ বলেই বোঝানো হচ্ছে।

কিন্তু এ ঘটনার সঙ্গে সাম্প্রতিক অতীতে আরও কয়েকটি ঘটনার ছবি বিশ্লেষণ করে মনে হচ্ছে, শাহবাগের এ ঘটনা (এবং এরকম ‘তৌহিদী জনতার’ কাণ্ড বলে চালানো) আরও অনেক ঘটনা র‍্যানডম ‘ধার্মিক আমপাবলিক’-এর তাৎক্ষণিক ক্ষোভ থেকে উৎসারিত স্বতঃস্ফূর্ত ঘটনা নয়, বরং এগুলো কো-অর্ডিনেটেড ঘটনা।

আমি সাম্প্রতিক তিনটি ঘটনার কিছু ছবি/ফুটেজ বিশ্লেষণ করেছি। ঘটনা তিনটি হলো, গত নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে প্রথম আলো পত্রিকার সামনে দুই দিনব্যাপী বিক্ষোভ এবং গরু জবাই কর্মসূচি, ডেইলি স্টার পত্রিকার ভবনের গেট বন্ধ করে বিক্ষোভ ও জুমার নামাজ আদায় কর্মসূচি এবং গতকাল রাতে শাহবাগ থানায় আটক নারী হয়রানিকারী যুবককে ছাড়িয়ে নেওয়ার ঘটনা।

এই তিন ঘটনায় কয়েক শ লোককে জড়ো করে সামনের সারিতে থেকে তাদের নেতৃত্ব দেওয়া অন্তত তিনজন সব জায়গায় কমন।

তাঁদের মধ্যে দুজনের নাম ও পরিচয় জানা গেছে। একজন আবু সাঈদ শের মোহাম্মদ খান, যাঁর ফেসবুক প্রোফাইল Sher Muhammad। শের মোহাম্মদকে ২০২২ সালের নভেম্বর মাসে জামাআতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বিয়ার অর্থ সরবরাহকারী সদস্য হিসেবে আটক করে র‍্যাব। অনলাইন শরিয়াহ গ্র্যাজুয়েশন ইনস্টিটিউট নামে একটি প্রতিষ্ঠানের পরিচালক তিনি। ৫ আগস্টের পর আল-কায়েদার কালো পতাকার সমর্থনে প্রচারণা চালাতে দেখা যায় তাঁকে। ২০১৫ সালে হাটহাজারিতে তাঁর বিরুদ্ধে সন্ত্রাস দমন আইনে একটি মামলা হয়।

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের সামনে বিক্ষোভে তাঁকে নেতৃত্ব দিতে একাধিক ভিডিওতে দেখা গেছে। শাহবাগের গত রাতের ঘটনায় তাকে ‘আমির‘ হিসেবে ঘোষণা করে একটি ভিডিও বক্তব্য দিয়েছেন আতাউর রহমান বিক্রমপুরী, (যাঁর পরিচয় নিচে দেওয়া হল)।

দ্বিতীয় ব্যক্তি হলেন আতাউর রহমান বিক্রমপুরী। তিনি প্রথম আলোর সামনের বিক্ষোভে এবং সেখান থেকে আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া কয়েকজনকে থানা থেকে জোরপূর্বক ছাড়িয়ে নেওয়ায় তিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং শাহবাগ থেকে নারী হয়রানিকারী ছাড়িয়ে নিতেও তিনি যশোর থেকে ঢাকায় এসে নেতৃত্ব দিয়েছেন।

বিক্রমপুরী তাঁর ওয়াজ, অনলাইন বয়ান ও ফেসবুকে অতি উগ্র কথাবার্তা প্রচারের জন্য পরিচিত। সম্প্রতি তিনি তাঁর এক ফেসবুক পোস্টে বায়তুল মোকাররমের বর্তমান খতিব মাওলানা আব্দুল মালেককে মুনাফেক ও ‘তাগুতের কুকুর’ বলে অভিহিত করেন। এ ছাড়া তিনি ‘অ্যান্টি শাতিম মুভমেন্ট’ নামে একটি ফেসবুক পেজ চালান, যেখানে গত ২২ ফেব্রুয়ারি এক পোস্টে ’শাতিমে রসুল’ হিসেবে কাউকে চিহ্নিত করা গেলে তাকে হত্যার আহ্বান জানানো হয়।

জঙ্গি-২

গণতন্ত্র চর্চাকারী মুসলিমদের ‘কাফির’ মনে করে তিনি নিয়মিত পোস্ট করেন এবং বয়ান করেন। নাস্তিকদের হত্যা করার জন্যও তিনি উসকানি দেন। আইএসকে খারেজি মনে করলেও আল-কায়দা ও তালেবানকে হকপন্থী দল বলে প্রচারণা চালান।

২০২১ সালে তাঁকে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সদস্য হিসেবে গ্রেপ্তার করা হয়। আতাউর কারাগারে থাকা জঙ্গিদের মুক্তির জন্য কাজ করা বৈষম্যহীন কারামুক্তি আন্দোলনের একজন কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক। এবং ৫ আগস্টের পর তিনি তাঁর দলবল নিয়ে কাশিমপুর কারাগার থেকে জঙ্গিদের মুক্ত করে আনার জন্য জড়ো হয়ে কর্মকর্তাদের জেরা করেন।

তৃতীয় আরেকজনকে ওপরের তিনটি ঘটনায়ই শের মোহাম্মদের পাশে থেকে নেতৃত্ব দিতে দেখা গেছে, কিন্তু তার পরিচয় জানা যায়নি।

অর্থাৎ, ‘তৌহিদী জনতা‘র স্বতঃস্ফূর্ত কাণ্ড বলে প্রচার চালানো হলেও দেখা যাচ্ছে এই ঘটনাগুলোতে মানুষ জড়ো করার পেছনে উগ্রপন্থী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সক্রিয় ব্যক্তিদের কো-অর্ডিনেশনের বিষয়টি স্পষ্ট।

‘তৌহিদী জনতার’ অপর এক যুবক আরমান উদ্দিন সম্পর্কে শিশির লিখেছেন, গতকাল থেকে শাহবাগের ঘটনায় এই ছেলের বেশ কিছু ভিডিও দেখেছিলাম। সে ঘটনাস্থল থেকে নানান আপডেট দিচ্ছিল নারী হয়রানিকারী ছেলেটিকে ছাড়িয়ে আনার বিষয়ে। মানে, শাহবাগের মবে সে অন্যতম সক্রিয় একজন ছিল।

কিন্তু আজ (বৃহস্পতিবার) বিকেল থেকে আইডিটি লক করেছে তার পুরোনো কয়েকটি পোস্টের স্ক্রিনশট ভাইরাল হওয়ার পর। ওই সব পোস্টে দেখা যাচ্ছে ছাত্রলীগের তার এলাকার নেতাদের নানান সময়ে অভিনন্দন জানাতে।

আমার আগের পোস্টটির পর কয়েকজন আমাকে বইমেলায় গত ১০ ফেব্রুয়ারি সব্যসাচী প্রকাশনীর স্টলে হামলায়ও শাহবাগ থানার (ও প্রথম আলো ডেইলি স্টারে জমায়েত করা) গ্রুপটির জড়িত থাকার সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে।

জঙ্গি-৩

আমি বইমেলায় হামলার সময়ের ও পরবর্তী কয়েকটি ভিডিও দেখে নিশ্চিত হয়েছি ‘আরমান উদ্দিন’ নামের এই ছেলে সব্যসাচীর স্টলে জড়ো হওয়া গ্রুপটির নেতৃত্বে ছিল। তবে বিক্রমপুরী/শের মোহাম্মদকে বইমেলার কোনো ভিডিওতে দেখা যায়নি বা তাদের গ্রুপের সঙ্গে আরমান উদ্দিন বা ওই দিনের ঘটনায় নেতৃত্ব দেওয়া অন্যদের সংযোগ থাকার তেমন কোনো ভিজুয়াল অ্যাভিডেন্স এখনো পর্যন্ত পাইনি।

তবে বিষয়টি ইন্টারেস্টিং যে, বইমেলায় মব হামলার ঘটনায় নেতৃত্ব দেওয়া আরমান উদ্দিন শাহবাগের মবেও সক্রিয় ছিলেন।

কদরুদ্দিন শিশির আরও লেখেন, তৃতীয় যে ব্যক্তিটির পরিচয় তখন পাইনি, তিনি হচ্ছেন মোহাম্মদ তামিম (তাঁর ফেসবুক আইডি মতে)। তিনি সরকারি ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজের ছাত্র বলে অনলাইনে পাওয়া ওই কলেজের একটি ভিডিও থেকে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

এ ছাড়া তাঁর বাসা মিরপুর ১০ এলাকায় বলে জানিয়েছেন ওই এলাকার এক বাসিন্দা, যিনি তামিমকে ব্যক্তিগতভাবে চেনেন।

ওই বাসিন্দা আরও জানান, তামিম কয়েক বছর আগের উগ্রপন্থী কার্যকলাপের জন্য গ্রেপ্তার হয়েছিলেন এবং পরে জামিনে বের হন। তামিমের ফেসবুক আইডিতে ৫ আগস্টের পর এক পোস্টেও তার ২০১৫ সালে কারাগারে থাকার স্মৃতির কথা উল্লেখ করেছেন। তবে তাঁর গ্রেপ্তার হওয়ার পেছনের কারণ কী ছিল তা উল্লেখ নেই। আমিও অনলাইনে কোনো ক্রেডিবল সূত্র থেকে তাঁর গ্রেপ্তারের পেছনের কারণটি পাইনি। পেলে পোস্টে আপডেট করে দেব।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খুলনা-৩ আসনে তিন স্বতন্ত্র প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল, বৈধ ৯টি

খুলনা প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

খুলনা-৩ (খালিশপুর-দৌলতপুর-খানজাহান আলী-আড়ংঘাটা) আসনে তিন স্বতন্ত্র প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। এই আসনে ১২ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। যাচাই-বাছাই শেষে ৯ জনের মনোনয়ন বৈধ এবং ৩ জনের মনোনয়ন বাতিল ঘোষণা করা হয়। আজ বুধবার দুপুরে আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ফয়সাল কাদের এই তথ্য জানান।

ফয়সাল কাদের জানান, ঋণখেলাপিসহ বিভিন্ন কারণে যাঁদের মনোনয়ন বাতিল হয়েছে, তাঁরা হলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুর রউফ মোল্যা, আবুল হাসান সিদ্দিক ও আরিফুর রহমান মিঠু। তবে তাঁরা চাইলে বিধি অনুযায়ী আপিল করতে পারবেন।

এই আসনে যাঁদের মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে, তাঁরা হলেন ইসলামী আন্দোলনের মো. আউয়াল, বিএনপির রকিবুল ইসলাম, জামায়াতে ইসলামীর মাহফুজুর রহমান, স্বতন্ত্র প্রার্থী মুরাদ খান লিটন ও মইন মোহাম্মদ মায়াজ, বাসদের জনার্দন দত্ত, খেলাফত মজলিসের এফ এম হারুন অর রশিদ, এনডিএমের শেখ আরমান হোসেন এবং জাতীয় পার্টির আব্দুল্লাহ আল মামুন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কক্সবাজারে পর্যটকের ভিড়, থার্টি ফার্স্ট নাইটে ৭ দফা বিধিনিষেধ পুলিশের

মাইনউদ্দিন শাহেদ, কক্সবাজার
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪: ০৩
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

পুরোনো বছরকে বিদায় ও নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে প্রতিবছর থার্টি ফার্স্ট নাইটে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে লাখো পর্যটকের সমাগম ঘটে। এ বছরও দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভ্রমণপিপাসুরা কক্সবাজারে এসেছেন। তবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে সারা দেশে শোকের আবহ বিরাজ করায় অনেকেই ভ্রমণ বাতিল করেছেন বলে জানিয়েছেন পর্যটন-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

এদিকে থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষে আজ বুধবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে আগামীকাল ১ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সমুদ্রসৈকতসহ উন্মুক্ত স্থানে কোনো ধরনের অনুষ্ঠান ও জনসমাগম না করতে ৭ দফা বিধিনিষেধ জারি করেছে কক্সবাজার জেলা পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার জেলা পুলিশের এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব নির্দেশনা দেওয়া হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব, অপপ্রচার ও উসকানিমূলক বক্তব্য ছড়ানো, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট, নাশকতা কিংবা সহিংস কর্মকাণ্ড থেকে সবাইকে বিরত থাকতে হবে। এ ছাড়া উচ্চ শব্দে হর্ন বাজানো, বেপরোয়া গতিতে গাড়ি ও মোটরসাইকেল চালানো নিষিদ্ধ থাকবে।

জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) অলক বিশ্বাস বলেন, থার্টি ফার্স্ট নাইটে কক্সবাজার শহর ও সমুদ্রসৈকতে আতশবাজি ও পটকা বিক্রি ও ব্যবহার নিষিদ্ধ থাকবে। একই সময়ে উন্মুক্ত স্থান ও রাস্তায় কোনো কনসার্ট কিংবা নাচগানের আয়োজন করা যাবে না। পাশাপাশি ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টা থেকে ১ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বার ও মদের দোকানে বেচাকেনা বন্ধ থাকবে।

অলক বিশ্বাস জানান, বিধিনিষেধ কার্যকরের পাশাপাশি শহরের প্রবেশমুখসহ গুরুত্বপূর্ণ ১০টি স্থানে তল্লাশিচৌকি বসিয়ে নজরদারি জোরদার করা হবে।

পর্যটকের উপস্থিতি

বছরের শেষ দিন ও নতুন বছরের শুরুতে কক্সবাজারে সাধারণত পর্যটকের ঢল নামে। এ সময় স্থানীয় বাসিন্দারাও সৈকতে ভিড় জমান। তবে নিরাপত্তাজনিত কারণে ৮-৯ বছর ধরে সৈকতে বর্ষবিদায় ও বর্ষবরণের উন্মুক্ত কোনো আয়োজন হচ্ছে না। শহরের কয়েকটি মানসম্মত হোটেল ও রিসোর্টে সীমিত পরিসরে অনুষ্ঠান হলেও এবার সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে সেসব আয়োজনও বাতিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন হোটেলের মালিকেরা।

হোটেল ও রিসোর্টের মালিকেরা বলেন, ‘শোকাবহ পরিস্থিতির কারণে অনেক পর্যটক বুধবারের কক্ষ বুকিং বাতিল করেছেন। আবার যাঁরা মঙ্গল বা বুধবার কক্সবাজারে আসার পরিকল্পনা করেছিলেন, তাঁদের বড় অংশই সফর স্থগিত করেছেন।’

কক্সবাজার শহরের পাঁচ শতাধিক হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট, গেস্টহাউস ও কটেজে প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজার পর্যটকের রাতযাপনের ব্যবস্থা রয়েছে। কক্সবাজার হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট ও গেস্টহাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার জানান, সব মিলিয়ে প্রায় ৯০ শতাংশ কক্ষ বুকিং রয়েছে।

ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার অঞ্চলের প্রধান ও অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ বলেন, বর্ষবিদায় ও বর্ষবরণে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সর্বোচ্চ সতর্ক রয়েছে। পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চার স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খানসামায় গ্রাম সমিতির অফিসের বারান্দা থেকে অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশ উদ্ধার

খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধি 
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪: ১৭
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায় অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে উপজেলার ২ নম্বর ভেড়ভেড়ী ইউনিয়নের টংগুয়া চেয়ারম্যানপাড়া গ্রাম সমিতির অফিসের বারান্দা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গভীর রাতে গ্রাম সমিতির অফিসের বারান্দায় একটি লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় বাসিন্দারা থানায় খবর দেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে ভ্যানযোগে খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।

খানসামা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল বাছেত সরদার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, লাশটির পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি। মৃত্যুর কারণ ও পরিচয় উদ্‌ঘাটনে আইনগত প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বগুড়ায় গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু, সিসিটিভির হার্ডডিস্ক নিয়ে আত্মগোপনে স্বামী

বগুড়া প্রতিনিধি
নিহত রিফাত জাহান রিংকি। ছবি: সংগৃহীত
নিহত রিফাত জাহান রিংকি। ছবি: সংগৃহীত

বগুড়ায় রিফাত জাহান রিংকি (১৯) নামের এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত ১১টার দিকে সদর উপজেলার নুনগোলা দক্ষিণ পাড়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। মৃত্যুর পরপরই স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন বাড়ির সিসিটিভির হার্ডডিস্ক খুলে নিয়ে আত্মগোপনে চলে যাওয়ায় এই ঘটনায় সন্দেহ সৃষ্টি হয়েছে।

নিহত রিংকি শাজাহানপুর উপজেলার নন্দকুল উত্তর পাড়া গ্রামের রাশেদুল ইসলামের মেয়ে। পাঁচ বছর আগে নুনগোলা এলাকার নুরু মিয়ার ছেলে নুরুন্নবীর সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। তাঁদের চার বছর বয়সী একটি কন্যাসন্তান রয়েছে।

স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার বিকেলে প্রতিবেশীরা রিংকিকে বাড়ির উঠানে স্বাভাবিকভাবে ব্যাডমিন্টন খেলতে দেখেন। যদিও স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মাঝেমধ্যে পারিবারিক কলহের কথা শোনা যেত। রাতের দিকে হঠাৎ তাঁর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।

নিহত রিংকির বোন আশা খাতুন জানান, বিকেলে রিংকির মোবাইল থেকে তাঁর ফোনে একটি মিসকল আসে। পরে একাধিকবার ফোন করলেও রিংকি ফোন ধরেননি। সন্ধ্যা পেরিয়ে রাতে নুরুন্নবী ফোন করে জানায়, রিংকির ওপর জিনের আছর পড়েছে। খবর পেয়ে পরিবারের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে রিংকির নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখেন। তখন তাঁর গলায় আঘাতের চিহ্ন লক্ষ করা যায়।

রিংকির মামি আয়না খাতুন বলেন, ‘পরিকল্পিতভাবে রিংকিকে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনার পরপরই আলামত নষ্ট করতে বাড়ির সিসিটিভি ক্যামেরার হার্ডডিস্ক খুলে নিয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা পালিয়ে যায়। আমরা এর সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত চাই।’

সরেজমিনে দেখা যায়, ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত স্বামী নুরুন্নবী ও তাঁর পরিবারের কোনো সদস্য বাড়িতে নেই। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ঘটনার পরপরই তাঁরা বাড়ি ছেড়ে চলে গেছেন।

এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবু রায়হান বলেন, ‘এর আগে তাঁদের মধ্যে কোনো ঝগড়াবিবাদের কথা আমার জানা ছিল না। হঠাৎ রাতে মৃত্যুর খবর পাই। ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক।’

বগুড়া সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মাহফুজার রহমান বলেন, পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের মর্গে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। প্রাথমিক সুরতহালে আত্মহত্যার কোনো সুস্পষ্ট আলামত পাওয়া যায়নি। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে। এই ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত