Ajker Patrika

শাহজালাল বিমানবন্দরের ভল্ট ভেঙে অস্ত্র চুরি, এখনো হয়নি মামলা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পুড়ে যাওয়া কার্গো কমপ্লেক্সের স্ট্রং রুম থেকে ‘৭টি’ অস্ত্র চুরির ঘটনায় এখনো কোনো মামলা হয়নি। খোয়া যাওয়া অস্ত্র ৭টি না আরও বেশি—তা নিয়েও চলছে তদন্ত। বিমান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশ—তিনটি সংস্থা আলাদাভাবে বিষয়টি অনুসন্ধান করছে। ঘটনাটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর হওয়ায় এখনো কেউ আনুষ্ঠানিকভাবে মুখ খুলছেন না।

পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, তদন্তে অস্ত্র হারানোর সুনির্দিষ্ট প্রমাণ ও সংখ্যার তথ্য পেলে মামলা করবে বিমান কর্তৃপক্ষ। তবে খোয়া যাওয়া অস্ত্র নিয়ে এখনো ধোঁয়াশা কাটেনি। ঠিক কতগুলো অস্ত্র ছিল এবং কতগুলো চুরি হয়েছে, তা নিয়ে কেউ পরিষ্কার করে কিছু বলতে চান না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি কাজ করছে। পুলিশের কাছে বিমানের পক্ষ থেকে শুধু ভল্ট ভাঙার বিষয়ে একটি জিডি হয়েছে। কিন্তু অস্ত্র চুরির ঘটনায় এখনো কোনো মামলা হয়নি।

একই বিষয়ে গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত কোর কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে আগুন লাগার সময় অস্ত্র চুরির অভিযোগটি তদন্তাধীন। আসলেই কোনো অস্ত্র চুরি হয়েছে কি না, তা তদন্ত শেষে জানা যাবে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যদি প্রমাণ হয় যে অস্ত্র চুরি হয়েছে, তাহলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা সংস্থাকে আইনের আওতায় আনা হবে।’

গত ১৮ অক্টোবর দুপুরে শাহজালাল বিমানবন্দরের আমদানি কার্গো কমপ্লেক্সে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ফায়ার সার্ভিসের ২৭ ঘণ্টা সময় লাগে। ওই ঘটনার পর থেকেই কেপিআইভুক্ত বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থার ঘাটতি নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এরই মধ্যে ভল্ট ভাঙা পাওয়ার বিষয়ে নতুন করে আলোচনার কেন্দ্রে নিয়ে এসেছে।

বিমানবন্দরসংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, পুড়ে যাওয়া আমদানি কার্গো কমপ্লেক্সের স্ট্রং রুমের ভল্ট থেকে চুরি হয়েছে ৭টি আগ্নেয়াস্ত্র। গত রোববার দুপুরে দ্বিতীয়বারের মতো ভল্ট পরিদর্শনে গিয়ে কর্মকর্তারা দেখেন, সেখানে একটি ভল্টে থাকা ২১টি অস্ত্রের মধ্যে ৭টি নেই। ৩টি অস্ত্রের পেছনের অংশ আগুনে পোড়া ছিল আর অন্যগুলো বক্সবন্দী অবস্থায় ছিল। তালিকা মিলিয়ে দেখা যায়, ওই ৭টি অস্ত্র ভল্ট থেকে খোয়া গেছে। এসব অস্ত্রের একটি অংশ বাংলাদেশ পুলিশের জন্য এবং অন্যগুলো বৈধ অস্ত্র ব্যবসায়ীদের আমদানি করা পণ্য ছিল। চুরি হওয়া অস্ত্রগুলোর মধ্যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি এম ৪ কারবাইন রাইফেল ও ব্রাজিলের টরাস কোম্পানির তৈরি সেমি-অটোমেটিক পিস্তল। এর আগে, ২৮ অক্টোবর বিমান কর্তৃপক্ষ ভল্ট ভাঙা এবং অস্ত্র চুরির আশঙ্কা থেকে বিমানবন্দর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করে।

এদিকে অস্ত্র খোয়া যাওয়ার ঘটনার পর নিরাপত্তার স্বার্থে ভল্টে থাকা সব অস্ত্র সোমবার বিমানবন্দর থানায় নিয়ে আসা হয়। বিমানবন্দর থানা সূত্র জানিয়েছে, বর্তমানে থানায় রাখা রয়েছে ৬৭টি পিস্তল, ১২টি শটগান, ১টি রাইফেল ও ৯০০টি ব্ল্যাংক কার্টিজ।

পুলিশের কর্মকর্তারা জানান, ব্ল্যাংক কার্টিজ হলো গুলিবিহীন এক ধরনের গোলাবারুদ, যাতে গানপাউডার থাকলেও বুলেট থাকে না। এটি কেবল শব্দ ও ধোঁয়া তৈরি করে, যা বাস্তব গুলির মতো শোনায়।

বিমানবন্দর থানার উপপরিদর্শক আজাহার ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, নিরাপত্তার কারণে অস্ত্রগুলো ভল্ট থেকে থানায় আনা হয়েছে। কাস্টমসের মাধ্যমে আমদানিকারকদের তাঁদের অস্ত্র খালাসের আহ্বান জানানো হয়েছে। তাঁরা প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করার চেষ্টা করছেন।

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ বিমানের জনসংযোগ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক বুশরা ইসলাম বলেন, ‘এখনো বিষয়টি তদন্তাধীন। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমরা অফিশিয়ালি কিছু বলতে পারছি না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এত শক্তি প্রদর্শন আপনাদের মানায় না—অন্তর্বর্তী সরকারকে কড়া হুঁশিয়ারি সালাহউদ্দিনের

মরিচের গুঁড়া ছিটিয়ে ডাকাতির চেষ্টা ব্যর্থ, দোকানদার থেকে ২৫ সেকেন্ডে খেলেন ২০টি চড়

ফরিদপুরে বিএনপির সংঘর্ষের সময় আগ্নেয়াস্ত্র হাতে যুবক, ভিডিও ভাইরাল

মাথায় হেলমেট নেই চালকের, এক লাখের স্কুটারে জরিমানা ২১ লাখ

চালু হলো টিটিপাড়া আন্ডারপাস

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ