Ajker Patrika

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্ষয়ক্ষতি ৫ কোটি টাকার বেশি, সহিংসতায় বহিরাগতরা

সাভার (ঢাকা) প্রতিনিধি
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্ষয়ক্ষতি ৫ কোটি টাকার বেশি, সহিংসতায় বহিরাগতরা

দেশের একমাত্র আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় জাহাঙ্গীরনগরের (জাবি) মুখরিত ক্যাম্পাসে এখন সুনসান নীরবতা। কোটা আন্দোলনে অনির্দিষ্টকালের জন্য শিক্ষা কার্যক্রম স্থগিত ও হল বন্ধ হলে চিরচেনা রূপ হারায় জাবি। তবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে ভাঙচুরের ক্ষতচিহ্ন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলছে, সহিংসতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৫ কোটি টাকারও বেশি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তথ্য বলছে, জাবিতে সহিংসতা ও ভাঙচুরে জড়িত বহিরাগতরা। 

আজ বুধবার (৩১ জুলাই) সরেজমিনে রাজধানীর অদূরে সাভারের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সরেজমিনে দেখা যায়, হলগুলোতে ঝুলছে তালা। শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও সকল অফিস খোলা, তাই উপস্থিতি চোখে পড়েছে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। হল বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের সংখ্যাও হাতে গোনা। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরাও প্রতিদিন তাঁদের কর্মসূচি শেষ করে ফিরে যান। 

প্রত্যয় স্কিমকে কেন্দ্র করে কোটা সংস্কারের আন্দোলনের আগ থেকেই শিক্ষকদের আন্দোলনে বন্ধ ছিল ক্লাস। এর পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের পক্ষ থেকে অনির্দিষ্টকালের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধের সিদ্ধান্তে বিশ্ববিদ্যালয় এখন ধুধু মরু। 

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কোটা আন্দোলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি বাসভবন ও বিভিন্ন হলে ভাঙচুর করা হয়েছে। উপাচার্যের গাড়ি ও অ্যাম্বুলেন্সসহ ভাঙচুর করা হয়েছে বেশ কয়েকটি গাড়ি। এ ছাড়া নতুন প্রশাসনিক ভবনেও চোখে পড়েছে ভাঙচুরের চিহ্ন। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য বলছে, উপাচার্যের ১টি গাড়ি, ৩টি অ্যাম্বুলেন্স, ২টি মাইক্রোবাস ও ১টি প্রাইভেটকার ভাঙচুর করা হয়েছে। এ ছাড়া সিসি ক্যামেরাগুলো ব্যাপকভাবে ভাঙচুর করা হয়েছে। সব মিলিয়ে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৫ কোটি ২ লাখ টাকা। তবে এর পরিমাণ আরও বাড়তেও পারে। 

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. রাশেদা আখতার বলেন, ‘আমরা ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনো ফাইনাল করতে পারিনি, তবে ৫ কোটির ওপরে। আমার হাতে সব হিসাব আসলে আমি সঠিক বলতে পারব। আমরা প্রাতিষ্ঠানিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বের করেছি। ব্যক্তিগত কারও কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়ে থাকলে আমরা তো সেগুলো হিসাব করতে পারব না। কার মোটরসাইকেল ভেঙেছে, কার রুমে কি হয়েছে, না হয়েছে— এগুলো আমাদের কিছু বলে নাই। সেগুলো বের করাও মুশকিল।’ 

বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পদের বাইরে ব্যক্তিগত সম্পদও ক্ষতির মুখে পড়েছে। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের গাড়ি ও মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়েছে। আহত শিক্ষার্থীদের সংখ্যাও শতাধিক। এ ছাড়া আহত হয়েছেন শিক্ষক ও সাংবাদিকরাও। 

এত কিছুর পরে সকলের প্রিয় ক্যাম্পাসে এখন রাজ্যের নীরবতা। যেন সবুজ প্রকৃতির কাছে ইট পাথরের দালানগুলো নিজেকে চুপ করে সঁপে দিয়েছে। ক্যাম্পাসের এই অচেনা রূপ নিয়ে কথা হয় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সজীব আহমেদ বলেন, ‘এই পরিস্থিতি আমরা কখনই আশা করি না। ক্যাম্পাস সব সময় মুখর থাকবে ছাত্র-ছাত্রীদের আড্ডায়। ট্রান্সপোর্টে কোনো লোকজন নাই, বটতলায় সকল দোকান বন্ধ। আমাদের বাইরে থাকতে হচ্ছে। ক্যাম্পাসে যে মরুর মতো পরিস্থিতি, তা আমরা আসলে আদৌ দেখতে চাইনি। আমরা চাই দ্রুত ক্লাস শুরু হোক, ক্যাম্পাস খুলুক।’ 

ক্যাম্পাসে ভাঙচুর কারা করেছে জানতে চাইলে এই শিক্ষার্থী আরও বলেন, ‘এই আন্দোলনে যুক্ত হয়েছে ছাত্রজনতা। গণআন্দোলন হওয়ায় এখানে নানা ধরনের নানা মোটিভের মানুষ যুক্ত হয়েছে। তবে রাষ্ট্রীয় সম্পদের ওপর আঘাত কাম্য নয়, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী হিসেবে তা আমরা কখনো প্রত্যাশাও করি না। তবে নানা ধরনের মানুষ থাকায় এর মধ্যে থেকে কেউ এমন করে থাকতে পারে। তাঁদের মধ্যে দুরভিসন্ধি থাকতে পারে আন্দোলনকে বানচাল করার জন্য। এই দায়ভার কখনই ছাত্রসমাজ নেবে না। এটা যারা করেছে তাঁদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।’ 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক আব্দুর রশিদ জিতু বলেন, ‘শুরু থেকেই শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলন শান্তিপূর্ণই ছিল। প্রথম থেকেই আমাদের কোনো কর্মসূচিতে কোনো সহিংসতা ছিল না। আন্দোলন বড় আকার ধারণ করলে ভিন্ন দলের ভিন্ন মতের মানুষ প্রবেশ করে। সেটা কিন্তু কন্ট্রোল করা সম্ভব হয় না। যখন আন্দোলন শুধুমাত্র শিক্ষার্থীদের হাতে ছিল তখন যদি আমাদের দাবি মেনে নেওয়া হতো তাহলে কিন্তু দেশে এত সহিংসতা হতো না বলে আমি মনে করি। সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে কোথাও কোনো ভাঙচুর, জ্বালাও পোড়াও হয়নি। অনুপ্রবেশকারীরাই আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে এই কাজ করেছে।’  

শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তাসহ শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে ও ভবিষ্যতে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান শিক্ষকদের। 

জাবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. শাহেদ রানা বলেন, ‘কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে যেই অরাজক পরিস্থিতি দেশজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে তাঁর অংশ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়েও পড়েছে। এখানে বিভিন্ন হলে, প্রশাসনিক ভবনে ভাঙচুর হয়েছে। শিক্ষক-শিক্ষার্থী-সাংবাদিক অনেকেই আহত হয়েছেন। আমাদের এক সহকর্মী ডান চোখে আঘাত পেয়ে চিকিৎসাধীন আছেন। দেশের পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলেও উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো এখনো স্বাভাবিক হয়নি। আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয়ে সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত হোক। শিক্ষার্থীদের হলগুলোতে যে পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সেগুলো আগে ঠিক করে, শিক্ষার্থীদের উপযোগী করে আমার মনে হয় আগের পরিবেশ ফিরে আসতে পারে। এ ছাড়া সব পক্ষের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারের আলোচনা করা প্রয়োজন যেন পরবর্তীতে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা না ঘটে। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খুলে দেওয়া হোক।’

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তথ্য বলছে, অরাজকতা সৃষ্টিতে আন্দোলনে যোগ দিয়েছিল বহিরাগতরা। ঢাকা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আবদুল্লাহহিল কাফি বলেন, ‘বহিরাগত ও নৈরাজ্যকারীরা প্রবেশ করে শিক্ষার্থীদের ন্যায্য আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করেছে। জাহাঙ্গীরনগরে যে সহিংসতা ও ভাঙচুর হয়েছে এটা মূলত বহিরাগতরা সংঘটিত করেছে। শিক্ষার্থী ভাইবোনকে সতর্ক থাকতে হবে, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যেন বহিরাগতরা প্রবেশ করতে না পারে, যদি কেউ প্রবেশ করে তাকে যেন চিহ্নিত করতে পারে সে জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনেরও এ ধরনের ব্যবস্থাপনা থাকা প্রয়োজন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মহান বিজয় দিবসে মেট্রোরেল সাময়িক বন্ধ থাকবে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

মহান বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে আগামী ১৬ ডিসেম্বর (মঙ্গলবার) মেট্রোরেল চলাচল সাময়িক বন্ধ থাকবে। ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দর এলাকায় প্যারাজাম্প অনুষ্ঠিত হওয়ার কারণে প্যারাট্রুপারদের নিরাপত্তার স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

ডিএমটিসিএল ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে জানিয়েছে, আগামী ১৬ ডিসেম্বর দুপুর ১১টা ৫০ মিনিট হতে ১২টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত, অর্থাৎ মোট ৪০ মিনিটের জন্য মেট্রোরেল চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে।

ডিএমটিসিএল সাময়িক অসুবিধার জন্য যাত্রীসাধারণের কাছে আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেছে। যাত্রীদের এই সময়সূচি মেনে প্রয়োজনীয় পরিকল্পনা করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ইডেনের সেই ছাত্রীকে বিয়ের ছয়মাস পর নোবেলের বিরুদ্ধে ধর্ষণের চার্জশিট

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
নোবেল। ছবি: সংগৃহীত
নোবেল। ছবি: সংগৃহীত

বাসায় আটকে রেখে ইডেন কলেজের এক ছাত্রীকে ধর্ষণ করার অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় গায়ক নোবেলের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে। গত ২৯ নভেম্বর ডেমরা থানার উপপরিদর্শক এসআই মুরাদ হোসেন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এই অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন প্রসিকিউশন বিভাগের উপপরিদর্শক (এসআই) ইলামনি আজ সোমবার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, আগামী ২৮ ডিসেম্বর আদালতে অভিযোগপত্রটি উপস্থাপন করা হবে। পরে এ সংক্রান্ত মামলা বিচারের জন্য নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হবে।

নোবেলের আইনজীবী মোসতাক আহমেদ জানান, এই ধর্ষণ মামলার বাদীকে বিয়ে করেছেন নোবেল। তাঁরা সংসার করছেন।

গত ১৯ মে নোবেলের বিরুদ্ধে ধর্ষণ, নির্যাতন ও পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা করেন ইডেন কলেজের ওই ছাত্রী। নোবেলকে গ্রেপ্তার করার পর কারাগারে পাঠানো হলে বিয়ের শর্তে তিনি জামিন পান। ১৯ জুন ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে বসে ১০ লাখ টাকা দেনমোহরে নোবেল ওই ছাত্রীকে বিয়ে করেন।

এই মামলায় অভিযোগ করা হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ওই ছাত্রীর সঙ্গে পরিচয় হয় নোবেলের। এরপর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ২০২৪ সালের ১২ নভেম্বর নোবেল তাঁর স্টুডিও দেখানোর কথা বলে ছাত্রীকে ডেমরার বাসায় নিয়ে যান। সেখানে আটকে রাখেন, মোবাইল ফোন ও টাকা কেড়ে নেন। এরপর ধর্ষণ ও ভিডিও ধারণ করেন। কথামতো না চললে ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ভয়ও দেখান।

অভিযোগে বলা হয়, ওই তরুণীকে ছয় মাস ধরে ডেমরার ওই বাসায় আটকে রাখা হয়, মারধর করা হতো প্রায়ই। দু-তিন জনের সহায়তায় বাদীকে চুল ধরে টেনেহিঁচড়ে একটি কক্ষে আটকে রাখেন নোবেল। ওই ঘটনার ভিডিও ছড়ালে বাদীর বাবা-মা তাঁকে চিনতে পারেন। এরপর পরিবার পুলিশের সহায়তায় তাঁকে ১৯ মে উদ্ধার করে এবং পুলিশ নোবেলকে গ্রেপ্তার করে।

অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, নোবেল বাদীকে আটক রেখে ধর্ষণ করেন এবং ধর্ষণের ভিডিও মোবাইলে ধারণ করে রাখেন। বাসায় না থাকলে ধর্ষণের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। নোবেল নেশাগ্রস্ত অবস্থায় বিভিন্ন সময়ে তাঁকে মারপিট করেছেন।

অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়েছে, বাদীর অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। আসামি নোবেল জামিনে আছেন।

তদন্ত কর্মকর্তা অভিযোগপত্রে আরও বলেছেন, বাদীকে মারধর ও ধর্ষণে আসামিকে আরও কয়েকজন সহযোগিতা করেছেন। তবে তাঁদের নাম-ঠিকানা উদ্‌ঘাটন করা সম্ভব হয়নি। অদূর ভবিষ্যতে তাঁদের নাম ঠিকানা সংগ্রহ করা সম্ভব হলে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেওয়া হবে।

এখন কী হবে:

নোবেলের আইনজীবী বলেছেন, নোবেল মামলার বাদীকে বিয়ে করে সংসার করছেন। তাই এই অভিযোগপত্রে নোবেলের কোনো সমস্যা হবে না। বিচারিক ট্রাইব্যুনালে বাদী আপসনামা দেওয়ার পর মামলা নিষ্পত্তি হবে। খালাস পাবেন নোবেল।

উল্লেখ্য, ভারতের সংগীত প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠান ‘সা রে গা মা’ দিয়ে পরিচিতি পান এই গায়ক। এর আগে মাদকে আসক্ত হয়ে সংগীত ছেড়েছিলেন তিনি। দীর্ঘ বিরতির পর আবারও শ্রোতাদের সামনে হাজির হন। সেবার নোবেল জানিয়েছিলেন, তিনি আর কখনো দর্শকদের হতাশ করবেন না। সব অতীত পেছনে ফেলে নিয়মিত গান উপহার দেবেন।

কিন্তু ২০২৩ সালে অগ্রিম টাকা নিয়ে গান গাইতে না যাওয়ায় প্রতারণার অভিযোগে রাজধানীর মতিঝিল থানায় নোবেলের বিরুদ্ধে মামলা হয়। জানা যায়, ওই বছর ১৬ মে শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ হেডকোয়ার্টার পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি ব্যাচ ২০১৬-এর অনুষ্ঠানে গান গাইতে গিয়ে ১ লাখ ৭২ হাজার টাকা অগ্রিম নেওয়ার প্রতারণায় অভিযোগে আটক হয়েছিলেন। সে সময় একদিন রিমান্ডেও ছিলেন এই গায়ক। পরে আপসের মাধ্যমে ওই মামলা থেকে অব্যাহতিও পান নোবেল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ঝালকাঠিতে ট্রলির ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী নিহত

ঝালকাঠি প্রতিনিধি  
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

ঝালকাঠির নলছিটিতে ট্রলির ধাক্কায় লিমা আক্তার (৩০) নামে এক মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় তা৭র স্বামী মোটরসাইকেলচালক আহত হয়েছেন। সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে উপজেলার ভৈরবপাশা ইউনিয়নের লক্ষণকাঠি এলাকায় বরিশাল-ঝালকাঠি মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নলছিটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফুল আলম।

নিহত লিমা আক্তার ইশ্বরকাঠি এলাকার ব্যবসায়ী রাজু মল্লিকের স্ত্রী। তাঁদের পাঁচ বছর ও দুই বছর বয়সী দুটি সন্তান রয়েছে।

নিহত লিমার ভাশুর ও স্থানীয় ইউপি সদস্য পারভেজ মল্লিক জানান, বাড়ি থেকে মোটরসাইকেলে করে ঝালকাঠি আসার পথে পেছন দিক থেকে একটি ট্রলি তাঁদের ধাক্কা দেয়। এ সময় ট্রলিটি একটি নৌবাহিনীর গাড়িকেও ধাক্কা দেয়। গুরুতর আহত অবস্থায় লিমাকে উদ্ধার করে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

নলছিটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফুল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আনিস আলমগীর এখনো ডিবি কার্যালয়ে

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আনিস আলমগীর। ছবি: সংগৃহীত
আনিস আলমগীর। ছবি: সংগৃহীত

সাংবাদিক আনিস আলমগীর এখনো ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) কার্যালয়ে রয়েছেন। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গতকাল রোববার সন্ধ্যায় তাঁকে সেখানে ডেকে নেওয়া হয়।

আজ সোমবার সকালে ঢাকা মহানগর পুলিশের গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান আনিস আলমগীরের ডিবি কার্যালয়ে থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

এর আগে গতকাল রোববার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ডিবি সদস্যরা তাঁকে সেখানে নিয়ে যান। রাজধানীর ধানমন্ডির একটি জিম থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ করেছেন আনিস আলমগীর।

ডিবির ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, আনিস আলমগীর এখনো ডিবি কার্যালয়েই রয়েছেন। তাঁর বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে কি সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে তা এখনো জানানো হয়নি।

এদিকে সাংবাদিক আনিস আলমগীর এবং অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওনসহ মোট চারজনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে তাঁদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়। রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা নষ্টের ষড়যন্ত্র এবং নিষিদ্ধ সংগঠনকে উসকে দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে।

‘জুলাই রেভল্যুশনারি অ্যালায়েন্স’ নামে একটি সংগঠনের কেন্দ্রীয় সংগঠক আরিয়ান আহমেদ এই অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযুক্ত অপর দুজন হলেন মারিয়া কিসপট্টা ও ইমতু রাতিশ ইমতিয়াজ।

থানায় দেওয়া অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের জুলাই মাসের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পর রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের মধ্যেও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুসারীরা বিভিন্ন কৌশলে দেশে অবস্থান করে রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা বিনষ্টের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। অভিযুক্তরা এসব কর্মকাণ্ডে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সম্পৃক্ত।

অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, গত ৫ আগস্টের পর থেকে অভিযুক্তরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বিভিন্ন টেলিভিশন টক শোতে অংশ নিয়ে নিষিদ্ধ সংগঠনকে পুনরুজ্জীবিত করার প্রচারণা চালাচ্ছেন। এর মাধ্যমে তাঁরা আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের অপচেষ্টা করছেন।

এতে আরও বলা হয়, অভিযুক্তদের এসব বক্তব্য ও অনলাইন কার্যক্রমের কারণে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কর্মীরা উসকানি পাচ্ছে। ফলস্বরূপ তারা রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্র, সহিংসতা এবং অবকাঠামো ধ্বংসের মতো কর্মকাণ্ডে জড়িত হচ্ছে।

উত্তরা পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী মোহাম্মদ রফিক আহমেদ গণমাধ্যমকে জানান, এটি সাইবার-সম্পর্কিত একটি ইস্যু। তিনি বলেন, ‘আমরা অভিযোগ গ্রহণ করেছি। অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা যাচাই ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশনা পেলে মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত