Ajker Patrika

‘মানুষ আর মানুষ নাই’

আশিকুর রিমেল, ঢাকা
‘মানুষ আর মানুষ নাই’

‘মানুষের জীবন নিয়া মানুষ এমন করতে পারে! একটা মানুষ কষ্টে কাতরাইতাছে আর দালালরা আধা ঘণ্টারও বেশি ঘুরাইলো। খুব আঘাত পাইছি। মানুষ আর মানুষ নাই ভাই।’ আইসিইউ না পেয়ে তীব্র শ্বাসকষ্টে কাতর লুৎফুন্নাহার বেগমকে রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল থেকে ফিরিয়ে নেওয়ার পথে কথাগুলো বলছিলেন তাঁর জামাতা আবু সাঈদ। একে একে নগরীর চারটি হাসপাতাল ঘুরে তাঁরা এসেছিলেন কুর্মিটোলা হাসপাতালে। কিন্তু আইসিইউ না পেয়ে বাধ্য হয়ে আবারও অন্য হাসপাতালের দিকে ছুটতে হয় তাঁদের।

গতকাল শুক্রবার দুপুর ১২টা ২০ মিনিট। কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের প্রধান ফটক দিয়ে প্রবেশের পরপরই জরুরি বিভাগের সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় একটি অ্যাম্বুলেন্স। ভেতরে অক্সিজেন মাস্ক পরা একজন নারী শরীরের সমস্ত শক্তি দিয়ে চেষ্টা করছেন নিশ্বাস নেওয়ার। জানা গেল, শ্বাসকষ্টে ভুগতে থাকা এই নারীর নাম লুৎফুন্নাহার বেগম।

তাঁর জামাতা আবু সাঈদ জানালেন শুক্রবার তাঁদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া দুর্দশার কথা। এদিন সকালে হঠাৎ লুৎফুন্নাহারের শ্বাসকষ্টের সমস্যা শুরু হয়। চিকিৎসার জন্য সকাল ৯টার দিকে অ্যাম্বুলেন্সে ওঠার পর থেকে পর্যায়ক্রমে রাজধানীর ইসলামী ব্যাংক সেন্ট্রাল হাসপাতাল, বেটার লাইফ হাসপাতাল, প্রশান্তি হাসপাতাল লিমিটেড, ইউনিটি হাসপাতাল কোথাও আইসিইউর ব্যবস্থা করতে পারেননি।

এর মধ্যে কোনো হাসপাতালে নেই আইসিইউর ব্যবস্থা, আবার কোথাও আইসিইউ থাকলেও ফাঁকা নেই শয্যা। কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে থাকা ১০টি আইসিইউ শয্যাও পূর্ণ ঝুঁকিতে থাকা করোনা আক্রান্ত রোগী দিয়ে। ফলে তীব্র শ্বাসকষ্টে ভুগতে থাকা লুৎফুন্নাহারকে অ্যাম্বুলেন্স থেকে না নামিয়েই তাঁর স্বজনেরা রওনা হন গুলশানের সাহাবুদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দিকে।

মালিবাগ এলাকার প্রশান্তি হাসপাতাল লিমিটেড নামের একটি হাসপাতালের কথা উল্লেখ করে লুৎফুন্নাহারের জামাতা সাঈদ বলেন, ‘ওই হাসপাতালে আইসিইউ আছে কইয়া আমাদের নাজেহাল করল। এইটা সবচেয়ে আঘাত পাইছি। কিছু দালাল আমাগো ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল থাইকাই ফলো করছে। এগোর ছিল ট্যাকা খাওনের ধান্দা।’

আগে থেকেই কিডনি রোগে ভুগছিলেন লুৎফুন্নাহার। নিয়মিত সেবা নিতেন ইসলামী ব্যাংক সেন্ট্রাল হাসপাতালে। তাই শ্বাসকষ্ট শুরু হওয়ার পর পরিবারের লোকজন প্রথমে সেখানেই নিয়ে যান তাঁকে। কিন্তু হাসপাতালটিতে আইসিইউ কিংবা অক্সিজেন-সুবিধাও পাননি তাঁরা। করোনা মহামারির এমন দুঃসময়েও সরকারি-বেসরকারি অনেক হাসপাতালের অব্যবস্থাপনার কারণে চার ঘণ্টারও বেশি সময় বিভিন্ন হাসপাতালের দারে দারে ঘুরতে হয়েছে লুৎফুন্নাহার ও তাঁর স্বজনদের।

কিন্তু চিকিৎসার নিশ্চয়তা না পাওয়ায় এক এক করে পাঁচটি হাসপাতালের সামনে থেকেই ফিরে গেছে লুৎফুন্নাহারকে বহন করা অ্যাম্বুলেন্সটি। এ সময় অ্যাম্বুলেন্সের ভেতরে মুমূর্ষু লুৎফুন্নাহারের পাশে বসে ছিলেন তাঁর মেয়ে এবং ছেলের স্ত্রী। কুর্মিটোলা হাসপাতাল থেকে ফিরে যাওয়ার আগমুহূর্তে তাঁর মেয়েকে অঝোরে কাঁদতে দেখা যায়।

এদিকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালেই ভর্তি ছিলেন মাসুদ আলম নামের আরেক ব্যক্তি। পেশায় ফার্মাসিস্ট মাসুদ তিন দিন আগে এই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। দিন দিন তাঁর শারীরিক অবস্থা অবনতির দিকে গেলেও হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি হতে পারেননি। তাই তাঁকে নিয়ে রাজধানীর ডিএনসিসি করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছিলেন তাঁর বন্ধু হিমেল।

হিমেল জানান, ওর (মাসুদ আলম) শরীরের অবস্থা খারাপের দিকে যাচ্ছে। আরও বেশি খারাপ হওয়ার আগে আইসিইউতে নিয়ে যাচ্ছি। অনেক কষ্টে ডিএনসিসির করোনা হাসপাতালে একটি আইসিইউর ব্যবস্থা করা গেছে।

কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের দেওয়া তথ্যমতে, ৫০০ শয্যাবিশিষ্ট এই হাসপাতালটিতে করোনায় আক্রান্ত রোগীদের জন্য ৩০০টি শয্যা বরাদ্দ রয়েছে। তবে এই ৩০০ শয্যার বাইরেও হাসপাতালটিতে করোনায় আক্রান্ত অতিরিক্ত রোগী ভর্তি রয়েছেন ৩৭৭ জন। আর ১০টি আইসিইউ শয্যার মধ্যে ফাঁকা নেই একটিও।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঘন কুয়াশায় দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ

রাজবাড়ী প্রতিনিধি
ঘন কুয়াশায় দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ। ছবি: সংগৃহীত
ঘন কুয়াশায় দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ। ছবি: সংগৃহীত

রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌ-রুটে ফেরি চলাচল ঘন কুয়াশার কারণে বন্ধ করেছে বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ। বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে ১০টা থেকে নৌ দুর্ঘটনা এড়াতে এই রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয় বলে জানান বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক মো. সালাহউদ্দিন।

সালাহউদ্দিন বলেন, সন্ধ্যার পর থেকেই কুয়াশা পড়তে থাকে। রাত সাড়ে ১০টার সময় নদীপথ অস্পষ্ট হয়ে যায়। সে সময় নৌ দুর্ঘটনা এড়াতে এই নৌ-রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় ঘাট এলাকায় কিছু যানবাহন আটকা পড়েছে।

বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক মো. সালাহউদ্দিন আরও বলেন, কুয়াশা কেটে গেলে ফেরি চলাচল শুরু হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কক্সবাজারের রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরের ৯ শতাংশ নারী ধর্ষণের শিকার: বিএনপিএস

কক্সবাজার প্রতিনিধি
কক্সবাজার শহরের একটি হোটেলের সম্মেলনকক্ষে আজ বুধবার বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ আয়োজিত গোল টেবিল বৈঠক। ছবি: আজকের পত্রিকা
কক্সবাজার শহরের একটি হোটেলের সম্মেলনকক্ষে আজ বুধবার বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ আয়োজিত গোল টেবিল বৈঠক। ছবি: আজকের পত্রিকা

কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে বসবাস করা ৫৫ শতাংশ নারী ও কন্যা শিশু প্রতিনিয়ত সুরক্ষা, শিক্ষা, পুষ্টি ও লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতার উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে। শুধু তা-ই নয়, সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, আশ্রয়শিবিরগুলোয় ৯ শতাংশ নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন।

আজ বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) কক্সবাজার শহরের একটি হোটেলের সম্মেলনকক্ষে বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ (বিএনপিএস) আয়োজিত গোল টেবিল বৈঠকে এ তথ্য তুলে ধরে সংস্থাটি।

বিএনপিএসের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৭ সাল থেকে ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী মিয়ানমারে নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। বর্তমানে তারা কক্সবাজারের ৩৩টি শিবিরে বসবাস করছে, যা বিশ্বে বৃহত্তম শরণার্থী আশ্রয়স্থলগুলোর একটি। এই জনগোষ্ঠীর ৫২ শতাংশের বেশি নারী ও কন্যা।

সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দিয়ে আট বছরেরও বেশি সময়ে কক্সবাজারের প্রায় ৫ লাখ মানুষ নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এই দীর্ঘস্থায়ী সংকটের প্রভাবে স্থানীয় জনগোষ্ঠী জীবিকা, মজুরি, বন ও জলসম্পদ, স্বাস্থ্যসেবা এবং সামাজিক সংহতির ওপর ক্রমবর্ধমান চাপের মুখে পড়েছে। ফলে এটি শুধু শরণার্থী সংকট নয়; এটি মানবিকতা, উন্নয়ন এবং শান্তির এক যৌথ চ্যালেঞ্জ।

‘শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠীর অধিকার ও দায়িত্ব’ শীর্ষক এ গোল টেবিল বৈঠক সঞ্চালনা করেন বিএনপিএসের উপপরিচালক নাসরিন বেগম। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন কক্সবাজারের অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (যুগ্ম সচিব) মোহাম্মদ শামসুদ্দৌজা নয়ন। এ ছাড়া শরণার্থী ত্রান ও প্রত্যাবাসন কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব এম এ সানোয়ার হোসেন, বাংলাদেশ পরিবশে আন্দোলন (বাপা) কক্সবাজারের সাধারণ সম্পাদক কলিম উল্লাহ, জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য হুমায়রা বেগমসহ সংশ্লিষ্টরা বক্তব্য রাখেন।

প্রধান অতিথির বক্তৃতায় শামসুদ্দৌজা নয়ন বলেন, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আন্তর্জাতিক অর্থ সহায়তা কমে এসেছে। এর ফলে সামাজিক নিরাপত্তা সংকট তৈরি হচ্ছে। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন নারীরা।

গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা বলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিরাপত্তা, খাদ্য, আশ্রয়, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা এবং ও সহিংসতা থেকে সুরক্ষার অধিকার আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কাঠামোর অধীনে নিশ্চিত করা নৈতিক ও আইনগত দায়িত্ব। একইভাবে, আশ্রয়দাতা সম্প্রদায়েরও টেকসই উন্নয়ন, পরিবেশ সুরক্ষা, সম্মানজনক কাজ এবং জনসেবায় ন্যায্য প্রবেশাধিকারের জরুরি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

যবিপ্রবির প্রথম উপাচার্য রফিকুল ইসলাম মারা গেছেন

­যশোর প্রতিনিধি
মো. রফিকুল ইসলাম সরকার। ছবি: সংগৃহীত
মো. রফিকুল ইসলাম সরকার। ছবি: সংগৃহীত

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম সরকার মারা গেছেন (ইন্না...রাজিউন)। আজ বুধবার সকালে ঢাকার নিজ বাসা থেকে বের হয়ে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর তাঁকে একটি বেসরকারি বিশেষায়িত হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

ড. মো. রফিকুল ইসলাম সরকার যবিপ্রবি স্থাপন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক। পরবর্তীতে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি শক্তি ও যন্ত্র বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন। সেখানে তিনি কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে তিনি কৃষিবিদ গ্রুপের চেয়ারম্যান ও যবিপ্রবির রিজেন্ট বোর্ডের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

এ ছাড়া তিনি একজন কৃষি বিজ্ঞানী এবং প্রকৌশলী হিসেবে দেশের কৃষি খাতের যান্ত্রিকীকরণ ও আধুনিকায়নে দীর্ঘ পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে কৃতিত্বের সঙ্গে অবদান রেখেছেন।

এদিকে, ড. মো. রফিকুল ইসলাম সরকারের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল মজিদ ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. হোসেন আল মামুন, রিজেন্টবোর্ড সদস্যবৃন্দসহ বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার।

এক শোক বার্তায় যবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল মজিদ বলেন, রফিকুল ইসলাম সরকার ছিলেন একজন সৎ, মানবিক, ধর্মভীরু ও দায়িত্বশীল মানুষ। যবিপ্রবির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে আজ অবধি তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নতিতে নিরলস পরিশ্রম করেছেন।

তিনি ছিলেন একজন দক্ষ প্রশাসক এবং বরেণ্য কৃষি বিজ্ঞানী। যবিপ্রবির সূচনালগ্নে তার বলিষ্ঠ নেতৃত্ব ও দূরদর্শী পরিকল্পনা বিশ্ববিদ্যালয়টিকে আজকের এই অবস্থানে পৌঁছাতে ভিত গড়ে দিয়েছে। প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য হিসেবে তিনি শূন্য থেকে একটি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলার যে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছিলেন, তা যবিপ্রবি কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ১০ কিলোমিটার যানজট

সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ২৪
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে কাঁচপুর সেতু থেকে লাঙ্গলবন্দ পর্যন্ত ১০ কিলোমাটার যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) সকালে একটি ট্রাক দুর্ঘটনার পর দীর্ঘ সময় সড়কে যান চলাচল ব্যাহত হওয়ায় এ যানজট তৈরি হয়।

এতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সড়কে আটকে থেকে যাত্রীবাহী বাস, পণ্যবাহী ট্রাক, ব্যক্তিগত যানবাহনের চালক ও যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। রাত সাড়ে ৯টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মহাসড়কে যানজট দেখা গেছে।

কাঁচপুর হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী জানান, বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে লাঙ্গলবন্দ ব্রিজ এলাকায় একটি ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সেতুর রেলিংয়ে সজোরে আঘাত করে। ট্রাকটিতে প্রায় ২৭ টন মালামাল বোঝাই ছিল। দুর্ঘটনায় সেতুর রেলিং ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

তিনি আরও জানান, ট্রাকটিতে অতিরিক্ত মালামাল থাকায় রেকার দিয়ে সরানো সম্ভব হয়নি। ফলে প্রথমে অন্য একটি ট্রাকে মালামাল স্থানান্তরের কাজ শুরু করা হয়। এই প্রক্রিয়ায় দীর্ঘ সময় লাগায় দুর্ঘটনাকবলিত ট্রাকটি বিকেলের আগে সরানো যায়নি। এর ফলে ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কের চট্টগ্রামমুখী লেনে দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়েছে।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট। ছবি: আজকের পত্রিকা

পণ্যবাহী ট্রাকচালক শাহ আলম জানান, দুর্ঘটনার কারণে রাস্তা বন্ধ ছিল বুঝতে পারছি। কিন্তু এত সময় লাগবে ভাবিনি। মালামাল নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। এতে আর্থিক ক্ষতিও হচ্ছে।

আরেক যাত্রী আক্তার হোসেন বলেন, আমি চট্টগ্রামে যাচ্ছি। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পৌঁছানোর কথা ছিল। কিন্তু তিন ঘণ্টা ধরে একই জায়গায় আটকে আছি। ছোট বাচ্চা নিয়ে খুব বিপদে পড়েছি।

কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দুর্ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থলে পুলিশের একাধিক টিম কাজ শুরু করে। বিকেল নাগাদ মালামাল সরিয়ে ট্রাকটি সড়ক থেকে অপসারণ করা হলে ধীরে ধীরে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

কাঁচপুর হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আমাদের একাধিক টিম কাজ করছে। টানা তিন দিনের ছুটি থাকায় মহাসড়কে গাড়ির চাপ বেশি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত