Ajker Patrika

আপনারও বারোটা বাজিয়ে দিতে পারি: আইভী 

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
আপনারও বারোটা বাজিয়ে দিতে পারি: আইভী 

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী ত্বকী হত্যার বিচার চেয়ে বলেছেন, ‘ত্বকী হত্যা যারা করেছে, তাদের বিরুদ্ধে এই নারায়ণগঞ্জবাসী একত্রিত হয়েছে। আমি শত হুমকি ধামকির পরও ত্বকী মঞ্চের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে পাশে আছি। ভবিষ্যতেও থাকব ইনশাআল্লাহ।’ 

মেয়র বলেন, ‘প্রশাসন কী করল বা করল না সেটা দেখার বিষয় না। কারণ তাদের কিই–ই বা ক্ষমতা আছে! আমার তো মনে হয়, জনগণই সকল ক্ষমতা, জনতাই সকল শক্তি। তারাই আমাদের পথ দেখাবে। শহরবাসীকে নিয়ে এই আন্দোলন আরও বেগবান করতে চাই, শহরবাসীকে জাগিয়ে সাহসী করে তুলতে চাই।’ 

শুক্রবার (১৮ মার্চ) নারায়ণগঞ্জ শহরের আলী আহাম্মদ চুনকা নগর পাঠাগারে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন মেয়র আইভী। এদিন ত্বকী হত্যার ১০ বছর উপলক্ষে চুনকা পাঠাগারে চিত্রপটে ত্বকী প্রতিপাদ্যে চিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন করা হয়। 

মেয়র আইভী বলেন, ‘এরই মধ্যে দেখেছেন বিভিন্ন স্থানে হোন্ডাবাহিনীকে ধাওয়া দেওয়া শুরু হয়েছে। পরপর তিনটা ঘটনা ঘটেছে নদীর ওই পাড়ে। গতকালও সাধারণ মানুষ একত্রিত হয়ে এই ভূমিদস্যুদের হোন্ডা পুড়িয়ে দিয়েছে। অনেকেই আবার বড় বড় কথা বলেন। শহরে বের হতে দিবে না নাকি। কত বড় দুঃসাহস হলে ত্বকী হত্যার বিচার চাওয়া পিতা ও তার সহযোদ্ধাদের হুমকি ধামকি দেয়।’ 

হুঁশিয়ারি দিয়ে মেয়র বলেন, ‘এটা ১৯৮১ নয়, এটা ২০২৩। সুতরাং চল্লিশ বছর যাবৎ যারা এই শহরকে শাসন করছেন, এখনো আপনাদের হুমকি ধামকি মানুষ মেনে নিবে, তা হবে না। কথা বলার আগে ১০ বার চিন্তা করে কথা বলবেন। আপনার ছেলেপেলে, চ্যালা চামচাদের বলে দিবেন, মানুষের ধৈর্যের বাঁধ আছে। শান্তিপূর্ণভাবে ত্বকী হত্যার বিচার চাচ্ছি। নারায়ণগঞ্জ শহরে কাজ করে যাচ্ছি চারটা নির্বাচন করেছি ষড়যন্ত্রের মধ্য দিয়েই। একটা নির্বাচনে পাস করেও বিজয় মিছিল করিনি। তার মানে এই নয় যে আপনাদের কিছু করতে বা বলতে পারব না। আপনি যেমন হুমকি দেন এই করে ফেলবেন সেই করে ফেলবেন, আপনারও আমি বারোটা বাজিয়ে দিতে পারি। কিন্তু এই বিশৃঙ্খলা শহরে আমি চাই না।’ 

মেয়র আরও বলেন, ‘আমি পারিবারিক ভাবেই আওয়ামী লীগের রাজনীতি করে আসছি। যত দিন বেঁচে থাকব তত দিন আওয়ামী লীগ করব, জয় বাংলা বলব। একই সঙ্গে দলের ভেতর থেকেও অন্যায় অবিচারের প্রতিবাদ করব। সেটা দলের হোক আর দলের বাইরের হোক।’ 

মানুষ অন্যায়কারীদের ভয় পায় না উল্লেখ করে আইভী বলেন, ‘তারা ভয় দেখিয়ে সবাইকে ভীত করে রাখতে চায়। এখন আর এই শহরের মানুষ তাদের ভয় পায় না। সে জন্যেই হোন্ডাবাহিনীকে ধাওয়া দিতে পেরেছে। এক দেড়শ মানুষকে সাধারণ এলাকাবাসী ধাওয়া দেয়। কতটা দুর্বল আপনারা এবার দেখুন। যারা অন্যায় কাজ করে, মানুষ হত্যা করে, মানুষকে ভয় দেখাতে চায়, তারা সব সময়েই দুর্বল থাকে। আমি সরকারের কাছে বলতে চাই, আমাদের মুক্তি দেন। আমরা এই সাম্রাজ্যবাদের হাত থেকে মুক্তি চাই।’ 

সভাপতির বক্তব্যে সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের আহ্বায়ক  রফিউর রাব্বী বলেন, ‘এই আজমেরীর টর্চার সেলে তারা ১১ জন মিলে ত্বকীকে হত্যা করেছিল। আজ নারায়ণগঞ্জ শহর ছেয়ে গেছে এই ঘাতকের ফেস্টুনে। আজকে তার হোন্ডাবাহিনী শহরে শহরতলিতে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। অথচ আমাদের বিশ্বাস করতে হবে, নারায়ণগঞ্জে একটা প্রশাসন রয়েছে, এখানে একটা সরকারি ব্যবস্থা রয়েছে। এই নারায়ণগঞ্জে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন থাকতেও এই জঘন্য কর্মকাণ্ড কীভাবে চলে? আমরা ত্বকী হত্যার বিচার চাই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সিলেটে জুয়া খেলা অবস্থায় আটক ৭

সিলেট প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

সিলেটে জুয়া খেলা অবস্থায় ৭ জনকে আটক করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানিয়েছেন সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (মিডিয়া) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।

পুলিশ জানায়, বুধবার বিকেলে সিলেটের কোতোয়ালি মডেল থানাধীন কানিশাইল ১ নম্বর রোডের মারুফ টি স্টল নামক দোকানে অভিযান পরিচালনা করে তির শিলং-জাতীয় জুয়া খেলা অবস্থায় তাঁদের আটক করা হয়।

আটক ব্যক্তিরা হলেন সিলেটের কোতোয়ালি মডেল থানাধীন কানিশাইলের সজীব মিয়ার কলোনির রমিজ আলীর ছেলে তাহের মিয়া (৩০), উসমান মিয়ার ছেলে শামীম (২০), ইমন মিয়ার কলোনির মো. আব্দুল করিম তালুকদারের ছেলে মো. স্বপন মিয়া (৫৫), রঙ্গ মিয়ার ছেলে জসিম (৪৫), জামাল উদ্দিনের ছেলে আল আমিন (২৭), আব্দুর রশিদের ছেলে মো. বাদল (৩৮) এবং আবুল কালামের ছেলে সুজাত মিয়া (৩৫)।

মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, তাঁদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খুলনায় মা হত্যায় ছেলে গ্রেপ্তার

খুলনা প্রতিনিধি
মো. রিয়াদ খান।  ছবি: সংগৃহীত
মো. রিয়াদ খান। ছবি: সংগৃহীত

খুলনায় শিউলী বেগম হত্যা মামলায় ছেলে মো. রিয়াদ খানকে (২২) গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) বিকেল পৌনে ৪টার দিকে তাঁকে খুলনা র‌্যাব-৬ এবং ৭-এর যৌথ অভিযানে ফেনী জেলার সদর থানা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার রিয়াদ শিউলী বেগমের একমাত্র ছেলে। এ সময় তাঁর কাছ থেকে ২ লাখ ৫ হাজার ৮০ টাকা, দুটি আইফোন, একটি স্মার্টফোন ও একটি এয়ারপড জব্দ করা হয়।

র‌্যাবের পাঠানো বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানা গেছে, নিহত শিউলি বেগম সৌদি আরবপ্রবাসী ছিলেন। গত ২৭ অক্টোবর দুই মাসের ছুটিতে বাংলাদেশে আসেন। পরে নগরীর ট্যাংক রোডের বাসিন্দা রবিউল ইসলামের বাড়ির নিচতলায় ছেলে রিয়াদ খান এবং দ্বিতীয় স্বামী সাগরকে নিয়ে বসবাস শুরু করেন।

দেশে আসার ১০-১২ দিন পরে উত্তরা ব্যাংক খুলনা শাখা থেকে পৌনে ৭ লাখ টাকা উত্তোলন করে আলমারিতে রেখে দেন।

৯ ডিসেম্বর রাতে শিউলী বেগমের বড় মেয়ে রুবিনা আক্তার এবং তাঁর স্বামী রাজিব রাতের খাবার খেয়ে বাড়িতে চলে যান। ১০ ডিসেম্বর সকাল থেকে শিউলী বেগমকে ফোনে না পেয়ে রুবিনা আক্তারকে খোঁজ নিতে বলেন তাঁর স্বামী।

কিন্তু খোঁজ নিয়ে তাঁর সন্ধান না পেয়ে ওই দিন রাতে স্থানীয়দের সহায়তায় তালা ভেঙে ঘর থেকে শিউলী বেগমের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

পরে তাঁর ঘর থেকে পৌনে ৭ লাখ টাকা উধাও হয়ে যায়। শিউলী বেগম হত্যার পর থেকে একমাত্র ছেলে রিয়াদ খানেরও কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।

এ ঘটনায় নিহতের ভাই রায়হান গাজী বাদী হয়ে শিউলী বেগমের ছেলে রিয়াদ খানকে আসামি করে মামলা করেন। উন্নত প্রযুক্তির সহায়তায় র‌্যাব খুলনা-৬ ও ৭-এর একটি দল তাঁকে ফেনী সদর থেকে গ্রেপ্তার করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নরসিংদীতে তিন চোখ ও দুই মুখের বাছুরের জন্ম, এলাকায় চাঞ্চল্য

নরসিংদী প্রতিনিধি
পুবেরগাঁও গ্রামের একটি খামারে বাছুরটির জন্ম। ছবি: আজকের পত্রিকা
পুবেরগাঁও গ্রামের একটি খামারে বাছুরটির জন্ম। ছবি: আজকের পত্রিকা

নরসিংদীতে অদ্ভুত আকৃতির বাছুরের জন্ম হয়েছে। বাছুরটির রয়েছে দুটি মুখ, দুটি জিহ্বা, দুটি কান ও তিনটি চোখ। এর মধ্যে একটি চোখ বাছুরের কপালের মাঝখানে। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

২৩ ডিসেম্বর রাতে শিবপুর উপজেলার চক্রধা ইউনিয়নের পুবেরগাঁও গ্রামে স্থানীয় ইউপি সদস্য কাশেম খানের খামারে বাছুরটির জন্ম।

খামারমালিক কাশেম খান বলেন, বাছুরটি জন্মের পর থেকেই অসুস্থ। স্বাভাবিকভাবে দুধ পান করতে না পারায় ফিডারের মাধ্যমে দুধ খাওয়াতে হচ্ছে।

তিনি জানান, তাঁর খামারের একটি গাভি বাছুরটির জন্ম দিয়েছে। তিনি বলেন, এর আগেও গাভিটির বাছুর হয়েছে। কিন্তু এবারের মতো এমন অদ্ভুদ বাছুর আগে কখনো হয়নি।

ঘটনাটি জানাজানির পর থেকেই বাছুরটিকে একনজর দেখতে আশপাশের কৌতূহলী মানুষ খামারে আসছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল জলিল বলেন, ‘আমরা ছোটবেলা থেকে গরু-ছাগল দেখছি। কিন্তু তিন চোখ আর দুই মুখের বাছুর এই প্রথম দেখলাম। খবর পেয়ে দূর থেকে এসেছি।’

আরেক স্থানীয় নারী জরিনা বেগম বলেন, ‘বাছুরটা দেখতে অদ্ভুত লাগলেও মায়া হচ্ছে। বাছুরটির স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। অনেকেই দ্রুত প্রাণিসম্পদ বিভাগের চিকিৎসকের পরামর্শ ও চিকিৎসা নিশ্চিত করার পরামর্শ দিচ্ছেন।’

এর আগে এ ধরনের বাছুর জন্মের বিষয়ে প্রাণী বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, সাধারণত জেনেটিকস ডিফেক্টের কারণে গাভির এমন ত্রুটিপূর্ণ বাচ্চার জন্ম হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গাজীপুরে ট্রেনে কাটা পড়ে নানি-নাতনিসহ নিহত ৩

গাজীপুর প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

গাজীপুরের কালীগঞ্জে রেললাইন দিয়ে হাঁটার সময় ট্রেনে কাটা পড়ে নানি-নাতনিসহ তিন নারী নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) বিকেলে টঙ্গী-ভৈরব রেলপথের আড়িখোলা রেলস্টেশনসংলগ্ন টেকপাড়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত নারীরা হলেন কালীগঞ্জ পৌরসভার দেওয়ালেরটেক গ্রামের মোবারক হোসেনের স্ত্রী সাদিয়া বেগম (২৪), একই এলাকার বাবু মিয়ার মেয়ে অনাদি আক্তার (১৩) এবং নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার মরজাল এলাকার বাসিন্দা কমলা বেগম (৫৫)। নিহত কমলা বেগম ও অনাদি আক্তার সম্পর্কে নানি-নাতনি এবং সাদিয়া বেগম তাঁদের প্রতিবেশী ছিলেন।

স্থানীয়রা ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে আড়িখোলা রেলব্রিজ এলাকায় রেললাইনের ওপর দিয়ে তিনজন হেঁটে যাচ্ছিলেন। এ সময় ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা নোয়াখালীগামী ‘উপকূল এক্সপ্রেস’ ট্রেনটি চলে আসে। এ সময় তাঁরা রেলব্রিজের ওপর থাকায় সেখান থেকে দ্রুত সরে যাওয়ার সুযোগ পাননি। পরে ট্রেনটি তাঁদের ওপর দিয়ে চলে যায়। এতে ট্রেনে কাটা পড়ে ঘটনাস্থলেই কমলা বেগম ও সাদিয়া বেগমের মৃত্যু হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় অনাদি আক্তারকে উদ্ধার করে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক জিয়াউর রহমান জানান, অনাদি আক্তারকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কালীগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ওবায়দুল হক জানান, এটি রেলওয়ের আওতাধীন দুর্ঘটনা হওয়ায় রেলওয়ে পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় করে লাশগুলো উদ্ধার করা হয়েছে।

রেলওয়ে নরসিংদী পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) দিলীপ চন্দ্র সরকার বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশের সুরতহাল সম্পন্ন করেছি। নিহত নারীদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে বিনা ময়নাতদন্তে লাশগুলো স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত