Ajker Patrika

বিনোদনকেন্দ্র খুঁজতেই ঘাম ছুটে যাচ্ছে মানুষের

অর্চি হক, ঢাকা
আপডেট : ০৪ মে ২০২২, ১৯: ২৯
বিনোদনকেন্দ্র খুঁজতেই ঘাম ছুটে যাচ্ছে মানুষের

ঈদের দ্বিতীয় দিন দুই সন্তানকে নিয়ে চিড়িয়াখানায় যাওয়ার কথা ছিল বেসরকারি কর্মকর্তা হাফিজ ইমতিয়াজের। কিন্তু সকালে ফেসবুকসহ বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে তিনি দেখতে পান, চিড়িয়াখানায় লাখো মানুষের ভিড়। টিকিট কাউন্টারের সামনে গিজ গিজ করছে মানুষ। গরমে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে হাঁসফাঁস করছেন তাঁরা। এই ভিড়ের মধ্যে ছোট দুই শিশুকে নিয়ে যাওয়ার সাহস পাননি। শেষ পর্যন্ত চিড়িয়াখানা দেখতে যাওয়ার পরিকল্পনা বাতিল করেন ইমতিয়াজ।

হতোদ্যম ইমতিয়াজ এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘ভিড়ের মধ্যে বাচ্চাদের পশুপাখি দেখাব ক্যামনে, চিনাব ক্যামনে আর সামলাবই বা ক্যামনে! তাই আর চিড়িয়াখানায় গেলাম না। এখন ওদের নিয়ে সংসদ ভবনের দিকে যাচ্ছি। ওখানে ঘোড়ার গাড়িতে চড়াতে পারি কি না দেখি।’

আফসোস করে তিনি যোগ করেন, ‘বাচ্চাদেরও তো বিনোদনের দরকার আছে। কিন্তু ওদের নিয়ে যাবটা কই? আশপাশে সে রকম জায়গা তো নাই!’ 

কর্মক্লান্ত নাগরিক জীবনে একটু প্রশান্তির জন্য যেমন বিনোদনকেন্দ্রের বিকল্প নেই, তেমনি শিশুর স্বাভাবিক বিকাশের জন্যও প্রয়োজন বিনোদনকেন্দ্র। কিন্তু রাজধানীতে এই জিনিসটির বড়ই অভাব বলে অভিযোগ ঢাকাবাসীর। ছুটির দিনগুলোতে সেই অভাবটাই প্রকট হয়ে ধরা দেয়। হাতে গোনা কয়েকটি বিনোদনকেন্দ্রে ভিড় জমায় লক্ষাধিক মানুষ। মানুষের ভিড়ে আনন্দটাই মাটি হয়ে যায়!

চিড়িখানার ভেতরেও ভিড়ের কারণে বিড়ম্বনায় দর্শনার্থীরাজাতীয় চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আজ ঈদের দ্বিতীয় দিন বিকেল পর্যন্ত দর্শনার্থীর সংখ্যা লাখ ছাড়িয়েছে। দর্শনার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দুই বছর পর ঈদের ছুটিতে চিড়িয়াখানায় আসতে পেরে তাঁরা খুশি। তবে বিনোদন নিতে এসে এমন জেরবার হতে হবে তা ভাবেননি।

তাসফিয়া আক্তার নামে এক দর্শনার্থী বলেন, ‘এত মানুষ সকাল থেকে এখানে। অথচ একটা বাথরুমও ভালো নেই। শুধু মানুষ আর মানুষ! বানর, বাঘ আর সিংহের খাঁচার কাছাকাছি যাওয়ার উপায়ও নাই। ভিড়ের মধ্যে বাচ্চাদের কিছু দেখাতেও পারছি না।’

রাজধানীর আরেক জনপ্রিয় বিনোদনকেন্দ্র হাতিরঝিলেও একই চিত্র। ঈদের ছুটিতে পুরো ঢাকা ফাঁকা হলেও হাতিরঝিল ও এর আশপাশের এলাকাতে নেমেছে মানুষের ঢল। কেউ এসেছেন বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে, কেউ পরিবার নিয়ে। কেউ রেস্টুরেন্টগুলোতে বসে খাচ্ছেন, কেউ ফুলের মালা কিনে ছবি তোলায় ব্যস্ত। কিন্তু অত্যধিক ভিড়ের কারণে কম বেশি সবাইকেই পড়তে হচ্ছে বিড়ম্বনায়। যানবাহন চলাচলেও সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। হাতিরঝিলে আসা সাবিকুন্নাহার বলেন, ‘ফেসবুক, টিভি সব জায়গায় দেখি ফাঁকা ঢাকা। অথচ এখানে এসে দেখতেছি মানুষের ঠেলাঠেলি। নিরিবিলিতে একটু বসব তার উপায় নাই।’ 

এমন ভিড় দেখে অনেকে শেষ মুহূর্তে চিড়িয়াখানা দেখতে যাওয়ার পরিকল্পনাই বাতিল করেছেন।ঈদের দ্বিতীয় দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে বসে আড্ডারত তরুণ সজীব বললেন, ‘পৃথিবীর আর কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে মনে হয় এত মানুষের ভিড় হয় না! ছুটির দিন মানেই টিএসসিতে পা ফেলার জায়গা থাকে না। অবশ্য মানুষ আর যাবে কই, ঘোরার জায়গা তো নাই!’

করোনাভাইরাসের কারণে টানা দুই বছর ঘরবন্দী ঈদ পালন করতে হয়েছে সবাইকে। এবারের ঈদে করোনার বিধিনিষেধ ছাড়াই বাইরে বের হতে পারায় সবাই খুব খুশি। কিন্তু ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বিনোদনকেন্দ্রের অপ্রতুলতা। বড়দের জন্য আছে হাতেগোনা কয়েকটি উদ্যান। ছোটদের জন্য বিনোদনকেন্দ্র আরও কম। শিশুদের অন্যতম বিনোদনকেন্দ্র শাহবাগের শিশুপার্ক। কিন্তু সেটা ২০১৯ সাল থেকে বন্ধ। শ্যামলীতে ছোট পরিসরে ডিএনসিসির শিশু মেলা থাকলেও সেখানে রাইডের সংখ্যা কম। শিশুদের মন ভরছে না। ঢাকার অদূরে সাভারে ফ্যান্টাসি কিংডমসহ কয়েকটি পার্ক থাকলেও সেগুলো কিছুটা ব্যয়বহুল হওয়ায় একশ্রেণির মানুষ সেখানে যেতে পারেন না।

সবার সাধ্যের মধ্যে থাকা শাহবাগের শিশুপার্কটি বন্ধ থাকায় অভিভাবকদের আক্ষেপের শেষ নেই!

নাতিকে নিয়ে হাতিরঝিলে ঘুরতে আসা মুস্তাফিজুর রহমান বললেন, ‘সকাল থেকে নাতিটা গোঁ ধরছিল শিশুপার্কে নিয়ে যেতে। কিন্তু শিশুপার্ক তো বন্ধ। আর ফ্যান্টাসি কিংডম বহু দূর, তাছাড়া ব্যয়বহুলও। অত সামর্থ্য তো নাই! শিশুপার্কটা খোলা থাকলে সাধ্যের মধ্যে শিশুদের আনন্দের একটা জায়গা পাওয়া যেত।’

হাতিরঝিলেও বুক ভরে শ্বাস নেওয়ার উপায় নেইরাজধানীর দুই সিটি করপোরেশনের হিসাব মতে, নগরের জনসংখ্যা ২ কোটির বেশি। এই বিপুলসংখ্যক মানুষের জন্য পর্যাপ্ত বিনোদনকেন্দ্র এবং সেগুলোর ব্যবস্থাপনার অভাব রয়েছে বলে মনে করেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মুহাম্মদ শরীফুল ইসলাম। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘আমাদের শহরে পর্যাপ্ত বিনোদনকেন্দ্র তো নেইই, যে বিনোদনকেন্দ্রগুলো আছে সেগুলোরও সুব্যবস্থাপনা এবং রক্ষণাবেক্ষণ করা হয় না। জাপান-সিঙ্গাপুরে খুব কম জায়গার মধ্যে সিস্টেমেটিক ওয়েতে ওরা বিনোদনকেন্দ্রগুলোতে সবকিছুর ব্যবস্থা করেছে। কিন্তু আমাদের ঢাকায় যেই বিনোদনকেন্দ্রগুলো আছে সেখানে শৌচাগার, খাবারদাবারসহ নানা সমস্যা। দর্শনার্থীরাও বিনোদনকেন্দ্রে এসে তা নোংরা করে। আসলে আমরা জাতিগতভাবেই এ রকম। জাপান-সিঙ্গাপুরে ওরা সবকিছু নিজেরা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখে, আমাদের দেশে তেমনটা দেখা যায় না।’

নগরীতে বিনোদনকেন্দ্রের অপর্যাপ্ততা কাটাতে সরকারি পরিকল্পনার পাশাপাশি বেসরকারি খাত থেকেও বিনিয়োগ এবং অনুদান আসা দরকার বলে মনে করেন অধ্যাপক মুহাম্মদ শরীফুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘সরকারি উদ্যোগ এবং সুপরিকল্পনা তো অবশ্যই দরকার। সেই সঙ্গে বেসরকারি পর্যায় থেকেও সবার এগিয়ে আসা দরকার। আমাদের দেশে অনেক শিল্পগোষ্ঠী আছে। তারা চাইলেই বিনোদনকেন্দ্র বা বিনোদনকেন্দ্রের উন্নয়ন করতে পারে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কৃষকের ঘরে ১২ ফুট লম্বা গাঁজার গাছ, আটক

বিরামপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি 
দিনাজপুরের বিরামপুরে গাঁজার গাছসহ আটক ব্যক্তি। ছবি: আজকের পত্রিকা
দিনাজপুরের বিরামপুরে গাঁজার গাছসহ আটক ব্যক্তি। ছবি: আজকের পত্রিকা

দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলায় ১২ ফুট উচ্চতার একটি গাঁজার গাছসহ এক কৃষককে আটক করেছে পুলিশ। পরে আজ শুক্রবার তাঁকে আদালতে সোপর্দ করা হয়।

বিরামপুর থানার জ্যেষ্ঠ উপপরিদর্শক (এসআই) সাজিদুল ইসলাম জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে জোতবাণী ইউনিয়নের চাকুল গ্রামে অভিযান চালানো হয়। এ সময় মৃত দছির উদ্দিনের ছেলে আজিজার রহমানের (৪৫) বাড়ির একটি পরিত্যক্ত ঘর থেকে গাঁজার গাছটি জব্দ করা হয়।

পরে আজিজার রহমানকে আটক করা হয়। পুলিশ জানায়, গাছটির উচ্চতা প্রায় ১২ ফুট, ওজন ১০ কেজি এবং আনুমানিক মূল্য এক লাখ টাকা।

এ বিষয়ে বিরামপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আতাউর রহমান জানান, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়েছে। আজ আসামিকে দিনাজপুর আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিস্ফোরক মামলায় আওয়ামী ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা জেলে

চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি 
গ্রেপ্তার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নবীর উদ্দিন মোল্লা ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মনোয়ার হোসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
গ্রেপ্তার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নবীর উদ্দিন মোল্লা ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মনোয়ার হোসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

পাবনার চাটমোহরে আওয়ামী লীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের দুই নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে চাটমোহর থানার পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল ও রাতে পৃথক অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। পরে আজ শুক্রবার দুপুরে বিস্ফোরক আইনে করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাঁদের আদালতের মাধ্যমে পাবনা জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

গ্রেপ্তার দুজন হলেন উপজেলার ডিবিগ্রাম ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নবীর উদ্দিন মোল্লা (৭০) এবং উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও পৌর সদরের মধ্য শালিখা মহল্লার বাসিন্দা মনোয়ার হোসেন (৫৪)।

চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনজুরুল আলম গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল বেলা সাড়ে ৩টার দিকে উপজেলার ডিবিগ্রাম ইউনিয়নের বামনগ্রাম নিজ বাড়ি থেকে আওয়ামী লীগ নেতা নবীর উদ্দিন মোল্লাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এ ছাড়া একই দিন রাতে মধ্য শালিখা মহল্লার নিজ বাড়ি থেকে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মনোয়ারকে গ্রেপ্তার করা হয়। এই দুজনের বিরুদ্ধে চাটমোহর থানায় বিস্ফোরক মামলা রয়েছে। আজ সকালে তাঁদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রামেকে মানসিক রোগীদের জন্য পূর্ণাঙ্গ ওয়ার্ড চালু

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রথমবারের মতো মানসিক রোগীদের জন্য পূর্ণাঙ্গ ওয়ার্ড চালু। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রথমবারের মতো মানসিক রোগীদের জন্য পূর্ণাঙ্গ ওয়ার্ড চালু। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে প্রথমবারের মতো মানসিক রোগীদের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ ওয়ার্ড চালু করা হয়েছে। হাসপাতালটির বহির্বিভাগে প্রতিদিনই উল্লেখযোগ্যসংখ্যক মানসিক রোগী চিকিৎসা নিতে আসে। অনেকের ক্ষেত্রে ভর্তি রাখার প্রয়োজন থাকলেও সেটি সম্ভব হতো না। কিছু কিছু রোগী রাখা হতো মেডিসিন বিভাগেই।

এবার প্রতিষ্ঠার ৬৭ বছর পর হাসপাতালটিতে পূর্ণাঙ্গ মনোরোগ ওয়ার্ড চালু হলো। এ ওয়ার্ডে ২৫টি শয্যা আছে। এর মধ্যে পুরুষদের জন্য ১০টি, নারীদের জন্য সাতটি, শিশু-কিশোরদের জন্য পাঁচটি এবং উচ্চ পর্যবেক্ষণের জন্য তিনটি শয্যা সংরক্ষিত। এ ছাড়া রোগীদের থেরাপি ও কাউন্সেলিং রুমসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার সৃষ্টি করা হয়েছে এ ওয়ার্ডে।

রামেক হাসপাতালের সদ্যবিদায়ী পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফ এম শামীম আহাম্মদের উদ্যোগে হাসপাতালের পুরাতন আইসিইউ ভবনে এই ওয়ার্ড করা হয়েছে। গত বুধবার তিনি এটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে নতুন পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পি কে এম মাসুদ-উল-ইসলামসহ মনোরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা উপস্থিত ছিলেন।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আগামী মার্চেই ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন ফর মেডিকেল এডুকেশন (ডব্লিউএফএমই) থেকে একটি প্রতিনিধিদল রাজশাহী মেডিকেল কলেজ পরিদর্শনে আসবে। তারা মনোরোগ বিভাগের ওয়ার্ড না পেলে কলেজের পয়েন্ট কমবে। এ ছাড়া মেডিকেল কলেজের অ্যাক্রেডিটেশনেও সমস্যা হতে পারে। তখন এ কলেজের শিক্ষার্থীদের দেশের বাইরে পড়াশোনা করতে যাওয়ার সুযোগ কমবে। এ ছাড়া এফসিপিএস এবং ডিপ্লোমা কোর্সের শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণের জন্যও এই ওয়ার্ডটি জরুরি ছিল।

তাই রাজশাহী মেডিকেল কলেজের পক্ষ থেকে এই ওয়ার্ড চালু করার জন্য হাসপাতাল পরিচালকের কাছে অনুরোধ করা হয়। সবকিছু শুনে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফ এম শামীম আহাম্মদ এই ওয়ার্ড চালুর উদ্যোগ নেন। ওয়ার্ডে প্রয়োজনীয় চিকিৎসক ও নার্স দেওয়া হয়েছে। ওয়ার্ডের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মোস্তফা আলী।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফ এম শামীম আহাম্মদ বলেন, ‘উত্তরবঙ্গের সবচেয়ে বড় এ হাসপাতালে যে ৬৭ বছরেও মানসিক রোগীদের জন্য ওয়ার্ড চালু হয়নি, এটিই অবাক করার বিষয়। প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করে আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে এটি চালু করেছি। এখন থেকে এ অঞ্চলের মানসিক রোগীরা হাসপাতালে ভর্তি থেকেও চিকিৎসা নিতে পারবে।’

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহাম্মদ রামেক হাসপাতালের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি। এরপর তিনি হাসপাতাল ও রোগীদের কল্যাণে নতুন অনেক উদ্যোগ নিয়ে বাস্তবায়ন করেছেন। হাসপাতালকে করে তুলেছেন রোগীবান্ধব। বাড়িয়েছেন হাসপাতালের চিকিৎসাসেবার মান। বৃহস্পতিবার তিনি নতুন পরিচালক পি কে এম মাসুদ-উল-ইসলামের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করেন।

মানসিক রোগীদের জন্য নতুন ওয়ার্ড চালুর আগে গেল ২৩ অক্টোবর শুধু সাপে কাটা রোগীদের জন্য হাসপাতালে বিশেষায়িত ওয়ার্ড চালু করেন শামীম আহাম্মদ। এরপর এখন পর্যন্ত হাসপাতালে একজন সাপে কাটা রোগীরও মৃত্যু হয়নি। আগে প্রায় প্রতিদিনই সাপে কাটা রোগীর মৃত্যু হতো এ হাসপাতালে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মান্নাকে ৩৮ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ পরিশোধে ‘কলব্যাক নোটিশ’

শিবগঞ্জ (বগুড়া) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭: ২০
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। ফাইল ছবি
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। ফাইল ছবি

আফাকু কোল্ড স্টোরেজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নার বিরুদ্ধে ৩৮ কোটি ৪ লাখ ৭৬ হাজার টাকা খেলাপি ঋণ পরিশোধে ‘কলব্যাক নোটিশ’ জারি করেছে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, বগুড়া শাখা। গত বুধবার ইসলামী ব্যাংক, বগুড়া শাখার প্রধান মো. তৌহিদ রেজার স্বাক্ষরে এ নোটিশ ইস্যু করা হয়।

নোটিশে বলা হয়েছে, ১৮ ডিসেম্বরের মধ্যে বকেয়া পরিশোধ না করা হলে ইসলামী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে। ব্যাংকের নোটিশ অনুযায়ী, ২০১০ সালে ২২ কোটি টাকার বিনিয়োগ অনুমোদন করা হলেও মুনাফা, চার্জ ও জরিমানা পরিশোধ না করায় বর্তমানে মোট বকেয়া দাঁড়িয়েছে ৩৮ কোটি ৪ লাখ ৭৬ হাজার টাকা। নোটিশে বলা হয়, আফাকু কোল্ড স্টোরেজ একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠান হওয়া সত্ত্বেও মান্না ইচ্ছাকৃতভাবে ঋণ পরিশোধ করেননি। বারবার নোটিশ দেওয়া হলেও টাকা পরিশোধের কোনো চেষ্টাও করেননি তিনি।

গত বুধবার ইসলামী ব্যাংক, বগুড়া শাখার প্রধান মো. তৌহিদ রেজার স্বাক্ষরে এই নোটিশ ইস্যু করা হয়। ছবি: সংগৃহীত
গত বুধবার ইসলামী ব্যাংক, বগুড়া শাখার প্রধান মো. তৌহিদ রেজার স্বাক্ষরে এই নোটিশ ইস্যু করা হয়। ছবি: সংগৃহীত

বগুড়া শাখাপ্রধান তৌহিদ রেজা স্বাক্ষরিত নোটিশে আরও বলা হয়, ‘মঞ্জুরিপত্রের নিয়মানুযায়ী প্রতিটি ডিলে নির্ধারিত তারিখের মধ্যে কিস্তির টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও আপনাকে/আপনাদেরকে মৌখিকভাবে, ব্যক্তিগতভাবে ও মোবাইল ফোনে বারবার তাগাদা দেওয়া সত্ত্বেও আপনি/আপনারা তা পরিশোধ করেননি। ইতিপূর্বে আপনাকে লিখিতভাবে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে, তবুও বিনিয়োগের দায় পরিশোধ করেননি। আপনার/আপনাদের লেনদেনের পরিস্থিতি দেখে আমাদের কাছে অনুমিত হচ্ছে যে, আপনার/আপনাদের সঙ্গে আমাদের আর ব্যবসা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। অতএব, আগামী ১৮ ডিসেম্বরের মধ্যে বিনিয়োগের সমুদয় দায় ৩৮৪.৭৬ মিলিয়ন টাকা পরিশোধ করে হিসাবসমূহ নিষ্পত্তি করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হলো। অন্যথায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আপনাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে বাধ্য থাকবে।’

এদিকে, আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়া-২ (শিবগঞ্জ) আসন থেকে সংসদ সদস্য পদে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না। কিন্তু গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) তৃতীয় অধ্যায় (নির্বাচন) ১২(১)(ঠ) ধারা অনুসারে কোনো ঋণগ্রহীতা খেলাপি হলে তিনি নির্বাচনে অযোগ্য বিবেচিত হবেন।

এ বিষয়ে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘আমার প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ আছে, এটা সঠিক। তবে চিঠির বিষয়ে এখনো কিছু জানি না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত