কামরুল হাসান

হাতিরপুলের একটি চায়নিজ রেস্তোরাঁয় অনুষ্ঠান। এক সাংবাদিক বন্ধুর মেয়ের জন্মদিন। অতিথিদের বেশির ভাগই সাংবাদিক, বিশেষ করে অপরাধবিষয়ক প্রতিবেদক।
কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তাও আছেন, সঙ্গে অতিরিক্ত আইজিপি আবদুর রহিম খান। খাওয়া-দাওয়া চলছে। হঠাৎ ১০-১২ জন লোক হুড়োহুড়ি করে ঢুকে পড়লেন রেস্তোরাঁর ভেতরে। তাঁদের একজন উচ্চ স্বরে আমার সেই বন্ধুর নাম ধরে ডাকলেন, `…দেখেন ভাই, মিলন ভাই এসেছে।’ একটু পরে আমাদের সামনে হাজির হলেন সেই ‘মিলন ভাই’—হুমায়ুন কবির মিলন, যাকে সবাই চিনত ‘মুরগি মিলন’ নামে।
অতিথিরা কিছুটা বিরক্ত, এ রকম একটা অনুষ্ঠানে সন্ত্রাসী কেন? ঘটনা পরিষ্কার করলেন মিলন নিজেই। বললেন, তাঁকে কেউ দাওয়াত দেয়নি। অনুষ্ঠানের কথা শুনে নিজেই দলবল নিয়ে হাজির হয়েছেন। এলাকার লোক হিসেবে তাঁর তো একটা দায়িত্ব আছে।
‘দায়িত্ববান’ এই লোকটি একসময় নিজ দায়িত্বে ঢাকা শহর দাপিয়ে বেড়াতেন। চলতেন দলেবলে গাড়ি হাঁকিয়ে, আগে-পিছে অস্ত্রসমেত পাহারা নিয়ে। বছরে দু-তিনবার গ্রেপ্তার হয়ে সংবাদপত্রের শিরোনামও হতেন। বিমানবন্দর থেকে সূত্রাপুর–সবই ছিল তাঁর নিয়ন্ত্রণে। আর ছিল একটা রাজনৈতিক পরিচয়, কিন্তু তাতে কোনো সামাজিক স্বীকৃতির মোড়ক ছিল না।
ইস্কাটন থেকে বাংলামোটরের দিকে যেতে হাতের বাঁয়ে হেলেনা সেন্টার। সেখানে এখন মোটর পার্টসের বড় বড় দোকান। সেই মার্কেটের পেছনে একটি ঘর ছিল সন্ত্রাসী লিয়াকতের ব্যক্তিগত কার্যালয়। প্রতিদিন বিকেলে মিলনও সেখানে আসতেন। তার চলাফেরায় কোনো রাখঢাক ছিল না। অপরাধ বিটের প্রায় সব রিপোর্টারকে তিনি চিনতেন, ডাকতেন বেশ সম্মান করে।
নব্বইয়ের দশকের শুরুতে যেসব সন্ত্রাসী ঢাকা শহর কাঁপাতেন, তাঁদের অনেকেই ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর নিজেদের যুবলীগ-ছাত্রলীগ বলে পরিচয় দিতে শুরু করেন। বাহিনী তৈরি করে তাঁরাও রীতিমতো এলাকা দখলে মেতে ওঠেন। বিএনপিপন্থী বলে পরিচিত সন্ত্রাসীরাও তখন দলবদল করে ফেলেন। এই সময়ে যেসব সন্ত্রাসীর উত্থান হয়, তাঁদেরই একজন হলেন মুরগি মিলন।
স্বাধীনতার পর মুরগি মিলন প্রভাবশালী নেতা মোস্তফা মহসিন মন্টু ও হেমায়েত উল্লাহ আওরঙ্গের ঘনিষ্ঠ হন। ১৯৭৮ সালের দিকে এলিফ্যান্ট রোডে জুতার দোকান দেন। পরে তিনি মার্কেট ও তৈরি পোশাকের প্রতিষ্ঠান করেন। একবার মুরগি মিলন আমাকে বলেছিলেন, ১৯৭৫ সালের ২৩ এপ্রিল চোরাচালানের মামলায় পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করেছিল।
মুরগি মিলনের জন্ম মুন্সিগঞ্জে হলেও থাকতেন রাজধানীর ফ্রি স্কুল স্ট্রিটে। দুই ভাই। বাবা তাজুল ইসলাম হাতিরপুলে মুরগির ব্যবসা করতেন। ১৮ বছর পর্যন্ত মিলন সেই ব্যবসা দেখাশোনা করেন। সে কারণে বড় হয়েও তাঁর নামের সঙ্গে ‘মুরগি’ শব্দটি লেপ্টে যায়।
মুরগি মিলনের স্ত্রী নাসরিন কবির ডলির বাবা ছিলেন সাবেক জেলা জজ। তো জজ সাহেব তাঁর মেয়েকে এমন ‘সুপাত্রে’র হাতে তুলে দেবেন না। তিনি মেয়েকে অন্যত্র বিয়ে দেওয়ার আয়োজন করলেন। খবর পেয়ে মুরগি মিলন ডলিকে বাড়ি থেকে তুলে এনে বিয়ে করেন।
মুরগি মিলন মোট কতবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন তা মনে নেই, তবে প্রতি বছর তিনি দু-তিনবার গ্রেপ্তার হয়ে জেলে যেতেন। এরপর জামিনে বেরিয়ে এসে ঘুরে বেড়াতেন। তবে কখনো একা চলাফেরা করতেন না। তাঁর বিরুদ্ধে সে সময় ১৬-১৭টি মামলা ছিল, যার প্রায় সবই চোরাচালানের। পুলিশ কর্মকর্তারা বলতেন, তিনি ছিলেন স্বর্ণ চোরাচালানের রিং লিডার। তাঁর প্রধান কাজ ছিল বিমানবন্দরে আসা সোনার চালান নিরাপদে ছাড়িয়ে এনে সীমান্ত পার করে দেওয়া। এই সোনায় লগ্নি করতেন ভারতের কয়েকজন ব্যবসায়ী। ভারত থেকে গরুর যে চালান আসত, তার সঙ্গে সোনার দামের সমন্বয় করা হতো। অর্থাৎ, সোনার বদলে গরু আসত ওপার থেকে।
সোনা পাচারে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো বিমানবন্দর এলাকা নিয়ন্ত্রণে রাখা। তবে পাচার হয়ে সোনা যেহেতু প্রথমে তাঁতীবাজারে আসত, সে কারণে তাঁতীবাজারের নিয়ন্ত্রণও বড় ব্যাপার ছিল। এই নিয়ন্ত্রণ নিয়েই মুরগি মিলনের সঙ্গে বিরোধ বাধে কালা জাহাঙ্গীর ও টোকাই সাগরের। একপর্যায়ে কালা জাহাঙ্গীর তাঁতীবাজারের নিয়ন্ত্রণ নিতে চান, আর টোকাই সাগর চাইলেন বিমানবন্দরের। দুজনের স্বার্থ মিলে গেলে পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়ান মুরগি মিলন। এরপর তাঁরা মুরগি মিলনকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেন। কিন্তু সেটাও সহজ ছিল না। মুরগি মিলন সব সময় পাহারায় চলতেন। তাঁকে কিছু করতে হলে বিশাল আয়োজন দরকার। ২০০০ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর, ক্যান্টনমেন্ট থানার একটি চোরাচালান মামলায় হাজিরা দিতে আদালতে যান মুরগি মিলন। তারপর আর বেঁচে ফেরা হয়নি তাঁর।
মুরগি মিলনের লাশ ঢাকা মেডিকেলের মর্গে আনার পর আওরঙ্গ ও লিয়াকতের শত শত অনুসারী ছুটে আসেন। মিলনের স্ত্রী টোকাই সাগরকে প্রধান আসামি করে মামলা করেন, কিন্তু পুলিশ তাঁকে ধরতে পারেনি। এ ঘটনার পর সপরিবারে আমেরিকায় পাড়ি জমান টোকাই সাগর। এখন তিনি সেখানেই আছেন।
মুরগি মিলনের পরিবার অবশ্য ঢাকাতেই ছিল। মৃত্যুর সময় তিনি বিপুল সম্পদ ও ব্যবসা-বাণিজ্য রেখে গেলেও কোনো উত্তরাধিকার রেখে যেতে পারেননি। নাসরিন কবিরের সঙ্গে তাঁর ১৬ বছেরর সংসারে কোনো সন্তান ছিল না। মুরগি মিলন নিহত হলে তাঁর বিপুল সম্পত্তি চলে যায় স্ত্রী নাসরিনের নিয়ন্ত্রণে। মিলনের তিন ভাই ও এক বোন সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হন।
মিলন নিহত হওয়ার পর তাঁর বিরুদ্ধে থাকা ১৭টি মামলা ও ৩৩টি জিডির তদন্ত নথিভুক্ত (বিচার স্থগিত) হয়ে যায়। পুলিশও ঝেড়ে-মুছে ফাইল গুটিয়ে হাঁফ ছেড়ে বাঁচে। কিন্তু এই হত্যাকাণ্ডের ১৪ বছর পর আদালতে দায়ের করা একটি নালিশি মামলা নিয়ে হঠাৎ সবাই নড়েচড়ে বসেন। মামলাটি করেন মিলনের স্ত্রী নাসরিন কবির ওরফে ডলির মা ছালেহা খানম। মামলাটি হয় ২০১৪ সালে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে। এতে বলা হয়, মুরগি মিলন নিহত হওয়ার পর তাঁর স্ত্রী নাসরিন বিয়ে করেন মাহবুবুর রহমান সর্দার নামের এক ব্যক্তিকে। তাঁদের একটি ছেলেও রয়েছে। কিন্তু সম্পত্তির লোভে মাহবুবুর রহমান শরীরে বিষাক্ত ইনজেকশন প্রয়োগ করে হত্যা করেন নাসরিনকে।
নাসরিন মারা যাওয়ার ৩৪ দিনের মাথায় কাউকে কিছু না জানিয়ে আদালতের মাধ্যমে সব সম্পত্তি নাবালক সন্তানের নামে হস্তান্তর করিয়ে নেন মাহবুব। এরপর তিনি সেই নাবালকের অভিভাবক হয়ে সব সম্পত্তি ভোগ করতে থাকেন। ওই সম্পদের মধ্যে উত্তরায় পাঁচ কাঠা জমি, পুরানা পল্টনে ফ্ল্যাট ও হাতিরপুলে ইস্টার্ন প্লাজার পাশে বেলভিউ নামে নয়তলা একটি বাণিজ্যিক ভবন আছে, যে ভবন থেকে মাসে ভাড়াই আসে আট লাখ টাকা।
আদালতে করা মামলায় ছালেহা খানম মাহবুবের ভাই খোকন সর্দার ও নাসরিন যে হাসপাতালে মারা যান, সেই হাসপাতালের চিকিৎসক সালেহ আহমদকেও আসামি করেন। এই মামলার তদন্ত নেমে পিবিআই অনেক চেষ্টা করে, কিন্তু অনেক দিনের ঘটনা হওয়ায় বাদীর অভিযোগের সপক্ষে সব তথ্য-প্রমাণ জোগাড় করতে পারেনি তারা। সে কারণে বাদীর অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি বলে আদালতে প্রতিবেদন দেয় পিবিআই। সেই মামলা এখনো হাইকোর্টে চলছে।
এই মামলা নিয়ে আমি একবার বাদী-বিবাদীর সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু কেউ কোনো কথা বলতে চাননি। তবে দুই পক্ষের সবাই এ নিয়ে রহস্যময় নীরবতা পালন করলেও নির্মম বাস্তবতা হলো, ত্রাসের রাজত্ব চালিয়ে মিলন যে বিপুল সম্পত্তি করেছিলেন, তার কিছুই তিনি ভোগ করতে পারেননি। রেখে যেতে পারেননি উত্তরাধিকার। এখন সেই সম্পদ চলে গেছে অন্যের হাতে। তারাই ভোগ করছে মুরগি মিলনের শত কোটি টাকার সম্পদ। এরই নামই হয়তো বিধির বিধান।
আরও পড়ুন:

হাতিরপুলের একটি চায়নিজ রেস্তোরাঁয় অনুষ্ঠান। এক সাংবাদিক বন্ধুর মেয়ের জন্মদিন। অতিথিদের বেশির ভাগই সাংবাদিক, বিশেষ করে অপরাধবিষয়ক প্রতিবেদক।
কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তাও আছেন, সঙ্গে অতিরিক্ত আইজিপি আবদুর রহিম খান। খাওয়া-দাওয়া চলছে। হঠাৎ ১০-১২ জন লোক হুড়োহুড়ি করে ঢুকে পড়লেন রেস্তোরাঁর ভেতরে। তাঁদের একজন উচ্চ স্বরে আমার সেই বন্ধুর নাম ধরে ডাকলেন, `…দেখেন ভাই, মিলন ভাই এসেছে।’ একটু পরে আমাদের সামনে হাজির হলেন সেই ‘মিলন ভাই’—হুমায়ুন কবির মিলন, যাকে সবাই চিনত ‘মুরগি মিলন’ নামে।
অতিথিরা কিছুটা বিরক্ত, এ রকম একটা অনুষ্ঠানে সন্ত্রাসী কেন? ঘটনা পরিষ্কার করলেন মিলন নিজেই। বললেন, তাঁকে কেউ দাওয়াত দেয়নি। অনুষ্ঠানের কথা শুনে নিজেই দলবল নিয়ে হাজির হয়েছেন। এলাকার লোক হিসেবে তাঁর তো একটা দায়িত্ব আছে।
‘দায়িত্ববান’ এই লোকটি একসময় নিজ দায়িত্বে ঢাকা শহর দাপিয়ে বেড়াতেন। চলতেন দলেবলে গাড়ি হাঁকিয়ে, আগে-পিছে অস্ত্রসমেত পাহারা নিয়ে। বছরে দু-তিনবার গ্রেপ্তার হয়ে সংবাদপত্রের শিরোনামও হতেন। বিমানবন্দর থেকে সূত্রাপুর–সবই ছিল তাঁর নিয়ন্ত্রণে। আর ছিল একটা রাজনৈতিক পরিচয়, কিন্তু তাতে কোনো সামাজিক স্বীকৃতির মোড়ক ছিল না।
ইস্কাটন থেকে বাংলামোটরের দিকে যেতে হাতের বাঁয়ে হেলেনা সেন্টার। সেখানে এখন মোটর পার্টসের বড় বড় দোকান। সেই মার্কেটের পেছনে একটি ঘর ছিল সন্ত্রাসী লিয়াকতের ব্যক্তিগত কার্যালয়। প্রতিদিন বিকেলে মিলনও সেখানে আসতেন। তার চলাফেরায় কোনো রাখঢাক ছিল না। অপরাধ বিটের প্রায় সব রিপোর্টারকে তিনি চিনতেন, ডাকতেন বেশ সম্মান করে।
নব্বইয়ের দশকের শুরুতে যেসব সন্ত্রাসী ঢাকা শহর কাঁপাতেন, তাঁদের অনেকেই ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর নিজেদের যুবলীগ-ছাত্রলীগ বলে পরিচয় দিতে শুরু করেন। বাহিনী তৈরি করে তাঁরাও রীতিমতো এলাকা দখলে মেতে ওঠেন। বিএনপিপন্থী বলে পরিচিত সন্ত্রাসীরাও তখন দলবদল করে ফেলেন। এই সময়ে যেসব সন্ত্রাসীর উত্থান হয়, তাঁদেরই একজন হলেন মুরগি মিলন।
স্বাধীনতার পর মুরগি মিলন প্রভাবশালী নেতা মোস্তফা মহসিন মন্টু ও হেমায়েত উল্লাহ আওরঙ্গের ঘনিষ্ঠ হন। ১৯৭৮ সালের দিকে এলিফ্যান্ট রোডে জুতার দোকান দেন। পরে তিনি মার্কেট ও তৈরি পোশাকের প্রতিষ্ঠান করেন। একবার মুরগি মিলন আমাকে বলেছিলেন, ১৯৭৫ সালের ২৩ এপ্রিল চোরাচালানের মামলায় পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করেছিল।
মুরগি মিলনের জন্ম মুন্সিগঞ্জে হলেও থাকতেন রাজধানীর ফ্রি স্কুল স্ট্রিটে। দুই ভাই। বাবা তাজুল ইসলাম হাতিরপুলে মুরগির ব্যবসা করতেন। ১৮ বছর পর্যন্ত মিলন সেই ব্যবসা দেখাশোনা করেন। সে কারণে বড় হয়েও তাঁর নামের সঙ্গে ‘মুরগি’ শব্দটি লেপ্টে যায়।
মুরগি মিলনের স্ত্রী নাসরিন কবির ডলির বাবা ছিলেন সাবেক জেলা জজ। তো জজ সাহেব তাঁর মেয়েকে এমন ‘সুপাত্রে’র হাতে তুলে দেবেন না। তিনি মেয়েকে অন্যত্র বিয়ে দেওয়ার আয়োজন করলেন। খবর পেয়ে মুরগি মিলন ডলিকে বাড়ি থেকে তুলে এনে বিয়ে করেন।
মুরগি মিলন মোট কতবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন তা মনে নেই, তবে প্রতি বছর তিনি দু-তিনবার গ্রেপ্তার হয়ে জেলে যেতেন। এরপর জামিনে বেরিয়ে এসে ঘুরে বেড়াতেন। তবে কখনো একা চলাফেরা করতেন না। তাঁর বিরুদ্ধে সে সময় ১৬-১৭টি মামলা ছিল, যার প্রায় সবই চোরাচালানের। পুলিশ কর্মকর্তারা বলতেন, তিনি ছিলেন স্বর্ণ চোরাচালানের রিং লিডার। তাঁর প্রধান কাজ ছিল বিমানবন্দরে আসা সোনার চালান নিরাপদে ছাড়িয়ে এনে সীমান্ত পার করে দেওয়া। এই সোনায় লগ্নি করতেন ভারতের কয়েকজন ব্যবসায়ী। ভারত থেকে গরুর যে চালান আসত, তার সঙ্গে সোনার দামের সমন্বয় করা হতো। অর্থাৎ, সোনার বদলে গরু আসত ওপার থেকে।
সোনা পাচারে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো বিমানবন্দর এলাকা নিয়ন্ত্রণে রাখা। তবে পাচার হয়ে সোনা যেহেতু প্রথমে তাঁতীবাজারে আসত, সে কারণে তাঁতীবাজারের নিয়ন্ত্রণও বড় ব্যাপার ছিল। এই নিয়ন্ত্রণ নিয়েই মুরগি মিলনের সঙ্গে বিরোধ বাধে কালা জাহাঙ্গীর ও টোকাই সাগরের। একপর্যায়ে কালা জাহাঙ্গীর তাঁতীবাজারের নিয়ন্ত্রণ নিতে চান, আর টোকাই সাগর চাইলেন বিমানবন্দরের। দুজনের স্বার্থ মিলে গেলে পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়ান মুরগি মিলন। এরপর তাঁরা মুরগি মিলনকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেন। কিন্তু সেটাও সহজ ছিল না। মুরগি মিলন সব সময় পাহারায় চলতেন। তাঁকে কিছু করতে হলে বিশাল আয়োজন দরকার। ২০০০ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর, ক্যান্টনমেন্ট থানার একটি চোরাচালান মামলায় হাজিরা দিতে আদালতে যান মুরগি মিলন। তারপর আর বেঁচে ফেরা হয়নি তাঁর।
মুরগি মিলনের লাশ ঢাকা মেডিকেলের মর্গে আনার পর আওরঙ্গ ও লিয়াকতের শত শত অনুসারী ছুটে আসেন। মিলনের স্ত্রী টোকাই সাগরকে প্রধান আসামি করে মামলা করেন, কিন্তু পুলিশ তাঁকে ধরতে পারেনি। এ ঘটনার পর সপরিবারে আমেরিকায় পাড়ি জমান টোকাই সাগর। এখন তিনি সেখানেই আছেন।
মুরগি মিলনের পরিবার অবশ্য ঢাকাতেই ছিল। মৃত্যুর সময় তিনি বিপুল সম্পদ ও ব্যবসা-বাণিজ্য রেখে গেলেও কোনো উত্তরাধিকার রেখে যেতে পারেননি। নাসরিন কবিরের সঙ্গে তাঁর ১৬ বছেরর সংসারে কোনো সন্তান ছিল না। মুরগি মিলন নিহত হলে তাঁর বিপুল সম্পত্তি চলে যায় স্ত্রী নাসরিনের নিয়ন্ত্রণে। মিলনের তিন ভাই ও এক বোন সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হন।
মিলন নিহত হওয়ার পর তাঁর বিরুদ্ধে থাকা ১৭টি মামলা ও ৩৩টি জিডির তদন্ত নথিভুক্ত (বিচার স্থগিত) হয়ে যায়। পুলিশও ঝেড়ে-মুছে ফাইল গুটিয়ে হাঁফ ছেড়ে বাঁচে। কিন্তু এই হত্যাকাণ্ডের ১৪ বছর পর আদালতে দায়ের করা একটি নালিশি মামলা নিয়ে হঠাৎ সবাই নড়েচড়ে বসেন। মামলাটি করেন মিলনের স্ত্রী নাসরিন কবির ওরফে ডলির মা ছালেহা খানম। মামলাটি হয় ২০১৪ সালে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে। এতে বলা হয়, মুরগি মিলন নিহত হওয়ার পর তাঁর স্ত্রী নাসরিন বিয়ে করেন মাহবুবুর রহমান সর্দার নামের এক ব্যক্তিকে। তাঁদের একটি ছেলেও রয়েছে। কিন্তু সম্পত্তির লোভে মাহবুবুর রহমান শরীরে বিষাক্ত ইনজেকশন প্রয়োগ করে হত্যা করেন নাসরিনকে।
নাসরিন মারা যাওয়ার ৩৪ দিনের মাথায় কাউকে কিছু না জানিয়ে আদালতের মাধ্যমে সব সম্পত্তি নাবালক সন্তানের নামে হস্তান্তর করিয়ে নেন মাহবুব। এরপর তিনি সেই নাবালকের অভিভাবক হয়ে সব সম্পত্তি ভোগ করতে থাকেন। ওই সম্পদের মধ্যে উত্তরায় পাঁচ কাঠা জমি, পুরানা পল্টনে ফ্ল্যাট ও হাতিরপুলে ইস্টার্ন প্লাজার পাশে বেলভিউ নামে নয়তলা একটি বাণিজ্যিক ভবন আছে, যে ভবন থেকে মাসে ভাড়াই আসে আট লাখ টাকা।
আদালতে করা মামলায় ছালেহা খানম মাহবুবের ভাই খোকন সর্দার ও নাসরিন যে হাসপাতালে মারা যান, সেই হাসপাতালের চিকিৎসক সালেহ আহমদকেও আসামি করেন। এই মামলার তদন্ত নেমে পিবিআই অনেক চেষ্টা করে, কিন্তু অনেক দিনের ঘটনা হওয়ায় বাদীর অভিযোগের সপক্ষে সব তথ্য-প্রমাণ জোগাড় করতে পারেনি তারা। সে কারণে বাদীর অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি বলে আদালতে প্রতিবেদন দেয় পিবিআই। সেই মামলা এখনো হাইকোর্টে চলছে।
এই মামলা নিয়ে আমি একবার বাদী-বিবাদীর সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু কেউ কোনো কথা বলতে চাননি। তবে দুই পক্ষের সবাই এ নিয়ে রহস্যময় নীরবতা পালন করলেও নির্মম বাস্তবতা হলো, ত্রাসের রাজত্ব চালিয়ে মিলন যে বিপুল সম্পত্তি করেছিলেন, তার কিছুই তিনি ভোগ করতে পারেননি। রেখে যেতে পারেননি উত্তরাধিকার। এখন সেই সম্পদ চলে গেছে অন্যের হাতে। তারাই ভোগ করছে মুরগি মিলনের শত কোটি টাকার সম্পদ। এরই নামই হয়তো বিধির বিধান।
আরও পড়ুন:
কামরুল হাসান

হাতিরপুলের একটি চায়নিজ রেস্তোরাঁয় অনুষ্ঠান। এক সাংবাদিক বন্ধুর মেয়ের জন্মদিন। অতিথিদের বেশির ভাগই সাংবাদিক, বিশেষ করে অপরাধবিষয়ক প্রতিবেদক।
কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তাও আছেন, সঙ্গে অতিরিক্ত আইজিপি আবদুর রহিম খান। খাওয়া-দাওয়া চলছে। হঠাৎ ১০-১২ জন লোক হুড়োহুড়ি করে ঢুকে পড়লেন রেস্তোরাঁর ভেতরে। তাঁদের একজন উচ্চ স্বরে আমার সেই বন্ধুর নাম ধরে ডাকলেন, `…দেখেন ভাই, মিলন ভাই এসেছে।’ একটু পরে আমাদের সামনে হাজির হলেন সেই ‘মিলন ভাই’—হুমায়ুন কবির মিলন, যাকে সবাই চিনত ‘মুরগি মিলন’ নামে।
অতিথিরা কিছুটা বিরক্ত, এ রকম একটা অনুষ্ঠানে সন্ত্রাসী কেন? ঘটনা পরিষ্কার করলেন মিলন নিজেই। বললেন, তাঁকে কেউ দাওয়াত দেয়নি। অনুষ্ঠানের কথা শুনে নিজেই দলবল নিয়ে হাজির হয়েছেন। এলাকার লোক হিসেবে তাঁর তো একটা দায়িত্ব আছে।
‘দায়িত্ববান’ এই লোকটি একসময় নিজ দায়িত্বে ঢাকা শহর দাপিয়ে বেড়াতেন। চলতেন দলেবলে গাড়ি হাঁকিয়ে, আগে-পিছে অস্ত্রসমেত পাহারা নিয়ে। বছরে দু-তিনবার গ্রেপ্তার হয়ে সংবাদপত্রের শিরোনামও হতেন। বিমানবন্দর থেকে সূত্রাপুর–সবই ছিল তাঁর নিয়ন্ত্রণে। আর ছিল একটা রাজনৈতিক পরিচয়, কিন্তু তাতে কোনো সামাজিক স্বীকৃতির মোড়ক ছিল না।
ইস্কাটন থেকে বাংলামোটরের দিকে যেতে হাতের বাঁয়ে হেলেনা সেন্টার। সেখানে এখন মোটর পার্টসের বড় বড় দোকান। সেই মার্কেটের পেছনে একটি ঘর ছিল সন্ত্রাসী লিয়াকতের ব্যক্তিগত কার্যালয়। প্রতিদিন বিকেলে মিলনও সেখানে আসতেন। তার চলাফেরায় কোনো রাখঢাক ছিল না। অপরাধ বিটের প্রায় সব রিপোর্টারকে তিনি চিনতেন, ডাকতেন বেশ সম্মান করে।
নব্বইয়ের দশকের শুরুতে যেসব সন্ত্রাসী ঢাকা শহর কাঁপাতেন, তাঁদের অনেকেই ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর নিজেদের যুবলীগ-ছাত্রলীগ বলে পরিচয় দিতে শুরু করেন। বাহিনী তৈরি করে তাঁরাও রীতিমতো এলাকা দখলে মেতে ওঠেন। বিএনপিপন্থী বলে পরিচিত সন্ত্রাসীরাও তখন দলবদল করে ফেলেন। এই সময়ে যেসব সন্ত্রাসীর উত্থান হয়, তাঁদেরই একজন হলেন মুরগি মিলন।
স্বাধীনতার পর মুরগি মিলন প্রভাবশালী নেতা মোস্তফা মহসিন মন্টু ও হেমায়েত উল্লাহ আওরঙ্গের ঘনিষ্ঠ হন। ১৯৭৮ সালের দিকে এলিফ্যান্ট রোডে জুতার দোকান দেন। পরে তিনি মার্কেট ও তৈরি পোশাকের প্রতিষ্ঠান করেন। একবার মুরগি মিলন আমাকে বলেছিলেন, ১৯৭৫ সালের ২৩ এপ্রিল চোরাচালানের মামলায় পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করেছিল।
মুরগি মিলনের জন্ম মুন্সিগঞ্জে হলেও থাকতেন রাজধানীর ফ্রি স্কুল স্ট্রিটে। দুই ভাই। বাবা তাজুল ইসলাম হাতিরপুলে মুরগির ব্যবসা করতেন। ১৮ বছর পর্যন্ত মিলন সেই ব্যবসা দেখাশোনা করেন। সে কারণে বড় হয়েও তাঁর নামের সঙ্গে ‘মুরগি’ শব্দটি লেপ্টে যায়।
মুরগি মিলনের স্ত্রী নাসরিন কবির ডলির বাবা ছিলেন সাবেক জেলা জজ। তো জজ সাহেব তাঁর মেয়েকে এমন ‘সুপাত্রে’র হাতে তুলে দেবেন না। তিনি মেয়েকে অন্যত্র বিয়ে দেওয়ার আয়োজন করলেন। খবর পেয়ে মুরগি মিলন ডলিকে বাড়ি থেকে তুলে এনে বিয়ে করেন।
মুরগি মিলন মোট কতবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন তা মনে নেই, তবে প্রতি বছর তিনি দু-তিনবার গ্রেপ্তার হয়ে জেলে যেতেন। এরপর জামিনে বেরিয়ে এসে ঘুরে বেড়াতেন। তবে কখনো একা চলাফেরা করতেন না। তাঁর বিরুদ্ধে সে সময় ১৬-১৭টি মামলা ছিল, যার প্রায় সবই চোরাচালানের। পুলিশ কর্মকর্তারা বলতেন, তিনি ছিলেন স্বর্ণ চোরাচালানের রিং লিডার। তাঁর প্রধান কাজ ছিল বিমানবন্দরে আসা সোনার চালান নিরাপদে ছাড়িয়ে এনে সীমান্ত পার করে দেওয়া। এই সোনায় লগ্নি করতেন ভারতের কয়েকজন ব্যবসায়ী। ভারত থেকে গরুর যে চালান আসত, তার সঙ্গে সোনার দামের সমন্বয় করা হতো। অর্থাৎ, সোনার বদলে গরু আসত ওপার থেকে।
সোনা পাচারে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো বিমানবন্দর এলাকা নিয়ন্ত্রণে রাখা। তবে পাচার হয়ে সোনা যেহেতু প্রথমে তাঁতীবাজারে আসত, সে কারণে তাঁতীবাজারের নিয়ন্ত্রণও বড় ব্যাপার ছিল। এই নিয়ন্ত্রণ নিয়েই মুরগি মিলনের সঙ্গে বিরোধ বাধে কালা জাহাঙ্গীর ও টোকাই সাগরের। একপর্যায়ে কালা জাহাঙ্গীর তাঁতীবাজারের নিয়ন্ত্রণ নিতে চান, আর টোকাই সাগর চাইলেন বিমানবন্দরের। দুজনের স্বার্থ মিলে গেলে পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়ান মুরগি মিলন। এরপর তাঁরা মুরগি মিলনকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেন। কিন্তু সেটাও সহজ ছিল না। মুরগি মিলন সব সময় পাহারায় চলতেন। তাঁকে কিছু করতে হলে বিশাল আয়োজন দরকার। ২০০০ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর, ক্যান্টনমেন্ট থানার একটি চোরাচালান মামলায় হাজিরা দিতে আদালতে যান মুরগি মিলন। তারপর আর বেঁচে ফেরা হয়নি তাঁর।
মুরগি মিলনের লাশ ঢাকা মেডিকেলের মর্গে আনার পর আওরঙ্গ ও লিয়াকতের শত শত অনুসারী ছুটে আসেন। মিলনের স্ত্রী টোকাই সাগরকে প্রধান আসামি করে মামলা করেন, কিন্তু পুলিশ তাঁকে ধরতে পারেনি। এ ঘটনার পর সপরিবারে আমেরিকায় পাড়ি জমান টোকাই সাগর। এখন তিনি সেখানেই আছেন।
মুরগি মিলনের পরিবার অবশ্য ঢাকাতেই ছিল। মৃত্যুর সময় তিনি বিপুল সম্পদ ও ব্যবসা-বাণিজ্য রেখে গেলেও কোনো উত্তরাধিকার রেখে যেতে পারেননি। নাসরিন কবিরের সঙ্গে তাঁর ১৬ বছেরর সংসারে কোনো সন্তান ছিল না। মুরগি মিলন নিহত হলে তাঁর বিপুল সম্পত্তি চলে যায় স্ত্রী নাসরিনের নিয়ন্ত্রণে। মিলনের তিন ভাই ও এক বোন সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হন।
মিলন নিহত হওয়ার পর তাঁর বিরুদ্ধে থাকা ১৭টি মামলা ও ৩৩টি জিডির তদন্ত নথিভুক্ত (বিচার স্থগিত) হয়ে যায়। পুলিশও ঝেড়ে-মুছে ফাইল গুটিয়ে হাঁফ ছেড়ে বাঁচে। কিন্তু এই হত্যাকাণ্ডের ১৪ বছর পর আদালতে দায়ের করা একটি নালিশি মামলা নিয়ে হঠাৎ সবাই নড়েচড়ে বসেন। মামলাটি করেন মিলনের স্ত্রী নাসরিন কবির ওরফে ডলির মা ছালেহা খানম। মামলাটি হয় ২০১৪ সালে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে। এতে বলা হয়, মুরগি মিলন নিহত হওয়ার পর তাঁর স্ত্রী নাসরিন বিয়ে করেন মাহবুবুর রহমান সর্দার নামের এক ব্যক্তিকে। তাঁদের একটি ছেলেও রয়েছে। কিন্তু সম্পত্তির লোভে মাহবুবুর রহমান শরীরে বিষাক্ত ইনজেকশন প্রয়োগ করে হত্যা করেন নাসরিনকে।
নাসরিন মারা যাওয়ার ৩৪ দিনের মাথায় কাউকে কিছু না জানিয়ে আদালতের মাধ্যমে সব সম্পত্তি নাবালক সন্তানের নামে হস্তান্তর করিয়ে নেন মাহবুব। এরপর তিনি সেই নাবালকের অভিভাবক হয়ে সব সম্পত্তি ভোগ করতে থাকেন। ওই সম্পদের মধ্যে উত্তরায় পাঁচ কাঠা জমি, পুরানা পল্টনে ফ্ল্যাট ও হাতিরপুলে ইস্টার্ন প্লাজার পাশে বেলভিউ নামে নয়তলা একটি বাণিজ্যিক ভবন আছে, যে ভবন থেকে মাসে ভাড়াই আসে আট লাখ টাকা।
আদালতে করা মামলায় ছালেহা খানম মাহবুবের ভাই খোকন সর্দার ও নাসরিন যে হাসপাতালে মারা যান, সেই হাসপাতালের চিকিৎসক সালেহ আহমদকেও আসামি করেন। এই মামলার তদন্ত নেমে পিবিআই অনেক চেষ্টা করে, কিন্তু অনেক দিনের ঘটনা হওয়ায় বাদীর অভিযোগের সপক্ষে সব তথ্য-প্রমাণ জোগাড় করতে পারেনি তারা। সে কারণে বাদীর অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি বলে আদালতে প্রতিবেদন দেয় পিবিআই। সেই মামলা এখনো হাইকোর্টে চলছে।
এই মামলা নিয়ে আমি একবার বাদী-বিবাদীর সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু কেউ কোনো কথা বলতে চাননি। তবে দুই পক্ষের সবাই এ নিয়ে রহস্যময় নীরবতা পালন করলেও নির্মম বাস্তবতা হলো, ত্রাসের রাজত্ব চালিয়ে মিলন যে বিপুল সম্পত্তি করেছিলেন, তার কিছুই তিনি ভোগ করতে পারেননি। রেখে যেতে পারেননি উত্তরাধিকার। এখন সেই সম্পদ চলে গেছে অন্যের হাতে। তারাই ভোগ করছে মুরগি মিলনের শত কোটি টাকার সম্পদ। এরই নামই হয়তো বিধির বিধান।
আরও পড়ুন:

হাতিরপুলের একটি চায়নিজ রেস্তোরাঁয় অনুষ্ঠান। এক সাংবাদিক বন্ধুর মেয়ের জন্মদিন। অতিথিদের বেশির ভাগই সাংবাদিক, বিশেষ করে অপরাধবিষয়ক প্রতিবেদক।
কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তাও আছেন, সঙ্গে অতিরিক্ত আইজিপি আবদুর রহিম খান। খাওয়া-দাওয়া চলছে। হঠাৎ ১০-১২ জন লোক হুড়োহুড়ি করে ঢুকে পড়লেন রেস্তোরাঁর ভেতরে। তাঁদের একজন উচ্চ স্বরে আমার সেই বন্ধুর নাম ধরে ডাকলেন, `…দেখেন ভাই, মিলন ভাই এসেছে।’ একটু পরে আমাদের সামনে হাজির হলেন সেই ‘মিলন ভাই’—হুমায়ুন কবির মিলন, যাকে সবাই চিনত ‘মুরগি মিলন’ নামে।
অতিথিরা কিছুটা বিরক্ত, এ রকম একটা অনুষ্ঠানে সন্ত্রাসী কেন? ঘটনা পরিষ্কার করলেন মিলন নিজেই। বললেন, তাঁকে কেউ দাওয়াত দেয়নি। অনুষ্ঠানের কথা শুনে নিজেই দলবল নিয়ে হাজির হয়েছেন। এলাকার লোক হিসেবে তাঁর তো একটা দায়িত্ব আছে।
‘দায়িত্ববান’ এই লোকটি একসময় নিজ দায়িত্বে ঢাকা শহর দাপিয়ে বেড়াতেন। চলতেন দলেবলে গাড়ি হাঁকিয়ে, আগে-পিছে অস্ত্রসমেত পাহারা নিয়ে। বছরে দু-তিনবার গ্রেপ্তার হয়ে সংবাদপত্রের শিরোনামও হতেন। বিমানবন্দর থেকে সূত্রাপুর–সবই ছিল তাঁর নিয়ন্ত্রণে। আর ছিল একটা রাজনৈতিক পরিচয়, কিন্তু তাতে কোনো সামাজিক স্বীকৃতির মোড়ক ছিল না।
ইস্কাটন থেকে বাংলামোটরের দিকে যেতে হাতের বাঁয়ে হেলেনা সেন্টার। সেখানে এখন মোটর পার্টসের বড় বড় দোকান। সেই মার্কেটের পেছনে একটি ঘর ছিল সন্ত্রাসী লিয়াকতের ব্যক্তিগত কার্যালয়। প্রতিদিন বিকেলে মিলনও সেখানে আসতেন। তার চলাফেরায় কোনো রাখঢাক ছিল না। অপরাধ বিটের প্রায় সব রিপোর্টারকে তিনি চিনতেন, ডাকতেন বেশ সম্মান করে।
নব্বইয়ের দশকের শুরুতে যেসব সন্ত্রাসী ঢাকা শহর কাঁপাতেন, তাঁদের অনেকেই ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর নিজেদের যুবলীগ-ছাত্রলীগ বলে পরিচয় দিতে শুরু করেন। বাহিনী তৈরি করে তাঁরাও রীতিমতো এলাকা দখলে মেতে ওঠেন। বিএনপিপন্থী বলে পরিচিত সন্ত্রাসীরাও তখন দলবদল করে ফেলেন। এই সময়ে যেসব সন্ত্রাসীর উত্থান হয়, তাঁদেরই একজন হলেন মুরগি মিলন।
স্বাধীনতার পর মুরগি মিলন প্রভাবশালী নেতা মোস্তফা মহসিন মন্টু ও হেমায়েত উল্লাহ আওরঙ্গের ঘনিষ্ঠ হন। ১৯৭৮ সালের দিকে এলিফ্যান্ট রোডে জুতার দোকান দেন। পরে তিনি মার্কেট ও তৈরি পোশাকের প্রতিষ্ঠান করেন। একবার মুরগি মিলন আমাকে বলেছিলেন, ১৯৭৫ সালের ২৩ এপ্রিল চোরাচালানের মামলায় পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করেছিল।
মুরগি মিলনের জন্ম মুন্সিগঞ্জে হলেও থাকতেন রাজধানীর ফ্রি স্কুল স্ট্রিটে। দুই ভাই। বাবা তাজুল ইসলাম হাতিরপুলে মুরগির ব্যবসা করতেন। ১৮ বছর পর্যন্ত মিলন সেই ব্যবসা দেখাশোনা করেন। সে কারণে বড় হয়েও তাঁর নামের সঙ্গে ‘মুরগি’ শব্দটি লেপ্টে যায়।
মুরগি মিলনের স্ত্রী নাসরিন কবির ডলির বাবা ছিলেন সাবেক জেলা জজ। তো জজ সাহেব তাঁর মেয়েকে এমন ‘সুপাত্রে’র হাতে তুলে দেবেন না। তিনি মেয়েকে অন্যত্র বিয়ে দেওয়ার আয়োজন করলেন। খবর পেয়ে মুরগি মিলন ডলিকে বাড়ি থেকে তুলে এনে বিয়ে করেন।
মুরগি মিলন মোট কতবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন তা মনে নেই, তবে প্রতি বছর তিনি দু-তিনবার গ্রেপ্তার হয়ে জেলে যেতেন। এরপর জামিনে বেরিয়ে এসে ঘুরে বেড়াতেন। তবে কখনো একা চলাফেরা করতেন না। তাঁর বিরুদ্ধে সে সময় ১৬-১৭টি মামলা ছিল, যার প্রায় সবই চোরাচালানের। পুলিশ কর্মকর্তারা বলতেন, তিনি ছিলেন স্বর্ণ চোরাচালানের রিং লিডার। তাঁর প্রধান কাজ ছিল বিমানবন্দরে আসা সোনার চালান নিরাপদে ছাড়িয়ে এনে সীমান্ত পার করে দেওয়া। এই সোনায় লগ্নি করতেন ভারতের কয়েকজন ব্যবসায়ী। ভারত থেকে গরুর যে চালান আসত, তার সঙ্গে সোনার দামের সমন্বয় করা হতো। অর্থাৎ, সোনার বদলে গরু আসত ওপার থেকে।
সোনা পাচারে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো বিমানবন্দর এলাকা নিয়ন্ত্রণে রাখা। তবে পাচার হয়ে সোনা যেহেতু প্রথমে তাঁতীবাজারে আসত, সে কারণে তাঁতীবাজারের নিয়ন্ত্রণও বড় ব্যাপার ছিল। এই নিয়ন্ত্রণ নিয়েই মুরগি মিলনের সঙ্গে বিরোধ বাধে কালা জাহাঙ্গীর ও টোকাই সাগরের। একপর্যায়ে কালা জাহাঙ্গীর তাঁতীবাজারের নিয়ন্ত্রণ নিতে চান, আর টোকাই সাগর চাইলেন বিমানবন্দরের। দুজনের স্বার্থ মিলে গেলে পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়ান মুরগি মিলন। এরপর তাঁরা মুরগি মিলনকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেন। কিন্তু সেটাও সহজ ছিল না। মুরগি মিলন সব সময় পাহারায় চলতেন। তাঁকে কিছু করতে হলে বিশাল আয়োজন দরকার। ২০০০ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর, ক্যান্টনমেন্ট থানার একটি চোরাচালান মামলায় হাজিরা দিতে আদালতে যান মুরগি মিলন। তারপর আর বেঁচে ফেরা হয়নি তাঁর।
মুরগি মিলনের লাশ ঢাকা মেডিকেলের মর্গে আনার পর আওরঙ্গ ও লিয়াকতের শত শত অনুসারী ছুটে আসেন। মিলনের স্ত্রী টোকাই সাগরকে প্রধান আসামি করে মামলা করেন, কিন্তু পুলিশ তাঁকে ধরতে পারেনি। এ ঘটনার পর সপরিবারে আমেরিকায় পাড়ি জমান টোকাই সাগর। এখন তিনি সেখানেই আছেন।
মুরগি মিলনের পরিবার অবশ্য ঢাকাতেই ছিল। মৃত্যুর সময় তিনি বিপুল সম্পদ ও ব্যবসা-বাণিজ্য রেখে গেলেও কোনো উত্তরাধিকার রেখে যেতে পারেননি। নাসরিন কবিরের সঙ্গে তাঁর ১৬ বছেরর সংসারে কোনো সন্তান ছিল না। মুরগি মিলন নিহত হলে তাঁর বিপুল সম্পত্তি চলে যায় স্ত্রী নাসরিনের নিয়ন্ত্রণে। মিলনের তিন ভাই ও এক বোন সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হন।
মিলন নিহত হওয়ার পর তাঁর বিরুদ্ধে থাকা ১৭টি মামলা ও ৩৩টি জিডির তদন্ত নথিভুক্ত (বিচার স্থগিত) হয়ে যায়। পুলিশও ঝেড়ে-মুছে ফাইল গুটিয়ে হাঁফ ছেড়ে বাঁচে। কিন্তু এই হত্যাকাণ্ডের ১৪ বছর পর আদালতে দায়ের করা একটি নালিশি মামলা নিয়ে হঠাৎ সবাই নড়েচড়ে বসেন। মামলাটি করেন মিলনের স্ত্রী নাসরিন কবির ওরফে ডলির মা ছালেহা খানম। মামলাটি হয় ২০১৪ সালে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে। এতে বলা হয়, মুরগি মিলন নিহত হওয়ার পর তাঁর স্ত্রী নাসরিন বিয়ে করেন মাহবুবুর রহমান সর্দার নামের এক ব্যক্তিকে। তাঁদের একটি ছেলেও রয়েছে। কিন্তু সম্পত্তির লোভে মাহবুবুর রহমান শরীরে বিষাক্ত ইনজেকশন প্রয়োগ করে হত্যা করেন নাসরিনকে।
নাসরিন মারা যাওয়ার ৩৪ দিনের মাথায় কাউকে কিছু না জানিয়ে আদালতের মাধ্যমে সব সম্পত্তি নাবালক সন্তানের নামে হস্তান্তর করিয়ে নেন মাহবুব। এরপর তিনি সেই নাবালকের অভিভাবক হয়ে সব সম্পত্তি ভোগ করতে থাকেন। ওই সম্পদের মধ্যে উত্তরায় পাঁচ কাঠা জমি, পুরানা পল্টনে ফ্ল্যাট ও হাতিরপুলে ইস্টার্ন প্লাজার পাশে বেলভিউ নামে নয়তলা একটি বাণিজ্যিক ভবন আছে, যে ভবন থেকে মাসে ভাড়াই আসে আট লাখ টাকা।
আদালতে করা মামলায় ছালেহা খানম মাহবুবের ভাই খোকন সর্দার ও নাসরিন যে হাসপাতালে মারা যান, সেই হাসপাতালের চিকিৎসক সালেহ আহমদকেও আসামি করেন। এই মামলার তদন্ত নেমে পিবিআই অনেক চেষ্টা করে, কিন্তু অনেক দিনের ঘটনা হওয়ায় বাদীর অভিযোগের সপক্ষে সব তথ্য-প্রমাণ জোগাড় করতে পারেনি তারা। সে কারণে বাদীর অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি বলে আদালতে প্রতিবেদন দেয় পিবিআই। সেই মামলা এখনো হাইকোর্টে চলছে।
এই মামলা নিয়ে আমি একবার বাদী-বিবাদীর সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু কেউ কোনো কথা বলতে চাননি। তবে দুই পক্ষের সবাই এ নিয়ে রহস্যময় নীরবতা পালন করলেও নির্মম বাস্তবতা হলো, ত্রাসের রাজত্ব চালিয়ে মিলন যে বিপুল সম্পত্তি করেছিলেন, তার কিছুই তিনি ভোগ করতে পারেননি। রেখে যেতে পারেননি উত্তরাধিকার। এখন সেই সম্পদ চলে গেছে অন্যের হাতে। তারাই ভোগ করছে মুরগি মিলনের শত কোটি টাকার সম্পদ। এরই নামই হয়তো বিধির বিধান।
আরও পড়ুন:

রাজধানীর গুলশান থানায় করা সন্ত্রাসবিরোধী আইনের একটি মামলায় ক্যাসিনো-কাণ্ডে আলোচিত সেলিম প্রধানকে তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আজ সোমবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াদুর রহমান এ নির্দেশ দেন বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. হারুনুর রশিদ।
৬ দিন আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
১৫ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
১৮ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
১৮ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর গুলশান থানায় করা সন্ত্রাসবিরোধী আইনের একটি মামলায় ক্যাসিনো-কাণ্ডে আলোচিত সেলিম প্রধানকে তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আজ সোমবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াদুর রহমান এ নির্দেশ দেন বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. হারুনুর রশিদ।
সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ওই মামলায় সেলিম প্রধানকে আজ কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গুলশান থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোজাম্মেল হক মামুন ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। শুনানি শেষে ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
গত ৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর বারিধারার একটি রেস্তোরাঁ থেকে সেলিম প্রধানসহ ৯ জনকে আটক করে পুলিশ। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে ৬ দশমিক ৭ কেজি ওজনের সিসা জব্দ করা হয়। এ ছাড়া সাতটি সিসা স্ট্যান্ড ও অন্যান্য সরঞ্জাম জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় মাদক আইনে মামলা করা হয়। পরে সেলিম প্রধানকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আরেক মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

রাজধানীর গুলশান থানায় করা সন্ত্রাসবিরোধী আইনের একটি মামলায় ক্যাসিনো-কাণ্ডে আলোচিত সেলিম প্রধানকে তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আজ সোমবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াদুর রহমান এ নির্দেশ দেন বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. হারুনুর রশিদ।
সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ওই মামলায় সেলিম প্রধানকে আজ কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গুলশান থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোজাম্মেল হক মামুন ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। শুনানি শেষে ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
গত ৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর বারিধারার একটি রেস্তোরাঁ থেকে সেলিম প্রধানসহ ৯ জনকে আটক করে পুলিশ। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে ৬ দশমিক ৭ কেজি ওজনের সিসা জব্দ করা হয়। এ ছাড়া সাতটি সিসা স্ট্যান্ড ও অন্যান্য সরঞ্জাম জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় মাদক আইনে মামলা করা হয়। পরে সেলিম প্রধানকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আরেক মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

‘দায়িত্ববান’ এই লোকটি একসময় নিজ দায়িত্বে ঢাকা শহর দাপিয়ে বেড়াতেন। চলতেন দলেবলে গাড়ি হাঁকিয়ে, আগে-পিছে অস্ত্রসমেত পাহারা নিয়ে। বছরে দু-তিনবার গ্রেপ্তার হয়ে সংবাদপত্রের শিরোনামও হতেন। বিমানবন্দর থেকে সূত্রাপুর–সবই ছিল তাঁর নিয়ন্ত্রণে।
০৭ আগস্ট ২০২১
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
১৫ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
১৮ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
১৮ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত বুধবার ভোররাতে দুই গ্রুপ মাদক কারবারির সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ (২০)। পরিবারের দাবি, দুপক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে জাহিদের পায়ের কাছে ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এ সময় স্প্লিন্টার তাঁর ঘাড় ও পিঠে বিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে র্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও তিনটি তাজা গুলিসহ বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র ও পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়।
জাহিদের ভগ্নিপতি মো. উজ্জ্বল জানান, রাজধানীর কল্যাণপুরে মিজান টাওয়ারে একটি মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানে কাজ করতেন জাহিদ। বুধবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার সময় তাঁরা সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। পরে হাসপাতালে জাহিদের মৃত্যু হয়।
তবে পুলিশ বলছে, ককটেল তৈরির সময় বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত বুধবার ভোররাতে দুই গ্রুপ মাদক কারবারির সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ (২০)। পরিবারের দাবি, দুপক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে জাহিদের পায়ের কাছে ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এ সময় স্প্লিন্টার তাঁর ঘাড় ও পিঠে বিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে র্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও তিনটি তাজা গুলিসহ বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র ও পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়।
জাহিদের ভগ্নিপতি মো. উজ্জ্বল জানান, রাজধানীর কল্যাণপুরে মিজান টাওয়ারে একটি মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানে কাজ করতেন জাহিদ। বুধবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার সময় তাঁরা সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। পরে হাসপাতালে জাহিদের মৃত্যু হয়।
তবে পুলিশ বলছে, ককটেল তৈরির সময় বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ।

‘দায়িত্ববান’ এই লোকটি একসময় নিজ দায়িত্বে ঢাকা শহর দাপিয়ে বেড়াতেন। চলতেন দলেবলে গাড়ি হাঁকিয়ে, আগে-পিছে অস্ত্রসমেত পাহারা নিয়ে। বছরে দু-তিনবার গ্রেপ্তার হয়ে সংবাদপত্রের শিরোনামও হতেন। বিমানবন্দর থেকে সূত্রাপুর–সবই ছিল তাঁর নিয়ন্ত্রণে।
০৭ আগস্ট ২০২১
রাজধানীর গুলশান থানায় করা সন্ত্রাসবিরোধী আইনের একটি মামলায় ক্যাসিনো-কাণ্ডে আলোচিত সেলিম প্রধানকে তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আজ সোমবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াদুর রহমান এ নির্দেশ দেন বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. হারুনুর রশিদ।
৬ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
১৮ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
১৮ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বিদেশ থেকে পার্সেল এসেছে—এমন দাবি করে কাস্টমস থেকে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের কুনিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. নূরে আলম ওরফে তুহিন (২৪)।
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
পরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন নূরে আলম। টাকা পাওয়ার পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন তিনি।
ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে রামপুরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে নূরে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

বিদেশ থেকে পার্সেল এসেছে—এমন দাবি করে কাস্টমস থেকে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের কুনিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. নূরে আলম ওরফে তুহিন (২৪)।
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
পরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন নূরে আলম। টাকা পাওয়ার পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন তিনি।
ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে রামপুরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে নূরে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

‘দায়িত্ববান’ এই লোকটি একসময় নিজ দায়িত্বে ঢাকা শহর দাপিয়ে বেড়াতেন। চলতেন দলেবলে গাড়ি হাঁকিয়ে, আগে-পিছে অস্ত্রসমেত পাহারা নিয়ে। বছরে দু-তিনবার গ্রেপ্তার হয়ে সংবাদপত্রের শিরোনামও হতেন। বিমানবন্দর থেকে সূত্রাপুর–সবই ছিল তাঁর নিয়ন্ত্রণে।
০৭ আগস্ট ২০২১
রাজধানীর গুলশান থানায় করা সন্ত্রাসবিরোধী আইনের একটি মামলায় ক্যাসিনো-কাণ্ডে আলোচিত সেলিম প্রধানকে তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আজ সোমবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াদুর রহমান এ নির্দেশ দেন বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. হারুনুর রশিদ।
৬ দিন আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
১৫ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
১৮ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জুয়া ও প্রতারণায় জড়িত থাকায় ৫০ হাজারের বেশি এমএফএস (মোবাইলভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (স্থগিত) করেছে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এই নম্বরগুলো স্থগিত করা হয়।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় বিএফআইইউর প্রতিনিধি এ তথ্য জানান।
সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স), এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার), সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট), বিএফআইইউ, এমএফএস ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত) করা হয়েছে, সেগুলো থেকে কোথায় কোথায় টাকা লেনদেন করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
ডিজিএফআই প্রতিনিধি জানান, অনলাইন জুয়ার মতো আর্থিক নানা প্রতারণায় বেনামি সিম ব্যবহার করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া সিম বিক্রি করছে। মানুষের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকাশের অ্যাপ নকল করা হয়েছে। নাগরিকদের ডেটাবেইস ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।
সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকার সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যমের অনলাইন পোর্টালে এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে যেকোনো মুহূর্তে বিনা নোটিশে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রায় সব কটি মিডিয়ার পোর্টালে এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট আসে। জুয়ার বিজ্ঞাপন আসে। এখান থেকে তারা টাকা পায়।
১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে গণমাধ্যমগুলো তা মানছে না বলে অভিযোগ করেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন ও অনিরাপদ কনটেন্ট বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ করে দেব। যেহেতু একাধিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাবলিকলি কোনো নোটিশ দেব না।’
অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, সরকারের হিসাবে গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক পাওয়া গেছে।
সরকারের চ্যালেঞ্জ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, যখনই একটা নম্বর ব্লক করা হয়, তখন এর চেয়ে বেশিসংখ্যক বা সমসংখ্যক নম্বর ব্যবহার করে সিগন্যাল-হোয়াটসঅ্যাপের মতো গ্রুপগুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আইপি পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের নাম একটু পরিবর্তন করা হয়। এভাবে নতুন ওয়েবসাইট বানিয়ে আবার শুরু করা হয়। এমএফএস, ওয়েব লিংক বন্ধ করার পর এ চক্রগুলো আবার অ্যাপ তৈরি ফেলে। অ্যাপগুলো অনেক ক্ষেত্রেই পাবলিশড নয়, এপিকে হিসেবে ব্যবহার করে।

জুয়া ও প্রতারণায় জড়িত থাকায় ৫০ হাজারের বেশি এমএফএস (মোবাইলভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (স্থগিত) করেছে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এই নম্বরগুলো স্থগিত করা হয়।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় বিএফআইইউর প্রতিনিধি এ তথ্য জানান।
সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স), এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার), সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট), বিএফআইইউ, এমএফএস ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত) করা হয়েছে, সেগুলো থেকে কোথায় কোথায় টাকা লেনদেন করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
ডিজিএফআই প্রতিনিধি জানান, অনলাইন জুয়ার মতো আর্থিক নানা প্রতারণায় বেনামি সিম ব্যবহার করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া সিম বিক্রি করছে। মানুষের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকাশের অ্যাপ নকল করা হয়েছে। নাগরিকদের ডেটাবেইস ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।
সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকার সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যমের অনলাইন পোর্টালে এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে যেকোনো মুহূর্তে বিনা নোটিশে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রায় সব কটি মিডিয়ার পোর্টালে এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট আসে। জুয়ার বিজ্ঞাপন আসে। এখান থেকে তারা টাকা পায়।
১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে গণমাধ্যমগুলো তা মানছে না বলে অভিযোগ করেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন ও অনিরাপদ কনটেন্ট বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ করে দেব। যেহেতু একাধিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাবলিকলি কোনো নোটিশ দেব না।’
অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, সরকারের হিসাবে গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক পাওয়া গেছে।
সরকারের চ্যালেঞ্জ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, যখনই একটা নম্বর ব্লক করা হয়, তখন এর চেয়ে বেশিসংখ্যক বা সমসংখ্যক নম্বর ব্যবহার করে সিগন্যাল-হোয়াটসঅ্যাপের মতো গ্রুপগুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আইপি পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের নাম একটু পরিবর্তন করা হয়। এভাবে নতুন ওয়েবসাইট বানিয়ে আবার শুরু করা হয়। এমএফএস, ওয়েব লিংক বন্ধ করার পর এ চক্রগুলো আবার অ্যাপ তৈরি ফেলে। অ্যাপগুলো অনেক ক্ষেত্রেই পাবলিশড নয়, এপিকে হিসেবে ব্যবহার করে।

‘দায়িত্ববান’ এই লোকটি একসময় নিজ দায়িত্বে ঢাকা শহর দাপিয়ে বেড়াতেন। চলতেন দলেবলে গাড়ি হাঁকিয়ে, আগে-পিছে অস্ত্রসমেত পাহারা নিয়ে। বছরে দু-তিনবার গ্রেপ্তার হয়ে সংবাদপত্রের শিরোনামও হতেন। বিমানবন্দর থেকে সূত্রাপুর–সবই ছিল তাঁর নিয়ন্ত্রণে।
০৭ আগস্ট ২০২১
রাজধানীর গুলশান থানায় করা সন্ত্রাসবিরোধী আইনের একটি মামলায় ক্যাসিনো-কাণ্ডে আলোচিত সেলিম প্রধানকে তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আজ সোমবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াদুর রহমান এ নির্দেশ দেন বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. হারুনুর রশিদ।
৬ দিন আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
১৫ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
১৮ দিন আগে