মুহাম্মাদ শফিউল্লাহ, ঢাকা

রাজধানীর ধানমন্ডিতে প্রায় দেড় যুগ আগে প্রতিষ্ঠিত হয় পপুলার মেডিকেল কলেজ। অভিযোগ রয়েছে, মৌলিক শর্তগুলো পূরণ না করলেও আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বছরের পর বছর এই চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়ে শিক্ষাবর্ষ নবায়ন ও আসন বৃদ্ধির অনুমোদন দিয়েছে সরকার। অথচ কলেজটি নিজস্ব জমি, অবকাঠামো, হাসপাতালে শয্যাসংখ্যাসহ ১০টির বেশি অত্যাবশ্যকীয় শর্ত পূরণ করেনি।
পপুলার মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ বলেছে, যেসব ঘাটতি ও সীমাবদ্ধতা রয়েছে, সেগুলো দ্রুত সমাধান করা হবে।
চিকিৎসা শিক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শর্ত পূরণ না করা মেডিকেল কলেজ থেকে ডিগ্রি নেওয়া শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা শিক্ষা ও প্রশিক্ষণে ঘাটতি থেকে যাচ্ছে।
স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর বলেছে, শর্ত অমান্য করার ধারাবাহিকতা থেকে বের হতে বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলোকে তাগাদা দিচ্ছে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়। যেসব কলেজে সমস্যা বেশি, সেগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে।
জানতে চাইলে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাজমুল হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, মেডিকেল কলেজগুলো শর্ত না মানায় ঝুঁকিপূর্ণ চিকিৎসক তৈরি হচ্ছে। তাঁরা চেষ্টা করছেন, কলেজগুলোর মান যেন ভালো হয়। কেউ শর্ত পূরণ না করেই মেডিকেল কলেজ চালাবে, এটা কোনোভাবে কাম্য নয়। সেটা সরকারি বা বেসরকারি—যে মেডিকেল কলেজই হোক না কেন। তিনি বলেন, ‘ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর আসন কমানো বা বাড়ানো যায় না। গত বছরের নভেম্বরে ভর্তির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর ভর্তি পরীক্ষাও শেষ। নানা সীমাবদ্ধতার কারণে আগামী শিক্ষাবর্ষের জন্য এরই মধ্যে একটি কলেজের আসন কমানো হয়েছে। কেউ শর্ত না মানলে আসন কমিয়ে বা জরিমানাসহ তা বন্ধ করে দেওয়ার বিধান রয়েছে।
স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ২০১০ সালের ডিসেম্বরে সরকারের অনুমোদন পায় পপুলার মেডিকেল কলেজ। প্রথমে শিক্ষাবর্ষে ৫০ জন শিক্ষার্থী ভর্তির অনুমতি দেওয়া হয়। এরপর কয়েক দফায় আসন বাড়ানো হয়। সর্বশেষ ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষ থেকে ১০৭ জন শিক্ষার্থী ভর্তির অনুমোদন দেওয়া হয়।
দুই বছর আগে বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ও ডেন্টাল কলেজ আইন, ২০২২ কার্যকর করে সরকার। এর আগে বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলো বেসরকারি মেডিকেল কলেজ স্থাপন ও পরিচালনা নীতিমালা, ২০১১ (সংশোধিত) অনুযায়ী পরিচালিত হওয়ার বাধ্যবাধকতা ছিল।
কয়েকটি মৌলিক শর্ত পূরণ না করার অভিযোগ রয়েছে পপুলার মেডিকেল কলেজের বিরুদ্ধে। সরকারের গঠিত কমিটি নিয়ম অনুযায়ী কলেজটি নিয়মিত পরিদর্শন করছে। পরিদর্শন প্রতিবেদনও দিচ্ছে।
নিজস্ব জমি ও ভবন নেই: আইন অনুযায়ী, মেট্রোপলিটন এলাকার ৫০ আসনের মেডিকেল কলেজের জন্য দুই একর এবং মেট্রোপলিটন এলাকার বাইরে চার একর জমি থাকতে হবে। তবে মেট্রোপলিটন এলাকায় এরই মধ্যে একাডেমিক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত মেডিকেল কলেজের ক্ষেত্রে এক একর জমির শিথিলতা রয়েছে। জমির মালিকানা হবে কলেজের নামে, ভাড়া জমিতে বা ভবনে কলেজ এবং কলেজের হাসপাতাল স্থাপন করা যাবে না।
স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর সর্বশেষ গত বছরের জুনে পপুলার মেডিকেল কলেজ পরিদর্শন করে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কমিটির একজন সদস্য আজকের পত্রিকাকে জানান, ধানমন্ডির ২ নম্বর সড়কের যে ভবনে পপুলার মেডিকেল কলেজ; ওই জমির মালিকানা কলেজের বলে বিভিন্ন সময়ে দাবি করা হলেও আসলে ওই জমি কলেজের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান ও পপুলার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ডা. মোস্তাফিজুর রহমানের নামে। অধিদপ্তর এ বিষয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষকে বিভিন্ন সময় সতর্ক করেছে। সর্বশেষ গত ১০ জুলাই কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. খন্দকার আবু রায়হান এক চিঠিতে অধিদপ্তরকে জানান, ফেব্রুয়ারিতে মোহাম্মদপুরের বছিলায় কলেজের স্থায়ী ক্যাম্পাসের উন্নয়ন কার্যক্রম শুরু হবে।
কলেজটির ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, মোহাম্মদপুরের কাটাসুর মৌজায় ১২১ দশমিক ৬৩ কাঠা জমি কলেজের স্থায়ী ক্যাম্পাসের। বলা হয়েছে, নামজারির বিষয়টি ‘আবেদিত’। অর্থাৎ নামজারির আবেদন করা হয়েছে।
বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ও কলেজের হাসপাতাল একই ক্যাম্পাসে আলাদা ভবনে হওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তবে ধানমন্ডিতে পপুলার মেডিকেল কলেজ ও কলেজের হাসপাতাল একই জমিতে নয়। ধানমন্ডির ২ নম্বর সড়কের (২৫ নম্বর বাড়ি) পাঁচতলা ভবনে কলেজের কার্যক্রম চলছে। এর অন্তত ১০০ মিটার দূরে কলেজ হাসপাতাল। অধিদপ্তরের পরিদর্শন প্রতিবেদনেও কলেজ ও হাসপাতালের জমি ‘অখণ্ডিত নয়’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
ফ্লোর স্পেসেও ঘাটতি: আইন অনুযায়ী, ৫০ আসনের বেসরকারি মেডিকেল কলেজের একাডেমিক ও হাসপাতাল ভবনের জন্য এক লাখ করে মোট দুই লাখ বর্গফুট ফ্লোর স্পেস থাকতে হবে। আসনসংখ্যা বাড়লে আনুপাতিক হারে জমি, ফ্লোর স্পেস ও অন্যান্য অবকাঠামো বাড়াতে হবে। পপুলার মেডিকেল কলেজে বর্তমানে প্রতি শিক্ষাবর্ষে ১০৭ শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। এ হিসাবে কলেজের ফ্লোর স্পেস হতে হবে ২ লাখ ১৪ হাজার বর্গফুট। একই ফ্লোর স্পেস থাকতে হবে হাসপাতালের।
স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিদর্শন প্রতিবেদন বলছে, কলেজের একাডেমিক ভবনের ফ্লোর স্পেস ১ লাখ ২০ হাজার বর্গফুট। ঘাটতি রয়েছে ৯৪ হাজার বর্গফুটের। হাসপাতাল ভবনের ফ্লোর স্পেসের ঘাটতি ১৪ হাজার বর্গফুটের।
হাসপাতালে শয্যা কম: মেডিকেল কলেজে ৫০ জন শিক্ষার্থীর জন্য (একজনের বিপরীতে পাঁচটি শয্যা) ২৫০টি শয্যা থাকা বাধ্যতামূলক। প্রতি শিক্ষাবর্ষে ১০৭ জন শিক্ষার্থী ভর্তি করায় পপুলার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শয্যা থাকার কথা ৫৩৫টি।
স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, প্রতি শিক্ষার্থীর জন্য সাধারণ ওয়ার্ডে ৫টি শয্যা থাকবে। তাঁরা সেসব রোগীর মাধ্যমে প্রশিক্ষণ নেবেন। কেবিন, আইসিইউসহ অন্য কোনো বিশেষায়িত শয্যা এই হিসাবে গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ, কেবিন বা বিশেষায়িত শয্যার রোগীদের নিয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া যায় না। পপুলার মেডিকেল কলেজের হাসপাতালে কেবিন বেশি।
কলেজটির ওয়েবসাইটের তথ্য বলছে, কলেজের অনুমোদিত আসন ১০৫টি, মোট শিক্ষার্থী ৬৫১ এবং হাসপাতালে শয্যাসংখ্যা ৬০০। তবে ওয়েবসাইটের হাসপাতাল অংশে বলা হয়েছে, শয্যাসংখ্যা ৫০০। ১৮টি ভিআইপি ও ৫৭টি ডিলাক্স কেবিন আছে। অন্যদিকে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রতিবেদনে ৪৫০টি শয্যা উল্লেখ রয়েছে।
কলেজটির সাবেক একজন অধ্যক্ষ আজকের পত্রিকাকে বলেন, এই কলেজের হাসপাতালে সাধারণ শয্যা ১০০-এর কম, কেবিন বেশি। বিষয়টি আগে বহুবার বলা হলেও কর্তৃপক্ষ মনোযোগ দেয়নি। কেবিনে টাকা বেশি। কিন্তু সাধারণ শয্যার রোগী ছাড়া শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ গ্রহণ হয়ে ওঠে না।
ধানমন্ডির ২ নম্বর সড়কে কলেজটির হাসপাতাল (ভবন-৪)। গত সপ্তাহে সরেজমিনে হাসপাতাল ভবনে গিয়ে নিচতলা থেকে ১১ তলা পর্যন্ত রোগী ভর্তির ওয়ার্ড পাওয়া যায়নি। নিচতলায় জরুরি বিভাগ, ফার্মেসি ও হেল্প ডেস্ক, দ্বিতীয় তলায় সিটি স্ক্যান, এমআরআই, এক্স-রে, আলট্রাসনোগ্রাম, করোনারি কেয়ার ইউনিট (সিসিইউ), তৃতীয় তলায় ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট (আইসিইউ, এইচডিইউ ও সিটিইউ), চতুর্থ তলায় ক্যাথল্যাব ও অপারেশন থিয়েটার, পঞ্চম তলায় পিআইসিইউ ও কেবিন, ষষ্ঠ তলায় কেবিন, সপ্তম তলায় মসজিদ, ক্যাফেটেরিয়া ও লন্ড্রি, অষ্টম তলায় হাই কেয়ার ও এনআইসিইউ, নবম তলায় মডেল সার্জিক্যাল স্যুট, ১০ম তলায় মডেল সার্জিক্যাল স্যুট এবং ১১ তলায় রয়েছে প্রশাসনিক দপ্তর। পাশে আন্তসংযোগ দিয়ে হাসপাতালের জন্য রয়েছে একটি সাততলা ভবন (এনেক্স ভবন)। এই ভবনের নিচতলায় ফিজিওথেরাপি ও পুনর্বাসন কেন্দ্র, দ্বিতীয় তলায় সিসিইউ, তৃতীয় তলায় কার্ডিয়াক এইচডিইউ ও সিটিইউ, চতুর্থ তলায় ডায়ালাইসিস ও ব্লাড ব্যাংক রয়েছে। ভবনটির পঞ্চম, ষষ্ঠ ও সপ্তম তলায় বিশেষ কেয়ার ইউনিট নামে মোট ৬৬টি শয্যা রয়েছে।
স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, সড়কটির দুই পাশে পপুলারের ছয়টি ভবন রয়েছে। কর্তৃপক্ষ ছয়টি ভবনকে কৌশলে হাসপাতালে দেখালেও হাসপাতালের কার্যক্রম চলে ওই দুই ভবনে। বাকি চারটির মধ্যে তিনটি পপুলার কনসালটেশন সেন্টার (ভবন-৫, ২ ও ৬) অন্যটি পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার (ভবন-১)। নিয়ম অনুযায়ী হাসপাতালের জন্য নির্ধারিত ভবন ছাড়া অন্য কোনো ভবনে রোগী ভর্তি ও চিকিৎসা কার্যক্রম চালানো যাবে না। কনসালটেশন ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে হাসপাতালের কার্যক্রম চালানোর সুযোগ নেই। তাঁরা বলছেন, মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মূলত কলেজের একটি ইনস্টিটিউট। তবে এটি হাসপাতাল হওয়ায় এর নিবন্ধন দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
দেশে চিকিৎসা শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের মান নিম্নমুখী: চিকিৎসা শিক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে গত দুই দশকে চিকিৎসা শিক্ষার মানকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণের জন্য যেসব সুবিধার প্রয়োজন হয়, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে ল্যাব, শ্রেণিকক্ষ, শিক্ষক, হাসপাতালে শয্যাসংখ্যা ও রোগীর অনুপাত। বিগত দিনগুলোতে আসন বৃদ্ধির প্রতিযোগিতায় বিএমডিসি ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অনুমতি দিয়েছে; কিন্তু মানসম্মত চিকিৎসক তৈরি হচ্ছে না। এতে দেশের চিকিৎসকেরা ভবিষ্যতে ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন ফর মেডিকেল এডুকেশনের (ডব্লিউএফএমই) স্বীকৃতি না পেলে বিশ্বের অন্য কোনো দেশে কাজের সুযোগ ও স্বীকৃতি পাবেন না।
ডব্লিউএফএমইর সাবেক জ্যেষ্ঠ পরামর্শক ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াবিষয়ক সাবেক উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. মোজাহেরুল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শর্তের দিক বিবেচনা না করে বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলোর আসন যেভাবে বছর বছর বাড়ানো হয়েছে, তাতে নিয়মের চরম লঙ্ঘন হয়েছে। এতে চিকিৎসা শিক্ষার মান ক্রমাগত নিম্নমুখী হচ্ছে। খুব অল্পসংখ্যক কলেজ মান ধরে রাখতে পেরেছে। বর্তমানে বাংলাদেশে চিকিৎসা শিক্ষার মান সর্বকালের সর্বনিম্নে রয়েছে।’
যা বলছে কর্তৃপক্ষ: জানতে চাইলে পপুলার মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. খন্দকার আবু রায়হান আজকের পত্রিকাকে বলেন, যেসব ঘাটতি ও সীমাবদ্ধতা রয়েছে, সেগুলো দ্রুত সমাধান করা হবে। তাঁরা আশা করছেন, দু-তিন মাসের মধ্যে নতুন ক্যাম্পাসে কাজ শুরু করতে এবং মানসম্মত চিকিৎসা শিক্ষা দিতে পারবেন। তাঁদের যতটুকু সীমাবদ্ধতা রয়েছে, তা সরকার অবশ্যই জানে। কলেজ কর্তৃপক্ষও এ বিষয়ে আন্তরিক। ১৫ বছরেও কিছু শর্ত পূরণ না করার অভিযোগ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘এ প্রশ্নগুলোর উত্তর আমি দিতে পারব না। আমি ছয় মাস হলো চেয়ারে বসেছি।’
শিক্ষার্থী ভর্তির সংখ্যা অনুপাতে হাসপাতালে ৫৩৫টি শয্যা থাকার কথা থাকলেও অনেক কম থাকার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে খন্দকার আবু রায়হান বলেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিষয়টি দেখছে।

রাজধানীর ধানমন্ডিতে প্রায় দেড় যুগ আগে প্রতিষ্ঠিত হয় পপুলার মেডিকেল কলেজ। অভিযোগ রয়েছে, মৌলিক শর্তগুলো পূরণ না করলেও আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বছরের পর বছর এই চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়ে শিক্ষাবর্ষ নবায়ন ও আসন বৃদ্ধির অনুমোদন দিয়েছে সরকার। অথচ কলেজটি নিজস্ব জমি, অবকাঠামো, হাসপাতালে শয্যাসংখ্যাসহ ১০টির বেশি অত্যাবশ্যকীয় শর্ত পূরণ করেনি।
পপুলার মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ বলেছে, যেসব ঘাটতি ও সীমাবদ্ধতা রয়েছে, সেগুলো দ্রুত সমাধান করা হবে।
চিকিৎসা শিক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শর্ত পূরণ না করা মেডিকেল কলেজ থেকে ডিগ্রি নেওয়া শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা শিক্ষা ও প্রশিক্ষণে ঘাটতি থেকে যাচ্ছে।
স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর বলেছে, শর্ত অমান্য করার ধারাবাহিকতা থেকে বের হতে বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলোকে তাগাদা দিচ্ছে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়। যেসব কলেজে সমস্যা বেশি, সেগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে।
জানতে চাইলে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাজমুল হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, মেডিকেল কলেজগুলো শর্ত না মানায় ঝুঁকিপূর্ণ চিকিৎসক তৈরি হচ্ছে। তাঁরা চেষ্টা করছেন, কলেজগুলোর মান যেন ভালো হয়। কেউ শর্ত পূরণ না করেই মেডিকেল কলেজ চালাবে, এটা কোনোভাবে কাম্য নয়। সেটা সরকারি বা বেসরকারি—যে মেডিকেল কলেজই হোক না কেন। তিনি বলেন, ‘ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর আসন কমানো বা বাড়ানো যায় না। গত বছরের নভেম্বরে ভর্তির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর ভর্তি পরীক্ষাও শেষ। নানা সীমাবদ্ধতার কারণে আগামী শিক্ষাবর্ষের জন্য এরই মধ্যে একটি কলেজের আসন কমানো হয়েছে। কেউ শর্ত না মানলে আসন কমিয়ে বা জরিমানাসহ তা বন্ধ করে দেওয়ার বিধান রয়েছে।
স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ২০১০ সালের ডিসেম্বরে সরকারের অনুমোদন পায় পপুলার মেডিকেল কলেজ। প্রথমে শিক্ষাবর্ষে ৫০ জন শিক্ষার্থী ভর্তির অনুমতি দেওয়া হয়। এরপর কয়েক দফায় আসন বাড়ানো হয়। সর্বশেষ ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষ থেকে ১০৭ জন শিক্ষার্থী ভর্তির অনুমোদন দেওয়া হয়।
দুই বছর আগে বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ও ডেন্টাল কলেজ আইন, ২০২২ কার্যকর করে সরকার। এর আগে বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলো বেসরকারি মেডিকেল কলেজ স্থাপন ও পরিচালনা নীতিমালা, ২০১১ (সংশোধিত) অনুযায়ী পরিচালিত হওয়ার বাধ্যবাধকতা ছিল।
কয়েকটি মৌলিক শর্ত পূরণ না করার অভিযোগ রয়েছে পপুলার মেডিকেল কলেজের বিরুদ্ধে। সরকারের গঠিত কমিটি নিয়ম অনুযায়ী কলেজটি নিয়মিত পরিদর্শন করছে। পরিদর্শন প্রতিবেদনও দিচ্ছে।
নিজস্ব জমি ও ভবন নেই: আইন অনুযায়ী, মেট্রোপলিটন এলাকার ৫০ আসনের মেডিকেল কলেজের জন্য দুই একর এবং মেট্রোপলিটন এলাকার বাইরে চার একর জমি থাকতে হবে। তবে মেট্রোপলিটন এলাকায় এরই মধ্যে একাডেমিক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত মেডিকেল কলেজের ক্ষেত্রে এক একর জমির শিথিলতা রয়েছে। জমির মালিকানা হবে কলেজের নামে, ভাড়া জমিতে বা ভবনে কলেজ এবং কলেজের হাসপাতাল স্থাপন করা যাবে না।
স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর সর্বশেষ গত বছরের জুনে পপুলার মেডিকেল কলেজ পরিদর্শন করে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কমিটির একজন সদস্য আজকের পত্রিকাকে জানান, ধানমন্ডির ২ নম্বর সড়কের যে ভবনে পপুলার মেডিকেল কলেজ; ওই জমির মালিকানা কলেজের বলে বিভিন্ন সময়ে দাবি করা হলেও আসলে ওই জমি কলেজের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান ও পপুলার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ডা. মোস্তাফিজুর রহমানের নামে। অধিদপ্তর এ বিষয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষকে বিভিন্ন সময় সতর্ক করেছে। সর্বশেষ গত ১০ জুলাই কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. খন্দকার আবু রায়হান এক চিঠিতে অধিদপ্তরকে জানান, ফেব্রুয়ারিতে মোহাম্মদপুরের বছিলায় কলেজের স্থায়ী ক্যাম্পাসের উন্নয়ন কার্যক্রম শুরু হবে।
কলেজটির ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, মোহাম্মদপুরের কাটাসুর মৌজায় ১২১ দশমিক ৬৩ কাঠা জমি কলেজের স্থায়ী ক্যাম্পাসের। বলা হয়েছে, নামজারির বিষয়টি ‘আবেদিত’। অর্থাৎ নামজারির আবেদন করা হয়েছে।
বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ও কলেজের হাসপাতাল একই ক্যাম্পাসে আলাদা ভবনে হওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তবে ধানমন্ডিতে পপুলার মেডিকেল কলেজ ও কলেজের হাসপাতাল একই জমিতে নয়। ধানমন্ডির ২ নম্বর সড়কের (২৫ নম্বর বাড়ি) পাঁচতলা ভবনে কলেজের কার্যক্রম চলছে। এর অন্তত ১০০ মিটার দূরে কলেজ হাসপাতাল। অধিদপ্তরের পরিদর্শন প্রতিবেদনেও কলেজ ও হাসপাতালের জমি ‘অখণ্ডিত নয়’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
ফ্লোর স্পেসেও ঘাটতি: আইন অনুযায়ী, ৫০ আসনের বেসরকারি মেডিকেল কলেজের একাডেমিক ও হাসপাতাল ভবনের জন্য এক লাখ করে মোট দুই লাখ বর্গফুট ফ্লোর স্পেস থাকতে হবে। আসনসংখ্যা বাড়লে আনুপাতিক হারে জমি, ফ্লোর স্পেস ও অন্যান্য অবকাঠামো বাড়াতে হবে। পপুলার মেডিকেল কলেজে বর্তমানে প্রতি শিক্ষাবর্ষে ১০৭ শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। এ হিসাবে কলেজের ফ্লোর স্পেস হতে হবে ২ লাখ ১৪ হাজার বর্গফুট। একই ফ্লোর স্পেস থাকতে হবে হাসপাতালের।
স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিদর্শন প্রতিবেদন বলছে, কলেজের একাডেমিক ভবনের ফ্লোর স্পেস ১ লাখ ২০ হাজার বর্গফুট। ঘাটতি রয়েছে ৯৪ হাজার বর্গফুটের। হাসপাতাল ভবনের ফ্লোর স্পেসের ঘাটতি ১৪ হাজার বর্গফুটের।
হাসপাতালে শয্যা কম: মেডিকেল কলেজে ৫০ জন শিক্ষার্থীর জন্য (একজনের বিপরীতে পাঁচটি শয্যা) ২৫০টি শয্যা থাকা বাধ্যতামূলক। প্রতি শিক্ষাবর্ষে ১০৭ জন শিক্ষার্থী ভর্তি করায় পপুলার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শয্যা থাকার কথা ৫৩৫টি।
স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, প্রতি শিক্ষার্থীর জন্য সাধারণ ওয়ার্ডে ৫টি শয্যা থাকবে। তাঁরা সেসব রোগীর মাধ্যমে প্রশিক্ষণ নেবেন। কেবিন, আইসিইউসহ অন্য কোনো বিশেষায়িত শয্যা এই হিসাবে গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ, কেবিন বা বিশেষায়িত শয্যার রোগীদের নিয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া যায় না। পপুলার মেডিকেল কলেজের হাসপাতালে কেবিন বেশি।
কলেজটির ওয়েবসাইটের তথ্য বলছে, কলেজের অনুমোদিত আসন ১০৫টি, মোট শিক্ষার্থী ৬৫১ এবং হাসপাতালে শয্যাসংখ্যা ৬০০। তবে ওয়েবসাইটের হাসপাতাল অংশে বলা হয়েছে, শয্যাসংখ্যা ৫০০। ১৮টি ভিআইপি ও ৫৭টি ডিলাক্স কেবিন আছে। অন্যদিকে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রতিবেদনে ৪৫০টি শয্যা উল্লেখ রয়েছে।
কলেজটির সাবেক একজন অধ্যক্ষ আজকের পত্রিকাকে বলেন, এই কলেজের হাসপাতালে সাধারণ শয্যা ১০০-এর কম, কেবিন বেশি। বিষয়টি আগে বহুবার বলা হলেও কর্তৃপক্ষ মনোযোগ দেয়নি। কেবিনে টাকা বেশি। কিন্তু সাধারণ শয্যার রোগী ছাড়া শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ গ্রহণ হয়ে ওঠে না।
ধানমন্ডির ২ নম্বর সড়কে কলেজটির হাসপাতাল (ভবন-৪)। গত সপ্তাহে সরেজমিনে হাসপাতাল ভবনে গিয়ে নিচতলা থেকে ১১ তলা পর্যন্ত রোগী ভর্তির ওয়ার্ড পাওয়া যায়নি। নিচতলায় জরুরি বিভাগ, ফার্মেসি ও হেল্প ডেস্ক, দ্বিতীয় তলায় সিটি স্ক্যান, এমআরআই, এক্স-রে, আলট্রাসনোগ্রাম, করোনারি কেয়ার ইউনিট (সিসিইউ), তৃতীয় তলায় ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট (আইসিইউ, এইচডিইউ ও সিটিইউ), চতুর্থ তলায় ক্যাথল্যাব ও অপারেশন থিয়েটার, পঞ্চম তলায় পিআইসিইউ ও কেবিন, ষষ্ঠ তলায় কেবিন, সপ্তম তলায় মসজিদ, ক্যাফেটেরিয়া ও লন্ড্রি, অষ্টম তলায় হাই কেয়ার ও এনআইসিইউ, নবম তলায় মডেল সার্জিক্যাল স্যুট, ১০ম তলায় মডেল সার্জিক্যাল স্যুট এবং ১১ তলায় রয়েছে প্রশাসনিক দপ্তর। পাশে আন্তসংযোগ দিয়ে হাসপাতালের জন্য রয়েছে একটি সাততলা ভবন (এনেক্স ভবন)। এই ভবনের নিচতলায় ফিজিওথেরাপি ও পুনর্বাসন কেন্দ্র, দ্বিতীয় তলায় সিসিইউ, তৃতীয় তলায় কার্ডিয়াক এইচডিইউ ও সিটিইউ, চতুর্থ তলায় ডায়ালাইসিস ও ব্লাড ব্যাংক রয়েছে। ভবনটির পঞ্চম, ষষ্ঠ ও সপ্তম তলায় বিশেষ কেয়ার ইউনিট নামে মোট ৬৬টি শয্যা রয়েছে।
স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, সড়কটির দুই পাশে পপুলারের ছয়টি ভবন রয়েছে। কর্তৃপক্ষ ছয়টি ভবনকে কৌশলে হাসপাতালে দেখালেও হাসপাতালের কার্যক্রম চলে ওই দুই ভবনে। বাকি চারটির মধ্যে তিনটি পপুলার কনসালটেশন সেন্টার (ভবন-৫, ২ ও ৬) অন্যটি পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার (ভবন-১)। নিয়ম অনুযায়ী হাসপাতালের জন্য নির্ধারিত ভবন ছাড়া অন্য কোনো ভবনে রোগী ভর্তি ও চিকিৎসা কার্যক্রম চালানো যাবে না। কনসালটেশন ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে হাসপাতালের কার্যক্রম চালানোর সুযোগ নেই। তাঁরা বলছেন, মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মূলত কলেজের একটি ইনস্টিটিউট। তবে এটি হাসপাতাল হওয়ায় এর নিবন্ধন দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
দেশে চিকিৎসা শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের মান নিম্নমুখী: চিকিৎসা শিক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে গত দুই দশকে চিকিৎসা শিক্ষার মানকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণের জন্য যেসব সুবিধার প্রয়োজন হয়, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে ল্যাব, শ্রেণিকক্ষ, শিক্ষক, হাসপাতালে শয্যাসংখ্যা ও রোগীর অনুপাত। বিগত দিনগুলোতে আসন বৃদ্ধির প্রতিযোগিতায় বিএমডিসি ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অনুমতি দিয়েছে; কিন্তু মানসম্মত চিকিৎসক তৈরি হচ্ছে না। এতে দেশের চিকিৎসকেরা ভবিষ্যতে ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন ফর মেডিকেল এডুকেশনের (ডব্লিউএফএমই) স্বীকৃতি না পেলে বিশ্বের অন্য কোনো দেশে কাজের সুযোগ ও স্বীকৃতি পাবেন না।
ডব্লিউএফএমইর সাবেক জ্যেষ্ঠ পরামর্শক ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াবিষয়ক সাবেক উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. মোজাহেরুল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শর্তের দিক বিবেচনা না করে বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলোর আসন যেভাবে বছর বছর বাড়ানো হয়েছে, তাতে নিয়মের চরম লঙ্ঘন হয়েছে। এতে চিকিৎসা শিক্ষার মান ক্রমাগত নিম্নমুখী হচ্ছে। খুব অল্পসংখ্যক কলেজ মান ধরে রাখতে পেরেছে। বর্তমানে বাংলাদেশে চিকিৎসা শিক্ষার মান সর্বকালের সর্বনিম্নে রয়েছে।’
যা বলছে কর্তৃপক্ষ: জানতে চাইলে পপুলার মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. খন্দকার আবু রায়হান আজকের পত্রিকাকে বলেন, যেসব ঘাটতি ও সীমাবদ্ধতা রয়েছে, সেগুলো দ্রুত সমাধান করা হবে। তাঁরা আশা করছেন, দু-তিন মাসের মধ্যে নতুন ক্যাম্পাসে কাজ শুরু করতে এবং মানসম্মত চিকিৎসা শিক্ষা দিতে পারবেন। তাঁদের যতটুকু সীমাবদ্ধতা রয়েছে, তা সরকার অবশ্যই জানে। কলেজ কর্তৃপক্ষও এ বিষয়ে আন্তরিক। ১৫ বছরেও কিছু শর্ত পূরণ না করার অভিযোগ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘এ প্রশ্নগুলোর উত্তর আমি দিতে পারব না। আমি ছয় মাস হলো চেয়ারে বসেছি।’
শিক্ষার্থী ভর্তির সংখ্যা অনুপাতে হাসপাতালে ৫৩৫টি শয্যা থাকার কথা থাকলেও অনেক কম থাকার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে খন্দকার আবু রায়হান বলেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিষয়টি দেখছে।
মুহাম্মাদ শফিউল্লাহ, ঢাকা

রাজধানীর ধানমন্ডিতে প্রায় দেড় যুগ আগে প্রতিষ্ঠিত হয় পপুলার মেডিকেল কলেজ। অভিযোগ রয়েছে, মৌলিক শর্তগুলো পূরণ না করলেও আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বছরের পর বছর এই চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়ে শিক্ষাবর্ষ নবায়ন ও আসন বৃদ্ধির অনুমোদন দিয়েছে সরকার। অথচ কলেজটি নিজস্ব জমি, অবকাঠামো, হাসপাতালে শয্যাসংখ্যাসহ ১০টির বেশি অত্যাবশ্যকীয় শর্ত পূরণ করেনি।
পপুলার মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ বলেছে, যেসব ঘাটতি ও সীমাবদ্ধতা রয়েছে, সেগুলো দ্রুত সমাধান করা হবে।
চিকিৎসা শিক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শর্ত পূরণ না করা মেডিকেল কলেজ থেকে ডিগ্রি নেওয়া শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা শিক্ষা ও প্রশিক্ষণে ঘাটতি থেকে যাচ্ছে।
স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর বলেছে, শর্ত অমান্য করার ধারাবাহিকতা থেকে বের হতে বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলোকে তাগাদা দিচ্ছে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়। যেসব কলেজে সমস্যা বেশি, সেগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে।
জানতে চাইলে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাজমুল হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, মেডিকেল কলেজগুলো শর্ত না মানায় ঝুঁকিপূর্ণ চিকিৎসক তৈরি হচ্ছে। তাঁরা চেষ্টা করছেন, কলেজগুলোর মান যেন ভালো হয়। কেউ শর্ত পূরণ না করেই মেডিকেল কলেজ চালাবে, এটা কোনোভাবে কাম্য নয়। সেটা সরকারি বা বেসরকারি—যে মেডিকেল কলেজই হোক না কেন। তিনি বলেন, ‘ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর আসন কমানো বা বাড়ানো যায় না। গত বছরের নভেম্বরে ভর্তির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর ভর্তি পরীক্ষাও শেষ। নানা সীমাবদ্ধতার কারণে আগামী শিক্ষাবর্ষের জন্য এরই মধ্যে একটি কলেজের আসন কমানো হয়েছে। কেউ শর্ত না মানলে আসন কমিয়ে বা জরিমানাসহ তা বন্ধ করে দেওয়ার বিধান রয়েছে।
স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ২০১০ সালের ডিসেম্বরে সরকারের অনুমোদন পায় পপুলার মেডিকেল কলেজ। প্রথমে শিক্ষাবর্ষে ৫০ জন শিক্ষার্থী ভর্তির অনুমতি দেওয়া হয়। এরপর কয়েক দফায় আসন বাড়ানো হয়। সর্বশেষ ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষ থেকে ১০৭ জন শিক্ষার্থী ভর্তির অনুমোদন দেওয়া হয়।
দুই বছর আগে বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ও ডেন্টাল কলেজ আইন, ২০২২ কার্যকর করে সরকার। এর আগে বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলো বেসরকারি মেডিকেল কলেজ স্থাপন ও পরিচালনা নীতিমালা, ২০১১ (সংশোধিত) অনুযায়ী পরিচালিত হওয়ার বাধ্যবাধকতা ছিল।
কয়েকটি মৌলিক শর্ত পূরণ না করার অভিযোগ রয়েছে পপুলার মেডিকেল কলেজের বিরুদ্ধে। সরকারের গঠিত কমিটি নিয়ম অনুযায়ী কলেজটি নিয়মিত পরিদর্শন করছে। পরিদর্শন প্রতিবেদনও দিচ্ছে।
নিজস্ব জমি ও ভবন নেই: আইন অনুযায়ী, মেট্রোপলিটন এলাকার ৫০ আসনের মেডিকেল কলেজের জন্য দুই একর এবং মেট্রোপলিটন এলাকার বাইরে চার একর জমি থাকতে হবে। তবে মেট্রোপলিটন এলাকায় এরই মধ্যে একাডেমিক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত মেডিকেল কলেজের ক্ষেত্রে এক একর জমির শিথিলতা রয়েছে। জমির মালিকানা হবে কলেজের নামে, ভাড়া জমিতে বা ভবনে কলেজ এবং কলেজের হাসপাতাল স্থাপন করা যাবে না।
স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর সর্বশেষ গত বছরের জুনে পপুলার মেডিকেল কলেজ পরিদর্শন করে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কমিটির একজন সদস্য আজকের পত্রিকাকে জানান, ধানমন্ডির ২ নম্বর সড়কের যে ভবনে পপুলার মেডিকেল কলেজ; ওই জমির মালিকানা কলেজের বলে বিভিন্ন সময়ে দাবি করা হলেও আসলে ওই জমি কলেজের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান ও পপুলার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ডা. মোস্তাফিজুর রহমানের নামে। অধিদপ্তর এ বিষয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষকে বিভিন্ন সময় সতর্ক করেছে। সর্বশেষ গত ১০ জুলাই কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. খন্দকার আবু রায়হান এক চিঠিতে অধিদপ্তরকে জানান, ফেব্রুয়ারিতে মোহাম্মদপুরের বছিলায় কলেজের স্থায়ী ক্যাম্পাসের উন্নয়ন কার্যক্রম শুরু হবে।
কলেজটির ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, মোহাম্মদপুরের কাটাসুর মৌজায় ১২১ দশমিক ৬৩ কাঠা জমি কলেজের স্থায়ী ক্যাম্পাসের। বলা হয়েছে, নামজারির বিষয়টি ‘আবেদিত’। অর্থাৎ নামজারির আবেদন করা হয়েছে।
বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ও কলেজের হাসপাতাল একই ক্যাম্পাসে আলাদা ভবনে হওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তবে ধানমন্ডিতে পপুলার মেডিকেল কলেজ ও কলেজের হাসপাতাল একই জমিতে নয়। ধানমন্ডির ২ নম্বর সড়কের (২৫ নম্বর বাড়ি) পাঁচতলা ভবনে কলেজের কার্যক্রম চলছে। এর অন্তত ১০০ মিটার দূরে কলেজ হাসপাতাল। অধিদপ্তরের পরিদর্শন প্রতিবেদনেও কলেজ ও হাসপাতালের জমি ‘অখণ্ডিত নয়’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
ফ্লোর স্পেসেও ঘাটতি: আইন অনুযায়ী, ৫০ আসনের বেসরকারি মেডিকেল কলেজের একাডেমিক ও হাসপাতাল ভবনের জন্য এক লাখ করে মোট দুই লাখ বর্গফুট ফ্লোর স্পেস থাকতে হবে। আসনসংখ্যা বাড়লে আনুপাতিক হারে জমি, ফ্লোর স্পেস ও অন্যান্য অবকাঠামো বাড়াতে হবে। পপুলার মেডিকেল কলেজে বর্তমানে প্রতি শিক্ষাবর্ষে ১০৭ শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। এ হিসাবে কলেজের ফ্লোর স্পেস হতে হবে ২ লাখ ১৪ হাজার বর্গফুট। একই ফ্লোর স্পেস থাকতে হবে হাসপাতালের।
স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিদর্শন প্রতিবেদন বলছে, কলেজের একাডেমিক ভবনের ফ্লোর স্পেস ১ লাখ ২০ হাজার বর্গফুট। ঘাটতি রয়েছে ৯৪ হাজার বর্গফুটের। হাসপাতাল ভবনের ফ্লোর স্পেসের ঘাটতি ১৪ হাজার বর্গফুটের।
হাসপাতালে শয্যা কম: মেডিকেল কলেজে ৫০ জন শিক্ষার্থীর জন্য (একজনের বিপরীতে পাঁচটি শয্যা) ২৫০টি শয্যা থাকা বাধ্যতামূলক। প্রতি শিক্ষাবর্ষে ১০৭ জন শিক্ষার্থী ভর্তি করায় পপুলার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শয্যা থাকার কথা ৫৩৫টি।
স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, প্রতি শিক্ষার্থীর জন্য সাধারণ ওয়ার্ডে ৫টি শয্যা থাকবে। তাঁরা সেসব রোগীর মাধ্যমে প্রশিক্ষণ নেবেন। কেবিন, আইসিইউসহ অন্য কোনো বিশেষায়িত শয্যা এই হিসাবে গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ, কেবিন বা বিশেষায়িত শয্যার রোগীদের নিয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া যায় না। পপুলার মেডিকেল কলেজের হাসপাতালে কেবিন বেশি।
কলেজটির ওয়েবসাইটের তথ্য বলছে, কলেজের অনুমোদিত আসন ১০৫টি, মোট শিক্ষার্থী ৬৫১ এবং হাসপাতালে শয্যাসংখ্যা ৬০০। তবে ওয়েবসাইটের হাসপাতাল অংশে বলা হয়েছে, শয্যাসংখ্যা ৫০০। ১৮টি ভিআইপি ও ৫৭টি ডিলাক্স কেবিন আছে। অন্যদিকে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রতিবেদনে ৪৫০টি শয্যা উল্লেখ রয়েছে।
কলেজটির সাবেক একজন অধ্যক্ষ আজকের পত্রিকাকে বলেন, এই কলেজের হাসপাতালে সাধারণ শয্যা ১০০-এর কম, কেবিন বেশি। বিষয়টি আগে বহুবার বলা হলেও কর্তৃপক্ষ মনোযোগ দেয়নি। কেবিনে টাকা বেশি। কিন্তু সাধারণ শয্যার রোগী ছাড়া শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ গ্রহণ হয়ে ওঠে না।
ধানমন্ডির ২ নম্বর সড়কে কলেজটির হাসপাতাল (ভবন-৪)। গত সপ্তাহে সরেজমিনে হাসপাতাল ভবনে গিয়ে নিচতলা থেকে ১১ তলা পর্যন্ত রোগী ভর্তির ওয়ার্ড পাওয়া যায়নি। নিচতলায় জরুরি বিভাগ, ফার্মেসি ও হেল্প ডেস্ক, দ্বিতীয় তলায় সিটি স্ক্যান, এমআরআই, এক্স-রে, আলট্রাসনোগ্রাম, করোনারি কেয়ার ইউনিট (সিসিইউ), তৃতীয় তলায় ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট (আইসিইউ, এইচডিইউ ও সিটিইউ), চতুর্থ তলায় ক্যাথল্যাব ও অপারেশন থিয়েটার, পঞ্চম তলায় পিআইসিইউ ও কেবিন, ষষ্ঠ তলায় কেবিন, সপ্তম তলায় মসজিদ, ক্যাফেটেরিয়া ও লন্ড্রি, অষ্টম তলায় হাই কেয়ার ও এনআইসিইউ, নবম তলায় মডেল সার্জিক্যাল স্যুট, ১০ম তলায় মডেল সার্জিক্যাল স্যুট এবং ১১ তলায় রয়েছে প্রশাসনিক দপ্তর। পাশে আন্তসংযোগ দিয়ে হাসপাতালের জন্য রয়েছে একটি সাততলা ভবন (এনেক্স ভবন)। এই ভবনের নিচতলায় ফিজিওথেরাপি ও পুনর্বাসন কেন্দ্র, দ্বিতীয় তলায় সিসিইউ, তৃতীয় তলায় কার্ডিয়াক এইচডিইউ ও সিটিইউ, চতুর্থ তলায় ডায়ালাইসিস ও ব্লাড ব্যাংক রয়েছে। ভবনটির পঞ্চম, ষষ্ঠ ও সপ্তম তলায় বিশেষ কেয়ার ইউনিট নামে মোট ৬৬টি শয্যা রয়েছে।
স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, সড়কটির দুই পাশে পপুলারের ছয়টি ভবন রয়েছে। কর্তৃপক্ষ ছয়টি ভবনকে কৌশলে হাসপাতালে দেখালেও হাসপাতালের কার্যক্রম চলে ওই দুই ভবনে। বাকি চারটির মধ্যে তিনটি পপুলার কনসালটেশন সেন্টার (ভবন-৫, ২ ও ৬) অন্যটি পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার (ভবন-১)। নিয়ম অনুযায়ী হাসপাতালের জন্য নির্ধারিত ভবন ছাড়া অন্য কোনো ভবনে রোগী ভর্তি ও চিকিৎসা কার্যক্রম চালানো যাবে না। কনসালটেশন ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে হাসপাতালের কার্যক্রম চালানোর সুযোগ নেই। তাঁরা বলছেন, মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মূলত কলেজের একটি ইনস্টিটিউট। তবে এটি হাসপাতাল হওয়ায় এর নিবন্ধন দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
দেশে চিকিৎসা শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের মান নিম্নমুখী: চিকিৎসা শিক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে গত দুই দশকে চিকিৎসা শিক্ষার মানকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণের জন্য যেসব সুবিধার প্রয়োজন হয়, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে ল্যাব, শ্রেণিকক্ষ, শিক্ষক, হাসপাতালে শয্যাসংখ্যা ও রোগীর অনুপাত। বিগত দিনগুলোতে আসন বৃদ্ধির প্রতিযোগিতায় বিএমডিসি ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অনুমতি দিয়েছে; কিন্তু মানসম্মত চিকিৎসক তৈরি হচ্ছে না। এতে দেশের চিকিৎসকেরা ভবিষ্যতে ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন ফর মেডিকেল এডুকেশনের (ডব্লিউএফএমই) স্বীকৃতি না পেলে বিশ্বের অন্য কোনো দেশে কাজের সুযোগ ও স্বীকৃতি পাবেন না।
ডব্লিউএফএমইর সাবেক জ্যেষ্ঠ পরামর্শক ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াবিষয়ক সাবেক উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. মোজাহেরুল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শর্তের দিক বিবেচনা না করে বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলোর আসন যেভাবে বছর বছর বাড়ানো হয়েছে, তাতে নিয়মের চরম লঙ্ঘন হয়েছে। এতে চিকিৎসা শিক্ষার মান ক্রমাগত নিম্নমুখী হচ্ছে। খুব অল্পসংখ্যক কলেজ মান ধরে রাখতে পেরেছে। বর্তমানে বাংলাদেশে চিকিৎসা শিক্ষার মান সর্বকালের সর্বনিম্নে রয়েছে।’
যা বলছে কর্তৃপক্ষ: জানতে চাইলে পপুলার মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. খন্দকার আবু রায়হান আজকের পত্রিকাকে বলেন, যেসব ঘাটতি ও সীমাবদ্ধতা রয়েছে, সেগুলো দ্রুত সমাধান করা হবে। তাঁরা আশা করছেন, দু-তিন মাসের মধ্যে নতুন ক্যাম্পাসে কাজ শুরু করতে এবং মানসম্মত চিকিৎসা শিক্ষা দিতে পারবেন। তাঁদের যতটুকু সীমাবদ্ধতা রয়েছে, তা সরকার অবশ্যই জানে। কলেজ কর্তৃপক্ষও এ বিষয়ে আন্তরিক। ১৫ বছরেও কিছু শর্ত পূরণ না করার অভিযোগ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘এ প্রশ্নগুলোর উত্তর আমি দিতে পারব না। আমি ছয় মাস হলো চেয়ারে বসেছি।’
শিক্ষার্থী ভর্তির সংখ্যা অনুপাতে হাসপাতালে ৫৩৫টি শয্যা থাকার কথা থাকলেও অনেক কম থাকার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে খন্দকার আবু রায়হান বলেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিষয়টি দেখছে।

রাজধানীর ধানমন্ডিতে প্রায় দেড় যুগ আগে প্রতিষ্ঠিত হয় পপুলার মেডিকেল কলেজ। অভিযোগ রয়েছে, মৌলিক শর্তগুলো পূরণ না করলেও আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বছরের পর বছর এই চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়ে শিক্ষাবর্ষ নবায়ন ও আসন বৃদ্ধির অনুমোদন দিয়েছে সরকার। অথচ কলেজটি নিজস্ব জমি, অবকাঠামো, হাসপাতালে শয্যাসংখ্যাসহ ১০টির বেশি অত্যাবশ্যকীয় শর্ত পূরণ করেনি।
পপুলার মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ বলেছে, যেসব ঘাটতি ও সীমাবদ্ধতা রয়েছে, সেগুলো দ্রুত সমাধান করা হবে।
চিকিৎসা শিক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শর্ত পূরণ না করা মেডিকেল কলেজ থেকে ডিগ্রি নেওয়া শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা শিক্ষা ও প্রশিক্ষণে ঘাটতি থেকে যাচ্ছে।
স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর বলেছে, শর্ত অমান্য করার ধারাবাহিকতা থেকে বের হতে বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলোকে তাগাদা দিচ্ছে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়। যেসব কলেজে সমস্যা বেশি, সেগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে।
জানতে চাইলে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাজমুল হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, মেডিকেল কলেজগুলো শর্ত না মানায় ঝুঁকিপূর্ণ চিকিৎসক তৈরি হচ্ছে। তাঁরা চেষ্টা করছেন, কলেজগুলোর মান যেন ভালো হয়। কেউ শর্ত পূরণ না করেই মেডিকেল কলেজ চালাবে, এটা কোনোভাবে কাম্য নয়। সেটা সরকারি বা বেসরকারি—যে মেডিকেল কলেজই হোক না কেন। তিনি বলেন, ‘ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর আসন কমানো বা বাড়ানো যায় না। গত বছরের নভেম্বরে ভর্তির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর ভর্তি পরীক্ষাও শেষ। নানা সীমাবদ্ধতার কারণে আগামী শিক্ষাবর্ষের জন্য এরই মধ্যে একটি কলেজের আসন কমানো হয়েছে। কেউ শর্ত না মানলে আসন কমিয়ে বা জরিমানাসহ তা বন্ধ করে দেওয়ার বিধান রয়েছে।
স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ২০১০ সালের ডিসেম্বরে সরকারের অনুমোদন পায় পপুলার মেডিকেল কলেজ। প্রথমে শিক্ষাবর্ষে ৫০ জন শিক্ষার্থী ভর্তির অনুমতি দেওয়া হয়। এরপর কয়েক দফায় আসন বাড়ানো হয়। সর্বশেষ ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষ থেকে ১০৭ জন শিক্ষার্থী ভর্তির অনুমোদন দেওয়া হয়।
দুই বছর আগে বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ও ডেন্টাল কলেজ আইন, ২০২২ কার্যকর করে সরকার। এর আগে বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলো বেসরকারি মেডিকেল কলেজ স্থাপন ও পরিচালনা নীতিমালা, ২০১১ (সংশোধিত) অনুযায়ী পরিচালিত হওয়ার বাধ্যবাধকতা ছিল।
কয়েকটি মৌলিক শর্ত পূরণ না করার অভিযোগ রয়েছে পপুলার মেডিকেল কলেজের বিরুদ্ধে। সরকারের গঠিত কমিটি নিয়ম অনুযায়ী কলেজটি নিয়মিত পরিদর্শন করছে। পরিদর্শন প্রতিবেদনও দিচ্ছে।
নিজস্ব জমি ও ভবন নেই: আইন অনুযায়ী, মেট্রোপলিটন এলাকার ৫০ আসনের মেডিকেল কলেজের জন্য দুই একর এবং মেট্রোপলিটন এলাকার বাইরে চার একর জমি থাকতে হবে। তবে মেট্রোপলিটন এলাকায় এরই মধ্যে একাডেমিক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত মেডিকেল কলেজের ক্ষেত্রে এক একর জমির শিথিলতা রয়েছে। জমির মালিকানা হবে কলেজের নামে, ভাড়া জমিতে বা ভবনে কলেজ এবং কলেজের হাসপাতাল স্থাপন করা যাবে না।
স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর সর্বশেষ গত বছরের জুনে পপুলার মেডিকেল কলেজ পরিদর্শন করে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কমিটির একজন সদস্য আজকের পত্রিকাকে জানান, ধানমন্ডির ২ নম্বর সড়কের যে ভবনে পপুলার মেডিকেল কলেজ; ওই জমির মালিকানা কলেজের বলে বিভিন্ন সময়ে দাবি করা হলেও আসলে ওই জমি কলেজের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান ও পপুলার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ডা. মোস্তাফিজুর রহমানের নামে। অধিদপ্তর এ বিষয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষকে বিভিন্ন সময় সতর্ক করেছে। সর্বশেষ গত ১০ জুলাই কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. খন্দকার আবু রায়হান এক চিঠিতে অধিদপ্তরকে জানান, ফেব্রুয়ারিতে মোহাম্মদপুরের বছিলায় কলেজের স্থায়ী ক্যাম্পাসের উন্নয়ন কার্যক্রম শুরু হবে।
কলেজটির ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, মোহাম্মদপুরের কাটাসুর মৌজায় ১২১ দশমিক ৬৩ কাঠা জমি কলেজের স্থায়ী ক্যাম্পাসের। বলা হয়েছে, নামজারির বিষয়টি ‘আবেদিত’। অর্থাৎ নামজারির আবেদন করা হয়েছে।
বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ও কলেজের হাসপাতাল একই ক্যাম্পাসে আলাদা ভবনে হওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তবে ধানমন্ডিতে পপুলার মেডিকেল কলেজ ও কলেজের হাসপাতাল একই জমিতে নয়। ধানমন্ডির ২ নম্বর সড়কের (২৫ নম্বর বাড়ি) পাঁচতলা ভবনে কলেজের কার্যক্রম চলছে। এর অন্তত ১০০ মিটার দূরে কলেজ হাসপাতাল। অধিদপ্তরের পরিদর্শন প্রতিবেদনেও কলেজ ও হাসপাতালের জমি ‘অখণ্ডিত নয়’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
ফ্লোর স্পেসেও ঘাটতি: আইন অনুযায়ী, ৫০ আসনের বেসরকারি মেডিকেল কলেজের একাডেমিক ও হাসপাতাল ভবনের জন্য এক লাখ করে মোট দুই লাখ বর্গফুট ফ্লোর স্পেস থাকতে হবে। আসনসংখ্যা বাড়লে আনুপাতিক হারে জমি, ফ্লোর স্পেস ও অন্যান্য অবকাঠামো বাড়াতে হবে। পপুলার মেডিকেল কলেজে বর্তমানে প্রতি শিক্ষাবর্ষে ১০৭ শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। এ হিসাবে কলেজের ফ্লোর স্পেস হতে হবে ২ লাখ ১৪ হাজার বর্গফুট। একই ফ্লোর স্পেস থাকতে হবে হাসপাতালের।
স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিদর্শন প্রতিবেদন বলছে, কলেজের একাডেমিক ভবনের ফ্লোর স্পেস ১ লাখ ২০ হাজার বর্গফুট। ঘাটতি রয়েছে ৯৪ হাজার বর্গফুটের। হাসপাতাল ভবনের ফ্লোর স্পেসের ঘাটতি ১৪ হাজার বর্গফুটের।
হাসপাতালে শয্যা কম: মেডিকেল কলেজে ৫০ জন শিক্ষার্থীর জন্য (একজনের বিপরীতে পাঁচটি শয্যা) ২৫০টি শয্যা থাকা বাধ্যতামূলক। প্রতি শিক্ষাবর্ষে ১০৭ জন শিক্ষার্থী ভর্তি করায় পপুলার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শয্যা থাকার কথা ৫৩৫টি।
স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, প্রতি শিক্ষার্থীর জন্য সাধারণ ওয়ার্ডে ৫টি শয্যা থাকবে। তাঁরা সেসব রোগীর মাধ্যমে প্রশিক্ষণ নেবেন। কেবিন, আইসিইউসহ অন্য কোনো বিশেষায়িত শয্যা এই হিসাবে গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ, কেবিন বা বিশেষায়িত শয্যার রোগীদের নিয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া যায় না। পপুলার মেডিকেল কলেজের হাসপাতালে কেবিন বেশি।
কলেজটির ওয়েবসাইটের তথ্য বলছে, কলেজের অনুমোদিত আসন ১০৫টি, মোট শিক্ষার্থী ৬৫১ এবং হাসপাতালে শয্যাসংখ্যা ৬০০। তবে ওয়েবসাইটের হাসপাতাল অংশে বলা হয়েছে, শয্যাসংখ্যা ৫০০। ১৮টি ভিআইপি ও ৫৭টি ডিলাক্স কেবিন আছে। অন্যদিকে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রতিবেদনে ৪৫০টি শয্যা উল্লেখ রয়েছে।
কলেজটির সাবেক একজন অধ্যক্ষ আজকের পত্রিকাকে বলেন, এই কলেজের হাসপাতালে সাধারণ শয্যা ১০০-এর কম, কেবিন বেশি। বিষয়টি আগে বহুবার বলা হলেও কর্তৃপক্ষ মনোযোগ দেয়নি। কেবিনে টাকা বেশি। কিন্তু সাধারণ শয্যার রোগী ছাড়া শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ গ্রহণ হয়ে ওঠে না।
ধানমন্ডির ২ নম্বর সড়কে কলেজটির হাসপাতাল (ভবন-৪)। গত সপ্তাহে সরেজমিনে হাসপাতাল ভবনে গিয়ে নিচতলা থেকে ১১ তলা পর্যন্ত রোগী ভর্তির ওয়ার্ড পাওয়া যায়নি। নিচতলায় জরুরি বিভাগ, ফার্মেসি ও হেল্প ডেস্ক, দ্বিতীয় তলায় সিটি স্ক্যান, এমআরআই, এক্স-রে, আলট্রাসনোগ্রাম, করোনারি কেয়ার ইউনিট (সিসিইউ), তৃতীয় তলায় ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট (আইসিইউ, এইচডিইউ ও সিটিইউ), চতুর্থ তলায় ক্যাথল্যাব ও অপারেশন থিয়েটার, পঞ্চম তলায় পিআইসিইউ ও কেবিন, ষষ্ঠ তলায় কেবিন, সপ্তম তলায় মসজিদ, ক্যাফেটেরিয়া ও লন্ড্রি, অষ্টম তলায় হাই কেয়ার ও এনআইসিইউ, নবম তলায় মডেল সার্জিক্যাল স্যুট, ১০ম তলায় মডেল সার্জিক্যাল স্যুট এবং ১১ তলায় রয়েছে প্রশাসনিক দপ্তর। পাশে আন্তসংযোগ দিয়ে হাসপাতালের জন্য রয়েছে একটি সাততলা ভবন (এনেক্স ভবন)। এই ভবনের নিচতলায় ফিজিওথেরাপি ও পুনর্বাসন কেন্দ্র, দ্বিতীয় তলায় সিসিইউ, তৃতীয় তলায় কার্ডিয়াক এইচডিইউ ও সিটিইউ, চতুর্থ তলায় ডায়ালাইসিস ও ব্লাড ব্যাংক রয়েছে। ভবনটির পঞ্চম, ষষ্ঠ ও সপ্তম তলায় বিশেষ কেয়ার ইউনিট নামে মোট ৬৬টি শয্যা রয়েছে।
স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, সড়কটির দুই পাশে পপুলারের ছয়টি ভবন রয়েছে। কর্তৃপক্ষ ছয়টি ভবনকে কৌশলে হাসপাতালে দেখালেও হাসপাতালের কার্যক্রম চলে ওই দুই ভবনে। বাকি চারটির মধ্যে তিনটি পপুলার কনসালটেশন সেন্টার (ভবন-৫, ২ ও ৬) অন্যটি পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার (ভবন-১)। নিয়ম অনুযায়ী হাসপাতালের জন্য নির্ধারিত ভবন ছাড়া অন্য কোনো ভবনে রোগী ভর্তি ও চিকিৎসা কার্যক্রম চালানো যাবে না। কনসালটেশন ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে হাসপাতালের কার্যক্রম চালানোর সুযোগ নেই। তাঁরা বলছেন, মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মূলত কলেজের একটি ইনস্টিটিউট। তবে এটি হাসপাতাল হওয়ায় এর নিবন্ধন দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
দেশে চিকিৎসা শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের মান নিম্নমুখী: চিকিৎসা শিক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে গত দুই দশকে চিকিৎসা শিক্ষার মানকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণের জন্য যেসব সুবিধার প্রয়োজন হয়, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে ল্যাব, শ্রেণিকক্ষ, শিক্ষক, হাসপাতালে শয্যাসংখ্যা ও রোগীর অনুপাত। বিগত দিনগুলোতে আসন বৃদ্ধির প্রতিযোগিতায় বিএমডিসি ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অনুমতি দিয়েছে; কিন্তু মানসম্মত চিকিৎসক তৈরি হচ্ছে না। এতে দেশের চিকিৎসকেরা ভবিষ্যতে ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন ফর মেডিকেল এডুকেশনের (ডব্লিউএফএমই) স্বীকৃতি না পেলে বিশ্বের অন্য কোনো দেশে কাজের সুযোগ ও স্বীকৃতি পাবেন না।
ডব্লিউএফএমইর সাবেক জ্যেষ্ঠ পরামর্শক ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াবিষয়ক সাবেক উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. মোজাহেরুল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শর্তের দিক বিবেচনা না করে বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলোর আসন যেভাবে বছর বছর বাড়ানো হয়েছে, তাতে নিয়মের চরম লঙ্ঘন হয়েছে। এতে চিকিৎসা শিক্ষার মান ক্রমাগত নিম্নমুখী হচ্ছে। খুব অল্পসংখ্যক কলেজ মান ধরে রাখতে পেরেছে। বর্তমানে বাংলাদেশে চিকিৎসা শিক্ষার মান সর্বকালের সর্বনিম্নে রয়েছে।’
যা বলছে কর্তৃপক্ষ: জানতে চাইলে পপুলার মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. খন্দকার আবু রায়হান আজকের পত্রিকাকে বলেন, যেসব ঘাটতি ও সীমাবদ্ধতা রয়েছে, সেগুলো দ্রুত সমাধান করা হবে। তাঁরা আশা করছেন, দু-তিন মাসের মধ্যে নতুন ক্যাম্পাসে কাজ শুরু করতে এবং মানসম্মত চিকিৎসা শিক্ষা দিতে পারবেন। তাঁদের যতটুকু সীমাবদ্ধতা রয়েছে, তা সরকার অবশ্যই জানে। কলেজ কর্তৃপক্ষও এ বিষয়ে আন্তরিক। ১৫ বছরেও কিছু শর্ত পূরণ না করার অভিযোগ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘এ প্রশ্নগুলোর উত্তর আমি দিতে পারব না। আমি ছয় মাস হলো চেয়ারে বসেছি।’
শিক্ষার্থী ভর্তির সংখ্যা অনুপাতে হাসপাতালে ৫৩৫টি শয্যা থাকার কথা থাকলেও অনেক কম থাকার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে খন্দকার আবু রায়হান বলেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিষয়টি দেখছে।

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ থানায় পুলিশি হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগ এনে অজ্ঞাতনামা চার পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন ভুক্তভোগী ও ডাকাতি মামলার আসামি মো. খোকন (৩৯)। গত শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) তিনি ফরিদগঞ্জ থানায় মামলাটি করেন।
৬ মিনিট আগে
উদ্যোগের বিষয়ে ডিএমটিসিএলের মহাব্যবস্থাপক (অপারেশন) মোহাম্মদ ইফতিখার হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, সরকার ৩১ ডিসেম্বর সাধারণ ছুটি ঘোষণা করায় ছুটির দিনের সময়সূচি অনুযায়ী ট্রেন চলাচলের কথা থাকলেও খালেদা জিয়ার জানাজার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে মেট্রোরেলের ট্রিপের সংখ্যা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।
১৪ মিনিট আগে
দেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে প্রকাশ্যে আপত্তিকর মন্তব্য করায় হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে মাওলানা মুখলিছুর রহমান (চিতল মুখলিছ) নামের এক ব্যক্তিকে গণপিটুনি দিয়েছে স্থানীয় জনতা। তিনি শেখ হাসিনাকে চিতল মাছ ও হিরো আলমকে নোয়া গাড়ি উপহার দিয়ে ‘চিতল মুখলিছ’ নামে পরিচিতি
১ ঘণ্টা আগে
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদিকে গুলি করে হত্যার মামলায় প্রধান আসামি ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খানকে ভারতে পালাতে সাহায্যকারী ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সিবিউন দিউ ও সঞ্জয় চিসিমকে তৃতীয় দফা রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধারের পর অস্ত্র মামলায় গ্রেপ্তার ফয়সাল নামে
১ ঘণ্টা আগেচাঁদপুর প্রতিনিধি

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ থানায় পুলিশি হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগ এনে অজ্ঞাতনামা চার পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন ভুক্তভোগী ও ডাকাতি মামলার আসামি মো. খোকন (৩৯)। গত শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) তিনি ফরিদগঞ্জ থানায় মামলাটি করেন।
এর আগে ফরিদগঞ্জ থানায় গত ২৮ নভেম্বর চাঞ্চল্যকর ডাকাতি মামলায় আসামির দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি গ্রহণকালে পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় ফরিদগঞ্জ আমলি আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট শাহাদাতুল হাসান আল মুরাদ নির্যাতনের ঘটনায় মামলা করার নির্দেশ দেন।
আজ মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেন চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নাজির ফখরুদ্দিন আহমেদ স্বপন।
মামলার কাগজপত্র পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের অধীন ফরিদগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট একটি ডাকাতি মামলায় (জি আর নং-৩১৫/২৫) ১৬ ডিসেম্বর তিনজন অজ্ঞাতনামা আসামিকে হাজির করা হয়। তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবিরের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এজাহারে অজ্ঞাতনামা আসামি হিসেবে উল্লেখিত খোকনের দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ডের সময় আসামি পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনের বিস্তারিত বর্ণনা দেন।
আসামির গ্রেপ্তারের সময় গ্রেপ্তারের স্মারকপত্রে আসামি সুস্থ ও পুলিশ ফরওয়ার্ডিংয়ে কোনো জখমের উল্লেখ না থাকায় ম্যাজিস্ট্রেট আসামিকে পরীক্ষা করে নির্যাতনের অভিযোগ তাৎক্ষণিকভাবে লিপিবদ্ধ করেন। একই সঙ্গে নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন অনুযায়ী সাত কার্যদিবসের মধ্যে চাঁদপুরের পুলিশ সুপারকে মামলা দায়েরের নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে আসামিকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মেডিকেল পরীক্ষার জন্য সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ককে নির্দেশ দেন।
যার পরিপ্রেক্ষিতে ১৭ ডিসেম্বর চাঁদপুর সদর হাসপাতাল থেকে আসামিকে পরীক্ষা করে প্রতিবেদন দেন চিকিৎসক রানা সাহা ও আসিবুল হাসান চৌধুরী। হাসপাতালের মেডিকেল পরীক্ষার প্রতিবেদনে দেখা যায়, আসামির উভয় পায়ের ঊরুর ওপর একাধিক নীলাফুলা জখম রয়েছে। যদিও চিকিৎসা সনদে উল্লেখ করা হয়, আসামির বর্ণনামতে এই জখম প্রায় চার দিন আগের।
এদিকে আদালতের মামলা করার নির্দেশের পর ২৩ ডিসেম্বর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হাজীগঞ্জ সার্কেল) মুকুর চাকমা ঘটনার গুরুত্ব ও স্পর্শকাতরতার কথা উল্লেখ করে ১৫ দিনের তদন্তের সময় প্রার্থনা করেন। তবে ম্যাজিস্ট্রেট সময় বিবেচনা না করে তাৎক্ষণিকভাবে মামলা করার আগের আদেশ বহাল রাখেন।
আদালতের আদেশ পর্যালোচনায় দেখা যায়, নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনের অধীন সংঘটিত অপরাধসমূহ আমলযোগ্য। ফলে আইনানুযায়ী এ ধরনের অপরাধে মামলা করা ছাড়া তদন্ত পরিচালনার কোনো সুযোগ নেই।
সর্বশেষ ২৭ ডিসেম্বর আদালতের নির্দেশ মোতাবেক ফরিদগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হেলাল উদ্দিন নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে মামলা করেন। ওই মামলার তদন্ত করার দায়িত্ব দেওয়া হয় থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আরিফ ইফতেখারকে।
মামলার বাদী মো. খোকন ফরিদগঞ্জ উপজেলার গুপ্টি সরদার বাড়ির শাহজাহানের ছেলে। বিভিন্ন অপরাধে ফরিদগঞ্জ থানায় চার মামলার আসামি খোকন। সর্বশেষ গত রোববার (২৮ নভেম্বর) ডাকাতির ঘটনায় ফরিদগঞ্জ থানায় অজ্ঞাতনামা সাতজনকে আসামি করে মামলা করেন উপজেলার গুপ্টি পূর্ব ইউনিয়নের সাইসাঙ্গা গ্রামের মিজি বাড়ির রহিম বাদশার স্ত্রী পেয়ারা বেগম। ওই মামলায় গ্রেপ্তার হন আসামি খোকন।
এ বিষয়ে চাঁদপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. রবিউল হাসান বলেন, আদালতের আদেশের পর ফরিদগঞ্জ থানায় মামলা হয়েছে। মামলাটি তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ থানায় পুলিশি হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগ এনে অজ্ঞাতনামা চার পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন ভুক্তভোগী ও ডাকাতি মামলার আসামি মো. খোকন (৩৯)। গত শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) তিনি ফরিদগঞ্জ থানায় মামলাটি করেন।
এর আগে ফরিদগঞ্জ থানায় গত ২৮ নভেম্বর চাঞ্চল্যকর ডাকাতি মামলায় আসামির দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি গ্রহণকালে পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় ফরিদগঞ্জ আমলি আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট শাহাদাতুল হাসান আল মুরাদ নির্যাতনের ঘটনায় মামলা করার নির্দেশ দেন।
আজ মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেন চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নাজির ফখরুদ্দিন আহমেদ স্বপন।
মামলার কাগজপত্র পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের অধীন ফরিদগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট একটি ডাকাতি মামলায় (জি আর নং-৩১৫/২৫) ১৬ ডিসেম্বর তিনজন অজ্ঞাতনামা আসামিকে হাজির করা হয়। তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবিরের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এজাহারে অজ্ঞাতনামা আসামি হিসেবে উল্লেখিত খোকনের দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ডের সময় আসামি পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনের বিস্তারিত বর্ণনা দেন।
আসামির গ্রেপ্তারের সময় গ্রেপ্তারের স্মারকপত্রে আসামি সুস্থ ও পুলিশ ফরওয়ার্ডিংয়ে কোনো জখমের উল্লেখ না থাকায় ম্যাজিস্ট্রেট আসামিকে পরীক্ষা করে নির্যাতনের অভিযোগ তাৎক্ষণিকভাবে লিপিবদ্ধ করেন। একই সঙ্গে নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন অনুযায়ী সাত কার্যদিবসের মধ্যে চাঁদপুরের পুলিশ সুপারকে মামলা দায়েরের নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে আসামিকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মেডিকেল পরীক্ষার জন্য সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ককে নির্দেশ দেন।
যার পরিপ্রেক্ষিতে ১৭ ডিসেম্বর চাঁদপুর সদর হাসপাতাল থেকে আসামিকে পরীক্ষা করে প্রতিবেদন দেন চিকিৎসক রানা সাহা ও আসিবুল হাসান চৌধুরী। হাসপাতালের মেডিকেল পরীক্ষার প্রতিবেদনে দেখা যায়, আসামির উভয় পায়ের ঊরুর ওপর একাধিক নীলাফুলা জখম রয়েছে। যদিও চিকিৎসা সনদে উল্লেখ করা হয়, আসামির বর্ণনামতে এই জখম প্রায় চার দিন আগের।
এদিকে আদালতের মামলা করার নির্দেশের পর ২৩ ডিসেম্বর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হাজীগঞ্জ সার্কেল) মুকুর চাকমা ঘটনার গুরুত্ব ও স্পর্শকাতরতার কথা উল্লেখ করে ১৫ দিনের তদন্তের সময় প্রার্থনা করেন। তবে ম্যাজিস্ট্রেট সময় বিবেচনা না করে তাৎক্ষণিকভাবে মামলা করার আগের আদেশ বহাল রাখেন।
আদালতের আদেশ পর্যালোচনায় দেখা যায়, নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনের অধীন সংঘটিত অপরাধসমূহ আমলযোগ্য। ফলে আইনানুযায়ী এ ধরনের অপরাধে মামলা করা ছাড়া তদন্ত পরিচালনার কোনো সুযোগ নেই।
সর্বশেষ ২৭ ডিসেম্বর আদালতের নির্দেশ মোতাবেক ফরিদগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হেলাল উদ্দিন নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে মামলা করেন। ওই মামলার তদন্ত করার দায়িত্ব দেওয়া হয় থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আরিফ ইফতেখারকে।
মামলার বাদী মো. খোকন ফরিদগঞ্জ উপজেলার গুপ্টি সরদার বাড়ির শাহজাহানের ছেলে। বিভিন্ন অপরাধে ফরিদগঞ্জ থানায় চার মামলার আসামি খোকন। সর্বশেষ গত রোববার (২৮ নভেম্বর) ডাকাতির ঘটনায় ফরিদগঞ্জ থানায় অজ্ঞাতনামা সাতজনকে আসামি করে মামলা করেন উপজেলার গুপ্টি পূর্ব ইউনিয়নের সাইসাঙ্গা গ্রামের মিজি বাড়ির রহিম বাদশার স্ত্রী পেয়ারা বেগম। ওই মামলায় গ্রেপ্তার হন আসামি খোকন।
এ বিষয়ে চাঁদপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. রবিউল হাসান বলেন, আদালতের আদেশের পর ফরিদগঞ্জ থানায় মামলা হয়েছে। মামলাটি তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।

রাজধানীর ধানমন্ডিতে প্রায় দেড় যুগ আগে প্রতিষ্ঠিত হয় পপুলার মেডিকেল কলেজ। অভিযোগ রয়েছে, মৌলিক শর্তগুলো পূরণ না করলেও আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বছরের পর বছর এই চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়ে শিক্ষাবর্ষ নবায়ন ও আসন বৃদ্ধির অনুমোদন দিয়েছে সরকার। অথচ কলেজটি নিজস্ব জমি, অবকাঠামো, হাসপাতালে শয্যাসংখ্যাসহ ১০টির বেশি...
০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
উদ্যোগের বিষয়ে ডিএমটিসিএলের মহাব্যবস্থাপক (অপারেশন) মোহাম্মদ ইফতিখার হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, সরকার ৩১ ডিসেম্বর সাধারণ ছুটি ঘোষণা করায় ছুটির দিনের সময়সূচি অনুযায়ী ট্রেন চলাচলের কথা থাকলেও খালেদা জিয়ার জানাজার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে মেট্রোরেলের ট্রিপের সংখ্যা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।
১৪ মিনিট আগে
দেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে প্রকাশ্যে আপত্তিকর মন্তব্য করায় হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে মাওলানা মুখলিছুর রহমান (চিতল মুখলিছ) নামের এক ব্যক্তিকে গণপিটুনি দিয়েছে স্থানীয় জনতা। তিনি শেখ হাসিনাকে চিতল মাছ ও হিরো আলমকে নোয়া গাড়ি উপহার দিয়ে ‘চিতল মুখলিছ’ নামে পরিচিতি
১ ঘণ্টা আগে
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদিকে গুলি করে হত্যার মামলায় প্রধান আসামি ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খানকে ভারতে পালাতে সাহায্যকারী ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সিবিউন দিউ ও সঞ্জয় চিসিমকে তৃতীয় দফা রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধারের পর অস্ত্র মামলায় গ্রেপ্তার ফয়সাল নামে
১ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বিএনপির সদ্যপ্রয়াত চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নেওয়ার সুবিধার্থে আগামীকাল বুধবার মেট্রোরেলের ট্রিপের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) পরিচালক (প্রশাসন) এ কে এম খায়রুল আলমের সই করা নোটিশে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, যাত্রীসাধারণের যাতায়াত নির্বিঘ্ন রাখতে বিশেষ এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
উদ্যোগের বিষয়ে ডিএমটিসিএলের মহাব্যবস্থাপক (অপারেশন) মোহাম্মদ ইফতিখার হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, সরকার ৩১ ডিসেম্বর সাধারণ ছুটি ঘোষণা করায় ছুটির দিনের সময়সূচি অনুযায়ী ট্রেন চলাচলের কথা থাকলেও খালেদা জিয়ার জানাজার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে মেট্রোরেলের ট্রিপের সংখ্যা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।
তিনি বলেন, যাত্রীদের চাপ সামাল দিতে প্রয়োজন অনুযায়ী মেট্রোরেল সেবা সমন্বয় করা হবে। যাতায়াত স্বাভাবিক রাখতে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়েছে ডিএমটিসিএল।

বিএনপির সদ্যপ্রয়াত চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নেওয়ার সুবিধার্থে আগামীকাল বুধবার মেট্রোরেলের ট্রিপের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) পরিচালক (প্রশাসন) এ কে এম খায়রুল আলমের সই করা নোটিশে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, যাত্রীসাধারণের যাতায়াত নির্বিঘ্ন রাখতে বিশেষ এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
উদ্যোগের বিষয়ে ডিএমটিসিএলের মহাব্যবস্থাপক (অপারেশন) মোহাম্মদ ইফতিখার হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, সরকার ৩১ ডিসেম্বর সাধারণ ছুটি ঘোষণা করায় ছুটির দিনের সময়সূচি অনুযায়ী ট্রেন চলাচলের কথা থাকলেও খালেদা জিয়ার জানাজার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে মেট্রোরেলের ট্রিপের সংখ্যা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।
তিনি বলেন, যাত্রীদের চাপ সামাল দিতে প্রয়োজন অনুযায়ী মেট্রোরেল সেবা সমন্বয় করা হবে। যাতায়াত স্বাভাবিক রাখতে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়েছে ডিএমটিসিএল।

রাজধানীর ধানমন্ডিতে প্রায় দেড় যুগ আগে প্রতিষ্ঠিত হয় পপুলার মেডিকেল কলেজ। অভিযোগ রয়েছে, মৌলিক শর্তগুলো পূরণ না করলেও আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বছরের পর বছর এই চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়ে শিক্ষাবর্ষ নবায়ন ও আসন বৃদ্ধির অনুমোদন দিয়েছে সরকার। অথচ কলেজটি নিজস্ব জমি, অবকাঠামো, হাসপাতালে শয্যাসংখ্যাসহ ১০টির বেশি...
০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ থানায় পুলিশি হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগ এনে অজ্ঞাতনামা চার পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন ভুক্তভোগী ও ডাকাতি মামলার আসামি মো. খোকন (৩৯)। গত শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) তিনি ফরিদগঞ্জ থানায় মামলাটি করেন।
৬ মিনিট আগে
দেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে প্রকাশ্যে আপত্তিকর মন্তব্য করায় হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে মাওলানা মুখলিছুর রহমান (চিতল মুখলিছ) নামের এক ব্যক্তিকে গণপিটুনি দিয়েছে স্থানীয় জনতা। তিনি শেখ হাসিনাকে চিতল মাছ ও হিরো আলমকে নোয়া গাড়ি উপহার দিয়ে ‘চিতল মুখলিছ’ নামে পরিচিতি
১ ঘণ্টা আগে
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদিকে গুলি করে হত্যার মামলায় প্রধান আসামি ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খানকে ভারতে পালাতে সাহায্যকারী ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সিবিউন দিউ ও সঞ্জয় চিসিমকে তৃতীয় দফা রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধারের পর অস্ত্র মামলায় গ্রেপ্তার ফয়সাল নামে
১ ঘণ্টা আগেচুনারুঘাট (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি

দেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে প্রকাশ্যে আপত্তিকর মন্তব্য করায় হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে মাওলানা মুখলিছুর রহমান (চিতল মুখলিছ) নামের এক ব্যক্তিকে গণপিটুনি দিয়েছে স্থানীয় জনতা। তিনি শেখ হাসিনাকে চিতল মাছ ও হিরো আলমকে নোয়া গাড়ি উপহার দিয়ে ‘চিতল মুখলিছ’ নামে পরিচিতি পান। মুখলিছুর রহমান পরে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। আজ মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) বেলা ২টার দিকে চুনারুঘাট পৌর শহরের থানা রোডে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দুপুরে থানার গেট এলাকায় দাঁড়িয়ে মাওলানা মুখলিছুর রহমান বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ ও আপত্তিকর মন্তব্য করেন। বিষয়টি বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের কানে গেলে তাঁরা তাঁকে আটক করার চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে তিনি পালানোর চেষ্টা করলে উত্তেজিত জনতা তাঁকে ধরে মারধর করে। পরে স্থানীয় মুরব্বিদের হস্তক্ষেপে মাওলানা মুখলিছুর রহমান প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
যুবদল নেতা সাদ্দাম হোসেন বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করায় জনতা ক্ষুব্ধ হয়ে তাঁকে আটক করে গণপিটুনি দিয়েছে।
উপজেলা ছাত্রদলের সদস্যসচিব মারুফ আহমেদ বলেন, থানার গেট এলাকায় বসে তিনি কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করছিলেন। বিষয়টি জানাজানি হলে উত্তেজিত জনতা তাঁকে কিছু মারধর করে। পরে উপস্থিত মুরব্বিদের হস্তক্ষেপে মাওলানা মুখলিছুর রহমান প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
চুনারুঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যাওয়ার প্রস্তুতি নেয়। তবে পুলিশ পৌঁছানোর আগেই বিষয়টি মীমাংসা হয়ে যায়।

দেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে প্রকাশ্যে আপত্তিকর মন্তব্য করায় হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে মাওলানা মুখলিছুর রহমান (চিতল মুখলিছ) নামের এক ব্যক্তিকে গণপিটুনি দিয়েছে স্থানীয় জনতা। তিনি শেখ হাসিনাকে চিতল মাছ ও হিরো আলমকে নোয়া গাড়ি উপহার দিয়ে ‘চিতল মুখলিছ’ নামে পরিচিতি পান। মুখলিছুর রহমান পরে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। আজ মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) বেলা ২টার দিকে চুনারুঘাট পৌর শহরের থানা রোডে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দুপুরে থানার গেট এলাকায় দাঁড়িয়ে মাওলানা মুখলিছুর রহমান বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ ও আপত্তিকর মন্তব্য করেন। বিষয়টি বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের কানে গেলে তাঁরা তাঁকে আটক করার চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে তিনি পালানোর চেষ্টা করলে উত্তেজিত জনতা তাঁকে ধরে মারধর করে। পরে স্থানীয় মুরব্বিদের হস্তক্ষেপে মাওলানা মুখলিছুর রহমান প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
যুবদল নেতা সাদ্দাম হোসেন বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করায় জনতা ক্ষুব্ধ হয়ে তাঁকে আটক করে গণপিটুনি দিয়েছে।
উপজেলা ছাত্রদলের সদস্যসচিব মারুফ আহমেদ বলেন, থানার গেট এলাকায় বসে তিনি কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করছিলেন। বিষয়টি জানাজানি হলে উত্তেজিত জনতা তাঁকে কিছু মারধর করে। পরে উপস্থিত মুরব্বিদের হস্তক্ষেপে মাওলানা মুখলিছুর রহমান প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
চুনারুঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যাওয়ার প্রস্তুতি নেয়। তবে পুলিশ পৌঁছানোর আগেই বিষয়টি মীমাংসা হয়ে যায়।

রাজধানীর ধানমন্ডিতে প্রায় দেড় যুগ আগে প্রতিষ্ঠিত হয় পপুলার মেডিকেল কলেজ। অভিযোগ রয়েছে, মৌলিক শর্তগুলো পূরণ না করলেও আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বছরের পর বছর এই চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়ে শিক্ষাবর্ষ নবায়ন ও আসন বৃদ্ধির অনুমোদন দিয়েছে সরকার। অথচ কলেজটি নিজস্ব জমি, অবকাঠামো, হাসপাতালে শয্যাসংখ্যাসহ ১০টির বেশি...
০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ থানায় পুলিশি হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগ এনে অজ্ঞাতনামা চার পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন ভুক্তভোগী ও ডাকাতি মামলার আসামি মো. খোকন (৩৯)। গত শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) তিনি ফরিদগঞ্জ থানায় মামলাটি করেন।
৬ মিনিট আগে
উদ্যোগের বিষয়ে ডিএমটিসিএলের মহাব্যবস্থাপক (অপারেশন) মোহাম্মদ ইফতিখার হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, সরকার ৩১ ডিসেম্বর সাধারণ ছুটি ঘোষণা করায় ছুটির দিনের সময়সূচি অনুযায়ী ট্রেন চলাচলের কথা থাকলেও খালেদা জিয়ার জানাজার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে মেট্রোরেলের ট্রিপের সংখ্যা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।
১৪ মিনিট আগে
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদিকে গুলি করে হত্যার মামলায় প্রধান আসামি ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খানকে ভারতে পালাতে সাহায্যকারী ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সিবিউন দিউ ও সঞ্জয় চিসিমকে তৃতীয় দফা রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধারের পর অস্ত্র মামলায় গ্রেপ্তার ফয়সাল নামে
১ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদিকে গুলি করে হত্যার মামলায় প্রধান আসামি ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খানকে ভারতে পালাতে সাহায্যকারী ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সিবিউন দিউ ও সঞ্জয় চিসিমকে তৃতীয় দফা রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধারের পর অস্ত্র মামলায় গ্রেপ্তার ফয়সাল নামে একজনকে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জশিতা ইসলাম প্রত্যেককে তিন দিন করে রিমান্ডে নেওয়ার নির্দেশ দেন। এরপর গোয়েন্দা পুলিশ তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে নেন।
দুই আদিবাসী সিবিউন দিউ ও সঞ্জয় চিসিম এবং ফয়সালকে আজ কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। প্রত্যেকের সাত দিনের রিমান্ডে নেওয়ার পৃথক দুটি আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক ফয়সাল আহমেদ। শুনানি শেষে আদালত কারাগারে প্রত্যেকের তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
আদালতের অতিরিক্ত পিপি মুহাম্মদ শামসুদ্দোহা সুমন বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
২৬ ডিসেম্বর দ্বিতীয় দফা রিমান্ড শেষে সিবিউন ও সঞ্জয়কে কারাগারে পাঠানো হয়। ২১ ডিসেম্বর দুজনকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। ১৮ ডিসেম্বর তাঁদের তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়।
এর আগে ময়মনসিংহের ধোবাউড়া ও হালুয়াঘাট থেকে এই দুজনকে আটক করে ডিবি পুলিশ।
সিবিউন ও সঞ্জয়ের রিমান্ড আবেদনে বলা হয়েছে, সীমান্তে পারাপারকারী চক্রের হোতা জনৈক ফিলিপ নামক ব্যক্তির অবস্থান শনাক্ত, গ্রেপ্তার, ফিলিপ ব্যতীত আর কারও সংশ্লিষ্টতা রয়েছে কি না, ফিলিপের সঙ্গে কিলিং মিশনের কে বা কারা যোগাযোগ করেছে তা জানার জন্য, কিলিং মিশনের ইন্ধনদাতা এবং অর্থদাতাদের শনাক্ত করার জন্য সিবিউন দিউ ও সঞ্জয় চিসিমকে পুনরায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ডে নেওয়া প্রয়োজন।
অন্যদিকে ফয়সালের রিমান্ড আবেদন থেকে জানা যায়, ১৬ ডিসেম্বর র্যাব-১১-এর একটি দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নরসিংদী জেলার সদর থানাধীন তরুয়া এলাকার মোল্লার বাড়ির সামনে তরুয়ার বিলে অভিযান চালিয়ে ফয়সালকে আটক করে। অভিযানের সময় বিলের পানিতে ফেলে দেওয়া হাদি হত্যায় ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করা হয়। পরে তাঁকে অস্ত্র মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়।
তাঁর রিমান্ড আবেদনে বলা হয়েছে, হাদি হত্যা মামলা একটি চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলা। মামলার এজাহারনামীয় ও পলাতক আসামি ফয়সাল করিম মাসুদের স্ত্রী সাহেদা পারভীন সামিয়ার তথ্য অনুযায়ী, আসামি ফয়সালের দেখানো মতে নরসিংদী সদরের তরোয়া বিল থেকে ১৬ ডিসেম্বর রাত ১১টার দিকে পিস্তল ও গুলি উদ্ধার করে। নরসিংদী সদর মডেল থানায় অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করা হয়।
তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, ধারণা করা হচ্ছে, ফয়সালের তথ্যানুযায়ী উদ্ধার হওয়া অস্ত্র ও গুলি পল্টনে চাঞ্চল্যকর ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত হয়েছে। অস্ত্রের উৎস ও সরবরাহকারী সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ, হত্যার মোটিভ উদ্ধার, ইন্ধনদাতাদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তার, পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য ফয়সালকে সাত দিনের রিমান্ডে নেওয়া প্রয়োজন।
১২ ডিসেম্বর দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স-কালভার্ট রোডে বিজয়নগর এলাকায় রিকশায় করে নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর সময় শরিফ ওসমান বিন হাদিকে গুলি করা হয়। মোটরসাইকেল করে এসে রিকশার পাশ থেকে করা গুলিতে হাদি মাথায় গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হন। ঘটনার পরপর তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর নেওয়ার হলে সেখানে একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় ১৮ ডিসেম্বর মারা যান হাদি।
১৪ ডিসেম্বর রাতে ফয়সালকে আসামি করে পল্টন থানায় হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করেন ইনকিলাব মঞ্চের যুগ্ম সচিব আব্দুল্লাহ আল জাবের। হাদির মৃত্যুর পর তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মামলাটি হত্যা মামলায় রূপ নেয়।

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদিকে গুলি করে হত্যার মামলায় প্রধান আসামি ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খানকে ভারতে পালাতে সাহায্যকারী ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সিবিউন দিউ ও সঞ্জয় চিসিমকে তৃতীয় দফা রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধারের পর অস্ত্র মামলায় গ্রেপ্তার ফয়সাল নামে একজনকে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জশিতা ইসলাম প্রত্যেককে তিন দিন করে রিমান্ডে নেওয়ার নির্দেশ দেন। এরপর গোয়েন্দা পুলিশ তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে নেন।
দুই আদিবাসী সিবিউন দিউ ও সঞ্জয় চিসিম এবং ফয়সালকে আজ কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। প্রত্যেকের সাত দিনের রিমান্ডে নেওয়ার পৃথক দুটি আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক ফয়সাল আহমেদ। শুনানি শেষে আদালত কারাগারে প্রত্যেকের তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
আদালতের অতিরিক্ত পিপি মুহাম্মদ শামসুদ্দোহা সুমন বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
২৬ ডিসেম্বর দ্বিতীয় দফা রিমান্ড শেষে সিবিউন ও সঞ্জয়কে কারাগারে পাঠানো হয়। ২১ ডিসেম্বর দুজনকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। ১৮ ডিসেম্বর তাঁদের তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়।
এর আগে ময়মনসিংহের ধোবাউড়া ও হালুয়াঘাট থেকে এই দুজনকে আটক করে ডিবি পুলিশ।
সিবিউন ও সঞ্জয়ের রিমান্ড আবেদনে বলা হয়েছে, সীমান্তে পারাপারকারী চক্রের হোতা জনৈক ফিলিপ নামক ব্যক্তির অবস্থান শনাক্ত, গ্রেপ্তার, ফিলিপ ব্যতীত আর কারও সংশ্লিষ্টতা রয়েছে কি না, ফিলিপের সঙ্গে কিলিং মিশনের কে বা কারা যোগাযোগ করেছে তা জানার জন্য, কিলিং মিশনের ইন্ধনদাতা এবং অর্থদাতাদের শনাক্ত করার জন্য সিবিউন দিউ ও সঞ্জয় চিসিমকে পুনরায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ডে নেওয়া প্রয়োজন।
অন্যদিকে ফয়সালের রিমান্ড আবেদন থেকে জানা যায়, ১৬ ডিসেম্বর র্যাব-১১-এর একটি দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নরসিংদী জেলার সদর থানাধীন তরুয়া এলাকার মোল্লার বাড়ির সামনে তরুয়ার বিলে অভিযান চালিয়ে ফয়সালকে আটক করে। অভিযানের সময় বিলের পানিতে ফেলে দেওয়া হাদি হত্যায় ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করা হয়। পরে তাঁকে অস্ত্র মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়।
তাঁর রিমান্ড আবেদনে বলা হয়েছে, হাদি হত্যা মামলা একটি চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলা। মামলার এজাহারনামীয় ও পলাতক আসামি ফয়সাল করিম মাসুদের স্ত্রী সাহেদা পারভীন সামিয়ার তথ্য অনুযায়ী, আসামি ফয়সালের দেখানো মতে নরসিংদী সদরের তরোয়া বিল থেকে ১৬ ডিসেম্বর রাত ১১টার দিকে পিস্তল ও গুলি উদ্ধার করে। নরসিংদী সদর মডেল থানায় অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করা হয়।
তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, ধারণা করা হচ্ছে, ফয়সালের তথ্যানুযায়ী উদ্ধার হওয়া অস্ত্র ও গুলি পল্টনে চাঞ্চল্যকর ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত হয়েছে। অস্ত্রের উৎস ও সরবরাহকারী সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ, হত্যার মোটিভ উদ্ধার, ইন্ধনদাতাদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তার, পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য ফয়সালকে সাত দিনের রিমান্ডে নেওয়া প্রয়োজন।
১২ ডিসেম্বর দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স-কালভার্ট রোডে বিজয়নগর এলাকায় রিকশায় করে নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর সময় শরিফ ওসমান বিন হাদিকে গুলি করা হয়। মোটরসাইকেল করে এসে রিকশার পাশ থেকে করা গুলিতে হাদি মাথায় গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হন। ঘটনার পরপর তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর নেওয়ার হলে সেখানে একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় ১৮ ডিসেম্বর মারা যান হাদি।
১৪ ডিসেম্বর রাতে ফয়সালকে আসামি করে পল্টন থানায় হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করেন ইনকিলাব মঞ্চের যুগ্ম সচিব আব্দুল্লাহ আল জাবের। হাদির মৃত্যুর পর তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মামলাটি হত্যা মামলায় রূপ নেয়।

রাজধানীর ধানমন্ডিতে প্রায় দেড় যুগ আগে প্রতিষ্ঠিত হয় পপুলার মেডিকেল কলেজ। অভিযোগ রয়েছে, মৌলিক শর্তগুলো পূরণ না করলেও আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বছরের পর বছর এই চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়ে শিক্ষাবর্ষ নবায়ন ও আসন বৃদ্ধির অনুমোদন দিয়েছে সরকার। অথচ কলেজটি নিজস্ব জমি, অবকাঠামো, হাসপাতালে শয্যাসংখ্যাসহ ১০টির বেশি...
০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ থানায় পুলিশি হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগ এনে অজ্ঞাতনামা চার পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন ভুক্তভোগী ও ডাকাতি মামলার আসামি মো. খোকন (৩৯)। গত শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) তিনি ফরিদগঞ্জ থানায় মামলাটি করেন।
৬ মিনিট আগে
উদ্যোগের বিষয়ে ডিএমটিসিএলের মহাব্যবস্থাপক (অপারেশন) মোহাম্মদ ইফতিখার হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, সরকার ৩১ ডিসেম্বর সাধারণ ছুটি ঘোষণা করায় ছুটির দিনের সময়সূচি অনুযায়ী ট্রেন চলাচলের কথা থাকলেও খালেদা জিয়ার জানাজার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে মেট্রোরেলের ট্রিপের সংখ্যা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।
১৪ মিনিট আগে
দেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে প্রকাশ্যে আপত্তিকর মন্তব্য করায় হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে মাওলানা মুখলিছুর রহমান (চিতল মুখলিছ) নামের এক ব্যক্তিকে গণপিটুনি দিয়েছে স্থানীয় জনতা। তিনি শেখ হাসিনাকে চিতল মাছ ও হিরো আলমকে নোয়া গাড়ি উপহার দিয়ে ‘চিতল মুখলিছ’ নামে পরিচিতি
১ ঘণ্টা আগে