Ajker Patrika

অভিশ্রুতি বা বৃষ্টির মরদেহ হস্তান্তর নিয়ে জটিলতা কাটেনি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০২ মার্চ ২০২৪, ২২: ৩২
অভিশ্রুতি বা বৃষ্টির মরদেহ হস্তান্তর নিয়ে জটিলতা কাটেনি

রাজধানীর রমনার বেইলি রোডের বহুতল ভবনে অগ্নিকাণ্ডে নিহত অভিশ্রুতি শাস্ত্রী ওরফে বৃষ্টি খাতুনের পরিচয় ও মরদেহ হস্তান্তর নিয়ে জটিলতা কাটেনি। পরিচয় জটিলতা নিরসন না হওয়ায় আজ শনিবার পর্যন্ত তাঁর মরদেহ হস্তান্তর করতে পারেনি পুলিশ। তাঁর মরদেহ শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের মর্গে রাখা হয়েছে। ডিএনএ পরীক্ষার পর মরদেহ হস্তান্তর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রমনা থানা-পুলিশ।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার শাহ আলম মোহাম্মদ আখতারুল ইসলাম বলেন, অভিশ্রুতি শাস্ত্রী বা বৃষ্টি খাতুনের পরিচয় নিয়ে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। তাঁর জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ও জন্মনিবন্ধন সনদে বাবার দুই ধরনের নাম এসেছে। এ ছাড়া তাঁর আরও কিছু বিষয় পরিপূর্ণভাবে যাচাই না করে মরদেহ হস্তান্তর করা সম্ভব হবে না। 

তিনি বলেন, রমনা কালীমন্দিরের কর্তৃপক্ষ এবং কুষ্টিয়ার এক ব্যক্তি তাঁর মেয়ে বলে মরদেহ দাবি করেছেন। এ জন্য লাশের ময়নাতদন্তের পাশাপাশি ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এ ছাড়া মরদেহ দাবি করা স্বজনদেরও নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। 

গত বৃহস্পতিবার বেইলি রোডে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এই তরুণী নিহত হওয়ার পর গতকাল শুক্রবার কুষ্টিয়ার খোকসা থেকে শাবলুল আলম সবুজ নামে এক ব্যক্তি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে এসে অভিশ্রুতিকে বৃষ্টি খাতুন বলে শনাক্ত করেন এবং এই তরুণী তাঁর নিজের মেয়ে বলে দাবি করে মরদেহ নিতে চান। তিনি যে জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে আসেন, সেখানে ওই তরুণীর নাম বৃষ্টি খাতুন উল্লেখ রয়েছে। তবে তিনি আসার আগেই রমনা কালীমন্দিরের সভাপতি উৎপল সাহা মর্গে অভিশ্রুতিকে শনাক্ত করেন। তিনি এই তরুণীর নাম অভিশ্রুতি বলে জানান। তিনি পুলিশকে বলেন, অভিশ্রুতি ৯ মাস ধরে রমনা কালীমন্দিরে আসতেন। সনাতন ধর্মের অনুসারী। তিনি কুষ্টিয়ায় ছোটবেলায় দত্তক হয়ে ওই পরিবারে ছিলেন।

অভিশ্রুতিকে বৃষ্টি বলায় গতকাল শাবলুল আলম সবুজকে প্রতারক ভেবে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তিনি বোঝানোর চেষ্টা করেন, অভিশ্রুতি শাস্ত্রী তাঁর মেয়ে বৃষ্টি খাতুন। তিনি ওই তরুণীর প্রাথমিক কলেজ শিক্ষাজীবনের বিভিন্ন সনদ, রেজিস্ট্রেশন কার্ড ও প্রবেশপত্র দেখান। এমনকি জাতীয় পরিচয়পত্রও দেখান। তবে দুই পক্ষ মরদেহ দাবি করায় পুলিশ শাবলুল আলম সবুজ ও রমনা কালীমন্দির কর্তৃপক্ষকে লিখিত আবেদন করতে বলে। এরপর তারা লিখিত আবেদন করে। পুলিশ শাবলুল আলম সবুজের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করেছে।

অভিশ্রুতি বা বৃষ্টি খাতুনের মরদেহ নিতে চাওয়ার বিষয়ে যুক্তি দিয়ে রমনা কালীমন্দিরের সভাপতি উৎপল সাহা বলেন, ‘আমরা এই তরুণীকে অভিশ্রুতি নামেই চিনতাম। তিনি ৯ মাস ধরে আমাদের মন্দিরে সনাতন ধর্মীর অনুসারী হিসেবে পূজা করেছেন।’ 

তিনি জানিয়েছিলেন, ‘তাঁর বাড়ি ভারতের বেনারসে। ছোটবেলা তাঁর মা-বাবা সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান। এরপর দাদুর হাত ধরে কুষ্টিয়া আসেন। একটি বোর্ডিং স্কুলে ছিলেন। সেখান থেকে ওই পরিবারটি তাঁকে দত্তক নেয়, আমাদের কাছে তাই জানিয়েছিলেন অভিশ্রুতি। তাই আমরা তাঁর মরদেহ দাবি করেছি। তবে শাবলুল আলম সবুজের সঙ্গে তাঁর ডিএনএ ম্যাচ করলে আমাদের আর কোনো দাবি নেই।’ 

বৃষ্টি খাতুন ওরফে অভিশ্রুতি শাস্ত্রীর মরদেহ শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটের মর্গে রাখা হয়েছে। কুষ্টিয়ার খোকসায় বৃষ্টির গ্রামের বাড়ি বলে তাঁর বাবা পরিচয় দেওয়া শাবলুল আলম সবুজ বলেন, ‘এটা আমার মেয়ে, এখন এই বিপদেও আমাকে প্রমাণ করতে হচ্ছে। এর চেয়ে দুঃখ আর কী আছে।’

এদিকে বৃষ্টির ছোট বোন বর্ষা খাতুন বলেন, ‘অভিশ্রুতি বৃষ্টি নামে একটি ফেসবুকের ফেক আইডি চালাতেন বৃষ্টি। এ ছাড়া সে অন্য ধর্ম গ্রহণ করেছে—এমন কিছু এর আগে আমরা জানি নাই। তিন মাস আগেও বাড়ি এসেছিল। গত বৃহস্পতিবার দুপুরেও মায়ের সঙ্গে বৃষ্টির শেষবার মুঠো ফোনে কথা হয়।’

শাবলুল আলম সবুজের কাছ থেকে এবং এই তরুণীর আঙুলের ছাপ নিয়ে পুলিশ যেসব কাগজপত্র সংগ্রহ করেছে তাতে গরমিল দেখা গেছে। তাঁর জাতীয় পরিচয়পত্র, ইডেন কলেজে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষার প্রবেশপত্রে নাম বৃষ্টি খাতুন। কিন্তু তাঁর জন্মনিবন্ধন সনদ ও তৈরি করা চাকরির জীবনবৃত্তান্তে নিজের ও মা-বাবার নামে ভিন্নতা রয়েছে। 

পুলিশ জানিয়েছে, ২০২১ সালের ৬ জুলাই ইস্যু করা জাতীয় পরিচয়পত্রে নাম বৃষ্টি খাতুন হিসেবেই রয়েছে। সেখানে পিতার নাম সবুজ শেখ এবং মাতার নাম বিউটি বেগম। কলেজের প্রবেশপত্রেও তাঁর একই রকম তথ্য আছে। তবে ২০২২ সালের ২৩ অক্টোবর ইস্যু করা জন্মনিবন্ধন সনদে তাঁর নাম আছে অভিশ্রুতি, বাবার নাম লেখা হয়েছে মো. শাবরুল আলম এবং মায়ের নাম বিউটি বেগম। অন্যদিকে, চাকরির জীবনবৃত্তান্তে নিজের নাম অভিশ্রুতি শাস্ত্রী, বাবার নাম লিখেছেন শাবরুল আলম এবং মায়ের নাম অপর্ণা শাস্ত্রী। জন্মনিবন্ধন সনদ এবং জীবনবৃত্তান্তে জন্ম তারিখ ২০০০ সালের ২৫ ডিসেম্বর রয়েছে। তবে জাতীয় পরিচয়পত্রে তাঁর জন্ম তারিখ ২৫ ডিসেম্বর ১৯৯৮।

বৃষ্টি খাতুন ওরফে অভিশ্রুতি ঢাকায় দ্য রিপোর্ট ডট লাইভ নামে একটি নিউজ পোর্টালে সাংবাদিকতা করতেন। সম্প্রতি এই প্রতিষ্ঠানটি ছেড়ে কেস্টারটেক নামে একটি অনলাইন মাল্টিমিডিয়া প্রতিষ্ঠানে যোগ দেওয়ার কথা ছিল। তাঁর পরিচিত সহকর্মীরা অনেকেই তাঁকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখালেখি করেছেন। পরিচিতরা এ তথ্য জানিয়েছেন। 

শাবরুল আলম সবুজ বলেন, ‘যাকে আপনারা অভিশ্রুতি বলছেন, সে বৃষ্টি। সে আমার মেয়ে। তার সকল শিক্ষাজীবনের কাগজে এই নাম। এই ঘটনার পর তার মা সংজ্ঞাহীন। আমি আমার মেয়ের মরদেহ নিতে চাই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

লঞ্চ দুর্ঘটনা: তারেক রহমানের গণসংবর্ধনা থেকে ফিরছিলেন যাত্রীরা

ঝালকাঠি প্রতিনিধি
দুর্ঘটনায় দুমড়ে মুচড়ে গেছে লঞ্চ। ছবি: আজকের পত্রিকা
দুর্ঘটনায় দুমড়ে মুচড়ে গেছে লঞ্চ। ছবি: আজকের পত্রিকা

চাঁদপুরে মেঘনা নদীতে মধ্যরাতে দুই লঞ্চের মুখোমুখি সংঘর্ষে চারজনের মৃত্যু এবং অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় ঝালকাঠিতে একটি লঞ্চ জব্দ করা হয়েছে। সেই লঞ্চের চারজনকের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ।

এদিকে জানা গেছে, দুর্ঘটনা কবলিত লঞ্চটি ভাড়া করেছিলেন বিএনপির স্থানীয় নেতা। ঢাকায় তারেক রহমানের গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগা দিতে এসেছিলেন তাঁরা। গতকাল বৃহস্পতিবার গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠান শেষে তাঁর ফিরছিলেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আনুমানিক ২টার দিকে চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলা ও হরিণা এলাকার মাঝামাঝি স্থানে মেঘনা নদীতে ঘন কুয়াশার মধ্যে এ দুর্ঘটনা ঘটে। ভোলা থেকে ঢাকাগামী জাকির সম্রাট–৩ লঞ্চের সঙ্গে ঢাকা–বরিশাল রুটের অ্যাডভেঞ্চার–৯ লঞ্চের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই একজনসহ মোট চারজনের মৃত্যু হয়।

সদরঘাট নৌ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহাগ রানা জানান, হতাহতদের উদ্ধার করে ঢাকায় নেওয়ার পর নিহতের সংখ্যা চারজনে দাঁড়ায়। নিহতদের পরিচয় শনাক্ত ও আইনগত প্রক্রিয়া চলমান।

বিআইডব্লিউটিএ চাঁদপুর ট্রাফিক পরিদর্শক বাবু লাল বৈদ্য জানান, দুর্ঘটনার সময় নদীতে ঘন কুয়াশা থাকায় দৃশ্যমানতা প্রায় শূন্যে নেমে আসে। কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়ায় চালকের অবহেলা ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসিত জীবনের অবসান ঘটিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে ঢাকায় আয়োজিত গণসংবর্ধনা সভায় যোগ দিতে ঝালকাঠি–২ আসনের মনোনীত প্রার্থী ও সাবেক সংসদ সদস্য ইসরাত সুলতানা ইলেন ভুট্টো অ্যাডভেঞ্চার–৯ লঞ্চটি ভাড়া করেছিলেন।

ইসরাত সুলতানার নেতৃত্বে নেতা-কর্মীরা লঞ্চটিত করে গত ২৪ ডিসেম্বর রাতে ঝালকাঠি লঞ্চঘাট থেকে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে। ২৫ ডিসেম্বর ঢাকা থেকে ঝালকাঠির উদ্দেশে ফেরার পথে দুর্ঘটনাটি ঘটে।

নিজাম শিপিং লাইনস সূত্রে জানা গেছে, ইসরাত সুলতানা ইলেন ভুট্টো নেতা-কর্মীদের নিয়ে ঢাকায় যাওয়ার জন্য অ্যাডভেঞ্চার–৯ লঞ্চটি ভাড়া করেছিলেন।

ঝালকাঠি জেলা যুবদলের আহ্বায়ক শামীম তালুকদার জানান, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে তিনি ঝালকাঠি লঞ্চঘাটে ছুটে আসেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের নেতা-কর্মীরা সবাই সুস্থ রয়েছেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মেঘনায় দুর্ঘটনা: ঝালকাঠিতে অ্যাডভেঞ্চার–৯ লঞ্চ জব্দ, আটক ৪

ঝালকাঠি প্রতিনিধি
ঝালকাঠি লঞ্চ টার্মিনালে নোঙর করা অ্যাডভেঞ্চার–৯। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঝালকাঠি লঞ্চ টার্মিনালে নোঙর করা অ্যাডভেঞ্চার–৯। ছবি: আজকের পত্রিকা

চাঁদপুরের মেঘনা নদীতে মাঝরাতে দুই লঞ্চের মুখোমুখি সংঘর্ষে চারজন নিহতের ঘটনার পর ঝালকাঠিতে ‘অ্যাডভেঞ্চার–৯’ নামে একটি লঞ্চ জব্দ করেছে নৌ-পুলিশ। এ ঘটনায় প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চারজনকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

আজ শুক্রবার সকাল আনুমানিক ১০টার দিকে অ্যাডভেঞ্চার–৯ লঞ্চটি ঝালকাঠি লঞ্চ টার্মিনালে নোঙর করলে বরিশাল নৌ-পুলিশ ও ঝালকাঠি থানা-পুলিশের সদস্যরা লঞ্চটি জব্দ করেন।

বরিশাল নৌ-পুলিশের পুলিশ সুপার এস এম নাজমুল হক জানান, চাঁদপুরের মেঘনা নদীতে সংঘটিত ভয়াবহ দুর্ঘটনার খবর পাওয়ার পরপরই অ্যাডভেঞ্চার–৯ লঞ্চটির অবস্থান শনাক্ত করা হয়। পরবর্তীতে লঞ্চটি ঝালকাঠিতে পৌঁছালে সেটি জব্দ করা হয়। ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

অ্যাডভেঞ্চার–৯ লঞ্চের চারজন আটক। ছবি: আজকের পত্রিকা
অ্যাডভেঞ্চার–৯ লঞ্চের চারজন আটক। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঝালকাঠি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইমতিয়াজ মাহমুদ জানান, লঞ্চটি ঝালকাঠিতে নোঙর করার পর সারেং, সুকানি, সুপারভাইজার ও ইঞ্জিন চালক পালিয়ে যান। পরে চারজন কেবিন বয়কে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আনুমানিক ২টার দিকে চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলা ও হরিণা এলাকার মাঝামাঝি স্থানে মেঘনা নদীতে ঘন কুয়াশার মধ্যে ভোলা থেকে ঢাকাগামী জাকির সম্রাট–৩ লঞ্চের সঙ্গে ঢাকা–বরিশাল রুটের অ্যাডভেঞ্চার–৯ লঞ্চের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই একজনসহ মোট চারজনের মৃত্যু হয়। আহত হন আরও অন্তত ১৫ জন যাত্রী।

সদরঘাট নৌ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহাগ রানা জানান, হতাহতদের উদ্ধার করে ঢাকায় নেওয়ার পর নিহতের সংখ্যা চারজনে দাঁড়ায়। নিহতদের পরিচয় শনাক্ত ও আইনগত প্রক্রিয়া চলমান।

বিআইডব্লিউটিএ চাঁদপুর ট্রাফিক পরিদর্শক বাবু লাল বৈদ্য জানান, দুর্ঘটনার সময় নদীতে ঘন কুয়াশা থাকায় দৃশ্যমানতা প্রায় শূন্যে নেমে আসে। কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়ায় চালকের অবহেলা ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সখীপুরে নিখোঁজের ৭ ঘণ্টা পর বন থেকে উদ্ধার শিশুটি মারা গেছে

সখীপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি 
নিহত শিশু শামীম। ছবি: সংগৃহীত
নিহত শিশু শামীম। ছবি: সংগৃহীত

টাঙ্গাইলের সখীপুরে নিখোঁজের ৭ ঘণ্টা পর বন থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার হওয়া শিশু শামীম (১০) মারা গেছে। উদ্ধারের তিন দিন পর গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়। আজ শুক্রবার সকালে লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

নিহত ব্যক্তির মামা সাব্বির হোসেন ও সখীপুর থানা-পুলিশ মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। নিহত শামীম উপজেলার কালিয়ানপাড়া গ্রামের শাহিন আলমের ছেলে ও স্থানীয় কীর্তনখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।

নিহত শিশুর পরিবার ও স্থানীয় বাসিন্দা সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার দুপুর ১২টার দিকে শামীম বাড়ি থেকে বের হয়। দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও ফিরে না আসায় পরিবারের সদস্যরা সম্ভাব্য বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেন। একপর্যায়ে তাঁরা বাড়ির আশপাশের বনাঞ্চলে অনুসন্ধান চালান। পরে রাত ৮টার দিকে বাড়ি থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে একটি বন থেকে শামীমকে রক্তাক্ত ও অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। রাত ৯টার দিকে তাকে সখীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার ধানমন্ডিতে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল।

নিহত শামীমের মামা সাব্বির হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করেছিলাম শিয়ালের আক্রমণে এমন হয়েছে। কিন্তু হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকেরা জানান, এটি শেয়াল-কুকুরের আক্রমণের চিহ্ন নয়, শিশুটির মাথা ও শরীরের আঘাত করা হয়েছে।’

সখীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, নিহত শামীমের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। এ বিষয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দুমকীতে অটো-টমটম সংঘর্ষে নিহত ২, আহত ২

দুমকী (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
দুমড়েমুচড়ে যাওয়া গাড়ি। ছবি: আজকের পত্রিকা
দুমড়েমুচড়ে যাওয়া গাড়ি। ছবি: আজকের পত্রিকা

পটুয়াখালীর দুমকীতে অটোরিকশা ও সিমেন্টবাহী টমটমের সংঘর্ষে দুজন নিহত ও দুজন আহত হয়েছে। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে লেবুখালী-বাউফল মহাসড়কের রাজাখালী (স্থানীয় নাম পিছাখালী ব্রিজ) এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বগা থেকে আসা যাত্রীবাহী অটোরিকশা বিপরীত দিক থেকে আসা সিমেন্টবাহী টমটমের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে দুমড়েমুচড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলে ছয় বছরের রবিউল নিহত হন। আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে ৬০ বছর বয়সী ইব্রাহিম খানকে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। গুরুতর আহত সুমন সরদার (২৫) ও আব্দুল কাদেরকে (৫০) বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, আহত আব্দুল কাদেরের অবস্থা আশঙ্কাজনক। সুমনের একটি হাত সম্পূর্ণ ভেঙে গেছে। নিহত ও আহত ব্যক্তিদের বাড়ি বাউফল উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে।

দুমকী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সেলিম উদ্দীন জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে দুর্ঘটনাকবলিত অটোরিকশা ও টমটমটিকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির পরিবার অভিযোগ করলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত