Ajker Patrika

মিরপুরে ডাকাতি

তোমাদের যে কিছু করিনি, তা-ই ভাগ্য—ডাকাতির সময় দুই কিশোরীকে সাবেক সেনা কর্মকর্তা

আমানুর রহমান রনি, ঢাকা 
আপডেট : ০৮ আগস্ট ২০২৫, ১১: ৩৫
প্রতীকী ছবি, এআই দিয়ে তৈরি
প্রতীকী ছবি, এআই দিয়ে তৈরি

‘জিনসপত্র যা নিয়েছি, নিলাম; কোনো চিৎকার-চেঁচামেচি করবা না, তোমাদের যে কিছু করিনি, তা-ই ভাগ্য।’ রাজধানীর মিরপুর ডিওএইচএসের একটি বাসায় ডাকাতি করে বের হয়ে যাওয়ার সময় ডাকাত দলের নেতা ও সাবেক সেনা কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট (অব.) মোহাম্মদ ফিরজো ইফতেখার বাসায় থাকা দুই কিশোরীকে এভাবে হুমকি দেন বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী ভাড়াটিয়া হোসনে আরা চম্পা।

গত ২০ জুলাই বেলা ২টার দিকে পল্লবী থানার ডিওএইচএসের ৬ নম্বর অ্যাভিনিউর ১১ নম্বর ‘সাবের অ্যান্ড ডেইজি ড্রিম’ নামের বাড়ির ষষ্ঠ তলায় তাঁর ভাড়া ফ্ল্যাটে এই ডাকাতির ঘটনা ঘটে। বাড়িটির মালিক অবসরপ্রাপ্ত মেজর সাবের আলী। হোসনে আরা চম্পা চার মাস ধরে ওই ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকেন। তিনি ছাড়াও ফ্ল্যাটটিতে তাঁর ছেলে অহিদুল ইসলাম অহিদ (২৪), কিশোরী মেয়ে (১৭) ও কিশোরী গৃহকর্মী থাকে। ঘটনার দিন ২০ জুলাই দুপুরে হোসনে আরা চম্পা তাঁর অসুস্থ ছেলে অহিদুল ইসলাম অহিদকে নিয়ে ধানমন্ডির একটি হাসপাতালে ছিলেন। বাসায় ছিল তাঁর কিশোরী মেয়ে ও গৃহকর্মী।

সূত্রমতে, ঘটনার দিন বেলা ২টার দিকে বাড়ির সামনে একটি আকাশি রঙের প্রাইভেট কার এসে থামে। ডাকাত দলের সাত থেকে আটজন সদস্য সেখানে ছিলেন। বাড়ির প্রধান ফটকে নিরাপত্তাকর্মী মাসুম আলী ও তাঁর স্ত্রী রেশমা বেগম কেউ না কেউ সারাক্ষণ থাকেন। সেদিন ফটকে ছিলেন রেশমা বেগম, আর বাড়ির ছাদে এসির মিস্ত্রিরা কাজ করায় সেখানে ছিলেন নিরাপত্তাকর্মী মাসুম আলী।

রেশমা বেগম আজকের পত্রিকা বলেন, গেটটি খোলাই ছিল, কয়েকজন (পাঁচজন) দ্রুত ওপরে চলে যান, তাঁরা কিছু জানতেই চাইলেন না।

নিরাপত্তাকর্মী মাসুম আলী বলেন, ‘বাড়ির বাইরে একটি গাড়ি থাকায় গেট খোলা ছিল। ডাকাতেরা কিছু না বলেই ওপরে চলে যায়। আমি ছাদে ছিলাম, ছাদ থেকে কিছুক্ষণ পর নিচে নেমে স্ত্রীর কাছে জানতে পারি, ওপরে পাঁচজন লোক গিয়েছে, আমি সঙ্গে সঙ্গে সেখানে যাই, গিয়ে দেখতে পাই, ভাড়াটিয়ার মেয়ে ও গৃহকর্মী কাঁপছে আর কান্না করছে। তারা জানায়, সব নিয়ে গেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজন।’

তিনি সেদিন পুরো ফ্ল্যাটে তছনছ অবস্থায় দেখতে পেয়ে দৌড়ে নিচে নামেন। সবাইকে ঘটনাটি বলেন। তবে অনেকেই ভেবেছিলেন এটি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো তল্লাশি। মাত্র ১৫ মিনিটে ডাকাতি শেষ করে চলে যায় ডাকাতেরা।

এদিকে ডাকাতেরা ডাকাতি করে চলে যাওয়ার সময় একটি অপরিচিত নম্বর থেকে হোসনে আরা চম্পাকে ফোন করে বলা হয়, ‘আপনি কোথায় আছেন? আপনি তাড়াতাড়ি বাসায় আসেন, আমরা সরকারি লোক। আপনার বাসা ডিজিএফআই ও সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা তল্লাশি করবে।’ এই বলে ফোনটি কেটে দেন।

হোসনে আরা চম্পা পরে ওই নম্বরে আবার কল দেন। তিনি জানতে চান, কোনো সার্চ ওয়ারেন্ট আছে কি না, অপরিচিত ব্যক্তি বলেন, বাসায় এলেই জানতে পারবেন।

বিষয়টি হোসনে আরা চম্পার সন্দেহ হলে তিনি মোবাইল নম্বরটি ডিওএইচএসের সেনা কন্ট্রোল রুমে পাঠিয়ে দেন। পাশাপাশি ধানমন্ডি থেকে তিনি বাসায় আসেন। বাসায় এসে দেখতে পান, তাঁর পুরো ঘর এলোমেলো। ঘর থেকে গয়না, মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, প্রসাধনীসহ দামি সব জিনিস নিয়ে গেছে।

হোসনে আরা চম্পার কাছ থেকে খবর পেয়ে ডিওএইচএসের নিরাপত্তায় থাকা সেনাসদস্যরা প্রাইভেট কারসহ চারজনকে আটক করেন। অন্যরা পালিয়ে যান। আটক ব্যক্তিদের পরে পল্লবী থানায় হস্তান্তর করা হয়। এ ঘটনায় হোসনে আরা চম্পা বাদী হয়ে পল্লবী থানায় একটি মামলা করেন।

সেই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয় লেফটেন্যান্ট (অব.) মোহাম্মদ ফিরজো ইফতেখার, সাবেক করপোরাল মুকুল হোসেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সোর্স হারুন অর রশীদ ওরফে রাকিব হাওলাদার ও প্রাইভেট কারের চালক মোন্তাছির আহম্মেদ মাসুমকে। বর্তমানে সাত দিনের রিমান্ড শেষে কারাগারে রয়েছেন তাঁরা। তাঁরা ছাড়াও এই চক্রের আরও পলাতক দুজনকে খুঁজছে পুলিশ। তাঁরাও একটি বাহিনীর সাবেক সদস্য। মামলাটি তদন্ত করছেন পল্লবী থানার এসআই মাসুদুর রহমান।

হারুনের বিরুদ্ধে মাদক ও চুরি-ডাকাতির তিনটি মামলা রয়েছে। এ ছাড়া অন্য সদস্যরাও একাধিক ডাকাতির ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে জানিয়েছে পুলিশ। ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত গাড়ি থেকে ইয়াবাও উদ্ধার করেছে পুলিশ।

তদন্তসংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ডাকাত দলটির নেতৃত্বে রয়েছেন লেফটেন্যান্ট (অব.) মোহাম্মদ ফিরজো ইফতেখার। সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে কাজ করেন সাবেক করপোরাল মুকুল হোসেন। তাঁদের ডাকাতির জন্য বাড়ি ঠিক করে দিতেন রাকিব হাওলাদার। এরপর দলের সদস্যদের নিয়ে ফিরজো ইফতেখার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে তল্লাশির নামে বাড়িতে গিয়ে ডাকাতি করতেন। দলটিতে অবসর ও চাকরিচ্যুত বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যরা রয়েছেন।

সোর্স রাকিব হাওলাদারের সঙ্গে হোসনে আরা চম্পার ছেলে অহিদের সঙ্গে মিরপুর ১০ নম্বরে পরিচয় হয়। এরপর একদিন তিনি (রাকিব) বাসার নিচে এসেছিলেন। বাসার পুরো তথ্য তাঁর কাছে ছিল। এর কয়েক মাস পর তাঁরা ডাকাতি করতে আসেন। ডাকাতির সময় চক্রটি দুই কিশোরীকে ছুরি দিয়ে ভয় দেখিয়ে ছবিও তোলে।

হোসনে আরা চম্পা ডাকাতির ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বলেন, ডাকাতেরা ফ্ল্যাটে কলিং বেল দেয়, গৃহকর্মী দরজা খুলে বলতে চেয়েছিল, কেউ নেই বাসায়। এর মধ্যেই ধাক্কা দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে। তারা গৃহকর্মী ও তাঁর মেয়েকে একটি কক্ষে যেতে বলে, সব চাবি দিতে বলে। এরপর তারা লুটতরাজ চালায়। তারা অস্ত্র ও মাদক খোঁজার কথা বলে সব নিয়ে যায়। যাওয়ার সময় দুই মেয়েকে, কোনো চিৎকার-চেঁচামেচি না করতে হুমকি দিয়ে সাবেক সেনা কর্মকর্তা ইফতেখার বলেন, ‘যা নিলাম নিয়েছি, তোমাদের যে কোনো ক্ষতি করিনি, তা-ই ভাগ্য।’

সেদিনের ঘটনা নিয়ে বাড়ির মালিক অবসরপ্রাপ্ত মেজর সাবের আলী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ঘটনাটি যাঁরা ঘটিয়েছেন, তাঁরা গ্রেপ্তার হয়েছেন। এটা কেবল ডাকাতির ঘটনাই।

মামলা তদন্তের বিষয়ে ডিএমপির মিরপুর বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান বলেন, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের কাছ থেকে কিছু মালামাল উদ্ধার হয়েছে, আরও কিছু উদ্ধারে অন্যদের গ্রেপ্তারে কাজ করছে পুলিশ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আড়িয়াল খাঁ নদের তীর থেকে অটোরিকশাচালকের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার

নরসিংদী প্রতিনিধি
ঘটনাস্থলে স্থানীয়দের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঘটনাস্থলে স্থানীয়দের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা

নরসিংদীর বেলাব উপজেলার আড়িয়াল খাঁ নদের তীর থেকে আব্দুর রশিদ (৪০) নামের এক অটোরিকশাচালকের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার বিন্নাবাইদ ইউনিয়নের ভাওয়ালেরচর এলাকায় নদীর তীর থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।

আব্দুর রশিদ কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার লোহাজুরী ইউনিয়নের দক্ষিণ লোহাজুরী গ্রামের বাসিন্দা। পেশায় তিনি ছিলেন অটোরিকশাচালক; তবে নিয়মিত আড়িয়াল খাঁ নদে বড়শি দিয়ে মাছ শিকার করা ছিল তাঁর নেশা।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সকাল ৬টার দিকে ভাওয়ালেরচর এলাকায় নদীর পাড়ে রক্তাক্ত লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশে খবর দেন। লাশের পাশেই মোবাইল ফোন ও অটোরিকশাটি ছিল। পরে স্বজনেরা এসে লাশ শনাক্ত করেন। আব্দুর রশিদের মাথা ও শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রাথমিকভাবে পুলিশ মনে করছে, তিনি দুষ্কৃতকারীর হামলার শিকার হয়েছেন।

নিহত ব্যক্তির ভাই কাজল মিয়া বলেন, ‘প্রতিদিন বিকেল থেকে রাত ১১-১২টা পর্যন্ত অটোরিকশা চালিয়ে তারপর নদীর পাড়ে বসে মাছ শিকার করে বাড়ি ফিরত ভাই। কিন্তু গতকাল রাতে আর বাড়ি ফেরেনি। সকালে খবর পেয়ে নদীর পাড়ে এসে ভাইয়ের মরদেহ দেখতে পাই।’

নিহত ব্যক্তির ছেলে হৃদয় বলেন, ‘রাতে বাড়ি না ফেরায় কল দিলে ফোন বন্ধ পাই। সকালে খবর শুনে নদীর পাড়ে এসে বাবার মরদেহ, মোবাইল ও অটোরিকশা পড়ে থাকতে দেখি।’

বেলাব থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নাসির উদ্দিন বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। বিষয়টি পিবিআইকে জানানো হয়েছে। ঘটনাটি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে। আইনগত প্রক্রিয়া চলমান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৬৭ বছর পর রামেক হাসপাতালে মানসিক রোগীদের জন্য পূর্ণাঙ্গ ওয়ার্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

অবশেষে ৬৮ বছরে পা দিতে চলা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে মানসিক রোগীদের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ মনোরোগ ওয়ার্ড চালু হলো। হাসপাতালটির বহির্বিভাগে প্রতিদিনই উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানসিক রোগী চিকিৎসা নিতে এলেও ভর্তির সুযোগ ছিল না। গুরুতর রোগীদের কিছু ক্ষেত্রে মেডিসিন বিভাগে রাখা হলেও, পূর্ণাঙ্গ ওয়ার্ডের অভাবে এতদিন অনেককেই ফিরিয়ে দিতে হতো।

হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার ৬৭ বছর পর এই প্রথম ২৫ শয্যার একটি সুসজ্জিত মনোরোগ ওয়ার্ড চালু করা হয়েছে। হাসপাতালটির পুরাতন আইসিইউ ভবনে এই নতুন ওয়ার্ডটি গড়ে তোলা হয়েছে।

এই ওয়ার্ডে রোগী ভর্তির জন্য নির্দিষ্ট বিন্যাস রাখা হয়েছে। এর মধ্যে পুরুষদের জন্য ১০টি, নারীদের জন্য ৭ টি, শিশু-কিশোরদের জন্য ৫টি এবং উচ্চ পর্যবেক্ষণের জন্য ৩টি শয্যা সংরক্ষিত রয়েছে। এ ছাড়া রোগীদের চিকিৎসার সুবিধার জন্য থেরাপি ও কাউন্সেলিং রুমসহ আধুনিক সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ওয়ার্ডের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মোস্তফা আলী।

এই ওয়ার্ডটি চালুর পেছনে সবচেয়ে বড় কারণ ছিল কলেজের স্বীকৃতি বজায় রাখা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আগামী মার্চ মাসেই ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন ফর মেডিকেল এডুকেশন (ডব্লিউএফএমই) থেকে একটি প্রতিনিধি দল রাজশাহী মেডিকেল কলেজ পরিদর্শনে আসবে। পরিদর্শনকালে মনোরোগ বিভাগের ওয়ার্ড না পেলে কলেজের পয়েন্ট কমে যাওয়ার এবং অ্যাক্রিডিটেশনে বড় ধরনের সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা ছিল। এতে করে এই কলেজের শিক্ষার্থীদের দেশের বাইরে উচ্চশিক্ষা বা পড়াশোনা করার সুযোগ কমে যেত। এ ছাড়া এফসিপিএস এবং ডিপ্লোমা কোর্সের শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণের জন্যও এমন একটি ওয়ার্ড জরুরি ছিল।

কলেজ কর্তৃপক্ষের অনুরোধ শুনে সদ্যবিদায়ী পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফএম শামীম আহাম্মদ দ্রুত এই ওয়ার্ড চালুর উদ্যোগ নেন এবং গত বুধবার এটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনের সময় তাঁর সঙ্গে নতুন পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পি কে এম মাসুদ-উল-ইসলামসহ মনোরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা উপস্থিত ছিলেন।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফএম শামীম আহাম্মদ এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘উত্তরবঙ্গের সবচেয়ে বড় এই হাসপাতালে যে ৬৭ বছরেও মানসিক রোগীদের জন্য ওয়ার্ড চালু হয়নি, এটি সত্যিই অবাক হওয়ার মতো বিষয়। আমরা প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে এটি চালু করেছি। এখন থেকে এ অঞ্চলের মানসিক রোগীরা হাসপাতালে ভর্তি থেকেও উন্নত চিকিৎসা নিতে পারবেন।’

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফএম শামীম আহাম্মদ ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি রামেক হাসপাতালের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তাঁর উদ্যোগেগত ২৩ অক্টোবর শুধু সাপে কাটা রোগীদের জন্য বিশেষায়িত ওয়ার্ড চালু করা হয়।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই বিশেষায়িত ওয়ার্ড চালুর পর থেকে এখন পর্যন্ত রামেক হাসপাতালে একজনও সাপে কাটা রোগীর মৃত্যু হয়নি, যেখানে আগে প্রায় প্রতিদিনই এই রোগে মৃত্যুর ঘটনা ঘটতো। গতকাল বৃহস্পতিবার তিনি নতুন পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পি কে এম মাসুদ-উল-ইসলামের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাজমিস্ত্রির বাড়ি থেকে অস্ত্র-গুলি উদ্ধার

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
অভিযানে পাওয়া অস্ত্রসামগ্রী। ছবি: আজকের পত্রিকা
অভিযানে পাওয়া অস্ত্রসামগ্রী। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায় সোহাগ হোসেন নামের এক রাজমিস্ত্রির বাড়িতে অভিযান চালিয়ে দুটি পিস্তল ও একটি ওয়ান শুটারগান উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ওসমানপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ওসমানপুর কলপাড়া গ্রামে এই অভিযান চালান সেনাসদস্যরা। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় খোকসা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোশাররফ হোসেন আজকের পত্রিকাকে এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ক্যাপ্টেন মেহেদীর নেতৃত্বে কুষ্টিয়া সেনাক্যাম্পের রওশন আরা রেজিমেন্ট আর্টিলারি ইউনিটের একটি দল ওসমানপুর গ্রামের সোহাগ হোসেন নামের এক যুবকের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় বাড়ি তল্লাশি করে দুটি পিস্তল, একটি ওয়ান শুটারগান, গুলি, দেশীয় চাকু ও হাঁসুয়া পাওয়া যায়। তবে অভিযানে কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। সোহাগ হোসেন পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। তাঁর বাবার নাম আশরাফ হোসেন।

পুলিশ পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন বলেন, সেনাবাহিনীর অভিযানে উদ্ধার করা অস্ত্র থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চাঁদপুরে নতুন ভোটারদের নিয়ে ‘নির্বাচনী অলিম্পিয়াড’

চাঁদপুর প্রতিনিধি
চাঁদপুর সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে নির্বাচনী অলিম্পিয়াডের আয়োজন করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
চাঁদপুর সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে নির্বাচনী অলিম্পিয়াডের আয়োজন করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

‘গণতন্ত্র শক্তিশালীকরণ’ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে চাঁদপুরে শতাধিক নতুন ভোটারের অংশগ্রহণে ‘নির্বাচনী অলিম্পিয়াড’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে চাঁদপুর সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে দ্য হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশের আয়োজনে এবং সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) চাঁদপুর জেলা কমিটির সহযোগিতায় অনুষ্ঠানটি হয়।

আজ সকাল সাড়ে ৯টায় চাঁদপুর সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে জাতীয় সংগীত পরিবেশন ও বেলুন উড়িয়ে নির্বাচনী অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন কলেজের উপাধ্যক্ষ প্রফেসর মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান মিয়া। নতুন ভোটারদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘এই অংশগ্রহণের মাধ্যমে নির্বাচনী আচরণবিধি, গণতন্ত্রের মূল্যবোধ, স্বচ্ছতা, জবাবদিহি, সুশাসন ইত্যাদি সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার সুযোগ হয়েছে। সুজনের সহযোগিতায় এই আয়োজন অবশ্যই অংশগ্রহণকারীদের অনেক সমৃদ্ধ করবে এবং সচেতন নাগরিক তৈরি হবে।’

পরে কলেজের অডিটরিয়ামে ৫০টি এমসিকিউ পদ্ধতির প্রশ্নের মাধ্যমে ৩০ মিনিটের পরীক্ষা হয়। অংশগ্রহণকারীদের মধ্য থেকে সর্বোচ্চ নম্বরপ্রাপ্ত ১০ জনকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। তাঁদের মধ্য থেকে প্রথম থেকে তৃতীয় স্থান অর্জনকারী তিনজন জাতীয় নির্বাচনী অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণ করার সুযোগ পাবেন। পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের সনদ দেওয়া হয়।

পরীক্ষা শেষে সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য ও বিজয়ীদের হাতে সনদ তুলে দেন চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. নাজমুল ইসলাম সরকার। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সুজন চাঁদপুরের সভাপতি অধ্যক্ষ মোশারফ হোসেন। সঞ্চালনায় ছিলেন সুজনের আঞ্চলিক সমন্বয়ক নাছির উদ্দিন।

সুজন চাঁদপুর জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক রহিব বাদশা, শিক্ষক ওমর ফারুক, সংগঠক সালাউদ্দিন, কর আইনজীবী আব্দুল্লাহ আল ফারুক, সাংবাদিক আলম পলাশ, জাকির হোসেন, শোভন আল-ইমরান, মোরশেদ আলম রোকন, মো. মাসুদ আলম, শরীফুল ইসলামসহ সুজন জেলা কমিটির সদস্যরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত