Ajker Patrika

রাজধানীতে সহিংসতায় নিহত ১১ 

ঢামেক প্রতিবেদক ও উত্তরা প্রতিনিধি
রাজধানীতে সহিংসতায় নিহত ১১ 

সরকার পতনের এক দফা দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা অসহযোগ আন্দোলনের প্রথম দিনে আজ রোববার সহিংসতায় রাজধানী ঢাকায় ১১ জন নিহত হয়েছেন। 

ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে মোট সাতটি মরদেহ আনা হয়। এর মধ্যে চারটি মরদেহ নথিভুক্ত করা হয় এবং তিনটি মরদেহ নথিভুক্তর আগেই বিক্ষোভকারীরা নিয়ে চলে যান। 

ঢামেক পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. বাচ্চু মিয়া বলেন, চারটি মরদেহ নথিভুক্ত করা হয়েছে। আহত ২৩৪ জন চিকিৎসা নিতে আসেন, এর মধ্যে ৬৭ জন ভর্তি রয়েছে। 

ঢামেকে নথিভুক্ত চারজনের তিনজনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। তাঁরা হলেন—জিগাতলায় গুলিবিদ্ধ আব্দুল্লাহ সিদ্দিকি (২২) ও অজ্ঞাত (১৮), ফার্মগেটে গুলিবিদ্ধ তাহেদুল ইসলাম (২২) এবং কারওয়ান বাজারে গুলিবিদ্ধ রমিজুদ্দিন রওফ (২৪)। এছাড়া বাকি তিন জনের নাম জানা যায়নি। তাঁদের বয়স আনুমানিক ১৪ থেকে ২৫ এর মধ্যে। তাঁরা সকলেই রাজধানীতে গুলিবিদ্ধ হন। 

এদিকে রাজধানীর উত্তরায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সংঘর্ষে ঢাকা-১৮ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মোহাম্মদ হাবিব হাসানের চাচাতো ভাই ও ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সদস্য ইঞ্জিয়ার মো. আনোয়ারুল ইসলাম (৬২)-সহ চারজন নিহত হয়েছেন। এ সময় সাংবাদিকসহ অন্তত অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন। 

নিহতরা হলেন—উত্তরা ১ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার আনোয়ারুল ইসলাম, দক্ষিণখানের ৪৮ নং ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুস সাত্তার এবং অজ্ঞাত দুই যুবক। 
 
ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের উত্তরার রাজলক্ষ্মী থেকে বিএনএস সেন্টার পর্যন্ত সড়কজুড়ে বেলা ১১টার দিকে অবস্থান নেন আন্দোলনকারীরা। এতে কয়েক হাজার শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন। 

পরবর্তীতে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উত্তরার আজমপুরে পুলিশের পাশ থেকে আওয়ামী লীগ ও আওয়ামী অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা ছাত্রদের বাধা দিলে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া শুরু হয়। এ গুলি ছুড়তেও দেখা যায়। পরে আন্দোলনকারীরা তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। 

উভয় পক্ষের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার পর পরই উত্তরার আজমপুরের রাজউক কর্মাশিয়াল কমপ্লেক্সের নিচে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আজমপুরের রাজউক কর্মাশিয়াল মার্কেটের নিচ তলার ঢাকা মেডিসিন কর্ণারের নিচে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় নিহত হয়ে রাস্তায় এক যুবককে পড়ে থাকতে দেখা যায়। তবে তাঁর পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি। সেখানে থাকা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা দাবি করে বলেন, ‘আজমপুরে আসার পরপরই আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা আমাদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে। সেখানে আমাদের দুই ছাত্র গুলিবিদ্ধ হয়ে পড়ে যায়। পরে দুজনের মধ্যে একজন ঘটনাস্থলেই মারা যায়। আরেকজনকে হাসপাতালে পাঠানো হয়।’ 

নিহতের বিষয়ে ঘটনাস্থলে কর্তব্যরত গোয়েন্দা পুলিশের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা গুলি করে। তাঁদের সঙ্গে ক্ষমতাসীন দলের অন্যান্য নেতা-কর্মীরাও রয়েছে। গুলিতে ওই যুবক নিহত হয়েছে।’ 

এদিকে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের দাবি, ‘আমরা শিক্ষার্থীদের প্রতিহত করার চেষ্টা করলে তাঁদের সঙ্গে থাকা জামায়াতের নেতা-কর্মীরা আমাদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় ইঞ্জিনিয়ার আনোয়ারুল ইসলাম নিহত হন।’ 

তাঁরা বলেন, ‘হামলার পর আমাদের নেতা-কর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে গেলে গাড়িতে করে চলে যাওয়ার চেষ্টা করেন দক্ষিণখান ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা এস এম তোফাজ্জল হোসেন। তখন তাঁর সঙ্গে ছিলেন দক্ষিণখানের ৪৮ নং ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুস সাত্তার। চলে যাওয়ার সময় দুপুর দেড়টার দিকে বিএনএস সেন্টার এলাকায় ছাত্রদের সঙ্গে থাকা জামায়াত-শিবিরের লোকজন হামলা চালায়। হামলায় তোফাজ্জল হোসেন আহত হলেও মারা গেছে তাঁর সঙ্গে থাকা আব্দুস সাত্তার।’ 

নিহত ইঞ্জিনিয়ার আনোয়ারুল ইসলামের ছোট ভাই ও উত্তরা পশ্চিম থানা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি আলাউদ্দিন আল সোহেল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ইঞ্জিয়ার আনোয়ারুল ইসলাম ভাইয়ের হাত-পায়ের রগ ও কান কেটে দিয়েছে জামায়াত-শিবিরের লোকজন। এছাড়াও তাঁর বুকের ডান পাশে দুটি গুলি করে নৃসংশভাবে হত্যা করা হয়েছে।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘দেড়টার দিকে বিএনএস সেন্টার এলাকায় দক্ষিণখান ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান এস এম তোফাজ্জল হোসেনের ওপর হামলা করে দুষ্কৃতকারীরা। এ সময় তিনি আহত হন এবং তাঁর সঙ্গে থাকা দক্ষিণখানের ৪৮ নং ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুস সাত্তার নিহত হন।’ 

আলাউদ্দিন আল সোহেল বলেন, ‘আমরা সাবেক এমপি ও ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মোহাম্মদ হাবিব হাসানের নেতৃত্বে আজমপুরে ছিলাম। আন্দোলনকারীরা যখন আজমপুরের দিকে আসে তখন আমরা প্রতিহত করার চেষ্টা করি। তখন জামায়াত-শিবিরের লোকজন আমাদের ওপর হামলা করলে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।’ 

স্থানীয় বাসিন্দা মিজানুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘রাজলক্ষ্মীর একটি ব্যাংক থেকে টাকা তুলে রিকশা দিয়ে বাসায় যাওয়ার পথে আজমপুর এলাকার ইঞ্জিনিয়ার আনোয়ার ভাইয়ের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। পরে তাঁকে ক্রিসেন্ট হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। উত্তরার আওয়ামী লীগের রাজনীতির প্রতিকৃত, বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক এবং নিজের সম্পদ বিক্রি করে রাজনীতি করে যাওয়া নেতাকে হত্যাকারীদের কোনো ভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না।’ 

উত্তরা ক্রিসেন্ট হাসপাতালের পরিচালক (প্রশাসন) কমান্ডার মো. নাজমুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ইঞ্জিনিয়ার আনোয়ারকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল। তখন তাঁর শরীর থেকে রক্ত ঝরছিল। তখন আমরা মৃত ঘোষণা করলে স্বজনেরা তাঁকে নিয়ে যান।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ১০ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছি। এর মধ্যে একজন রাবার বুলেটে আহত হয়েছিল। বাকিদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত ছিল। আহতদের মধ্যে ছাত্র, পথচারী ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীও ছিল।’

উত্তরা আধুনিক মেডিকেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তৌহিদুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘১৩ জন আহত অবস্থায় আসেন। এর মধ্যে ১২ জন গুলিবিদ্ধ এবং একজন জখম। মাথায় গুলিবিদ্ধ একজনকে নিউরো সায়েন্সে হাসপাতালে পাঠানো হলে তাঁর মৃত্যু হয়। এছাড়া একজনের কিডনির এক পাশে গুলি লেগে আরেকদিকে বেরিয়ে যায়। তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’ 

রাজউক উত্তরা মডেল কলেজের অস্থায়ী মেডিকেল ক্যাম্পে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া শহীদ মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী সিয়াম আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা দুপুর পর্যন্ত ১০-১২ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছি। এদের মধ্যে দুজনের অবস্থা গুরুতর ছিল। তাঁদের উন্নত চিকিৎসার জন্য কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’ 

অপরদিকে উত্তরার আরএমসি হাসপাতালের সিআরও মো. আনোয়ার হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘অন্তত ১৫-২০ জনকে আমরা প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছি।’ 

এদিকে বিএনএস সেন্টারের সামনের এলাকায় সংবাদ সংগ্রহকালে আন্দোলনকারীদের হামলার শিকার হন এটিএন নিউজের রিপোর্টার সাব্বির আহমেদ ও ক্যামেরাম্যান মারুফ আল মুকিত। 

সাব্বির আহমেদ বলেন, ‘আন্দোলনকারীদের কিছু ছেলেপেলে আমাদের বলছিল ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা আমাদেরকে গুলি করছে। আপনারা কিছু বলেন না কেন, কিছু করেন না কেন? তখনই ভূয়া ভূয়া বলে আমাদের ওপর লোহার রড, লাঠি দিয়ে হামলা চালায়। তখন আবার আন্দোলনকারীদের কিছু এসে আমাদেরকে রক্ষা করে এক সাইড করে দেয়।’ 

আন্দোলনরত আইইউবিএটি বিশ্ববিদ্যালয়, উত্তরা হাইস্কুল, রাজউক উত্তরা মডেল কলেজের শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, ‘আজমপুর রেলগেট এলাকায় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা পিস্তল, শর্টগান, চাপাতি, চাকু, ছুরি, লোহার রড নিয়ে আমাদের ওপর হামলা চালাচ্ছে। তাঁদের করা গুলিতে আমাদের তিন চারজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। আহতদেরকে বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’ 

এছাড়াও বেশ কিছু শিক্ষার্থী, পথচারী ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা আহত হয়ে উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যেতে দেখা যায়। 

এদিকে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ডিএমপির উত্তরা পূর্ব থানার থামনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন থাকতে দেখা যায়। সেখানে কর্তব্যরত পুলিশ কর্মকর্তারা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা আমাদের থানা নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছি। ছাত্ররা তাঁদের আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। আমাদের ওপর, আমাদের থানা, গাড়ির ওপর হামলা না হলে আমরা কোনো অ্যাকশনে যাবো না।’ 

গুলির বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএমপির উত্তরা পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা পুলিশ কোনো গুলি ছুড়িনি। গুলিতো দূরের কথা টিয়ারশেল, সাইন্ড গ্রেনেডও মারা হয়নি।’ 

ওসি শাহ আলম বলেন, ‘আমরা আন্দোলরত ছাত্রদের ওপর কোনো অ্যাকশনে যাওয়াতো দূরের কথা, তাঁদের সঙ্গে কোনো উচ্চবাচ্যও করিনি। তাঁরা তাঁদের মতো আন্দোলন করছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘কোম্পানির লোকেরাই আমার ভাইকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে’

আমি লজ্জিত, নিজেকে মাটিতে পুঁতে দিতে ইচ্ছে করছে—ফেসবুকে প্রেস সচিব

তাহলে কি বাংলাদেশ-ভারত ফাইনাল

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার সম্পাদকের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার ফোনালাপ

গণমাধ্যমে হামলা ও ময়মনসিংহে নৃশংসতায় জড়িতদের ছাড় দেওয়া হবে না, সরকারের বিবৃতি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৭ ঘণ্টা পর ঝালকাঠির অবরোধ প্রত্যাহার, যান চলাচল স্বাভাবিক

ঝালকাঠি প্রতিনিধি  
বরিশাল–খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝালকাঠি অংশে অবরোধ সাত ঘণ্টা পর প্রত্যাহার করে নিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
বরিশাল–খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝালকাঠি অংশে অবরোধ সাত ঘণ্টা পর প্রত্যাহার করে নিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

ইনকিলাব মঞ্চের প্রতিষ্ঠাতা ও মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদিকে হত্যার প্রতিবাদে এবং খুনিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে তাঁর নিজ জেলা ঝালকাঠিতে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে ছাত্র-জনতা। সাত ঘণ্টা পর পুলিশের অনুরোধে আজ শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে অবরোধ প্রত্যাহার করা হলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

আজ জুমার নামাজ শেষে বেলা আড়াইটার দিকে বরিশাল–খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝালকাঠি কলেজ মোড় এলাকায় অবরোধ শুরু করেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ। অবরোধ চলাকালে মহাসড়কের উভয় পাশে বিপুলসংখ্যক যানবাহন আটকে পড়ে। ফলে যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। তবে রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিস, জরুরি ওষুধ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় কাঁচামাল বহনকারী যান চলাচলের সুযোগ দেওয়া হয়।

অবরোধ কর্মসূচিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, গণঅধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন। এ সময় মহাসড়কে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করা হয়।

বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য দেন এনসিপির ঝালকাঠি জেলা আহ্বায়ক মাইনুল ইসলাম মান্না, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঝালকাঠি জেলা আহ্বায়ক আল তৌফিক লিখন, যুগ্ম আহ্বায়ক ইয়াসিন ফেরদৌস ইফতি, সদস্যসচিব রাইয়ান বিন কামাল, গণঅধিকার পরিষদ ঝালকাঠি জেলা যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ঝালকাঠি-২ আসনের মনোনীত প্রার্থী মাহমুদুল ইসলাম সাগরসহ অন্য নেতারা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঝালকাঠি জেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ইয়াসিন ফেরদৌস ইফতি বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের একজন গুরুত্বপূর্ণ সহযোদ্ধাকে দুর্বৃত্তরা গুলি করে হত্যা করেছে। তিনি সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন। হামলাকারীদের ইন্টারপোলের মাধ্যমে দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। তা না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

ঝালকাঠি সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) বেলায়েত হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, বেলা আড়াইটায় অবরোধ শুরু হওয়ায় বরিশাল–খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কে ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনা করে পরিস্থিতি শান্ত করা হলে তাঁরা রাত সাড়ে ৯টার দিকে অবরোধ প্রত্যাহারে সম্মত হন। পরে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘কোম্পানির লোকেরাই আমার ভাইকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে’

আমি লজ্জিত, নিজেকে মাটিতে পুঁতে দিতে ইচ্ছে করছে—ফেসবুকে প্রেস সচিব

তাহলে কি বাংলাদেশ-ভারত ফাইনাল

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার সম্পাদকের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার ফোনালাপ

গণমাধ্যমে হামলা ও ময়মনসিংহে নৃশংসতায় জড়িতদের ছাড় দেওয়া হবে না, সরকারের বিবৃতি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সাবেক নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ ও সাবেক মেয়রের বাড়িতে আগুন

দিনাজপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ৪৪
সাবেক প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও সেতাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র আসলাম হোসেনের বোচাগঞ্জের বাড়িতে আগুন দিয়েছেন একদল লোক। ছবি: আজকের পত্রিকা
সাবেক প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও সেতাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র আসলাম হোসেনের বোচাগঞ্জের বাড়িতে আগুন দিয়েছেন একদল লোক। ছবি: আজকের পত্রিকা

সাবেক নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও সেতাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র আসলাম হোসেনের বোচাগঞ্জের বাড়িতে আগুন দিয়েছে একদল লোক। আজ শুক্রবার রাতে দুজনের বাড়িতে আগুন লাগার সংবাদ পেয়ে বোচাগঞ্জ থানা-পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা সেখানে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

স্থানীয় জনতা ও বোচাগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও সেতাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র আসলাম হোসেনের বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়। তবে কারা আগুন দিয়েছে, এ বিষয়ে বিস্তারিত জানা যায়নি।

বোচাগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের সাব-অফিসার শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘রাত সোয়া ৮টার দিকে সাবেক মেয়র আসলামের বাড়িতে আগুন লাগার খবর পেয়ে আমরা সেখানে পৌঁছাই। বর্তমানে আগুন নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা হয়েছে।’

এ ছাড়া খালিদ মাহমুদের বাড়ির আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে জানার জন্য বোচাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও কোনো সাড়া মেলেনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘কোম্পানির লোকেরাই আমার ভাইকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে’

আমি লজ্জিত, নিজেকে মাটিতে পুঁতে দিতে ইচ্ছে করছে—ফেসবুকে প্রেস সচিব

তাহলে কি বাংলাদেশ-ভারত ফাইনাল

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার সম্পাদকের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার ফোনালাপ

গণমাধ্যমে হামলা ও ময়মনসিংহে নৃশংসতায় জড়িতদের ছাড় দেওয়া হবে না, সরকারের বিবৃতি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ময়মনসিংহে যুবককে পিটিয়ে হত্যা: অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে মামলা

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ১৮
দিপু চন্দ্র দাস। ছবি: সংগৃহীত
দিপু চন্দ্র দাস। ছবি: সংগৃহীত

ময়মনসিংহের ভালুকায় দিপু চন্দ্র দাস (২৮) নামের এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা ও মরদেহে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। আজ শুক্রবার নিহত দিপুর ছোট ভাই অপু চন্দ্র দাস বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ভালুকা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহেদুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, বিক্ষুব্ধ জনতার হাতে নিহত হন দিপু চন্দ্র দাস। এ ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা হয়েছে।

এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার ডুবালিয়াপাড়া এলাকার পাইওনিয়ার নিট কম্পোজিট কারখানা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত দিপু চন্দ্র দাস জেলার তারাকান্দা উপজেলার মোকামিয়া কান্দা গ্রামের রবি চন্দ্র দাসের ছেলে। তিনি ওই কোম্পানির শ্রমিক ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘কোম্পানির লোকেরাই আমার ভাইকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে’

আমি লজ্জিত, নিজেকে মাটিতে পুঁতে দিতে ইচ্ছে করছে—ফেসবুকে প্রেস সচিব

তাহলে কি বাংলাদেশ-ভারত ফাইনাল

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার সম্পাদকের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার ফোনালাপ

গণমাধ্যমে হামলা ও ময়মনসিংহে নৃশংসতায় জড়িতদের ছাড় দেওয়া হবে না, সরকারের বিবৃতি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার পত্রিকা অফিসে হামলায় র‍্যাকের নিন্দা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার পত্রিকা অফিসে হামলায় র‍্যাকের নিন্দা

কতিপয় উচ্ছৃঙ্খল ব্যক্তি দৈনিক প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকা অফিসে যে হামলা চালিয়েছে, তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে রিপোর্টার্স অ্যাগেইনস্ট করাপশন (র‍্যাক)।

অন্যদিকে, দুই গণমাধ্যমে আটকে পড়া সাংবাদিকদের উদ্ধার করতে গিয়ে নাজেহাল ও হেনস্তার শিকার হয়েছেন ইংরেজি দৈনিক দ্য নিউ এজের সম্পাদক প্রবীণ সাংবাদিক নূরুল কবীর। এ ঘটনারও তীব্র নিন্দা ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে র‍্যাক। অবিলম্বে এসব ঘটনার সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও দ্রুত তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানিয়েছে র‍্যাক।

শুক্রবার এক বিবৃতিতে সভাপতি আলাউদ্দিন আরিফ ও সাধারণ সম্পাদক তাবারুল হক বলেন, সংবাদমাধ্যম রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের অন্যতম প্রধান ভিত্তি। গণমাধ্যমের কণ্ঠ রুদ্ধ করতে সহিংসতা, ভয়ভীতি প্রদর্শন, হামলা কিংবা হেনস্তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এ ধরনের কর্মকাণ্ড গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, মতপ্রকাশের সাংবিধানিক অধিকার এবং আইনের শাসনের সম্পূর্ণ পরিপন্থী।

১৮ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) রাত ১২টার দিকে উচ্ছৃঙ্খল কতিপয় ব্যক্তি প্রথমে দৈনিক প্রথম আলো, তারপর দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকা অফিসে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে। এ সময় পত্রিকা দুটির অনেক সাংবাদিক ভবনের ভেতরে আটকা পড়েছিলেন। খবর পেয়ে সেনা, পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে হামলাকারীদের সরিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে ভবনের ভেতরে আটকে পড়া সাংবাদিকদের উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।

পত্রিকা দুটির শীর্ষ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রাতে আকস্মিক হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার পর কর্মীদের সবাইকে দ্রুত অফিস ত্যাগ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ফলে শুক্রবার ছাপা পত্রিকা বের করা সম্ভব হয়নি।

র‍্যাক নেতারা বলেন, মনে হচ্ছে একটি গোষ্ঠী অত্যন্ত সচেতনভাবে প্রতিপক্ষ বানাতে গণমাধ্যমকে টার্গেট করে হামলা চালিয়েছে। এটা খুবই দুঃখজনক ও মর্মান্তিক। স্বাধীন সাংবাদিকতায় বিশ্বাসী বর্তমান সরকারের সময় এমন ঘটনা ন্যক্কারজনক। ডিআরইউ মনে করে, ওসমান হাদি একজন দেশপ্রেমিক জুলাই যোদ্ধা ছিলেন। শহীদ ওসমান হাদিসহ ছাত্র-জনতার ত্যাগের কারণে তৎকালীন ফ্যাসিস্ট সরকার দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে।

হাদির মৃত্যুকে পুঁজি করে যারা গণমাধ্যমের ওপর হামলা করেছে, তারা হাদির অনুসারী নয়, এটা স্পষ্ট। কতিপয় মহল হাদির মৃত্যুকে ব্যবহার করে নিজেদের কদর্য চেহারা প্রকাশ করেছে। অবিলম্বে এসব ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে দৃস্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান নেতারা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘কোম্পানির লোকেরাই আমার ভাইকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে’

আমি লজ্জিত, নিজেকে মাটিতে পুঁতে দিতে ইচ্ছে করছে—ফেসবুকে প্রেস সচিব

তাহলে কি বাংলাদেশ-ভারত ফাইনাল

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার সম্পাদকের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার ফোনালাপ

গণমাধ্যমে হামলা ও ময়মনসিংহে নৃশংসতায় জড়িতদের ছাড় দেওয়া হবে না, সরকারের বিবৃতি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত