Ajker Patrika

ছাত্রলীগ কর্মীদের চাকরির ‘ন্যায্য’ দাবিতে কুবি ভিসির গাড়ি অবরোধ

কুবি প্রতিনিধি
আপডেট : ৩১ মার্চ ২০২২, ২৩: ২৭
ছাত্রলীগ কর্মীদের চাকরির ‘ন্যায্য’ দাবিতে কুবি ভিসির গাড়ি অবরোধ

চাকরি-ঠিকাদারিসহ নানা দাবিতে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএফএম আব্দুল মঈনের গাড়ি আটকে দিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ দুপুরে উপাচার্য নিজ দপ্তর থেকে খাওয়ার জন্য বাংলোতে যাওয়ার সময় গাড়িতে উঠলে ছাত্রলীগ তাঁর পথ আটকায়।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইলিয়াস হোসেন সবুজ ছাত্রলীগের কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে উপাচার্যের কাছে ছাত্রলীগের বেশ কয়েকজন নেতাদের চাকরি, ঠিকাদারি কাজসহ নানা দাবি জানান। কিন্তু উপাচার্য তাদের অনৈতিক দাবির সঙ্গে একমত না হওয়ায় সভাপতি ইলিয়াস উপাচার্যের সঙ্গে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেন। 

এরপর উপাচার্য দুপুরের খাবারের জন্য দপ্তর থেকে নেমে বাংলোর উদ্দেশ্যে গাড়িতে উঠলে ছাত্রলীগের কর্মীদের নিয়ে গাড়ি অবরোধ করেন ইলিয়াস। এ সময় ইলিয়াসসহ ছাত্রলীগের অন্যান্য নেতাদের বিভিন্ন আক্রমণাত্মক কথা বলতে শোনা যায় বলে জানান সেখানে উপস্থিত অন্তত তিনজন। প্রায় ১০ মিনিট বাগ্বিতণ্ডা চলার পর শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে গাড়ি ছেড়ে দেয় ছাত্রলীগের নেতা কর্মীরা। 

ঘটনার ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকী বলেন, ‘কিছু দাবি ছিল তাদের। সে দাবির প্রেক্ষিতেই প্রায় ১০ মিনিটের মতো উপাচার্যের গাড়ি অবরুদ্ধ রেখেছিল তারা। এরপর শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে উপাচার্যের গাড়ি ছেড়ে দেয়।’ 

এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইলিয়াস হোসেন সবুজ বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের দাবি-দাওয়া নিয়ে আমরা গিয়েছিলাম। মেয়েদের হলের পানি সমস্যা আছে সেটার সমাধানের জন্য গিয়েছিলাম কিন্তু তিনি কর্ণপাত করেননি।’ 

চাকরি ও ঠিকাদারির দাবির অভিযোগের ব্যাপারে ইলিয়াস বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ছাত্রলীগের ছেলেমেয়েদের চাকরির জন্য বলেছি। জামাত-শিবির তো না তারা। সরকার ক্ষমতায় এই সময় ছাত্রলীগের নেতা কর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি চাওয়া তো অন্যায় দাবি না।’ 

ঠিকাদারি চাওয়ার ব্যাপারে ইলিয়াস বলেন, ‘মেয়েদের হলের পাম্পের সমস্যা এটা লাখ টাকার নিচের কাজ। এই ঠিকাদারি আমরা কেন চাইব!’ 

ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আসাদুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘উপাচার্য স্যার তাদের দাবি-দাওয়ার ব্যাপারে লিখিত চাইলে তারা লিখিত দিতে অনিচ্ছা প্রকাশ করে। শিক্ষার্থী প্রতিনিধিরা এসে বিভিন্ন আবদার করবে, কিন্তু সেগুলো যৌক্তিক হওয়া উচিত। উপাচার্য স্যারকে কেউ বলতে পারে না এটা করেন বা এটা বন্ধ রাখেন। কিছু করা বা না করা এটা উপাচার্য স্যারের এখতিয়ার।’ 

আসাদুজ্জামান যোগ করেন, ‘আমি দেখেছি উপাচার্য স্যার সবকিছু নিয়মের ভেতর থেকেই করেন। নিয়মের বাইরে তিনি কিছুই করেন না। এখন হয়ত নিয়মের বাইরে যেতে অনেকেই চাপ প্রয়োগ করতে পারে।’ 

এ ব্যাপারে উপাচার্য বলেন, ‘তাদের দাবিগুলো যৌক্তিক ছিল না। কিছু অন্যায় দাবি নিয়ে এসেছিল তারা। আমি এগুলো মেনে নেইনি। তাই তারা আমার গাড়ি অবরুদ্ধ করেছে। আমি বলে দিয়েছি আমি কখনো অন্যায়ের কাছে মাথা নত করব না।’ 

এর আগে ৩০ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চে নবীনবরণ অনুষ্ঠানে ছাত্রলীগ নেতা ইলিয়াসের বিরুদ্ধে উপাচার্যকে উদ্দেশ্য করে আক্রমণাত্মক বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শিক্ষক বলেন, ‘নবীনবরণ অনুষ্ঠানে ইলিয়াস যে বক্তব্য দিয়েছে এটা অত্যন্ত অসামঞ্জস্যপূর্ণ ও আক্রমণাত্মক। তাঁর বক্তব্যে স্পষ্ট বোঝা গেছে সে উপাচার্য স্যারকে ইঙ্গিত করেই এই আক্রমণাত্মক বক্তব্য দিয়েছে।’ 

কুবি শাখা ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটিকে (ইলিয়াস-মাজেদ) ১ বছরের জন্য অনুমোদন দিয়েছিল বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. জাকির হোসেন। তারা এবং তাদের পরে আসা শোভন-রাব্বানী সাবেক হয়ে গেলেও ২০১৭ সালে দেওয়া কুবি শাখা ছাত্রলীগের কমিটি এখনো বহাল রয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে কুবি শাখা ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থী মারধরসহ নানা অভিযোগ উঠছে। 

উল্লেখ্য, গত উপাচার্যের সময়ে ইলিয়াসের সুপারিশ অনুযায়ী ছাত্রলীগের ছয়জন নেতা সেকশন অফিসার হিসেবে ও একজন শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও, আরেকজনকে এডহকে সেকশন অফিসার হিসেবে নেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কক্সবাজারের রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরের ৯ শতাংশ নারী ধর্ষণের শিকার: বিএনপিএস

কক্সবাজার প্রতিনিধি
কক্সবাজার শহরের একটি হোটেলের সম্মেলনকক্ষে আজ বুধবার বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ আয়োজিত গোল টেবিল বৈঠক। ছবি: আজকের পত্রিকা
কক্সবাজার শহরের একটি হোটেলের সম্মেলনকক্ষে আজ বুধবার বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ আয়োজিত গোল টেবিল বৈঠক। ছবি: আজকের পত্রিকা

কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে বসবাস করা ৫৫ শতাংশ নারী ও কন্যা শিশু প্রতিনিয়ত সুরক্ষা, শিক্ষা, পুষ্টি ও লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতার উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে। শুধু তা-ই নয়, সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, আশ্রয়শিবিরগুলোয় ৯ শতাংশ নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন।

আজ বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) কক্সবাজার শহরের একটি হোটেলের সম্মেলনকক্ষে বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ (বিএনপিএস) আয়োজিত গোল টেবিল বৈঠকে এ তথ্য তুলে ধরে সংস্থাটি।

বিএনপিএসের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৭ সাল থেকে ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী মিয়ানমারে নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। বর্তমানে তারা কক্সবাজারের ৩৩টি শিবিরে বসবাস করছে, যা বিশ্বে বৃহত্তম শরণার্থী আশ্রয়স্থলগুলোর একটি। এই জনগোষ্ঠীর ৫২ শতাংশের বেশি নারী ও কন্যা।

সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দিয়ে আট বছরেরও বেশি সময়ে কক্সবাজারের প্রায় ৫ লাখ মানুষ নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এই দীর্ঘস্থায়ী সংকটের প্রভাবে স্থানীয় জনগোষ্ঠী জীবিকা, মজুরি, বন ও জলসম্পদ, স্বাস্থ্যসেবা এবং সামাজিক সংহতির ওপর ক্রমবর্ধমান চাপের মুখে পড়েছে। ফলে এটি শুধু শরণার্থী সংকট নয়; এটি মানবিকতা, উন্নয়ন এবং শান্তির এক যৌথ চ্যালেঞ্জ।

‘শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠীর অধিকার ও দায়িত্ব’ শীর্ষক এ গোল টেবিল বৈঠক সঞ্চালনা করেন বিএনপিএসের উপপরিচালক নাসরিন বেগম। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন কক্সবাজারের অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (যুগ্ম সচিব) মোহাম্মদ শামসুদ্দৌজা নয়ন। এ ছাড়া শরণার্থী ত্রান ও প্রত্যাবাসন কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব এম এ সানোয়ার হোসেন, বাংলাদেশ পরিবশে আন্দোলন (বাপা) কক্সবাজারের সাধারণ সম্পাদক কলিম উল্লাহ, জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য হুমায়রা বেগমসহ সংশ্লিষ্টরা বক্তব্য রাখেন।

প্রধান অতিথির বক্তৃতায় শামসুদ্দৌজা নয়ন বলেন, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আন্তর্জাতিক অর্থ সহায়তা কমে এসেছে। এর ফলে সামাজিক নিরাপত্তা সংকট তৈরি হচ্ছে। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন নারীরা।

গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা বলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিরাপত্তা, খাদ্য, আশ্রয়, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা এবং ও সহিংসতা থেকে সুরক্ষার অধিকার আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কাঠামোর অধীনে নিশ্চিত করা নৈতিক ও আইনগত দায়িত্ব। একইভাবে, আশ্রয়দাতা সম্প্রদায়েরও টেকসই উন্নয়ন, পরিবেশ সুরক্ষা, সম্মানজনক কাজ এবং জনসেবায় ন্যায্য প্রবেশাধিকারের জরুরি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

যবিপ্রবির প্রথম উপাচার্য রফিকুল ইসলাম মারা গেছেন

­যশোর প্রতিনিধি
মো. রফিকুল ইসলাম সরকার। ছবি: সংগৃহীত
মো. রফিকুল ইসলাম সরকার। ছবি: সংগৃহীত

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম সরকার মারা গেছেন (ইন্না...রাজিউন)। আজ বুধবার সকালে ঢাকার নিজ বাসা থেকে বের হয়ে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর তাঁকে একটি বেসরকারি বিশেষায়িত হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

ড. মো. রফিকুল ইসলাম সরকার যবিপ্রবি স্থাপন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক। পরবর্তীতে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি শক্তি ও যন্ত্র বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন। সেখানে তিনি কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে তিনি কৃষিবিদ গ্রুপের চেয়ারম্যান ও যবিপ্রবির রিজেন্ট বোর্ডের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

এ ছাড়া তিনি একজন কৃষি বিজ্ঞানী এবং প্রকৌশলী হিসেবে দেশের কৃষি খাতের যান্ত্রিকীকরণ ও আধুনিকায়নে দীর্ঘ পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে কৃতিত্বের সঙ্গে অবদান রেখেছেন।

এদিকে, ড. মো. রফিকুল ইসলাম সরকারের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল মজিদ ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. হোসেন আল মামুন, রিজেন্টবোর্ড সদস্যবৃন্দসহ বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার।

এক শোক বার্তায় যবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল মজিদ বলেন, রফিকুল ইসলাম সরকার ছিলেন একজন সৎ, মানবিক, ধর্মভীরু ও দায়িত্বশীল মানুষ। যবিপ্রবির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে আজ অবধি তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নতিতে নিরলস পরিশ্রম করেছেন।

তিনি ছিলেন একজন দক্ষ প্রশাসক এবং বরেণ্য কৃষি বিজ্ঞানী। যবিপ্রবির সূচনালগ্নে তার বলিষ্ঠ নেতৃত্ব ও দূরদর্শী পরিকল্পনা বিশ্ববিদ্যালয়টিকে আজকের এই অবস্থানে পৌঁছাতে ভিত গড়ে দিয়েছে। প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য হিসেবে তিনি শূন্য থেকে একটি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলার যে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছিলেন, তা যবিপ্রবি কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ১০ কিলোমিটার যানজট

সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ২৪
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে কাঁচপুর সেতু থেকে লাঙ্গলবন্দ পর্যন্ত ১০ কিলোমাটার যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) সকালে একটি ট্রাক দুর্ঘটনার পর দীর্ঘ সময় সড়কে যান চলাচল ব্যাহত হওয়ায় এ যানজট তৈরি হয়।

এতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সড়কে আটকে থেকে যাত্রীবাহী বাস, পণ্যবাহী ট্রাক, ব্যক্তিগত যানবাহনের চালক ও যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। রাত সাড়ে ৯টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মহাসড়কে যানজট দেখা গেছে।

কাঁচপুর হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী জানান, বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে লাঙ্গলবন্দ ব্রিজ এলাকায় একটি ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সেতুর রেলিংয়ে সজোরে আঘাত করে। ট্রাকটিতে প্রায় ২৭ টন মালামাল বোঝাই ছিল। দুর্ঘটনায় সেতুর রেলিং ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

তিনি আরও জানান, ট্রাকটিতে অতিরিক্ত মালামাল থাকায় রেকার দিয়ে সরানো সম্ভব হয়নি। ফলে প্রথমে অন্য একটি ট্রাকে মালামাল স্থানান্তরের কাজ শুরু করা হয়। এই প্রক্রিয়ায় দীর্ঘ সময় লাগায় দুর্ঘটনাকবলিত ট্রাকটি বিকেলের আগে সরানো যায়নি। এর ফলে ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কের চট্টগ্রামমুখী লেনে দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়েছে।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট। ছবি: আজকের পত্রিকা

পণ্যবাহী ট্রাকচালক শাহ আলম জানান, দুর্ঘটনার কারণে রাস্তা বন্ধ ছিল বুঝতে পারছি। কিন্তু এত সময় লাগবে ভাবিনি। মালামাল নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। এতে আর্থিক ক্ষতিও হচ্ছে।

আরেক যাত্রী আক্তার হোসেন বলেন, আমি চট্টগ্রামে যাচ্ছি। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পৌঁছানোর কথা ছিল। কিন্তু তিন ঘণ্টা ধরে একই জায়গায় আটকে আছি। ছোট বাচ্চা নিয়ে খুব বিপদে পড়েছি।

কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দুর্ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থলে পুলিশের একাধিক টিম কাজ শুরু করে। বিকেল নাগাদ মালামাল সরিয়ে ট্রাকটি সড়ক থেকে অপসারণ করা হলে ধীরে ধীরে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

কাঁচপুর হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আমাদের একাধিক টিম কাজ করছে। টানা তিন দিনের ছুটি থাকায় মহাসড়কে গাড়ির চাপ বেশি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মগবাজারে ককটেল বিস্ফোরণে নিহতের মরদেহ ঢামেক মর্গে

ঢামেক প্রতিবেদক
আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ৪৫
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর মগবাজারে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত সিয়াম মজুমদারের (২১) মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়েছে। আজ বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে হাতিরঝিল থানা পুলিশ মরদেহটি হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন।

হাতিরঝিল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সাইদুর রহমান জানান, সিয়াম মজুমদারের (২১) বাড়ি খুলনার দিঘুলিয়া উপজেলার কলোনীতে। তার বাবার নাম আলী আকবর মজুমদার। পরিবারের সাথে নিউ ইস্কাটন দুই হাজার গলির ১০১ নম্বর বাসায় থাকতেন। আগামীকাল বৃহস্পতিবার তার মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হবে।

নিহত সিয়ামের সহকর্মী অহিদুল হাওলাদার জানান, নিউ ইস্কাটনে ‘জাহিদ কার ডেকোরেশনের’ কর্মচারী সিয়াম। গত ৩-৪ বছর যাবৎ এখানে কাজ করে সে। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে দোকানে কাজ সেরে চা পান করার জন্য বের হয়েছিল সিয়াম। চা পান করেই চলে আসবে। এর আধাঘণ্টা পর দোকানে এসে কয়েকজন খবর দেয়, তাদের দোকানের কর্মচারী সিয়াম মারা গেছে। রাস্তায় তার মরদেহ পড়ে আছে। সঙ্গে সঙ্গে তারা দোকান থেকে ঘটনাস্থলে গিয়ে সিয়ামের রক্তাক্ত মৃতদেহ দেখতে পান। সিয়াম অবিবাহিত ছিল। তার বাবা সিএনজি অটোরিকশা চালক।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত