Ajker Patrika

তদন্তে জানা গেল তাঁরা সবাই রোহিঙ্গা

আবু বকর ছিদ্দিক, চট্টগ্রাম
আপডেট : ১৭ জুলাই ২০২২, ১১: ৪৭
তদন্তে জানা গেল তাঁরা সবাই রোহিঙ্গা

২০১৮ সালের মার্চ মাসের শুরুর দিকের ঘটনা। কক্সবাজার পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক মো. আবু নঈমের অফিসে পাসপোর্টের জন্য আটটি আবেদন আসে। প্রতিটি আবেদনের সঙ্গে ছিল পুলিশের ইতিবাচক প্রতিবেদন। তবু সন্দেহ হয় পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তাদের। ফলে আবেদনগুলো স্থগিত রেখে অধিকতর তদন্তের জন্য পাঠানো হয় কক্সবাজারের পুলিশ বিভাগে। পরে কক্সবাজার পুলিশের বিশেষ শাখার সহকারী পুলিশ সুপার মো. শহীদুল ইসলামের তদন্তে বেরিয়ে আসে, পাসপোর্টের জন্য আবেদনকারী এই আটজনের সবাই রোহিঙ্গা।

শুধু এই আটজন নন, বিভিন্ন সময়ে এ রকম শত শত রোহিঙ্গা বাংলাদেশি পাসপোর্ট পাওয়ার জন্য আবেদন করেছেন। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) এক প্রতিবেদন বলছে, ১৫৪ জন রোহিঙ্গা নাগরিককে টাকার বিনিময়ে বাংলাদেশি পাসপোর্ট বানিয়ে দিয়েছে একটি সিন্ডিকেট। শুধু কক্সবাজার নয়, বৃহত্তর চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে ভুয়া ঠিকানা দিয়ে শত শত রোহিঙ্গা বাংলাদেশি পাসপোর্ট নিয়ে বিদেশে পাড়িও জমিয়েছেন। এ কাজে তাঁদের সহায়তা করেছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, আইনজীবী ও পুলিশ। 
দুদকের অনুসন্ধানের তথ্য অনুযায়ী, সন্দেহবশত আবেদন স্থগিত হওয়া আটজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কক্সবাজার সদর থানার উপসহকারী পরিদর্শক (এএসআই) দ্বীন মোহাম্মদ নোটিশ পাঠিয়েছিলেন, কিন্তু কোনো আবেদনকারী তাতে সাড়া দেননি। পুলিশ খুঁজেও পায়নি। আর তাঁদের পাসপোর্টের আবেদনে সত্যয়নকারী ইউপি চেয়ারম্যানরা দাবি করেছেন, আবেদনপত্রে দেওয়া স্বাক্ষর তাঁদের নয়।

এসব আবেদনের আরেক সত্যয়নকারী ছিলেন নোটারি পাবলিক অ্যাডভোকেট রাখাল চন্দ্র মিত্র। তিনি বলেন, স্থানীয়রা তাঁর কাছে এসব আবেদন নিয়ে আসার কারণে তিনি তা সত্যায়ন করেছেন। ভবিষ্যতে আর পাসপোর্টের আবেদনে সত্যায়ন করবেন না বলেও জানান এই আইনজীবী।

দুদক সূত্রে জানা গেছে, টাকার বিনিময়ে রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট পাইয়ে দিতে সহযোগিতার অভিযোগে এ পর্যন্ত ১৩টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় আসামি মোট ৭২ জন। এর মধ্যে ৩৬ জন রোহিঙ্গা। বাকিরা সবাই জনপ্রতিনিধি, পুলিশ কর্মকর্তা, আইনজীবী ও বিভিন্ন দপ্তরের জন্মনিবন্ধন কর্মচারী। এই ১৩টি মামলার মধ্যে পাঁচটির বাদী ছিলেন দুদকের সদ্য চাকরিচ্যুত উপসহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিন। চারটি মামলার বাদী সহকারী পরিচালক মো. মাহবুবুল আলম এবং বাকি চার মামলার বাদী আরেক সহকারী পরিচালক সুভাষ চন্দ্র দত্ত। 
দুদকের অনুসন্ধানে রোহিঙ্গাদের অবৈধভাবে পাসপোর্ট বানিয়ে দেওয়ার পেছনে যাঁদের নাম উঠে এসেছে, এর মধ্যে পুলিশের ছয়জন কর্মকর্তা, ১০ জন জনপ্রতিনিধি, একজন নির্বাচন কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন অফিসের চারজন কর্মকর্তা-কর্মচারী ও দুই আইনজীবী রয়েছেন।

অভিযুক্ত সাত পুলিশ কর্মকর্তা হলেন পুলিশ পরিদর্শক এস এম মিজানুর রহমান, পুলিশ পরিদর্শক কাজী দিদারুল আলম (সাবেক ডিআইও), এএসআই জাহিদুল ইসলাম, এএসআই সাজেদুর রহমান, পরিদর্শক প্রভাষ চন্দ্র ধর, পরিদর্শক মো. রুহুল আমিন। তাঁদের মধ্যে মিজানুর রহমান, দিদারুল আলম ও জাহিদুল ইসলামকে দুদক একাধিক মামলায় আসামি করেছে। আইনজীবীদের মধ্যে কক্সবাজারের নোটারি পাবলিক ও দায়রা জজ আদালতের আইনজীবী আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আরেক আইনজীবী রাখাল চন্দ্র মিত্র ক্ষমা চেয়েছেন।

রোহিঙ্গাদের সহযোগিতার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশের পরিদর্শক প্রভাষ চন্দ্র বলেন, ‘এএসআই সাজেদুর রহমানের পাসপোর্টের ভুল প্রতিবেদনের কারণে আমাদের মামলায় জড়ানো হয়েছে। পুলিশ বিভাগ থেকে তদন্ত করে রোহিঙ্গা নারী নুরুন্নাহার বেগমের পাসপোর্ট বাতিলসহ এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’ দুদকের মামলায় অভিযুক্ত জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে আছেন কক্সবাজারের মহেশখালীর কুতুবজোন ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন, কক্সবাজার পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মিজানুর রহমান, কক্সবাজার পৌরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর জাবেদ মোহাম্মদ কায়সার নোবেল, কক্সবাজার পৌরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর রফিকুল ইসলাম, কক্সবাজার পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আশরাফুল হুদা সিদ্দিকী জামশেদ, কক্সবাজার পৌরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সালাউদ্দিন, কক্সবাজার পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের (সংরক্ষিত) সাবেক কাউন্সিলর হুমায়রা বেগম, কক্সবাজার পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মাহবুবুর রহমান, কক্সবাজার পৌরসভার সংরক্ষিত (১০, ১১, ১২) ওয়ার্ড কাউন্সিলর নাসিমা আক্তার, কক্সবাজারের ঈদগাঁ উপজেলার ৩ নম্বর ইসলামাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুর সিদ্দিক ও ২ নম্বর পোকখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রফিক আহাম্মদ। তাঁদের মধ্যে রফিকুল ইসলাম, মিজানুর রহমান, জাবেদ মোহাম্মদ কায়সার ও অফিস সহকারী দিদারুল আলমকে গত বছরের ২৮ মার্চ গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।

রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট তৈরিতে সহযোগিতার বিষয়ে জানতে চাইলে পোকখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রফিক আহামদ বলেন, ‘আমি জনপ্রতিনিধি, এখানকার বাসিন্দাদের পাসপোর্টের কাগজপত্রে স্বাক্ষর করি। এরা এখানে অনেক বছর ধরে বসবাস করে। পরে জানা যায়, তাঁরা অনেকে রোহিঙ্গা নাগরিক।’ সরকারি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার কুতুবজোন ইউনিয়নের সচিব প্রিয়তোষ দে, কক্সবাজার পৌরসভার অফিস সহকারী দিদারুল আলম ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের জন্মনিবন্ধন সহকারী সুমন কান্তি গুপ্ত, কক্সবাজার জেলার সাবেক নির্বাচন কর্মকর্তা (বর্তমানে কুমিল্লার অঞ্চলিক কর্মকর্তা) মোজাম্মেল হোসেনকেও আসামি করা হয়েছে দুদকের মামলায়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে দুদকের মামলায় অভিযুক্ত কক্সবাজারের সাবেক নির্বাচন কর্মকর্তা মোজাম্মেল হোসেন বলেন, ‘আমি কোনো অন্যায় করিনি, আমি একটা তদন্ত করেছি, দুদকের পছন্দ হয়নি, তাই আমাকে আসামি করা হয়েছে।’ দুদকের মামলায় অভিযুক্ত আইনজীবী আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘আমি নোটারি পাবলিক হিসেবে শুধু সত্যায়ন করেছি। কোনো অন্যায় করিনি।’

রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট হাতে দেওয়ার ঘটনায় কয়েকটি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপপরিচালক সুভাষ চন্দ্র দত্ত। মামলাগুলো এখন কোন অবস্থায় আছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মামলাগুলোর তদন্ত চলমান। তদন্তের প্রয়োজনে সময়ে সময়ে কক্সবাজারে যাই।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাজধানীর রামপুরায় অটোরিকশার ধাক্কায় বৃদ্ধের মৃত্যু

ঢামেক প্রতিবেদক
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

রাজধানীর রামপুরা ডিআইটি রোডে সিএনজি চালিত অটোরিকশার ধাক্কায় এক বৃদ্ধ মারা গেছেন। তাঁর নাম-পরিচয় জানাতে না পারলেও পুলিশের ধারণা, ওই ব্যক্তির বয়স আনুমানিক ৭০ বছর।

আজ মঙ্গলবার সকাল ৬টার দিকে রামপুরার ডিআইটি রোড বেটারলাইফ হাসপাতালের পাশে এই দুর্ঘটনা ঘটে। আহত অবস্থায় ওই বৃদ্ধকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান পথচারীরা। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুর ১২টার দিকে মারা যান তিনি।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন রামপুরা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. সফিকুল ইসলাম খান। তিনি জানান, মৃত ব্যক্তির নাম-পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা চলছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহটি ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে রাখা হয়েছে। অটোরিকশাটিকে শনাক্তের চেষ্টা চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দৌলতপুরে বাঁশবাগানে পড়ে ছিল কলেজছাত্রের লাশ

দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪: ৩৪
ঘটনাস্থলে স্থানীয় বাসিন্দাদের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঘটনাস্থলে স্থানীয় বাসিন্দাদের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে সিয়াম হোসেন (১৭) নামের এক কলেজছাত্রের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় নিখোঁজ হওয়ার পর আজ মঙ্গলবার সকালে বাড়ি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে একটি বাঁশবাগানে তার লাশ পাওয়া যায়।

সিয়াম দৌলতপুর উপজেলার বোয়ালিয়া ইউনিয়নের মধুগাড়ি এলাকার বাসিন্দা। সে গোয়ালগ্রাম কলেজের শিক্ষার্থী এবং স্থানীয় মসজিদের ইমাম সিপুল হোসেনের ছেলে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আজ সকালে মধুগাড়ি এলাকার শেহালা উত্তর পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পেছনের একটি বাঁশবাগানে লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশকে খবর দেন। পরে দৌলতপুর থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে।

মৃত শিক্ষার্থীর পরিবার জানায়, গতকাল সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেনি সিয়াম। পরে আত্মীয়স্বজন ও এলাকাবাসী মিলে খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান পাওয়া যায়নি। আজ সকালে তাকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফুর রহমান বলেন, সকালে এক কলেজছাত্রের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মরদেহে দৃশ্যমান কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মর্গে পাঠানো হবে। রিপোর্ট পাওয়ার পর মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিতভাবে বলা যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গয়েশ্বর চন্দ্রের আসনে বিএনপির বিদ্রোহী তিন বড় নেতাসহ ১৬ প্রার্থী, শক্ত লড়াইয়ের আভাস

কেরানীগঞ্জ (ঢাকা) সংবাদদাতা
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। ফাইল ছবি
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। ফাইল ছবি

মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিনে গতকাল সোমবার ঢাকা-৩ সংসদীয় আসনের প্রার্থীদের ব্যাপক উপস্থিতি দেখা গেছে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের আসন হিসেবে পরিচিত এই আসনে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের বিদ্রোহী প্রার্থীসহ মোট ১৬ জন এদিন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। এতে নির্বাচনী মাঠে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে এই আসনে শক্ত লড়াইয়ের মুখে পড়তে হবে, সে আভাসই মিলেছে।

এদিন ঢাকা-২ ও ঢাকা-৩ আসনে ধানের শীষ, দাঁড়িপাল্লা ও হাতপাখা প্রতীকে একজন করে দলীয় প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেন। পাশাপাশি গণঅধিকার পরিষদ, বাংলাদেশ কংগ্রেস, গণসংহতি আন্দোলন এবং একাধিক স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচনের দৌড়ে যুক্ত হন।

গতকাল বেলা ৩টার দিকে ঢাকা-৩ আসনে বিএনপির প্রার্থী গয়েশ্বর চন্দ্র রায় রিটার্নিং কর্মকর্তা ওমর ফারুকের কাছে তাঁর মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। একই দিনে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী অধ্যক্ষ শাহীনুর ইসলাম এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী সুলতান আহমেদ খানও মনোনয়নপত্র জমা দেন।

এদিন ঢাকা-৩ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দেওয়া বিএনপির একাধিক বিদ্রোহী নেতা ও সমর্থকের উপস্থিতি আলোচনার জন্ম দিয়েছে। তাঁদের মধ্যে বিএনপির তিনজন বড় নেতা ও তিনজন সমর্থক রয়েছেন বলে দলীয় সূত্র জানিয়েছে।

স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন জাতীয়তাবাদী কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি ও অবিভক্ত কেরানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি হাজী নাজিমউদ্দীন মাস্টার, জাতীয়তাবাদী যুবদলের কেন্দ্রীয় সিনিয়র সহসভাপতি রেজাউল কবির পল এবং দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোজাদ্দেত আলী বাবু। তাঁদের মধ্যে সাবেক ছাত্রনেতা রেজাউল কবির পল অনেক দিন ধরে ঢাকা-৩ আসন থেকে দলীয় মনোনয়ন পেতে মাঠ থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত দৌড়ঝাঁপ করেছেন। শেষ পর্যন্ত দল গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কেই মনোনয়ন দেওয়ায় তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দাঁড়াচ্ছেন।

এ ছাড়া গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত বিএনপির সমর্থকদের স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়া নিয়েও এলাকায় কৌতূহলের সৃষ্টি করেছে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন সাজ্জাত হোসেন, ঢাকা জেলা দক্ষিণ ছাত্রদলের সভাপতি পাভেল মোল্লার মা পারুল মোল্লাসহ আরও কয়েকজন। বিএনপি নেতাদের একটি অংশের দাবি, কৌশলগত কারণেই এসব প্রার্থীকে স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনী মাঠে রাখা হয়েছে।

এ ছাড়া একই আসনে গণঅধিকার পরিষদের প্রার্থী সাজ্জাদ আল ইসলাম, বাংলাদেশ কংগ্রেসের প্রার্থী মোহাম্মদ জাফর, গণসংহতি আন্দোলনের প্রার্থী বাচ্চু ভূঁইয়া, গণফোরামের প্রার্থী মোহাম্মদ রওশন ইয়াজদানি এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী বেলাল হোসেন, মো. ফারুক, মো. সাজ্জাদ ও মো. শোয়েব মাহমুদ মনোনয়নপত্র দাখিল করেন।

দলীয় প্রার্থীর পাশাপাশি স্বতন্ত্রভাবে বিএনপির একাধিক প্রভাবশালী নেতা ও সমর্থকের অংশগ্রহণে ঢাকা-৩ আসনের নির্বাচনী সমীকরণ শুরুতেই জটিল হয়ে উঠেছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বিরোধী দলের পাশাপাশি বিএনপির ভেতরের এই বহুমুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের জন্য এবারের নির্বাচনে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়ার মৃত্যুর খবর শুনে এভারকেয়ারের সামনে ভিড়, পুলিশের ব্যারিকেড

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে বিএনপি নেতাকর্মীদের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা
এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে বিএনপি নেতাকর্মীদের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা

খালেদা জিয়ার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে বিএনপি নেতাকর্মীদের ব্যাপক ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এভারকেয়ারের সামনে ব্যারিকেড দিয়ে বেষ্টনী দিয়ে রেখেছে পুলিশ। এছাড়া র‍্যাব ও বিজিবিসহ আরও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান নিয়েছেন।

আজ মঙ্গলবার সকাল ৬টায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন খালেদা জিয়া। গত ২৩ নভেম্বর থেকে শেষবারের মতো এই হাসপাতালেই ভর্তি ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসন।

এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে বিএনপি নেতাকর্মীদের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা
এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে বিএনপি নেতাকর্মীদের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর মৃত্যুর খবর শুনে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে নানান পর্যায়ের নেতাকর্মীরা ছুটে এসেছেন এক পলক দেখতে। আজ মঙ্গলবার বেলা ১২টায় এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে শতশত মানুষ ভিড় জমতে দেখা গেছে। কেউ কেউ তাঁদের নেত্রীকে একপলক দেখার জন্য এসেছেন, কেউ কেউ ভালোবাসার টানে ছুটে এসেছেন।

ঢাকায় থাকা দলটির কেন্দ্রীয় নেতাদের প্রায় সবাই ইতিমধ্যে হাসপাতালের ভেতরে অবস্থান করছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত