Ajker Patrika

ফেনীতে মাদ্রাসার অর্ধকোটি টাকার গরমিল, খোঁজ নেই অধ্যক্ষের

ফেনী প্রতিনিধি
আপডেট : ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ২২: ৩৪
ফেনীতে মাদ্রাসার অর্ধকোটি টাকার গরমিল, খোঁজ নেই অধ্যক্ষের

ফেনীর সদর উপজেলার গোবিন্দপুরে হাফেজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানার অধ্যক্ষ–সম্পাদকের বিরুদ্ধে প্রায় অর্ধকোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি মাদ্রাসাসংলগ্ন মসজিদ নির্মাণের সময় বিষয়টি জানাজানি হয়। এ ঘটনার পর থেকে মাদ্রাসা অধ্যক্ষ মামুনুর রশিদকে সরিয়ে রেখেছেন অভিযুক্ত ব্যক্তিরা।

পরিচালনা কমিটির সদস্য শাহ আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানটির মসজিদ নির্মাণ করতে গিয়ে হিসাব-নিকাশে ৮ লাখ টাকার গরমিল পাওয়া যায়। বিষয়টি সভাপতি নুর উদ্দিনকে জানানো হলে তিনি আরও বিষদভাবে হিসাব-নিকাশ করার কথা বলেন। পরে হিসাব করে দেখা যায়, ৩৫ লাখ টাকা অধ্যক্ষ ও সাধারণ সম্পাদক যোগসাজশে আত্মসাৎ করেছেন।’

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ফেনীর সদর উপজেলার গোবিন্দপুর হাজির বাজারের দক্ষিণ পার্শ্বে ১৯৩৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় নুরানি হাফেজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানা। প্রতিষ্ঠার পর থেকে স্থানীয়দের অনুদানে পরিচালিত হয়। গত ১৭ বছর ধরে একই ব্যক্তি সাধারণ সম্পাদক, আর তাঁর একক সিদ্ধান্তে চলছে প্রতিষ্ঠানটি। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে সাধারণ সম্পাদক মো. হানিফ ওরফে হানিফ মেম্বার ও অধ্যক্ষ মামুনুর রশিদ মাদ্রাসাটি পরিচালনা করেন। সম্প্রতি মসজিদ নির্মাণ কমিটি অডিট করতে গিয়ে টাকা আত্মসাতের বিষয়টি ধরা পড়ে।

এ বিষয়ে মাদ্রাসা কমিটির সভাপতি নুর উদ্দিন আফছার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘২০১৭ সালের শুরুর দিকে আমি প্রতিষ্ঠানটির সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করি। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটিতে প্রায় ৮ শতাধিক ছাত্র-ছাত্রী অধ্যয়ন করছে। এদের মধ্যে আবাসিক ও অনাবাসিক ছাত্ররা রয়েছে। বেশ কিছুসংখ্যক এতিম ছাত্র-ছাত্রীও পড়ালেখা করছে।’

তিনি বলেন, ‘স্থানীয় এলাকাবাসীর অর্থায়নে প্রতিষ্ঠানটি বেশ সুনামের সঙ্গেই চলছিল। কিছুদিন আগে এলাকার মানুষের অনুদানে প্রতিষ্ঠানসংলগ্ন একটি মসজিদ নির্মাণকাজ শুরু করি। কাজের আয়-ব্যয়ের হিসাবের স্বার্থে তিন সদস্যের একটি অডিট কমিটি করা হয়। তারা অডিট করতে গিয়ে দেখে মাদ্রাসা ফান্ডে ৮ লাখ ৫০ হাজার টাকার গরমিল রয়েছে। পরে মাদ্রাসা কমিটির জরুরি বৈঠক হয়। সেখানে আরও ২৮ লাখ ৫০ হাজার টাকার হিসাবে গরমিল পাওয়া যায়।’

নুর উদ্দিন আফছার আরও বলেন, ‘গরমিল টাকার বিষয়ে আমি কমিটির সাধারণ সম্পাদক হানিফ মেম্বারের কাছে জানতে চাইলে তিনি টাকাটা উদ্ধার করেছেন বলে আমাকে অবহিত করেন। জানতে চাইলে এত দিন কেন প্রতিষ্ঠানটির আয়–ব্যয়ের হিসাব করা হয়নি? তখন তিনি বলেন, আমি অসুস্থ ছিলাম। তাই এত দিন এ বিষয়ে তেমন কাজ করতে পারিনি। আগামীতে সাধারণ সভা হবে। তখন সব বিষয়ে আলোচনা হবে।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান, হানিফ মেম্বার স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও যুবলীগ নেতা দেলোয়ার হোসেন ডালিমের বড় ভাই। তিনি মাদ্রাসার অর্থ কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত। নিজের অনিয়ম ঢাকতে মাদ্রাসার অধ্যক্ষকে সরিয়ে রেখেছেন।

তিনি প্রায় সময় ব্যক্তিগত কাজে মাদ্রাসা ফান্ডের টাকা অধ্যক্ষের মাধ্যমে নিজেই ব্যবহার করেন, যা সম্পূর্ণ অনৈতিক, তার এ অপরাধের সুযোগে অধ্যক্ষও একই পথের পথিক হয়েছেন। এর তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে শাস্তি দাবি করেন তাঁরা। অভিযোগের বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত অধ্যক্ষের বাড়িতে গিয়ে ও মোবাইল ফোনে কল করে খোঁজ পাওয়া যায়নি।

অপর অভিযুক্ত কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. হানিফ ওরফে হানিফ মেম্বার বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মামুনুর রশিদ অর্থ আত্মসাৎ করেছেন, আমরা তাঁর কাছ থেকে টাকা উদ্ধার করেছি। অনিয়ম খুঁজে পাওয়ায় তাঁকে প্রতিষ্ঠান থেকে বিদায় করে দেওয়া হয়েছে।’ তবে টাকাটা কোথায় জমা হয়েছে, সেটির কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।

এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন ডালিম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মাদ্রাসার অর্থ আত্মসাতের বিষয়টি অবগত আছি। এ বিষয়ে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানসহ বৈঠক হয়েছে। পরে অধ্যক্ষের বাড়ি থেকে ১৬ লাখ টাকা এবং ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে ১৮ লাখ টাকা উদ্ধার করতে সক্ষম হই।’ টাকাগুলো প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবে জমা হয়েছে কি না এ বিষয়ে কিছু জানাতে পারেননি তিনি।

ফেনী সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার হুমায়ন রশিদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘যেহেতু বেসরকারি হাফেজিয়া মাদ্রাসা, সেহেতু অভিযোগের ভিত্তিতে স্থানীয় চেয়ারম্যান, শিক্ষা কর্মকর্তা ও পরিচালনা কমিটির অন্য সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে একটি তদন্ত প্রতিবেদন বেপাকে পাঠানো হবে। পরামর্শ থাকবে যে, যাদের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ, তাদের আসামি করে আদালত অথবা থানায় একটি মামলা রুজু করার। আইনের মাধ্যমে তাঁদের সাজা নিশ্চিত করা, যেন কেউ এ ধরনের দুর্নীতি করতে না পারে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাদির কবর জিয়ারতে আসবেন তারেক রহমান, ইনকিলাব মঞ্চের অবস্থান পরিবর্তন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ১৯
শাহবাগ মোড়ে অবস্থানরত ইনকিলাব মঞ্চ তাদের অবস্থান কর্মসূচির স্থান পরিবর্তন করেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
শাহবাগ মোড়ে অবস্থানরত ইনকিলাব মঞ্চ তাদের অবস্থান কর্মসূচির স্থান পরিবর্তন করেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদির কবর জিয়ারত করতে আজ শনিবার সকাল ১১টায় আসবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এদিকে তারেক রহমানের কবর জিয়ারতের কর্মসূচির কারণে শাহবাগ মোড়ে অবস্থানরত ইনকিলাব মঞ্চ তাদের অবস্থান কর্মসূচির স্থান পরিবর্তন করেছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ইনকিলাব মঞ্চের প্রকাশনা সম্পাদক ফাহিম আবদুল্লাহ জানান, হাদি হত্যার বিচার চেয়ে বেলা ১২টায় শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেবে ইনকিলাব মঞ্চ।

শাহবাগ মোড়ে অবস্থানরত ইনকিলাব মঞ্চ তাদের অবস্থান কর্মসূচির স্থান পরিবর্তন করেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
শাহবাগ মোড়ে অবস্থানরত ইনকিলাব মঞ্চ তাদের অবস্থান কর্মসূচির স্থান পরিবর্তন করেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সারারাত জেগে হাদি হত্যার বিচার চেয়ে শাহবাগে অবস্থান নিয়েছি। তারেক রহমান সকাল ১১টায় হাদির কবর জিয়ারত করতে আসবেন, সেজন্য আমরা ১২টায় শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেব।’

শাহবাগ মোড়ে অবস্থানরত ইনকিলাব মঞ্চ তাদের অবস্থান কর্মসূচির স্থান পরিবর্তন করেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
শাহবাগ মোড়ে অবস্থানরত ইনকিলাব মঞ্চ তাদের অবস্থান কর্মসূচির স্থান পরিবর্তন করেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

অবস্থানকারীরা জানায়, হাদি হত্যার বিচার চেয়ে শাহবাগ মোড়ের পশ্চিম দিকে তাঁরা অবস্থান নিয়েছেন। বিএনপি নেতা তারেক রহমানের হাদির কবর জিয়ারত শেষ হলে তাঁরা আবারও আজ ১২টায় শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে ট্রাকের পেছনে বাসের ধাক্কা, নারীসহ আহত ৬

মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ৪৫
শ্রীনগরে গতকাল রাতে যাত্রীবাহী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ট্রাকের পেছনে ধাক্কা দিলে বাসের সামনের অংশ মুচড়ে যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
শ্রীনগরে গতকাল রাতে যাত্রীবাহী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ট্রাকের পেছনে ধাক্কা দিলে বাসের সামনের অংশ মুচড়ে যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগরে যাত্রীবাহী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ট্রাকের পেছনে সজোরে ধাক্কা লেগে বাসটির নারী যাত্রীসহ অন্তত ছয়জন আহত হয়েছে। শুক্রবার দিবাগত রাত ১টার দিকে জেলার শ্রীনগর উপজেলার ছনবাড়ি এলাকায় এক্সপ্রেসওয়ের মাওয়ামুখী লেনে এই দুর্ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে শ্রীনগর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের একটি দল দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করে।

আহত ব্যক্তিরা হলেন গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার গাউস শিকদারের ছেলে নিয়ামত, টুঙ্গিপাড়া উপজেলার রম্বু খলিফার ছেলে ইয়াছিন, বাগেরহাটের মোল্লারহাট উপজেলার আবেদ আলীর ছেলে হায়দার আলী, একই উপজেলার সোনা মিয়ার ছেলে আমেদ মিয়া, আসাদুজ্জামানের স্ত্রী জুলেখা আক্তার ও মাসুদ মিয়ার ছেলে রিজভী মিয়া।

শ্রীনগরে গতকাল রাতে যাত্রীবাহী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ট্রাকের পেছনে ধাক্কা দিলে বাসের সামনের অংশ মুচড়ে যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
শ্রীনগরে গতকাল রাতে যাত্রীবাহী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ট্রাকের পেছনে ধাক্কা দিলে বাসের সামনের অংশ মুচড়ে যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

শ্রীনগর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার দেওয়ান আজাদ হোসেন জানান, আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে শ্রীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। পরে কয়েকজনের অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁদের ঢাকায় পাঠানো হয়। দুর্ঘটনার কারণে এক্সপ্রেসওয়েতে কিছু সময় যান চলাচল বন্ধ থাকে। পরে বিকল্প সড়ক ব্যবহার করে যান চলাচল স্বাভাবিক করা হয়। তবে দুর্ঘটনার সঠিক কারণ তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।

দুর্ঘটনাকবলিত ‘টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেস’ বাসটি হাসাড়া হাইওয়ে থানায় রাখা হয়েছে। দুর্ঘটনার পর ট্রাকটি ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে গেছে। এই ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাত পেরিয়ে সকাল, শাহবাগ ছাড়েননি হাদি হত্যার বিচার দাবিতে বিক্ষোভকারীরা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ০২
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদি হত্যার বিচারের দাবিতে রাজধানীর শাহবাগে আজ শনিবার সকালেও অবস্থান করতে দেখা যায় বিক্ষোভকারীদের। গতকাল থেকে শুরু হওয়া এই অবরোধে সেখানে রাতভর অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন বিক্ষোভকারীরা। সকালেও সেখানে অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছেন তাঁরা।

গতকাল শুক্রবার জুমার নামাজের পর ইনকিলাব মঞ্চের নেতা-কর্মীসহ সাধারণ শিক্ষার্থী-জনতা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) কেন্দ্রীয় মসজিদ থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শাহবাগে এসে অবস্থান নেন। এ সময় তাঁরা সড়ক অবরোধ করে যান চলাচল বন্ধ করে দেন।

চারদিকে কুয়াশা আর হাড়কাঁপানো ঠান্ডার মধ্যেও শাহবাগ মোড় আন্দোলনের উত্তাপে সরব। হাদি হত্যায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার না করা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ইনকিলাব মঞ্চের সদস্যসচিব আব্দুল্লাহ আল জাবের।

জাবের বলেন, ওসমান হাদি হত্যায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার এবং বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ ছাড়বেন না তাঁরা। সরকারের উপদেষ্টারা জনগণের সামনে এসে না দাঁড়ানো পর্যন্ত তাঁরা শাহবাগ ছাড়বেন না। হত্যার পরিকল্পনাকারী, হত্যাকারী ও তাঁদের ভারতে পালাতে সহায়তাকারীরা গ্রেপ্তার না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা রাজপথে অবস্থান চালিয়ে যাবেন।

ওসমান হাদির ভাই ওমর বিন হাদি বলেন, এই হত্যাকাণ্ডের বিচারে সরকারের আগ্রহ নেই। হত্যার বিচার না হলে যমুনা ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারিও দেন তিনি।

ওমর বিন হাদি বলেন, প্রধান উপদেষ্টার ওপর চাপ থাকলে বা তাঁকে দেশের গোয়েন্দা সংস্থা সাহায্য না করলে আন্তর্জাতিক তদন্ত সংস্থাকে নিযুক্ত করতে হবে।

শরিফ ওসমান হাদি ঢাকা-৮ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে প্রচার চালাচ্ছিলেন। ১২ ডিসেম্বর জুমার নামাজের কিছু পর রাজধানীর পুরানা পল্টনের কালভার্ট রোডে মোটরসাইকেল থেকে ব্যাটারিচালিত রিকশায় থাকা ওসমান হাদিকে গুলি করে দুর্বৃত্তরা। তাঁকে মাথায় গুলি করার পর আততায়ীরা মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে হাদিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। সেখানে ১৮ ডিসেম্বর মারা যান তিনি।

এই ঘটনায় গত মঙ্গলবার ‘শহীদি শপথ’ নেন ইনকিলাব মঞ্চের সদস্যরা। ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে ওসমান হাদি হত্যার বিচার সম্পন্ন করার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শীতলক্ষ্যা তৃতীয় সেতুর নতুন নাম ‘শহীদ ওসমান হাদি’

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ৩৬
শীতলক্ষ্যা তৃতীয় সেতুর টোল প্লাজার নামফলকের পাশে ‘শহীদ ওসমান হাদি’ নাম স্থাপন করেন ছাত্র-জনতা। ছবি: আজকের পত্রিকা
শীতলক্ষ্যা তৃতীয় সেতুর টোল প্লাজার নামফলকের পাশে ‘শহীদ ওসমান হাদি’ নাম স্থাপন করেন ছাত্র-জনতা। ছবি: আজকের পত্রিকা

নারায়ণগঞ্জ সদর ও বন্দর উপজেলার ওপর নির্মিত শীতলক্ষ্যা তৃতীয় সেতু উদ্বোধন করা হয় ২০২২ সালে। সে সময় জাতীয় পার্টির সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত নাসিম ওসমানের নামে সেতুটির নামকরণ করা হয়। তবে ৫ আগস্টের পর ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে সেতু থেকে নাসিম ওসমানের নাম মুছে ফেলা হয়। এবার জুলাই অভ্যুত্থানের অন্যতম যোদ্ধা ওসমান হাদির নামে সেতুটির নামকরণ করেছেন বন্দর এলাকার ছাত্র-জনতা।

শুক্রবার বিকেলে ওসমান হাদি হত্যার বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেন ছাত্র-জনতা। মিছিলটি বন্দর রেললাইন এলাকা থেকে শুরু হয়ে মদনগঞ্জ এলাকায় গিয়ে শেষ হয়। পরে শীতলক্ষ্যা তৃতীয় সেতুর টোল প্লাজার নামফলকের পাশে ‘শহীদ ওসমান হাদি’ নাম স্থাপন করেন আন্দোলনকারীরা।

নতুন নামকরণের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়। অনেকেই ছাত্র-জনতার এই উদ্যোগের প্রশংসা করেন। আয়োজকদের দাবি, ওসমান হাদিকে স্মরণীয় করে রাখা এবং তাঁর হত্যার বিচার নিশ্চিত করতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

আয়োজকদের একজন রেদোয়ান ইসলাম বলেন, ‘হাদি হত্যার বিচারের দাবিতে আমরা বিক্ষোভ মিছিল করেছি। এরপর সিদ্ধান্ত নিই, তাঁর নাম স্মরণীয় করে রাখতে সেতুর নামকরণ করব। এর আগে ফ্যাসিবাদী সরকারের সহযোগী নাসিম ওসমানের নাম মুছে দেওয়া হয়েছে। এবার সেখানে দেশের একজন মহানায়ক হাদি ভাইয়ের নাম স্থাপন করা হলো। শিগগিরই সড়ক ও জনপথ বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করে এই নাম স্থায়ী করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত