Ajker Patrika

স্বামীকে হারিয়ে অসহায় সীমা, ভাইয়ের জন্য আহাজারি

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
আপডেট : ১৬ জুলাই ২০২৪, ২২: ২১
স্বামীকে হারিয়ে অসহায় সীমা, ভাইয়ের জন্য আহাজারি

চট্টগ্রামে কোটাবিরোধী আন্দোলনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের সংঘর্ষের ঘটনার পর চমেক হাসপাতাল জরুরি বিভাগ স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে। ভিড় করছে উৎসুক জনতা।

বেলা সাড়ে ৩টা থেকে শুরু করে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত একের পর এক হতাহতকে আনা হয় হাসপাতালে। কারওর শরীরে গুলিবিদ্ধ, কেউ ছুরিকাঘাতের শিকার আবার কারওর শরীরে বেদম পেটানোর রক্তাক্ত দাগ। তাঁদের দেখতে ভিড় করছেন স্বজন, সহপাঠী, বন্ধু, বড় ভাই, শুভাকাঙ্ক্ষী।

আজ সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত হাসপাতালে সরেজমিনে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, সংঘর্ষের ঘটনার পর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে ছিল লোকজনের ভিড়। কয়েক মিনিট পরপর রেড ক্রিসেন্ট কিংবা সহকর্মীর দল হতাহতদের হাসপাতালে নিয়ে আসছে।

ওই সংঘর্ষের ঘটনায় সেখানে অর্ধশতের বেশি আহত ব্যক্তিকে হাসপাতালে আনতে দেখা যায়। এর বাইরে আরও অন্তত ১০/১২ জন হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

আহতদের মধ্যে তিনজন মারা যাওয়ার কথা নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. তসলিম উদ্দীন।

তিনি বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় আহত দুজনকে হাসপাতালে নেওয়ার আগেই মারা যান। অপরজনকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। তিনজনের মধ্যে দুজন গুলিবিদ্ধ ও অপর একজনের শরীরে মারধরের চিহ্ন ছিল।

ঘটনাস্থলে আন্দোলনকারী দুই পক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হতাহতদের মধ্যে কোটাবিরোধী আন্দোলনকারী ও আন্দোলনে বাধা দানকারী ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা রয়েছেন। কিছু সাধারণ পথচারীও রয়েছেন বলে জানা গেছে। তবে আহতদের মধ্যে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীই বেশি। তাঁদের হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে।

অন্যদিকে নিহত তিনজনের মরদেহ প্রথমে সাধারণ লাশঘরে রাখা হলেও পরে আলাদা আরেকটি কক্ষে সারিবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। সন্ধ্যা ৬টায় কাচের কক্ষটি ভেতর থেকে পরে সাদা কাপড় দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়, যাতে লাশগুলো দেখা না যায়।

ঘটনার সময় নিহতদের মধ্যে বিকেলে তাৎক্ষণিক দুজনের পরিচয় জানাতে পারেনি পুলিশ। পরে জানা যায় নিহতরা হলেন ওয়াসিম আকরাম ও মো. ফারুক। ওয়াসিম চট্টগ্রাম সরকারি কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের এবার ৩য় বর্ষ পরীক্ষা দিয়েছেন। তাঁর নিজ বাড়ি কক্সবাজার হলেও তাঁর পরিবার নগরের কাতালগঞ্জে থাকেন। ওয়াসিমের বড় ভাই মো. নোমান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। ওয়াসিম চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক। তিনি কোটা আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন।

ফারুক নগরের লালখান বাজারে একটি ফার্নিচারের দোকানে কাজ করেন। তাঁর বাড়ি কুমিল্লা হলেও নগরীতে তিনি তাঁর স্ত্রী সীমা আক্তার ও দুই সন্তানকে নিয়ে শুলকবহর এলাকায় থাকেন।

সন্ধ্যায় মৃত ঘোষণা করা আরেকজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তিনি চট্টগ্রাম নগরের ওমরগণি এমইএস কলেজের ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী মো. ফয়সাল আহমেদ শান্ত।

সংঘর্ষে নিহত ওয়াসিম আকরাম ও ফয়সাল আহমেদ শান্ত। ছবি: সংগৃহীততাঁকে বিকেলে হাসপাতালে নিয়ে আসা মিসকাত নামে কোটা আন্দোলনকারীদের একজন আজকের পত্রিকাকে বলেন, `তিনি আমাদের সঙ্গে কোটা আন্দোলনে ছিলেন। তবে ওনার নাম জানি না। সংঘর্ষের সময় ওনার পিঠে গুলি লাগে। পরে তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসি। তাঁর কাছে যে মোবাইলটি পাওয়া গেছে সেটার চার্জ ছিল না। বন্ধ ছিল। এ জন্য তাঁর পরিচয় জানা যাচ্ছে না।'

ওয়াসিম মারা যাওয়ার কথা শুনে বিকেলে ছুটে আসেন তাঁর বড় ভাই সাবেক ছাত্রদল নেতা মো. নোমান। লাশঘরে ভাইয়ের মরদেহ দেখে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। নোমানের বন্ধুরা তাঁকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করেন। ‘ওরে ভাই.... ’ বলে চিৎকার করে কাঁদতে থাকেন তিনি। নোমানের বন্ধুরা ঘটনার জন্য ছাত্রলীগকে দায়ী করে তাঁদের শাস্তির দাবি জানান।

এর কয়েক হাত দূরেই ছিলেন নিহত ফারুকের স্ত্রী সীমা আক্তার। তিনি হাসপাতালের দেয়ালের এককোনায় বসে কেঁদে যাচ্ছিলেন। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার স্বামীকে এনে দাও। তাঁকে ছাড়া আমি দুই বাচ্চাকে নিয়ে কীভাবে থাকব।’ বিলাপ করে লাগাতার কাঁদছিলেন তিনি। পরিবারের সদস্যরা তাঁকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করেন।

হাসপাতালে যুবলীগ-ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের ভিড়
ঘটনার পর হাসপাতালে দলীয় কর্মীদের দেখতে আসেন চট্টগ্রামে আলোচিত যুবলীগ নেতা হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর, যুবলীগ নেতা ও স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর নূর মোস্তফা টিনুসহ ছাত্রলীগের নেতারা। এ সময় হাসপাতালে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি ছাত্রদল ও কিছু কোটা আন্দোলনকারীদের উপস্থিতিও দেখা গেছে। তাঁদের কেউ কেউ সহপাঠীদের হারিয়ে সেখানে কান্না করছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হবিগঞ্জে রত্না বেইলি সেতু ভেঙে ট্রাক আটকা, দুর্ভোগে যাত্রীরা

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি
আজ সকাল ৯টার দিকে রত্না বেইলি সেতুর দুটি পাটাতন ভেঙে পাথরবোঝাই ট্রাক আটকে যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সকাল ৯টার দিকে রত্না বেইলি সেতুর দুটি পাটাতন ভেঙে পাথরবোঝাই ট্রাক আটকে যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

হবিগঞ্জ-বানিয়াচং আঞ্চলিক সড়কের রত্না বেইলি সেতুর দুটি পাটাতন ভেঙে পাথরবোঝাই ট্রাক আটকে যাওয়ায় বন্ধ হয়ে গেছে ওই পথে সব ধরনের যান চলাচল। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে শতাধিক যাত্রী ও ওই পথে চলাচলকারীরা। শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকাল ৯টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, জাফলং থেকে ছেড়ে আসা বানিয়াচংগামী পাথরবোঝাই একটি ট্রাক ব্রিজের ওপর ওঠামাত্রই ব্রিজের দুটি পাটাতন ভেঙে যায়। মুহূর্তেই ট্রাকের পেছনের দুটি চাকা ধসে পড়ে এবং পুরো ট্রাকটি ব্রিজে আটকে যায়।

এতে দীর্ঘ লাইনে আটকা পড়ে যাত্রীবাহী বাস, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, টমটম, প্রাইভেট কারসহ অসংখ্য যানবাহন। বিপাকে পড়েন সাধারণ মানুষ, শিক্ষার্থী, রোগী এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ব্যবসায়ীরা।

দুর্ঘটনার পর ব্রিজের একপাশ থেকে অন্যপাশে যাওয়ার জন্য যাত্রীরা ঝুঁকি নিয়ে হেঁটে ভাঙা অংশ অতিক্রম করছে। এতে যেকোনো মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে স্থানীয়রা।

এ বিষয়ে স্থানীয় এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘ট্রাকটি ব্রিজে উঠতেই জোরে শব্দ হয়। একটু পরই দেখি পাটাতন নিচে ধসে গেছে। ভাগ্য ভালো যে ট্রাকটি পুরোপুরি নিচে পড়ে যায়নি। তবে এখন তো ও পথে চলাচলকারীরা আটকা পড়ে আছে।’

যাত্রীরা জানান, রত্না বেইলি ব্রিজটি বহুদিন ধরে জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ভারী যানবাহনের অতিরিক্ত চাপের কারণে যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে—এমন আশঙ্কা দীর্ঘদিন ধরেই ছিল। এদিকে যাত্রীদের দাবি, এখানে যেন বেইলি ব্রিজের পরিবর্তে দ্রুত স্থায়ী সেতু নির্মাণ করা হয়, যাতে প্রতিদিনের এ দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে হবিগঞ্জ সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী জাকির হোসেন বলেন, ‘ব্রিজটি দ্রুত মেরামত করার কাজ চলছে। পাথরবোঝাই ট্রাকটিতে বেশি লোড থাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আড়িয়াল খাঁ নদের তীর থেকে অটোরিকশাচালকের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার

নরসিংদী প্রতিনিধি
ঘটনাস্থলে স্থানীয়দের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঘটনাস্থলে স্থানীয়দের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা

নরসিংদীর বেলাব উপজেলার আড়িয়াল খাঁ নদের তীর থেকে আব্দুর রশিদ (৪০) নামের এক অটোরিকশাচালকের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার বিন্নাবাইদ ইউনিয়নের ভাওয়ালেরচর এলাকায় নদীর তীর থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।

আব্দুর রশিদ কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার লোহাজুরী ইউনিয়নের দক্ষিণ লোহাজুরী গ্রামের বাসিন্দা। পেশায় তিনি ছিলেন অটোরিকশাচালক; তবে নিয়মিত আড়িয়াল খাঁ নদে বড়শি দিয়ে মাছ শিকার করা ছিল তাঁর নেশা।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সকাল ৬টার দিকে ভাওয়ালেরচর এলাকায় নদীর পাড়ে রক্তাক্ত লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশে খবর দেন। লাশের পাশেই মোবাইল ফোন ও অটোরিকশাটি ছিল। পরে স্বজনেরা এসে লাশ শনাক্ত করেন। আব্দুর রশিদের মাথা ও শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রাথমিকভাবে পুলিশ মনে করছে, তিনি দুষ্কৃতকারীর হামলার শিকার হয়েছেন।

নিহত ব্যক্তির ভাই কাজল মিয়া বলেন, ‘প্রতিদিন বিকেল থেকে রাত ১১-১২টা পর্যন্ত অটোরিকশা চালিয়ে তারপর নদীর পাড়ে বসে মাছ শিকার করে বাড়ি ফিরত ভাই। কিন্তু গতকাল রাতে আর বাড়ি ফেরেনি। সকালে খবর পেয়ে নদীর পাড়ে এসে ভাইয়ের মরদেহ দেখতে পাই।’

নিহত ব্যক্তির ছেলে হৃদয় বলেন, ‘রাতে বাড়ি না ফেরায় কল দিলে ফোন বন্ধ পাই। সকালে খবর শুনে নদীর পাড়ে এসে বাবার মরদেহ, মোবাইল ও অটোরিকশা পড়ে থাকতে দেখি।’

বেলাব থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নাসির উদ্দিন বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। বিষয়টি পিবিআইকে জানানো হয়েছে। ঘটনাটি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে। আইনগত প্রক্রিয়া চলমান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৬৭ বছর পর রামেক হাসপাতালে মানসিক রোগীদের জন্য পূর্ণাঙ্গ ওয়ার্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

অবশেষে ৬৮ বছরে পা দিতে চলা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে মানসিক রোগীদের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ মনোরোগ ওয়ার্ড চালু হলো। হাসপাতালটির বহির্বিভাগে প্রতিদিনই উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানসিক রোগী চিকিৎসা নিতে এলেও ভর্তির সুযোগ ছিল না। গুরুতর রোগীদের কিছু ক্ষেত্রে মেডিসিন বিভাগে রাখা হলেও, পূর্ণাঙ্গ ওয়ার্ডের অভাবে এতদিন অনেককেই ফিরিয়ে দিতে হতো।

হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার ৬৭ বছর পর এই প্রথম ২৫ শয্যার একটি সুসজ্জিত মনোরোগ ওয়ার্ড চালু করা হয়েছে। হাসপাতালটির পুরাতন আইসিইউ ভবনে এই নতুন ওয়ার্ডটি গড়ে তোলা হয়েছে।

এই ওয়ার্ডে রোগী ভর্তির জন্য নির্দিষ্ট বিন্যাস রাখা হয়েছে। এর মধ্যে পুরুষদের জন্য ১০টি, নারীদের জন্য ৭ টি, শিশু-কিশোরদের জন্য ৫টি এবং উচ্চ পর্যবেক্ষণের জন্য ৩টি শয্যা সংরক্ষিত রয়েছে। এ ছাড়া রোগীদের চিকিৎসার সুবিধার জন্য থেরাপি ও কাউন্সেলিং রুমসহ আধুনিক সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ওয়ার্ডের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মোস্তফা আলী।

এই ওয়ার্ডটি চালুর পেছনে সবচেয়ে বড় কারণ ছিল কলেজের স্বীকৃতি বজায় রাখা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আগামী মার্চ মাসেই ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন ফর মেডিকেল এডুকেশন (ডব্লিউএফএমই) থেকে একটি প্রতিনিধি দল রাজশাহী মেডিকেল কলেজ পরিদর্শনে আসবে। পরিদর্শনকালে মনোরোগ বিভাগের ওয়ার্ড না পেলে কলেজের পয়েন্ট কমে যাওয়ার এবং অ্যাক্রিডিটেশনে বড় ধরনের সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা ছিল। এতে করে এই কলেজের শিক্ষার্থীদের দেশের বাইরে উচ্চশিক্ষা বা পড়াশোনা করার সুযোগ কমে যেত। এ ছাড়া এফসিপিএস এবং ডিপ্লোমা কোর্সের শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণের জন্যও এমন একটি ওয়ার্ড জরুরি ছিল।

কলেজ কর্তৃপক্ষের অনুরোধ শুনে সদ্যবিদায়ী পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফএম শামীম আহাম্মদ দ্রুত এই ওয়ার্ড চালুর উদ্যোগ নেন এবং গত বুধবার এটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনের সময় তাঁর সঙ্গে নতুন পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পি কে এম মাসুদ-উল-ইসলামসহ মনোরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা উপস্থিত ছিলেন।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফএম শামীম আহাম্মদ এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘উত্তরবঙ্গের সবচেয়ে বড় এই হাসপাতালে যে ৬৭ বছরেও মানসিক রোগীদের জন্য ওয়ার্ড চালু হয়নি, এটি সত্যিই অবাক হওয়ার মতো বিষয়। আমরা প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে এটি চালু করেছি। এখন থেকে এ অঞ্চলের মানসিক রোগীরা হাসপাতালে ভর্তি থেকেও উন্নত চিকিৎসা নিতে পারবেন।’

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফএম শামীম আহাম্মদ ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি রামেক হাসপাতালের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তাঁর উদ্যোগেগত ২৩ অক্টোবর শুধু সাপে কাটা রোগীদের জন্য বিশেষায়িত ওয়ার্ড চালু করা হয়।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই বিশেষায়িত ওয়ার্ড চালুর পর থেকে এখন পর্যন্ত রামেক হাসপাতালে একজনও সাপে কাটা রোগীর মৃত্যু হয়নি, যেখানে আগে প্রায় প্রতিদিনই এই রোগে মৃত্যুর ঘটনা ঘটতো। গতকাল বৃহস্পতিবার তিনি নতুন পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পি কে এম মাসুদ-উল-ইসলামের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাজমিস্ত্রির বাড়ি থেকে অস্ত্র-গুলি উদ্ধার

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
অভিযানে পাওয়া অস্ত্রসামগ্রী। ছবি: আজকের পত্রিকা
অভিযানে পাওয়া অস্ত্রসামগ্রী। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায় সোহাগ হোসেন নামের এক রাজমিস্ত্রির বাড়িতে অভিযান চালিয়ে দুটি পিস্তল ও একটি ওয়ান শুটারগান উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ওসমানপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ওসমানপুর কলপাড়া গ্রামে এই অভিযান চালান সেনাসদস্যরা। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় খোকসা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোশাররফ হোসেন আজকের পত্রিকাকে এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ক্যাপ্টেন মেহেদীর নেতৃত্বে কুষ্টিয়া সেনাক্যাম্পের রওশন আরা রেজিমেন্ট আর্টিলারি ইউনিটের একটি দল ওসমানপুর গ্রামের সোহাগ হোসেন নামের এক যুবকের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় বাড়ি তল্লাশি করে দুটি পিস্তল, একটি ওয়ান শুটারগান, গুলি, দেশীয় চাকু ও হাঁসুয়া পাওয়া যায়। তবে অভিযানে কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। সোহাগ হোসেন পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। তাঁর বাবার নাম আশরাফ হোসেন।

পুলিশ পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন বলেন, সেনাবাহিনীর অভিযানে উদ্ধার করা অস্ত্র থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত