Ajker Patrika

গান গেয়েই সংসার চলে আমির হোসেনের

হাতিয়া (নোয়াখালী) ইসমাইল হোসেন কিরন
গান গেয়েই সংসার চলে আমির হোসেনের

শিল্পী হিসেবে নেই কোনো প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি। গানের সময় প্রয়োজন হয় না বাদ্যযন্ত্রের। নিজেই গান রচনা করে পরিবেশন করেন। পথে, ঘাটে, হাঁটে যে কারও অনুরোধে গান গেয়ে শোনান। গান শুনে মুগ্ধ হয়ে অনেকেই তাঁর গান ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করেন। এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরিচিতি লাভ করেছেন হাতিয়ার বুড়িরচর ইউনিয়নের প্রত্যন্ত গ্রামের হতদরিদ্র শিল্পী আমির হোসেন। 

আমির হোসেন বলেন, 'প্রতিদিনই অভাবের সঙ্গে যুদ্ধ করতে হয়। পরিবারে মা নেই। বৃদ্ধ পিতা ও চার সন্তান আর স্ত্রীকে নিয়ে চলছে সংসার। নিজের মনের কষ্ট দূর করতেই মূলত গান গাওয়া।' 

এলাকা সূত্রে জানা যায়, দুই বার নদীগর্ভে বিলীন হয় আমির হোসেনের বাড়ি। ছয় বছর আগে এক একর জায়গা নিয়ে বসতি শুরু করেন হাতিয়ার চানন্দী ইউনিয়নের কেরিংচরে। অব্যাহত নদী ভাঙনে ভিটেমাটি হারিয়ে পুনরায় বসতি স্থাপন করেন একই এলাকার জয়ের বাজারের কাছে। দুই বছর পর তাও মেঘনায় বিলীন হয়। 

বর্তমানে তিনি হাতিয়ার বুড়িরচর ইউনিয়নের জোড়খালী গ্রামে বসবাস করছেন। নদী ভাঙনের ফলে সহায় সম্বল হারিয়ে অভাব অনটনে দিন কাটাচ্ছেন তিনি। নিজের অবস্থার সঙ্গে আরও অনেকের দুরবস্থা দেখে রচনা করেন নদী ভাঙন নিয়ে গান। নদী ভাঙন নিয়ে তাঁর গান এখন হাতিয়ার অনেক মানুষের মুখে মুখে।

মূলত সাত সদস্যের পরিবারের প্রধান আমির হোসেন। তিনি পেশায় দিন মজুর। সারা দিন বিভিন্ন জনের খেতে কাজ করে যে টাকা পান তাতে মোটেও সংসার চালানো যায় না। এ জন্য বিকেলের পরে অবসর সময়টুকু বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে গান পরিবেশন করে বাড়তি উপার্জন করেন। তাতেও চলে না তাঁর সংসার। পরিবারের সদস্য সংখ্যা বেশি হওয়ায় অনেকটা অনাহারে অর্ধাহারে কাটে দিনকাল।

সম্প্রতি আমির হোসেনের সঙ্গে দেখা হয় তাঁর বাড়িতে। সংবাদকর্মীদের দেখে প্রতিবেশীদের কাছ থেকে দুটি চেয়ার এনে বসতে দেন। পাশেই দেখা যায় তাঁর জরাজীর্ণ কুড়ে ঘর। ঘরের অধিকাংশ জোড়া তালি দিয়ে তৈরি করা। ওপরে চালের একপাশে কিছু টিন থাকলেও আরেক পাশে ত্রিপাল দিয়ে বৃষ্টির পানি থেকে ঠেকানোর চেষ্টা করা হয়েছে। ঘরে একটি মাত্র চৌকি, তাতে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়েসহ ছয়জনকে ঘুমাতে হয়। ঘরে অতিরিক্ত জায়গা না থাকায় বাবাকে ঘুমাতে হয় প্রতিবেশীদের ঘরে।

আমির হোসেনের মেয়ে আমেনা (১২) স্থানীয় আসাদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী। বাবার বিষয়ে জানতে চাইলে সে বলে, 'বাবার উপার্জনে চলে সংসার। মাঝে মাঝে না খেয়ে যেতে হয় স্কুলে। পঞ্চম শ্রেণিতে পড়লেও সরকারি উপবৃত্তি পায় না সে। কারণ তাঁর জন্ম নিবন্ধন কার্ড নেই।'

সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ইউনিয়নের নির্বাচনে গান পরিবেশন করছেন শিল্পী আমির হোসেনআমির হোসেনের বৃদ্ধ বাবা গোলাম মাওলা বলেন, 'অভাবের সংসারে প্রতি বেলায় খাবার জোটে না। বসত ঘরের অনেক জায়গা দিয়ে বৃষ্টির পানি পড়ে। অর্থের অভাবে মেরামত করতে পারছি না। সরকারিভাবে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে কোন সাহায্য সহযোগিতাও পাচ্ছি না।'

এ বিষয়ে জোড়খালী গ্রামের নবনির্বাচিত ইউপি সদস্য লিটন চৌধুরী বলেন, 'গ্রামের লোকজন আমির হোসেনকে চিনে ভান্ডারি হিসেবে। তাঁর গান অনেকের ভালো লাগে। তাই সামাজিক কোনো অনুষ্ঠান হলে যেতে হয় আমির হোসেনকে। নিজের সঙ্গে নিয়ে যান একটি খালি কলসি। সেখানে কলসির তালের সঙ্গে তাল মিলিয়ে গান করেন।'

লিটন চৌধুরী আরও বলেন, 'অন্যের জায়গায় বসতি করে থাকতে হয় আমির হোসেনকে। নির্বাচনের পরে ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম শুরু হলে তাঁকে একটি ঘর তৈরি করে দেওয়ার চেষ্টা করব।' 

এলাকা সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি শেষ হয়েছে হাতিয়ায় সাতটি ইউনিয়নের নির্বাচন। নির্বাচনে আমির হোসেনের চাহিদা ভালো ছিল। বিভিন্ন প্রার্থীর হয়ে গান পরিবেশন করেন তিনি। এতে ১৫ দিনে গান পরিবেশন করে তিনি প্রায় ২০ হাজার টাকা উপার্জন করেন। প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি না থাকলেও কণ্ঠ সুমধুর থাকায় এরই মধ্যে অনেকের মন কেড়েছেন এই শিল্পী। 

এ বিষয়ে হাতিয়া বঙ্গবন্ধু শিল্পী গোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন বলেন, 'সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখা যায় বাদ্যযন্ত্র ছাড়া বিভিন্ন বাজারের চায়ের দোকানে বসে গান পরিবেশন করছেন আমির হোসেন। আমি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হওয়া তাঁর অনেক গান দেখেছি। তিনি যেভাবে সমাজের বাস্তব চিত্র তুলে ধরে গান রচনা ও পরিবেশন করেন তা অসাধারণ। আমি মনে করি ভালো তালিম পেলে গানে আরও ভালো করবে আমির হোসেন।'

হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইমরান হোসেন বলেন, 'গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিল্পী আমির হোসেনের প্রতিভার কথা আমি শুনেছি। তাঁর প্রতিভা কাজে লাগানোর জন্য আমরা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল ধরনের সহযোগিতা করব।'     

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভোট চুরির এমপি হতে চাই না: অ্যাটর্নি জেনারেল

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়: চিকিৎসায় শিক্ষার্থীপ্রতি বরাদ্দ মাত্র ১২৫ টাকা

২,০০০ পুলিশের বলয়ে থাকবেন তারেক রহমান

বাগেরহাটের চিতলমারী: অবৈধ বালু উত্তোলনে বিলীন হচ্ছে ফসলি জমি ও রাস্তাঘাট

‘অপারেশন জিরো টলারেন্স ফর ফ্যাসিজম’ কর্মসূচি ঘোষণা রাকসুর জিএস আম্মারের

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

দৌলতপুরে সূর্যের দেখা নেই, বাড়ছে শীতের তীব্রতা

দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি 
সকালে রাস্তাঘাটে মানুষের আনাগোনা খুব কম। অফিসগামী যাত্রী ছাড়া তেমন কেউ বাইরে বের হচ্ছে না। ছবি: আজকের পত্রিকা
সকালে রাস্তাঘাটে মানুষের আনাগোনা খুব কম। অফিসগামী যাত্রী ছাড়া তেমন কেউ বাইরে বের হচ্ছে না। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় গতকাল শনিবার থেকে আজ রোববার সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত সূর্যের দেখা মেলেনি। ঘন কুয়াশা না থাকলেও আকাশ মেঘাচ্ছন্ন রয়েছে। উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে বয়ে যাওয়া হিমেল হাওয়ায় শীতের তীব্রতা বেড়েছে।

তীব্র শীতের কারণে কাজে যেতে না পেরে বিপাকে পড়েছেন উপজেলার নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ। শীতের প্রভাব পড়েছে হাটবাজারেও। অধিকাংশ বাজারে দোকানপাট খুলতে দেখা গেছে সকাল ১০টার পর। পেটের তাগিদে অনেকেই ঘরের বাইরে বের হলেও কাজ না পেয়ে দুর্ভোগে পড়ছেন। অপর দিকে শিশু ও বৃদ্ধরা শীতজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।

দৌলতপুর উপজেলায় নিজস্ব আবহাওয়া অফিস না থাকায় জেলার কুমারখালী আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, গতকাল থেকে শুরু হওয়া এই আবহাওয়া আরও এক দিন, অর্থাৎ সোমবার পর্যন্ত স্থিতিশীল থাকতে পারে। মঙ্গলবার থেকে আবহাওয়ার কিছুটা উন্নতি হলেও তাপমাত্রা তুলনামূলক কম থাকবে। রোববার কুষ্টিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

দিনমজুর মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘ঠান্ডা ও মেঘাচ্ছন্ন আবহাওয়ার কারণে আজ কাজে যেতে পারিনি। তা ছাড়া আমার ঠান্ডাজনিত রোগ আছে, তাই বাইরে বের হওয়াও কষ্টকর।’

উপজেলার মথুরাপুর বাজারের অটোরিকশাচালক মামুন হোসেন বলেন, ‘সকাল থেকে মানুষের আনাগোনা কম। অফিসগামী যাত্রী ছাড়া তেমন কেউ বাইরে বের হচ্ছে না। শীতের কারণে যাতায়াত কমে গেছে, আয়ও আগের তুলনায় অনেক কম।’

কুষ্টিয়ার কুমারখালী আবহাওয়া কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামুনুর রশীদ বলেন, ঘন কুয়াশা না থাকলেও মেঘাচ্ছন্ন আকাশের কারণে দু-এক দিন এমন আবহাওয়া থাকতে পারে। তবে দুপুরের পর সূর্যের দেখা মিলতে পারে এবং মঙ্গলবার থেকে আবহাওয়া আরও উন্নত হবে।

এদিকে শীতের প্রভাবে হাসপাতালে শীতজনিত রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে। শিশু-বৃদ্ধসহ বিভিন্ন বয়সের মানুষ জ্বর, সর্দি ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিন হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে।

দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা তৌহিদুল হাসান তুহিন বলেন, শীত থেকে বাঁচতে সবাইকে গরম পোশাক পরতে এবং অপ্রয়োজনে বাইরে বের না হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। বিশেষ করে শিশুদের সব সময় গরম পোশাকে রাখতে এবং গরম খাবার খাওয়াতে বলা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভোট চুরির এমপি হতে চাই না: অ্যাটর্নি জেনারেল

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়: চিকিৎসায় শিক্ষার্থীপ্রতি বরাদ্দ মাত্র ১২৫ টাকা

২,০০০ পুলিশের বলয়ে থাকবেন তারেক রহমান

বাগেরহাটের চিতলমারী: অবৈধ বালু উত্তোলনে বিলীন হচ্ছে ফসলি জমি ও রাস্তাঘাট

‘অপারেশন জিরো টলারেন্স ফর ফ্যাসিজম’ কর্মসূচি ঘোষণা রাকসুর জিএস আম্মারের

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মধুপুরে পরিবহনের ধাক্কায় পথচারী নিহত

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার জলছত্র এলাকায় পরিবহনের ধাক্কায় আবু হানিফা আলী (৫৫) নামের এক পথচারী নিহত হয়েছেন। রোববার (২১ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৬টার দিকে ময়মনসিংহ-টাঙ্গাইল আঞ্চলিক মহাসড়কের জলছত্র (ধরদরিয়া) এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত আবু হানিফা আলী বেরিবাইদ ইউনিয়নের চুনিয়া দিগলবাইদ এলাকার বাসিন্দা এবং মৃত ইয়াছিন আলীর ছেলে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ভোরে জলছত্র বাজার মসজিদে ফজরের নামাজ আদায় শেষে তিনি রাস্তার পাশ দিয়ে হেঁটে বাড়ির দিকে যাচ্ছিলেন। এ সময় পেছন দিক থেকে আসা একটি দ্রুতগামী গাড়ি তাঁকে সজোরে ধাক্কা দিলে তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান। খবর পেয়ে অরনখোলা পুলিশ ফাঁড়ির একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে।

অরনখোলা পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) বিমল চন্দ পাইন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘অজ্ঞাত পরিবহনের ধাক্কায় একজন পথচারী নিহত হয়েছেন। মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে এবং আইনগত প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।’

বিমল চন্দ পাইন জানান, ঘাতক পরিবহন শনাক্ত ও চালককে আটক করার জন্য তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভোট চুরির এমপি হতে চাই না: অ্যাটর্নি জেনারেল

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়: চিকিৎসায় শিক্ষার্থীপ্রতি বরাদ্দ মাত্র ১২৫ টাকা

২,০০০ পুলিশের বলয়ে থাকবেন তারেক রহমান

বাগেরহাটের চিতলমারী: অবৈধ বালু উত্তোলনে বিলীন হচ্ছে ফসলি জমি ও রাস্তাঘাট

‘অপারেশন জিরো টলারেন্স ফর ফ্যাসিজম’ কর্মসূচি ঘোষণা রাকসুর জিএস আম্মারের

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রাজধানীতে মধ্যরাতে ছুরিকাঘাতে যুবক নিহত, বাসের ধাক্কায় ছিনতাইকারী সংকটাপন্ন

ঢামেক প্রতিবেদক
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে আশিষ জোয়াদ্দার (৩৩) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। তাঁর কাছ থেকে মোবাইল ও টাকা ছিনিয়ে পালানোর সময় বাসের ধাক্কায় এক ছিনতাইকারী গুরুতর আহত হয়েছে।

গতকাল শনিবার দিবাগত রাত ২টার দিকে যাত্রাবাড়ীর আড়তের সামনে থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় পথচারীরা আশিষকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসেন। পরে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

আশিষ জোয়াদ্দারকে হাসপাতালে নিয়ে আসা স্থানীয় এক দোকানি মাহমুদুর রহমান তুহিন জানান, রাতে যাত্রাবাড়ী আড়তের সামনে ফ্লাইওভার ব্রিজের নিচে মানুষের ভিড় দেখতে পান তিনি। তখন এগিয়ে গিয়ে দেখেন রক্তাক্ত অবস্থায় একজন পড়ে আছেন। ওই ব্যক্তিকে পূর্বপরিচিত হিসেবে চেনেন তিনি। এরপর দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত বলে জানান।

তুহিন আরও বলেন, ওই ব্যক্তির নাম আশিষ জোয়াদ্দার। তাঁর বাড়ি মাগুরা জেলায়। যাত্রাবাড়ীর বিবির বাগিচা ১ নম্বর গেটে তিনি থাকতেন। যাত্রাবাড়ীসহ আশপাশে ৭-৮টি ভ্যান গাড়িতে করে জামাকাপড় বিক্রি করা হয় এমন একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার তিনি। তাঁদের মূল দোকান যাত্রাবাড়ী শহীদ ফারুক সড়কে। সেখানে বসেই ব্যবসার হিসাবপত্র রাখতেন আশিষ। গ্রাম থেকে শনিবার রাতেই ঢাকায় ফিরছিলেন। তাঁর সঙ্গে কয়েকটি ব্যাগ ছিল। এগুলো দেখে ফ্লাইওভারের নিচে ৩-৪ জন ছিনতাইকারী তাঁর পথরোধ করে। তবে কোনো কিছু দিতে না চাইলে ছিনতাইকারীরা তাঁর বুকে ছুরিকাঘাত করে। এ সময় চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে ছিনতাইকারীরা তাঁর সঙ্গে থাকা আইফোন ও টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়।

এদিকে যাত্রাবাড়ী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল করিম জানান, প্রাথমিকভাবে জানা গেছে ছিনতাইকারীরা ওই যুবকের বুকে ছুরিকাঘাত করেছে। হাসপাতালে নেওয়ার পর তিনি মারা গেছেন। ছিনতাইকারীরা তার সঙ্গে থাকে একটি আইফোন সেট, টাকা ও স্বর্ণের আংটি ছিনিয়ে নিয়েছে বলে তার পরিবার জানিয়েছে। ছিনতাই করে পালিয়ে যাওয়ার সময় পথচারীদের ধাওয়ায় বাসের সঙ্গে ধাক্কা লেগে এক ছিনতাইকারী আহত হয়েছে। তাকেও উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সে বর্তমানে পুলিশ পাহারায় ভর্তি রয়েছে। তার অবস্থা গুরুতর। সে তার নাম-পরিচয় কিছুই বলতে পারছে না।

এসআই আব্দুর করিম আরও জানান, এ ঘটনায় একটি হত্যা মামলা প্রক্রিয়াধীন এবং তদন্ত চলছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভোট চুরির এমপি হতে চাই না: অ্যাটর্নি জেনারেল

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়: চিকিৎসায় শিক্ষার্থীপ্রতি বরাদ্দ মাত্র ১২৫ টাকা

২,০০০ পুলিশের বলয়ে থাকবেন তারেক রহমান

বাগেরহাটের চিতলমারী: অবৈধ বালু উত্তোলনে বিলীন হচ্ছে ফসলি জমি ও রাস্তাঘাট

‘অপারেশন জিরো টলারেন্স ফর ফ্যাসিজম’ কর্মসূচি ঘোষণা রাকসুর জিএস আম্মারের

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

এনসিপির হান্নান মাসউদকে হত্যার হুমকি: যুবক গ্রেপ্তার

­হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
গ্রেপ্তার করা ইসরাত রায়হান অমি। ছবি: আজকের পত্রিকা
গ্রেপ্তার করা ইসরাত রায়হান অমি। ছবি: আজকের পত্রিকা

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক ও নোয়াখালী-৬ (হাতিয়া) আসনে শাপলা কলি প্রতীকের সংসদ সদস্য প্রার্থী আব্দুল হান্নান মাসউদ এবং তাঁর কর্মীদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গ্রেপ্তার যুবকের নাম ইসরাত রায়হান অমি। শনিবার (২০ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে হাতিয়া উপজেলার চরইশ্বর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের নন্দরোড এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

পুলিশ জানায়, ইসরাত রায়হান অমি চরইশ্বর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল হালিম আজাদের ছেলে। তাঁর বিরুদ্ধে হাতিয়া থানায় তিনটি মামলা রয়েছে।

পুলিশের তথ্যমতে, শুক্রবার রাতে ইসরাত রায়হান অমি এনসিপির এক কর্মীর কাছে মেসেঞ্জারে উসকানিমূলক বার্তা পাঠান। ওই বার্তায় তিনি লেখেন, আব্দুল হালিম আজাদকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করা হলে হান্নান মাসউদ, তানভীরসহ অন্য নেতাদের হাতিয়ার উত্তরাঞ্চলে চলাচল ‘হারাম’ করে দেওয়া হবে। বার্তায় আরও উল্লেখ করা হয়, ‘আমাদের নেতা-কর্মীরা সরাসরি গিলে খেয়ে ফেলবে।’

এ বিষয়ে হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল আলম বলেন, অভিযান চালিয়ে ইসরাত রায়হান অমিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনগত প্রক্রিয়া চলমান। তিনি আরও বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বা সরাসরি উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়ে যারা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অশান্ত করার চেষ্টা করবে, তাদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভোট চুরির এমপি হতে চাই না: অ্যাটর্নি জেনারেল

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়: চিকিৎসায় শিক্ষার্থীপ্রতি বরাদ্দ মাত্র ১২৫ টাকা

২,০০০ পুলিশের বলয়ে থাকবেন তারেক রহমান

বাগেরহাটের চিতলমারী: অবৈধ বালু উত্তোলনে বিলীন হচ্ছে ফসলি জমি ও রাস্তাঘাট

‘অপারেশন জিরো টলারেন্স ফর ফ্যাসিজম’ কর্মসূচি ঘোষণা রাকসুর জিএস আম্মারের

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত