Ajker Patrika

নোয়াখালীতে জলাবদ্ধতায় বন্দী কয়েক লাখ মানুষ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা

নোয়াখালী প্রতিনিধি
আপডেট : ২০ আগস্ট ২০২৪, ১৮: ৩৫
নোয়াখালীতে জলাবদ্ধতায় বন্দী কয়েক লাখ মানুষ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা

চলতি মাসের কয়েক দফায় টানা বৃষ্টিতে ভয়াবহ জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে নোয়াখালীর ৯টি উপজেলা ও ৮টি পৌরসভায়। ইতিমধ্যে জেলার বেশির ভাগ সড়ক, বাসাবাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে। ভেসে গেছে কয়েক শ মাছের ঘের, প্রজেক্ট, শাকসবজি ও আমন ধানের বীজতলা। পানিবন্দী হয়ে বিপাকে জেলার প্রায় ৮০ ভাগ মানুষ। এরই মধ্যে জলাবদ্ধ এলাকাগুলোর প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ বিদ্যালয়সহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

বিভিন্ন এলাকা ঘুরে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চলতি মাসের কয়েক দফা টানা ভারী বর্ষণে জেলার কবিরহাট, কোম্পানীগঞ্জ, বেগমগঞ্জ, সেনবাগ, সদর ও সুবর্ণচর উপজেলার বেশির ভাগ এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। নোয়াখালী পৌরসভাসহ বাকি পৌর এলাকাগুলোর অবস্থা একই। পানি ঢুকেছে জেলার অনেক সরকারি দপ্তরেও।

পানি নিষ্কাশন, নালা ব্যবস্থা না থাকা এবং নোয়াখালী খাল ছাড়া বাকি লিংকেজ খালগুলো পরিষ্কার না থাকা ও অবৈধ দখলের কারণে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বাসাবাড়িতে পানি প্রবেশ করে ব্যাহত হচ্ছে রান্নার কাজ। প্রধান সড়ক ছাড়া বেশির ভাগ সড়ক পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় কমে গেছে যানবাহন চলাচল।

জেলা শহর মাইজদীর জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনের সড়ক, জেলা জজ আদালত আঙিনা, রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি ভবন, জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয়, ডিবি কার্যালয়, জেলা মৎস্য কার্যালয়, বিদ্যুৎ কার্যালয়, রেকর্ড বুক, নোয়াখালী প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের নিচতলা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে।

পানির নিচে প্রায় ৯০ ভাগ সড়ক। এর মধ্যে অধিকাংশ সড়ক ভাঙাচোরা তার ওপর হাঁটু পরিমাণ পানি জমে থাকায় সড়কে মানুষ ও যান চলাচল করতে বেগ পেতে হচ্ছে।

এ ছাড়া জেলা শহরের লক্ষ্মীনারায়ণপুর, হরিনারায়ণপুর, সোনাপুর, হাউজিং, মাইজদী বাজার, কৃষ্ণরামপুর, মাস্টারপাড়া, মধুপুরসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, এসব এলাকার প্রায় সব সড়ক বৃষ্টির পানিতে ডুবে আছে। জলমগ্ন হয়েছে শহরের বেশির ভাগ বাসাবাড়ির আঙিনা। পানিতে প্লাবিত হয়েছে অনেক আধাপাকা বসতঘর।

কবিরহাট উপজেলার বাসিন্দা রায়হান বিন ওয়াহিদ জানান, ৪-৫ দিনের বৃষ্টিতে কবিরহাট কলেজ সড়কে প্রায় কোমর পরিমাণ পানি উঠেছে, যা প্রতিদিন বৃষ্টিতে আরও বাড়ছে। এ ছাড়া উপজেলার বেশির ভাগ বাড়ি-ঘরের ভেতরে ও প্রতিটি উঠানে পানি জমেছে হাঁটু পরিমাণ।

উপজেলায় এ জলাবদ্ধতার জন্য তিনি ধানশালিক ইউনিয়নের কয়েকটি খালের ওপর বাঁধ নির্মাণকে দায়ী করেছেন রায়হান। এ দুটি বাঁধ কেটে দেওয়া হলে দ্রুত সময়ের মধ্যে এ জলাবদ্ধতা থেকে উপজেলাবাসী নিস্তার পাবে বলে আশা করেন তিনি।

জেলা আবহাওয়া কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম জানান, গত এক মাসে প্রায় ১ হাজার মিলিমিটারের মতো বৃষ্টিপাত হয়েছে। যেখানে বৃষ্টির গড় অনুপাত ছিল ২ হাজার ৪০ মিলিমিটার। সবশেষ গত সোমবার ভোর ৬টা থেকে আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ১৯৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত জেলায় রেকর্ড করা হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) নোয়াখালীর নির্বাহী প্রকৌশলী মুন্সী আমির ফয়সাল বলেন, গত এক মাসে বৃষ্টির পানি নিষ্কাশন না হওয়ার কারণে এ জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় জেলায় প্রায় ৪০০ কিলোমিটার খাল খনন করা হয়েছে। কিছু লিংকেজ খাল পরিষ্কার না থাকায় পানি স্বাভাবিকভাবে নামতে পারছে না। বৃষ্টিপাত কমে গেলে দ্রুত পানি নেমে যাবে বলে আশা করেন তিনি।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. মীরা রানী দাস বলেন, চলতি মৌসুমে জেলার ৯টি উপজেলায় প্রায় ৬ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে আমনের বীজতলা করা হয়েছিল। এরই মধ্যে অনেক জায়গায় ধানের চারা আসতে শুরু করেছে, কিন্তু জলাবদ্ধতায় নষ্ট হয়ে গেছে প্রায় ৪ হাজার ১০০ হেক্টর বীজতলা। এ ছাড়া ৬ হাজার হেক্টর জমির প্রায় অর্ধেক পানিতে তলিয়ে গেছে।

জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বলেন, জেলায় প্রায় সবগুলো উপজেলায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে অনেক মানুষ পানিবন্দী। প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চবিদ্যালয়সহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ ঘোষণা করতে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

জেলা প্রশাসক আরও বলেন, নোয়াখালীতে জলাবদ্ধতা দীর্ঘদিনের পুরোনো সমস্যা। বিভিন্ন সময় এ বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করা হয়েছে। অবৈধ স্থাপনা যেগুলো পানি চলাচলে বাধা তৈরি করে সেগুলো উচ্ছেদে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। খালের ওপর অবৈধ বাঁধ ও স্থাপনা উচ্ছেদে পাউবোকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় যা যা করার দরকার তা করতে প্রশাসন প্রস্তুত আছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

এনসিপি নেতা গুলিবিদ্ধ: রহস্য উদ্‌ঘাটনে এক তরুণীকে খুঁজছে পুলিশ

কাজী শামিম আহমেদ, খুলনা
জাতীয় শ্রমিক শক্তির বিভাগীয় কমিটির প্রতিনিধি মো. মোতালেব শিকদার (৪০)। ছবি: সংগৃহীত
জাতীয় শ্রমিক শক্তির বিভাগীয় কমিটির প্রতিনিধি মো. মোতালেব শিকদার (৪০)। ছবি: সংগৃহীত

খুলনায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সহযোগী সংগঠন জাতীয় শ্রমিক শক্তির বিভাগীয় কমিটির প্রতিনিধি মো. মোতালেব শিকদারের গুলিবিদ্ধের ঘটনা উদ্‌ঘাটনে এক তরুণীকে খুঁজছে পুলিশ। সোনাডাঙ্গা থানাধীন আল আকসা মজিদ সরণির ১০৯ নম্বর রোডের মুক্তা হাউসের নিচতলার ভাড়াটে হিসেবে ছিলেন ওই তরুণী। ঘটনার পর থেকে তিনি পলাতক।

বাড়ির মালিকের স্ত্রী আশরাফুন্নাহার বলেন, ‘স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে তন্বী নামের এক তরুণী এক মাস (ডিসেম্বরের ১ তারিখ) আগে নিচের ফ্লোরটি ভাড়া নেয়। ওই তরুণী নিজেকে এনজিও কর্মী হিসেবে দাবি করে প্রায় সময় বাড়ির বাইরে থাকত। তার কক্ষে একাধিক পুরুষের আসা-যাওয়া ছিল। পরে অন্যদের মাধ্যমে তার অসামাজিক কার্যকলাপের বিষয়টি জানতে পেরে এক মাসে বাড়ি ছাড়ার নোটিশ দিই। ঘটনার পর থেকে ওই তরুণীর খোঁজ নেই। তার কোনো জাতীয় পরিচয়পত্র বা ঠিকানা আমাদের কাছে নেই।’

বাড়ির মালিক এস এম আমিনুল ইসলাম মোবাইল ফোনে বলেন, ‘আমরা ওই বাড়িতে থাকি না। সব ফ্লাট ভাড়া দেওয়া। পরিবার-পরিজন নিয়ে বয়রা এলাকায় আমাদের আরেকটি বাড়িতে বসবাস করি। গুলির ঘটনা শোনার পর আমার স্ত্রীকে পাঠাই।’

আমিনুল ইসলাম আরও বলেন, ‘ওই তরুণী নিজেকে তন্বী পরিচয় দিয়ে এবং এনজিওতে চাকরি করার কথা জানিয়ে ফ্ল্যাটটি ভাড়া নেয়। একজন যুবককে স্বামী হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিয়ে স্বামী-স্ত্রী বসবাস করবে বলে জানায়। তবে ভাড়া নেওয়ার ক্ষেত্রে যাবতীয় নিয়ম মানেনি। চুক্তিপত্র ও ন্যাশনাল আইডি কার্ড চাইলে সে পরে দেবে বলে আমাদের জানায়।’

এস এম আমিনুল ইসলাম আরও বলেন, ‘কয়েক দিনের মধ্যে ওই ফ্ল্যাটে অসামাজিক কার্যকলাপ হয় বলে আশপাশের ভাড়াটেদের কাছ থেকে জানতে পেরে এই মাসেই বাড়ি ছাড়ার নোটিশ দিই। সে কারণে আইডি কার্ডের ফটোকপি নেওয়া হয়নি।’

খুলনায় এনসিপির শ্রমিক সংগঠন জাতীয় শ্রমিক শক্তির বিভাগীয় কমিটির আহ্বায়ক মোতালেব শিকদারের গুলিবিদ্ধের ঘটনার পর থেকে ওই তরুণী পলাতক রয়েছেন।

খুলনা মেট্রোলিটন পুলিশের সহকারী কমিশনার (মিডিয়া) ত ম রোকনুজ্জামান বলেন, মজিদ সরণির ১০৯ নম্বর রোডের মুক্তা হাউসের নিচতলায় বসবাসরত তন্বীর রুম থেকে কোনো ছবি বা আইডি কার্ড পাওয়া যায়নি। ফলে তাঁকে শনাক্ত করতে সময় লাগছে।

রোকনুজ্জামান বলেন, আশপাশের ভাড়াটেদের তথ্য অনুযায়ী ওই বাসায় অসামাজিক কার্যকলাপ হতো। অনেক যুবকের যাতায়াত ছিল।

কেএমপির উপপুলিশ কমিশনার মোহাম্মাদ তাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা ওই তরুণীকে খুঁজছি। বাড়ির মালিকের কাছ থেকে ওই তরুণীর মোবাইল ফোন নম্বর সংগ্রহ করা হয়েছে। তবে ঘটনার পর থেকে তন্বী নামের ওই নারীর মোবাইল ফোন বন্ধ রয়েছে। তাকে ধরতে পারলে মোতালেবকে গুলি করার ঘটনার নেপথ্যের কারণ বের হয়ে আসবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

কক্সবাজারে বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমদের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ

কক্সবাজার প্রতিনিধি
আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ২৪
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটে অংশ নিতে কক্সবাজার-১ (চকরিয়া ও পেকুয়া) আসনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। আজ সোমবার চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছ থেকে তাঁর পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা হয়। এ ছাড়া আজ বিকেল পর্যন্ত জেলার চারটি আসনে আরও আটজন প্রার্থী কক্সবাজার জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয় এবং সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন বলে জানা গেছে।

জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে জানানো হয়, কক্সবাজার-১ (চকরিয়া ও পেকুয়া) আসনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ, ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের প্রার্থী সরওয়ার আলম কুতুবী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সাইফুল ইসলাম মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। কক্সবাজার-২ (মহেশখালী-ও কুতুবদিয়া) আসনে ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের মনোনীত প্রার্থী জিয়াউল হক, কক্সবাজার-৩ (কক্সবাজার সদর, রামু ও ঈদগাঁও) আসনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির মৎস্যবিষয়ক সম্পাদক লুৎফুর রহমান কাজল ও ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের প্রার্থী আমিরুল ইসলাম মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। কক্সবাজার-৪ (উখিয়া ও টেকনাফ) আসনে মনোনয়নপত্র নিয়েছেন কক্সবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি শাহজাহান চৌধুরী, জেলা বিএনপির অর্থ সম্পাদক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ ও ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের প্রার্থী নুরুল হক।

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. আবদুল মান্নান জানান, কক্সবাজারের চারটি আসনে ১ থেকে ৩ জানুয়ারি প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের তারিখ দেওয়া হয়েছে।

সালাহউদ্দিন আহমদের প্রেস সচিব ছফওয়ানুল করিম তাঁর পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। ছফওয়ানুল করিম বলেন, ২৮ কিংবা ২৯ ডিসেম্বর সালাহউদ্দিন আহমদ স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেবেন।

নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ২৯ ডিসেম্বর রিটার্নিং কর্মকর্তা বা সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ। রিটার্নিং কর্মকর্তা কর্তৃক মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের তারিখ ৩০ ডিসেম্বর থেকে ৪ জানুয়ারি। মনোনয়নপত্র বাছাইয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল দায়েরের তারিখ ৫ থেকে ৯ জানুয়ারি। আপিল নিষ্পত্তি ১০ থেকে ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ২০ জানুয়ারি। প্রতীক বরাদ্দের তারিখ ২১ জানুয়ারি। ১২ ফেব্রুয়ারি একই দিনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট অনুষ্ঠিত হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

৩০ কার্যদিবসের মধ্যে হাদি হত্যার বিচার শেষ করার দাবি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ০৬
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য দেন ইনকিলাব মঞ্চের সদস্যসচিব আব্দুল্লাহ আল জাবের। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য দেন ইনকিলাব মঞ্চের সদস্যসচিব আব্দুল্লাহ আল জাবের। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদি হত্যার বিচার ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে শেষ করার দাবি জানিয়েছে ইনকিলাব মঞ্চ। আজ সোমবার (২২ ডিসেম্বর) বিকেলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে এ দাবি জানানো হয়।

সমাবেশে ইনকিলাব মঞ্চের সদস্যসচিব আব্দুল্লাহ আল জাবের বলেন, ‘আগামীকাল বেলা ৩টায় শহীদ হাদি চত্বরে, শাহবাগে আমরা সমবেত হব। জুলাইপরবর্তী ও পূর্ববর্তী যারা গুম-খুনের শিকার হয়ে শহীদ হয়েছেন, আমরা শহীদ ওসমান হাদিকে সামনে রেখে বাংলাদেশের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে শহীদি শপথ পড়ব।’

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ইনকিলাব মঞ্চ আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশ। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ইনকিলাব মঞ্চ আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশ। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

জাবের সমাবেশে তিনটি দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো হলো—ওসমান হাদির খুনিদের ধরতে একটি দ্রুত বিচারিক ট্রাইব্যুনালের মধ্য দিয়ে ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে বিচারকাজ সম্পন্ন করা এবং তদন্তের জন্য এফবিআই থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক গোয়েন্দা সংস্থার যারা পেশাদার ও নির্ভরযোগ্য, তাদের এই মামলার তদন্তের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে। গোয়েন্দা সংস্থার মধ্যে ঘাপটি মেরে বসে থাকা ‘আওয়ামী সন্ত্রাসীদের’ চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার ও বিচারের মুখোমুখি করা। প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বখস চৌধুরী, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এবং আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলকে জনগণের কাছে তাঁদের অপারগতার কারণ প্রকাশ করে হাদি ‘হত্যার দায় নিয়ে’ পদত্যাগ করা।

এর আগে, বেলা ৩টা থেকে শাহবাগ মোড়ে হাদি হত্যার বিচারের দাবিতে বিক্ষোভকারীরা জড়ো হন। পরে বেলা ৩টা ২০ মিনিটে শাহবাগ থেকে মিছিল নিয়ে টিএসসি হয়ে শহীদ মিনারে অবস্থান নেন তাঁরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

৪ কোটি টাকা চাঁদাবাজির মামলায় বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে চার্জশিট

­যশোর প্রতিনিধি
আসাদুজ্জামান জনি। ছবি: আজকের পত্রিকা
আসাদুজ্জামান জনি। ছবি: আজকের পত্রিকা

যশোরের অভয়নগরে ব্যবসায়ী শাহনেওয়াজ কবীর টিপুকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ৪ কোটি টাকা চাঁদাবাজির অভিযোগের মামলায় বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা আসাদুজ্জামান জনি ও তাঁর বাবা কামরুজ্জামান মজুমদারকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছে পুলিশ। আসাদুজ্জামান জনি অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়া পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন।

অভয়নগর থানার এসআই ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সালাহউদ্দিন খান ১০ জনকে অভিযুক্ত করে গতকাল রোববার আদালতে এই চার্জশিট দাখিল করেন। অভিযুক্ত অন্যরা হলেন গুয়াখোলা কলেজ রোডের জালাল উদ্দিনের ছেলে কামরুজ্জামান মিঠু, গুয়াখোলা গ্রামের মহিউদ্দিনের ছেলে বর্তমানে দুর্গাপুর গ্রামের বাসিন্দা এনায়েত হোসেন শান্টু, কোটা পূর্বপাড়ার কুদ্দুস তরফদারের ছেলে বায়েজিদ হোসেন তরফদার, কোটা গ্রামের মাহমুদ হোসেনের ছেলে মারুফ হাসান তুহিন, নওয়াপাড়া বউবাজার এলাকার ইব্রাহিম বিশ্বাস ওরফে খলিল কসাইয়ের ছেলে রুহুল আমিন, গুয়াখোলা সুপারিপট্টির নজির হোসেন খোকার ছেলে সম্রাট হোসেন বাবু, ধোপাদি দপ্তরিপাড়ার বাসিন্দা মফিজুর রহমান ও বুইকরা গ্রামের আজাদ শেখের ছেলে সৈকত হোসেন হিরা।

এসআই সালাহউদ্দিন খান জানান, গত ৩ আগস্ট ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী শাহনেওয়াজ কবীর টিপুর স্ত্রী আসমা খাতুন বাদী হয়ে অভয়নগর থানায় মামলা করেন। শুরুতে ছয়জনকে আসামি করা হলেও তদন্তে আরও চারজনের সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া যায়। অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় এজাহারভুক্ত ও তদন্তে প্রকাশ পাওয়া মোট ১০ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪ সালের ২ সেপ্টেম্বর আসামি সৈকত হোসেন হিরা কৌশলে ব্যবসায়ী টিপুকে আসাদুজ্জামান জনির অফিসে নিয়ে যান। সেখানে জনি তাঁকে মারধর করে আগ্নেয়াস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ২ কোটি টাকা দাবি করেন। পরে টিপুর স্ত্রী আসমা খাতুন সাউথ বাংলা ব্যাংক থেকে জনির প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্টে আরটিজিএসের (রিয়েল টাইম গ্রোস সেটেলমেন্ট) মাধ্যমে ২ কোটি টাকা পাঠান। টাকা পাওয়ার পর সেদিন টিপুকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

এরপর ১৮ সেপ্টেম্বর আবারও টিপুকে আটক করা হয়। ওই দিন সকালে গ্রামের বাড়ি চলিশিয়া থেকে মোটরসাইকেলে বাজারে যাওয়ার পথে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের গেটের সামনে তাঁর গতিরোধ করেন সৈকত হোসেন হিরা। পরে তাঁকে জনির কনা ইকো পার্কে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে জনি, সম্রাট হোসেন বাবু ও মফিজুর রহমান অস্ত্র ঠেকিয়ে টিপুকে মারধর করেন এবং বুক পর্যন্ত গর্ত খুঁড়ে বালুচাপা দিয়ে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আরও ২ কোটি টাকা দাবি করেন। চাপের মুখে টিপু তাঁর ম্যানেজারকে ফোন করে টাকা দিতে বলেন। পরে ম্যানেজার পূবালী ব্যাংক থেকে ৬৮ লাখ ও সাউথ বাংলা ব্যাংক থেকে ৩২ লাখ টাকা আরটিজিএসের মাধ্যমে পাঠান। একই সঙ্গে মফিজুর রহমানের কাছ থেকে আরও এক কোটি টাকার একটি চেক আদায় করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত