Ajker Patrika

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ উপনির্বাচন: স্বতন্ত্র প্রার্থী আসিফের সন্ধান চেয়ে স্ত্রীর লিখিত আবেদন

মারুফ কিবরিয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে 
আপডেট : ৩১ জানুয়ারি ২০২৩, ১৬: ১০
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ উপনির্বাচন: স্বতন্ত্র প্রার্থী আসিফের সন্ধান চেয়ে স্ত্রীর লিখিত আবেদন

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু আসিফের এখনো সন্ধান মেলেনি। আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টা পর্যন্ত তাঁর খোঁজ পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। স্বামীর অপেক্ষায় পথ চেয়ে আছেন স্ত্রী মেহেরুন্নেছা। নির্বাচনের মাঠে শেষ পর্যন্ত মোটরগাড়ি প্রতীকের এই স্বতন্ত্র প্রার্থী থাকছেন কি না, তা নিয়েও রয়েছে নানা গুঞ্জন।

স্বামী নিখোঁজের পাঁচ দিন পর তাঁর সন্ধান চেয়ে ও সুষ্ঠু নির্বাচনী পরিবেশ সৃষ্টির জন্য আজ মঙ্গলবার লিখিত আবেদন করেছেন মেহেরুন্নিছা। বেলা ১টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া উপনির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলমের কাছে তিনি লিখিত আবেদন দেন। 

এতে মেহেরুন্নিছা উল্লেখ করেন, ‘আমার স্বামী আবু আসিফ আহমেদ প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে আশুগঞ্জ-সরাইল নির্বাচনী এলাকায় প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। আমরা আবু আসিফের মোটরগাড়ি প্রতীকের পক্ষে নির্বাচনী এলাকার সাধারণ ভোটারদের ব্যাপক সাড়া পাচ্ছিলাম। কিন্তু গত শুক্রবার বিকেলে আমার স্বামী বাসা থেকে বেরিয়ে এখন পর্যন্ত ফিরে আসেনি। এর পর থেকে আজ পর্যন্ত তাঁকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ওই দিন আমি ঢাকায় ছিলাম। বাসার লোকজন জানায়, শুক্রবার বিকেলে তিনি মোবাইল ফোন বাসায় রেখে বেরিয়ে আর বাসায় ফেরেননি। তিনি কোথায় এবং কী অবস্থায় আছেন, আমরা তা বুঝতে পারছি না। এর আগে গত ২৫ জানুয়ারি আমার স্বামী আবু আসিফের নির্বাচনী প্রচারণার প্রধান আবু মুসা মিয়াকে ডিবি পুলিশ উঠিয়ে নিয়ে যায়। তিনি একজন ৮০ বছর বয়সী বৃদ্ধ মানুষ ও এলাকার স্বনামধন্য সালিসকারক। পরে জানতে পারি, গ্রাম্য ঝগড়ার মীমাংসিত ঘটনার মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাঁকে জেলহাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ। অথচ উক্ত ঘটনার সঙ্গে তাঁর দূরতম সম্পর্কও নেই। ওই দিন থেকে নির্বাচনী প্রচারণার সমন্বয়ক আমার ছোট ভাই শাফায়াত সুমন ভয়ভীতির কারণে নির্বাচনী এলাকায় আসতে পারছে না। এরই মধ্যে আমদের বাড়িতে পুলিশের পরিচয় দিয়ে সাদা পোশাকধারী লোকজন এসে অযথা তল্লাশি করে হয়রানি করেছে। প্রতিনিয়ত আমাদের কর্মী-সমর্থকদের হুমকি-ধমকি দেওয়া হচ্ছে। বাড়ির সামনেও কিছু পুলিশ আসা-যাওয়া করছে। বাসায় যেন কোনো লোক আসতে পারে না, সে জন্য কয়েকজন লোক বাসার সামনে দাঁড়িয়ে থাকে। কাজের লোক এলেও ছবি তুলে রাখে, ভিডিও করে রাখে।

‘এ ছাড়া প্রচারণার ক্ষেত্রেও আমরা কোনো লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড পাইনি। ভোটকেন্দ্রে যাঁদের এজেন্ট দেব, তাঁদেরও হুমকি দেওয়া হচ্ছে। একজন প্রার্থীকে যেভাবেই হোক জিতিয়ে নেওয়া হবে বলে প্রোপাগান্ডা চালানো হচ্ছে। এ অবস্থায় সুষ্ঠু নির্বাচন হবে বলে আমরা মনে করি না। আমরা বিশ্বাস করি, এত কিছুর পরও সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট হলে আমার স্বামী আবু আসিফ আহমেদ বিপুল ভোটে বিজয়ী হবে। আমাদের দৃষ্টিতে সরাইল উপজেলার কুট্টাপাড়া পূর্ব, কুট্টাপাড়া পশ্চিম, সৈয়দটুলা, পরের পাড়, আবিথটুলা, সরাইল অন্নদা সরকারি উচ্চবিদ্যালয় ও উচালিয়া সরকার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কেন্দ্রগুলো অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। ভোটারদের আঙুলের ছাপ নেওয়ার পর বিশেষ প্রার্থীকে জেতানোর জন্য অন্যরা প্রতীকের বাটন চেপে দেবে বলে একটি মহল এলাকায় প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। এমতাবস্থায় ভয়ে আমরা এ পর্যন্ত লিখিত অভিযোগ করতে পারিনি। কিছুসংখ্যক সংবাদকর্মী স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে আমার বাসায় এলে আমি তাঁদের বিষয়টি অবহিত করি। এরপর এ বিষয়ে সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হলে নির্বাচন কমিশন থেকে আমার স্বামীকে খুঁজে বের করাসহ তদন্তের নির্দেশ এসেছে বলে আমরা জানতে পারি।’ 

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আসিফ কোথায় আছেন তা কেউ বলতে পারছে না। নির্বাচনের এক দিন আগেও তাঁর খোঁজ না মেলায় ভোটকেন্দ্রে এজেন্ট দেওয়া নিয়ে তৈরি হয়েছে সংশয়। 

আসিফের স্ত্রী মেহেরুন্নেছা সাংবাদিকদের বলেছেন, এর আগে তিনি নির্বাচনী কাজ কখনোই করেননি। কীভাবে কী করবেন, কিছুই বুঝতে পারছেন না। 

নির্বাচনে থাকা-না থাকার বিষয়ে মেহেরুন্নেছা বলেন, ‘স্বামীর অনুমতি ছাড়া নির্বাচন থেকে সরে যাওয়া যাবে না। কর্মী-সমর্থকেরাও বলেছেন, বাধা উপেক্ষা করে নির্বাচন চালিয়ে যাবেন।’ 

তবে অনেকে ভোটকেন্দ্রের এজেন্ট হতে ভয় পাচ্ছেন বলে জানিয়ে আসিফের স্ত্রী বলেন, ‘চারজন মেয়ে স্বেচ্ছায় এজেন্ট হতে এসেছিল। কিন্তু এখন তারা ভয়ে আর এজেন্ট হতে রাজি নয়। অনেক চেষ্টা করেও এজেন্ট পাওয়া যাচ্ছে না।’ 

এদিকে আসিফের ‘নিখোঁজে’র ঘটনায় নির্বাচন কমিশন (ইসি) তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। ঢাকার নির্বাচন ভবনে গতকাল সোমবার দুপুরে নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা সাংবাদিকদের জানান, আসিফকে উদ্ধারে ইসি থেকে কড়া বার্তা দেওয়া হয়েছে। একটা খবরে দেখা যাচ্ছে, ওনাকে নাকি আটকে রাখা হয়েছে। এর সত্যতা কতটুকু, তা জানার জন্যই তদন্ত করতে বলা হয়েছে। ডিসি, এসপি ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। তিনি নির্বাচনের আগেই আসিফকে উদ্ধারের জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানান। 

উল্লেখ্য, আগামীকাল বুধবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ভোটের লড়াইয়ে চার প্রার্থীর মধ্যে তিনজন প্রস্তুত হলেও নিখোঁজ থাকায় স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু আসিফ আহমেদের কোনো প্রস্তুতি নেই বললেই চলে। তাঁর ফিরে আসা-না আসার ওপরই নির্ভর করছে আগামীকাল ভোটের লড়াই। 

আরও পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে জাবিতে জাতীয়তাবাদী শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী ফোরামের কালো ব্যাজ ধারণ

জাবি প্রতিনিধি 
আজ বেলা সাড়ে ১১টায় জাবিতে কালো ব্যাজ ধারণ করে গভীর শোক প্রকাশ করে জাতীয়তাবাদী শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী ফোরাম। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ বেলা সাড়ে ১১টায় জাবিতে কালো ব্যাজ ধারণ করে গভীর শোক প্রকাশ করে জাতীয়তাবাদী শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী ফোরাম। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় জাতীয়তাবাদী শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী ফোরামের উদ্যোগে কালো ব্যাজ ধারণ করে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের পাদদেশে এই কর্মসূচি পালন করা হয়। এতে সংগঠনটির শতাধিক নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জামাল উদ্দিনের সঞ্চালনায় বক্তারা বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া শুধু একটি দলেরই নয়, বরং তিনি গোটা দেশের অভিভাবকে পরিণত হয়েছেন। তিনি যেভাবে আপসহীন নেতৃত্বের পরিচয় দিয়েছেন, সেটা তাঁকে এই দেশের মানুষের হৃদয়ে স্মরণীয় করে রাখবে।

কর্মসূচি চলাকালে জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক মো. শামছুল আলম বলেন, ‘আমাদের জাতির অভিভাবক হিসেবে তিনি ছিলেন মৃদুভাষী, সহনশীল ও মানবিক একজন মানুষ। গত ১৬ বছরে তাঁর ওপর বহু নির্যাতন ও অবিচার হলেও তিনি কখনো কারও প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেননি।’

শামছুল আলম আরও বলেন, ‘তিনি তাঁর প্রিয় বাসা থেকে উৎখাত হয়েও দেশ ছাড়ার কথা ভাবেননি; দেশকেই তিনি ভালোবেসেছেন। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় আজীবন সংগ্রাম করে তিনি বহুবার কারাবরণ করেছেন এবং আপসহীন নেতৃত্বের মাধ্যমে গণতন্ত্রের প্রতীক হয়ে উঠেছেন। আল্লাহ যেন তাঁকে জান্নাতবাসী করেন।’

এ সময় সংহতি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ইন্তেকালে আমরা গভীরভাবে শোকাহত। তিনবারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি দেশ ও গণতন্ত্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন।’

ড. মাহফুজুর রহমান আরও বলেন, ‘দুঃসংবাদ পাওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সকল পরীক্ষা ও ক্লাস স্থগিত করেছে এবং কালো ব্যাজ ধারণের মাধ্যমে শোক পালন করছে। বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের পক্ষ থেকে আমরা মরহুমার রুহের মাগফিরাত কামনা করছি এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।’

কর্মসূচিতে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আব্দুর রব, প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম রাশিদুল আলম, জাতীয়তাবাদী শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী ফোরামের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মাফরুহী সাত্তারসহ আরও অনেকে।

এর আগে মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সকাল ৬টার দিকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

চন্দনাইশে অলিপুত্রের সমর্থনে সরে দাঁড়ালেন জামায়াতের প্রার্থী

চন্দনাইশ (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি  
মো. শাহাদাৎ হোসেন ও ওমর ফারুক। ছবি: সংগৃহীত
মো. শাহাদাৎ হোসেন ও ওমর ফারুক। ছবি: সংগৃহীত

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-১৪ (চন্দনাইশ-সাতকানিয়া আংশিক) আসনে নির্বাচনী লড়াই থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মনোনীত প্রার্থী ডা. মো. শাহাদাৎ হোসেন। জোটগত সিদ্ধান্তের প্রতি সম্মান জানিয়ে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) চেয়ারম্যান ড. কর্নেল অলি আহমদের (বীর বিক্রম) ছেলে ওমর ফারুকের পক্ষে তিনি নিজের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের এই ঘোষণা দেন।

গতকাল সোমবার রাতে মো. শাহাদাৎ হোসেন তাঁর ব্যক্তিগত ফেসবুক প্রোফাইলে একটি পোস্টের মাধ্যমে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তের কথা জানান। দীর্ঘ ১০ মাস ১২ দিন প্রচার-প্রচারণা চালানোর পর সংগঠনের সিদ্ধান্তের প্রতি পূর্ণ আনুগত্য প্রকাশ করে তিনি লেখেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ! দীর্ঘ ১০ মাস ১২ দিন পর আজ এক বড় জবাবদিহিতার জিম্মাদারি থেকে মুক্তি পেলাম। জোটের বৃহৎ স্বার্থে জনগণের ব্যাপক চাহিদা থাকা সত্ত্বেও আমরা সকলেই সংগঠনের সিদ্ধান্তের প্রতি পরিপূর্ণ আনুগত্য প্রদর্শন করলাম। ইনসাফের বাংলাদেশ গড়তে আমরা সর্বদা একযোগে কাজ করব ইনশা আল্লাহ।’

শাহাদাৎ হোসেন জামায়াতে ইসলামীর কোনো পদ-পদবিতে না থাকলেও দলের একজন একনিষ্ঠ সমর্থক হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছিলেন এবং মাঠপর্যায়ে ব্যাপক জনমত তৈরি করতে সক্ষম হয়েছিলেন। নিজের আসনটি তিনি অলি আহমদের ছেলের জন্য সহজে ছেড়ে দিতে রাজি হবেন কি না, তা নিয়ে স্থানীয় রাজনীতিতে ব্যাপক কৌতূহল ছিল। তবে শেষ পর্যন্ত তাঁর প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তকে জোটের ঐক্য সুসংহত করার একটি বড় পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ঠাকুরগাঁওয়ে অবৈধ ভাটা গুঁড়িয়ে দিল প্রশাসন

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ভপলা এলাকায় অবস্থিত মেসার্স ফাইজুল ব্রিকস নামের অবৈধ ইটভাটা চিমনিসহ ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ভপলা এলাকায় অবস্থিত মেসার্স ফাইজুল ব্রিকস নামের অবৈধ ইটভাটা চিমনিসহ ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

পরিবেশ রক্ষায় জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের যৌথ উদ্যোগে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলায় অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান চলছে। তারই ধারাবাহিকতায় আজ মঙ্গলবার সদর উপজেলার ভপলা এলাকায় অবস্থিত মেসার্স ফাইজুল ব্রিকস নামের অবৈধ ইটভাটা চিমনিসহ ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন অনুযায়ী ভাটামালিককে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।

অভিযানটি পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আক্তারুজ্জামান। প্রসিকিউটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন পরিবেশ অধিদপ্তর ঠাকুরগাঁও জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. তামিম হাসান। অভিযানে পুলিশ, আনসার, সেনাবাহিনী এবং ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা সার্বিক সহযোগিতা করেন।

পরিবেশ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, পরিবেশ ছাড়পত্র ছাড়া এবং নিষিদ্ধ এলাকায় গড়ে ওঠা এই ইটভাটা দীর্ঘদিন ধরে কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল। এতে ফসলি জমির ফসল ও মাটির উর্বরতা নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি বায়ুদূষণ বাড়ছিল। অভিযানে ভাটার চুল্লি ভেঙে ফেলা হয় এবং কাঁচা ইট নষ্ট করে দেওয়া হয়।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আক্তারুজ্জামান জানান, পরিবেশ ও জনস্বার্থ রক্ষায় অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে। আইন অমান্যকারী কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

দিনাজপুরের মেয়ে পুতুলের স্মৃতিবিজড়িত তৈয়বা ভিলায় শোকের ছায়া

দিনাজপুর প্রতিনিধি
বেগম খালেদা জিয়া। ফাইল ছবি
বেগম খালেদা জিয়া। ফাইল ছবি

দেশের তিনবারের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমেছে দিনাজপুরে। খালেদা জিয়ার পৈতৃক নিবাস দিনাজপুর শহরের বালুবাড়ি এলাকায়। এই বালুবাড়ি এলাকায় তৈয়বা ভিলা বাড়িতেই কেটেছে খালেদা জিয়ার শৈশব ও কৈশোরের দিনগুলো। আজ সকাল থেকে তৈয়বা ভিলার সামনে জড়ো হয়েছেন শোকার্ত স্থানীয় মানুষ, দলীয় নেতা-কর্মী ও গণমাধ্যমকর্মীরা।  

খালেদা জিয়ার পারিবারিক নাম খালেদা খানম পুতুল। উইকিপিডিয়ার তথ্য অনুযায়ী, ১৯৪৫ সালের ১৫ আগস্ট দিনাজপুরে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। বাবা ইস্কান্দার মজুমদার ও মা তৈয়বা মজুমদার। বর্তমানে খালেদা জিয়ার স্মৃতিবিজড়িত তৈয়বা ভিলায় বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টার করা হয়েছে।

আজ সকালে খালেদা জিয়ার মৃত্যুর খবর শুনে শহরের জেলমোড় এলাকায় দলীয় কার্যালয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীরা ছুটে যান ।

দলীয় কার্যালয় ও বালুবাড়ির পৈতৃক নিবাসে কোরআন তেলাওয়াতের আয়োজন করা হয়েছে।  

বেগম খালেদা জিয়ার আপন খালাতো ভাই আবু তাহের আবু বলেন, ‘তিনি (খালেদা জিয়া) ছিলেন আমাদের অভিভাবক। নিজের আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে তিনি ছিলেন খুবই আন্তরিক। ১৯৯১ সালের তিনি যখন প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দিনাজপুরে এলেন, এসে আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন, কিরে পটল কেমন আছিস? তিনি আদর করে আমাকে পটল বলে ডাকতেন। তিনি বাসায় এলে সবার কথা শুনতেন। সবশেষ  ২০১২  সালের  সেপ্টেম্বরে একবার দিনাজপুর গোরে শহীদ ময়দানে এক জনসভায় এসেছিলেন তিনি। তারও আগে  ২০০৮ সালে মায়ের মৃত্যুর সময় একবার দিনাজপুরে এসেছিলেন।’

পাঁচ বছর বয়সে দিনাজপুর মিশন স্কুলে শিক্ষাজীবন শুরু হয় খালেদা জিয়ার। এরপর  ১৯৬০ সালে ভর্তি হন দিনাজপুর সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে।  

সেখান থেকেই ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেন। পরবর্তীকালে ভর্তি হন দিনাজপুর সরকারি কলেজে (পূর্বের নাম সুরেন্দ্রনাথ কলেজ)।

খালেদা জিয়ার স্মৃতিবিজড়িত তৈয়বা ভিলায় বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টার করা হয়েছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
খালেদা জিয়ার স্মৃতিবিজড়িত তৈয়বা ভিলায় বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টার করা হয়েছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে দিনাজপুর সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাজমা ইয়াসমিনবলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া দিনাজপুরের গর্ব, দেশের গর্ব। আমরা গর্ব করে বলি,  তিনি এই বিদ্যালয়ে পড়ালেখা করেছেন। প্রথম নারী হিসেবে দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। তাঁর মৃত্যুতে দেশ আজকে একজন অভিভাবক হারাল।’

ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে প্রথমবারের মতো নিজের জন্মস্থানে প্রার্থী হয়েছিলেন খালেদা জিয়া। ২৮ ডিসেম্বর জেলা বিএনপির সভাপতি,  সাধারণ সম্পাদকসহ দলীয় নেতা-কর্মীরা তাঁর পক্ষে মনোনয়নপত্র জমাও দিয়েছিলেন। দিনাজপুর-৩ আসনে দলের 

চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অংশগ্রহণের কথা শুনে সব বিভেদ ভুলে একাট্টা হয়েছিলেন দলীয় নেতা-কর্মীরা। প্রত্যেকে নিজ নিজ জায়গা থেকে প্রিয় নেত্রীর পক্ষে প্রচারণাও চালিয়েছেন।  

তাঁর মৃত্যুতে জেলা বিএনপির সভাপতি মোফাজ্জল হোসেন দুলাল বলেন, ‘বাংলাদেশের অবিসংবাদিত আপসহীন নেত্রীকে হারিয়ে দেশ আজ একজন 

অভিভাবককে হারাল। এই শূন্যতা পূরণ হওয়ার নয়। সবশেষ তিনি অসুস্থ হওয়ার কয়েক দিন আগে দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে প্রিয় নেত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছি। দিনাজপুরের মানুষ তাঁকে প্রার্থী হিসেবে পেয়ে ভীষণ উচ্ছ্বসিত ছিলেন। দিনাজপুরের উন্নয়নে 

স্বাক্ষর রেখে গেলেন। জাতির বড় প্রয়োজনের সময় আমরা তাঁকে হারালাম। এই দেশ জাতির ইতিহাসে তিনি কিংবদন্তী।’

জেলা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি মো. মোকাররম হোসেন বলেন, ‘আমরা আমাদের অভিভাবককে হারিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছি। দলের সকল পর্যায়ের নেতা-কর্মী সবাই শোকে মুহ্যমান হয়ে পড়েছে। জেলার সকল এলাকা থেকে নেতা-কর্মীরা তাঁর জানাজায় শরিক হওয়ার জন্য রাজধানীর পথে রওনা দিতে শুরু করেছে। তাঁর মৃত্যু আমাদের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত