Ajker Patrika

দেবিদ্বারে যৌন হয়রানির অভিযোগে প্রধান শিক্ষককে অবরুদ্ধের ঘটনায় গ্রেপ্তার আতঙ্ক

দেবিদ্বার (কুমিল্লা) প্রতিনিধি 
আপডেট : ১৯ মার্চ ২০২৩, ১৭: ৪২
দেবিদ্বারে যৌন হয়রানির অভিযোগে প্রধান শিক্ষককে অবরুদ্ধের ঘটনায় গ্রেপ্তার আতঙ্ক

কুমিল্লার দেবিদ্বারের মাশিকাড়া উচ্চবিদ্যালয়ে ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ প্রধান শিক্ষক মো. মোক্তল হোসেনকে অবরুদ্ধের পর পুলিশ-জনতার সংঘর্ষের ঘটনায় গ্রেপ্তার আতঙ্কে রয়েছেন আশপাশের কয়েক গ্রামের পুরুষ। এ ঘটনার পর এখনো বেশির ভাগ শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে আসছে না। আজ রোববার ও গতকাল শনিবার বিদ্যালয়সহ আশপাশের কয়েক গ্রাম ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। 

এ নিয়ে দেবিদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কমল কৃষ্ণ ধর বলেন, ‘মাশিকাড়া উচ্চবিদ্যালয়ের ঘটনায় আমরা কোনো শিক্ষার্থীকে আটক করব না। তবে ভিডিও ফুটেজ দেখে দেখে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করা হচ্ছে এবং তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। তা ছাড়া এই সংঘর্ষের ঘটনায় দেবিদ্বার থানায় দুটি মামলা হয়েছে। এর মধ্য পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা করেছে। অপরটি করেছে ওই ছাত্রীর বাবা। এসব মামলায় এ পর্যন্ত ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’ 

মাশিকাড়া উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীশূন্য শ্রেণিকক্ষ। ছবি: আজকের পত্রিকা 

আজ রবিবার (১৯ মার্চ) বেলা ১১টার দিকে মাশিকাড়া উচ্চবিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, চারপাশে এখনো থমথমে পরিস্থিতি। ক্লাস চললেও শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি তেমন নেই। এ সময় কথা হয় বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মো. বাহলুল হকের সঙ্গে। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এ ঘটনার পর এখনো আতঙ্ক কাটেনি। তবে বিদ্যালয়ে আগের মতো ক্লাস শুরু হয়েছে। শিক্ষার্থীদের ক্লাসে আনার জন্য শিক্ষকদের বাড়ি বাড়ি পাঠানো হচ্ছে। এ নিয়ে আমরা শিগগিরই অভিভাবক সমাবেশ ডাকব। সেখানে দেবিদ্বার থানার পুলিশও উপস্থিত থাকবে।’

গতকাল শনিবার বিকেলে মাশিকাড়া বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, পুরো বাজার পুরুষশূন্য। দু-একটি ফার্মেসি ছাড়া বন্ধ রয়েছে বেশির ভাগ দোকানপাট। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মাশিকাড়া, রামপুর, পদ্মকোট, গণেশপুর, শাকতলা, উত্তর পোনরা, দক্ষিণ পোনরা, ভূষণা, বারেরা গ্রামের এক অংশ ও ধামতির গ্রামের এক অংশসহ এসব গ্রামের পুরুষেরাও গ্রেপ্তার আতঙ্কে রয়েছেন। 

মাশিকাড়া বাজারে বেশির ভাগ দোকান পাট বন্ধ। ছবিটি গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় তোলা। আজকের পত্রিকা মাশিকারা বাজারের ফার্মেসি ব্যবসায়ী শরীফুল ইসলাম বলেন, ‘তিন দিন ধরে দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। আতঙ্কে বাজারে কোনো মানুষ উঠছে না। বাড়িঘরেও মানুষ নেই। দিনের বেলায় কয়েকজন মুরব্বিকে দেখা গেলেও ১৮-৩০ বছর বয়সী কোনো পুরুষকে দেখা যায় না। সবাই আতঙ্কে রয়েছেন।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন নারী বলেন, ‘দুপুরে কে বা কারা বলছে, বাজারে পুলিশ অভিযানে এসেছে। এ কথা শোনার পর বাড়িঘরে যারা ছিলেন, তাঁরা এদিক-সেদিক দ্রুত পালিয়ে যান। এভাবে ভয়ে থাকতে হচ্ছে সবাইকে। কে কখন গ্রেপ্তার হয়, সে আতঙ্কে কাটছে দিন।’ 

উল্লেখ্য, গত বুধবার সকালে মাশিকাড়া উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ ওঠে প্রধান শিক্ষক মোক্তল হোসেনের বিরুদ্ধে। এরপর তাঁকে নিজের কক্ষে অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ শুরু করে শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী। পরে দুপুরে পুলিশের একটি দল বিদ্যালয়ে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করতে গিয়ে ব্যর্থ হয়। একপর্যায়ে দেবিদ্বার-বিপাড়া সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. আমিরুল্লা, দেবিদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কমল কৃষ্ণ ধর, পরিদর্শক (তদন্ত) খাদেমুল বাহার বিন আবেদসহ পুলিশের আরও একটি দল বিদ্যালয়ে যান। তাঁরাও পরিস্থিতি শান্ত করতে পারেননি। এ সময় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান, বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। দিনভর স্থানীয়দের বিক্ষোভ চলে। রাত ৯টার দিকে কুমিল্লার পুলিশ সুপার মো. আব্দুল মান্নান, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোশারফ হোসেন, ইউএনও ডেজী চক্রবর্তীসহ বিপুল পরিমাণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য বিদ্যালয়ের দোতলায় অবরুদ্ধ থাকা প্রধান শিক্ষক ও পুলিশ সদস্যদের উদ্ধার করতে যান। এ সময় উত্তেজিত জনতা পুলিশের ওপর বৃষ্টির মতো ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনতে পুলিশ রাবার বুলেট ও শটগানের গুলি ছোড়ে। এ ঘটনায় পুলিশের একজন সদস্যসহ অন্তত আরও ২০ আহত হন। 

মাশিকাড়া বাজারে বেশির ভাগ দোকানপাট বন্ধ। ছবিটি গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় তোলা। আজকের পত্রিকা এ ঘটনার পরদিন বৃহস্পতিবার দুপুরে দেবিদ্বার থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোক্তার আহমেদ বাদী হয়ে পুলিশের কাজে বাধা, বিস্ফোরকদ্রব্য আইনসহ ১২টি ধারায় অজ্ঞাতনামা ২১০ জনকে আসামি করে মামলা করেন। অপর দিকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ আনা ওই ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে প্রধান শিক্ষক মো. মোক্তল হোসেনকে একমাত্র আসামি করে আরেকটি মামলা করেছেন। ওই মামলায় মো. মোক্তল হোসেন কারাগারে রয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সূর্যের দেখা নেই, কনকনে ঠান্ডায় কাবু জনজীবন

সাদ্দাম হোসেন, ঠাকুরগাঁও 
সকালে সড়কে হেডলাইট জ্বালিয়ে যাচ্ছে একটি বাস। ছবি: আজকের পত্রিকা
সকালে সড়কে হেডলাইট জ্বালিয়ে যাচ্ছে একটি বাস। ছবি: আজকের পত্রিকা

আকাশে সূর্যের কোনো দেখা নেই। ঘন কুয়াশায় মোড়া ঠাকুরগাঁও শহর। সড়কে যানবাহনগুলো হেডলাইট জ্বালিয়ে চলছে। কনকনে ঠান্ডা থেকে রেহাই পেতে সড়কের পাশে আগুন জ্বালিয়ে উষ্ণতা খুঁজছে শীতার্ত লোকজন। আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে ঠাকুরগাঁও বাসস্ট্যান্ড চৌরাস্তা ঘুরে এই দৃশ্য চোখে পড়ে।

গত কয়েক দিনের তুলনায় আজ জেলায় শীতের তীব্রতা আরও বেড়েছে। যদিও ঠাকুরগাঁওয়ে কোনো আবহাওয়া অফিস নেই, তবে জেলার ইক্ষু গবেষণা কেন্দ্রের তথ্যমতে, সকাল ৭টার দিকে জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১২ থেকে ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সকাল ১০টায় তা বেড়ে দাঁড়ায় ১৫ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। তবে বাতাসের কারণে অনুভূত তাপমাত্রা ছিল প্রায় ১০ ডিগ্রির মতো।

আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঠাকুরগাঁও বাসস্ট্যান্ড চৌরাস্তা এলাকা ঘুরে দেখা যায়, অধিকাংশ দোকানপাট তখন বন্ধ। পশ্চিম দিক থেকে আসা হিমেল বাতাস শীতের অনুভূতি আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। অন্য দিনের তুলনায় সড়কে যানবাহনের সংখ্যাও কম। জীবিকার তাগিদে শ্রমজীবী মানুষ বাধ্য হয়ে ঘর থেকে বের হলেও পড়ছেন চরম দুর্ভোগে। পর্যাপ্ত শীতবস্ত্র না থাকায় ফুটপাতে আশ্রয় নেওয়া দরিদ্র লোকজন আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে।

হঠাৎ তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে হতদরিদ্র মানুষ। তাদের অনেকেরই গরম কাপড় নেই। তাই ঠান্ডা থেকে বাঁচতে কাগজ, পলিথিন ও ছেঁড়া কাপড় জ্বালিয়ে রাত ও সকাল পার করছে তারা।

সকালে সদর উপজেলার পল্লী বিদ্যুৎ এলাকায় কথা হয় রিকশাচালক হাসান রাব্বির সঙ্গে। সড়কের পাশে কাগজ ও পলিথিন জ্বালিয়ে আগুন পোহাতে পোহাতে তিনি বলেন, ‘আগে সকাল ৭টায় রিকশা নিয়ে বের হতাম। কিন্তু এখন ঠান্ডা এত বেড়েছে যে আজ ১০টার আগে বের হতে পারিনি। কুয়াশা একটু কমার অপেক্ষা করছি।’ শীতের কারণে ভ্যান নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতেও কষ্ট হচ্ছে বলে জানান শহরের কালীবাড়ি এলাকার কলা বিক্রেতা ভূষণ রায়। তিনি বলেন, ‘সোয়েটার, টুপি, মাফলার পরেও শরীর বাঁচে না। শীত কিছুতেই মানছে না।’

এদিকে শীত মোকাবিলায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রস্তুতির কথা জানানো হয়েছে। ঠাকুরগাঁও জেলা ত্রাণ কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান বলেন, ‘জেলার পাঁচটি উপজেলায় ৬ লাখ টাকা করে মোট ৩০ লাখ টাকায় ৮ হাজার ৫০০ কম্বল কেনা হয়েছে।’

ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক ইশরাত ফারজানা বলেন, এ বছর ৩০ লাখ টাকা বরাদ্দ পেয়ে কম্বল কেনা হয়েছে। এ ছাড়া প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় ও বিভিন্ন মন্ত্রণালয় থেকে সাড়ে ৭ হাজার কম্বল এবং বিভিন্ন সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান থেকে আরও দেড় হাজার কম্বল পাওয়া গেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাম, শাহবাগী, ছায়ানট, উদীচীকে তছনছ করে দিতে হবে: জাবি ছাত্রশিবির সেক্রেটারি

জাবি প্রতিনিধি 
আপডেট : ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ৪০
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখার সেক্রেটারি মোস্তাফিজুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখার সেক্রেটারি মোস্তাফিজুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত

‘আগামীকাল বাম, শাহবাগী, ছায়ানট, উদীচীকে তছনছ করে দিতে হবে। তাহলেই বাংলাদেশের প্রকৃত স্বাধীনতা অর্জন হবে’ এমন মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখার সেক্রেটারি মোস্তাফিজুর রহমান।

গতকাল বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে শোক ও প্রতিবাদ মিছিল করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। প্রতিবাদ মিছিল শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে একটি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন জাকসু, শাখা ছাত্রশিবির, শাখা ছাত্রশক্তি, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের (মার্ক্সবাদী) নেতা-কর্মীরা। সমাবেশে ‘আগামীকালকে (শুক্রবার) বাম, শাহবাগী, ছায়ানট, উদীচীকে তছনছ করে দিতে হবে’ বলে মন্তব্য করেন মোস্তাফিজুর রহমান।

সমাবেশে তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক লড়াই করে বাংলাদেশের প্রকৃত স্বাধীনতা অর্জন সম্ভব নয়। আমাদের লড়াই শুরু হবে শহীদ ওসমান হাদির ইনকিলাব মঞ্চের সাংস্কৃতিক লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে। আগামীকালকে বাম, শাহবাগী, ছায়ানট, উদীচীকে তছনছ করে দিতে হবে। তাহলেই বাংলাদেশের প্রকৃত স্বাধীনতা অর্জন হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিগত ১৫ বছর ধরে আমরা ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। এই খুনি হাসিনার দল হাজার হাজার নিষ্পাপ বাংলাদেশের দামাল ছেলেদেরকে হত্যা করেও ওর রক্ত পিপাসা মেটেনি। বিদেশে বসে এখনো বিপ্লবীদের হত্যা করার ছক করছে। আমরা আজ এই বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে স্পষ্ট করে বলতে চাই শহীদ ওসমান হাদির রক্তের ওপর দিয়ে, শহীদের রক্তের ওপর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আর কোনো সম্পর্ক থাকবে না। যে সমস্ত ভারতীয়রা বাংলাদেশে বৈধভাবে অবৈধভাবে বাংলাদেশে চাকরি করছে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাদের ভারতে পুশব্যাক করতে হবে। ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করতে হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত না হাসিনাকে বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করে, যতক্ষণ পর্যন্ত না ওরা ওসমান হাদির খুনিকে বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করবে ততক্ষণ পর্যন্ত ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের জনগণের কোনো সম্পর্ক থাকতে পারে না।’

মোস্তাফিজুর রহমানের দেওয়া বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে শুরু হয় সমালোচনা।

এরপর আজ শুক্রবার দুপুরেও মোস্তাফিজুর রহমান তাঁর ব্যক্তিগত ফেসবুকে অ্যাকাউন্টে একই ধরনের বক্তব্য লিখে পোস্ট করেন। পোস্টে তিনি লেখেন, ‘আমরা স্পষ্ট করে বলেছি, শুধু রাজনৈতিক লড়াইয়ে প্রকৃত স্বাধীনতা অর্জিত হয় না। শহীদ ওসমান হাদি ভাই ইনকিলাব মঞ্চের মাধ্যমে ভারতীয় আধিপত্যবাদ ও আওয়ামী প্রক্সি উদীচী, ছায়ানটের কালচারাল হেজেমনির বিরুদ্ধে যে লড়াই শুরু করেছিল, সেই লড়াই জারি রাখতে হবে। তাদের সকল আধিপত্যবাদী বয়ানকে তছনছ করে দিতে হবে। ইট, পাথরের দেয়াল ভেঙে আধিপত্যবাদকে মোকাবিলা করা যায় না, সেটা হাদি আমাদের শিখিয়েছে।’

অন্য আরেকটি ফেসবুক পোস্টে তিনি লেখেন, ‘গতকাল শহীদ শরিফ ওসমান হাদি ভাইয়ের মৃত্যু-পরবর্তী প্রতিবাদ মিছিল ও সমাবেশে প্রদত্ত আমার বক্তব্যের কিছু শব্দ নিয়ে এই স্পষ্টীকরণ প্রদান করছি। বক্তব্যে ব্যবহৃত “তছনছ” শব্দটির মাধ্যমে ভাঙচুরকে বোঝানো হয়নি। বরং এর অর্থ ছিল শহীদ হাদির যে স্বপ্ন নিয়মতান্ত্রিক ও প্রাতিষ্ঠানিক উপায়ে বিকল্প কাঠামো গড়ে তুলে, সর্বদা সচেতন থেকে ফ্যাসিবাদী বয়ানকে মোকাবিলা করা।’

তিনি আরও উল্লেখ করেন, ‘এ প্রসঙ্গে আরও যুক্ত করা প্রয়োজন যে, উদীচীসহ উল্লেখিত প্রতিষ্ঠানসমূহ বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদের তল্পিবাহক হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে ভূমিকা রেখে আসছে। তারা বাংলাদেশের শত্রু, জনগণের শত্রু। তবে ফ্যাসিবাদের আদর্শিক ভিত্তিকে আমরা প্রাতিষ্ঠানিক ও নিয়মতান্ত্রিকভাবেই মোকাবিলা করব, ইনশা আল্লাহ।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কুষ্টিয়া সদর উপজেলা নির্বাচন অফিসে আগুন, পুড়েছে নথিপত্র

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
আপডেট : ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ২২
জানালা দিয়ে অফিসের ভেতর আগুন লাগানো হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
জানালা দিয়ে অফিসের ভেতর আগুন লাগানো হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুষ্টিয়া সদর উপজেলা নির্বাচন অফিসের স্টোররুমে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এতে নিচতলার স্টোররুমে সংরক্ষিত কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি পুড়ে গেছে।

আজ শনিবার (২০ ডিসেম্বর) সকালে এই অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, সকালে ধোঁয়া দেখে আগুন লাগার বিষয়টি স্থানীয় বাসিন্দাদের নজরে আসে। পরে নির্বাচন অফিসের প্রহরী ও স্থানীয় বাসিন্দারা আগুন নেভান।

সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান ও সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আবু দাউদ জানান, আগুনে কিছু নথি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। স্টোররুমের পেছনের জানালার পাশ থেকে আগুন লাগানো হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

খবর পেয়ে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক ইকবাল হোসেন, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রোকনুজ জামানসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কবির হোসেন মাতুব্বর বলেন, এই ঘটনায় তদন্ত শুরু করা হয়েছে। পরে বিস্তারিত জানানো হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দৌলতপুরে গ্রাম আদালতে অতিরিক্ত ফি আদায়ের অভিযোগ

দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি
আপডেট : ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ২১
হোগলবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের হিসাবরক্ষক আবু সুফিয়ানের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। ছবি: সংগৃহীত
হোগলবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের হিসাবরক্ষক আবু সুফিয়ানের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। ছবি: সংগৃহীত

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে গ্রাম আদালতে সরকারি নামমাত্র ফি থাকলেও ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের দাবি, উপজেলার হোগলবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম আদালতে বিচার চাইতে বাড়তি অর্থ গুনতে হচ্ছে তাঁদের। ইতিমধ্যে ইউনিয়ন পরিষদটির হিসাবরক্ষক কাম কম্পিউটার অপারেটর আবু সুফিয়ানের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন নান্টু আলী নামের এক ব্যক্তি। অভিযোগের সপক্ষে ভিডিও প্রমাণও দাখিল করা হয়েছে।

স্থানীয় সরকার বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী, গ্রাম আদালতে দেওয়ানি মামলার ফি ২০ টাকা এবং ফৌজদারি মামলার ফি ১০ টাকা। অথচ ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের দাবি, এখানে মামলা দায়ের থেকে শুরু করে হাজিরা পর্যন্ত ৩০০ থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত দিতে হচ্ছে।

ভুক্তভোগী ব্যক্তিরা জানান, স্বল্প সময়ে ও কম খরচে বিচার পাওয়ার আশায় তাঁরা গ্রাম আদালতে আসেন। কিন্তু এখানে এসেও তাঁদের অনেক টাকা খরচ হচ্ছে।

আল্লাহর দরগা বাজার এলাকার এক ঝালমুড়ি ও ফুচকা বিক্রেতা জানান, পারিবারিক কলহ-সংক্রান্ত মামলায় তাঁর কাছ থেকে ধাপে ধাপে ১ হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে। মুন্না নামের অন্য এক ভুক্তভোগী জানান, একটি সাধারণ অভিযোগ দায়ের করতে তাঁকে ৪০০ টাকা দিতে হয়েছে।

অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের বিষয়টি স্বীকার করে হিসাবরক্ষক আবু সুফিয়ান জানান, যোগদানের পর থেকেই তিনি এমনভাবে টাকা নিয়ে আসছেন।

এদিকে ইউনিয়ন পরিষদের সচিব ও চেয়ারম্যান উভয়ে অতিরিক্ত ফি আদায়ের ব্যাপারে অবগত নন বলে দাবি করেছেন।

দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অনিন্দ্য গুহ বলেন, অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে এবং সত্যতা পাওয়া গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত