Ajker Patrika

চবি ছাত্রলীগের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না, নতুন নেতৃত্বের দাবি

মিনহাজ তুহিন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
আপডেট : ২৩ মার্চ ২০২৩, ১৫: ৪৬
চবি ছাত্রলীগের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না, নতুন নেতৃত্বের দাবি

বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির। আড়াই বছর আগে মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়া এই কমিটি প্রায় প্রতি সপ্তাহেই নতুন নতুন বিতর্কের জন্ম দিচ্ছে। গ্রুপিং, সংঘর্ষ, ছাত্রী হেনস্তা, সাংবাদিক হেনস্তা, যৌন হয়রানির মতো বিভিন্ন ঘটনার পর এবার আলোচনায় দুই নেতাকে দিয়ে সভাপতির পা টেপানোর ছবি।

দলটির বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মীদের দাবি, হল-অনুষদ কমিটি গঠন করতে না পারা, সাড়ে তিন বছরে একটি বর্ধিত সভাও না করাসহ নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়ানো এই কমিটি পদে পদে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। তাই মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি বিলুপ্ত করে যেন শিগগিরই নতুন কমিটি গঠন করা হয়। তবে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ বলছে, সাংগঠনিক গতি বাড়াতে যা করণীয় তাই করা হবে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ১৪ জুলাই শাখা ছাত্রলীগের দুই সদস্যের কমিটি গঠন করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। কমিটিতে পরিসংখ্যান বিভাগের ২০০৬-০৭ শিক্ষাবর্ষের রেজাউল হক রুবেলকে সভাপতি ও মার্কেটিং বিভাগের ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষের ইকবাল হোসেন টিপুকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। এঁদের মধ্যে সভাপতি কমিটি গঠনের ছয় বছর আগে ২০১৩ সালে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। অন্যদিকে সাধারণ সম্পাদক স্নাতক সম্পন্ন করেন কমিটি গঠনের তিন বছর আগে ২০১৬ সালে। এরপর তিনি স্নাতকোত্তর আর সম্পন্ন করেননি। তবে ছাত্রত্ব না থাকলেও দুজনই একটি করে কক্ষ দখল করে আবাসিক হলে থাকছেন। 

অন্যদিকে এক বছরের জন্য গঠিত এই কমিটি সাড়ে তিন বছর ধরে রয়েছে বহাল তবিয়তে। কমিটি গঠনের পর দ্রুত পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন, বগি রাজনীতির সংস্কৃতি বন্ধ করে হলভিত্তিক রাজনীতি চালু করা, অনুষদ কমিটি গঠনসহ ভূরি ভূরি প্রতিশ্রুতি দেন সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক। তবে এসব প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে না পারলেও বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে এই কমিটি পত্রিকার শিরোনাম হয়েছে নিয়মিত। সাড়ে তিন বছরে সংঘর্ষে জড়িয়েছে অন্তত ১৫০ বার। 

নেতা-কর্মীদের অভিযোগ, সাড়ে তিন বছরে একটিও বর্ধিত সভা করতে পারেনি এই কমিটি। হল ও অনুষদ কমিটির আশ্বাস দিয়ে পার করছে বছরের পর বছর। শিক্ষার্থীবান্ধব কোনো কর্মসূচি গ্রহণ না করে উল্টো শিক্ষার্থীদের কাছে সংগঠনকে খারাপভাবে তুলে ধরেছে এই কমিটি। 

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের রাজনীতি দীর্ঘদিন ধরে দুই ধারায় বিভক্ত। প্রতিটি ধারা আবার বিভিন্ন উপদলে বিভক্ত। এর মধ্যে একটি ধারার নেতা-কর্মীরা নিজেদের শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী হিসেবে পরিচয় দেন। অন্য ধারার নেতা-কর্মীরা সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী বলে পরিচয় দেন। এই দুটি ধারা আবার ১১টি উপদলে বিভক্ত। ক্যাম্পাস ছাত্র শিবিরের নিয়ন্ত্রণে থাকাকালীন শাটল ট্রেনের বিভিন্ন বগিকে কেন্দ্র করে গ্রুপগুলো গড়ে ওঠে।

সাড়ে তিন বছরে ১৫০ বার সংঘর্ষ: পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন, হল দখল, আধিপত্য বিস্তার, টেন্ডারের টাকা ভাগবাঁটোয়ারাসহ বিভিন্ন ঠুনকো অজুহাতে গত সাড়ে তিন বছরে অন্তত দেড় শবার সংঘর্ষে জড়িয়েছে শাখা ছাত্রলীগের বিভিন্ন গ্রুপ। এসব ঘটনায় আহত হয়েছেন কয়েক শতাধিক নেতা-কর্মী। আবার বহিষ্কারও হয়েছেন অর্ধ শতাধিক নেতা-কর্মী। যদিও বহিষ্কারাদেশ কখনোই পুরোপুরিভাবে বাস্তবায়ন করেনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। 

হল কমিটির প্রতিশ্রুতি কাগজে-কলমেই: কমিটি গঠনের পরপরই শীর্ষ দুই নেতা ঘোষণা দিয়েছিলেন বগিভিত্তিক রাজনীতির সংস্কৃতি বিলুপ্ত করে শাখা ছাত্রলীগের রাজনীতি হলভিত্তিক করবেন। যে জন্য দ্রুততম সময়ের মধ্যে হল কমিটি ঘোষণা করবেন। তবে হল কমিটি ঘোষণার দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি সাড়ে তিন বছরেও চোখে পড়েনি। নেতা-কর্মীদের অভিযোগ, নিজেদের একক কর্তৃত্ব ধরে রাখতে হল কমিটি দিচ্ছেন না শীর্ষ দুই নেতা। 

পূর্ণাঙ্গ কমিটি নিয়ে বিতর্ক: দুই সদস্যের কমিটি গঠনের তিন বছরের পর পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করেন শীর্ষ দুই নেতা। তবে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের পরপরই পদবাণিজ্য, অছাত্র, বিবাহিতদের কমিটিতে রাখার অভিযোগ এনে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন পদবঞ্চিতরা। পরবর্তী সময়ে তাঁরা কমিটি পুনর্বিন্যাসের দাবিতে অনির্দিষ্টকালের অবরোধের ডাক দেন। ফলে দুই দিন কার্যত অচল থাকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। 

বর্ধিত সভা হয়নি একটিও: ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা বলেন, কমিটির মেয়াদ সাড়ে তিন বছর হলেও সব গ্রুপকে নিয়ে কোনো বর্ধিত সভা হয়নি। এমনকি পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে পদপ্রাপ্ত নেতাদের নিয়ে কোনো মিছিল, সভা বা কোনো অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়নি। বিভিন্ন জাতীয় ও সাংগঠনিক অনুষ্ঠান সব গ্রুপ দূরের কথা, সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকও সব সময় এক হয়ে পালন করতে পারেননি। 

ফাইল ছবিশোকজ করেই দায় সারছে কেন্দ্র: ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের দাবি, বারবার বিতর্কে জড়ানোর পেছনে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নিষ্ক্রিয়তা অনেকাংশেই দায়ী। বারবার সংঘর্ষ, বিতর্কিত কর্মকাণ্ড ঘটলেও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। বরং শোকজ করেই দায় সারছে তারা। 

যা বলছেন বিভিন্ন গ্রুপের নেতারা: 
শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি ও বাংলার মুখের নেতা আবু বকর তোহা আজকের পত্রিকাকে বলেন, এক বছরের কমিটির মেয়াদ চার বছর ছুঁই ছুঁই। পূর্ণাঙ্গ কমিটি বিশাল আকারে করলেও বেশির ভাগ যোগ্য কর্মীকে মূল্যায়ন করা হয়নি। যে কারণে দুই নেতার ওপর কর্মীদের আস্থা নেই। এত বছর দায়িত্ব পালন করেও তাঁরা সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে কোনো মিটিং-মিছিলের আয়োজন করতে পারেননি। এ ছাড়া সভাপতিকে নিয়ে দফায় দফায় যেসব কথা উঠে আসছে, এগুলো তো সত্য। ওনার বয়সের সঙ্গে তৃণমূলের নেতাদের বয়সের অনেক পার্থক্য। এগুলো তৃণমূলের রাজনীতিতে প্রভাব রাখে। তাই কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের প্রতি আমাদের দাবি থাকবে, সব বিষয় বিবেচনা করে যেন নতুন কমিটি দেওয়া হয়। 

বর্তমান কমিটিকে পুরোপুরি ব্যর্থ আখ্যা দিয়ে শাখা ছাত্রলীগের আরেক সহসভাপতি ও ভার্সিটি এক্সপ্রেস গ্রুপের নেতা প্রদীপ চক্রবর্তী দুর্জয় বলেন, কমিটি হওয়ার পর থেকে অধিকাংশ জাতীয় অনুষ্ঠান সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক নিজেরাই একসঙ্গে করতে পারেননি। পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের পর পদপ্রাপ্ত সবাইকে নিয়ে গঠনতান্ত্রিক যে বর্ধিত সভা বা কর্মিসভা হয়, তা আজ পর্যন্ত হয়নি। সাংগঠনিকভাবে চিন্তা করলে এই কমিটি পুরোপুরি ব্যর্থ। ছাত্রবান্ধব কোনো কর্মসূচিও তারা গ্রহণ করতে পারেনি, যেগুলোর জন্য তারা প্রশংসা পাবে। বরং সাম্প্রতিক সময়ে দুই নেতাকে দিয়ে পা টেপানোসহ বিভিন্ন বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে ছাত্রলীগকে নেতিবাচকভাবে তুলে ধরেছে। তাঁদের নেতৃত্বের অযোগ্যতা বারবার ফুটে উঠেছে। তাই যোগ্যদের হাতে নতুন কমিটি তুলে দেওয়ার জন্য কেন্দ্রের প্রতি আমাদের অনুরোধ। 

এই কমিটি যত দ্রুত বিলুপ্ত করা হবে ছাত্রলীগের জন্য ততই মঙ্গল জানিয়ে শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক ও বিজয় গ্রুপের নেতা মোহাম্মদ ইলিয়াস বলেন, এই কমিটি পদে পদে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। বারবার সভাপতি বিরূপ প্রতিক্রিয়ার শিকার হয়েছেন। এমন কোনো কুকর্ম নেই, যা সভাপতি করেননি। 

শীর্ষ দুই নেতা যা বলছেন: 
শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেল বলেন, ‘আমরা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে কথা বলে শিগগিরই হল ও অনুষদ কমিটি দিয়ে দেব। রমজানে ইফতার মাহফিলের মাধ্যমে একটি বর্ধিত সভা করার পরিকল্পনা আমাদের আছে।’

রেজাউল হক রুবেল আরও বলেন, আগের প্রক্টর নিজের স্বার্থে বিভিন্ন গ্রুপকে দিয়ে সংঘর্ষ বাঁধিয়ে দিতেন। যে কারণে প্রক্টরকে পদত্যাগও করতে হয়েছে। এখন ছাত্রলীগ অনেকটা শৃঙ্খলার মধ্যে আছে।’ 

তবে হল কমিটি না হওয়ার জন্য হলে প্রশাসন আসন বরাদ্দ না দেওয়া ও বগিভিত্তিক গ্রুপগুলোকে দায়ী করেন শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন টিপু। তিনি বলেন, ‘হল ও অনুষদ কমিটি গঠন করতে আমরা কয়েকবার উদ্যোগ নিয়েছি। তবে প্রশাসনের আসন বরাদ্দ না দেওয়া ও বগিভিত্তিক গ্রুপগুলোর অপরাজনীতির কারণে তা সম্ভব হয়নি। আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’ 

অন্যান্য অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ইববাল হোসেন টিপু বলেন, ‘কাজ করলে সমালোচনা হবেই। আমরা গঠনমূলক সমালোচনাকে স্বাগত জানাই।’ 

যা বলছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ: 
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান আজকের পত্রিকাকে বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংগঠনিক গতিশীলতা ফিরিয়ে আনার জন্য বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কার্য নির্বাহী সংসদ অতি দ্রুত যথাযথ সাংগঠনিক প্রস্তুতি গ্রহণ করবে। এটা নতুন কমিটি দেওয়ার আভাস কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সাংগঠনিক গতি আনার জন্য যা যা করণীয়, আমরা সব করব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খুলনায় এনসিপি নেতা গুলিবিদ্ধের ঘটনায় তরুণী আটক

সরকারের দেওয়া গানম্যান প্রত্যাখ্যান করলেন নুরুল হক নুর

এবার দিল্লি ও আগরতলায় ভিসা কার্যক্রম ‘সাময়িক বন্ধ’ করল বাংলাদেশ

সখীপুরে দুই মোটরসাইকেলের সংঘর্ষ, দুই স্কুলছাত্রসহ নিহত ৩

‘ছাত্রদল আপনার মতো আম্মারকে ৩০ মিনিটে বের করে দিতে সক্ষম’, ভিডিও ভাইরাল

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

‎আরমানিটোলায় বহুতল ভবনে আগুন‎, ৪০ মিনিট পর নিয়ন্ত্রণে

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮: ৫৯
বাবুবাজার এলাকায় হাজী টাওয়ার নামের ১৪ তলা ভবনের ষষ্ঠ তলায় আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। ছবি: ফায়ার সার্ভিস
বাবুবাজার এলাকায় হাজী টাওয়ার নামের ১৪ তলা ভবনের ষষ্ঠ তলায় আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। ছবি: ফায়ার সার্ভিস

‎রাজধানীর আরমানিটোলার বাবুবাজার এলাকায় হাজী টাওয়ার নামের ১৪ তলা ভবনের ষষ্ঠতলায় আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। আজ মঙ্গলবার সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে আগুন লাগার খবর পেয়ে নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে ফায়ার সার্ভিসের ৯টি ইউনিট। সকাল ৭টা ২০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তর থেকে আজ সকালে খুদে বার্তায় সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানানো হয়।

‎‎ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে আগুন লাগার সংবাদ পাওয়া যায়। খবর পাওয়ার মাত্র ৫ মিনিটের মধ্যে, অর্থাৎ সকাল ৬টা ৪৫ মিনিটে ফায়ার সার্ভিসের ইউনিটগুলো ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে।

বাবুবাজার এলাকায় হাজী টাওয়ার নামের ১৪ তলা ভবনের ষষ্ঠ তলায় আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। ছবি: ফায়ার সার্ভিস
বাবুবাজার এলাকায় হাজী টাওয়ার নামের ১৪ তলা ভবনের ষষ্ঠ তলায় আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। ছবি: ফায়ার সার্ভিস

হাজী টাওয়ারের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সদরঘাট ফায়ার স্টেশন থেকে ২টি, সিদ্দিকবাজার ফায়ার স্টেশন থেকে ৫টি এবং সূত্রাপুর ফায়ার স্টেশন থেকে ২টিসহ মোট ৯টি ইউনিট ঘটনাস্থলে কাজ করে। পরে সকাল ৭টা ২০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।‎

তাৎক্ষণিকভাবে আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি। এ বিষয়ে তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানানো হবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খুলনায় এনসিপি নেতা গুলিবিদ্ধের ঘটনায় তরুণী আটক

সরকারের দেওয়া গানম্যান প্রত্যাখ্যান করলেন নুরুল হক নুর

এবার দিল্লি ও আগরতলায় ভিসা কার্যক্রম ‘সাময়িক বন্ধ’ করল বাংলাদেশ

সখীপুরে দুই মোটরসাইকেলের সংঘর্ষ, দুই স্কুলছাত্রসহ নিহত ৩

‘ছাত্রদল আপনার মতো আম্মারকে ৩০ মিনিটে বের করে দিতে সক্ষম’, ভিডিও ভাইরাল

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নির্দোষ আওয়ামী লীগসহ সাধারণ মানুষকে হয়রানি না করার দাবি বিএনপি নেতার

নেছারাবাদ (পিরোজপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮: ৪১
গতকাল দুপুরে নেছারাবাদে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন বিএনপি নেতা মো. মইনুল হাসান। ছবি: আজকের পত্রিকা
গতকাল দুপুরে নেছারাবাদে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন বিএনপি নেতা মো. মইনুল হাসান। ছবি: আজকের পত্রিকা

নেছারাবাদে নির্দোষ ও নিরপরাধ আওয়ামী লীগ সমর্থকসহ সাধারণ জনগণকে হয়রানি না করার জন্য পিরোজপুরের জেলা প্রশাসকের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন বিএনপি নেতা মো. মইনুল হাসান। গতকাল সোমবার দুপুরে নেছারাবাদ উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এই দাবি জানান। জেলা প্রশাসকের সফর উপলক্ষে নেছারাবাদ উপজেলা পরিষদ হলরুমে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন পিরোজপুর জেলা প্রশাসক মো. আবু সাঈদ। সভাপতিত্ব করেন নেছারাবাদ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অমিত দত্ত। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন নেছারাবাদ-কাউখালী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার সাবিহা মেহবুবা, নেছারাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মেহেদী হাসান।

সভায় স্বরূপকাঠি পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মইনুল হাসান বলেন, ‘নেছারাবাদ উপজেলায় যেন কোনো নির্দোষ ও নিরীহ মানুষকে হয়রানি করা না হয়। গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে যেকোনো ধরনের আর্থিক লেনদেন বা হয়রানি বন্ধ করতে হবে।’ প্রকৃত অপরাধীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি। বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, ‘বিএনপির প্রার্থী আহমেদ সোহেল মঞ্জুর সুমনও ইতিপূর্বে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে একই ধরনের অনুরোধ জানিয়েছেন।’ পাশাপাশি ধর্মকে অপব্যবহার করে নেছারাবাদে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি যেন না হয়, সে বিষয়ে প্রশাসনের কঠোর নজরদারির আহ্বান জানান তিনি।

এর আগে একই সভায় বক্তব্য দেন জামায়াত নেতা মো. গোলাম আযম। তিনি অভিযোগ করে বলেন, অতীতে ডিবি পুলিশের মাধ্যমে নির্দোষ কিছু মানুষকে ধরে গ্রেপ্তার-বাণিজ্য করা হয়েছে। এ ধরনের কর্মকাণ্ড বন্ধ করে প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেপ্তারের মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার দাবি জানান তিনি।

নেছারাবাদ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. রায়হান মাহমুদের সঞ্চালনায় মঞ্চে আরও উপস্থিত ছিলেন, নেছারাবাদ সেনাক্যাম্পের কমান্ডার ক্যাপ্টেন আল আরাফ, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তানভীর হোসেন জয় প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খুলনায় এনসিপি নেতা গুলিবিদ্ধের ঘটনায় তরুণী আটক

সরকারের দেওয়া গানম্যান প্রত্যাখ্যান করলেন নুরুল হক নুর

এবার দিল্লি ও আগরতলায় ভিসা কার্যক্রম ‘সাময়িক বন্ধ’ করল বাংলাদেশ

সখীপুরে দুই মোটরসাইকেলের সংঘর্ষ, দুই স্কুলছাত্রসহ নিহত ৩

‘ছাত্রদল আপনার মতো আম্মারকে ৩০ মিনিটে বের করে দিতে সক্ষম’, ভিডিও ভাইরাল

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ফকিরহাটে ভৈরব নদ: খননেও মেলেনি সুফল বাধা ওয়াসার পাইপ

  • ২০২০ সালে নদের সাড়ে ১৭ কিমি পুনঃখনন করে পাউবো।
  • পাঁচ বছরের মধ্যে নদটির বিভিন্ন অংশে পলি জমে ভরাট হয়ে গেছে।
ফকিরহাট (বাগেরহাট) প্রতিনিধি 
বাগেরহাটের ফকিরহাটে ভৈরব নদের মাঝামাঝি স্থানে ওয়াসার পাইপলাইন। ছবি: আজকের পত্রিকা
বাগেরহাটের ফকিরহাটে ভৈরব নদের মাঝামাঝি স্থানে ওয়াসার পাইপলাইন। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত ভৈরব নদ খননের পরও সুফল পাচ্ছে না এলাকাবাসী। উপজেলার ফকিরহাট বাজারসংলগ্ন এলাকা দিয়ে নেওয়া খুলনা ওয়াসার পাইপলাইনের কারণে নদীটিতে নৌচলাচল বাধাগ্রস্ত হয়েছে। দেখা দিয়েছে মারাত্মক নাব্যতাসংকট।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ফকিরহাট বাজারের পাশ দিয়ে যাওয়া ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের একটি সেতুর নিচে ভৈরব নদের মাঝ বরাবর বড় পানির পাইপ রয়েছে। পাইপটি রক্ষায় নদীর ভেতর আড়াআড়িভাবে লোহার খাম্বা বসিয়ে বেড়া দেওয়ায় নদীটিতে বাঁধ তৈরি হয়েছে। ফলে জোয়ার-ভাটার স্বাভাবিক গতি ব্যাহত হয়ে নদীগর্ভে দ্রুত পলি জমছে। বাধাগ্রস্ত হচ্ছে নৌচলাচল।

স্থানীয়রা বলেন, ফকিরহাট, মোল্লাহাট এবং আশপাশের বিস্তীর্ণ এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনসহ নৌপথ সচল রাখতে ২০২০ সালে ভৈরব নদের সাড়ে ১৭ কিমি পুনঃখনন করে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। তবে খননের সুফল কাজে আসেনি। মোল্লাহাটের মধুমতী নদী থেকে খুলনা শহরে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের জন্য স্থাপন করা ওয়াসার পাইপলাইনের কারণে নদীটিতে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। গত বর্ষা মৌসুমে নদী দিয়ে পানি নিষ্কাশন ব্যাহত হওয়ায় ফকিরহাট এবং আশপাশের এলাকায় ব্যাপক জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এতে বিস্তীর্ণ এলাকার ফসলি জমি ও মাছের ঘের পানিতে ডুবে নষ্ট হয়ে যায়।

ফকিরহাট বাজারের ব্যবসায়ী মুকুন্দ পাল বলেন, নৌচলাচল বন্ধ থাকায় ব্যবসায় মারাত্মক প্রভাব পড়েছে। নৌপথ চালু থাকলে খুলনা, মোংলা বন্দর, বাগেরহাট ও বরিশালের সঙ্গে স্বল্প খরচে পণ্য পরিবহন সম্ভব হতো।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুমনা আইরিন বলেন, ওয়াসার পাইপটি ফকিরহাটসহ পার্শ্ববর্তী এলাকার একটি বৃহৎ জনগোষ্ঠীর জন্য দীর্ঘদিনের ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিষয়টি দ্রুত সমাধানে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

খুলনা ওয়াসার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরমান সিদ্দিক বলেন, ওই স্থানে পাইপলাইনের মেরামতের জন্য প্রয়োজনীয় উন্নত প্রযুক্তির যন্ত্রপাতি চীন থেকে আনার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। যন্ত্রপাতি এলে পাইপলাইনটি নৌযান চলাচলের উপযোগী করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খুলনায় এনসিপি নেতা গুলিবিদ্ধের ঘটনায় তরুণী আটক

সরকারের দেওয়া গানম্যান প্রত্যাখ্যান করলেন নুরুল হক নুর

এবার দিল্লি ও আগরতলায় ভিসা কার্যক্রম ‘সাময়িক বন্ধ’ করল বাংলাদেশ

সখীপুরে দুই মোটরসাইকেলের সংঘর্ষ, দুই স্কুলছাত্রসহ নিহত ৩

‘ছাত্রদল আপনার মতো আম্মারকে ৩০ মিনিটে বের করে দিতে সক্ষম’, ভিডিও ভাইরাল

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিচার পেতে জীবনের ঝুঁকি

মো. হোসাইন আলী কাজী
আপডেট : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৭: ৪৩
বিএডিসির জরাজীর্ণ ভবন। ছবি: আজকের পত্রিকা
বিএডিসির জরাজীর্ণ ভবন। ছবি: আজকের পত্রিকা

আইনের আশ্রয় নিতে এসে ভয় নিয়ে ঢুকতে হচ্ছে আদালতে। অর্ধশত বছরের পুরোনো দুটি পরিত্যক্ত ভবনের মাঝ দিয়েই বরগুনার আমতলী উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মূল প্রবেশপথ। জরাজীর্ণ ভবন দুটি যেকোনো সময় ধসে পড়ার শঙ্কা রয়েছে। তাই প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়েই বিচারপ্রার্থী, আইনজীবী ও আদালতের কর্মচারীরা ওই পথ ব্যবহার করছেন। বড় ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে ভবন দুটি দ্রুত অপসারণের দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

জানা গেছে, ১৯৭৫ সালে বিএডিসি কর্তৃপক্ষ আমতলী উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সামনে মেশিনারিজ যন্ত্রাংশ ও কৃষি উপকরণ সংরক্ষণের জন্য দুটি দ্বিতল পাকা ভবন নির্মাণ করে। প্রায় ১৫ বছর আগে উপজেলা প্রশাসন ভবন দুটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করে। তবে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও সেগুলো অপসারণে কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

পরিত্যক্ত ওই ভবন দুটির মাঝখান দিয়েই আদালতের প্রধান প্রবেশদ্বার নির্মিত। প্রতিদিন বিচারকাজে অংশ নিতে হাজারো মানুষ ওই ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের নিচ দিয়ে আদালতে যাতায়াত করেন। স্থানীয়দের দাবি, ভবন দুটি এতটাই জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে যে, যেকোনো সময় ধসে পড়তে পারে। এতে প্রাণহানির শঙ্কা রয়েছে।

গত রোববার বিকেলে সরেজমিনে দেখা গেছে, ভবন দুটির বিভিন্ন অংশ থেকে ইট, পাথর ও বিম খসে পড়ছে। দেয়ালজুড়ে জন্মেছে পরগাছা। ভেতরের অবস্থা এমন যে দিনের বেলায়ও সেখানে ঢুকতে ভয় পান মানুষ। ভবন দুটি ভুতুড়ে অবস্থায় পরিণত হওয়ায় আদালত প্রাঙ্গণের পরিবেশও নষ্ট হচ্ছে।

বিচারপ্রার্থী আব্দুল মাজেদ বলেন, ‘আদালতের সামনে এভাবে দুটি পরিত্যক্ত ভবন থাকা যেমন দৃষ্টিকটু, তেমনি তা আমাদের জীবনের জন্য মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। দ্রুত ভবন দুটি অপসারণ করা প্রয়োজন।’

আমতলী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের পেশকার মো. আবুবকর বলেন, আদালতের প্রবেশপথের দুই পাশে পরিত্যক্ত দুটি ভবন পড়ে আছে। ভবন ধসে পড়লে বড় ধরনের প্রাণহানি ঘটতে পারে।

জেলা বার সদস্য ও অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর মো. জসিম উদ্দিন বলেন, পরিত্যক্ত ভবন দুটি অপসারণের জন্য উপজেলা প্রশাসনকে একাধিকবার অবহিত করা হয়েছে। বিচারপ্রার্থী ও আইনজীবীদের নিরাপত্তার স্বার্থে দ্রুত ভবন দুটি অপসারণ করা জরুরি।

জানতে চাইলে আমতলী উপজেলা বিএডিসির উপসহকারী প্রকৌশলী সৈয়দ মোহাইমিনুল ইসলাম বলেন, ‘ভবন দুটি বহু আগেই পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। কেন এখনো সেগুলো অপসারণ করা হয়নি, তা আমারও বোধগম্য নয়।’

এ বিষয়ে উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী মো. ইদ্রিস আলী বলেন, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইউএনও মুহাম্মদ জাফর আরিফ চৌধুরী বলেন, পরিত্যক্ত ভবন দুটি যথাযথ প্রক্রিয়ায় দ্রুত সময়ের মধ্যেই অপসারণ করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খুলনায় এনসিপি নেতা গুলিবিদ্ধের ঘটনায় তরুণী আটক

সরকারের দেওয়া গানম্যান প্রত্যাখ্যান করলেন নুরুল হক নুর

এবার দিল্লি ও আগরতলায় ভিসা কার্যক্রম ‘সাময়িক বন্ধ’ করল বাংলাদেশ

সখীপুরে দুই মোটরসাইকেলের সংঘর্ষ, দুই স্কুলছাত্রসহ নিহত ৩

‘ছাত্রদল আপনার মতো আম্মারকে ৩০ মিনিটে বের করে দিতে সক্ষম’, ভিডিও ভাইরাল

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত