Ajker Patrika

গাজীপুরে তৃতীয় দিনের মতো মহাসড়ক অবরোধ শ্রমিকদের, যানজট ছড়িয়েছে অলিগলিতে

গাজীপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ১১ নভেম্বর ২০২৪, ১২: ০৬
তৃতীয় দিনের মতো ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছে টিঅ্যান্ডজেড গ্রুপের শ্রমিকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
তৃতীয় দিনের মতো ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছে টিঅ্যান্ডজেড গ্রুপের শ্রমিকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

বকেয়া বেতনের দাবিতে তৃতীয় দিনের মতো ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছে টিঅ্যান্ডজেড গ্রুপের শ্রমিকেরা। প্রায় ৫০ ঘণ্টা ধরে চলা এ অবরোধের কারণে মহাসড়কে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়েছে । এতে দুর্ভোগে পড়েছেন ঢাকা, ময়মনসিংহ ও টাঙ্গাইলসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় যাতায়াতকারীরা যাত্রীরা। পাশাপাশি ক্ষুব্ধ চালক, এলাকাবাসী ও সাধারণ মানুষ। পায়ে হেঁটে গন্তব্যে যাচ্ছেন যাত্রীরা।

এদিকে শ্রমিকদের দাবি, বকেয়া পাওনা না পেলে তারা রাস্তা ছাড়বেন না। এ ছাড়া মহানগরীর কোনাবাড়ী এলাকায় অপর একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা অভ্যন্তরীণ একটি সড়ক অবরোধ করে রেখেছে।

গাজীপুর মহানগরীর মালেকের বাড়ি এলাকায় টিঅ্যান্ডজেড গ্রুপের শ্রমিকেরা গত শনিবার সকাল ৯টায় মহাসড়ক অবরোধ শুরু করে। আজ সোমবার সকাল দশটায় প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সড়ক অবরোধ অব্যাহত রেখেছে। আন্দোলনে শনিবার থেকে পর্যায়ক্রমে শ্রমিকেরা ভাগ করে অবস্থান করছে। দুই থেকে আড়াই শ শ্রমিক মহাসড়কে অবস্থান নিয়েছেন। ভিড় জমাচ্ছেন উৎসুক জনতাও।  এদিকে টিঅ্যান্ডজেড এর শ্রমিকদের আন্দোলনের কারণে আশপাশের ১৫-২০টি কারখানা সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে।

শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধে বিপদে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। বাচ্চা কোলে নিয়ে ঢাকা থেকে ময়মনসিংহের দিকে যাচ্ছিলেন কলিম উদ্দিন। কোথায় যান জানতে চাইলে তিনি ক্ষুব্ধ কণ্ঠে বলেন, সবকিছুর একটা সীমা থাকা দরকার। দেশের গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়ক আজ তিন দিন ধরে বন্ধ। অথচ কর্তৃপক্ষ নির্বিকার। এটা কোনোভাবেই মানা যায় না। মানুষ চলাচল করতে পারছে না। দূরপাল্লার গাড়ি চলছে না।

টানা শ্রমিক অবরোধের ফলে কার্যত অচল হয়ে গেছে গাজীপুর। মহাসড়কের যানজট রাতে বিভিন্ন বিকল্প পথে চলাচল শুরু করায় যানজট এখন অলিগলিতে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে মহাসড়কের যানজট আস্তে আস্তে কমতে শুরু করেছে। অবরোধের বিষয়টি জানার পর অধিকাংশ যাত্রী ও যানবাহন এ সড়ক এড়িয়ে চলছেন।

মহাসড়ক অবরোধ থাকায় পায়ে হেঁটে গন্তব্যে যাচ্ছেন যাত্রীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
মহাসড়ক অবরোধ থাকায় পায়ে হেঁটে গন্তব্যে যাচ্ছেন যাত্রীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

সোমবার সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, গাজীপুর মহানগরীর মালিকের বাড়ি এলাকায় কলম্বিয়া গার্মেন্টসের সামনে ২০০ মিটার ব্যবধানে দুটি ব্যারিকেড দিয়ে যান চলাচল আটকে দেওয়া হয়েছে। মাঝখানে কয়েক শ শ্রমিক এবং কিছু যুবককে লাঠি হাতে ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়। তারা কেউ কোনো কথা বলতে চাইলে বেতন ছাড়া আর কোনো কথা বলার ব্যাপারে আপত্তি জানায়।

আন্দোলনকারী এক যুবক এগিয়ে এসে বলেন, ‘আমরা কষ্ট করেছি কাজ করেছি আমাদের টাকা দিচ্ছে না।  আমরা আমাদের পাওনা চাচ্ছি। আমাদের পাওনা দিয়ে দেন আমরা বাড়ি চলে যাব।’

এ সময় এখানে দায়িত্বরত শিল্প পুলিশের পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম এবং গাজীপুর মহানগর পুলিশের ওপর পুলিশ কমিশনার (অপরাধ-উত্তর) নাজির আহমেদকে কথা বলতেও বাধা দিতে দেখা যায় তাদের। শ্রমিকদের দাবি যা বলার মাইকে বলেন।

ময়মনসিংহ থেকে চাঁদপুরগামী হায়দার নামে এক ট্রাকচালক বলেন, দু’দিন ধরে সড়কে রয়েছি। কোথাও যেতে পারছি, নড়তেও পারছি না। অনেক ট্রাকে পচনশীল পণ্য রয়েছে। যাত্রীবাহী বাস থেকে যাত্রীরা নেমে গেছে দুদিন আগে। কিন্তু বাস আগের স্থানেই রয়েছে। খুব বিরক্ত হয়ে গেছি ভাই।

আন্দোলনরত শ্রমিকেরা বলেন, গত এপ্রিল মাস থেকে কারখানা বন্ধ ছিল। পরে কারখানা খুললেও দুই মাসের বেতন না দিয়ে কর্তৃপক্ষ টালবাহানা শুরু করে। পুলিশ ও সেনাবাহিনীর মাধ্যমে বারবার বেতন পরিশোধের তারিখ দিলেও কারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করেনি। সর্বশেষ ৭ নভেম্বর আবার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করলে শিল্প পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা এ বিষয়ে সমাধান করার আশ্বাস দিলে তাঁরা ফিরে যান। কিন্তু শ্রমিকেরা বেতন পাচ্ছেন না। তা ছাড়া কারখানা বেশ কিছুদিন ধরে বন্ধ আছে। এসব কারণে শনিবার সকাল থেকে আবারও মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন শ্রমিকেরা। বারবার সময় দেওয়ার পরও বেতন পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় শ্রমিকেরা এখন আর কারও কথা আর বিশ্বাস করে না।

গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ী এলাকার একটি কারখানার শ্রমিকেরাও বেতনের জন্য বিক্ষোভ করছেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ী এলাকার একটি কারখানার শ্রমিকেরাও বেতনের জন্য বিক্ষোভ করছেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

শ্রমিক নেতা আরমান হোসাইন বলেন, আমরা শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেছি, তাদের ধৈর্য ধরতে বলেছি। তারা বলেছেন দুই মাস ধৈর্য ধরেছি ,আর না। আমাদের কথা হচ্ছে মহাসড়ক অবরোধ রাখায় যে ভোগান্তি হচ্ছে এটি দ্রুত সমাধান করা। আশুলিয়া আর গাজীপুর মিলে ৮-১০ টা কারখানায় মূলত ঝামেলা দেখছি। তাদের পাওনাও খুব বেশি না। প্রয়োজনে ওই সব মালিকদের কিছু সম্পদ বিক্রি করে হলেও পাওনা পরিশোধ করুক। আজ আমরা আবারও শ্রমিকদের সঙ্গে বসব।

গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার (অপরাধ-উত্তর) নাজির আহমেদ বলেন, শ্রমিকদের বোঝানো হয়েছে। কিন্তু কোনো কথাই শুনে না। তারা বেতন না নিয়ে মহাসড়ক ছাড়বে না। তাঁদের আজও বোঝানো হচ্ছে। যেহেতু দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়েছে, এ জন্য আপাতত বিকল্প যে রাস্তা রয়েছে তা ব্যবহার করতে বলা হয়েছে।

গাজীপুর শিল্প পুলিশের পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম বলেন, শ্রমিকদের দাবি ন্যায্য। মালিকপক্ষ একাধিকবার প্রতিশ্রুতি দিয়েও তারা রক্ষা করতে পারেনি। তাই শ্রমিকেরা গত দুটি রাত রাস্তায় বসে আছে।

তিনি আরও বলেন আমি যতদূর জানি মালিকপক্ষও টাকা সংগ্রহের চেষ্টা করছে।

এ সময় তিনি শ্রমিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, যদি তোমরা পারো মানুষের কষ্টের কথা চিন্তা করে রাস্তা ছেড়ে দাও। এ সময় উপস্থিত শ্রমিকেরা বলেন, আমাদের টাকা না দিলে আমরা রাস্তা ছাড়ব না।

এদিকে, গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ীতে এক মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করে রেখেছে পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা।

সোমবার সকাল ৮ টা থেকে মহানগরীর কোনাবাড়ী থানাধীন স্বাধীন গার্মেন্টসের শ্রমিকেরা পল্লী বিদ্যুৎ দশতলা আঞ্চলিক সড়কটি অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন।

পুলিশ জানায়, গত অক্টোবর মাসের বেতন এ মাসের ১০ তারিখে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কর্তৃপক্ষ ১০ তারিখে বেতন দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে শ্রমিকেরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। গতকাল দুপুরে পর তারা কাজ বন্ধ করে দেয়। আজ সকাল ৮টায় এসে কাজে যোগ না দিয়ে পল্লী বিদ্যুৎ সড়ক অবরোধ করে রেখেছে পোশাক শ্রমিকেরা। কর্তৃপক্ষ বলছেন ১৪ নভেম্বরের আগে  বেতন দেওয়া সম্ভব হবে না। কিন্তু শ্রমিকেরা কেউ এ কথা শুনছেন না।

শ্রমিকেরা বলেন, প্রতি মাসের দশ তারিখে বেতন দেওয়ার কথা থাকলেও কর্তৃপক্ষ বেতনের সময় টালবাহানা শুরু করে। তারা বলেন, বেতন না দিলে আমরা কাজে যোগ দেব না।

এ বিষয়ে  জানতে স্বাধীন গার্মেন্টসের প্রশাসনিক কর্মকর্তা রাজু আহমেদের মোবাইল ফোনে একাধিক বার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

অন্যদিকে বাইমাইলে কাশেম ল্যাম্পস কারখানার শ্রমিকেরা হাজিরা বোনাস, টিফিন বিল, নাইট বিলসহ দশ দফা দাবি আদায়ে বিক্ষোভ করছে।

গাজীপুর মহানগর পুলিশের কোনাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নজরুল ইসলাম জানান, বকেয়া বেতনের দাবিতে স্বাধীন গার্মেন্টসের শ্রমিকেরা রাস্তা অবরোধ করেছেন। শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে যান চলাচল স্বাভাবিক করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কর্ণফুলীতে অস্ত্রসহ যুবক আটক

কর্ণফুলী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি 
অস্ত্রসহ আটক যুবক। ছবি: সংগৃহীত
অস্ত্রসহ আটক যুবক। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামের কর্ণফুলীতে অস্ত্র, কার্তুজসহ রাশেদ নুর প্রকাশ রাশু (৩৮) নামের এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ। শুক্রবার ভোর চারটার দিকে বৈরাগ ইউনিয়নের উত্তর বন্দর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁকে আটক করা হয়।

আটক যুবক ওই এলাকার রাজ্জাক নুর প্রকাশ রজ্জক নুরের ছেলে। এ সময় তাঁর কাছ থেকে দেশীয় তৈরি ১টি এলজি এবং ৩টি কার্তুজ উদ্ধার করে পুলিশ।

বিষয়টি নিশ্চিত করে কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহেদুল ইসলাম বলেন, আটক যুবকের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। পুলিশ পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‘চাঁদা না দিলে এই চরে আর তরমুজ চাষ করতে পারবি না’

দশমিনা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি 
অভিযুক্ত যুবদল নেতা নজরুল ইসলাম মোল্লা। ছবি: সংগৃহীত
অভিযুক্ত যুবদল নেতা নজরুল ইসলাম মোল্লা। ছবি: সংগৃহীত

পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলায় যুবদলের এক নেতার বিরুদ্ধে চাঁদা দাবি, ঘর ভাঙচুর, টাকা ছিনতাই ও হত্যার হুমকির অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত মো. নজরুল ইসলাম মোল্লা উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। ভুক্তভোগী তরমুজ চাষি ফরিদ উদ্দিন হাওলাদার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের ৬ নম্বর উত্তর বাঁশবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, যুবদল নেতা নজরুল বেশ কিছুদিন ধরে তরমুজ চাষি ফরিদ উদ্দিনের কাছে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করছিলেন। চাঁদা না দেওয়ায় গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে নজরুলসহ ৯-১০ জন চর ফাতেমায় গিয়ে ফরিদ উদ্দিনের তরমুজের ২০ হাজার চারা নষ্ট করে দেন। ফরিদ উদ্দিন চারা নষ্টের বিষয়ে জানতে চাইলে নজরুল বলেন, ‘চাঁদা না দিলে এই চরে আর তরমুজ চাষ করতে পারবি না।’ পরে হত্যার হুমকি দিয়ে নজরুল চলে যান।

এরপর গতকাল রাত ১০টার দিকে নজরুল তাঁর দলবল নিয়ে ফরিদের ঘরে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন। একপর্যায়ে ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে ফরিদকে মারধর করেন তাঁরা। ডাকচিৎকার শুনে এলাকার লোকজন দৌড়ে এলে নজরুল তাঁর বাহিনী নিয়ে চলে যান।

প্রত্যক্ষদর্শী মোশারেফ চৌকিদার বলেন, ‘আমি ভাত খেয়ে শুইতে যাওয়ার সময় বাড়ির পূর্ব পাশে পিটাপিটির শব্দ পাই। তখন লোকজন নিয়ে এসে দেখি, ১০-১২ জন লোক মুখোশ পরা, প্রত্যেকের হাতে রাম দা। দূরে দাঁড়িয়ে ঘরের মধ্যে চিৎকার শুনি। তখন আমরা কয়েকজন ডাকাত পড়ছে বলে ডাকাডাকি করতে থাকি। এরপর দক্ষিণ দিকে তারা দৌড়ে চলে যায়।’ তাদের পরিচয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি কাউকে চিনি না। তবে যাওয়ার সময় বলেছে, ‘‘চরে তোরে খাইয়া দিমু’’।’

প্রতিবেশী আলেয়া ও সাহিনুর বলেন, ‘রাত ১০টায় ঘর পেটানোর শব্দ পাই। আমরা দৌড়ে আসি ফরিদ হাওলাদারের ঘরের সামনে। দেখি ১০-১২ জন রাম দা নিয়া দাঁড়াইয়া আছে। তাদের হাতে রাম দা দেখে কেউই সামনে যাইনি। পরে আরও লোকজন আসলে নজরুল, আল আমিনসহ তারা সবাই চলে যায়। আমরা ঘরে গিয়ে দেখি, ফরিদ হাওলাদার ঘরের মেঝেতে পড়ে আছে।’

তরমুজ চাষি ফরিদ হাওলাদার বলেন, ‘আমি রাতে আমার ঘেরের ঘরে শুয়ে ছিলাম। রাত ১০টায় আমার ঘরে পেটানোর শব্দ পেয়ে উঠে বসি। দেখি, নজরুল, আল আমিনসহ ৮-৯ জন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে দরজা ভেঙে ঘরে প্রবেশ করে। আমাকে চৌকির ওপর শোয়াইয়া পিটায়, পাড়ায় এবং জবাই করার জন্য গলায় রাম দা রেখে বলে ‘‘টাকা কই? টাকা না দিলে জবাই করব।’’ পরে আমার ঘরের মালামাল ভাঙচুর করে, মালপত্র এলোমেলো করে ফেলে। আমার তোশকের নিচে রাখা দেড় লাখ টাকা নিয়ে যায়। আমার ডাকচিৎকারে এলাকার লোকজন ছুটে আসলে সবাই চলে যায়। আমি থানায় জানিয়েছি। আমি আইনের আশ্রয় নিব।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে যুবদল নেতা নজরুল ইসলাম মোল্লা বলেন, ‘আমি গতকাল চর ফাতেমায় গিয়াছিলাম। তবে দিনে তরমুজের চারা নষ্ট ও রাতে ফরিদের ঘরে প্রবেশ করে ভাঙচুর, টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা মিথ্যা। এর সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নাই।’

থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আবদুল আলীম বলেন, ‘ঘটনা সম্পর্কে দুপুরে অবহিত হয়েছি। অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কৃষকের ঘরে ১২ ফুট লম্বা গাঁজার গাছ, আটক

বিরামপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি 
দিনাজপুরের বিরামপুরে গাঁজার গাছসহ আটক ব্যক্তি। ছবি: আজকের পত্রিকা
দিনাজপুরের বিরামপুরে গাঁজার গাছসহ আটক ব্যক্তি। ছবি: আজকের পত্রিকা

দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলায় ১২ ফুট উচ্চতার একটি গাঁজার গাছসহ এক কৃষককে আটক করেছে পুলিশ। পরে আজ শুক্রবার তাঁকে আদালতে সোপর্দ করা হয়।

বিরামপুর থানার জ্যেষ্ঠ উপপরিদর্শক (এসআই) সাজিদুল ইসলাম জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে জোতবাণী ইউনিয়নের চাকুল গ্রামে অভিযান চালানো হয়। এ সময় মৃত দছির উদ্দিনের ছেলে আজিজার রহমানের (৪৫) বাড়ির একটি পরিত্যক্ত ঘর থেকে গাঁজার গাছটি জব্দ করা হয়।

পরে আজিজার রহমানকে আটক করা হয়। পুলিশ জানায়, গাছটির উচ্চতা প্রায় ১২ ফুট, ওজন ১০ কেজি এবং আনুমানিক মূল্য এক লাখ টাকা।

এ বিষয়ে বিরামপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আতাউর রহমান জানান, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়েছে। আজ আসামিকে দিনাজপুর আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিস্ফোরক মামলায় আওয়ামী ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা জেলে

চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি 
গ্রেপ্তার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নবীর উদ্দিন মোল্লা ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মনোয়ার হোসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
গ্রেপ্তার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নবীর উদ্দিন মোল্লা ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মনোয়ার হোসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

পাবনার চাটমোহরে আওয়ামী লীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের দুই নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে চাটমোহর থানার পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল ও রাতে পৃথক অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। পরে আজ শুক্রবার দুপুরে বিস্ফোরক আইনে করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাঁদের আদালতের মাধ্যমে পাবনা জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

গ্রেপ্তার দুজন হলেন উপজেলার ডিবিগ্রাম ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নবীর উদ্দিন মোল্লা (৭০) এবং উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও পৌর সদরের মধ্য শালিখা মহল্লার বাসিন্দা মনোয়ার হোসেন (৫৪)।

চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনজুরুল আলম গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল বেলা সাড়ে ৩টার দিকে উপজেলার ডিবিগ্রাম ইউনিয়নের বামনগ্রাম নিজ বাড়ি থেকে আওয়ামী লীগ নেতা নবীর উদ্দিন মোল্লাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এ ছাড়া একই দিন রাতে মধ্য শালিখা মহল্লার নিজ বাড়ি থেকে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মনোয়ারকে গ্রেপ্তার করা হয়। এই দুজনের বিরুদ্ধে চাটমোহর থানায় বিস্ফোরক মামলা রয়েছে। আজ সকালে তাঁদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত