Ajker Patrika

বন্ধের পথে শিমুলিয়া ঘাটের হোটেল-রেস্টুরেন্ট, কর্মসংস্থান হারাচ্ছেন শত শত মানুষ

আব্দুল্লাহ আল মাসুদ, মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ০৫ জুলাই ২০২৫, ১০: ১৭
ফেরি, লঞ্চ ও স্পিডবোট চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ঘাটকেন্দ্রিক শতাধিক হোটেল-রেস্টুরেন্টসহ অসংখ্য দোকানপাট মুখ থুবড়ে পড়েছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
ফেরি, লঞ্চ ও স্পিডবোট চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ঘাটকেন্দ্রিক শতাধিক হোটেল-রেস্টুরেন্টসহ অসংখ্য দোকানপাট মুখ থুবড়ে পড়েছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

পদ্মা সেতু চালুর পর সম্পূর্ণ পাল্টে গেছে মুন্সিগঞ্জের লৌহজং উপজেলার শিমুলিয়া ঘাটের চিত্র। দেশের অন্যতম ব্যস্ত এই নৌঘাট এখন রীতিমতো পরিত্যক্ত। ফেরি, লঞ্চ ও স্পিডবোট চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ঘাটকেন্দ্রিক শতাধিক হোটেল-রেস্টুরেন্টসহ অসংখ্য দোকানপাট মুখ থুবড়ে পড়েছে। কর্মসংস্থান হারিয়ে চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন হাজারো মানুষ।

২০২২ সালের ২৫ জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পরপরই শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ী রুটে ফেরি ও লঞ্চ চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ২০২৩ সালের ২০ এপ্রিল সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচল চালু হলে ঘাট কার্যত পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে। একসময় এই ঘাটে প্রতিদিন লাখো মানুষ যাতায়াত করত। সেই যাত্রাপথেই গড়ে উঠেছিল হোটেল, কনফেকশনারি, চায়ের দোকান, ফলের দোকান, মুদি দোকানসহ নানা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান।

গত বুধবার (২ জুলাই) দুপুর ১টার দিকে শিমুলিয়া লঞ্চঘাট এলাকা ঘুরে দেখা যায়, একসময়ের জমজমাট এই ঘাট এখন প্রায় নিস্তব্ধ। নেই লঞ্চের হর্ন, স্পিডবোটের গর্জন কিংবা যাত্রীদের হাঁকডাক। ঘাটসংলগ্ন যে স্থানে একসময় মানুষ গিজগিজ করত, সেখানে এখন খোলা জায়গায় বসে অলস সময় কাটাচ্ছেন কিছু দোকানি ও হোটেল কর্মচারী। চারপাশে যেন বিষণ্নতা ছড়িয়ে আছে।

লঞ্চঘাটের প্রবেশপথে আগে যেখানে সারি সারি হোটেল-রেস্তোরাঁয় ইলিশ ভাজা, ভর্তা ও ভাতের ঘ্রাণে ম ম করত পরিবেশ, আজ সেখানে কেবল জনশূন্যতা। অন্তত ১৫-২০টি হোটেল ফাঁকা। বেশির ভাগ হোটেলের টেবিল-চেয়ারে ধুলো পড়ে আছে। কোথাও কোথাও দেখা গেল কিছু কর্মচারী নিঃশব্দে বসে আছেন, কেউ আবার জানালার পাশে চেয়ে আছেন অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে।

মায়ের দোয়া হোটেলের পুরোনো কর্মচারী রাসেল মিয়া। বয়স ৩৫। গত আট বছর ধরে শিমুলিয়া ঘাটেই কাজ করছেন। আগে প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত দৌড়াতে হতো—একটানা ভাত বেড়ে দেওয়া, ভর্তা পরিবেশন, পানির গ্লাস ধোয়ার ফাঁকে নতুন খদ্দেরকে জায়গা দেখানো। এখন সারা দিনেও ২০ জন খদ্দের হয় না।

ফেরি, লঞ্চ ও স্পিডবোট চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ঘাটকেন্দ্রিক শতাধিক হোটেল-রেস্টুরেন্টসহ অসংখ্য দোকানপাট মুখ থুবড়ে পড়েছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
ফেরি, লঞ্চ ও স্পিডবোট চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ঘাটকেন্দ্রিক শতাধিক হোটেল-রেস্টুরেন্টসহ অসংখ্য দোকানপাট মুখ থুবড়ে পড়েছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাসেল বলেন, `আগে এত খাটুনি ছিল যে মাঝেমাঝে পা ফুলে যেত, কিন্তু মন ভরে থাকত। এখন সারা দিন বসে থাকি, তবু মনটা খালি। আগে বিকেল হলেই খদ্দের আসত দলে দলে। চিৎকার করে বলতে হতো, এই ভাই, একটু অপেক্ষা করেন, টেবিল ফাঁকা হচ্ছে। আর এখন? আমরা চারজন কর্মচারী বসে থাকি, কারো সঙ্গে কথা বলারও মানুষ নাই।’

তিনি আরো বলেন, সরকার যদি ঘাটটাকে একটু ঘষেমেজে আবার দাঁড় করায়, পর্যটনের ব্যবস্থা করে, তাহলে মানুষ আবার আসবে। আমরাও আবার কাজ পাব, ঘরে চাল-ডাল যাবে। শুধু চাই, কেউ আমাদের কথা একটু ভাবুক।

নিউ মোল্লা হোটেলের কর্মচারী আকতার হোসেন বলেন, আগে ১৫-২০ রকম ভর্তা, মাছ ও ভাজি রান্না করতাম। এখন অর্ধেক আইটেমও করি না। মানুষই তো আসে না।

নিউ মায়ের দোয়া হোটেলের মালিক মোহাম্মদ শাহিন শেখ বলেন, পদ্মা সেতু চালুর পর ভেবেছিলাম পর্যটক বাড়বে, বিক্রি বাড়বে। কিন্তু সব উল্টো হয়ে গেছে। আগে প্রতিদিন ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা বিক্রি করতাম। এখন ২০-২৫ হাজার টাকাও হয় না।

ঘাট সংলগ্ন যে স্থানে একসময় মানুষ গিজগিজ করত, সেখানে এখন খোলা জায়গায় বসে অলস সময় কাটাচ্ছেন কিছু দোকানি ও হোটেল কর্মচারী। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঘাট সংলগ্ন যে স্থানে একসময় মানুষ গিজগিজ করত, সেখানে এখন খোলা জায়গায় বসে অলস সময় কাটাচ্ছেন কিছু দোকানি ও হোটেল কর্মচারী। ছবি: আজকের পত্রিকা

বিসমিল্লাহ হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্টের মালিক সুমন হাসান বলেন, প্রতিদিন দোকান খোলা মানেই ১০ হাজার টাকা খরচ, ভাড়া, বিদ্যুৎ, কর্মচারীর মজুরি মিলিয়ে। অথচ এখন সে পরিমাণ বিক্রিও হচ্ছে না।

নিরালা হোটেল অ্যান্ড রেস্তোরাঁর ম্যানেজার মো. সুমন বলেন, আগে দিনে ১ লাখ পর্যন্ত বিক্রি হতো, শুক্র ও শনিবারে আরও বেশি। এখন ৪০-৫০ হাজার টাকায় আটকে যায়। অথচ মাসে ২০ জন কর্মচারীর বেতনসহ ৩ লাখ টাকার বেশি খরচ হয়। টিকে থাকাই কঠিন হয়ে গেছে।

স্থানীয় ব্যবসায়ী ও বাসিন্দারা জানান, পদ্মা সেতু দেশের গর্ব হলেও শিমুলিয়া ঘাট পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেলে হাজারো মানুষের জীবিকা ঝুঁকির মুখে পড়বে। সরকার যদি পরিকল্পিতভাবে ঘাট সংরক্ষণ করে পর্যটন ও বাণিজ্যিক কেন্দ্র গড়ে তোলে, তাহলে আবারও লোকজন আসবে, ব্যবসা ফিরে আসবে, জীবন ফিরে আসবে।

লঞ্চঘাটের প্রবেশপথে আগে যেখানে সারি সারি হোটেল-রেস্তোরাঁয় ইলিশ ভাজা, ভর্তা ও ভাতের ঘ্রাণে ম ম করত পরিবেশ, আজ সেখানে কেবল জনশূন্যতা। ছবি: আজকের পত্রিকা
লঞ্চঘাটের প্রবেশপথে আগে যেখানে সারি সারি হোটেল-রেস্তোরাঁয় ইলিশ ভাজা, ভর্তা ও ভাতের ঘ্রাণে ম ম করত পরিবেশ, আজ সেখানে কেবল জনশূন্যতা। ছবি: আজকের পত্রিকা

এদিকে শিমুলিয়া ঘাট ঘিরে নতুনভাবে ভাবছে সরকার। সম্প্রতি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পাঁচ উপদেষ্টা ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ঘাট এলাকা পরিদর্শন ও আলোচনা সভা করেন।

সভা শেষে নৌপরিবহন ও শ্রম মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম শাখাওয়াত হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের বিআইডব্লিউটিএর জায়গায় আন্তর্জাতিক মানের ইকো কনটেইনার পোর্ট নির্মাণের পরিকল্পনা আছে। পাশাপাশি থাকবে রিভার মিউজিয়াম, ইকো রিসোর্ট, ফেরিঘাট পুনঃস্থাপন, কিডস জোন, সুইমিং পুলসহ পর্যটন সুবিধা।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কেরানীগঞ্জে মাদ্রাসায় বিস্ফোরণে এ পর্যন্ত ছয়জন গ্রেপ্তার

কেরানীগঞ্জ (ঢাকা) সংবাদদাতা
ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় মাদ্রাসা ভবনে বিস্ফোরণ। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় মাদ্রাসা ভবনে বিস্ফোরণ। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে মাদ্রাসা ভবনে বিস্ফোরণের ঘটনায় করা মামলায় আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এ নিয়ে এ ঘটনায় মোট ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হলো।

পুলিশ জানায়, গতকাল শনিবার রাতে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে শাহীন ওরফে আবু বকর ওরফে মুসা (৩২), আমিনুর ওরফে দর্জি আমিন (৫০) ও সাফিয়ার রহমান ফকিরকে (৩৬) গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

পুলিশ আরও জানায়, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা বিস্ফোরণের ঘটনায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত বলে প্রাথমিক তদন্তে তথ্য পাওয়া গেছে। তাঁদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

এর আগে একই ঘটনায় ঘটনাস্থল থেকে তিনজনকে আটক করা হয়েছিল। পরে তাঁদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

বিস্ফোরণের পর মাদ্রাসা ভবন থেকে বিপুল দাহ্য ও রাসায়নিক দ্রব্য উদ্ধার করা হয়। ঘটনার পর থেকে পুলিশসহ একাধিক সংস্থা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কেরানীগঞ্জ সার্কেল) মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম জানান, বিস্ফোরণের প্রকৃত কারণ উদ্‌ঘাটনে তদন্ত জোরদার করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ঘটনায় জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত থাকবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ফেনীতে খালেদা জিয়ার আসনে বিএনপির ৩ নেতার মনোনয়নপত্র সংগ্রহ

ফেনী প্রতিনিধি
বেগম খালেদা জিয়া। ছবি: সংগৃহীত
বেগম খালেদা জিয়া। ছবি: সংগৃহীত

ফেনী-১ আসনে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ছাড়া দলের আরও তিন নেতা মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। ফেনী জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় ও স্থানীয় বিএনপি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

তাঁরা হলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনু, জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি হাবীবুর রহমান নান্টু ও তাঁর ছেলে মজুমদার আরিফুর রহমান। তবে আরিফুর রহমান নিজেকে বিএনপি নেতা বলে দাবি করলেও তাঁর দলীয় পদ-পদবি জানা যায়নি।

রাজনৈতিক সচেতন মহলের মতে, সাধারণত কোনো দলের প্রধানের নিজ আসনে দলীয় প্রার্থী তাঁকে ঘিরেই চূড়ান্ত হয়ে যায়। সেখানে বিএনপি থেকে একই আসনে আরও তিনজন মনোনয়ন সংগ্রহকে দলের অভ্যন্তরীণ সমীকরণ ও নেতৃত্বের মর্যাদা পুনর্বিন্যাসের ইঙ্গিত বহন করে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ফেনী-১ (ফুলগাজী, ছাগলনাইয়া ও পরশুরাম) আসনে ভোটের প্রচার-প্রচারণায় খালেদা জিয়ার পক্ষে ধানের শীষ প্রতীকের ভোট চাইতে দেখা গেছে রফিকুল আলম মজনুকে। তিনি ওই আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থীর সমন্বয়ক।

এ ছাড়া মজুমদার আরিফুর রহমানও ধানের শীষ প্রতীকের পক্ষে ভোট চেয়ে বেড়াচ্ছেন। তিনি আগে গণমাধ্যমকে জানিয়ে ছিলেন, নিজে নির্বাচন করবেন না, শুধু খালেদা জিয়ার জন্য ভোট চাইবেন। হঠাৎ করে তিনি ও তাঁর বাবা (হাবীবুর রহমান নান্টু) মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করায় স্থানীয় রাজনৈতিক মহলে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

এ বিষয়ে কথা বলতে মজুমদার আরিফুর রহমানের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি গুরুত্বপূর্ণ সভায় ব্যস্ত আছেন জানিয়ে পরে কল করতে বলেন। আর ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনুর মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করে সাড়া না পাওয়ায় তাঁর বক্তব্য জানা যায়নি।

তবে ফুলগাজী উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব আবুল হোসেন বলেন, ‘এই আসনে আমাদের প্রার্থী খালেদা জিয়া। যদি কোনো কারণে তিনি নির্বাচন না করেন, সে ক্ষেত্রে আমাদের পছন্দ রফিকুল আলম মজনু। অন্য কেউ প্রার্থী হলে লাভ হবে না।’

এ বিষয়ে ফেনী জেলা বিএনপির সদস্যসচিব আলাল উদ্দিন আলাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, কারা মনোনয়ন নিয়েছেন, এ বিষয়ে কিছু জানি না। তবে যেখানে ম্যাডাম নিজে মনোনয়ন নিয়েছেন, সেখানে অন্যদের মনোনয়ন নেওয়ার দুঃসাহস তাঁরা কেন দেখাচ্ছেন, সেটা বুঝে ওঠা কঠিন। আগামীকাল মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন। তখন বিষয়টি পুরোপুরি পরিষ্কার হবে। কেউ দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করলে অবশ্যই দল তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কুমিল্লায় ধানের শীষের বিপক্ষে লড়বেন খালেদা জিয়ার সাবেক এপিএস মতিন

হোমনা (কুমিল্লা) প্রতিনিধি 
কুমিল্লা­-২ (হোমনা-তিতাস) আসনে আজ রোববার সমর্থকদের নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিতে যান ইঞ্জিনিয়ার এম এ মতিন খান (বাঁ থেকে দ্বিতীয়)। ছবি: আজকের পত্রিকা
কুমিল্লা­-২ (হোমনা-তিতাস) আসনে আজ রোববার সমর্থকদের নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিতে যান ইঞ্জিনিয়ার এম এ মতিন খান (বাঁ থেকে দ্বিতীয়)। ছবি: আজকের পত্রিকা

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে কুমিল্লা-২ (হোমনা-তিতাস) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাবেক সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) ইঞ্জিনিয়ার এম এ মতিন খান।

আজ রোববার (২৮ ডিসেম্বর) বেলা ১১টার দিকে তিতাস উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা সুমাইয়া মমিনের কাছে তিনি মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। পরে একই দিন বিকেলে হোমনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলামের সঙ্গে সৌজন্যে সাক্ষাৎ করেন।

অবসরপ্রাপ্ত সচিব মতিন খান কুমিল্লা-২ আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। কিন্তু আসনটিতে কুমিল্লা বিভাগীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়াকে মনোনয়ন দেওয়া হয়।

মনোনয়ন জমা দেওয়ার পর ইঞ্জিনিয়ার মতিন খান বলেন, ‘এই আসন থেকে কখনোই বহিরাগত কোনো প্রার্থী নির্বাচিত হতে পারেননি। আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল, বিএনপি থেকে হোমনা-তিতাস উপজেলার মধ্য থেকেই প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়ার। কিন্তু সেই দাবি উপেক্ষা করে আসনের বাইরের একজনকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। ফলে জনগণ ও দলের তৃণমূল নেতা-কর্মীদের চাপেই আমাকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিতে হয়েছে।’

মতিন খান আরও বলেন, ‘জনগণ যদি আমাকে সেবা করার সুযোগ দেয়, আমি তাদের একজন সেবক হিসেবে কাজ করব। প্রয়াত এম কে আনোয়ারের (সাবেক মন্ত্রী) অসমাপ্ত উন্নয়নকাজগুলো বাস্তবায়নে সর্বাত্মক চেষ্টা করব, ইনশা আল্লাহ।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সুষ্ঠু নির্বাচনই যথেষ্ট নয়, গণতান্ত্রিক উত্তরণ ঘটাতে হবে: বদিউল আলম

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ মিলনায়তনে আজ রোববার গোলটেবিল বৈঠকে বক্তব্য দেন সুজনের সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার। ছবি: আজকের পত্রিকা
চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ মিলনায়তনে আজ রোববার গোলটেবিল বৈঠকে বক্তব্য দেন সুজনের সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার। ছবি: আজকের পত্রিকা

সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, ‘সুশাসন প্রতিষ্ঠায় শুধু সুষ্ঠু নির্বাচনই যথেষ্ট নয়, আমাদের গণতান্ত্রিক উত্তরণ ঘটাতে হবে, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রাতিষ্ঠানিক হতে হবে। এসবের জন্য সুদূরপ্রসারী সংস্কার দরকার।’

আজ রোববার (২৮ ডিসেম্বর) সকালে চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ মিলনায়তনে ‘সুষ্ঠু নির্বাচন ও গণতান্ত্রিক উত্তরণ: নাগরিক ভাবনা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে বদিউল আলম মজুমদার এসব কথা বলেন। সুজনের চট্টগ্রাম জেলা ও মহানগর কমিটি এই বৈঠকের আয়োজন করে।

সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান প্রসঙ্গে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, সংস্কারের ক্ষেত্রে কতগুলো বাধা আছে, সেসব বাধা দূর করা দরকার। দুর্বৃত্তায়িত রাজনৈতিক অঙ্গন, দুর্বৃত্তায়িত নির্বাচনী অঙ্গন, টাকার খেলা, সঠিক ব্যক্তিদের নিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠন করা। একই সঙ্গে গণমাধ্যম ও নাগরিক সমাজকে এ ক্ষেত্রে সোচ্চার ভূমিকা পালন করা কিংবা তাদের ওয়াচডগের ভূমিকা পালন করতে হবে। তাহলে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের পথ সুগম হবে।

বৈঠকে আরও বক্তব্য দেন ইস্ট ডেল্টা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ সিকান্দার খান, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক মো. মনজুরুল কিবরিয়া, সুজন চট্টগ্রামের সম্পাদক অ্যাডভোকেট আখতার কবির চৌধুরী প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত