Ajker Patrika

চিন্ময় ইসকনের মুখপাত্র নয়, তাঁর কাজের দায় নেব না: চারু দাস

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৫: ০৪
ইসকন বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক চারু দাস ব্রহ্মচারী। ছবি: সংগৃহীত
ইসকন বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক চারু দাস ব্রহ্মচারী। ছবি: সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবাপন্ন সংগঠন ইসকন জানিয়েছে, চিন্ময় কৃষ্ণ দাস তাদের মুখপাত্র নয়। তাই তাঁর বক্তব্য ও কাজের জন্য ইসকন দায়বদ্ধ নয় বলে জানানো হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর স্বামীবাগ ইসকন আশ্রমে সংবাদ সম্মেলন করে এ কথা বলেন ইসকন বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক চারু দাস ব্রহ্মচারী।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘আমরা সবাইকে পুনরায় অবহিত করতে চাই যে, অনেক মাস আগেই প্রবর্তক শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরের অধ্যক্ষ লীলারাজ গৌর দাস, সদস্য স্বতন্ত্র গৌরাঙ্গ দাস এবং চট্টগ্রামের পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে ইসকনের সাংগঠনিক পদ ও পদবিসহ ইসকনের যাবতীয় সাংগঠনিক কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।’

একই সঙ্গে উল্লেখ করা হয় যে, তাঁদের দ্বারা সংঘটিত কার্যক্রম ইসকনের কার্যক্রম নয়।

তিনি বলেন, গত ৩ অক্টোবর অফিশিয়াল বিবৃতির মাধ্যমে জানানো হয় যে, চিন্ময় কৃষ্ণ দাস (চন্দন কুমার ধর) ইসকন বাংলাদেশের মুখপাত্র নন। তাই তাঁর বক্তব্য সম্পূর্ণ তাঁর ব্যক্তিগত। লীলারাজ গৌর দাস, স্বতঞ্জ গৌরাঙ্গ দাস ও চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের বক্তব্য এবং কৃতকর্মের জন্য ইসকন বাংলাদেশ কোনোভাবেই দায়বদ্ধ নয়।

এর আগে একাধিকবার বিভিন্ন মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়েছে বলে উল্লেখ করেন চারু দাস। তিনি বলেন, ইতিমধ্যে একাধিকবার সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এবং সরকার ও প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বিষয়টি পরিষ্কার করেছি। কিন্তু দুঃখজনকভাবে কিছু বিশেষ মহল ইচ্ছাকৃত আমাদের সংগঠনের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে এবং ইসকনকে নিষিদ্ধ করার মতো অযৌক্তিক দাবি তুলছে।

বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ইসকন বাংলাদেশকে নিয়ে মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার ছড়ানোর এক ধারাবাহিক প্রচেষ্টা লক্ষ করা যাচ্ছে উল্লেখ করে চারু দাস বলেন, গত ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তনের পর থেকে কিছু মহল আমাদের সংগঠনকে বিতর্কিত করার লক্ষ্যে বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্য এবং ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলে সমাজে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির অপচেষ্টাও করছে।

চট্টগ্রামের বিশিষ্ট আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফের মর্মান্তিক মৃত্যুর পর এই অপচেষ্টা চরমে পৌঁছেছে জানিয়ে তিনি বলেন, চট্টগ্রাম কোর্ট ভবনের সামনে সংঘটিত অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইসকন বাংলাদেশকে অন্যায়ভাবে দায়ী করার অপচেষ্টা চলছে। আমরা স্পষ্টভাবে জানাতে চাই, এ ধরনের ন্যক্কারজনক ঘটনা এবং চলমান আন্দোলনের সঙ্গে ইসকন বাংলাদেশের কোনো ধরনের সম্পৃক্ততা নেই। এই মিথ্যাচার এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, সড়ক দুর্ঘটনার মতো বিষয়গুলোকেও ইসকনের চক্রান্ত বলে চালিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

ইসকন জানিয়েছে, তারা একটি আন্তর্জাতিক ধর্মীয়, অরাজনৈতিক, সামাজিক ও মানবিক সংগঠন। তাদের মূল লক্ষ্য হলো ভগবদ্গীতার আদর্শ শান্তি, সম্প্রীতি, নৈতিকতা ও মানবতার শিক্ষা প্রচার করা। তারা বরাবরই রাষ্ট্রীয় আইন, সংবিধান এবং সামাজিক শৃঙ্খলার প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাদের কার্যক্রম সর্বদা মানবতার কল্যাণে নিবেদিত, যা ভ্রাতৃত্ব, সহমর্মিতা এবং সমতার ভিত্তিতে পরিচালিত হয়।

ইসকনের পক্ষ থেকে বলা হয়, বাংলাদেশ কখনোই কোনো ধরনের সাম্প্রদায়িক বা সংঘাতমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত নয় এবং ভবিষ্যতেও এর ব্যতিক্রম হবে না। আমাদের সংগঠন সব সময় সমাজে ঐক্য, সৌহার্দ্য ও ভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠার পক্ষে কাজ করে আসছে।

সরকার, প্রশাসন, গণমাধ্যম ও দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয় চারু দাস বলেন, ইসকন বাংলাদেশের বিরুদ্ধে চলমান মিথ্যা ও বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা সঠিক তদন্ত করে প্রকৃত সত্য উদ্ঘাটন করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। যারা উদ্দেশ্যমূলকভাবে আমাদের সংগঠনের সুনাম ক্ষুণ্ন করছে, তাদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। ধর্মীয় সহনশীলতা বজায় রাখুন এবং দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে যেকোনো প্রকার উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকুন। সমাজে শান্তি, সম্প্রীতি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সবাই একযোগে কাজ করুন।

এর আগে স্বাগত বক্তব্যে ইসকন বাংলাদেশের সভাপতি সত্য রঞ্জন বাড়ৈ বলেন, সম্প্রতি চট্টগ্রামের আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফের নৃশংস হত্যাকাণ্ডে আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ (ইসকন) বাংলাদেশ গভীর শোক প্রকাশ করছে। তাঁর মর্মান্তিক অকালমৃত্যু আমাদের মর্মাহত করেছে। এ নির্মম ঘটনার সঙ্গে জড়িত দুষ্কৃতকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে জোরালোভাবে আহ্বান জানাই।

তিনি বলেন, চট্টগ্রামের আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের প্রেক্ষিতে ইসকন বাংলাদেশকে নানাভাবে জড়িয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমাদের ধর্মীয় ও সামাজিক ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত করার অপচেষ্টা চলছে।

সত্য রঞ্জন বাড়ৈ আরও বলেন, ‘আমরা এ বিষয়ে স্পষ্ট জানাতে চাই যে, ইসকন বাংলাদেশ একটি অরাজনৈতিক ও শান্তিপূর্ণ ধর্মীয় সংগঠন, যা সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, ধর্মীয় সহনশীলতা এবং মানবকল্যাণে নিবেদিত। আমরা দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে ঘোষণা করছি যে, বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত এসব ঘটনার সঙ্গে ইসকনের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে গুলি: সীমান্তে মানুষ পার করা ফিলিপকে খুঁজছে পুলিশ, তাঁর দুই সহযোগী আটক

ড. ইউনূস যদি চান, সারা বাংলাদেশকে কারাগার বানাতে পারেন—আদালতে আনিস আলমগীর

একটা লাশ পড়লে আমরাও কিন্তু লাশ নেব, অত সুশীলতা করে লাভ নেই: মাহফুজ আলম

আনিস আলমগীরকে গ্রেপ্তার স্বৈরাচারী আমলে সাংবাদিক দমন-পীড়নের পুনরাবৃত্তি

ফুল, প্রশংসা আর ডলারে ভাসছেন বন্ডাই বিচের ‘নায়ক’ আল-আহমেদ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হাদিকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় মূল অভিযুক্ত ফয়সালের ঘনিষ্ঠ সহযোগী গ্রেপ্তার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮: ০৩
হাদিকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় গ্রেপ্তার যুবক। ছবি: আজকের পত্রিকা
হাদিকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় গ্রেপ্তার যুবক। ছবি: আজকের পত্রিকা

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় মূল অভিযুক্ত ফয়সাল করিম মাসুদের ঘনিষ্ঠ সহযোগী সন্দিগ্ধ কবিরকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন–র‍্যাব।

র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক উইং কমান্ডার এম জেড এম ইন্তেখাব চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি সাংবাদিকদের জানান, গত সোমবার রাতে নারায়গঞ্জ থেকে কবিরকে গ্রেপ্তার করা হয়। আজ মঙ্গলবার তাকে পল্টন–থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হবে।

জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন গত শুক্রবার রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট সড়কে চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে দুর্বৃত্তরা রিকশায় থাকা ওসমান হাদিকে গুলি করে।

ওসমান হাদি ঢাকা-৮ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার জন্য প্রচার চালাচ্ছিলেন। মাথায় গুলিবিদ্ধ হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাকে গতকাল সোমবার উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে গুলি: সীমান্তে মানুষ পার করা ফিলিপকে খুঁজছে পুলিশ, তাঁর দুই সহযোগী আটক

ড. ইউনূস যদি চান, সারা বাংলাদেশকে কারাগার বানাতে পারেন—আদালতে আনিস আলমগীর

একটা লাশ পড়লে আমরাও কিন্তু লাশ নেব, অত সুশীলতা করে লাভ নেই: মাহফুজ আলম

আনিস আলমগীরকে গ্রেপ্তার স্বৈরাচারী আমলে সাংবাদিক দমন-পীড়নের পুনরাবৃত্তি

ফুল, প্রশংসা আর ডলারে ভাসছেন বন্ডাই বিচের ‘নায়ক’ আল-আহমেদ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সুবর্ণচরে নদীভাঙন: ২ বছরে ভিটেমাটি হারা চার হাজার পরিবার

  • ভুক্তভোগীদের জন্য নেই সরকারি সুযোগ-সুবিধা ও পুনর্বাসনের উদ্যোগ।
  • প্রশাসনের কাছে নির্ভরযোগ্য কোনো তালিকা নেই।
মুজাহিদুল ইসলাম সোহেল, সুবর্ণচর (নোয়াখালী) 
মেঘনা নদীর ভাঙনে বিলীন হচ্ছে ভিটেমাটি। সম্প্রতি নোয়াখালীর সুবর্ণচরের বোয়ালখালী স্লুইসগেট এলাকায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
মেঘনা নদীর ভাঙনে বিলীন হচ্ছে ভিটেমাটি। সম্প্রতি নোয়াখালীর সুবর্ণচরের বোয়ালখালী স্লুইসগেট এলাকায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

মেঘনা নদী থেকে জেগে ওঠা নতুন চর নোয়াখালীর সুবর্ণচরের আয়তন বাড়ালেও একই সঙ্গে ভয়াবহ ভাঙনে বিলীন হচ্ছে জনপদ। শুধু সুবর্ণচর নয়, উপকূলীয় জেলা নোয়াখালীর সর্বত্রই চলছে নদীর এই ভাঙা-গড়ার খেলা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শেষ পর্যন্ত টিকে থাকা ভূমির পরিমাণ ভাঙনের চেয়ে বেশি হলেও নতুন জেগে ওঠা চরগুলো এখনো বসতিস্থাপনের উপযোগী হয়ে ওঠেনি।

বাংলাদেশ সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড জিওগ্রাফিক্যাল ইনফরমেশন সার্ভিসেস (সিইজিআইএস)-এর হিসাবে, গত ৭০ বছরে নোয়াখালীতে প্রায় ২০০ বর্গকিলোমিটার ভূমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। একই সময়ে নতুন করে যুক্ত হয়েছে প্রায় এক হাজার বর্গকিলোমিটার ভূমি। তবে এই ভাঙা-গড়ার প্রক্রিয়ায় যারা সব হারায়, তাদের জন্য থাকে কেবল হাহাকার।

তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, নদীভাঙনে নিঃস্ব মানুষের জন্য সরকারিভাবে কোনো আলাদা সুযোগ-সুবিধা নেই। নেই পুনর্বাসনের কার্যকর উদ্যোগ। এমনকি কত মানুষ ভিটেমাটি হারিয়েছে, তারও কোনো নির্ভরযোগ্য তালিকা তৈরি করা হয়নি।

জানা গেছে, মেঘনা নদীর তীব্র ভাঙনে সুবর্ণচর উপজেলার মোহাম্মদপুর ও চরক্লার্ক ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকা বিলীন হয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত দুই বছরে এই দুই ইউনিয়নে অন্তত তিন হাজার পরিবার গৃহহীন হয়েছে। ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা আরও বিস্তৃত হওয়ায় মোট ভিটেমাটি হারানো পরিবারের সংখ্যা প্রায় চার হাজার।

স্থানীয়দের ভাষ্য অনুযায়ী, চরক্লার্ক ও মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ হেমায়েতপুরের একটি অংশ, চর বায়েজিদ মৌজা, চর খন্দকার, আলেমপুর, সৈয়দপুর, চর নোমান সমাজ ও চর মোজাম্মেল মৌজাসহ অন্তত ১০টি এলাকা ইতিমধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ভাঙনের সঙ্গে সঙ্গে হারিয়ে গেছে কয়েক হাজার একর ফসলি জমি, চর উন্নয়ন ও বসতি স্থাপন প্রকল্পের (সিডিএসপি) ৭/৮ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ এবং বন বিভাগের রোপণ করা নানা প্রজাতির গাছ।

এক বছর আগে চরক্লার্ক ইউনিয়নের চর খন্দকার এলাকায় সাবেক ২ নম্বর কাটাখালী স্লুইসগেট নদীতে বিলীন হয়ে যায়। এতে জোয়ারের সময় পানি দ্রুত উত্তর দিকে প্রবাহিত হচ্ছে। এর ফলে সোলেমান বাজারসহ আশপাশের এলাকাও নতুন করে ভাঙনের ঝুঁকিতে পড়েছে। আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে হাজারো পরিবার।

জানতে চাইলে চরক্লার্ক ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুল বাশার জানান, ভাঙনের বিষয়টি উপজেলা ও জেলা প্রশাসনকে অবহিত করা হয়েছে। উপদেষ্টা পর্যায়েও বিষয়টি জানানো হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।

সুবর্ণচরের সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)-এর সাধারণ সম্পাদক আবদুল বারী বাবলু বলেন, ভাঙা-গড়া প্রকৃতির নিয়ম হলেও নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তরা জেগে ওঠা চরে তাঁদের পুরোনো অবস্থান বা জীবন ফিরে পান না। নদীশাসন এবং জেগে ওঠা চরে বসতি স্থাপন নিয়ে রাষ্ট্রীয় নীতিমালা জরুরি। নদী ভাঙলে শুধু মানুষের ঘরবাড়ি নয়, জনপদের চিহ্নও মুছে যায়।

এ বিষয়ে সুবর্ণচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আকিব ওসমান বলেন, মোহাম্মদপুর ও চরক্লার্ক ইউনিয়নের ভাঙনের বিষয়টি প্রশাসনের জানা আছে। তবে এখনো পর্যন্ত কত পরিবার গৃহহীন হয়েছে, তার কোনো তালিকা প্রস্তুত করা হয়নি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে ভাঙন রোধ ও ক্ষতিগ্রস্তদের বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে গুলি: সীমান্তে মানুষ পার করা ফিলিপকে খুঁজছে পুলিশ, তাঁর দুই সহযোগী আটক

ড. ইউনূস যদি চান, সারা বাংলাদেশকে কারাগার বানাতে পারেন—আদালতে আনিস আলমগীর

একটা লাশ পড়লে আমরাও কিন্তু লাশ নেব, অত সুশীলতা করে লাভ নেই: মাহফুজ আলম

আনিস আলমগীরকে গ্রেপ্তার স্বৈরাচারী আমলে সাংবাদিক দমন-পীড়নের পুনরাবৃত্তি

ফুল, প্রশংসা আর ডলারে ভাসছেন বন্ডাই বিচের ‘নায়ক’ আল-আহমেদ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হাদি সিঙ্গাপুরে, হামলার নেপথ্যের ব্যক্তিরা অজানা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। গতকাল রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। ছবি: পিআইডি
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। গতকাল রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। ছবি: পিআইডি

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী শরিফ ওসমান বিন হাদির ওপর হামলার নেপথ্যের ব্যক্তিদের এবং উপকরণ সরবরাহকারীদের বিষয়ে এখনো কিছু জানতে পারেনি পুলিশ। হামলাকারী দুজন ঘটনার আগে-পরে যাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন, তাঁদের কয়েকজনকে আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে বেশ কিছু তথ্য পেয়েছে ডিবি ও র‍্যাব। তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

ওসমান হাদিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য গতকাল সোমবার এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়েছে। এই হত্যাচেষ্টা মামলার প্রধান আসামি ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে রাহুল ওরফে দাউদের (৩৭) স্ত্রীসহ তিনজনকে গতকাল ৫ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।

১২ ডিসেম্বর বেলা আড়াইটার দিকে পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে ব্যাটারিচালিত রিকশায় থাকা ওসমান হাদিকে গুলি করেন মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তরা। প্রথমে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়; পরে সেখান থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। গতকাল নেওয়া হয় সিঙ্গাপুরে। এই ঘটনায় ১৪ ডিসেম্বর রাতে পল্টন থানায় করা মামলার তদন্ত করছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ডিবির মতিঝিল বিভাগ।

ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মো. শফিকুল ইসলাম গতকাল বলেন, এখন পর্যন্ত এই মামলায় চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর সঙ্গে যারাই জড়িত থাকুক, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।

ওসমান হাদিকে বহনকারী এয়ার অ্যাম্বুলেন্স বেলা ১টা ৫৫ মিনিটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়ন করে। বাংলাদেশ সময় বিকেল ৫টা ৫০ মিনিটে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি সিঙ্গাপুরে পৌঁছায়। মাথায় গুলিবিদ্ধ হাদির শরীরের অন্য অঙ্গগুলো এখনো ‘নিয়ন্ত্রণযোগ্য’ বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়) অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান।

তদন্তসংশ্লিষ্টরা হামলায় অংশ নেওয়া দুজনের পরিচয় শনাক্ত করেছেন। তাঁরা হলেন–ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে রাহুল ওরফে দাউদ ও আলমগীর হোসেন। তবে মামলার এজাহারে আলমগীরের নাম নেই। তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, এই দুজনের এবং তাঁদের বহনকারী গাড়ির চালকদের তথ্য পেলেও হামলার নেপথ্যের ব্যক্তিদের সম্পর্কে এখনো জানা যায়নি। ফয়সাল ও আলমগীর ইতিমধ্যে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে চলে গেছেন বলেও ডিবি নিশ্চিত হয়েছে।

হামলার আগের রাতে সাভারের একটি রিসোর্টে ছিলেন দুজন। তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, হামলার আগের দিন, অর্থাৎ ১১ ডিসেম্বর রাতে সাভারের গ্রিন জোন রিসোর্টের পৃথক কক্ষে ছিলেন ফয়সাল ও আলমগীর। রাত ২টার দিকে সেখানে ফয়সালের বান্ধবী ছোট বোনকে নিয়ে গিয়েছিলেন। সকালে হাদির কিছু ভিডিও দেখার পর ঢাকায় আসেন তাঁরা। ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে ফয়সালের বান্ধবী জানান, হাদির ভিডিও দেখার সময় গালিগালাজ করেন ফয়সাল। হাদিকে কিছু একটা করবেন, তা তিনি বুঝতে পেরেছিলেন।

দুবার মোটরসাইকেলের নম্বরপ্লেট পরিবর্তন: ১২ ডিসেম্বর সকালে সাভার থেকে ঢাকায় এসে ফয়সাল ও আলমগীর আগারগাঁওয়ে ফয়সালের বোনের বাসায় যান। সেখানে ফয়সালের বাবা-মাও থাকেন। ওই বাসার গ্যারেজের সিসি ক্যামেরার ফুটেজের সূত্র ধরে ডিবি বলছে, বাসা থেকে বের হওয়ার আগে ফয়সালের বাবা একটি নম্বরপ্লেট নিয়ে গ্যারেজে এলে তাঁরা নম্বরপ্লেট পরিবর্তন করে বের হন। গুলি করার পর পল্টনের বক্স কালভার্ট রোড থেকে মোটরসাইকেলে করে তাঁরা আবার আগারগাঁওয়ে ফয়সালের বোনের বাসায় যান। আবার মোটরসাইকেলের নম্বরপ্লেট পরিবর্তন করেন। একটি নম্বরপ্লেট তাঁরা ম্যানহোলে ফেলে দেন। বাসায় কিছুক্ষণ থেকে ফয়সাল ও আলমগীর দুটি কালো ব্যাগ নিয়ে বের হয়ে বাসার নিরাপত্তাকর্মীর ঠিক করা সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে আমিন বাজারের ঢালে নামেন। ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে ওই অটোরিকশাচালক জানান, আমিনবাজারে ওই দুজন এক তরুণীর সঙ্গে কথা বলেন। তিনি গাড়ি নিয়ে আগে থেকে সেখানে অপেক্ষা করছিলেন বলে ডিবি নিশ্চিত হয়েছে। সেখানে তাঁরা মোবাইল ও সিম ফেলে দেন। এরপর কালামপুর, টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা হয়ে ময়মনসিংহ যান। ময়মনসিংহের সেতুর পাড়ে গাড়ি বদলে আরেকটি প্রাইভেট কারে উঠে হালুয়াঘাটের ধারাবাজারের একটি পেট্রলপাম্পে গিয়ে থামেন। সেখানে তিন যুবক ওই দুজনকে মোটরসাইকেলে উঠিয়ে হালুয়াঘাটের ভুটিয়াপাড়ায় নিয়ে যান। রাত আড়াইটার দিকে ভুটিয়াপাড়া সীমান্ত পাড়ি দিয়ে দুজনে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের তুরায় যান। হামলা ও ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পুরো বিষয়টি ছিল নিখুঁত পরিকল্পনার অংশ। ময়মনসিংহে নেওয়া গাড়িটি ছিল ভাড়া করা।

৪ ডিসেম্বর থেকে হামলাকারী ফয়সাল, আলমগীর ও জাকির প্রার্থী ওসমান হাদির গণসংযোগে নিয়মিত অংশ নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন ইনকিলাব মঞ্চের নেতা-কর্মী ও পুলিশ। এর দেড় মাস আগে তাঁরা জুলাই যোদ্ধা পরিচয়ে হাদির দলে ভিড়েছিলেন।

ফয়সালের স্ত্রীসহ তিনজন রিমান্ডে: প্রধান আসামি ফয়সালের স্ত্রী সাহেদা পারভীন সামিয়া, শ্যালক ও ফয়সালের এক বান্ধবীকে গতকাল আদালতে হাজির করে তদন্ত কর্মকর্তা প্রত্যেকের সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন জানান। শুনানি শেষে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জশিতা ইসলাম তাঁদের পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

হাদির মোবাইলের হদিস নেই: হামলার পর ওসমান হাদির ব্যবহৃত মোবাইল ফোনের হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। ডিবি বলেছে, তাঁর মোবাইলে যেহেতু বারবার হত্যার হুমকি আসছিল, তাই মোবাইলটি গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তবে ঘটনার পর মোবাইলটি পাওয়া যায়নি। ওই মোবাইল নম্বরটি নিয়ে কাজ করছে পুলিশ।

সীমান্ত পারাপারে জড়িত আরও দুজন আটক: হাদির ওপর হামলাকারীদের সীমান্ত পার করানোর ঘটনায় শেরপুরের নালিতাবাড়ী সীমান্ত এলাকা থেকে আরও দুজনকে আটক করেছে বিজিবি। ময়মনসিংহের ৩৯ বিজিবির সেক্টর সদর দপ্তরে সংবাদ সম্মেলনে সেক্টর কমান্ডার কর্নেল সরকার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান বিষয়টি জানান। আটক দুজন হলেন, শেরপুরের নালিতাবাড়ী সীমান্ত থেকে অবৈধভাবে মানুষ পারাপারে সহায়তাকারী ফিলিপের মামাশ্বশুর বেঞ্জামিন চিড়ান এবং ফিলিপের ঘনিষ্ঠ বন্ধু সীশল। এর আগে রোববার ডিবি পুলিশ ওই এলাকা থেকে দুজনকে গ্রেপ্তার করে। সিবিয়ন দিও ও সঞ্চয় চিসিম নামের ওই দুজন পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে গুলি: সীমান্তে মানুষ পার করা ফিলিপকে খুঁজছে পুলিশ, তাঁর দুই সহযোগী আটক

ড. ইউনূস যদি চান, সারা বাংলাদেশকে কারাগার বানাতে পারেন—আদালতে আনিস আলমগীর

একটা লাশ পড়লে আমরাও কিন্তু লাশ নেব, অত সুশীলতা করে লাভ নেই: মাহফুজ আলম

আনিস আলমগীরকে গ্রেপ্তার স্বৈরাচারী আমলে সাংবাদিক দমন-পীড়নের পুনরাবৃত্তি

ফুল, প্রশংসা আর ডলারে ভাসছেন বন্ডাই বিচের ‘নায়ক’ আল-আহমেদ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি: পাহাড়-টিলা সাবাড়, ভরাট হচ্ছে পুকুর

  • সন্ধ্যা নামলেই মাটি কাটা শুরু হয়; চলে ভোর পর্যন্ত।
  • ধ্বংস হচ্ছে পাহাড়-টিলা, এমনকি কৃষিজমির উর্বর মাটিও।
ফটিকছড়ি সংবাদদাতা
চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলায় টিলা কেটে সাবাড় করা হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলায় টিলা কেটে সাবাড় করা হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলায় পরিবেশ ধ্বংসের হিড়িক পড়েছে। চক্রের থাবা থেকে রেহাই পাচ্ছে না বনাঞ্চলের পাহাড়-টিলা, এমনকি কৃষিজমির উর্বর মাটিও। স্থানীয় প্রশাসনের অভিযান এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের মামলার পরও কোনো কিছুতেই থামানো যাচ্ছে না মাটিখেকোদের দৌরাত্ম্য।

জানা গেছে, উপজেলার পাইন্দং, ভূজপুর, নারায়ণহাট, দাঁতমারা, বাগানবাজার, সুয়াবিল, হারুয়ালছড়ি ও কাঞ্চননগর ইউনিয়নসহ বিভিন্ন এলাকায় এসব মাটি কাটার ঘটনা ঘটছে। স্থানীয় প্রভাবশালীদের নেতৃত্বে চলছে এই কর্মকাণ্ড।

স্থানীয়রা বলেন, কৃষিজমি থেকে মাটি কাটা রোধে অভিযান চালাচ্ছে প্রশাসন। তবে কৌশল বদলে দিনের বেলার পরিবর্তে রাতে কাটা হচ্ছে মাটি। সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত চলে মাটি কাটা।

জানা গেছে, প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে উপজেলার ফসলি জমি ও টিলা থেকে মাটি কাটছে অর্ধশতাধিক চক্র। এক্সকাভেটর দিয়ে ফসলি জমির টপসয়েল কেটে ডাম্পট্রাক ও পিকআপ ভ্যানে করে ইটভাটা, পুকুর, ডোবা ও নতুন বাড়ির জায়গায় মাটি ভরাট করছে তাঁরা।

সরেজমিনে গত শনি ও রোববার দুই দিন উপজেলার পাইন্দং, ভূজপুর, বাগানবাজার ইউনিয়নের একাধিক এলাকা ঘুরে দেখা মেলে পরিবেশ ধ্বংসের এমন ভয়াবহতার চিত্র।

অনুসন্ধানে জানা যায়, পাইন্দংয়ের ফকিরাচাঁন আমতল এলাকায় রাতের আঁধারে কয়েকটি এক্সকাভেটর দিয়ে কাটা হচ্ছে কৃষিজমির মাটি। ভূজপুর ইউনিয়নের আন্ধারমানিক গলাচিপা এলাকায় স্থানীয় মো. রাশেদের নেতৃত্বে চার-পাঁচজনের একটি চক্র রাতের আঁধারে কেটে নিয়েছে বিশালাকার টিলার মাটি। এসব মাটি ডাম্পট্রাকে করে যাচ্ছে কাজীরহাট বাজারের একাধিক কৃষিজমি ভরাট কাজে। একই কায়দায় হারুয়ালছড়ি ইউনিয়নের আপন ব্রিকস ফিল্ডসংলগ্ন বাংলাবাজার সরকার বাড়ি এলাকায় কাটা হয়েছে টিলা। ভূজপুর ইউনিয়নের আছিয়া চা-বাগানসংলগ্ন মা আমেনা লেয়ার ফার্মের পাশে মো. আরিফ নামে এক ব্যক্তির মুরগির ফার্ম তৈরির জন্য কাটা হয়েছে বিশালাকার টিলা। একই দৃশ্য বাগানবাজার ইউনিয়নের লালমাই এলাকায়। যেখানে ভবন নির্মাণের জন্য দিনদুপুরে কাটা হচ্ছে উঁচু পাহাড়-টিলা। লালমাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে স্থানীয় মনির ও মফিজের নেতৃত্বে পেলোডার দিয়ে কেটে সাবাড় করা হয়েছে ব্যবসায়ী মো. হাসেমের টিলা।

মাটি কাটার বিষয়টি স্বীকার করেন হাসেমের ছেলে মাহবুব। তিনি বলেন, ‘আমরা যাদের দিয়ে মাটি কাটিয়েছি তারা প্রশাসনের কাছ থেকে অনুমতি নিয়েছে বলে আমাদের জানিয়েছে।’ তবে কাদের দিয়ে মাটি কাটিয়েছেন তাদের নাম বলেননি মাহবুব। একই ইউনিয়নের বাগমারা এলাকায় মাহবুবুল হকের বসত টিলা, গার্ডের দোকানে নবী মাস্টারের টিলা, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান একরামুল হক বাবুলের ভাই লায়েসের নেতৃত্বে কাটা হচ্ছে কৃষিজমি। তবে মাটি কাটার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন মো. লায়েস।

লালমাই এলাকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, ‘যখন যে দল ক্ষমতায় আসে, সে দলের লোকেরাই পাহাড়-টিলা কর্তন করে। প্রভাবশালী হওয়ার ভয়ে কেউ তাদের বিরুদ্ধে কথা বলে না, প্রতিবাদ করে না।’

চট্টগ্রাম জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের রিসার্স অফিসার মো. আশরাফ উদ্দিন বলেন, কর্তনকৃত এসব স্থান পরিদর্শন করে শিগগিরই জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, ‘মাটি কাটার সংবাদ পেলে যত রাতই হোক অভিযান পরিচালনা করছি।’ তিনি বলেন, টিলা-পাহাড় ও কৃষিজমির টপসয়েল কাটা আমলযোগ্য অপরাধ। পুলিশ প্রশাসন চাইলে স্বপ্রণোদিত হয়ে ব্যবস্থা নিতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে গুলি: সীমান্তে মানুষ পার করা ফিলিপকে খুঁজছে পুলিশ, তাঁর দুই সহযোগী আটক

ড. ইউনূস যদি চান, সারা বাংলাদেশকে কারাগার বানাতে পারেন—আদালতে আনিস আলমগীর

একটা লাশ পড়লে আমরাও কিন্তু লাশ নেব, অত সুশীলতা করে লাভ নেই: মাহফুজ আলম

আনিস আলমগীরকে গ্রেপ্তার স্বৈরাচারী আমলে সাংবাদিক দমন-পীড়নের পুনরাবৃত্তি

ফুল, প্রশংসা আর ডলারে ভাসছেন বন্ডাই বিচের ‘নায়ক’ আল-আহমেদ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত