Ajker Patrika

পাঠ্যবইয়ে গণ–অভ্যুত্থানের কনটেন্ট নগণ্য, দায়সারা: সেমিনারে বক্তারা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
সেমিনারে উপস্থিত বক্তারা।  ছবি: আজকের পত্রিকা
সেমিনারে উপস্থিত বক্তারা। ছবি: আজকের পত্রিকা

পাঠ্যবইয়ে যথাযথভাবে চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থান তুলে ধরতে বই পরিমার্জনের দায়িত্বপ্রাপ্তরা ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিশিষ্টজনেরা। তাঁদের মতে, ২০২৫ সালের পাঠ্যবইয়ে জুলাই অভ্যুত্থানের প্রতিফলন না হওয়া, ইতিহাস বিকৃতি, ব্যবহৃত ছবি নিয়ে প্রশ্ন ও মানহীনতা, বইয়ের অপ্রাসঙ্গিক প্রচ্ছদ এবং বিষয়বস্তু যথার্থভাবে উঠে না আসা পরিলক্ষিত হয়েছে।

শিশু অধিকার সংসদের আয়োজনে ‘২০২৫ শিক্ষাবর্ষের পাঠ্যবইয়ে চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থান পর্যালোচনা’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এ মতামত তুলে ধরেন।

আজ শুক্রবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ব্যবসা শিক্ষা অনুষদের ড. আবদুল্লাহ ফারুক সম্মেলনকক্ষে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন শিক্ষা অধিকার সংসদের আহ্বায়ক ও নর্থসাউথ ইউনিভার্সিটির প্রফেসরিয়াল ফেলো অধ্যাপক ড. নিয়াজ আসাদুল্লাহ।

পর্যালোচনা উপস্থাপন করেন শিক্ষা অধিকার সংসদের সদস্যসচিব ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক মো. শাহনেওয়াজ খান চন্দন।

অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক এবং কারিকুলাম কো-অর্ডিনেশন কমিটির সদস্য ড. সৈয়দা সুলতানা রাজিয়া, ঢাবির শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. মনিনুর রশিদ ও অধ্যাপক ড. আহসান হাবীব, জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ড. আতিক মুজাহিদ ও শিক্ষা সেলের পরিচালক ফয়সাল মাহমুদ শান্ত, শহীদ শাহরিয়ার খান আনাসের মা সানজিদা খান দীপ্তি, শহীদ ইকরামুল হক সাজিদের বোন ফারজানা হক, ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বিন হাদি, জুলাই বিপ্লব পরিষদের আহ্বায়ক সৌরভ ফাহিম প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থান নিয়ে নগণ্য কনটেন্ট যুক্ত হলেও সেগুলোয় ভুল থাকাসহ এমন দায়সারাভাবে সেগুলো এসেছে, এগুলো ইতিহাসের বিচারে বেশি দিন টিকবে না। তার দায় এনসিটিবির দায়িত্বশীল ও পরিমার্জনকারীরা এড়াতে পারে না।

অধ্যাপক ড. নিয়াজ আসাদুল্লাহ বলেন, ‘পাঠ্যপুস্তকে অসংগতির বহুমাত্রিক দিক উঠে এসেছে। এটা নতুন নয়। ফ্যাসিস্ট সরকারের সময়ের শিক্ষার সংকট এখনো কাটেনি। যে ধরনের পরিবর্তন দরকার, সেভাবে হচ্ছে না। শিক্ষার দায়িত্বে যাঁরা আছেন, তাহলে তাঁরা কী করছেন? এখানে নীতির সমস্যা নাকি নেতৃত্বের সমস্যা? আজকের মতো এ ধরনের অনেক আলোচনা হচ্ছে; কিন্তু বাস্তবায়ন নাই। অন্তর্ভুক্তিমূলক পাঠ্যক্রমের জন্য নেতৃত্বের পরিবর্তন জরুরি।’

ড. সৈয়দা সুলতানা রাজিয়া বলেন, ‘কারিকুলামের কমিটিতে আমাদের একটি মিটিং হয়েছে। আমরা কীভাবে পরিবর্তন আনব? যাঁরা লিখবেন, রিভিউ করবেন, তাঁদেরই মূল দায়িত্ব। তা ছাড়া শিক্ষা কমিশন গঠন করা জরুরি। জুলাই গণ-অভ্যুত্থান পাঠ্যপুস্তকেও আনতে চাই; কিন্তু সেটা কত শতাংশ? চব্বিশের ঘটনার গুরুত্ব দিতে হবে। কিন্তু ধারণা থাকতে হবে, কীভাবে আমরা একে সঠিকভাবে করব। ২০১২ সালের পাঠ্যপুস্তকে যে ফিরে গেলাম, তার মানে আমরা পিছিয়ে যাচ্ছি। এখন নতুন বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে পাঠ্যপুস্তক করতে হবে।’

সেমিনারে আহসান হাবীব বলেন, ‘অনেক দেশে পাঠ্যপুস্তকই নেই। স্কুলেই পাঠ্যপুস্তক থাকে। এত বই ছাপানোরও দরকার পড়ে না। তা ছাড়া আমাদের যে ট্রেন্ড, এখানে প্রতিবছর পাঠ্যবই ছাপানোরও দরকার নেই। ভালো কাগজে প্রকাশ করলে কয়েক বছর ব্যবহার করা যাবে। শিক্ষাকে মেগা প্রজেক্ট হিসেবে নিতে হবে।’

ড. মনিনুর রশিদ বলেন, ‘পাঠ্যবই শতভাগ সঠিক ছাপানো কঠিন। এখানে ক্রিটিসিজম থাকবে, সেগুলো মেনে নেওয়ার মানসিকতা থাকা দরকার। আমি নিজেও একটা কমিটির সদস্য, সেখানে বলা হয়েছে, যাতে শহীদের বিষয় সঠিকভাবে ডকুমেন্টেড করা হয়। কিন্তু সেভাবে হয়নি। বাংলাদেশের প্রতিটি শহীদই গুরুত্বপূর্ণ। শহীদদের মধ্যে যেন বৈষম্য না হয়। যখন যারা ক্ষমতায়, তখন তারা ভুলে যায়। অনেক সংস্কার কমিটি হয়েছে; কিন্তু শিক্ষা সংস্কার কমিটি হয়নি কেন?’ তিনি আরও বলেন, ‘কারিকুলাম এক দিনে হবে না, বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে যথাযথভাবে করতে সময় লাগে।’

সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা অধিকার সংসদের অ্যাডভোকেসি কো-অর্ডিনেটর মিসবাহুর রহমান আসিম, মিডিয়া কো-অর্ডিনেটর মাহফুজুর রহমান মানিক ও অফিস কো-অর্ডিনেটর মিনহাজুল আবেদিন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ধর্ষণের মামলায় ক্রিকেটার তোফায়েলের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

ধর্ষণের অভিযোগে ক্রিকেটার তোফায়েল আহমেদ রায়হানের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গুলশান থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. সামিউল ইসলাম অভিযোগপত্র দাখিল করার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। অভিযুক্ত রায়হান বাংলাদেশ ‘এ’ দলের খেলোয়াড়।

অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ভুক্তভোগী তরুণীকে তোফায়েল একাধিকবার ধর্ষণ করেছেন বলে প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। আর এ কারণে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯ (১) ধারায় আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়েছে।

গত ১ আগস্ট এক তরুণী বাদী হয়ে গুলশান থানায় ধর্ষণ মামলা করেন।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, চলতি বছরের জানুয়ারিতে আসামি তোফায়েল আহমেদ রায়হানের সঙ্গে বাদীর ফেসবুকে পরিচয় হয়। এরপর থেকে তারা ফেসবুক মেসেঞ্জারে কথা বলতেন। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক হলে আসামি তোফায়েল ওই তরুণীকে প্রেমের প্রস্তাব দেন। প্রথমে তরুণী রাজি ছিলেন না। তাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে প্রেমের প্রস্তাবে রাজি করান তোফায়েল। চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি বাদীকে স্ত্রী পরিচয়ে গুলশানের একটি হোটেলে নিয়ে ধর্ষণ করেন রায়হান। পরে তাকে একাধিকবার ধর্ষণ করেন তিনি। এরপর থেকে ওই তরুণী বিয়ের কথা বললে রায়হান বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানান।

অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ধর্ষণের ঘটনাটি মামলার ছয় মাস আগে হয়েছে বিধায় কোনো আলামত জব্দ করা সম্ভব হয়নি। মামলার বাদী নিজেও কোনো আলামত উপস্থাপন করতে পারেননি। হোটেলে রক্ষিত রেজিস্ট্রার বুকের গেস্ট বুকিং সংক্রান্ত রেজিস্ট্রেশন স্লিপ, তরুণী ও আসামির পাসপোর্ট কপি জব্দ করা হয়। ডিএনএ রিপোর্টে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। সার্বিক তদন্তে প্রথম দিনের ঘটনা, হোটেল বুকিং কপি, ধর্ষণের মেডিকেল রিপোর্টসহ অন্যান্য বিষয় পর্যালোচনায় আসামি তোফায়েলের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রাথমিকভাবে সত্য বলে প্রমাণিত হয়।

উল্লেখ্য, মামলার পর গত ২৪ সেপ্টেম্বর আসামি তোফায়েলকে ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন দেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে তাকে এই জামিন শেষ হওয়ার আগেই ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে আত্মসমর্পণ নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে তিনি ট্রাইব্যুনালে আত্মসমর্পণ করেননি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রংপুরে মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁর স্ত্রীকে হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন

রংপুর প্রতিনিধি
রংপুরে মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁর স্ত্রীকে হত্যার প্রতিবাদ, দ্রুত আসামি শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন। ছবি: আজকের পত্রিকা
রংপুরে মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁর স্ত্রীকে হত্যার প্রতিবাদ, দ্রুত আসামি শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন। ছবি: আজকের পত্রিকা

রংপুরের তারাগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধা যোগেশ চন্দ্র রায় ও তাঁর স্ত্রী সুবর্ণা রায়কে নিজ বাড়িতে নির্মমভাবে হত্যার চার দিন পার হলেও পুলিশ এখনো কোনো আসামি শনাক্ত করতে পারেনি। এ ঘটনার প্রতিবাদে দ্রুত আসামি শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তারাগঞ্জ উপজেলা চত্বরের পাশের মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের সামনে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের আয়োজনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশ নেন মুক্তিযোদ্ধা, তাঁদের পরিবারের সদস্য, যুবসমাজ, রাজনৈতিক নেতা, শিক্ষক, ব্যবসায়ী ও স্থানীয় বাসিন্দারা। সড়কের দুই পাশে দাঁড়িয়ে প্ল্যাকার্ড-ফেস্টুন হাতে নিয়ে তাঁরা হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবিতে স্লোগান দেন।

মানববন্ধনে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ রংপুর জেলার আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আনছার আলী, যুগ্ম আহ্বায়ক শাহজাহান প্রামাণিক লেবু, সদস্যসচিব ফজলার রহমান, আলী হোসেন ও রেজাউল ইসলাম বাবুল।

বীর মুক্তিযোদ্ধা আনছার আলী বলেন, ‘বিজয়ের মাসে একজন মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁর স্ত্রীকে বাড়ির ভেতর হত্যা করা দেশের জন্য চরম লজ্জার। হত্যাকাণ্ডের চার দিন পার হলেও পুলিশ প্রশাসনের কোনো কার্যকর ভূমিকা নেই। তারা কাউকে গ্রেপ্তারও করতে পারেনি। এ ঘটনায় যারা জড়িত, দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।’

তারাগঞ্জ উপজেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আলী হোসেন বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধা যোগেশ চন্দ্র রায় দেশ স্বাধীন করতে জীবন বাজি রেখেছিলেন। অথচ শেষ বয়সে এমন নৃশংস পরিণতি—এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারে বিলম্ব হলে আমরা কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হব। প্রয়োজনে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ সুপারের কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি দেব।’

এ বিষয়ে তারাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রুহুল আমিন বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁর স্ত্রীকে হত্যার ঘটনা আমরা গুরুত্বসহকারে তদন্ত করছি। শিগগিরই খুনের রহস্য উন্মোচন হবে। খুনি যে-ই হোক, পার পাবে না।’

এর আগে গত শনিবার রাতে তারাগঞ্জ উপজেলার রহিমাপুর গ্রামে নিজ বাড়িতে মুক্তিযোদ্ধা যোগেশ চন্দ্র রায় ও তাঁর স্ত্রী সুবর্ণা রায়কে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। পরদিন রোববার সকালে প্রতিবেশীরা ডাকাডাকি করেও সাড়া না পেয়ে বাড়ির ভেতরে ঢুকে তাঁদের রক্তাক্ত লাশ দেখতে পান। এ ঘটনায় বড় ছেলে শোভেন চন্দ্র রায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে হত্যা মামলা করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শওকত মাহমুদের ৫ দিনের রিমান্ড

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
শওকত মাহমুদ। ছবি: সংগৃহীত
শওকত মাহমুদ। ছবি: সংগৃহীত

সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রের মামলায় বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সাবেক সভাপতি, বিএনপির সাবেক সহসভাপতি ও বাংলাদেশ জনতা পার্টির মহাসচিব শওকত মাহমুদকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ফাহমিদা খন্দকার আন্না আজ বৃহস্পতিবার এ নির্দেশ দেন বলে নিশ্চিত করেছেন মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের প্রসিকিউশন বিভাগের এসআই জিন্নাত আলী।

গত রোববার শওকত মাহমুদকে আটক করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার অভিযোগে যে মামলায় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক এনায়েত করিম চৌধুরী গ্রেপ্তার হয়েছেন, সেই মামলায় পরদিন শওকত মাহমুদকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়।

সেদিন আদালতে শওকত মাহমুদকে ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশ পরিদর্শক আক্তার মোর্শেদ। আদালত আজ রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য করেন।

শুনানি শেষে শওকত মাহমুদকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দিল আদালত।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশার ৬ দিন ও স্বামী রাব্বির ৩ দিনের রিমান্ড

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ঝালকাঠির নলছিটিতে গতকাল বুধবার দুপুরে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার আয়েশা আক্তার (বাঁ থেকে তৃতীয়) ও তাঁর পাশে জামাল সিকদার রাব্বি। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঝালকাঠির নলছিটিতে গতকাল বুধবার দুপুরে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার আয়েশা আক্তার (বাঁ থেকে তৃতীয়) ও তাঁর পাশে জামাল সিকদার রাব্বি। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা ও মেয়েকে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় গ্রেপ্তার গৃহকর্মী আয়েশাকে ৬ দিন এবং তাঁর স্বামী জামাল সিকদার রাব্বিকে ৩ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুব আলম রিমান্ডে নেওয়ার এই নির্দেশ দেন।

হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তার স্বামী-স্ত্রীকে আদালতে হাজির করে মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. সহিদুল ওসমান মাসুম প্রত্যেকের ১০ দিন করে রিমান্ড আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত গৃহকর্মীর ৬ দিন এবং তাঁর স্বামীর ৩ দিন রিমান্ড মঞ্জুর করেন। তাঁদের পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না।

আদালতের সহকারী পিপি হারুন-অর-রশিদ রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করেন। তিনি রিমান্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

এর আগে গত বুধবার সাভার থেকে রাব্বিকে এবং ঝালকাঠির নলছিটি থেকে আয়েশাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

গত ৮ ডিসেম্বর সকালে শাহজাহান রোডের ১৪ তলা একটি আবাসিক ভবনের সপ্তম তলায় লায়লা আফরোজ (৪৮) ও তাঁর মেয়ে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিয়াকে (১৫) ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। হত্যার ঘটনায় ওই দিনই রাতে গৃহকর্মী আয়েশাকে একমাত্র আসামি করে মোহাম্মদপুর থানায় হত্যা মামলা করেন নিহত লায়লা আফরোজের স্বামী স্কুলশিক্ষক আ জ ম আজিজুল ইসলাম।

মামলার এজাহারে বলা হয়, ৮ ডিসেম্বর সকাল ৭টার দিকে তিনি উত্তরায় স্কুলে চলে যান। সেখানে থাকা অবস্থায় স্ত্রীর মোবাইলে একাধিকবার ফোন দিয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। পরে তিনি বাসায় ফিরে স্ত্রী ও মেয়ের রক্তে ভেজা মরদেহ দেখতে পান। ভবনের সিসিটিভি ফুটেজ অনুযায়ী, আয়েশা সকাল ৭টা ৫১ মিনিটে কাজ করার জন্য বাসায় আসেন এবং সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটে নাফিসার স্কুলড্রেস পরে বাসা থেকে পালিয়ে যান। যাওয়ার সময় একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, টাকাসহ মূল্যবান জিনিস নিয়ে যান।

বাদী এজাহারে আরও বলেন, অজ্ঞাত কারণে স্ত্রী ও মেয়েকে ছুরি অথবা অন্য কোনো ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে হত্যা করেছেন।

রিমান্ড আবেদনে বলা হয়েছে, গৃহকর্মী আয়েশাকে আটকের পর তিনি খুনের সঙ্গে জড়িত বলে স্বীকার করেছেন। তবে খুনের মূল রহস্য কী তা খুঁজে বের করতে এবং এই ঘটনার পেছনে আরও কেউ জড়িত আছে কিনা তা উদ্ঘাটনের জন্য তাকে রিমান্ডে নেওয়া প্রয়োজন। গৃহকর্মীর স্বামী রাব্বিও এই ঘটনায় জড়িত আছে বলে সন্দেহ করা যাচ্ছে। তাঁকেও জিজ্ঞাসাবাদ করে ঘটনার মূল রহস্য উদ্‌ঘাটন করা সম্ভব হতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত