Ajker Patrika

বাংলাদেশের নাম আমরা পরিবর্তন করতে দেব না: ফজলুর

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
ইটনায় শোকসভা ও দোয়া মাহফিলে অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান। ছবি: আজকের পত্রিকা
ইটনায় শোকসভা ও দোয়া মাহফিলে অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান। ছবি: আজকের পত্রিকা

নতুন বাংলাদেশ দিবস প্রসঙ্গে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান বলেছেন, ‘এই দেশের নাম বাংলাদেশ থাকবে, এই দেশে যত দিন চন্দ্র-সূর্য উঠবে, তত দিন বাংলার ৩০ লাখ শহীদের নাম কেউ ভুলবে না।

বাংলাদেশ ছাড়া এই দেশের নাম আমরা কোনো দিন কেউ পরিবর্তন করতে দেব না। যদি এই দেশের নাম আবার পাকিস্তান না চান, তাহলে তৈরি থাকেন। নতুন বাংলাদেশ হবে কেন? বাংলাদেশ ৭১ সনেই সৃষ্টি হয়েছে। চক্রান্ত চলছে। সেই চক্রান্তের বিরুদ্ধে সবাইকে হুঁশিয়ার থাকতে হবে।’

গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলার চৌগাংগা কামিল মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে এক শোকসভা ও দোয়ার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।

ফজলুর রহমান বলেন, ‘দেশ-জাতি আজকে বড় বিপদের সামনে পড়েছে। এখন পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধ একটা দুঃসময়ের মধ্যে আছে। আজকে মুক্তিযুদ্ধ যখন সবচেয়ে দুঃসময়ে পড়েছে, এই সময়ে আমি আঙুল সোজা করে বলতে চাই, সবকিছু দেব, মুক্তিযুদ্ধ আমি কাউকে দেব না।

মাথা উঁচু করে বলতে চাই, মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশকে আমি কোনো দিন হারিয়ে যেতে দেব না, সে যে-ই হোক। আমি লাভ চাই না, লোভ চাই না, ক্ষমতা চাই না, অর্থ চাই না, বিত্ত চাই না, জীবন চাই না, চাই শুধু বাঙালি জাতির একটা স্বাধীন রাষ্ট্র থাকবে, যে রাষ্ট্রটা আমরা যুদ্ধ করে সৃষ্টি করেছিলাম। ’৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে বলে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ মানি না মানে মা-কে মানি না। বাঙালি জাতির মা হলো মুক্তিযুদ্ধ।’

গত ১৫ বছরের দমন-পীড়ন প্রসঙ্গে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বলেন, ‘বছরের পর বছর আমি দেশে আসতে পারিনি। আবদুল হামিদ আমাকে দেশে আসতে দেয়নি। আমার মা-বাবার কবরে গিয়ে মোনাজাত পড়তে দেয়নি। ঈদের দিন আমি দেশে আসতে পারিনি। আমাকে নির্বাসনে রেখেছে আবদুল হামিদ। রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা দিয়ে আমাকে জেলখানায় রেখেছে।’

ফজলুর রহমান বলেন, ‘আজকে আমি কোথায় আর আবদুল হামিদ কোথায় একটু বিচার করেন তো আপনারা। আল্লাহ কার পক্ষে আপনারা দেখেন। এখন জামায়াতে ইসলামীর করুণা নিয়ে আবদুল হামিদকে বেঁচে থাকতে হয়। তার শালা জিহাদ খান এখন করিমগঞ্জ-তাড়াইলের জামায়াতে ইসলামীর ক্যান্ডিডেট।

গোলাম আযমের ছেলে আযমীর করুণা নিয়ে আর জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমানের দোয়া নিয়ে তাকে সরকারকে বাধ্য করে বিদেশ যেতে হয় এবং আসতে হয়। আওয়ামী লীগের প্রেসিডেন্ট, বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হামিদেরা এখন জামায়াতে ইসলামীর করুণায় বাংলাদেশে বেঁচে আছে। এদের থুতু দিতে হয়।’

ফজলুর রহমান যোগ করে বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামীর করুণা নিয়ে এক সেকেন্ড পৃথিবীতে বেঁচে থাকতে চাই না, না, না, না। আমি মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীদের করুণা নিয়ে এ দেশে বাঁচতে চাই না।’

ফজলুর রহমান আরও বলেন, ‘আজকে দেশ কোন দিকে গেছে দেখেন। আমি বলেছিলাম, ছয় দিন টাইম চেয়ে আপনি এক ঘণ্টা টাইম দিলেন না ইউনূস সাহেব। এখন এমন হইছে যে ১৫ ঘণ্টা প্লেন চালাইয়া লন্ডন গেছেন। গিয়ে আবার বুঝ করে আসছেন। ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচন দেবেন। আলহামদুলিল্লাহ। আমি আর গণ্ডগোল করতে চাই না। জীবনে আর ফাইট করতে চাই না। আপনি শেষ করেন। কিন্তু নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করেন না কেন?’

চৌগাংগা ইউনিয়ন বিএনপির নেতা তোফায়েল আহমেদ তোতা মিয়ার সভাপতিত্বে শোকসভায় আরও বক্তব্য দেন–জেলা বিএনপির সহসভাপতি অ্যাডভোকেট উম্মে কুলসুম রেখা, যুগ্ম সম্পাদক আমিনুল ইসলাম রতন, উপজেলা বিএনপির সভাপতি এস এম কামাল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকুজ্জামান ঠাকুর স্বপন, সিনিয়র সহসভাপতি মো. মনির উদ্দিন ও সোহরাব হোসেন মীর, যুগ্ম সম্পাদক পলাশ রহমান প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চট্টগ্রাম-১৪ আসনে ধানের শীষ পেলেন বেনজীরের ব্যবসায়িক সহযোগী জসিম

মাকে দেখতে মাঝরাতে হাসপাতালে তারেক রহমান

লক্ষ্মীপুর-১ আসনে স্বতন্ত্র মাহফুজ আলম, এনসিপির পক্ষে মনোনয়নপত্র নিলেন বড় ভাই মাহবুব

এনসিপির নির্বাচনকালীন কার্যক্রম থেকে সরে দাঁড়ালেন নুসরাত তাবাসসুম

জাতীয় সংসদ নির্বাচন: ভোটে নতুন সমীকরণ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

লাউ চাষেই স্বপ্নপূরণ, দম্পতির মুখে সাফল্যের হাসি

রাতুল মণ্ডল, শ্রীপুর (গাজীপুর)  
আপডেট : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ১১
স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে বাগানের পরিচর্যায় ব্যস্ত। ছবি: আজকের পত্রিকা
স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে বাগানের পরিচর্যায় ব্যস্ত। ছবি: আজকের পত্রিকা

গাজীপুরের শ্রীপুরে বসতবাড়ির চারপাশে পাঁচ বিঘা জমিতে হাইব্রিড জাতের লাউ চাষ করে সফলতার নজির গড়েছেন আক্তার-মর্জিনা দম্পতি। বাড়ির আঙিনা ও পুকুরপাড়জুড়ে মাচায় ঝুলছে শীতকালীন সারি সারি লাউ। সমন্বিত কৃষি খামারের মাধ্যমে তাঁরা স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছেন।

মো. আক্তারুজ্জামান ও মর্জিনা আক্তার উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের টেংরা গ্রামের বাসিন্দা। চার মেয়েকে নিয়ে তাঁদের সংসার। কৃষিকাজই এখন তাঁদের আয়ের প্রধান উৎস।

নিজেদের সফলতার গল্প বলতে গিয়ে মর্জিনা আক্তার বলেন, ২০২২ সাল থেকে তিনি বাড়ির আশপাশে লাউসহ বিভিন্ন শাকসবজি চাষ শুরু করেন। ২০২৩ সালে চাষের পরিধি বাড়ান। এতে ভালো ফলন পাওয়ায় চলতি বছর আশপাশের পাঁচ বিঘা জমি লিজ নিয়ে হাইব্রিড জাতের লাউ চাষ করেছেন। ইতিমধ্যে লাউ বিক্রি শুরু হয়েছে। তিনি বলেন, ‘সবকিছু ঠিক থাকলে ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকার লাউ বিক্রি করতে পারব বলে আশা করছি। এই আয় দিয়েই আমার সন্তানদের পড়াশোনা ও সংসার চলছে।’

মো. আক্তারুজ্জামান জানান, গত বছর চার বিঘা জমিতে লাউ চাষ করে প্রায় ১৮ লাখ টাকা বিক্রি করেছিলেন। চলতি বছর জমির পরিমাণ বাড়িয়ে পাঁচ বিঘা করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এ বছরও ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকা বিক্রির আশা করছি।’

সরেজমিন লাউবাগান ঘুরে দেখা যায়, স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে বাগানের পরিচর্যায় ব্যস্ত। কীটনাশকের ব্যবহার কমাতে আক্রান্ত লাউ ও শুকনো পাতা কেটে ফেলছেন। পাশাপাশি নিয়মিত জৈব সার ব্যবহার করছেন। বসতবাড়ির চারপাশ ও পুকুরের পাশে মাচায় ঝুলে আছে শত শত লাউ।

বিক্রির জন্য মাচা থেকে লাউ তুলছেন আক্তার-মর্জিনা দম্পতি। ছবি: আজকের পত্রিকা
বিক্রির জন্য মাচা থেকে লাউ তুলছেন আক্তার-মর্জিনা দম্পতি। ছবি: আজকের পত্রিকা

শ্রীপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুমাইয়া সুলতানা বলেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় ২০ শতাংশ জমিতে লাউ চাষের একটি প্রদর্শনী পেয়েছিলেন আক্তার-মর্জিনা দম্পতি। এতে উৎসাহিত হয়ে তাঁরা আরও পাঁচ বিঘা জমিতে লাউ চাষ করেছেন এবং বাম্পার ফলন পেয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, ‘এই দম্পতি এরই মধ্যে স্বাবলম্বী হয়েছেন। ভবিষ্যতেও যাতে এই চাষাবাদ ধরে রাখতে পারেন, সে জন্য কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে নিয়মিত পরামর্শ ও সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চট্টগ্রাম-১৪ আসনে ধানের শীষ পেলেন বেনজীরের ব্যবসায়িক সহযোগী জসিম

মাকে দেখতে মাঝরাতে হাসপাতালে তারেক রহমান

লক্ষ্মীপুর-১ আসনে স্বতন্ত্র মাহফুজ আলম, এনসিপির পক্ষে মনোনয়নপত্র নিলেন বড় ভাই মাহবুব

এনসিপির নির্বাচনকালীন কার্যক্রম থেকে সরে দাঁড়ালেন নুসরাত তাবাসসুম

জাতীয় সংসদ নির্বাচন: ভোটে নতুন সমীকরণ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

তীব্র শীতে নাকাল জনজীবন

­যশোর প্রতিনিধি
শৈত্যপ্রবাহে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন দিনমজুর, কৃষিশ্রমিক, ভ্যানচালক ও অন্যান্য খেটে খাওয়া মানুষ। ছবি: আজকের পত্রিকা
শৈত্যপ্রবাহে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন দিনমজুর, কৃষিশ্রমিক, ভ্যানচালক ও অন্যান্য খেটে খাওয়া মানুষ। ছবি: আজকের পত্রিকা

তীব্র শীতে নাকাল যশোরের জনজীবন। টানা দুই দিন দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হওয়ার পর রোববার তাপমাত্রা কিছুটা বাড়লেও সারা দিন সূর্যের দেখা মেলেনি। আজ সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ভোর থেকে ঘন কুয়াশা ও হিমেল হাওয়ায় জবুথবু হয়ে পড়েছে জনজীবন।

যশোর বিমানবাহিনীর নিয়ন্ত্রণাধীন আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, রোববার জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১০ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে শনিবার ৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি ও শুক্রবার ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়, যা ওই দুই দিনই ছিল দেশের সর্বনিম্ন। সূর্যের দেখা না যাওয়ায় শীতের অনুভূতি আরও তীব্র বলে জানিয়েছেন শ্রমজীবী ও খেটে খাওয়া মানুষ।

চার দিন ধরে চলা শৈত্যপ্রবাহে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন দিনমজুর, কৃষিশ্রমিক, ভ্যানচালক ও অন্যান্য খেটে খাওয়া মানুষ। ভোর থেকেই জেলার আকাশ ছিল কুয়াশাচ্ছন্ন ও মেঘে ঢাকা। প্রচণ্ড ঠান্ডায় স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। মোটা জ্যাকেট ও মাফলারে শরীর ঢেকে জবুথবু অবস্থায় মানুষজনকে চলাচল করতে দেখা গেছে। অনেকে ঠান্ডার কারণে ঘর থেকে বের হয়নি। আর বের হলেও কাজ পাচ্ছেন না অনেক শ্রমজীবী মানুষ। শহরে মানুষের চলাচলও তুলনামূলক কম।

শহরের দড়াটানা এলাকায় রিকশাচালক আমিরুল বলেন, ‘কুয়াশা আর উত্তরের বাতাসের কারণে শহরে লোকজন কম, যাত্রীও মিলছে না। শীতের জন্য রিকশায় কেউ উঠতে চায় না। তবুও জীবিকার তাগিদে প্রতিদিন ঘর ছেড়ে বের হতে হচ্ছে।’

শৈত্যপ্রবাহে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন দিনমজুর, কৃষিশ্রমিক, ভ্যানচালক ও অন্যান্য খেটে খাওয়া মানুষ। ছবি: আজকের পত্রিকা
শৈত্যপ্রবাহে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন দিনমজুর, কৃষিশ্রমিক, ভ্যানচালক ও অন্যান্য খেটে খাওয়া মানুষ। ছবি: আজকের পত্রিকা

এদিকে ফুটপাতের দোকানগুলোতে গরম কাপড়ের বেচাকেনা বেড়েছে। শীতের তীব্রতা বাড়ায় হাসপাতালেও রোগীর চাপ বেড়েছে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্করা ঠান্ডাজনিত রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন।

জেলা কৃষি অফিস জানিয়েছে, মৃদু শৈত্যপ্রবাহের কারণে জেলায় রবি ফসল, বোরো ধানের বীজতলা এবং মৌচাষিদের মধু সংগ্রহে বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। জেলার আট উপজেলার মাঠে সরিষা, ভুট্টা, পেঁয়াজ, রসুনসহ বিভিন্ন মৌসুমি ফসল ও বোরো ধানের বীজতলা রয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘শীত ও ঘন কুয়াশার কারণে ফসলের ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। কৃষিকাজ ব্যাহত হচ্ছে। এ অবস্থায় কৃষকদের ফসল সুরক্ষায় আগাম সতর্কতা ও করণীয় সম্পর্কে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। মাঠপর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তারা নিয়মিত ফসলের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছেন, যাতে কোনো ক্ষতি হলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া যায়।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চট্টগ্রাম-১৪ আসনে ধানের শীষ পেলেন বেনজীরের ব্যবসায়িক সহযোগী জসিম

মাকে দেখতে মাঝরাতে হাসপাতালে তারেক রহমান

লক্ষ্মীপুর-১ আসনে স্বতন্ত্র মাহফুজ আলম, এনসিপির পক্ষে মনোনয়নপত্র নিলেন বড় ভাই মাহবুব

এনসিপির নির্বাচনকালীন কার্যক্রম থেকে সরে দাঁড়ালেন নুসরাত তাবাসসুম

জাতীয় সংসদ নির্বাচন: ভোটে নতুন সমীকরণ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

কর্মসূচি থেকে ফেরার পথে পিকআপের ধাক্কায় জামায়াত নেতা নিহত

মনিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি
নিহত শরিফুল ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত
নিহত শরিফুল ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত

যশোরের মনিরামপুরে পিকআপের সঙ্গে মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে শরিফুল ইসলাম (৫৫) নামে এক জামায়াত নেতা নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন কামরুজ্জামান নামে মোটরসাইকেলের অপর আরোহী। গতকাল রোববার রাত সাড়ে ৮টার দিকে যশোর-চুকনগর সড়কের মনিরামপুর সরকারি কলেজের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

মনিরামপুর থানার ওসি রজিউল্লাহ খান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, নিহতের লাশ মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রাখা আছে।

নিহত শরিফুল ইসলাম উপজেলার হানুয়ার গ্রামের মাওলানা আব্দুস সালামের ছেলে। তিনি মনিরামপুর উপজেলা জামায়াতের কর্মপরিষদের সদস্য ও উপজেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি। রাজগঞ্জ বাজারে তাঁর হোমিও চিকিৎসাকেন্দ্র রয়েছে।

আহত কামরুজ্জামান হানুয়ার গ্রামের ওমর ফারুকের ছেলে। তিনি মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

পুলিশ জানায়, শরিফুল ইসলাম ও কামরুজ্জামান উপজেলার জালঝাড়া জামায়াতে ইসলামীর অফিস থেকে মোটরসাইকেলে চড়ে বাড়ি ফিরছিলেন। তাঁরা মনিরামপুর সরকারি কলেজের সামনে পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে বেপরোয়া গতিতে আসা পিকআপ ধাক্কা দিলে দুজনে ছিটকে পড়ে বুকে ও মাথায় মারাত্মক আঘাতপ্রাপ্ত হন। পরে স্থানীয় লোকজন তাঁদের উদ্ধার করে মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শরিফুল ইসলামকে মৃত ঘোষণা করেন।

মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মেহেদী হাসান বলেন, ‘হাসপাতালে আনার পর আমরা শরিফুল ইসলামকে মৃত অবস্থায় পেয়েছি। আহত অপরজন চিকিৎসাধীন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চট্টগ্রাম-১৪ আসনে ধানের শীষ পেলেন বেনজীরের ব্যবসায়িক সহযোগী জসিম

মাকে দেখতে মাঝরাতে হাসপাতালে তারেক রহমান

লক্ষ্মীপুর-১ আসনে স্বতন্ত্র মাহফুজ আলম, এনসিপির পক্ষে মনোনয়নপত্র নিলেন বড় ভাই মাহবুব

এনসিপির নির্বাচনকালীন কার্যক্রম থেকে সরে দাঁড়ালেন নুসরাত তাবাসসুম

জাতীয় সংসদ নির্বাচন: ভোটে নতুন সমীকরণ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নতুন বই এলেও পদ্মার চরে কাটছে না শিক্ষকসংকট

তামীম আদনান, দৌলতপুর (কুষ্টিয়া)
শিক্ষক কম থাকায় অনেক সময় ক্লাস হয় না। এতে শহরের শিক্ষার্থীদের তুলনায় পড়াশোনায় পিছিয়ে পড়ছে তারা। ছবি: আজকের পত্রিকা
শিক্ষক কম থাকায় অনেক সময় ক্লাস হয় না। এতে শহরের শিক্ষার্থীদের তুলনায় পড়াশোনায় পিছিয়ে পড়ছে তারা। ছবি: আজকের পত্রিকা

নতুন বছর মানেই নতুন বইয়ের উচ্ছ্বাস। আর মাত্র কয়েক দিনের মধ্যেই বছরের প্রথম দিনে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার পদ্মার চরের ২৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাড়ে পাঁচ হাজারের বেশি শিক্ষার্থীর হাতে পৌঁছাবে নতুন বই। ঝকঝকে বইয়ের গন্ধে মুখর হবে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ। তবে সেই আনন্দের মাঝেই দীর্ঘদিনের তীব্র শিক্ষকসংকট চরের শিশুদের শিক্ষাজীবনে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, দৌলতপুর উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ও চিলমারী ইউনিয়নের পদ্মার চরের ২৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অনুমোদিত শিক্ষক পদ ১৫০টি। বর্তমানে সেখানে কর্মরত আছেন মাত্র ৮৫ জন। ফলে দীর্ঘদিন ধরে ৬৫টি শিক্ষক পদ শূন্য রয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা ও বিদ্যালয় সূত্র জানায়, দুর্গম চরাঞ্চলে নতুন শিক্ষক নিয়োগ পেলেও যাতায়াত ও আবাসন সমস্যা দেখিয়ে অনেকেই বেশি দিন সেখানে থাকতে চান না। অল্প সময়ের মধ্যেই নানা সুপারিশে তাঁরা সুবিধাজনক এলাকায় বদলি হয়ে যান। প্রতিবছর শিক্ষক নিয়োগ হলেও দুর্গম চরাঞ্চলে শিক্ষক ধরে রাখার জন্য কার্যকর নীতিমালা বা প্রণোদনা না থাকায় সংকটটি বছরের পর বছর রয়ে যাচ্ছে।

সরেজমিন চরাঞ্চলের বিদ্যালয়গুলো ঘুরে দেখা গেছে, অনেক স্কুলে প্রাক্‌-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ছয়টি শ্রেণির বিপরীতে মাত্র দুই থেকে তিনজন শিক্ষক রয়েছেন। কোথাও আবার একজন শিক্ষকই পুরো বিদ্যালয়ের পাঠদান সামলাচ্ছেন। এক শিক্ষকের পক্ষে একসঙ্গে একাধিক শ্রেণিতে পাঠদান কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এর পাশাপাশি কর্মরত শিক্ষকদের একটি বড় অংশ ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করায় দাপ্তরিক কাজেই তাঁদের বেশির ভাগ সময় ব্যয় হচ্ছে।

শিক্ষক কম থাকায় অনেক সময় ক্লাস হয় না। এতে শহরের শিক্ষার্থীদের তুলনায় পড়াশোনায় পিছিয়ে পড়ছে তারা। ছবি: আজকের পত্রিকা
শিক্ষক কম থাকায় অনেক সময় ক্লাস হয় না। এতে শহরের শিক্ষার্থীদের তুলনায় পড়াশোনায় পিছিয়ে পড়ছে তারা। ছবি: আজকের পত্রিকা

চিলমারী ইউনিয়নের খারিজাথাক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জসিম উদ্দিন বলেন, ‘ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকদের প্রায়ই উপজেলা শিক্ষা অফিসে যেতে হয়। দুর্গম চরাঞ্চল পাড়ি দিয়ে যাওয়া-আসাতেই পুরো দিন শেষ হয়ে যায়। ফলে ওই দিনগুলোতে অনেক বিদ্যালয়ে পাঠদান কার্যত বন্ধ থাকে।’

চর থেকে উপজেলা সদরে একজন শিক্ষকের যাতায়াতে গড়ে চার ঘণ্টার বেশি সময় লাগে। এতে খরচ হয় প্রায় ২০০ থেকে ৩০০ টাকা। বর্ষা মৌসুমে নৌকাই একমাত্র ভরসা, আর শুষ্ক মৌসুমে মোটরসাইকেলে চলাচল করতে হয়। নারী শিক্ষকদের জন্য এই যাতায়াত আরও কষ্টসাধ্য হয়ে ওঠে।

পূর্ব খারিজাথাক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক পারভিনা আক্তার জানান, তিনি ১৮ বছর ধরে চরাঞ্চলে শিক্ষকতা করছেন। বর্তমানে তাঁর বিদ্যালয়ে ৩৬৫ জন শিক্ষার্থীর বিপরীতে পাঠদান করছেন মাত্র তিনজন শিক্ষক। প্রতিটি শ্রেণিতে গড়ে ৬০ থেকে ৬৫ জন শিক্ষার্থী। তিনি দাপ্তরিক কাজে বাইরে থাকলে মাত্র দুজন শিক্ষক দিয়ে পুরো বিদ্যালয়ের পাঠদান চালাতে হয়। আক্ষেপ করে তিনি বলেন, ‘এই অবস্থায় শিক্ষার্থীদের কী শিক্ষা দিচ্ছি—সেটাই বড় প্রশ্ন। বহুবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি, কিন্তু কোনো স্থায়ী সমাধান আসেনি।’

রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের সোনাতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির এক শিক্ষার্থী জানায়, শিক্ষক কম থাকায় অনেক সময় ক্লাস হয় না। তার ভাষ্য, ‘আমরা স্কুলে গিয়ে বসে থাকি। আবার অন্য ক্লাসের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একসঙ্গে বসানো হয়।’

অভিভাবকদের অভিযোগ আরও তীব্র। আব্দুর রাজ্জাক নামের এক অভিভাবক বলেন, ‘আমাদের সন্তানের হাতে নতুন বই আছে, কিন্তু মাথার ওপর শিক্ষক নেই। শহরের স্কুলে যেখানে শিক্ষক ভরপুর, সেখানে চরের শিশুদের জন্য কেন স্থায়ী ব্যবস্থা নেই।’

চরের অভিভাবকদের অভিযোগ, শিক্ষকসংকটের কারণে তাঁদের সন্তানেরা শহরের শিক্ষার্থীদের তুলনায় পড়াশোনায় পিছিয়ে পড়ছে। নিয়মিত পাঠদান না হওয়ায় শিক্ষার মান দুর্বল হচ্ছে। তবুও অনেক শিক্ষার্থী একের পর এক শ্রেণি পেরিয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে গিয়ে পড়ালেখাই ছেড়ে দিচ্ছে।

দৌলতপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মুস্তাক আহম্মেদ বলেন, ‘নতুন শিক্ষক এলেও তারা নানা অজুহাতে চরাঞ্চলে থাকতে চান না। বিভিন্ন সুপারিশে সুবিধাজনক এলাকায় চলে যান। জানুয়ারিতে নতুন শিক্ষক নিয়োগের কথা রয়েছে। আমরা চাহিদা পাঠিয়েছি। নতুন শিক্ষক পেলে কিছুটা হলেও সংকট কাটবে বলে আশা করছি।’

তবে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, চরের দায়িত্বে থাকা অনেক শিক্ষক স্বেচ্ছায় সুবিধাজনক স্থানে বদলির আবেদন করেছেন। নতুন শিক্ষক নিয়োগের পর তাঁরা সেখান থেকে চলে আসবেন। ফলে সংকট দ্রুত কাটার কোনো সম্ভাবনা দেখছেন না সংশ্লিষ্টরা।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের তথ্য অনুযায়ী, দৌলতপুর উপজেলায় মোট ২১৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৮২টিতে প্রধান শিক্ষক নেই। এ ছাড়া ১ হাজার ১৬৬টি সহকারী শিক্ষক পদের বিপরীতে ১৩২টি পদ শূন্য রয়েছে, যার সিংহভাগই পদ্মার চরাঞ্চলে। চলতি বছরে উপজেলায় প্রায় ৪০ হাজার প্রাথমিক শিক্ষার্থী নতুন বই পাবে।

নতুন বইয়ের আনন্দের মাঝেই শিক্ষকসংকটের এই দীর্ঘশ্বাস পদ্মার চরের হাজারো শিশুর শিক্ষা ভবিষ্যৎকে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিচ্ছে—এমনটাই মনে করছেন সচেতন মহল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চট্টগ্রাম-১৪ আসনে ধানের শীষ পেলেন বেনজীরের ব্যবসায়িক সহযোগী জসিম

মাকে দেখতে মাঝরাতে হাসপাতালে তারেক রহমান

লক্ষ্মীপুর-১ আসনে স্বতন্ত্র মাহফুজ আলম, এনসিপির পক্ষে মনোনয়নপত্র নিলেন বড় ভাই মাহবুব

এনসিপির নির্বাচনকালীন কার্যক্রম থেকে সরে দাঁড়ালেন নুসরাত তাবাসসুম

জাতীয় সংসদ নির্বাচন: ভোটে নতুন সমীকরণ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত