Ajker Patrika

মডেল মেঘনা-সৌদি রাষ্ট্রদূত

আট মাসের পরিচয়, চার মাসে ‘বাগদান’

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৩ এপ্রিল ২০২৫, ১০: ১৯
মেঘনা আলম। ছবি: সংগৃহীত
মেঘনা আলম। ছবি: সংগৃহীত

সৌদি আরবের সদ্য বিদায়ী রাষ্ট্রদূত ঈসা বিন ইউসুফ আল দুহাইলানের সঙ্গে মডেল ও উদ্যোক্তা মেঘনা আলমের পরিচয় হয়েছিল আট মাস আগে। সেই পরিচয়েই ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে সখ্য। মেঘনার পরিবারের দাবি, পরিচয়ের মাত্র চার মাস পর গত বছরের ৪ ডিসেম্বর তাঁদের মধ্যে গোপনে বাগদান সম্পন্ন হয়। তবে এই দাবির সপক্ষে কোনো কাগজপত্র তারা দেখাতে পারেনি।

পারিবারিক সূত্র বলছে, মেঘনার সঙ্গে রাষ্ট্রদূত ঈসার পরিচয়ের সূত্রপাত হয়েছিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পশ্চিম এশিয়া অনুবিভাগের এক কর্মকর্তার মাধ্যমে। গত বছরের আগস্টে ঢাকায় সৌদি দূতাবাস আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে প্রথম দেখা হয় রাষ্ট্রদূত ঈসা বিন ইউসুফ আল দুহাইলান ও মেঘনার। সেখান থেকেই শুরু হয় তাঁদের বন্ধুত্ব। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়তে থাকে। রাষ্ট্রদূত মেঘনার ‘মিস বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন’ নামের একটি সামাজিক উদ্যোগে সহযোগিতা করতেন। বিভিন্ন সময় একসঙ্গে ঘোরাঘুরি ও অনুষ্ঠানে অংশ নিতে দেখা যেত তাঁদের।

এ সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হওয়ার চার মাসের মাথায় ডিসেম্বরের এক সকালে মেঘনা পরিবারকে জানান, পরদিন তাঁর বাগদান। পরিবারে তখন বিয়ের প্রস্তুতির আমেজ। কারণ, মেঘনা জানান, বিয়ের পর তাঁরা সৌদি আরবে স্থায়ী হবেন। কিন্তু বাগদানের কিছুদিন পরই এক নাটকীয় মোড় নেয় ঘটনাটি। মেঘনার কাছে খবর আসে, রাষ্ট্রদূতের রয়েছে স্ত্রী ও সন্তান। বিষয়টি জানার পর নিজেকে প্রতারিত মনে করেন মেঘনা।

পরিবারের দাবি, এরপর থেকেই রাষ্ট্রদূত বিভিন্নভাবে চাপ সৃষ্টি করতে শুরু করেন। মেঘনার সঙ্গে যোগাযোগ কমিয়ে দেন। একপর্যায়ে সম্পর্কের টানাপোড়েন শুরু হয়। মেঘনা তখন নিজের ক্ষোভ জানাতে চান। বাবা বদরুল আলমের ভাষায়, তাঁর মেয়ে শুধু রাষ্ট্রদূতের কাছ থেকে দুঃখপ্রকাশ চেয়েছিলেন। সে আশ্বাস না পেয়ে সিদ্ধান্ত নেন, বিষয়টি প্রকাশ্যে আনবেন।

এই শঙ্কা থেকেই রাষ্ট্রদূত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে অনানুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ জানান যে একজন নারী তাঁর কাছ থেকে ‘আর্থিক সুবিধা নেওয়ার জন্য’ সম্পর্ককে কাজে লাগানোর চেষ্টা করছেন এবং হুমকি দিচ্ছেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অবহিত করে। সেখানে বিষয়টি তদারক করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার একজন বিশেষ সহকারী। তাঁর নির্দেশে ডিবি পুলিশকে দেওয়া হয় খোঁজ নেওয়ার দায়িত্ব।

এরই মধ্যে ৯ এপ্রিল রাতে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার একটি ভাড়া বাসা থেকে মেঘনাকে আটক করে ডিবি পুলিশ। আটকের কিছু আগে মেঘনা ফেসবুক লাইভে এসে বলেন, ‘পুলিশ পরিচয়ে কিছু লোক’ তাঁর বাসার দরজা ভাঙার চেষ্টা করছেন।

পরদিন, ১০ এপ্রিল পুলিশের আবেদনের ভিত্তিতে আদালত বিশেষ ক্ষমতা আইনে মেঘনাকে ৩০ দিনের আটকাদেশ দেন। বর্তমানে তিনি কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী।

এ ঘটনায় পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন মেঘনার পরিচিত ব্যবসায়ী মো. দেওয়ান সমীর (৫৮)। তিনি ‘কাউলি গ্রুপ’-এর একজন নির্বাহী ছিলেন। গ্রুপটির রয়েছে একটি ভিসা প্রসেসিং সেন্টার, যার মাধ্যমে জাপানের ভিসা প্রক্রিয়া হয়। মেঘনা এই গ্রুপের অ্যাম্বাসেডর হিসেবে কাজ করতেন। সমীরকে ‘চাঁদাবাজির’ মামলায় পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ

মেঘনা আলম। ছবি: ফেসবুক
মেঘনা আলম। ছবি: ফেসবুক

রিমান্ডে নিতে আদালতে দেওয়া প্রতিবেদনে পুলিশ বলেছে, সামির সুন্দরী মেয়েদের ব্যবহার করে উচ্চশ্রেণির ব্যক্তিদের ফাঁদে ফেলতেন। পরে সুকৌশলে অর্থ আদায় করতেন। সেভাবে তিনি সৌদি রাষ্ট্রদূত ঈসাকেও ফাঁদে ফেলার চেষ্টা করেন। তাঁরা সৌদি রাষ্ট্রদূতের কাছে ৫০ লাখ ডলার দাবি করেছিলেন।

মেঘনার পরিবার বলছে, তাঁরা তিন দশক আগে বরিশাল থেকে ঢাকায় আসেন। বাবা বদরুল আলম বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনের সভাপতি এবং একজন রাজনৈতিক গবেষক। তাঁর চার মেয়ের মধ্যে বড় মেঘনা।

মেঘনা ভিকারুননিসা নূন স্কুল ও কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএ করেন। ২০২০ সালে তিনি ‘মিস আর্থ বাংলাদেশ’ প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হন। মডেলিং ছাড়াও উদ্যোক্তা হিসেবে কাজ করছেন। বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন।

জানতে চাইলে ডিবি পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার রেজাউল করিম মল্লিক বলেন, ‘বিষয়টি স্পর্শকাতর। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত এ নিয়ে কিছু বলা যাবে না।’

আরও পড়ুন:–

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মারা গেছেন ঢাকা ক্যাপিটালসের কোচ, শোকাচ্ছন্ন বিপিএল

তারেক রহমানের পঙ্গু হাসপাতালে যাওয়ার কর্মসূচি বাতিল

আজকের রাশিফল: ভুঁড়িটা বাড়ছে—শরীরের দিকে নজর দিন, প্রাক্তনের মেসেজে রিপ্লাই দিলে বিপদ

কোন স্বার্থে মুসলিমপ্রধান সোমালিল্যান্ডকে সবার আগে স্বীকৃতি দিল ইসরায়েল

ফরিদপুরে জেমসের কনসার্ট পণ্ড, কী ঘটেছিল সেখানে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আগামী নির্বাচনে বিপুল সংখ্যক দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষক উপস্থিত থাকবেন: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

ভোলা প্রতিনিধি
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন । ছবি: আজকের পত্রিকা
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন । ছবি: আজকের পত্রিকা

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে উৎসবমুখর, শান্তিপূর্ণ ও সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণমূলক। নির্বাচনে বিপুল সংখ্যক দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষক উপস্থিত থাকবেন। কোনো ভোটকেন্দ্রে সহিংসতা বা অনিয়মের ঘটনা ঘটলে সঙ্গে সঙ্গে ওই কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হবে।

শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) দুপুরে ভোলা বালক সরকারি স্কুল মাঠে ভোটের গাড়ি ‌‌‌‘ক্যারাভান’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘প্রত্যেক নাগরিক যেন নিজের ইচ্ছামতো ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন, সে লক্ষ্যেই অন্তর্বর্তী সরকার কাজ করছে। এই সরকার কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষে নয়, এ বিষয়টি সবারই জানা। এটি আমি স্পষ্টভাবে বলে দিচ্ছি।’

তৌহিদ হোসেন বলেন, ১২ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আগামী সংসদ নির্বাচনের বিশেষ গুরুত্ব কয়েকটি কারণে। এর মধ্যে একটি ১৫ বছরে সত্যিকারার্থে কোনো নির্বাচন হয়নি। যদি নির্বাচনের কথা বলা হয়, তাহলে সর্বশেষ নির্বাচন হয়েছে ২০০৮ সালে।

উপদেষ্টা বলেন, ‘৩০ বছরের নিচে যুবকেরা আজ পর্যন্ত ভোট দিতে পারেননি। তাঁরা সত্যিকারার্থে নির্বাচনে ভোট দেওয়ার সুযোগ পাননি। এবার আমাদের লক্ষ্য প্রত্যেকটি মানুষ যাতে ভোট দিতে পারেন, সে জন্য কাজ করছি।’

তিনি আরও বলেন, জুলাই আন্দোলনে যাঁরা জীবন দিয়েছেন, তাঁরা যে দাবির লক্ষ্যে আত্মত্যাগ করেছেন, সে দাবিগুলোর একটি তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। শিগগিরই সে তালিকা জনগণের সামনে উপস্থাপন করা হবে।

ভোলা জেলা প্রশাসক ডা. শামীম রহমান, পুলিশ সুপার মো. শহিদুল্লাহ কাওছারসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকতারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মারা গেছেন ঢাকা ক্যাপিটালসের কোচ, শোকাচ্ছন্ন বিপিএল

তারেক রহমানের পঙ্গু হাসপাতালে যাওয়ার কর্মসূচি বাতিল

আজকের রাশিফল: ভুঁড়িটা বাড়ছে—শরীরের দিকে নজর দিন, প্রাক্তনের মেসেজে রিপ্লাই দিলে বিপদ

কোন স্বার্থে মুসলিমপ্রধান সোমালিল্যান্ডকে সবার আগে স্বীকৃতি দিল ইসরায়েল

ফরিদপুরে জেমসের কনসার্ট পণ্ড, কী ঘটেছিল সেখানে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

কোনো গোষ্ঠী নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করলে সরকার কঠোর হস্তে দমন করবে: ফরিদা আখতার

বাগেরহাট ও ফকিরহাট প্রতিনিধি
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার আজ শনিবার বাগেরহাটের ফকিরহাটে ফলতিতা মৎস্য আড়ৎ মিলনায়তনে মতবিনিময় সভা করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার আজ শনিবার বাগেরহাটের ফকিরহাটে ফলতিতা মৎস্য আড়ৎ মিলনায়তনে মতবিনিময় সভা করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, ‘নির্বাচন বানচাল করা বা না করার চেষ্টা থাকবে। কিন্তু নির্বাচনের সব ব্যবস্থা সরকারের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে। মানুষের নিরাপত্তা দিতে হবে। কোনো গোষ্ঠী যদি নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করে, তা সরকার কঠোর হস্তে দমন করবে।’

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার আজ শনিবার বাগেরহাটের ফকিরহাটে ফলতিতা মৎস্য আড়ৎ পরিদর্শন করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার আজ শনিবার বাগেরহাটের ফকিরহাটে ফলতিতা মৎস্য আড়ৎ পরিদর্শন করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

আজ শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) বেলা ১১টার দিকে বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার ফলতিতা মৎস্য আড়ৎ পরিদর্শন শেষে ফরিদা আখতার এসব কথা বলেন।

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি হত্যা প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, ‘নির্বাচনের কারণে যদি হাদির ওপর আক্রমণ হয়ে থাকে, তাহলে অন্য প্রার্থীরাও শঙ্কায় আছেন। এর সঙ্গে যে গোষ্ঠীই জড়িত থাকুক না কেন, কঠোর হস্তে দমন করা হবে।’

উপদেষ্টা ফরিদা আখতার এর আগে সড়কপথে মৎস্য আড়ৎ মিলনায়তনে খামারি ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। জেলা মৎস্য কর্মকর্তা রাজ কুমার সরকারের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আবদুর রউফ, যুগ্ম সচিব আবু নঈম মুহাম্মদ আবদুছ সবুর, খুলনা অঞ্চলের পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের খুলনা অঞ্চলের পরিচালক গোলাম হায়দার, বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক গোলাম মো. বাতেন, সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল) রাসেদুল ইসলাম রানা, ফকিরহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুমনা আইরিন, উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা শেখ আসাদুল্লাহ, চিতলমারী উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মো. ফেরদৌস আনছারী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সভায় ব্যবসায়ী ও চাষিরা গলদা চিংড়ির পোনা সংকট, নিম্নমানের খাবারসহ চিংড়িশিল্পের নানা সংকটের কথা তুলে ধরেন। মৎস্য উপদেষ্টা চাষিদের সংকটের কথা শোনেন।

এ সময় উপদেষ্টা বলেন, ‘গলদা চিংড়ি চাষে বড় সংকট এখন পোনার সহজলভ্যতা। পোনার নিশ্চয়তা প্রদানের জন্য বন্ধ থাকা বেসরকারি হ্যাচারিগুলো সচল করার উদ্যোগ নেওয়া হবে। সেই সঙ্গে সরকারি যেসব প্রতিষ্ঠানের গলদা উৎপাদনের সক্ষমতা রয়েছে, সেগুলোক আরও আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করার পরামর্শ দেওয়া হবে।’

জেলা প্রশাসক গোলাম মো. বাতেন বলেন, গলদার পোনাসংকট নিরসনে প্রয়োজনে যেসব দেশে চিংড়ির পোনা উৎপাদন হয়, সেখান থেকে আমদানি করা হবে। তবে আইনে নদীর পোনা ধরার যে নিষেধাজ্ঞা, সেটি ভঙ্গ করা যাবে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মারা গেছেন ঢাকা ক্যাপিটালসের কোচ, শোকাচ্ছন্ন বিপিএল

তারেক রহমানের পঙ্গু হাসপাতালে যাওয়ার কর্মসূচি বাতিল

আজকের রাশিফল: ভুঁড়িটা বাড়ছে—শরীরের দিকে নজর দিন, প্রাক্তনের মেসেজে রিপ্লাই দিলে বিপদ

কোন স্বার্থে মুসলিমপ্রধান সোমালিল্যান্ডকে সবার আগে স্বীকৃতি দিল ইসরায়েল

ফরিদপুরে জেমসের কনসার্ট পণ্ড, কী ঘটেছিল সেখানে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মাগুরা-২: রাজনীতি থেকে অবসরের ঘোষণা সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হকের

মহম্মদপুর (মাগুরা) প্রতিনিধি 
আপডেট : ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭: ০০
সাবেক সংসদ সদস্য ও মাগুরা জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি কাজী সালিমুল হক কামাল। ছবি: সংগৃহীত
সাবেক সংসদ সদস্য ও মাগুরা জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি কাজী সালিমুল হক কামাল। ছবি: সংগৃহীত

মাগুরা-২ (মহম্মদপুর-শালিখা-সদরের চার ইউনিয়ন) সংসদীয় আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি কাজী সালিমুল হক কামাল রাজনীতি ও ভবিষ্যতে সব ধরনের নির্বাচন থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন। গতকাল শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত ১২টার দিকে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে এ ঘোষণা দেন তিনি।

ফেসবুক স্ট্যাটাসে কাজী সালিমুল হক কামাল জানান, দীর্ঘ সাত বছর কারাবাস, রাজনৈতিক অবহেলা এবং পরিবারের চরম ভোগান্তির কারণে তিনি আর কোনো নির্বাচনে অংশ নেবেন না এবং সক্রিয় রাজনীতি থেকে নিজেকে সরিয়ে নিচ্ছেন। জীবনের বাকি সময় পরিবার নিয়ে শান্তিতে কাটাতে চান বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

কাজী সালিমুল হক কামাল তাঁর স্ট্যাটাসে স্মৃতিচারণা করেন, ২০০৮ সালের পর তিনি রাজনীতি থেকে দূরে ছিলেন। ২০১৭ সালে একটি মিথ্যা মামলায় কারাবরণ করতে হয় তাঁকে। দীর্ঘ কারাবাস শেষে ২০২৪ সালের জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পর অসুস্থ শরীরে তিনি ২২ আগস্ট কারাগার থেকে মুক্তি পান। মুক্তির দিন নেতা-কর্মীদের ভালোবাসা ও আবেগ তাঁকে গভীরভাবে স্পর্শ করে।

সালিমুল হক কামাল জানান, মুক্তির পর গত ১৬ মাসে মাত্র চারবার মাগুরায় আসেন এবং প্রতিবারই নেতা-কর্মীদের চোখে ভালোবাসার পাশাপাশি দীর্ঘদিনের কষ্ট ও বেদনা দেখেছেন। ১৬ বছর ধরে মাগুরার ত্যাগী নেতা-কর্মীরা মামলা, হামলা, জেল ও নির্যাতন সহ্য করেও বিএনপির পতাকা আঁকড়ে ধরে রেখেছেন বলে উল্লেখ করেন তিনি।

স্ট্যাটাসে দলীয় হাইকমান্ডের প্রতি প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, তৃণমূল নেতা-কর্মীদের আবেগ ও অনুভূতির কোনো মূল্য দেওয়া হচ্ছে না। ফেব্রুয়ারি ২০২৬ সালের নির্বাচনের জন্য মাগুরা-২ আসনে প্রাথমিক প্রার্থী ঘোষণার পর তৃণমূলে যে ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে, তা দীর্ঘদিনের অবহেলা ও বঞ্চনার ফল।

সালিমুল হক কামাল দাবি করেন, মাগুরা-২ আসনের ৫১৩ জন দায়িত্বশীল নেতার মধ্যে ৫০১ জন, ১৯টি ইউনিয়নের ১৮ জন সাবেক চেয়ারম্যান এবং দুজন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান লিখিতভাবে ওই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছিলেন। তবে তৃণমূলের সেই মতামতকে কোনো গুরুত্ব দেওয়া হয়নি।

কাজী সালিমুল হক কামাল আরও বলেন, ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাদের বাদ দিয়ে বিতর্কিতদের পুনর্বাসনের চেষ্টা দলকে আদর্শিকভাবে দুর্বল করছে। এতে ভবিষ্যতে দলের ভিত্তি নড়বড়ে হয়ে পড়তে পারে বলেও তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন।

আড়পাড়ার এক প্রতিবাদ সভার প্রসঙ্গ টেনে কাজী সালিমুল হক কামাল বলেন, তিনি কখনো নিজের জন্য মনোনয়ন চাননি। তৃণমূলের পছন্দ অনুযায়ী অন্য কোনো যোগ্য প্রার্থী দিলেও নেতা-কর্মীরা মেনে নিতেন। তবে দলের বর্তমান অনড় অবস্থান দেখে তিনি উপলব্ধি করেছেন, এখানে তৃণমূলের যুক্তি বা আবেগের কোনো মূল্য নেই।

স্ট্যাটাসের শেষাংশে তিনি নেতা-কর্মীদের সংযত থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ক্ষোভ থাকলেও এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত নয়, যাতে ব্যক্তিগত রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তরুণদের সামনে রাজনীতিতে এগিয়ে যাওয়ার অনেক সুযোগ রয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের ইতি টেনে সালিমুল হক কামাল লেখেন, তারুণ্যের জয় হোক। তবে মনে রাখবেন, কর্মীদের চোখের পানি কখনো দলের জন্য কল্যাণ বয়ে আনে না।

উল্লেখ্য, কাজী সালিমুল হক কামাল ১৯৯৪ সালের বহুল আলোচিত উপনির্বাচনে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরে ২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী শফিকুজ্জামান বাচ্চুকে পরাজিত করে নিজের রাজনৈতিক গ্রহণযোগ্যতা প্রমাণ করেন। ওয়ান-ইলেভেন সময়ে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় তিনি ১০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত হয়ে বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সঙ্গে কারাভোগ করেন। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ২০২৪ সালের ২৩ আগস্ট তিনি কারামুক্ত হন।

সালিমুল হক কামালের অবসর ঘোষণাকে কেন্দ্র করে মাগুরা-২ আসনে বিএনপির রাজনীতিতে নতুন করে আলোচনা ও প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মারা গেছেন ঢাকা ক্যাপিটালসের কোচ, শোকাচ্ছন্ন বিপিএল

তারেক রহমানের পঙ্গু হাসপাতালে যাওয়ার কর্মসূচি বাতিল

আজকের রাশিফল: ভুঁড়িটা বাড়ছে—শরীরের দিকে নজর দিন, প্রাক্তনের মেসেজে রিপ্লাই দিলে বিপদ

কোন স্বার্থে মুসলিমপ্রধান সোমালিল্যান্ডকে সবার আগে স্বীকৃতি দিল ইসরায়েল

ফরিদপুরে জেমসের কনসার্ট পণ্ড, কী ঘটেছিল সেখানে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

যুবকের হাত-পা কেটে দেওয়ার অভিযোগ জামায়াত-শিবিরের কর্মীদের বিরুদ্ধে

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
আপডেট : ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬: ৫৬
যুবকের হাত-পা কেটে দেওয়ার অভিযোগ জামায়াত-শিবিরের কর্মীদের বিরুদ্ধে

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে এক যুবকের দুই হাত ও এক পা জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা কেটে দিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গুরুতর আহত অবস্থায় এই যুবক ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এই ঘটনায় মামলা করা হয়েছে। পুলিশ জামায়াতে ইসলামীর দুই কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে।

আহত যুবকের নাম আবু সুফিয়ান সিজু (২২)। বাবার নাম রবিউল ইসলাম। শিবগঞ্জ উপজেলার বাজিতপুর বাহাদুর মোড়লের টোলা গ্রামে তাঁর বাড়ি। আবু সুফিয়ানের ওপর হামলার ঘটনাটি ঘটে ২৪ ডিসেম্বর শিবগঞ্জ উপজেলার উমরপুর ঘাট এলাকায়। সেদিন আবু সুফিয়ানকে বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে ফেলা হয়েছিল। এরপর দুই হাত ও এক পা কেটে প্রায় বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়।

চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে স্বজনেরা জানান, সুফিয়ানের বাঁ হাতের রগ কেটে গেছে। এই হাত কেটে ফেলতে হবে। ডান হাতটি রক্ষার চেষ্টা করছেন চিকিৎসকেরা। মাথা ও দুই পায়েও গুরুতর জখম আছে। চোখের ওপর হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করা হয়েছিল। কালশিরা পড়ে চোখ এখনো ফুলে আছে।

এই ঘটনায় গ্রেপ্তার দুজন হলেন শাহ আলম ও তাঁর ভাই আব্দুর রাজ্জাক। তাঁদের বাড়ি উপজেলার শ্যামপুর খোঁচপাড়া গ্রামে। তাঁরা জামায়াতে ইসলামীর কর্মী। তাঁদের মধ্যে আব্দুর রাজ্জাক একটি মাদ্রাসার শিক্ষক। উমরপুর ঘাটে তাঁর ওষুধের দোকান আছে। সেই দোকানের সামনেই ঘটনাটি ঘটে। পুলিশ এজাহারভুক্ত এই দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মুখপাত্র ও জরুরি বিভাগের ইনচার্জ শংকর কে বিশ্বাস বলেন, ভর্তির পর রাতেই আবু সুফিয়ানকে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

আহত আবু সুফিয়ানের মা সুফিয়া খাতুন জানান, সুফিয়ানের এক নাবালিকা ভাতিজিকে কিছুদিন আগে এক যুবক অপহরণ করে নিয়ে যায়। এ নিয়ে মামলা করলে পুলিশ মেয়েটিকে উদ্ধার করে। ছেলেটিকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। কিন্তু জামিনে আসার পর থেকে ছেলেটি আবার মেয়েটিকে বিরক্ত করছিল।

এ জন্য ২৪ ডিসেম্বর বিকেলে আবু সুফিয়ান উমরপুর ঘাটে ওই ছেলেটিকে ডেকে তাঁর ভাতিজিকে বিরক্ত না করার জন্য শাসাচ্ছিলেন। তখন বদিউর রহমান, আব্দুর রাজ্জাক, শাহ আলমসহ জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা ওই ছেলেটির পক্ষ নেন এবং আবু সুফিয়ানকে মারতে শুরু করেন। একপর্যায়ে যোগ দেন শিবিরের কর্মী আনোয়ার হোসেন ও নুর আলী। তাঁরা রাজ্জাকের দোকানের সামনে বিদ্যুতের খুঁটিতে সুফিয়ানকে বেঁধে ফেলেন। এরপর লাঠি ও হাতুড়ি দিয়ে তাঁকে পেটানো হয়। পরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁর দুই হাত ও পা কেটে প্রায় বিচ্ছিন্ন করে দেন। খবর পেয়ে আত্মীয়স্বজন ও পরিবারের সদস্যরা সুফিয়ানকে উদ্ধার করে প্রথমে শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যান। সেখান থেকে চিকিৎসকেরা তাঁকে দ্রুত রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। পরে রাতেই তাঁকে ঢাকায় নেওয়া হয়।

সুফিয়া খাতুন বলেন, তাঁর ছেলেকে জামায়াতের মিছিলে ডাকা হয়েছিল। সুফিয়ান তাদের মিছিলে না গিয়ে বিএনপির মিছিলে যেত। এই রাগে তার হাত-পা এভাবে কেটে দেওয়া হতে পারে। তিনি জানান, ঘটনার পর তার ছেলে মুমূর্ষু অবস্থায় পড়ে থাকলেও জামায়াত-শিবিরের ভয়ে কেউ হাসপাতালে নিয়ে যাননি। এমনকি কোনো গাড়িও তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছিল না। পরে তারা অ্যাম্বুলেন্স ডেকে সুফিয়ানকে হাসপাতালে নিয়ে যান।

আহত আবু সুফিয়ান বলেন, জামায়াত-শিবিরের কর্মীদের তিনি বোঝাতে চেষ্টা করেছিলেন, ওই ছেলেটি তাঁর ভাতিজিকে বিরক্ত করছে। কিন্তু কোনো কথা না শুনে জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা তাঁকেই বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে হাত-পা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কেটে দেন।

জামায়াতের কর্মী শাহ আলম ও আব্দুর রাজ্জাক গ্রেপ্তার হওয়ায় তাঁদের সঙ্গে কথা বলা যায়নি। আর অভিযুক্ত শিবিরের কর্মী নূর আলীর মোবাইলে সংযোগ পাওয়া যায়নি। এই ঘটনায় দুজন কর্মী গ্রেপ্তার হলেও জামায়াত-শিবির এই ধরনের ঘটনার সঙ্গে যুক্ত থাকে না বলে দাবি করেছেন উপজেলা জামায়াতের আমির সাদিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘গ্রেপ্তার শাহ আলম ও আব্দুর রাজ্জাক আমাদের কর্মী। তবে জামায়াত-শিবির হাত-পা কাটার রাজনীতি করে না। এই ঘটনায় তাঁরা জড়িত বলেও আমরা মনে করি না। তাই সাংগঠনিক কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’

এ বিষয়ে শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ুন কবির বলেন, ‘ঘটনার পর রাতেই তিনজনের নামে মামলা করেন আবু সুফিয়ানের বাবা। এরপর আমরা দুজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছি। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মারা গেছেন ঢাকা ক্যাপিটালসের কোচ, শোকাচ্ছন্ন বিপিএল

তারেক রহমানের পঙ্গু হাসপাতালে যাওয়ার কর্মসূচি বাতিল

আজকের রাশিফল: ভুঁড়িটা বাড়ছে—শরীরের দিকে নজর দিন, প্রাক্তনের মেসেজে রিপ্লাই দিলে বিপদ

কোন স্বার্থে মুসলিমপ্রধান সোমালিল্যান্ডকে সবার আগে স্বীকৃতি দিল ইসরায়েল

ফরিদপুরে জেমসের কনসার্ট পণ্ড, কী ঘটেছিল সেখানে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত