নোয়া হারারির নিবন্ধ
আজকের পত্রিকা ডেস্ক

রুশ প্রচারণা যেসব দাবি ছড়াচ্ছে ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে, বাস্তবে তার উল্টো ছবি দেখা যাচ্ছে রণক্ষেত্রে। ইউক্রেন এখন পর্যন্ত লড়াইয়ে এগিয়ে। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও এবার স্বীকার করেছেন, ইউক্রেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় ‘লড়াই চালিয়ে যেতে এবং জয়লাভ করতে সক্ষম।’ অথচ চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতেই তিনি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে বলেছিলেন, রাশিয়ার দাবির কাছে নতি স্বীকার করতে হবে, কারণ ইউক্রেনের হাতে কোনো ‘তুরুপের তাস’ নেই।
তবে এই যুদ্ধের শুরু আসলে ২০২২ সালে নয়, ২০১৪ সালে। তখন রাশিয়ার আগ্রাসনের মুখে ইউক্রেন ছিল অসহায়। খুব সহজেই রাশিয়া দখল করে নেয় ক্রিমিয়া ও পূর্ব ইউক্রেনের কিছু অঞ্চল। ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি নতুন করে যুদ্ধ তীব্র হয়। রাশিয়া সর্বাত্মক হামলা চালিয়ে পুরো ইউক্রেনকে দখলে নিয়ে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে এর অস্তিত্ব মুছে দিতে চেয়েছিল।
তখন রাশিয়ার শীর্ষ নেতৃত্বসহ সারা বিশ্বের অনেক পর্যবেক্ষকই ভেবেছিলেন, কয়েক দিনের মধ্যেই রাশিয়া কিয়েভ দখল করবে এবং ইউক্রেনের সেনাবাহিনী গুঁড়িয়ে দেবে। ইউক্রেনের পশ্চিমা মিত্ররাও বিশ্বাস করছিলেন না যে, ইউক্রেন টিকতে পারবে। তাঁরা জেলেনস্কিকে সরিয়ে নিয়ে গিয়ে বিদেশে নির্বাসিত সরকার গঠনের প্রস্তাব দেন।
কিন্তু জেলেনস্কি কিয়েভ ছেড়ে যাননি। তিনি মার্কিনিদের উদ্দেশে বলেছিলেন, ‘আমার দেশ ছাড়ার প্রয়োজন নেই, আমার দরকার গোলাবারুদ।’ এরপর ইউক্রেনীয় সেনারা বিশ্বকে চমকে দেয়। তারা কিয়েভের দিকে রুশ অগ্রযাত্রা ঠেকিয়ে দেয়। এরপর ২০২২ সালের গ্রীষ্মের শেষ দিকে ইউক্রেন পাল্টা আক্রমণে নামে। খারকিভ ও খেরসন অঞ্চলে বড় জয় পায়। রাশিয়া প্রথম পর্যায়ে যেসব এলাকা দখল করেছিল, তার বড় অংশ মুক্ত করে ইউক্রেন।
এরপর থেকে যুদ্ধের মোর্চায় বড় কোনো পরিবর্তন নেই। দুই পক্ষই সীমিত কিছু অগ্রগতি করেছে। রাশিয়া প্রচারণা চালাচ্ছে—তারা ক্রমেই অগ্রসর হচ্ছে। কিন্তু বাস্তবে ২০২২ সালের বসন্তের পর থেকে তারা কিয়েভ, খারকিভ বা খেরসনের মতো কোনো কৌশলগত শহর দখল করতে পারেনি।
২০২৫ সাল পর্যন্ত রাশিয়ার সেনাবাহিনী ২ লাখ থেকে ৩ লাখ জনের মৃত্যু ও আহতের খেসারত দিয়ে মাত্র সীমান্ত এলাকার একটি সরু অংশ নিয়ন্ত্রণে আনতে পেরেছে। নির্ভরযোগ্য হিসেবে যেসব তথ্য পাওয়া যায়, তাতে এই অংশ ইউক্রেনের মোট ভূখণ্ডের মাত্র দশমিক ৬ শতাংশ। চলতি হারে এগোতে থাকলে রাশিয়ার বাকি ইউক্রেন দখলে নিতে ১০০ বছর লাগবে এবং প্রাণ হারাতে হবে কোটি কোটি সেনাকে। বাস্তবতা হলো, ২০২৫ সালের আগস্টে রাশিয়ার দখল ছিল ২০২২ সালের আগস্টের চেয়েও কম।
এই পরিস্থিতি অনেকটা প্রথম বিশ্বযুদ্ধের বিখ্যাত ওয়েস্টার্ন ফ্রন্ট বা পশ্চিম রণাঙ্গনের মতো। তখন হাজার হাজার সৈন্য বলি দিয়ে কয়েক কিলোমিটার ধ্বংসস্তূপ দখল করা হতো। দেশপ্রেমিক সংবাদপত্রগুলো এসব ‘অগ্রগতির’ ছবি ছাপত বড় পরিসরে। কিন্তু মানচিত্রের স্কেলই বলে দিত, আসল অর্জন কতটা সামান্য। ইতিহাসবিদ টবি থ্যাকার লিখেছেন, সেই মানচিত্রগুলোর সূক্ষ্ম ভৌগোলিক তথ্য সংবাদপত্রের দাবি করা ‘অগ্রগতিকেই’ খণ্ডন করত। এখনকার রুশ সেনাদের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা।
ইউক্রেনের জন্য কৌশলগত পিছু হটা যৌক্তিক। এতে সেনাদের জীবন রক্ষা হয়, শক্তি সঞ্চয় করা যায়। আর রুশ সেনারা নগণ্য অগ্রগতির জন্য রক্তক্ষয়ী হামলা চালাতে গিয়ে ধীরে ধীরে ভেঙে পড়ছে। সত্যি বলতে, ইউক্রেন রাশিয়াকে অচলাবস্থায় আটকে দিয়েছে।
অস্ট্রেলিয়ার সাবেক সেনা কর্মকর্তা মেজর জেনারেল মিক রায়ান সম্প্রতি লিখেছেন, ‘ধরুন ২০০৩ সালে মার্কিন সেনারা ইরাক আক্রমণ করার তিন বছর পরও যদি কেবল ২০ শতাংশ ভূখণ্ড দখল করতে পারত, আর তাতে ১০ লাখ সেনা নিহত বা আহত হতো—তাহলে কি একে আমেরিকার জয় বলা যেত?’
জলপথের লড়াইয়েও ইউক্রেন অসাধারণ সাফল্য দেখিয়েছে। ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি কৃষ্ণসাগরে রাশিয়ার পূর্ণ আধিপত্য ছিল। ইউক্রেনের কোনো জবাবদিহির উপায় নেই মনে হচ্ছিল। ওই দিনই বিখ্যাত হয়ে যায় স্নেক আইল্যান্ডের ঘটনা। রাশিয়ার ব্ল্যাক সি ফ্লিটের ফ্ল্যাগশিপ ক্রুজার ‘মস্কোভা’ দ্বীপের ছোট্ট সেনাঘাঁটিকে আত্মসমর্পণের আহ্বান জানায়। উত্তরে ইউক্রেনীয় সেনারা বার্তা পাঠায়—‘রুশ যুদ্ধজাহাজ, তোমাকে গোনায় ধরি না।’
অবশ্য কিছুক্ষণের মধ্যেই রাশিয়া দ্বীপটি দখল করে নেয়। তবে ২০২২ সালের জুন শেষে ইউক্রেন দ্বীপটি পুনর্দখল করে। তত দিনে মস্কোভাসহ অসংখ্য রুশ যুদ্ধজাহাজ কৃষ্ণসাগরের তলায়। ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ব্যবহারে ইউক্রেন নতুন কৌশল দেখায়। এতে রাশিয়ার নৌ-শক্তি ভেঙে পড়ে। রুশ নৌবহরের যা অবশিষ্ট ছিল, তা আশ্রয় নেয় দূরের নিরাপদ বন্দরগুলোতে।
আকাশযুদ্ধেও রাশিয়া ব্যর্থ। তুলনা করলে দেখা যায়, ২০২৫ সালের জুনে মাত্র ১২ দিনের যুদ্ধেই ইসরায়েল ইরানের আকাশ দখল করে নেয়। মাত্র ৩৬ ঘণ্টায়, কোনো যুদ্ধবিমান হারানো ছাড়াই। অথচ রাশিয়া এখনো ইউক্রেনের আকাশ নিয়ন্ত্রণে নিতে পারেনি, বরং ইউক্রেনীয় হামলায় রাশিয়ার কৌশলগত বোমারু বিমানবহর ভীষণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
অসহায় হয়ে রাশিয়া এখন দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন দিয়ে ইউক্রেনের শহরগুলোতে সন্ত্রাস চালাচ্ছে। ইউক্রেন পাল্টা বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুতে আক্রমণ এড়িয়ে চলছে। তবে তারা ড্রোন দিয়ে রাশিয়ার ভেতরে শত শত কিলোমিটার দূরের বিমানঘাঁটি ও তেল শোধনাগারে হামলা চালাচ্ছে।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, এই সাফল্য ইউক্রেন অর্জন করেছে বাইরের কোনো দেশের সরাসরি সামরিক হস্তক্ষেপ ছাড়াই। এখন পর্যন্ত শুধু উত্তর কোরিয়া সরাসরি রাশিয়ার হয়ে যুদ্ধ করছে, তারা ১০ হাজারের বেশি সেনা পাঠিয়েছে। ন্যাটো দেশগুলো ইউক্রেনকে অস্ত্র ও অন্যান্য সহায়তা দিয়েছে বটে, কিন্তু কোনো ন্যাটো সেনা এখনো সরাসরি যুদ্ধে অংশ নেয়নি।
ইতিহাস বলে, ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার হামলার আগে এবং দীর্ঘ সময় পরেও ন্যাটো দেশগুলো ইউক্রেনকে উন্নত ভারী অস্ত্র দিতে অস্বীকৃতি জানায়। এমনকি দেওয়া কিছু অস্ত্র ব্যবহারের ক্ষেত্রেও নানা সীমাবদ্ধতা আরোপ করে। এর কিছু বিধিনিষেধ এখনো বহাল আছে। তাই ২০২২ সালে খারকিভ ও খেরসনে যে বড় জয় ইউক্রেন পায়, তা অর্জিত হয় সীমিত অস্ত্র দিয়েই। যদি শুরু থেকেই পূর্ণ সমর্থন পেত, তবে ইউক্রেন হয়তো ২০২২ সালের শেষেই কিংবা ২০২৩ সালের গ্রীষ্মের আগেই যুদ্ধ জিতে যেত, রাশিয়া তার সেনাবাহিনী ও যুদ্ধ অর্থনীতি পুনর্গঠন করার সুযোগ পেত না।
২০২৫ সালে এসে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষার সবচেয়ে দুর্বল দিকটি রয়েছে তাদের পশ্চিমা বন্ধুদের মানসিকতায়। রাশিয়া আকাশ ও সমুদ্রের নিয়ন্ত্রণ নিতে ব্যর্থ হয়েছে, স্থলযুদ্ধে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা ভাঙতেও পারেনি। তাই রাশিয়ার কৌশল এখন সরাসরি যুদ্ধক্ষেত্রের বাইরে গিয়ে আমেরিকা ও ইউরোপীয়দের মনোবল আক্রমণ করা।
রাশিয়ার প্রচারণায় বলা হচ্ছে, তাদের জয় অনিবার্য। এর মাধ্যমে তারা চায়, আমেরিকা ও ইউরোপের জনগণ আশা হারাক, ইউক্রেনকে সমর্থন দেওয়া বন্ধ করুক এবং তাকে আত্মসমর্পণে বাধ্য করুক। এই ফাঁদে পা দিলে ক্ষতি শুধু ইউক্রেনের হবে না, ন্যাটো দেশগুলোকেও বড় মূল্য দিতে হবে। তাদের বিশ্বাসযোগ্যতা কমে যাবে, আর রাশিয়ার হুমকির বিরুদ্ধে সবচেয়ে কার্যকর প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও দুর্বল হয়ে পড়বে।
রাশিয়া তার সামরিক বাহিনী ও যুদ্ধ অর্থনীতি আরও বড় করছে। এর মধ্যে ইউরোপ নতুন করে অস্ত্র মজুতের চেষ্টা করছে। কিন্তু বাস্তবে রুশ সেনাবাহিনী আর ওয়ারশ, বার্লিন বা প্যারিসের মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছে ইউক্রেনের সেনারা। পোল্যান্ড, জার্মানি ও ফ্রান্সের প্রতিটি সেনাবাহিনীতে গড়ে দুই লাখ করে সৈন্য আছে, যাদের বেশির ভাগ কখনো যুদ্ধে নামেনি। অন্যদিকে ইউক্রেনের সেনাবাহিনীতে প্রায় ১০ লাখ সৈন্য, যাদের বড় অংশই যুদ্ধের অভিজ্ঞ যোদ্ধা।
গত দুই সপ্তাহে রাশিয়ার যুদ্ধবিমান এস্তোনিয়ার আকাশে প্রবেশ করেছে, ড্রোন উড়েছে পোল্যান্ড, রোমানিয়া আর সম্ভবত ডেনমার্কের আকাশেও। এসব ঘটনার পর ইউরোপীয়দের ভাবা উচিত—যদি আগামীকাল রাশিয়া ইউরোপে আক্রমণ করে আর যুক্তরাষ্ট্র লড়াইয়ে না নামে, তবে ইউরোপের সবচেয়ে বড় সামরিক শক্তি হবে ইউক্রেনের সেনাবাহিনী। যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর জন্যও ইউক্রেনের যুদ্ধ অভিজ্ঞতা থেকে শেখার অনেক কিছু আছে। বিশেষ করে ড্রোন যুদ্ধের ক্ষেত্রে ইউক্রেন এখন বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় দেশ। দেশটির উদ্ভাবন, ডেটা ও অভিজ্ঞতা যুক্তরাষ্ট্রকেও উপকৃত করছে। সম্ভবত এই কারণেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সাম্প্রতিক সময়ে ইউক্রেনকে আরও বেশি সমর্থন করছেন। তিনি সব সময় জয়ী পক্ষকে সমর্থন করতে পছন্দ করেন।
যুদ্ধ কীভাবে এগোবে তা বলা অসম্ভব। কারণ, এর ওপর নির্ভর করছে—ভবিষ্যতের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। তবে একটি বিষয়ে ইউক্রেন ইতিমধ্যেই অপরিবর্তনীয় জয় পেয়েছে। যুদ্ধ আসলে রাজনীতিরই অন্য রূপ। বেশি জমি দখল করা, শহর ধ্বংস করা বা শত্রুপক্ষকে হত্যা করাই জয় নয়। জয় হলো রাজনৈতিক লক্ষ্য পূরণ করা। আর এখানে স্পষ্ট যে পুতিন তার প্রধান লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হয়েছেন—ইউক্রেন নামের জাতিকে ধ্বংস করা।
পুতিন তাঁর বহু বক্তৃতা ও লেখায় দাবি করেছেন, ইউক্রেন আসলে কোনো জাতি নয়। ২০২১ সালের জুলাইয়ে প্রকাশিত তার দীর্ঘ প্রবন্ধ ‘রাশিয়ান ও ইউক্রেনীয়দের ঐতিহাসিক ঐক্য নিয়ে’ লেখা হয়েছিল এই যুক্তি দাঁড় করাতে। তাঁর মতে, ইউক্রেন একটি ভুয়া সত্তা, যা বিদেশি শক্তিগুলো রাশিয়াকে দুর্বল করার জন্য বানিয়েছে। এই যুদ্ধ তিনি শুরু করেছিলেন বিশ্বকে প্রমাণ করার জন্য যে ইউক্রেন নামের কোনো জাতি নেই, ইউক্রেনীয়রা আসলে রুশ, আর সুযোগ পেলেই তারা আনন্দের সঙ্গে মিশে যাবে ‘মাদার রাশিয়া’র সঙ্গে।
পুতিনের এই ভ্রান্তি ও উচ্চাকাঙ্ক্ষার কারণে আর কত মানুষ প্রাণ হারাবে, তা কেউ জানে না। তবে যে বিষয়টি সারা দুনিয়ার কাছে একেবারে পরিষ্কার হয়ে গেছে তা হলো—ইউক্রেন একটি প্রকৃত জাতি। আর লাখ লাখ ইউক্রেনীয় রাশিয়ার অংশ হতে চায় না, বরং স্বাধীনতার জন্য প্রাণপণ লড়াই করতে প্রস্তুত। জাতি শুধু মাটির টুকরো বা রক্তের ফোঁটা দিয়ে গঠিত হয় না। জাতি গঠিত হয় মানুষের মনে থাকা গল্প, স্মৃতি আর ছবির মাধ্যমে। আগামী মাসগুলোতে যুদ্ধ যেভাবেই চলুক না কেন, রুশ আগ্রাসনের স্মৃতি, তাদের বর্বরতা আর ইউক্রেনীয়দের ত্যাগ দেশের দেশপ্রেমকে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে টিকিয়ে রাখবে।
ফিন্যান্সিয়াল টাইমস থেকে অনুবাদ করেছেন আজকের পত্রিকার সহসম্পাদক আব্দুর রহমান

রুশ প্রচারণা যেসব দাবি ছড়াচ্ছে ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে, বাস্তবে তার উল্টো ছবি দেখা যাচ্ছে রণক্ষেত্রে। ইউক্রেন এখন পর্যন্ত লড়াইয়ে এগিয়ে। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও এবার স্বীকার করেছেন, ইউক্রেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় ‘লড়াই চালিয়ে যেতে এবং জয়লাভ করতে সক্ষম।’ অথচ চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতেই তিনি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে বলেছিলেন, রাশিয়ার দাবির কাছে নতি স্বীকার করতে হবে, কারণ ইউক্রেনের হাতে কোনো ‘তুরুপের তাস’ নেই।
তবে এই যুদ্ধের শুরু আসলে ২০২২ সালে নয়, ২০১৪ সালে। তখন রাশিয়ার আগ্রাসনের মুখে ইউক্রেন ছিল অসহায়। খুব সহজেই রাশিয়া দখল করে নেয় ক্রিমিয়া ও পূর্ব ইউক্রেনের কিছু অঞ্চল। ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি নতুন করে যুদ্ধ তীব্র হয়। রাশিয়া সর্বাত্মক হামলা চালিয়ে পুরো ইউক্রেনকে দখলে নিয়ে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে এর অস্তিত্ব মুছে দিতে চেয়েছিল।
তখন রাশিয়ার শীর্ষ নেতৃত্বসহ সারা বিশ্বের অনেক পর্যবেক্ষকই ভেবেছিলেন, কয়েক দিনের মধ্যেই রাশিয়া কিয়েভ দখল করবে এবং ইউক্রেনের সেনাবাহিনী গুঁড়িয়ে দেবে। ইউক্রেনের পশ্চিমা মিত্ররাও বিশ্বাস করছিলেন না যে, ইউক্রেন টিকতে পারবে। তাঁরা জেলেনস্কিকে সরিয়ে নিয়ে গিয়ে বিদেশে নির্বাসিত সরকার গঠনের প্রস্তাব দেন।
কিন্তু জেলেনস্কি কিয়েভ ছেড়ে যাননি। তিনি মার্কিনিদের উদ্দেশে বলেছিলেন, ‘আমার দেশ ছাড়ার প্রয়োজন নেই, আমার দরকার গোলাবারুদ।’ এরপর ইউক্রেনীয় সেনারা বিশ্বকে চমকে দেয়। তারা কিয়েভের দিকে রুশ অগ্রযাত্রা ঠেকিয়ে দেয়। এরপর ২০২২ সালের গ্রীষ্মের শেষ দিকে ইউক্রেন পাল্টা আক্রমণে নামে। খারকিভ ও খেরসন অঞ্চলে বড় জয় পায়। রাশিয়া প্রথম পর্যায়ে যেসব এলাকা দখল করেছিল, তার বড় অংশ মুক্ত করে ইউক্রেন।
এরপর থেকে যুদ্ধের মোর্চায় বড় কোনো পরিবর্তন নেই। দুই পক্ষই সীমিত কিছু অগ্রগতি করেছে। রাশিয়া প্রচারণা চালাচ্ছে—তারা ক্রমেই অগ্রসর হচ্ছে। কিন্তু বাস্তবে ২০২২ সালের বসন্তের পর থেকে তারা কিয়েভ, খারকিভ বা খেরসনের মতো কোনো কৌশলগত শহর দখল করতে পারেনি।
২০২৫ সাল পর্যন্ত রাশিয়ার সেনাবাহিনী ২ লাখ থেকে ৩ লাখ জনের মৃত্যু ও আহতের খেসারত দিয়ে মাত্র সীমান্ত এলাকার একটি সরু অংশ নিয়ন্ত্রণে আনতে পেরেছে। নির্ভরযোগ্য হিসেবে যেসব তথ্য পাওয়া যায়, তাতে এই অংশ ইউক্রেনের মোট ভূখণ্ডের মাত্র দশমিক ৬ শতাংশ। চলতি হারে এগোতে থাকলে রাশিয়ার বাকি ইউক্রেন দখলে নিতে ১০০ বছর লাগবে এবং প্রাণ হারাতে হবে কোটি কোটি সেনাকে। বাস্তবতা হলো, ২০২৫ সালের আগস্টে রাশিয়ার দখল ছিল ২০২২ সালের আগস্টের চেয়েও কম।
এই পরিস্থিতি অনেকটা প্রথম বিশ্বযুদ্ধের বিখ্যাত ওয়েস্টার্ন ফ্রন্ট বা পশ্চিম রণাঙ্গনের মতো। তখন হাজার হাজার সৈন্য বলি দিয়ে কয়েক কিলোমিটার ধ্বংসস্তূপ দখল করা হতো। দেশপ্রেমিক সংবাদপত্রগুলো এসব ‘অগ্রগতির’ ছবি ছাপত বড় পরিসরে। কিন্তু মানচিত্রের স্কেলই বলে দিত, আসল অর্জন কতটা সামান্য। ইতিহাসবিদ টবি থ্যাকার লিখেছেন, সেই মানচিত্রগুলোর সূক্ষ্ম ভৌগোলিক তথ্য সংবাদপত্রের দাবি করা ‘অগ্রগতিকেই’ খণ্ডন করত। এখনকার রুশ সেনাদের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা।
ইউক্রেনের জন্য কৌশলগত পিছু হটা যৌক্তিক। এতে সেনাদের জীবন রক্ষা হয়, শক্তি সঞ্চয় করা যায়। আর রুশ সেনারা নগণ্য অগ্রগতির জন্য রক্তক্ষয়ী হামলা চালাতে গিয়ে ধীরে ধীরে ভেঙে পড়ছে। সত্যি বলতে, ইউক্রেন রাশিয়াকে অচলাবস্থায় আটকে দিয়েছে।
অস্ট্রেলিয়ার সাবেক সেনা কর্মকর্তা মেজর জেনারেল মিক রায়ান সম্প্রতি লিখেছেন, ‘ধরুন ২০০৩ সালে মার্কিন সেনারা ইরাক আক্রমণ করার তিন বছর পরও যদি কেবল ২০ শতাংশ ভূখণ্ড দখল করতে পারত, আর তাতে ১০ লাখ সেনা নিহত বা আহত হতো—তাহলে কি একে আমেরিকার জয় বলা যেত?’
জলপথের লড়াইয়েও ইউক্রেন অসাধারণ সাফল্য দেখিয়েছে। ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি কৃষ্ণসাগরে রাশিয়ার পূর্ণ আধিপত্য ছিল। ইউক্রেনের কোনো জবাবদিহির উপায় নেই মনে হচ্ছিল। ওই দিনই বিখ্যাত হয়ে যায় স্নেক আইল্যান্ডের ঘটনা। রাশিয়ার ব্ল্যাক সি ফ্লিটের ফ্ল্যাগশিপ ক্রুজার ‘মস্কোভা’ দ্বীপের ছোট্ট সেনাঘাঁটিকে আত্মসমর্পণের আহ্বান জানায়। উত্তরে ইউক্রেনীয় সেনারা বার্তা পাঠায়—‘রুশ যুদ্ধজাহাজ, তোমাকে গোনায় ধরি না।’
অবশ্য কিছুক্ষণের মধ্যেই রাশিয়া দ্বীপটি দখল করে নেয়। তবে ২০২২ সালের জুন শেষে ইউক্রেন দ্বীপটি পুনর্দখল করে। তত দিনে মস্কোভাসহ অসংখ্য রুশ যুদ্ধজাহাজ কৃষ্ণসাগরের তলায়। ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ব্যবহারে ইউক্রেন নতুন কৌশল দেখায়। এতে রাশিয়ার নৌ-শক্তি ভেঙে পড়ে। রুশ নৌবহরের যা অবশিষ্ট ছিল, তা আশ্রয় নেয় দূরের নিরাপদ বন্দরগুলোতে।
আকাশযুদ্ধেও রাশিয়া ব্যর্থ। তুলনা করলে দেখা যায়, ২০২৫ সালের জুনে মাত্র ১২ দিনের যুদ্ধেই ইসরায়েল ইরানের আকাশ দখল করে নেয়। মাত্র ৩৬ ঘণ্টায়, কোনো যুদ্ধবিমান হারানো ছাড়াই। অথচ রাশিয়া এখনো ইউক্রেনের আকাশ নিয়ন্ত্রণে নিতে পারেনি, বরং ইউক্রেনীয় হামলায় রাশিয়ার কৌশলগত বোমারু বিমানবহর ভীষণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
অসহায় হয়ে রাশিয়া এখন দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন দিয়ে ইউক্রেনের শহরগুলোতে সন্ত্রাস চালাচ্ছে। ইউক্রেন পাল্টা বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুতে আক্রমণ এড়িয়ে চলছে। তবে তারা ড্রোন দিয়ে রাশিয়ার ভেতরে শত শত কিলোমিটার দূরের বিমানঘাঁটি ও তেল শোধনাগারে হামলা চালাচ্ছে।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, এই সাফল্য ইউক্রেন অর্জন করেছে বাইরের কোনো দেশের সরাসরি সামরিক হস্তক্ষেপ ছাড়াই। এখন পর্যন্ত শুধু উত্তর কোরিয়া সরাসরি রাশিয়ার হয়ে যুদ্ধ করছে, তারা ১০ হাজারের বেশি সেনা পাঠিয়েছে। ন্যাটো দেশগুলো ইউক্রেনকে অস্ত্র ও অন্যান্য সহায়তা দিয়েছে বটে, কিন্তু কোনো ন্যাটো সেনা এখনো সরাসরি যুদ্ধে অংশ নেয়নি।
ইতিহাস বলে, ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার হামলার আগে এবং দীর্ঘ সময় পরেও ন্যাটো দেশগুলো ইউক্রেনকে উন্নত ভারী অস্ত্র দিতে অস্বীকৃতি জানায়। এমনকি দেওয়া কিছু অস্ত্র ব্যবহারের ক্ষেত্রেও নানা সীমাবদ্ধতা আরোপ করে। এর কিছু বিধিনিষেধ এখনো বহাল আছে। তাই ২০২২ সালে খারকিভ ও খেরসনে যে বড় জয় ইউক্রেন পায়, তা অর্জিত হয় সীমিত অস্ত্র দিয়েই। যদি শুরু থেকেই পূর্ণ সমর্থন পেত, তবে ইউক্রেন হয়তো ২০২২ সালের শেষেই কিংবা ২০২৩ সালের গ্রীষ্মের আগেই যুদ্ধ জিতে যেত, রাশিয়া তার সেনাবাহিনী ও যুদ্ধ অর্থনীতি পুনর্গঠন করার সুযোগ পেত না।
২০২৫ সালে এসে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষার সবচেয়ে দুর্বল দিকটি রয়েছে তাদের পশ্চিমা বন্ধুদের মানসিকতায়। রাশিয়া আকাশ ও সমুদ্রের নিয়ন্ত্রণ নিতে ব্যর্থ হয়েছে, স্থলযুদ্ধে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা ভাঙতেও পারেনি। তাই রাশিয়ার কৌশল এখন সরাসরি যুদ্ধক্ষেত্রের বাইরে গিয়ে আমেরিকা ও ইউরোপীয়দের মনোবল আক্রমণ করা।
রাশিয়ার প্রচারণায় বলা হচ্ছে, তাদের জয় অনিবার্য। এর মাধ্যমে তারা চায়, আমেরিকা ও ইউরোপের জনগণ আশা হারাক, ইউক্রেনকে সমর্থন দেওয়া বন্ধ করুক এবং তাকে আত্মসমর্পণে বাধ্য করুক। এই ফাঁদে পা দিলে ক্ষতি শুধু ইউক্রেনের হবে না, ন্যাটো দেশগুলোকেও বড় মূল্য দিতে হবে। তাদের বিশ্বাসযোগ্যতা কমে যাবে, আর রাশিয়ার হুমকির বিরুদ্ধে সবচেয়ে কার্যকর প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও দুর্বল হয়ে পড়বে।
রাশিয়া তার সামরিক বাহিনী ও যুদ্ধ অর্থনীতি আরও বড় করছে। এর মধ্যে ইউরোপ নতুন করে অস্ত্র মজুতের চেষ্টা করছে। কিন্তু বাস্তবে রুশ সেনাবাহিনী আর ওয়ারশ, বার্লিন বা প্যারিসের মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছে ইউক্রেনের সেনারা। পোল্যান্ড, জার্মানি ও ফ্রান্সের প্রতিটি সেনাবাহিনীতে গড়ে দুই লাখ করে সৈন্য আছে, যাদের বেশির ভাগ কখনো যুদ্ধে নামেনি। অন্যদিকে ইউক্রেনের সেনাবাহিনীতে প্রায় ১০ লাখ সৈন্য, যাদের বড় অংশই যুদ্ধের অভিজ্ঞ যোদ্ধা।
গত দুই সপ্তাহে রাশিয়ার যুদ্ধবিমান এস্তোনিয়ার আকাশে প্রবেশ করেছে, ড্রোন উড়েছে পোল্যান্ড, রোমানিয়া আর সম্ভবত ডেনমার্কের আকাশেও। এসব ঘটনার পর ইউরোপীয়দের ভাবা উচিত—যদি আগামীকাল রাশিয়া ইউরোপে আক্রমণ করে আর যুক্তরাষ্ট্র লড়াইয়ে না নামে, তবে ইউরোপের সবচেয়ে বড় সামরিক শক্তি হবে ইউক্রেনের সেনাবাহিনী। যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর জন্যও ইউক্রেনের যুদ্ধ অভিজ্ঞতা থেকে শেখার অনেক কিছু আছে। বিশেষ করে ড্রোন যুদ্ধের ক্ষেত্রে ইউক্রেন এখন বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় দেশ। দেশটির উদ্ভাবন, ডেটা ও অভিজ্ঞতা যুক্তরাষ্ট্রকেও উপকৃত করছে। সম্ভবত এই কারণেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সাম্প্রতিক সময়ে ইউক্রেনকে আরও বেশি সমর্থন করছেন। তিনি সব সময় জয়ী পক্ষকে সমর্থন করতে পছন্দ করেন।
যুদ্ধ কীভাবে এগোবে তা বলা অসম্ভব। কারণ, এর ওপর নির্ভর করছে—ভবিষ্যতের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। তবে একটি বিষয়ে ইউক্রেন ইতিমধ্যেই অপরিবর্তনীয় জয় পেয়েছে। যুদ্ধ আসলে রাজনীতিরই অন্য রূপ। বেশি জমি দখল করা, শহর ধ্বংস করা বা শত্রুপক্ষকে হত্যা করাই জয় নয়। জয় হলো রাজনৈতিক লক্ষ্য পূরণ করা। আর এখানে স্পষ্ট যে পুতিন তার প্রধান লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হয়েছেন—ইউক্রেন নামের জাতিকে ধ্বংস করা।
পুতিন তাঁর বহু বক্তৃতা ও লেখায় দাবি করেছেন, ইউক্রেন আসলে কোনো জাতি নয়। ২০২১ সালের জুলাইয়ে প্রকাশিত তার দীর্ঘ প্রবন্ধ ‘রাশিয়ান ও ইউক্রেনীয়দের ঐতিহাসিক ঐক্য নিয়ে’ লেখা হয়েছিল এই যুক্তি দাঁড় করাতে। তাঁর মতে, ইউক্রেন একটি ভুয়া সত্তা, যা বিদেশি শক্তিগুলো রাশিয়াকে দুর্বল করার জন্য বানিয়েছে। এই যুদ্ধ তিনি শুরু করেছিলেন বিশ্বকে প্রমাণ করার জন্য যে ইউক্রেন নামের কোনো জাতি নেই, ইউক্রেনীয়রা আসলে রুশ, আর সুযোগ পেলেই তারা আনন্দের সঙ্গে মিশে যাবে ‘মাদার রাশিয়া’র সঙ্গে।
পুতিনের এই ভ্রান্তি ও উচ্চাকাঙ্ক্ষার কারণে আর কত মানুষ প্রাণ হারাবে, তা কেউ জানে না। তবে যে বিষয়টি সারা দুনিয়ার কাছে একেবারে পরিষ্কার হয়ে গেছে তা হলো—ইউক্রেন একটি প্রকৃত জাতি। আর লাখ লাখ ইউক্রেনীয় রাশিয়ার অংশ হতে চায় না, বরং স্বাধীনতার জন্য প্রাণপণ লড়াই করতে প্রস্তুত। জাতি শুধু মাটির টুকরো বা রক্তের ফোঁটা দিয়ে গঠিত হয় না। জাতি গঠিত হয় মানুষের মনে থাকা গল্প, স্মৃতি আর ছবির মাধ্যমে। আগামী মাসগুলোতে যুদ্ধ যেভাবেই চলুক না কেন, রুশ আগ্রাসনের স্মৃতি, তাদের বর্বরতা আর ইউক্রেনীয়দের ত্যাগ দেশের দেশপ্রেমকে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে টিকিয়ে রাখবে।
ফিন্যান্সিয়াল টাইমস থেকে অনুবাদ করেছেন আজকের পত্রিকার সহসম্পাদক আব্দুর রহমান

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দূতদের মধ্যে ইউক্রেন শান্তি চুক্তি নিয়ে আলোচনা হলেও প্রকাশ্যে কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি। পুতিনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ইউরি উশাকভ, এ প্রসঙ্গে বলেছিলেন যে অমীমাংসিত ‘আঞ্চলিক সমস্যাই’ মূল বাধা। আর এই অঞ্চল আর কোনোটিই নয়, দোনেৎস্ক।
২১ ঘণ্টা আগে
বিশ্বজুড়ে দীর্ঘদিন ধরেই প্রশ্ন উঠে আসছে—‘যদি বিলিয়নিয়ারদের সম্পদ সীমিত করা হয়, অথবা এই শ্রেণিটিকেই সম্পূর্ণ বাতিল করা হয়, তবে কী ঘটবে?’ পশ্চিমা দেশগুলোতে চরম ধনী বা বিলিয়নিয়ারদের সংখ্যা ও প্রভাব বাড়তে থাকায় এখন এই প্রশ্ন আরও জোরালো হয়েছে।
১ দিন আগে
জাপানের ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর গত অক্টোবরে দেশটির প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন সানায়ে তাকাইচি। এরপরই তিনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচিত হন জাপানের নতুন ‘আয়রন লেডি’ বা লৌহমানবী’ হিসেবে।
২ দিন আগে
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বৈঠককে ঘিরে দিল্লিতে শুরু হয়েছে কূটনৈতিক প্রস্তুতি। চলমান ইউক্রেন যুদ্ধ, যুক্তরাষ্ট্রের চাপ এবং জ্বালানির বাজারে অস্থিরতার মধ্যেই এই শীর্ষ সম্মেলন হতে যাচ্ছে। অর্থনীতি, প্রতিরক্ষা এবং জ্বালানি—এই তিনটি খাত আলোচনার...
২ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দূতদের মধ্যে ইউক্রেন শান্তি চুক্তি নিয়ে আলোচনা হলেও প্রকাশ্যে কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি। পুতিনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ইউরি উশাকভ, এ প্রসঙ্গে বলেছিলেন যে অমীমাংসিত ‘আঞ্চলিক সমস্যাই’ মূল বাধা। আর এই অঞ্চল আর কোনোটিই নয়, দোনেৎস্ক।
উশাকভ মূলত ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দোনেৎস্কের সম্পূর্ণ এলাকার ওপর রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণ দাবির কথাই বলেছিলেন। পুতিন ইউক্রেনে হাজার হাজার সৈন্য পাঠানোর প্রায় ৪ বছর পরও এবং দোনেৎস্কে রাশিয়া সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদী বিদ্রোহের এক দশকেরও বেশি সময় পর অঞ্চলটির কিছু অংশ এখনো ইউক্রেনের হাতে আছে।
প্রায় সব দেশই দোনেৎস্ককে ইউক্রেনের অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। কিন্তু এটি ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের চারটি অঞ্চলের মধ্যে একটি, যা মস্কো ২০২২ সালে একটি গণভোটের পর সংযুক্ত করার কথা ঘোষণা করে। কিয়েভ ও পশ্চিমা দেশগুলো সেই গণভোটকে ‘প্রহসন’ বলে বাতিল করে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ফক্স নিউজকে বলেছিলেন, যুদ্ধটি এখন দোনেৎস্কের সেই ২০ শতাংশ বা ৫ হাজার বর্গকিলোমিটারের এলাকা নিয়ে, যা রাশিয়া নিয়ন্ত্রণ করে না কিন্তু চায়।
পুতিন ২০২২ সালে ইউক্রেনে সৈন্য পাঠানোর সময় বলেছিলেন, তাঁর লক্ষ্য হলো ‘গত আট বছর ধরে যারা ভয়ভীতি ও গণহত্যার শিকার হয়েছেন...সেই মানুষগুলোকে রক্ষা করা।’ ইউক্রেন এবং তার মিত্ররা বলেছিল, পুতিনের এই দাবি ঔপনিবেশিক ধাঁচের এবং এলাকা দখলের জন্য একটি মিথ্যা অজুহাত মাত্র।
পুতিনের এই দাবি মূলত দোনেৎস্ক এবং লুহানস্ক অঞ্চলে রাশিয়া সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিরুদ্ধে ইউক্রেনের লড়াইয়ের দিকে ইঙ্গিত করে, যারা ২০১৪ সালে ইউক্রেনীয় সরকারি নিয়ন্ত্রণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে কিছু এলাকা দখল করেছিল। পূর্ব ইউক্রেনে এর পরের সংঘর্ষে উভয় পক্ষই শহর ও বেসামরিক নাগরিকদের ওপর গোলাবর্ষণের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেছিল। মস্কো এই অঞ্চলের বিশাল রুশভাষী জনসংখ্যাকে উদ্ধৃত করে বলেছিল যে,২০২২ সালে হস্তক্ষেপ করা তাদের নৈতিক কর্তব্য।
কিয়েভ বলেছিল, ২০১৪ সালে ইউক্রেনের আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষায় শক্তি দিয়ে জবাব দেওয়া ছাড়া তাদের আর কোনো উপায় ছিল না এবং তারাও বিচ্ছিন্নতাবাদী বাহিনীর বিরুদ্ধে শহর ও বেসামরিক নাগরিকদের ওপর গোলাবর্ষণের অভিযোগ এনেছিল। জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, ২০১৪ সাল থেকে ২০২২ সালের শুরু পর্যন্ত ইউক্রেনীয় সরকারি বাহিনী এবং বিচ্ছিন্নতাবাদীদের মধ্যে সংঘাতে উভয় পক্ষে ৩ হাজার ১০৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং ৯ হাজার বেসামরিক নাগরিক আহত হয়েছিলেন।
দোনেৎস্কের বাকি যে অংশটি রাশিয়া চায়, তার মধ্যে রয়েছে স্লোভিয়ানস্ক এবং ক্রামাতোরস্ক—দুটি ‘দুর্গনগরী’ যা ২০১৪ সাল থেকে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করে আসছে। এই শহরগুলো ইউক্রেনের বাকি অঞ্চল রক্ষার জন্য কিয়েভের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ দোনেৎস্কের পশ্চিমের ভূমি অনেকটাই সমতল এবং বিশাল খোলা মাঠ; যা রাশিয়াকে দোনেৎস্কের বাইরে অগ্রসর হতে এবং দিনিপ্রো নদীর পূর্ব তীর পর্যন্ত এলাকা দখল করার পথ সহজ করে দেবে।
শহরগুলো পরিখা, ট্যাংক-বিধ্বংসী বাধা, বাংকার এবং মাইনক্ষেত্রসহ অত্যন্ত সুরক্ষিত প্রতিরক্ষা লাইনের অংশ। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, গণভোট ছাড়া দোনেৎস্কের বাকি অংশ রাশিয়ার হাতে তুলে দেওয়া অবৈধ হবে এবং তা ভবিষ্যতে ইউক্রেনের গভীরে আক্রমণের জন্য রাশিয়াকে একটি পথ খুলে দেবে।
কিয়েভের আশঙ্কা, যদি তারা দোনেৎস্কের বাকি অংশ ছেড়ে দেয়, তবে রাশিয়া আবার অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হবে এবং একসময় দোনেৎস্ক ব্যবহার করে পশ্চিম দিকে আক্রমণ চালাবে।
উভয় পক্ষই দোনেৎস্ককে কেন্দ্র করে যুদ্ধে ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছে এবং প্রচুর অর্থ ও সরঞ্জাম ব্যয় করেছে। এর মধ্যে বাখমুত শহরের লড়াইও রয়েছে। যেখানে রাশিয়া হাজার হাজার দণ্ডিত অপরাধীকে ভাড়াটে সৈন্যে পরিণত করে রণক্ষেত্রে নামিয়েছিল। এ কারণে, দোনেৎস্ক উভয় দেশের জনমানসে আরও বেশি গুরুত্ব পেয়েছে। ফলে কারও পক্ষে তাদের অবস্থান পরিবর্তন করা কঠিন।
ইউক্রেন চায় না যে, রাশিয়া যুদ্ধক্ষেত্রে জয় করতে ব্যর্থ হওয়া ভূখণ্ডকে উপহার হিসেবে পাক এবং জেলেনস্কি বলেছেন, যে যুদ্ধ রাশিয়া শুরু করেছে, তার জন্য তাদের পুরস্কৃত করা উচিত নয়। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অব ওয়ার অক্টোবর মাসে বলেছিল, রাশিয়ার অগ্রগতির হার দেখে মনে হয় না যে তারা খুব শিগগিরই দোনেৎস্কের বাকি অংশ দখল করতে চলেছে। তবে ‘রাশিয়ার অগ্রগতির একটি অপরিবর্তনীয় হার ধরে নিলে’ তারা ২০২৭ সালের আগস্টের মধ্যে তা নিতে পারে।
রাশিয়ার কমান্ডাররা অবশ্য আরও বেশি আশাবাদী। জেনারেল স্টাফের প্রধান ভ্যালেরি গেরাসিমভ রোববার পুতিনকে বলেছেন, মস্কোর বাহিনী পুরো ফ্রন্ট লাইন বরাবর অগ্রসর হচ্ছে এবং দনবাসের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার জন্য কাজ করছে।
দোনেৎস্ক বন্দর, রেলপথ এবং অন্যান্য ভারী শিল্পের কেন্দ্র। এটি একসময় ইউক্রেনের কয়লা, পরিশোধিত ইস্পাত, কোক, ঢালাই লোহা এবং ইস্পাত উৎপাদনের অর্ধেকেরও বেশি সরবরাহ করত, তবে যুদ্ধের কারণে অনেক খনি ও কারখানা ধ্বংস হয়ে গেছে। এ ছাড়া, দোনেৎস্কে বিরল মৃত্তিকা, টাইটানিয়াম এবং জিরকোনিয়াম রয়েছে—যা এটিকে নিয়ন্ত্রণকারী পক্ষের জন্য আয়ের উৎস।
দোনেৎস্কের ভাগ্য পুতিন এবং জেলেনস্কি উভয়ের ঐতিহাসিক উত্তরাধিকারকে প্রভাবিত করতে পারে। পুতিন নিজেকে জাতিগত রুশদের রক্ষক হিসেবে তুলে ধরেছেন, তারা যেখানেই থাকুক না কেন। পুরো দোনেৎস্ককে সুরক্ষিত করা এই বক্তব্যের মূল কেন্দ্রবিন্দু। জেলেনস্কি ২০১৯ সালে পূর্ব ইউক্রেনের যুদ্ধ অবসান ঘটানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিলেন। ২০২২ সাল থেকে তিনি অনেক বড়, বৈরী প্রতিবেশীর মুখে অস্ত্র এবং সংখ্যায় কম ইউক্রেনের এক দৃঢ় রক্ষক হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছেন।
লড়াই না করে দোনেৎস্ক ছেড়ে দেওয়া—যেখানে অন্তত আড়াই লাখ ইউক্রেনীয় বাস করে—ইউক্রেনীয়দের কাছে বিশ্বাসঘাতকতা হিসেবে দেখা হতে পারে, যাদের অনেকেই যুদ্ধক্ষেত্রে স্বজন হারিয়েছেন। কিয়েভ ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব সোসিওলজির সাম্প্রতিক এক জরিপ অনুসারে, ইউক্রেনীয়দের একটি সংকীর্ণ সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ এখনো আঞ্চলিক ছাড়ের বিরোধিতা করে।
জেলেনস্কিসহ ইউক্রেনের কর্মকর্তারা যেকোনো শান্তি চুক্তির অধীনে কিয়েভের নিয়ন্ত্রণে থাকা ভূমি ছাড়ার সম্ভাবনা প্রত্যাখ্যান করেছেন। জেলেনস্কি বলেন, তাঁর ভূখণ্ড ছেড়ে দেওয়ার কোনো ম্যান্ডেট নেই এবং রাষ্ট্রের ভূমি ব্যক্তিগত সম্পত্তির মতো কেনা-বেচা করা যায় না। ইউক্রেনের সংবিধান অনুসারে, আঞ্চলিক পরিবর্তন অবশ্যই একটি গণভোটের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করতে হবে, যা ইউক্রেনের অন্তত দুই-তৃতীয়াংশ অর্থাৎ, অন্তত ৩০ লাখ ইউক্রেনীয় ভোটারের স্বাক্ষর থাকলে আয়োজন করা যেতে পারে।
তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই গণভোটের বিষয়টির সমালোচনা করেছেন এবং তিনি বলেছিলেন, ‘কিছু ভূমি অদল-বদল হবে।’ এখন ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের আলোচনা মূলত এই দোনেৎস্কের নিয়ন্ত্রণ কার হাতে যাবে সেটাই নিয়েই থমকে আছে।
রয়টার্স থেকে পরিমার্জিত

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দূতদের মধ্যে ইউক্রেন শান্তি চুক্তি নিয়ে আলোচনা হলেও প্রকাশ্যে কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি। পুতিনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ইউরি উশাকভ, এ প্রসঙ্গে বলেছিলেন যে অমীমাংসিত ‘আঞ্চলিক সমস্যাই’ মূল বাধা। আর এই অঞ্চল আর কোনোটিই নয়, দোনেৎস্ক।
উশাকভ মূলত ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দোনেৎস্কের সম্পূর্ণ এলাকার ওপর রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণ দাবির কথাই বলেছিলেন। পুতিন ইউক্রেনে হাজার হাজার সৈন্য পাঠানোর প্রায় ৪ বছর পরও এবং দোনেৎস্কে রাশিয়া সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদী বিদ্রোহের এক দশকেরও বেশি সময় পর অঞ্চলটির কিছু অংশ এখনো ইউক্রেনের হাতে আছে।
প্রায় সব দেশই দোনেৎস্ককে ইউক্রেনের অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। কিন্তু এটি ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের চারটি অঞ্চলের মধ্যে একটি, যা মস্কো ২০২২ সালে একটি গণভোটের পর সংযুক্ত করার কথা ঘোষণা করে। কিয়েভ ও পশ্চিমা দেশগুলো সেই গণভোটকে ‘প্রহসন’ বলে বাতিল করে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ফক্স নিউজকে বলেছিলেন, যুদ্ধটি এখন দোনেৎস্কের সেই ২০ শতাংশ বা ৫ হাজার বর্গকিলোমিটারের এলাকা নিয়ে, যা রাশিয়া নিয়ন্ত্রণ করে না কিন্তু চায়।
পুতিন ২০২২ সালে ইউক্রেনে সৈন্য পাঠানোর সময় বলেছিলেন, তাঁর লক্ষ্য হলো ‘গত আট বছর ধরে যারা ভয়ভীতি ও গণহত্যার শিকার হয়েছেন...সেই মানুষগুলোকে রক্ষা করা।’ ইউক্রেন এবং তার মিত্ররা বলেছিল, পুতিনের এই দাবি ঔপনিবেশিক ধাঁচের এবং এলাকা দখলের জন্য একটি মিথ্যা অজুহাত মাত্র।
পুতিনের এই দাবি মূলত দোনেৎস্ক এবং লুহানস্ক অঞ্চলে রাশিয়া সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিরুদ্ধে ইউক্রেনের লড়াইয়ের দিকে ইঙ্গিত করে, যারা ২০১৪ সালে ইউক্রেনীয় সরকারি নিয়ন্ত্রণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে কিছু এলাকা দখল করেছিল। পূর্ব ইউক্রেনে এর পরের সংঘর্ষে উভয় পক্ষই শহর ও বেসামরিক নাগরিকদের ওপর গোলাবর্ষণের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেছিল। মস্কো এই অঞ্চলের বিশাল রুশভাষী জনসংখ্যাকে উদ্ধৃত করে বলেছিল যে,২০২২ সালে হস্তক্ষেপ করা তাদের নৈতিক কর্তব্য।
কিয়েভ বলেছিল, ২০১৪ সালে ইউক্রেনের আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষায় শক্তি দিয়ে জবাব দেওয়া ছাড়া তাদের আর কোনো উপায় ছিল না এবং তারাও বিচ্ছিন্নতাবাদী বাহিনীর বিরুদ্ধে শহর ও বেসামরিক নাগরিকদের ওপর গোলাবর্ষণের অভিযোগ এনেছিল। জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, ২০১৪ সাল থেকে ২০২২ সালের শুরু পর্যন্ত ইউক্রেনীয় সরকারি বাহিনী এবং বিচ্ছিন্নতাবাদীদের মধ্যে সংঘাতে উভয় পক্ষে ৩ হাজার ১০৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং ৯ হাজার বেসামরিক নাগরিক আহত হয়েছিলেন।
দোনেৎস্কের বাকি যে অংশটি রাশিয়া চায়, তার মধ্যে রয়েছে স্লোভিয়ানস্ক এবং ক্রামাতোরস্ক—দুটি ‘দুর্গনগরী’ যা ২০১৪ সাল থেকে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করে আসছে। এই শহরগুলো ইউক্রেনের বাকি অঞ্চল রক্ষার জন্য কিয়েভের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ দোনেৎস্কের পশ্চিমের ভূমি অনেকটাই সমতল এবং বিশাল খোলা মাঠ; যা রাশিয়াকে দোনেৎস্কের বাইরে অগ্রসর হতে এবং দিনিপ্রো নদীর পূর্ব তীর পর্যন্ত এলাকা দখল করার পথ সহজ করে দেবে।
শহরগুলো পরিখা, ট্যাংক-বিধ্বংসী বাধা, বাংকার এবং মাইনক্ষেত্রসহ অত্যন্ত সুরক্ষিত প্রতিরক্ষা লাইনের অংশ। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, গণভোট ছাড়া দোনেৎস্কের বাকি অংশ রাশিয়ার হাতে তুলে দেওয়া অবৈধ হবে এবং তা ভবিষ্যতে ইউক্রেনের গভীরে আক্রমণের জন্য রাশিয়াকে একটি পথ খুলে দেবে।
কিয়েভের আশঙ্কা, যদি তারা দোনেৎস্কের বাকি অংশ ছেড়ে দেয়, তবে রাশিয়া আবার অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হবে এবং একসময় দোনেৎস্ক ব্যবহার করে পশ্চিম দিকে আক্রমণ চালাবে।
উভয় পক্ষই দোনেৎস্ককে কেন্দ্র করে যুদ্ধে ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছে এবং প্রচুর অর্থ ও সরঞ্জাম ব্যয় করেছে। এর মধ্যে বাখমুত শহরের লড়াইও রয়েছে। যেখানে রাশিয়া হাজার হাজার দণ্ডিত অপরাধীকে ভাড়াটে সৈন্যে পরিণত করে রণক্ষেত্রে নামিয়েছিল। এ কারণে, দোনেৎস্ক উভয় দেশের জনমানসে আরও বেশি গুরুত্ব পেয়েছে। ফলে কারও পক্ষে তাদের অবস্থান পরিবর্তন করা কঠিন।
ইউক্রেন চায় না যে, রাশিয়া যুদ্ধক্ষেত্রে জয় করতে ব্যর্থ হওয়া ভূখণ্ডকে উপহার হিসেবে পাক এবং জেলেনস্কি বলেছেন, যে যুদ্ধ রাশিয়া শুরু করেছে, তার জন্য তাদের পুরস্কৃত করা উচিত নয়। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অব ওয়ার অক্টোবর মাসে বলেছিল, রাশিয়ার অগ্রগতির হার দেখে মনে হয় না যে তারা খুব শিগগিরই দোনেৎস্কের বাকি অংশ দখল করতে চলেছে। তবে ‘রাশিয়ার অগ্রগতির একটি অপরিবর্তনীয় হার ধরে নিলে’ তারা ২০২৭ সালের আগস্টের মধ্যে তা নিতে পারে।
রাশিয়ার কমান্ডাররা অবশ্য আরও বেশি আশাবাদী। জেনারেল স্টাফের প্রধান ভ্যালেরি গেরাসিমভ রোববার পুতিনকে বলেছেন, মস্কোর বাহিনী পুরো ফ্রন্ট লাইন বরাবর অগ্রসর হচ্ছে এবং দনবাসের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার জন্য কাজ করছে।
দোনেৎস্ক বন্দর, রেলপথ এবং অন্যান্য ভারী শিল্পের কেন্দ্র। এটি একসময় ইউক্রেনের কয়লা, পরিশোধিত ইস্পাত, কোক, ঢালাই লোহা এবং ইস্পাত উৎপাদনের অর্ধেকেরও বেশি সরবরাহ করত, তবে যুদ্ধের কারণে অনেক খনি ও কারখানা ধ্বংস হয়ে গেছে। এ ছাড়া, দোনেৎস্কে বিরল মৃত্তিকা, টাইটানিয়াম এবং জিরকোনিয়াম রয়েছে—যা এটিকে নিয়ন্ত্রণকারী পক্ষের জন্য আয়ের উৎস।
দোনেৎস্কের ভাগ্য পুতিন এবং জেলেনস্কি উভয়ের ঐতিহাসিক উত্তরাধিকারকে প্রভাবিত করতে পারে। পুতিন নিজেকে জাতিগত রুশদের রক্ষক হিসেবে তুলে ধরেছেন, তারা যেখানেই থাকুক না কেন। পুরো দোনেৎস্ককে সুরক্ষিত করা এই বক্তব্যের মূল কেন্দ্রবিন্দু। জেলেনস্কি ২০১৯ সালে পূর্ব ইউক্রেনের যুদ্ধ অবসান ঘটানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিলেন। ২০২২ সাল থেকে তিনি অনেক বড়, বৈরী প্রতিবেশীর মুখে অস্ত্র এবং সংখ্যায় কম ইউক্রেনের এক দৃঢ় রক্ষক হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছেন।
লড়াই না করে দোনেৎস্ক ছেড়ে দেওয়া—যেখানে অন্তত আড়াই লাখ ইউক্রেনীয় বাস করে—ইউক্রেনীয়দের কাছে বিশ্বাসঘাতকতা হিসেবে দেখা হতে পারে, যাদের অনেকেই যুদ্ধক্ষেত্রে স্বজন হারিয়েছেন। কিয়েভ ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব সোসিওলজির সাম্প্রতিক এক জরিপ অনুসারে, ইউক্রেনীয়দের একটি সংকীর্ণ সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ এখনো আঞ্চলিক ছাড়ের বিরোধিতা করে।
জেলেনস্কিসহ ইউক্রেনের কর্মকর্তারা যেকোনো শান্তি চুক্তির অধীনে কিয়েভের নিয়ন্ত্রণে থাকা ভূমি ছাড়ার সম্ভাবনা প্রত্যাখ্যান করেছেন। জেলেনস্কি বলেন, তাঁর ভূখণ্ড ছেড়ে দেওয়ার কোনো ম্যান্ডেট নেই এবং রাষ্ট্রের ভূমি ব্যক্তিগত সম্পত্তির মতো কেনা-বেচা করা যায় না। ইউক্রেনের সংবিধান অনুসারে, আঞ্চলিক পরিবর্তন অবশ্যই একটি গণভোটের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করতে হবে, যা ইউক্রেনের অন্তত দুই-তৃতীয়াংশ অর্থাৎ, অন্তত ৩০ লাখ ইউক্রেনীয় ভোটারের স্বাক্ষর থাকলে আয়োজন করা যেতে পারে।
তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই গণভোটের বিষয়টির সমালোচনা করেছেন এবং তিনি বলেছিলেন, ‘কিছু ভূমি অদল-বদল হবে।’ এখন ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের আলোচনা মূলত এই দোনেৎস্কের নিয়ন্ত্রণ কার হাতে যাবে সেটাই নিয়েই থমকে আছে।
রয়টার্স থেকে পরিমার্জিত

রুশ প্রচারণা যেসব দাবি ছড়াচ্ছে ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে বাস্তবে তার উল্টো ছবি দেখা যাচ্ছে রণক্ষেত্রে। ইউক্রেন এখন পর্যন্ত লড়াইয়ে এগিয়ে। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও এবার স্বীকার করেছেন, ইউক্রেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় ‘লড়াই চালিয়ে যেতে এবং জয়লাভ করতে সক্ষম।’
০৭ অক্টোবর ২০২৫
বিশ্বজুড়ে দীর্ঘদিন ধরেই প্রশ্ন উঠে আসছে—‘যদি বিলিয়নিয়ারদের সম্পদ সীমিত করা হয়, অথবা এই শ্রেণিটিকেই সম্পূর্ণ বাতিল করা হয়, তবে কী ঘটবে?’ পশ্চিমা দেশগুলোতে চরম ধনী বা বিলিয়নিয়ারদের সংখ্যা ও প্রভাব বাড়তে থাকায় এখন এই প্রশ্ন আরও জোরালো হয়েছে।
১ দিন আগে
জাপানের ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর গত অক্টোবরে দেশটির প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন সানায়ে তাকাইচি। এরপরই তিনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচিত হন জাপানের নতুন ‘আয়রন লেডি’ বা লৌহমানবী’ হিসেবে।
২ দিন আগে
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বৈঠককে ঘিরে দিল্লিতে শুরু হয়েছে কূটনৈতিক প্রস্তুতি। চলমান ইউক্রেন যুদ্ধ, যুক্তরাষ্ট্রের চাপ এবং জ্বালানির বাজারে অস্থিরতার মধ্যেই এই শীর্ষ সম্মেলন হতে যাচ্ছে। অর্থনীতি, প্রতিরক্ষা এবং জ্বালানি—এই তিনটি খাত আলোচনার...
২ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

বিশ্বজুড়ে দীর্ঘদিন ধরেই প্রশ্ন উঠে আসছে—‘যদি বিলিয়নিয়ারদের সম্পদ সীমিত করা হয়, অথবা এই শ্রেণিটিকেই সম্পূর্ণ বাতিল করা হয়, তবে কী ঘটবে?’ পশ্চিমা দেশগুলোতে চরম ধনী বা বিলিয়নিয়ারদের সংখ্যা ও প্রভাব বাড়তে থাকায় এখন এই প্রশ্ন আরও জোরালো হয়েছে।
সম্প্রতি টেসলার মালিক ইলন মাস্ক গত নভেম্বরে এমন এক পে-অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন, যা তাঁকে একজন ট্রিলিয়ন ডলারের মালিকে পরিণত করতে পারে। তিনি ইতিমধ্যেই বিশ্বের শীর্ষ ধনী। যদি তিনি প্রস্তাবিত পূর্ণ প্যাকেজটি পান, তাহলে তিনি বিশ্বের ইতিহাসে সর্বকালের সেরা ধনী ব্যক্তিতে পরিণত হবেন। ফোর্বসের হিসেবে বর্তমানে বিশ্বের ৩ হাজার ২৮ জন বিলিয়নিয়ার আছেন। তাঁদের মোট সম্পদ প্রায় ১৬.১ ট্রিলিয়ন ডলার। অন্যদিকে পৃথিবীতে এখনো প্রায় ৮৩ কোটি ১০ লাখ মানুষ দৈনিক তিন ডলারের নিচে আয় করে চরম দারিদ্র্যে দিন কাটান।
বিশ্লেষকদের মতে, বিশ্বের এই বিপুল সম্পদ বৈষম্য শুধু অর্থনীতিকে নয়, রাজনীতি, মিডিয়া ও চিন্তাকেও প্রভাবিত করে। অনেকেই মনে করেন, বিলিয়নিয়ারদের সম্পদ ও ক্ষমতা বিশ্বব্যবস্থাকে ‘অতি ধনীদের স্বার্থে’ পুনর্গঠন করছে। আবার অন্য একটি মত বলছে, বিলিয়নিয়ারেরা না থাকলে উদ্ভাবন, প্রযুক্তি ও অগ্রগতি থমকে যাবে। কারণ বৃহৎ বিনিয়োগই গড়ে তোলে নতুন সমাধান।
উদ্ভাবন কি থেমে যাবে
অ্যাডাম স্মিথ ইনস্টিটিউটের ম্যাক্সওয়েল মার্লোর মতে, বিলিয়নিয়ারদের বিলোপ করা হলে পশ্চিমা অর্থনীতি বিপর্যস্ত হবে। তাঁর দাবি, অধিকাংশ বিলিয়নিয়ার তাঁদের সম্পদের মালিক হয়েছেন সমাজের চাহিদামতো পণ্য ও প্রযুক্তি তৈরি করে। তাঁদের সম্পদ মূলত কোম্পানির শেয়ার, মেধাস্বত্ব অথবা সম্পত্তি—যা দিনে দিনে ওঠানামা করে। তাঁর মতে, এই ধনী ব্যক্তিদের প্রণোদনাই উদ্ভাবনে গতি আনে; তা না থাকলে উন্নয়ন থেমে যাবে।
যদি ন্যায্যভাবে সম্পদ বণ্টিত হতো
গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ট্যাক্স জাস্টিসের ডেরেজে আলেমায়েহুর মতে, শুধু বিলিয়নিয়ার কর আরোপ নয়—প্রশ্ন হচ্ছে, সেই কর কোথায় যাবে। দক্ষিণ বিশ্বের শ্রম ও সম্পদ থেকেই যে বিপুল সম্পদ তৈরি হয়, তাই তার ন্যায্য অংশ দক্ষিণেই ফিরে আসা উচিত। তিনি বলেন, বৈষম্য কমাতে শুধু অর্থ হস্তান্তর নয়, বৈশ্বিক আর্থিক কাঠামো পুনর্গঠন জরুরি; নইলে বৈষম্য আরও গভীর হবে।
বিধিনিষেধ কি বদলাতে হবে
ডেনিসন ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ফাদেল কাবুব বলেন, বিলিয়নিয়ারেরা আসলে ব্যর্থ নীতির ফল। সিস্টেম যেভাবে সাজানো, তাতে সম্পদ একদিকে কেন্দ্রীভূত হওয়াই স্বাভাবিক। তাঁর মতে, বিলিয়নিয়ার শ্রেণিকে বিলোপ করতে হলে আধুনিক অ্যান্টি ট্রাস্ট ও কঠোর বাজার নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন।
মিডিয়ার ওপর প্রভাব কমবে
গোল্ডস্মিথস বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডেস ফ্রিডম্যান মনে করেন, বিলিয়নিয়ারেরা পুরো মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম কিনে ফেলতে সক্ষম হওয়ায় তথ্যপ্রবাহ তাঁদের স্বার্থেই নিয়ন্ত্রিত হয়। যেমন—বেজোস বা ইলন মাস্কের গণমাধ্যম মালিকানা এই অঙ্গনের স্বাধীনতাকে দীর্ঘমেয়াদে প্রশ্নবিদ্ধ করে। তাই বিলিয়নিয়ার প্রভাব সীমিত হলে তথ্যের উৎসও আরও স্বাধীন হতে পারে।
চরম সম্পদ কি সত্যিই বিলোপ করা সম্ভব
বিশ্ব ইনইক্যুয়ালিটি ল্যাবের লুকাস শ্যানসেলের মতে, ইতিহাসে এর নজির আছে। উদাহরণস্বরূপ—রকেফেলারের একচেটিয়া সাম্রাজ্য ভেঙে দেওয়া, কিংবা রুজভেল্টের সময় সর্বোচ্চ করহার ৯৪ শতাংশে উন্নীত করা। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পানামা পেপারসের মতো ফাঁস যেমন দুর্দান্ত স্বচ্ছতা তৈরি করেছে, তেমনি তা পরিবর্তনের সুযোগও তৈরি করছে। তিনি মনে করেন, ধনীদের ওপর কর আরোপের মতো ধারণা এখন আর ‘যদি’ নয়, বরং ‘কখন’ করা হবে—এ প্রশ্নে এসে দাঁড়িয়েছে।
আল-জাজিরা অবলম্বনে

বিশ্বজুড়ে দীর্ঘদিন ধরেই প্রশ্ন উঠে আসছে—‘যদি বিলিয়নিয়ারদের সম্পদ সীমিত করা হয়, অথবা এই শ্রেণিটিকেই সম্পূর্ণ বাতিল করা হয়, তবে কী ঘটবে?’ পশ্চিমা দেশগুলোতে চরম ধনী বা বিলিয়নিয়ারদের সংখ্যা ও প্রভাব বাড়তে থাকায় এখন এই প্রশ্ন আরও জোরালো হয়েছে।
সম্প্রতি টেসলার মালিক ইলন মাস্ক গত নভেম্বরে এমন এক পে-অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন, যা তাঁকে একজন ট্রিলিয়ন ডলারের মালিকে পরিণত করতে পারে। তিনি ইতিমধ্যেই বিশ্বের শীর্ষ ধনী। যদি তিনি প্রস্তাবিত পূর্ণ প্যাকেজটি পান, তাহলে তিনি বিশ্বের ইতিহাসে সর্বকালের সেরা ধনী ব্যক্তিতে পরিণত হবেন। ফোর্বসের হিসেবে বর্তমানে বিশ্বের ৩ হাজার ২৮ জন বিলিয়নিয়ার আছেন। তাঁদের মোট সম্পদ প্রায় ১৬.১ ট্রিলিয়ন ডলার। অন্যদিকে পৃথিবীতে এখনো প্রায় ৮৩ কোটি ১০ লাখ মানুষ দৈনিক তিন ডলারের নিচে আয় করে চরম দারিদ্র্যে দিন কাটান।
বিশ্লেষকদের মতে, বিশ্বের এই বিপুল সম্পদ বৈষম্য শুধু অর্থনীতিকে নয়, রাজনীতি, মিডিয়া ও চিন্তাকেও প্রভাবিত করে। অনেকেই মনে করেন, বিলিয়নিয়ারদের সম্পদ ও ক্ষমতা বিশ্বব্যবস্থাকে ‘অতি ধনীদের স্বার্থে’ পুনর্গঠন করছে। আবার অন্য একটি মত বলছে, বিলিয়নিয়ারেরা না থাকলে উদ্ভাবন, প্রযুক্তি ও অগ্রগতি থমকে যাবে। কারণ বৃহৎ বিনিয়োগই গড়ে তোলে নতুন সমাধান।
উদ্ভাবন কি থেমে যাবে
অ্যাডাম স্মিথ ইনস্টিটিউটের ম্যাক্সওয়েল মার্লোর মতে, বিলিয়নিয়ারদের বিলোপ করা হলে পশ্চিমা অর্থনীতি বিপর্যস্ত হবে। তাঁর দাবি, অধিকাংশ বিলিয়নিয়ার তাঁদের সম্পদের মালিক হয়েছেন সমাজের চাহিদামতো পণ্য ও প্রযুক্তি তৈরি করে। তাঁদের সম্পদ মূলত কোম্পানির শেয়ার, মেধাস্বত্ব অথবা সম্পত্তি—যা দিনে দিনে ওঠানামা করে। তাঁর মতে, এই ধনী ব্যক্তিদের প্রণোদনাই উদ্ভাবনে গতি আনে; তা না থাকলে উন্নয়ন থেমে যাবে।
যদি ন্যায্যভাবে সম্পদ বণ্টিত হতো
গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ট্যাক্স জাস্টিসের ডেরেজে আলেমায়েহুর মতে, শুধু বিলিয়নিয়ার কর আরোপ নয়—প্রশ্ন হচ্ছে, সেই কর কোথায় যাবে। দক্ষিণ বিশ্বের শ্রম ও সম্পদ থেকেই যে বিপুল সম্পদ তৈরি হয়, তাই তার ন্যায্য অংশ দক্ষিণেই ফিরে আসা উচিত। তিনি বলেন, বৈষম্য কমাতে শুধু অর্থ হস্তান্তর নয়, বৈশ্বিক আর্থিক কাঠামো পুনর্গঠন জরুরি; নইলে বৈষম্য আরও গভীর হবে।
বিধিনিষেধ কি বদলাতে হবে
ডেনিসন ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ফাদেল কাবুব বলেন, বিলিয়নিয়ারেরা আসলে ব্যর্থ নীতির ফল। সিস্টেম যেভাবে সাজানো, তাতে সম্পদ একদিকে কেন্দ্রীভূত হওয়াই স্বাভাবিক। তাঁর মতে, বিলিয়নিয়ার শ্রেণিকে বিলোপ করতে হলে আধুনিক অ্যান্টি ট্রাস্ট ও কঠোর বাজার নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন।
মিডিয়ার ওপর প্রভাব কমবে
গোল্ডস্মিথস বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডেস ফ্রিডম্যান মনে করেন, বিলিয়নিয়ারেরা পুরো মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম কিনে ফেলতে সক্ষম হওয়ায় তথ্যপ্রবাহ তাঁদের স্বার্থেই নিয়ন্ত্রিত হয়। যেমন—বেজোস বা ইলন মাস্কের গণমাধ্যম মালিকানা এই অঙ্গনের স্বাধীনতাকে দীর্ঘমেয়াদে প্রশ্নবিদ্ধ করে। তাই বিলিয়নিয়ার প্রভাব সীমিত হলে তথ্যের উৎসও আরও স্বাধীন হতে পারে।
চরম সম্পদ কি সত্যিই বিলোপ করা সম্ভব
বিশ্ব ইনইক্যুয়ালিটি ল্যাবের লুকাস শ্যানসেলের মতে, ইতিহাসে এর নজির আছে। উদাহরণস্বরূপ—রকেফেলারের একচেটিয়া সাম্রাজ্য ভেঙে দেওয়া, কিংবা রুজভেল্টের সময় সর্বোচ্চ করহার ৯৪ শতাংশে উন্নীত করা। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পানামা পেপারসের মতো ফাঁস যেমন দুর্দান্ত স্বচ্ছতা তৈরি করেছে, তেমনি তা পরিবর্তনের সুযোগও তৈরি করছে। তিনি মনে করেন, ধনীদের ওপর কর আরোপের মতো ধারণা এখন আর ‘যদি’ নয়, বরং ‘কখন’ করা হবে—এ প্রশ্নে এসে দাঁড়িয়েছে।
আল-জাজিরা অবলম্বনে

রুশ প্রচারণা যেসব দাবি ছড়াচ্ছে ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে বাস্তবে তার উল্টো ছবি দেখা যাচ্ছে রণক্ষেত্রে। ইউক্রেন এখন পর্যন্ত লড়াইয়ে এগিয়ে। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও এবার স্বীকার করেছেন, ইউক্রেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় ‘লড়াই চালিয়ে যেতে এবং জয়লাভ করতে সক্ষম।’
০৭ অক্টোবর ২০২৫
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দূতদের মধ্যে ইউক্রেন শান্তি চুক্তি নিয়ে আলোচনা হলেও প্রকাশ্যে কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি। পুতিনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ইউরি উশাকভ, এ প্রসঙ্গে বলেছিলেন যে অমীমাংসিত ‘আঞ্চলিক সমস্যাই’ মূল বাধা। আর এই অঞ্চল আর কোনোটিই নয়, দোনেৎস্ক।
২১ ঘণ্টা আগে
জাপানের ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর গত অক্টোবরে দেশটির প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন সানায়ে তাকাইচি। এরপরই তিনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচিত হন জাপানের নতুন ‘আয়রন লেডি’ বা লৌহমানবী’ হিসেবে।
২ দিন আগে
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বৈঠককে ঘিরে দিল্লিতে শুরু হয়েছে কূটনৈতিক প্রস্তুতি। চলমান ইউক্রেন যুদ্ধ, যুক্তরাষ্ট্রের চাপ এবং জ্বালানির বাজারে অস্থিরতার মধ্যেই এই শীর্ষ সম্মেলন হতে যাচ্ছে। অর্থনীতি, প্রতিরক্ষা এবং জ্বালানি—এই তিনটি খাত আলোচনার...
২ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

জাপানের ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর গত অক্টোবরে দেশটির প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন সানায়ে তাকাইচি। এরপরই তিনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচিত হন জাপানের নতুন ‘আয়রন লেডি’ বা লৌহমানবী’ হিসেবে। এই পরিচয়টিকে তাকাইচি নিজেও গর্বের সঙ্গে গ্রহণ করেন। মার্গারেট থ্যাচারের অনুরাগী এই রক্ষণশীল নেতা ঘরোয়া অর্থনীতি থেকে শুরু করে পররাষ্ট্র ও নিরাপত্তা—সব ক্ষেত্রেই শক্ত অবস্থানের বার্তা দিয়েছেন।
তাকাইচির রাজনৈতিক পরিচয়ের মূল কেন্দ্রে রয়েছে ‘নিপ্পন কেইগি’ নামে জাপানের সবচেয়ে প্রভাবশালী জাতীয়তাবাদী গোষ্ঠী। এই সংগঠন জাপানের সংবিধানের যুদ্ধবিরোধী ৯ নম্বর অনুচ্ছেদ বাতিল, শক্তিশালী সামরিক বাহিনী গঠন এবং ঐতিহ্যবাদী মূল্যবোধে প্রত্যাবর্তনের পক্ষে। পূর্বসুরী শিনজো আবের মতো তাই তাকাইচিও জাপানকে স্বাভাবিক রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চান, যেখানে গোয়েন্দা সংস্থা, আধুনিক সেনাবাহিনী এবং কঠোর নিরাপত্তা আইন থাকবে।
অর্থনীতির ক্ষেত্রে তিনি জাতীয় শিল্পকে শক্তিশালী করা, প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বাড়ানো এবং রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ বৃদ্ধির পক্ষে। একই সঙ্গে কঠোর অভিবাসন নীতি ও রক্ষণশীল মূল্যবোধের প্রচারও তাঁকে ডানপন্থীদের মধ্যে জনপ্রিয় করেছে। তবে এই অভ্যন্তরীণ রাজনীতি এখন আন্তর্জাতিক উত্তেজনার সঙ্গে গেঁথে গেছে—বিশেষ করে, তাইওয়ান ইস্যুতে তাঁর অবস্থানের কারণে।
তাকাইচি ক্ষমতায় আসার পর থেকেই চীনের প্রতি কঠোর মনোভাব দেখাচ্ছেন। বেইজিংকে তিনি কৌশলগত হুমকি হিসেবে দেখেন এবং প্রতিরোধমূলক সামরিক ও কূটনৈতিক পদক্ষেপের পক্ষে জোর দিচ্ছেন। এরই অংশ হিসেবে অক্টোবরের শেষ দিকে তাঁর ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাক্ষাৎ দুই দেশের সম্পর্ককে নতুন সোনালি যুগে প্রবেশ করানোর আভাস দেয়। জাপান প্রতিরক্ষা ব্যয় জিডিপির কমপক্ষে ২ শতাংশে উন্নীত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, আর যুক্তরাষ্ট্র বিরল ধাতুর সরবরাহ নিশ্চিতকরণসহ অর্থনৈতিক সহায়তার ঘোষণা দেয়।
তবে সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হলো তাইওয়ানের সঙ্গে তাকাইচির ঘনিষ্ঠতা। তিনি তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট লাই চিং-তের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন, যা চীনের কাছে স্পষ্ট উত্তেজনাকর পদক্ষেপ হিসেবে ধরা পড়েছে। আরও বিতর্ক সৃষ্টি হয় যখন তাকাইচি প্রকাশ্যে বলেন, তাইওয়ানের নিরাপত্তা জাপানের নিরাপত্তার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। এমনকি তাইওয়ানে চীনা হামলার ক্ষেত্রে জাপানের আত্মরক্ষা বাহিনী হস্তক্ষেপ করতে পারে বলেও ইঙ্গিত দেন তিনি।
এ ক্ষেত্রে চীনের প্রতিক্রিয়াও ছিল কঠোর ও দ্রুত। তারা তাকাইচির বিরুদ্ধে ‘পুরোনো সামরিকতাবাদকে পুনরুজ্জীবিত করার’ অভিযোগ তোলে, রাষ্ট্রদূতকে তলব করে এবং জাতিসংঘে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ পাঠায়। পাশাপাশি সামুদ্রিক এলাকায় কোস্টগার্ডের টহল বাড়ায় চীন, জাপানি সামুদ্রিক পণ্যে সীমাবদ্ধতা আরোপের হুমকি দেয় এবং উত্তেজনাপূর্ণ নানা বিবৃতি দেয়।
এদিকে জাপানও পশ্চিম সীমান্তের ইয়োনাগুনি দ্বীপে বিমান প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের ঘোষণা দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রও একই দ্বীপে সামরিক অবকাঠামো শক্তিশালী করছে। ফলে পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করছে।
তবে ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি তাকাইচিকে উত্তেজনা না বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন। কারণ আগামী এপ্রিলে তিনি বেইজিং সফর করতে চান।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তাকাইচির নেতৃত্বে জাপান নতুন ভূ-রাজনৈতিক বাস্তবতায় প্রবেশ করেছে। তাঁর দৃঢ় অবস্থান দেশকে হয় পুনরুত্থানের পথে নেবে—নয়তো চীন–তাইওয়ান উত্তেজনার কেন্দ্রে ঠেলে দেবে। ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে তিনি কোন পথে হাঁটবেন তার ওপর।

জাপানের ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর গত অক্টোবরে দেশটির প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন সানায়ে তাকাইচি। এরপরই তিনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচিত হন জাপানের নতুন ‘আয়রন লেডি’ বা লৌহমানবী’ হিসেবে। এই পরিচয়টিকে তাকাইচি নিজেও গর্বের সঙ্গে গ্রহণ করেন। মার্গারেট থ্যাচারের অনুরাগী এই রক্ষণশীল নেতা ঘরোয়া অর্থনীতি থেকে শুরু করে পররাষ্ট্র ও নিরাপত্তা—সব ক্ষেত্রেই শক্ত অবস্থানের বার্তা দিয়েছেন।
তাকাইচির রাজনৈতিক পরিচয়ের মূল কেন্দ্রে রয়েছে ‘নিপ্পন কেইগি’ নামে জাপানের সবচেয়ে প্রভাবশালী জাতীয়তাবাদী গোষ্ঠী। এই সংগঠন জাপানের সংবিধানের যুদ্ধবিরোধী ৯ নম্বর অনুচ্ছেদ বাতিল, শক্তিশালী সামরিক বাহিনী গঠন এবং ঐতিহ্যবাদী মূল্যবোধে প্রত্যাবর্তনের পক্ষে। পূর্বসুরী শিনজো আবের মতো তাই তাকাইচিও জাপানকে স্বাভাবিক রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চান, যেখানে গোয়েন্দা সংস্থা, আধুনিক সেনাবাহিনী এবং কঠোর নিরাপত্তা আইন থাকবে।
অর্থনীতির ক্ষেত্রে তিনি জাতীয় শিল্পকে শক্তিশালী করা, প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বাড়ানো এবং রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ বৃদ্ধির পক্ষে। একই সঙ্গে কঠোর অভিবাসন নীতি ও রক্ষণশীল মূল্যবোধের প্রচারও তাঁকে ডানপন্থীদের মধ্যে জনপ্রিয় করেছে। তবে এই অভ্যন্তরীণ রাজনীতি এখন আন্তর্জাতিক উত্তেজনার সঙ্গে গেঁথে গেছে—বিশেষ করে, তাইওয়ান ইস্যুতে তাঁর অবস্থানের কারণে।
তাকাইচি ক্ষমতায় আসার পর থেকেই চীনের প্রতি কঠোর মনোভাব দেখাচ্ছেন। বেইজিংকে তিনি কৌশলগত হুমকি হিসেবে দেখেন এবং প্রতিরোধমূলক সামরিক ও কূটনৈতিক পদক্ষেপের পক্ষে জোর দিচ্ছেন। এরই অংশ হিসেবে অক্টোবরের শেষ দিকে তাঁর ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাক্ষাৎ দুই দেশের সম্পর্ককে নতুন সোনালি যুগে প্রবেশ করানোর আভাস দেয়। জাপান প্রতিরক্ষা ব্যয় জিডিপির কমপক্ষে ২ শতাংশে উন্নীত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, আর যুক্তরাষ্ট্র বিরল ধাতুর সরবরাহ নিশ্চিতকরণসহ অর্থনৈতিক সহায়তার ঘোষণা দেয়।
তবে সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হলো তাইওয়ানের সঙ্গে তাকাইচির ঘনিষ্ঠতা। তিনি তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট লাই চিং-তের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন, যা চীনের কাছে স্পষ্ট উত্তেজনাকর পদক্ষেপ হিসেবে ধরা পড়েছে। আরও বিতর্ক সৃষ্টি হয় যখন তাকাইচি প্রকাশ্যে বলেন, তাইওয়ানের নিরাপত্তা জাপানের নিরাপত্তার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। এমনকি তাইওয়ানে চীনা হামলার ক্ষেত্রে জাপানের আত্মরক্ষা বাহিনী হস্তক্ষেপ করতে পারে বলেও ইঙ্গিত দেন তিনি।
এ ক্ষেত্রে চীনের প্রতিক্রিয়াও ছিল কঠোর ও দ্রুত। তারা তাকাইচির বিরুদ্ধে ‘পুরোনো সামরিকতাবাদকে পুনরুজ্জীবিত করার’ অভিযোগ তোলে, রাষ্ট্রদূতকে তলব করে এবং জাতিসংঘে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ পাঠায়। পাশাপাশি সামুদ্রিক এলাকায় কোস্টগার্ডের টহল বাড়ায় চীন, জাপানি সামুদ্রিক পণ্যে সীমাবদ্ধতা আরোপের হুমকি দেয় এবং উত্তেজনাপূর্ণ নানা বিবৃতি দেয়।
এদিকে জাপানও পশ্চিম সীমান্তের ইয়োনাগুনি দ্বীপে বিমান প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের ঘোষণা দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রও একই দ্বীপে সামরিক অবকাঠামো শক্তিশালী করছে। ফলে পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করছে।
তবে ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি তাকাইচিকে উত্তেজনা না বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন। কারণ আগামী এপ্রিলে তিনি বেইজিং সফর করতে চান।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তাকাইচির নেতৃত্বে জাপান নতুন ভূ-রাজনৈতিক বাস্তবতায় প্রবেশ করেছে। তাঁর দৃঢ় অবস্থান দেশকে হয় পুনরুত্থানের পথে নেবে—নয়তো চীন–তাইওয়ান উত্তেজনার কেন্দ্রে ঠেলে দেবে। ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে তিনি কোন পথে হাঁটবেন তার ওপর।

রুশ প্রচারণা যেসব দাবি ছড়াচ্ছে ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে বাস্তবে তার উল্টো ছবি দেখা যাচ্ছে রণক্ষেত্রে। ইউক্রেন এখন পর্যন্ত লড়াইয়ে এগিয়ে। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও এবার স্বীকার করেছেন, ইউক্রেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় ‘লড়াই চালিয়ে যেতে এবং জয়লাভ করতে সক্ষম।’
০৭ অক্টোবর ২০২৫
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দূতদের মধ্যে ইউক্রেন শান্তি চুক্তি নিয়ে আলোচনা হলেও প্রকাশ্যে কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি। পুতিনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ইউরি উশাকভ, এ প্রসঙ্গে বলেছিলেন যে অমীমাংসিত ‘আঞ্চলিক সমস্যাই’ মূল বাধা। আর এই অঞ্চল আর কোনোটিই নয়, দোনেৎস্ক।
২১ ঘণ্টা আগে
বিশ্বজুড়ে দীর্ঘদিন ধরেই প্রশ্ন উঠে আসছে—‘যদি বিলিয়নিয়ারদের সম্পদ সীমিত করা হয়, অথবা এই শ্রেণিটিকেই সম্পূর্ণ বাতিল করা হয়, তবে কী ঘটবে?’ পশ্চিমা দেশগুলোতে চরম ধনী বা বিলিয়নিয়ারদের সংখ্যা ও প্রভাব বাড়তে থাকায় এখন এই প্রশ্ন আরও জোরালো হয়েছে।
১ দিন আগে
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বৈঠককে ঘিরে দিল্লিতে শুরু হয়েছে কূটনৈতিক প্রস্তুতি। চলমান ইউক্রেন যুদ্ধ, যুক্তরাষ্ট্রের চাপ এবং জ্বালানির বাজারে অস্থিরতার মধ্যেই এই শীর্ষ সম্মেলন হতে যাচ্ছে। অর্থনীতি, প্রতিরক্ষা এবং জ্বালানি—এই তিনটি খাত আলোচনার...
২ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বৈঠককে ঘিরে দিল্লিতে শুরু হয়েছে কূটনৈতিক প্রস্তুতি। চলমান ইউক্রেন যুদ্ধ, যুক্তরাষ্ট্রের চাপ এবং জ্বালানির বাজারে অস্থিরতার মধ্যেই এই শীর্ষ সম্মেলন হতে যাচ্ছে। অর্থনীতি, প্রতিরক্ষা এবং জ্বালানি—এই তিনটি খাত আলোচনার কেন্দ্রে থাকবে বলে দুই দেশই নিশ্চিত করেছে।
রাষ্ট্রীয় সফরে বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) ভারতে পৌঁছে পরদিন শুক্রবার মোদির সঙ্গে বৈঠকে বসবেন পুতিন। এই বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের অগ্রগতি পর্যালোচনা ছাড়াও নতুন কয়েকটি আন্তদপ্তর ও বাণিজ্যিক চুক্তি স্বাক্ষরের সম্ভাবনা রয়েছে। রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখা এবং একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কৌশলগত অংশীদারত্ব ধরে রাখতে ভারতের নীতির জন্য এই বৈঠক একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রাশিয়া থেকে ডিসকাউন্টে ভারতের তেল কেনা দীর্ঘদিন ধরেই ওয়াশিংটনকে অসন্তুষ্ট করে আসছে। এই অসন্তুষ্টি থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি ভারতীয় পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন, যা মোট শুল্ককে ৫০ শতাংশে উন্নীত করেছে। তবে ভারত বলছে, তারা আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার বিরোধী নয়, কিন্তু ১৪০ কোটি মানুষের জ্বালানি চাহিদা মেটাতেই বাধ্য হয়ে রাশিয়া থেকে তেল আমদানি করা হচ্ছে। নতুন মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে ‘রসনেফত’ ও ‘লুকওইল’ এর মতো রাশিয়ার কিছু কোম্পানি থেকে ভারত তেল কিনবে না বলে জানিয়েছে। তবে নিষেধাজ্ঞামুক্ত রুশ সরবরাহকারীদের সঙ্গে বাণিজ্য চালু থাকবে।
পুতিনের এই সফরে দুই দেশের অর্থনৈতিক সহযোগিতার ওপর জোর দেওয়া হবে। ভারত রাশিয়ায় ওষুধ, কৃষিপণ্য ও টেক্সটাইল রপ্তানি বাড়াতে চায় এবং পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে শুল্কমুক্ত সুবিধা প্রদানের অনুরোধ জানাবে। এ ছাড়া সার সরবরাহের দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি এবং রাশিয়ায় ভারতীয় দক্ষ জনশক্তির নিরাপদ ও নিয়মিত অভিবাসন নিয়ে আলোচনা এগোতে পারে। দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য, সমুদ্র পরিবহন, স্বাস্থ্যসেবা ও গণমাধ্যম সহযোগিতা বিষয়ক নথিপত্র চূড়ান্তের কাজও চলছে।
বুধবার এই বিষয়ে যুক্তরাজ্যভিত্তিক ইনডিপেনডেন্টের এক নিবন্ধে দাবি করা হয়েছে, জ্বালানি সহযোগিতাই পুতিন-মোদি আলোচনার বড় অংশ দখল করবে। ভারতের ফার ইস্টে বিনিয়োগ, রাশিয়ার সঙ্গে বেসামরিক পারমাণবিক প্রকল্প এবং কুদানকুলাম প্রকল্পের সম্প্রসারণ নিয়ে অগ্রগতি পর্যালোচনা হবে। স্থানীয়ভাবে যন্ত্রাংশ উৎপাদন এবং তৃতীয় দেশে যৌথ পারমাণবিক প্রকল্প বাস্তবায়নের সম্ভাবনাও খতিয়ে দেখা হবে।
প্রতিরক্ষা সহযোগিতা এই সফরের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। ২০১৮ সালের ৫.৪ বিলিয়ন ডলারের চুক্তির আওতায় ভারতের হাতে ইতিমধ্যে রাশিয়ার তিনটি এস-৪০০ স্কোয়াড্রন এসেছে। যুদ্ধজনিত কারণে বাকিগুলোর সরবরাহে যুদ্ধজনিত বিলম্ব হচ্ছে। ভারত এই সরবরাহ দ্রুত নিশ্চিত করতে চাপ দেবে। পাশাপাশি আরও এস-৪০০ কেনার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া হয়নি, যদিও বৈঠক থেকে কোনো ঘোষণা হওয়ার সম্ভাবনা কম। রুশ নির্মিত এসইউ-৩০ এমকেআই যুদ্ধবিমান আপগ্রেড, অস্ত্র সরবরাহ দ্রুততর করা এবং যৌথ সামরিক মহড়ায় সমন্বয় জোরদার করার বিষয়েও আলোচনা হবে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভারত বহুজাতিক অস্ত্র সরবরাহকারীদের দিকে নজর বাড়ালেও রাশিয়া এখনো তাদের সবচেয়ে বড় প্রতিরক্ষা অংশীদার। পুতিনের সফরকে সেই সম্পর্কটি আরও দৃঢ় করার বড় সুযোগ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বৈঠককে ঘিরে দিল্লিতে শুরু হয়েছে কূটনৈতিক প্রস্তুতি। চলমান ইউক্রেন যুদ্ধ, যুক্তরাষ্ট্রের চাপ এবং জ্বালানির বাজারে অস্থিরতার মধ্যেই এই শীর্ষ সম্মেলন হতে যাচ্ছে। অর্থনীতি, প্রতিরক্ষা এবং জ্বালানি—এই তিনটি খাত আলোচনার কেন্দ্রে থাকবে বলে দুই দেশই নিশ্চিত করেছে।
রাষ্ট্রীয় সফরে বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) ভারতে পৌঁছে পরদিন শুক্রবার মোদির সঙ্গে বৈঠকে বসবেন পুতিন। এই বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের অগ্রগতি পর্যালোচনা ছাড়াও নতুন কয়েকটি আন্তদপ্তর ও বাণিজ্যিক চুক্তি স্বাক্ষরের সম্ভাবনা রয়েছে। রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখা এবং একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কৌশলগত অংশীদারত্ব ধরে রাখতে ভারতের নীতির জন্য এই বৈঠক একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রাশিয়া থেকে ডিসকাউন্টে ভারতের তেল কেনা দীর্ঘদিন ধরেই ওয়াশিংটনকে অসন্তুষ্ট করে আসছে। এই অসন্তুষ্টি থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি ভারতীয় পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন, যা মোট শুল্ককে ৫০ শতাংশে উন্নীত করেছে। তবে ভারত বলছে, তারা আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার বিরোধী নয়, কিন্তু ১৪০ কোটি মানুষের জ্বালানি চাহিদা মেটাতেই বাধ্য হয়ে রাশিয়া থেকে তেল আমদানি করা হচ্ছে। নতুন মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে ‘রসনেফত’ ও ‘লুকওইল’ এর মতো রাশিয়ার কিছু কোম্পানি থেকে ভারত তেল কিনবে না বলে জানিয়েছে। তবে নিষেধাজ্ঞামুক্ত রুশ সরবরাহকারীদের সঙ্গে বাণিজ্য চালু থাকবে।
পুতিনের এই সফরে দুই দেশের অর্থনৈতিক সহযোগিতার ওপর জোর দেওয়া হবে। ভারত রাশিয়ায় ওষুধ, কৃষিপণ্য ও টেক্সটাইল রপ্তানি বাড়াতে চায় এবং পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে শুল্কমুক্ত সুবিধা প্রদানের অনুরোধ জানাবে। এ ছাড়া সার সরবরাহের দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি এবং রাশিয়ায় ভারতীয় দক্ষ জনশক্তির নিরাপদ ও নিয়মিত অভিবাসন নিয়ে আলোচনা এগোতে পারে। দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য, সমুদ্র পরিবহন, স্বাস্থ্যসেবা ও গণমাধ্যম সহযোগিতা বিষয়ক নথিপত্র চূড়ান্তের কাজও চলছে।
বুধবার এই বিষয়ে যুক্তরাজ্যভিত্তিক ইনডিপেনডেন্টের এক নিবন্ধে দাবি করা হয়েছে, জ্বালানি সহযোগিতাই পুতিন-মোদি আলোচনার বড় অংশ দখল করবে। ভারতের ফার ইস্টে বিনিয়োগ, রাশিয়ার সঙ্গে বেসামরিক পারমাণবিক প্রকল্প এবং কুদানকুলাম প্রকল্পের সম্প্রসারণ নিয়ে অগ্রগতি পর্যালোচনা হবে। স্থানীয়ভাবে যন্ত্রাংশ উৎপাদন এবং তৃতীয় দেশে যৌথ পারমাণবিক প্রকল্প বাস্তবায়নের সম্ভাবনাও খতিয়ে দেখা হবে।
প্রতিরক্ষা সহযোগিতা এই সফরের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। ২০১৮ সালের ৫.৪ বিলিয়ন ডলারের চুক্তির আওতায় ভারতের হাতে ইতিমধ্যে রাশিয়ার তিনটি এস-৪০০ স্কোয়াড্রন এসেছে। যুদ্ধজনিত কারণে বাকিগুলোর সরবরাহে যুদ্ধজনিত বিলম্ব হচ্ছে। ভারত এই সরবরাহ দ্রুত নিশ্চিত করতে চাপ দেবে। পাশাপাশি আরও এস-৪০০ কেনার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া হয়নি, যদিও বৈঠক থেকে কোনো ঘোষণা হওয়ার সম্ভাবনা কম। রুশ নির্মিত এসইউ-৩০ এমকেআই যুদ্ধবিমান আপগ্রেড, অস্ত্র সরবরাহ দ্রুততর করা এবং যৌথ সামরিক মহড়ায় সমন্বয় জোরদার করার বিষয়েও আলোচনা হবে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভারত বহুজাতিক অস্ত্র সরবরাহকারীদের দিকে নজর বাড়ালেও রাশিয়া এখনো তাদের সবচেয়ে বড় প্রতিরক্ষা অংশীদার। পুতিনের সফরকে সেই সম্পর্কটি আরও দৃঢ় করার বড় সুযোগ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

রুশ প্রচারণা যেসব দাবি ছড়াচ্ছে ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে বাস্তবে তার উল্টো ছবি দেখা যাচ্ছে রণক্ষেত্রে। ইউক্রেন এখন পর্যন্ত লড়াইয়ে এগিয়ে। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও এবার স্বীকার করেছেন, ইউক্রেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় ‘লড়াই চালিয়ে যেতে এবং জয়লাভ করতে সক্ষম।’
০৭ অক্টোবর ২০২৫
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দূতদের মধ্যে ইউক্রেন শান্তি চুক্তি নিয়ে আলোচনা হলেও প্রকাশ্যে কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি। পুতিনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ইউরি উশাকভ, এ প্রসঙ্গে বলেছিলেন যে অমীমাংসিত ‘আঞ্চলিক সমস্যাই’ মূল বাধা। আর এই অঞ্চল আর কোনোটিই নয়, দোনেৎস্ক।
২১ ঘণ্টা আগে
বিশ্বজুড়ে দীর্ঘদিন ধরেই প্রশ্ন উঠে আসছে—‘যদি বিলিয়নিয়ারদের সম্পদ সীমিত করা হয়, অথবা এই শ্রেণিটিকেই সম্পূর্ণ বাতিল করা হয়, তবে কী ঘটবে?’ পশ্চিমা দেশগুলোতে চরম ধনী বা বিলিয়নিয়ারদের সংখ্যা ও প্রভাব বাড়তে থাকায় এখন এই প্রশ্ন আরও জোরালো হয়েছে।
১ দিন আগে
জাপানের ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর গত অক্টোবরে দেশটির প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন সানায়ে তাকাইচি। এরপরই তিনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচিত হন জাপানের নতুন ‘আয়রন লেডি’ বা লৌহমানবী’ হিসেবে।
২ দিন আগে