আব্দুর রহমান

ফিলিস্তিনিদের দুর্দশা আজকের নয়। ১৯৪৮ সালে ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর থেকেই ফিলিস্তিনিরা অগণিত বার উচ্ছেদ, নির্যাতন, জাতিগত নিধন এবং নিপীড়নের শিকার হয়েছে। সর্বশেষ এতে বাড়তি মাত্রা যোগ করেছে গাজার কসাইখ্যাত ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। আর তাকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে উগ্র ইহুদি জাতীয়তাবাদ বা জায়োনিজম।
গাজায় সর্বশেষ আগ্রাসন শুরু হয় ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর। এরপর মাঝে দুই দফায় অল্প কিছু সময়ের জন্য বিরতি থাকলেও ইসরায়েলি হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৪৯ হাজার মানুষ। আহত হয়েছেন ১ লাখ ১২ হাজারের বেশি এবং নিখোঁজ প্রায় ১৪ হাজার। এই নিখোঁজদের বেশিরভাগই ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন। তাঁদের পচা-গলা লাশের দুর্গন্ধে ভারী হয়ে উঠেছে গাজার বাতাস। সেই সঙ্গে বাড়তি ভীতি যোগ করেছে টনকে টন বারুদের গন্ধ।
কিন্তু গাজায় ইসরায়েলি এই বর্বরতার কারণ কী? মোটা দাগে দুটি লাইনে বিষয়টি ব্যাখ্যা করা যায়। এক. ইসরায়েলি জায়নবাদের আকাঙ্ক্ষা। যেখানে, পুরো ফিলিস্তিন (১৯৪৮ সালের আগের) ভূখণ্ডকে ইসরায়েলিদের ‘প্রতিশ্রুত ভূমি’ মনে করা হয় এবং এখানে ফিলিস্তিনিদের দেখা হয় দখলদার হিসেবে। অথচ, এই ভূখণ্ডে এখন যেসব ইসরায়েলি বসবাস করছে, তাদের বেশির ভাগই ইউরোপসহ দুনিয়ার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা অভিবাসী। আরব ইহুদি সেখানে খুব সামান্যই।
জায়নবাদ অনুসারে, ইহুদিরা প্রতিশ্রুত ইসরায়েল ভূখণ্ড প্রতিষ্ঠা করতে চায়, যেখানে কোনো মুসলমান থাকবে না। আর তাই অখণ্ড ইসরায়েল প্রতিষ্ঠায় বাধা ফিলিস্তিনি মুসলমানেরা। কাজেই, তাদের উচ্ছেদ করতে হবে কিংবা যেকোনো মূল্যে নিকেশ করতে হবে। প্রয়োজনে চালাতে হবে ‘জাতিগত নিধন’। ঠিক সেই কাজটিই গাজায় করছে ইসরায়েল।
জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা এরই মধ্যে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের ওপর ক্রমবর্ধমান যৌন ও লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা চালানোর এবং মাতৃ ও প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা সুবিধাগুলোর পদ্ধতিগত ধ্বংসের মাধ্যমে ‘গণহত্যামূলক কর্মকাণ্ড’ চালানোর অভিযোগ তুলেছেন।
ইসরায়েল তো সরাসরি হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছেই, পাশাপাশি দেশটি পদ্ধতিগতভাবেও গণহত্যামূলক কাজ করে যাচ্ছে। যেমন, দেশটি ফিলিস্তিনিরা যাতে সন্তান জন্ম দিতে না পারে সে ব্যবস্থাও করছে ইসরায়েল। জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘রোম সংবিধি (স্ট্যাটিউট) এবং গণহত্যা কনভেনশন অনুসারে গণহত্যামূলক কর্মকাণ্ডকে দুটি ভাগে ভাগ করা যায় এবং এই দুটিই ইসরায়েল চালিয়ে যাচ্ছে ফিলিস্তিনে।’ এতে আরও বলা হয়েছে, ‘ফিলিস্তিনিদের ধ্বংস সাধনের উদ্দেশ্যে নিয়ন্ত্রিত জীবনযাত্রার পরিস্থিতি চাপিয়ে দেওয়া এবং সন্তান জন্মদান ঠেকাতে পদক্ষেপ আরোপ করা হচ্ছে।’
এখানেই থেমে নেই ইসরায়েল। দেশটি গাজাবাসীদের আফ্রিকার দেশগুলোতে স্থানান্তর করতে চায়। জায়নিবাদের এই আকাঙ্ক্ষাই যেন প্রতিফলিত হচ্ছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মুখ থেকে। তিনি যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের সরিয়ে দিয়ে নতুন করে নির্মাণের কথা বলছেন। ট্রাম্পের সেই প্রস্তাব সমর্থন করেছেন নেতানিয়াহু।
কিছুদিন আগেই, এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল গাজার লোকদের আফ্রিকার দেশ সুদান, সোমালিয়া এবং এর বিচ্ছিন্ন অঞ্চল সোমালিল্যান্ডে স্থানান্তরের কথা বলেছে। তারও আগে, খবর বেরিয়েছিল, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল গাজাবাসীদের মরোক্কো ও সোমালিয়ায় স্থানান্তর করতে চায়। যদিও মরক্কো এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে। কিন্তু সোমালিয়া বা সুদান এ বিষয়ে এখনো কিছু বলেনি। আরব বিশ্বের দেশগুলো গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের নিন্দা করেছে, এমনকি গাজার বিকল্প পুনর্গঠন পরিকল্পনাও গ্রহণ করেছে। কিন্তু যেটি আসলে করা প্রয়োজন—যুদ্ধ বন্ধ—সেটিই তারা করেনি।
যুক্তরাষ্ট্রে ফিলিস্তিনি অভিবাসী আহমেদ ইবসাইস বলেন, ‘গাজা এবং অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে আজ যে বর্ণবাদ, উগ্রবাদ এবং গণহত্যার অভিপ্রায় দেখা যাচ্ছে, তার জন্য শুধু নেতানিয়াহুকে দায়ী করা যায় না এবং করা উচিতও নয়।’ তাঁর মতে, এসবের পেছনে মূল কারণ হলো, ইসরায়েল রাষ্ট্র এবং এর জায়নবাদ। তাঁর মতে, ‘কেবল নেতানিয়াহুকে ফিলিস্তিনি জনগণের অতীত ও বর্তমানের দুঃখ-দুর্দশা এবং নিপীড়নের জন্য দোষারোপ করার মাধ্যমে, তারা এই মিথ্যাটিকে বাঁচিয়ে রাখে যে—ইসরায়েল জাতিগত নির্মূলের পরিবর্তে প্রগতিশীল আদর্শের ওপর নির্মিত হয়েছিল। কিন্তু আসলে তা নয়।’
শুরু থেকেই ইসরায়েল রাষ্ট্র তার দীর্ঘমেয়াদি অস্তিত্বকে ফিলিস্তিনের জাতিগত নির্মূল, ফিলিস্তিনি পরিচয়কে সম্পূর্ণ মুছে ফেলা এবং নিজেদের ভূমিতে টিকে থাকা ফিলিস্তিনিদের দমন-পীড়নের শর্ত হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। ১৯৬৯ সালে ইসরায়েলের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী গোল্ডা মেয়ার মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টে এক নিবন্ধে লিখেছিলেন, ‘There is no such thing as Palestinians’, অর্থাৎ, ‘ফিলিস্তিনি বলে কিছু নেই।’ অর্থাৎ, খোদ ইসরায়েল রাষ্ট্রই ফিলিস্তিনের অস্তিত্ব স্বীকার করে না।
গাজা আগ্রাসনে ইসরায়েল রাষ্ট্রের জায়নবাদী নীতি এবং বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর রাজনৈতিক স্বার্থ এক বিন্দুতে মিলেছে। ফলে, তার জন্য গাজায় আগ্রাসন চালানোর রাজনৈতিক সমর্থন জোগাড় করা তুলনামূলক সহজই হয়েছে। যদিও অনেক ইসরায়েলিই গাজায় আগ্রাসনের বিপক্ষে এবং তাঁরা চান, ইসরায়েল গাজা থেকে হামাসের হাতে আটক জিম্মিদের ফিরিয়ে আনুক এবং যুদ্ধ শেষ করুক। কিন্তু নেতানিয়াহু তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার বাঁচাতে এসব জনআকাঙ্ক্ষা উপেক্ষা করছেন।
নেতানিয়াহু তাঁর ক্ষমতা ধরে রাখতে কট্টর জায়নবাদী নেতা ও সরকারের জোটসঙ্গী বেজালেল স্মটরিচ, ইসরায়েল কাৎজসহ অনেকের রাজনৈতিক সমর্থন লাভের আশায় যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন। বলা ভালো, প্রায় দুই মাসের যুদ্ধবিরতি ভেঙে তিনি আবারও গাজায় আগ্রাসন শুরু করেছেন। এতে তাঁর নগদ লাভ হয়েছে দুটি: প্রথমত, তাঁর বিরুদ্ধে চলমান দুর্নীতির মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের আইনি প্রক্রিয়া থেকে আপাতত বিরতি পেয়েছেন। দ্বিতীয়ত, তাঁর সরকারের জোটসঙ্গী দলগুলোর নেতারা আগ্রাসন পুনরায় শুরু করায় তাঁর পিঠ চাপড়ে দিয়েছেন।
নেতানিয়াহু চলতি মেয়াদে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন ২০২২ সালে। সেই হিসাবে তাঁর মেয়াদের তৃতীয় বছর চলে। তিনি চাইবেন মেয়াদ পূর্ণ করতে এবং আগামী মেয়াদে নির্বাচিত হতে। তবে এ জন্য, তাঁর রাজনৈতিক জোটসঙ্গীদের সমর্থন দরকার। নইলে যেকোনো সময় তাঁর সরকারের পতন হতে পারে।
গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন নেতানিয়াহুকে রাজনৈতিক পুঁজি দিয়েছে। গাজায় গণহত্যা শুরুর আগে, ইসরায়েলিরা কয়েক মাস ধরে নেতানিয়াহুর হাতে ‘দেশের আইনি ব্যবস্থা এবং গণতন্ত্রের ওপর আক্রমণ’ বলে মনে করা পদক্ষেপগুলোর বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ করেছে। কিন্তু তারা কখনোই তাদের রাষ্ট্র ও সামরিক বাহিনীর হাতে ফিলিস্তিনিদের ভূমি দখল, হত্যা এবং নৃশংসতার বিরুদ্ধে এত সংখ্যায় এবং এত জোরালোভাবে প্রতিবাদ করেনি।
গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যা শুরুর ঠিক এক মাস পর, ২০২৩ সালের নভেম্বরে মাত্র ১ দশমিক ৮ শতাংশ ইসরায়েলি বলেছিল, তারা বিশ্বাস করে—ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী গাজায় অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ করছে। আর গণহত্যার পাঁচ মাস পর গিয়ে প্রায় ৪০ শতাংশ ইসরায়েলি বলেছে, তারা গাজায় ইহুদি বসতি স্থাপন প্রকল্প পুনরায় চালু করার পক্ষে।
হাজার হাজার মৃত ও পঙ্গু ফিলিস্তিনির ছবি ইসরায়েলিদের কাছে তেমন অর্থ বহন করে না বলেই মনে হয়। প্লাস্টিকের ব্যাগে সন্তানের দেহাবশেষ বহনকারী বাবার আহাজারির ভিডিও বা নিহত শিশুদের রক্তাক্ত দেহের ওপর মায়েদের কান্নার ভিডিও তাদের মনে দাগ কাটে না। ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়া ক্ষুধার্ত শিশু বা মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষের মধ্যে অখাদ্য গ্রহণে বাধ্য হওয়া শিশুদের বিষক্রিয়ার ঘটনা তাদের স্পর্শ করে না। তাদের সামরিক বাহিনী নিরীহদের ওপর যে নির্যাতন চালাচ্ছে, সে বিষয়ে তারা কেবল উদাসীনই নয়—তাদের মধ্যে হাজার হাজার মানুষ ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনিদের কাছে কোনো সাহায্য যাতে পৌঁছাতে না পারে তা নিশ্চিত করতে সীমান্তে বিক্ষোভও করেছে। আর এসব বিষয়ই নেতানিয়াহুর হারানো রাজনৈতিক পুঁজি ফিরে পাওয়ার হাতিয়ার। ফলে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া তাঁর জন্য লাভজনক ব্যবসায়।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, জানুয়ারিতেই স্পষ্ট ছিল যে হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে হওয়া তিন পর্যায়ের চুক্তির দ্বিতীয় ধাপে অগ্রসর হওয়া অত্যন্ত কঠিন হবে। আজ তা প্রায় অসম্ভব বলে মনে হচ্ছে। এই চুক্তি নিয়ে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর প্রকাশ্য সংশয় ছিল। সাময়িক যুদ্ধবিরতিতে রাজি হলেও তিনি জোর দিয়ে বলেছিলেন, বাইডেন ও ট্রাম্প প্রশাসন উভয়ই আলোচনা ব্যর্থ হলে যুদ্ধ ফের শুরু করার অনুমতি দিয়েছে।
নেতানিয়াহু মধ্যস্থতাকারী মিসর ও কাতারের নির্ধারিত সময়সীমাকে উপেক্ষা করে আলোচনার পথে না গিয়ে, ওয়াশিংটনে গিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে সরাসরি সাক্ষাৎ করাকে অগ্রাধিকার দেন। এতে শুধু যুদ্ধবিরতির মূল চুক্তির মৃত্যুঘণ্টাই বাজেনি, বরং নেতানিয়াহু যুদ্ধ ফের শুরুর মাধ্যমে তাঁর মন্ত্রিসভার কট্টর ডানপন্থী অংশের সমর্থনও দৃঢ় করেছেন, যাদের সমর্থনের ওপর তাঁর রাজনৈতিক নির্ভর করছে। এই গোষ্ঠীগুলো যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া এবং হামাসকে সম্পূর্ণ বিনাশ করার পক্ষে, যদিও ইসরায়েলি সামরিক কর্মকর্তারাই বলেছেন, এটি অসম্ভব।
নেতানিয়াহু বরাবর নিরাপত্তা ও গোয়েন্দাপ্রধানদের পাশ কাটানোর চেষ্টা করেন। এরই মধ্যে তিনি সেদিক থেকে নজর সরিয়ে নিতে সক্ষম হয়েছেন এবং সাময়িকভাবে হলেও তাঁর দুর্নীতি মামলার শুনানি পেছানোর সুযোগ পেয়েছেন। বিরোধী রাজনীতিক, ইয়াইর গোলান বলেন, ‘সীমান্তে লড়াইরত সেনা ও গাজায় আটক বন্দীরা কেবল তাঁর (নেতানিয়াহুর) টিকে থাকার খেলায় দাবার ঘুঁটি।’
ইসরায়েলের বিরোধীদলীয় নেতা ইয়ের লাপিদ বলেছেন, ‘গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন শেষ করতে হলে নেতানিয়াহুকে রাজনৈতিক মূল্য দিতে হবে এবং তিনি সেই মূল্য দিতে ইচ্ছুক নন।’ তিনি বলেন, ‘ইসরায়েল সরকার কিছুই করতে চায় না, বা গাজায় বন্দী ব্যক্তিদের উদ্ধারের জন্য তাদের সমস্ত শক্তি বা ক্ষমতা দিয়ে কাজ করছে না।’
হামাসের হাতে বন্দীদের পরিবারগুলোর প্রতিনিধিত্বকারী একটি সংগঠন জানিয়েছে, তাদের সবচেয়ে বড় আশঙ্কা সত্যি হয়েছে। তারা বলেছে, ‘ইসরায়েল সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে বন্দীদের ত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
ইসরায়েলি জিম্মিদের পরিবার, বিরোধী রাজনীতিকদের কথা থেকে এটি স্পষ্ট যে, নেতানিয়াহু তাঁর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ বাঁচাতেই হাজারো মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করে যাচ্ছেন।
এত কিছুর পরও, গাজাবাসী মনোবল হারায়নি। কিন্তু শোক তাদের পাথর বানিয়ে দিয়েছে। তাদের শোকগাঁথা লিপিবদ্ধ করার জন্য কোনো শব্দই যেন যথেষ্ট নয়! প্রতিনিয়ত তারা ইসরায়েলের যে বর্বরতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, প্রতিদিন যে পরিমাণ মানুষ তাদের স্বজন হারাচ্ছে, সেই শোক, ব্যথা এবং হাহাকার আসলে কোনো শব্দ দিয়ে বর্ণনা করা সম্ভব নয়।
কিন্তু গাজাবাসীর আর্তনাদ, হাহাকার ‘গাজার কসাই’—যেমনটা বলেছিলেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান—নেতানিয়াহুর হৃদয়ে পৌঁছায় না। তাঁর কাছে এবং ইসরায়েলের কাছে, স্বার্থটাই বড়। সর্বাগ্রে জায়নবাদ এবং নেতানিয়াহুর রাজনৈতিক ক্যারিয়ার। এখানে গাজাবাসীর কোনো স্থান নেই। গোল্ডা মেয়ারের ভাষায় বললে, গাজা (ফিলিস্তিন) বলে কিছু নেই!
লেখক: আজকের পত্রিকার সহ–সম্পাদক
তথ্যসূত্র: আনাদোলু এজেন্সি, এক্সিওস, টাইমস অব ইসরায়েল, আল-জাজিরা, এপি, ডেইলি সাবাহ ও এএফপি

ফিলিস্তিনিদের দুর্দশা আজকের নয়। ১৯৪৮ সালে ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর থেকেই ফিলিস্তিনিরা অগণিত বার উচ্ছেদ, নির্যাতন, জাতিগত নিধন এবং নিপীড়নের শিকার হয়েছে। সর্বশেষ এতে বাড়তি মাত্রা যোগ করেছে গাজার কসাইখ্যাত ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। আর তাকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে উগ্র ইহুদি জাতীয়তাবাদ বা জায়োনিজম।
গাজায় সর্বশেষ আগ্রাসন শুরু হয় ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর। এরপর মাঝে দুই দফায় অল্প কিছু সময়ের জন্য বিরতি থাকলেও ইসরায়েলি হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৪৯ হাজার মানুষ। আহত হয়েছেন ১ লাখ ১২ হাজারের বেশি এবং নিখোঁজ প্রায় ১৪ হাজার। এই নিখোঁজদের বেশিরভাগই ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন। তাঁদের পচা-গলা লাশের দুর্গন্ধে ভারী হয়ে উঠেছে গাজার বাতাস। সেই সঙ্গে বাড়তি ভীতি যোগ করেছে টনকে টন বারুদের গন্ধ।
কিন্তু গাজায় ইসরায়েলি এই বর্বরতার কারণ কী? মোটা দাগে দুটি লাইনে বিষয়টি ব্যাখ্যা করা যায়। এক. ইসরায়েলি জায়নবাদের আকাঙ্ক্ষা। যেখানে, পুরো ফিলিস্তিন (১৯৪৮ সালের আগের) ভূখণ্ডকে ইসরায়েলিদের ‘প্রতিশ্রুত ভূমি’ মনে করা হয় এবং এখানে ফিলিস্তিনিদের দেখা হয় দখলদার হিসেবে। অথচ, এই ভূখণ্ডে এখন যেসব ইসরায়েলি বসবাস করছে, তাদের বেশির ভাগই ইউরোপসহ দুনিয়ার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা অভিবাসী। আরব ইহুদি সেখানে খুব সামান্যই।
জায়নবাদ অনুসারে, ইহুদিরা প্রতিশ্রুত ইসরায়েল ভূখণ্ড প্রতিষ্ঠা করতে চায়, যেখানে কোনো মুসলমান থাকবে না। আর তাই অখণ্ড ইসরায়েল প্রতিষ্ঠায় বাধা ফিলিস্তিনি মুসলমানেরা। কাজেই, তাদের উচ্ছেদ করতে হবে কিংবা যেকোনো মূল্যে নিকেশ করতে হবে। প্রয়োজনে চালাতে হবে ‘জাতিগত নিধন’। ঠিক সেই কাজটিই গাজায় করছে ইসরায়েল।
জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা এরই মধ্যে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের ওপর ক্রমবর্ধমান যৌন ও লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা চালানোর এবং মাতৃ ও প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা সুবিধাগুলোর পদ্ধতিগত ধ্বংসের মাধ্যমে ‘গণহত্যামূলক কর্মকাণ্ড’ চালানোর অভিযোগ তুলেছেন।
ইসরায়েল তো সরাসরি হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছেই, পাশাপাশি দেশটি পদ্ধতিগতভাবেও গণহত্যামূলক কাজ করে যাচ্ছে। যেমন, দেশটি ফিলিস্তিনিরা যাতে সন্তান জন্ম দিতে না পারে সে ব্যবস্থাও করছে ইসরায়েল। জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘রোম সংবিধি (স্ট্যাটিউট) এবং গণহত্যা কনভেনশন অনুসারে গণহত্যামূলক কর্মকাণ্ডকে দুটি ভাগে ভাগ করা যায় এবং এই দুটিই ইসরায়েল চালিয়ে যাচ্ছে ফিলিস্তিনে।’ এতে আরও বলা হয়েছে, ‘ফিলিস্তিনিদের ধ্বংস সাধনের উদ্দেশ্যে নিয়ন্ত্রিত জীবনযাত্রার পরিস্থিতি চাপিয়ে দেওয়া এবং সন্তান জন্মদান ঠেকাতে পদক্ষেপ আরোপ করা হচ্ছে।’
এখানেই থেমে নেই ইসরায়েল। দেশটি গাজাবাসীদের আফ্রিকার দেশগুলোতে স্থানান্তর করতে চায়। জায়নিবাদের এই আকাঙ্ক্ষাই যেন প্রতিফলিত হচ্ছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মুখ থেকে। তিনি যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের সরিয়ে দিয়ে নতুন করে নির্মাণের কথা বলছেন। ট্রাম্পের সেই প্রস্তাব সমর্থন করেছেন নেতানিয়াহু।
কিছুদিন আগেই, এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল গাজার লোকদের আফ্রিকার দেশ সুদান, সোমালিয়া এবং এর বিচ্ছিন্ন অঞ্চল সোমালিল্যান্ডে স্থানান্তরের কথা বলেছে। তারও আগে, খবর বেরিয়েছিল, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল গাজাবাসীদের মরোক্কো ও সোমালিয়ায় স্থানান্তর করতে চায়। যদিও মরক্কো এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে। কিন্তু সোমালিয়া বা সুদান এ বিষয়ে এখনো কিছু বলেনি। আরব বিশ্বের দেশগুলো গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের নিন্দা করেছে, এমনকি গাজার বিকল্প পুনর্গঠন পরিকল্পনাও গ্রহণ করেছে। কিন্তু যেটি আসলে করা প্রয়োজন—যুদ্ধ বন্ধ—সেটিই তারা করেনি।
যুক্তরাষ্ট্রে ফিলিস্তিনি অভিবাসী আহমেদ ইবসাইস বলেন, ‘গাজা এবং অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে আজ যে বর্ণবাদ, উগ্রবাদ এবং গণহত্যার অভিপ্রায় দেখা যাচ্ছে, তার জন্য শুধু নেতানিয়াহুকে দায়ী করা যায় না এবং করা উচিতও নয়।’ তাঁর মতে, এসবের পেছনে মূল কারণ হলো, ইসরায়েল রাষ্ট্র এবং এর জায়নবাদ। তাঁর মতে, ‘কেবল নেতানিয়াহুকে ফিলিস্তিনি জনগণের অতীত ও বর্তমানের দুঃখ-দুর্দশা এবং নিপীড়নের জন্য দোষারোপ করার মাধ্যমে, তারা এই মিথ্যাটিকে বাঁচিয়ে রাখে যে—ইসরায়েল জাতিগত নির্মূলের পরিবর্তে প্রগতিশীল আদর্শের ওপর নির্মিত হয়েছিল। কিন্তু আসলে তা নয়।’
শুরু থেকেই ইসরায়েল রাষ্ট্র তার দীর্ঘমেয়াদি অস্তিত্বকে ফিলিস্তিনের জাতিগত নির্মূল, ফিলিস্তিনি পরিচয়কে সম্পূর্ণ মুছে ফেলা এবং নিজেদের ভূমিতে টিকে থাকা ফিলিস্তিনিদের দমন-পীড়নের শর্ত হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। ১৯৬৯ সালে ইসরায়েলের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী গোল্ডা মেয়ার মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টে এক নিবন্ধে লিখেছিলেন, ‘There is no such thing as Palestinians’, অর্থাৎ, ‘ফিলিস্তিনি বলে কিছু নেই।’ অর্থাৎ, খোদ ইসরায়েল রাষ্ট্রই ফিলিস্তিনের অস্তিত্ব স্বীকার করে না।
গাজা আগ্রাসনে ইসরায়েল রাষ্ট্রের জায়নবাদী নীতি এবং বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর রাজনৈতিক স্বার্থ এক বিন্দুতে মিলেছে। ফলে, তার জন্য গাজায় আগ্রাসন চালানোর রাজনৈতিক সমর্থন জোগাড় করা তুলনামূলক সহজই হয়েছে। যদিও অনেক ইসরায়েলিই গাজায় আগ্রাসনের বিপক্ষে এবং তাঁরা চান, ইসরায়েল গাজা থেকে হামাসের হাতে আটক জিম্মিদের ফিরিয়ে আনুক এবং যুদ্ধ শেষ করুক। কিন্তু নেতানিয়াহু তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার বাঁচাতে এসব জনআকাঙ্ক্ষা উপেক্ষা করছেন।
নেতানিয়াহু তাঁর ক্ষমতা ধরে রাখতে কট্টর জায়নবাদী নেতা ও সরকারের জোটসঙ্গী বেজালেল স্মটরিচ, ইসরায়েল কাৎজসহ অনেকের রাজনৈতিক সমর্থন লাভের আশায় যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন। বলা ভালো, প্রায় দুই মাসের যুদ্ধবিরতি ভেঙে তিনি আবারও গাজায় আগ্রাসন শুরু করেছেন। এতে তাঁর নগদ লাভ হয়েছে দুটি: প্রথমত, তাঁর বিরুদ্ধে চলমান দুর্নীতির মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের আইনি প্রক্রিয়া থেকে আপাতত বিরতি পেয়েছেন। দ্বিতীয়ত, তাঁর সরকারের জোটসঙ্গী দলগুলোর নেতারা আগ্রাসন পুনরায় শুরু করায় তাঁর পিঠ চাপড়ে দিয়েছেন।
নেতানিয়াহু চলতি মেয়াদে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন ২০২২ সালে। সেই হিসাবে তাঁর মেয়াদের তৃতীয় বছর চলে। তিনি চাইবেন মেয়াদ পূর্ণ করতে এবং আগামী মেয়াদে নির্বাচিত হতে। তবে এ জন্য, তাঁর রাজনৈতিক জোটসঙ্গীদের সমর্থন দরকার। নইলে যেকোনো সময় তাঁর সরকারের পতন হতে পারে।
গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন নেতানিয়াহুকে রাজনৈতিক পুঁজি দিয়েছে। গাজায় গণহত্যা শুরুর আগে, ইসরায়েলিরা কয়েক মাস ধরে নেতানিয়াহুর হাতে ‘দেশের আইনি ব্যবস্থা এবং গণতন্ত্রের ওপর আক্রমণ’ বলে মনে করা পদক্ষেপগুলোর বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ করেছে। কিন্তু তারা কখনোই তাদের রাষ্ট্র ও সামরিক বাহিনীর হাতে ফিলিস্তিনিদের ভূমি দখল, হত্যা এবং নৃশংসতার বিরুদ্ধে এত সংখ্যায় এবং এত জোরালোভাবে প্রতিবাদ করেনি।
গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যা শুরুর ঠিক এক মাস পর, ২০২৩ সালের নভেম্বরে মাত্র ১ দশমিক ৮ শতাংশ ইসরায়েলি বলেছিল, তারা বিশ্বাস করে—ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী গাজায় অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ করছে। আর গণহত্যার পাঁচ মাস পর গিয়ে প্রায় ৪০ শতাংশ ইসরায়েলি বলেছে, তারা গাজায় ইহুদি বসতি স্থাপন প্রকল্প পুনরায় চালু করার পক্ষে।
হাজার হাজার মৃত ও পঙ্গু ফিলিস্তিনির ছবি ইসরায়েলিদের কাছে তেমন অর্থ বহন করে না বলেই মনে হয়। প্লাস্টিকের ব্যাগে সন্তানের দেহাবশেষ বহনকারী বাবার আহাজারির ভিডিও বা নিহত শিশুদের রক্তাক্ত দেহের ওপর মায়েদের কান্নার ভিডিও তাদের মনে দাগ কাটে না। ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়া ক্ষুধার্ত শিশু বা মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষের মধ্যে অখাদ্য গ্রহণে বাধ্য হওয়া শিশুদের বিষক্রিয়ার ঘটনা তাদের স্পর্শ করে না। তাদের সামরিক বাহিনী নিরীহদের ওপর যে নির্যাতন চালাচ্ছে, সে বিষয়ে তারা কেবল উদাসীনই নয়—তাদের মধ্যে হাজার হাজার মানুষ ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনিদের কাছে কোনো সাহায্য যাতে পৌঁছাতে না পারে তা নিশ্চিত করতে সীমান্তে বিক্ষোভও করেছে। আর এসব বিষয়ই নেতানিয়াহুর হারানো রাজনৈতিক পুঁজি ফিরে পাওয়ার হাতিয়ার। ফলে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া তাঁর জন্য লাভজনক ব্যবসায়।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, জানুয়ারিতেই স্পষ্ট ছিল যে হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে হওয়া তিন পর্যায়ের চুক্তির দ্বিতীয় ধাপে অগ্রসর হওয়া অত্যন্ত কঠিন হবে। আজ তা প্রায় অসম্ভব বলে মনে হচ্ছে। এই চুক্তি নিয়ে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর প্রকাশ্য সংশয় ছিল। সাময়িক যুদ্ধবিরতিতে রাজি হলেও তিনি জোর দিয়ে বলেছিলেন, বাইডেন ও ট্রাম্প প্রশাসন উভয়ই আলোচনা ব্যর্থ হলে যুদ্ধ ফের শুরু করার অনুমতি দিয়েছে।
নেতানিয়াহু মধ্যস্থতাকারী মিসর ও কাতারের নির্ধারিত সময়সীমাকে উপেক্ষা করে আলোচনার পথে না গিয়ে, ওয়াশিংটনে গিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে সরাসরি সাক্ষাৎ করাকে অগ্রাধিকার দেন। এতে শুধু যুদ্ধবিরতির মূল চুক্তির মৃত্যুঘণ্টাই বাজেনি, বরং নেতানিয়াহু যুদ্ধ ফের শুরুর মাধ্যমে তাঁর মন্ত্রিসভার কট্টর ডানপন্থী অংশের সমর্থনও দৃঢ় করেছেন, যাদের সমর্থনের ওপর তাঁর রাজনৈতিক নির্ভর করছে। এই গোষ্ঠীগুলো যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া এবং হামাসকে সম্পূর্ণ বিনাশ করার পক্ষে, যদিও ইসরায়েলি সামরিক কর্মকর্তারাই বলেছেন, এটি অসম্ভব।
নেতানিয়াহু বরাবর নিরাপত্তা ও গোয়েন্দাপ্রধানদের পাশ কাটানোর চেষ্টা করেন। এরই মধ্যে তিনি সেদিক থেকে নজর সরিয়ে নিতে সক্ষম হয়েছেন এবং সাময়িকভাবে হলেও তাঁর দুর্নীতি মামলার শুনানি পেছানোর সুযোগ পেয়েছেন। বিরোধী রাজনীতিক, ইয়াইর গোলান বলেন, ‘সীমান্তে লড়াইরত সেনা ও গাজায় আটক বন্দীরা কেবল তাঁর (নেতানিয়াহুর) টিকে থাকার খেলায় দাবার ঘুঁটি।’
ইসরায়েলের বিরোধীদলীয় নেতা ইয়ের লাপিদ বলেছেন, ‘গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন শেষ করতে হলে নেতানিয়াহুকে রাজনৈতিক মূল্য দিতে হবে এবং তিনি সেই মূল্য দিতে ইচ্ছুক নন।’ তিনি বলেন, ‘ইসরায়েল সরকার কিছুই করতে চায় না, বা গাজায় বন্দী ব্যক্তিদের উদ্ধারের জন্য তাদের সমস্ত শক্তি বা ক্ষমতা দিয়ে কাজ করছে না।’
হামাসের হাতে বন্দীদের পরিবারগুলোর প্রতিনিধিত্বকারী একটি সংগঠন জানিয়েছে, তাদের সবচেয়ে বড় আশঙ্কা সত্যি হয়েছে। তারা বলেছে, ‘ইসরায়েল সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে বন্দীদের ত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
ইসরায়েলি জিম্মিদের পরিবার, বিরোধী রাজনীতিকদের কথা থেকে এটি স্পষ্ট যে, নেতানিয়াহু তাঁর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ বাঁচাতেই হাজারো মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করে যাচ্ছেন।
এত কিছুর পরও, গাজাবাসী মনোবল হারায়নি। কিন্তু শোক তাদের পাথর বানিয়ে দিয়েছে। তাদের শোকগাঁথা লিপিবদ্ধ করার জন্য কোনো শব্দই যেন যথেষ্ট নয়! প্রতিনিয়ত তারা ইসরায়েলের যে বর্বরতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, প্রতিদিন যে পরিমাণ মানুষ তাদের স্বজন হারাচ্ছে, সেই শোক, ব্যথা এবং হাহাকার আসলে কোনো শব্দ দিয়ে বর্ণনা করা সম্ভব নয়।
কিন্তু গাজাবাসীর আর্তনাদ, হাহাকার ‘গাজার কসাই’—যেমনটা বলেছিলেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান—নেতানিয়াহুর হৃদয়ে পৌঁছায় না। তাঁর কাছে এবং ইসরায়েলের কাছে, স্বার্থটাই বড়। সর্বাগ্রে জায়নবাদ এবং নেতানিয়াহুর রাজনৈতিক ক্যারিয়ার। এখানে গাজাবাসীর কোনো স্থান নেই। গোল্ডা মেয়ারের ভাষায় বললে, গাজা (ফিলিস্তিন) বলে কিছু নেই!
লেখক: আজকের পত্রিকার সহ–সম্পাদক
তথ্যসূত্র: আনাদোলু এজেন্সি, এক্সিওস, টাইমস অব ইসরায়েল, আল-জাজিরা, এপি, ডেইলি সাবাহ ও এএফপি

গত ২৬ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম জাতিসংঘ সদস্য দেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তকে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর একটি সাহসী সম্প্রসারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
১০ ঘণ্টা আগে
মধ্যপ্রাচ্যের মূল ভূখণ্ড হারানোর পর আইএস এখন মূলত স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন সেলের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, কঙ্গো এবং সাহেল অঞ্চলে আইএস অত্যন্ত শক্তিশালী। নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘আইএসডব্লিউএপি’ এবং উত্তর-পশ্চিমে বিভিন্ন অনুসারী গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে।
১ দিন আগে
নাইজেরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ মুসলমান, ৪৫ শতাংশ খ্রিষ্টান এবং অন্যরা আফ্রিকার ঐতিহ্যগত কিছু ধর্মে বিশ্বাসী। খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক মনোযোগ পেলেও বহু বিশ্লেষকের মতে, বিষয়টি কেবল ধর্মীয় নিপীড়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এর পেছন
১ দিন আগে
ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে।
৬ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

২৬ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম জাতিসংঘ সদস্যদেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তকে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর একটি সাহসী সম্প্রসারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। হর্ন অব আফ্রিকার এই স্বঘোষিত স্বাধীন মুসলিমপ্রধান ভূখণ্ডটির প্রতি ইসরায়েলের এই গভীর আগ্রহ নিছক কোনো কূটনৈতিক সৌজন্য নয়; বরং এর পেছনে রয়েছে কয়েক দশকের সুদূরপ্রসারী কৌশলগত পরিকল্পনা, নিরাপত্তাঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এবং বিশাল অর্থনৈতিক সম্ভাবনা।
সোমালিল্যান্ডের অবস্থান এডেন উপসাগরের তীরে, যা সরাসরি ইয়েমেনের উল্টো দিকে এবং বাব আল-মানদেব প্রণালির ঠিক পাশেই অবস্থিত। বিশ্বের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ জলপথের বাণিজ্য এই পথেই পরিচালিত হয়।
২০২৩ সাল থেকে ইরান-সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীরা লোহিত সাগরে ইসরায়েলি সংশ্লিষ্ট জাহাজগুলোতে নিয়মিত হামলা চালিয়ে আসছে। সোমালিল্যান্ডের উপকূলরেখা থেকে হুতিদের মূল ঘাঁটি হোদেইদাহর দূরত্ব ৩০০ থেকে ৫০০ কিলোমিটার। ইসরায়েলের জন্য সোমালিল্যান্ড একটি ‘ফরোয়ার্ড ডিফেন্স’ বা সম্মুখ প্রতিরক্ষা ঘাঁটি হিসেবে কাজ করবে।
ইসরায়েলি থিংকট্যাংক (আইএনএসএস)-এর মতে, সোমালিল্যান্ডে গোয়েন্দা ঘাঁটি স্থাপনের মাধ্যমে ইরান থেকে ইয়েমেনে আসা অস্ত্র চোরাচালান এবং হুতিদের গতিবিধির ওপর সার্বক্ষণিক নজর রাখা সম্ভব হবে। এমনকি সংযুক্ত আরব আমিরাতের অর্থায়নে নির্মিত বারবেরা বন্দর ইসরায়েলি নৌ টহল বা ড্রোন অপারেশনের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠতে পারে।
হর্ন অব আফ্রিকায় ইসরায়েলের এই প্রবেশ মূলত তার আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের আধিপত্য কমানোর একটি পাল্টা কৌশল। তুরস্ক ইতিমধ্যে সোমালিয়ার মোগাদিশুতে বিশাল সামরিক ঘাঁটি এবং বন্দরগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। ইসরায়েল মনে করে, সোমালিল্যান্ডের সঙ্গে জোরালো মৈত্রী এই অঞ্চলে তুরস্কের একক আধিপত্যে ভারসাম্য বজায় রাখবে।
এ ছাড়া ইসরায়েল সব সময় নিজের সীমানার বাইরে মিত্র দেশগুলোতে নিজের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে চায়। সোমালিল্যান্ডের মতো একটি স্থিতিশীল এবং পশ্চিমাপন্থী প্রশাসনের সঙ্গে বন্ধুত্ব ইসরায়েলকে লোহিত সাগরের নিরাপত্তা বলয়ে একক কর্তৃত্ব দেবে।
অর্থনৈতিক সম্ভাবনা ও প্রাকৃতিক সম্পদের ভান্ডারও আগ্রহের মূলে রয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, সোমালিল্যান্ড কেবল একটি কৌশলগত বন্দর নয়, বরং এটি সম্পদের একটি অব্যবহৃত খনি।
সোমালিল্যান্ডে বিপুল পরিমাণ অপরিশোধিত তেল, গ্যাস এবং বিরল মৃত্তিকা খনিজ মজুত থাকার জোরালো সম্ভাবনা রয়েছে। ইসরায়েলের উচ্চ প্রযুক্তি এবং অস্ত্র তৈরির কারখানায় এই কাঁচামালগুলো অত্যন্ত জরুরি।
ইসরায়েল ইতিমধ্যে কৃষি ক্ষেত্রে লবণাক্ত পানি পরিশোধন, উন্নত সেচব্যবস্থা এবং সাইবার নিরাপত্তা খাতে বড় বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সোমালিল্যান্ডের জন্য এই অংশীদারত্ব হবে অর্থনৈতিক স্বাধীনতার চাবিকাঠি।
তবে এতে কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জও রয়েছে। ইসরায়েলের এই স্বীকৃতি যেমন সোমালিল্যান্ডের জন্য বৈধতার দ্বার উন্মোচন করেছে, তেমনি এটি আঞ্চলিক উত্তেজনারও জন্ম দিয়েছে।
সোমালিয়া এই পদক্ষেপকে তাদের অখণ্ডতার ওপর ‘সরাসরি আক্রমণ’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। আফ্রিকান ইউনিয়ন (এইউ) এবং আরব লিগ এই স্বীকৃতির তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং সতর্ক করেছে যে এটি আফ্রিকা মহাদেশে নতুন করে অস্থিতিশীলতা তৈরি করতে পারে।
পশ্চিমা বিশ্বও ইসরায়েলের এই পদক্ষেপে দ্বিধাগ্রস্ত। মার্কিন সিনেটর টেড ক্রুজ সোমালিল্যান্ডকে একটি নির্ভরযোগ্য অংশীদার হিসেবে সমর্থন করলেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র এখনই এই পথে হাঁটবে না, বরং পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবে।
সর্বোপরি ইসরায়েলের জন্য সোমালিল্যান্ড একটি স্থিতিশীল এবং দীর্ঘমেয়াদি মিত্র, যারা সন্ত্রাসবাদ দমনে ইসরায়েলের সমমনা বলেই মনে করা হয়। এই স্বীকৃতির মাধ্যমে ইসরায়েল লোহিত সাগরে নিজের নৌ-শক্তির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চায়। তবে এই পদক্ষেপ যদি ইথিওপিয়া বা সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো দেশগুলোকে সোমালিল্যান্ডকে স্বীকৃতি দিতে উৎসাহিত করবে। তবে এর ফলে হর্ন অব আফ্রিকার মানচিত্র এবং ভূরাজনীতি চিরতরে বদলে যেতে পারে। এটি যেমন একটি নতুন সামরিক ও অর্থনৈতিক অক্ষের সম্ভাবনা তৈরি করেছে, তেমনি আঞ্চলিক সংঘাতের ঝুঁকিও বাড়িয়ে দিয়েছে।
তথ্যসূত্র: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট, রয়টার্স, আল জাজিরা এবং আটলান্টিক কাউন্সিল।

২৬ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম জাতিসংঘ সদস্যদেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তকে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর একটি সাহসী সম্প্রসারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। হর্ন অব আফ্রিকার এই স্বঘোষিত স্বাধীন মুসলিমপ্রধান ভূখণ্ডটির প্রতি ইসরায়েলের এই গভীর আগ্রহ নিছক কোনো কূটনৈতিক সৌজন্য নয়; বরং এর পেছনে রয়েছে কয়েক দশকের সুদূরপ্রসারী কৌশলগত পরিকল্পনা, নিরাপত্তাঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এবং বিশাল অর্থনৈতিক সম্ভাবনা।
সোমালিল্যান্ডের অবস্থান এডেন উপসাগরের তীরে, যা সরাসরি ইয়েমেনের উল্টো দিকে এবং বাব আল-মানদেব প্রণালির ঠিক পাশেই অবস্থিত। বিশ্বের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ জলপথের বাণিজ্য এই পথেই পরিচালিত হয়।
২০২৩ সাল থেকে ইরান-সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীরা লোহিত সাগরে ইসরায়েলি সংশ্লিষ্ট জাহাজগুলোতে নিয়মিত হামলা চালিয়ে আসছে। সোমালিল্যান্ডের উপকূলরেখা থেকে হুতিদের মূল ঘাঁটি হোদেইদাহর দূরত্ব ৩০০ থেকে ৫০০ কিলোমিটার। ইসরায়েলের জন্য সোমালিল্যান্ড একটি ‘ফরোয়ার্ড ডিফেন্স’ বা সম্মুখ প্রতিরক্ষা ঘাঁটি হিসেবে কাজ করবে।
ইসরায়েলি থিংকট্যাংক (আইএনএসএস)-এর মতে, সোমালিল্যান্ডে গোয়েন্দা ঘাঁটি স্থাপনের মাধ্যমে ইরান থেকে ইয়েমেনে আসা অস্ত্র চোরাচালান এবং হুতিদের গতিবিধির ওপর সার্বক্ষণিক নজর রাখা সম্ভব হবে। এমনকি সংযুক্ত আরব আমিরাতের অর্থায়নে নির্মিত বারবেরা বন্দর ইসরায়েলি নৌ টহল বা ড্রোন অপারেশনের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠতে পারে।
হর্ন অব আফ্রিকায় ইসরায়েলের এই প্রবেশ মূলত তার আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের আধিপত্য কমানোর একটি পাল্টা কৌশল। তুরস্ক ইতিমধ্যে সোমালিয়ার মোগাদিশুতে বিশাল সামরিক ঘাঁটি এবং বন্দরগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। ইসরায়েল মনে করে, সোমালিল্যান্ডের সঙ্গে জোরালো মৈত্রী এই অঞ্চলে তুরস্কের একক আধিপত্যে ভারসাম্য বজায় রাখবে।
এ ছাড়া ইসরায়েল সব সময় নিজের সীমানার বাইরে মিত্র দেশগুলোতে নিজের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে চায়। সোমালিল্যান্ডের মতো একটি স্থিতিশীল এবং পশ্চিমাপন্থী প্রশাসনের সঙ্গে বন্ধুত্ব ইসরায়েলকে লোহিত সাগরের নিরাপত্তা বলয়ে একক কর্তৃত্ব দেবে।
অর্থনৈতিক সম্ভাবনা ও প্রাকৃতিক সম্পদের ভান্ডারও আগ্রহের মূলে রয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, সোমালিল্যান্ড কেবল একটি কৌশলগত বন্দর নয়, বরং এটি সম্পদের একটি অব্যবহৃত খনি।
সোমালিল্যান্ডে বিপুল পরিমাণ অপরিশোধিত তেল, গ্যাস এবং বিরল মৃত্তিকা খনিজ মজুত থাকার জোরালো সম্ভাবনা রয়েছে। ইসরায়েলের উচ্চ প্রযুক্তি এবং অস্ত্র তৈরির কারখানায় এই কাঁচামালগুলো অত্যন্ত জরুরি।
ইসরায়েল ইতিমধ্যে কৃষি ক্ষেত্রে লবণাক্ত পানি পরিশোধন, উন্নত সেচব্যবস্থা এবং সাইবার নিরাপত্তা খাতে বড় বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সোমালিল্যান্ডের জন্য এই অংশীদারত্ব হবে অর্থনৈতিক স্বাধীনতার চাবিকাঠি।
তবে এতে কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জও রয়েছে। ইসরায়েলের এই স্বীকৃতি যেমন সোমালিল্যান্ডের জন্য বৈধতার দ্বার উন্মোচন করেছে, তেমনি এটি আঞ্চলিক উত্তেজনারও জন্ম দিয়েছে।
সোমালিয়া এই পদক্ষেপকে তাদের অখণ্ডতার ওপর ‘সরাসরি আক্রমণ’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। আফ্রিকান ইউনিয়ন (এইউ) এবং আরব লিগ এই স্বীকৃতির তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং সতর্ক করেছে যে এটি আফ্রিকা মহাদেশে নতুন করে অস্থিতিশীলতা তৈরি করতে পারে।
পশ্চিমা বিশ্বও ইসরায়েলের এই পদক্ষেপে দ্বিধাগ্রস্ত। মার্কিন সিনেটর টেড ক্রুজ সোমালিল্যান্ডকে একটি নির্ভরযোগ্য অংশীদার হিসেবে সমর্থন করলেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র এখনই এই পথে হাঁটবে না, বরং পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবে।
সর্বোপরি ইসরায়েলের জন্য সোমালিল্যান্ড একটি স্থিতিশীল এবং দীর্ঘমেয়াদি মিত্র, যারা সন্ত্রাসবাদ দমনে ইসরায়েলের সমমনা বলেই মনে করা হয়। এই স্বীকৃতির মাধ্যমে ইসরায়েল লোহিত সাগরে নিজের নৌ-শক্তির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চায়। তবে এই পদক্ষেপ যদি ইথিওপিয়া বা সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো দেশগুলোকে সোমালিল্যান্ডকে স্বীকৃতি দিতে উৎসাহিত করবে। তবে এর ফলে হর্ন অব আফ্রিকার মানচিত্র এবং ভূরাজনীতি চিরতরে বদলে যেতে পারে। এটি যেমন একটি নতুন সামরিক ও অর্থনৈতিক অক্ষের সম্ভাবনা তৈরি করেছে, তেমনি আঞ্চলিক সংঘাতের ঝুঁকিও বাড়িয়ে দিয়েছে।
তথ্যসূত্র: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট, রয়টার্স, আল জাজিরা এবং আটলান্টিক কাউন্সিল।

জায়নবাদ অনুসারে, ইহুদিরা প্রতিশ্রুত ইসরায়েল ভূখণ্ড প্রতিষ্ঠা করতে চায়, যেখানে কোনো মুসলমান থাকবে না। আর তাই অখণ্ড ইসরায়েল প্রতিষ্ঠায় বাধা ফিলিস্তিনি মুসলমানেরা। কাজেই, তাদের উচ্ছেদ করতে হবে কিংবা যেকোনো মূল্যে নিকেশ করতে হবে। প্রয়োজনে চালাতে হবে ‘জাতিগত নিধন’। ঠিক সেই কাজটিই গাজায় করছে ইসরায়েল।
১৯ মার্চ ২০২৫
মধ্যপ্রাচ্যের মূল ভূখণ্ড হারানোর পর আইএস এখন মূলত স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন সেলের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, কঙ্গো এবং সাহেল অঞ্চলে আইএস অত্যন্ত শক্তিশালী। নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘আইএসডব্লিউএপি’ এবং উত্তর-পশ্চিমে বিভিন্ন অনুসারী গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে।
১ দিন আগে
নাইজেরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ মুসলমান, ৪৫ শতাংশ খ্রিষ্টান এবং অন্যরা আফ্রিকার ঐতিহ্যগত কিছু ধর্মে বিশ্বাসী। খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক মনোযোগ পেলেও বহু বিশ্লেষকের মতে, বিষয়টি কেবল ধর্মীয় নিপীড়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এর পেছন
১ দিন আগে
ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে।
৬ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

বড়দিনের রাতে নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সোকোটো রাজ্যে মার্কিন বাহিনীর বিমান হামলা বিশ্বজুড়ে নতুন করে আলোচনায় নিয়ে এসেছে জঙ্গিগোষ্ঠী ‘ইসলামিক স্টেট’ বা আইএসকে। মধ্যপ্রাচ্যে পরাজয়ের পর গোষ্ঠীটি এখন আফ্রিকায় তাদের জাল বিস্তার করছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, নাইজেরিয়ায় খ্রিষ্টানদের লক্ষ্য করে নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালানোর কারণে তিনি এ হামলার নির্দেশ দিয়েছেন।
ইসলামিক স্টেট কী
ইসলামিক স্টেট (যাকে আইএসআইএস বা দায়েশ নামেও ডাকা হয়) একটি সুন্নি চরমপন্থী গোষ্ঠী। ইরাক ও সিরিয়ায় উত্থান ঘটিয়ে তারা একসময় ‘খিলাফত’ ঘোষণা করেছিল। এরপর ২০১৪ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে ইরাক ও সিরিয়ার বিশাল অংশ তাদের দখলে ছিল। তখন তারা কঠোর শরিয়াহ আইন জারি করে এবং প্রকাশ্যে শিরশ্ছেদ ও নির্যাতনের মতো নৃশংসতা চালিয়ে বিশ্বকে স্তব্ধ করে দেয়।
পরে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনীর ক্রমাগত অভিযানের মুখে ইরাকের মসুল ও সিরিয়ার রাক্কায় তাদের পতন ঘটে। তবে সংগঠনটি পুরোপুরি নির্মূল না হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে।
বর্তমানে তারা কোথায় সক্রিয়
মধ্যপ্রাচ্যের মূল ভূখণ্ড হারানোর পর আইএস এখন মূলত স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন সেলের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, কঙ্গো এবং সাহেল অঞ্চলে আইএস অত্যন্ত শক্তিশালী। নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘আইএসডব্লিউএপি’ এবং উত্তর-পশ্চিমে বিভিন্ন অনুসারী গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে।
এশিয়া মহাদেশের মধ্যে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে ‘আইএস-খোরাসান’ নামে তারা সক্রিয়। এ ছাড়া ফিলিপাইনের মিন্দানাও অঞ্চলেও তাদের অনুসারী রয়েছে। জাতিসংঘ মনে করে, বর্তমানে তাদের অন্তত ১০ হাজার সক্রিয় সদস্য রয়েছে।
লক্ষ্য ও বর্তমান কৌশল
আইএসের মূল লক্ষ্য তাদের চরমপন্থী মতাদর্শ বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে দেওয়া। তবে সরাসরি যুদ্ধের বদলে তারা এখন কিছু নতুন কৌশল নিয়েছে। যেমন, অ্যাফিলিয়েট নেটওয়ার্ক—নিজেরা সরাসরি যুক্ত না হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানীয় জঙ্গিগোষ্ঠীকে নিজেদের ‘শাখা’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে প্রভাব বিস্তার করা। লোন উলফ অ্যাটাক—সংঘবদ্ধ হামলার পরিবর্তে একজন বা দুই ব্যক্তির সমন্বয়ে বড় ধরনের হামলা। সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই বিচে ইহুদিদের এক অনুষ্ঠানে বন্দুক হামলার পেছনে আইএসের এই কৌশল ছিল বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। অনলাইন প্রচারণা—টেলিগ্রামের মতো প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে আতঙ্ক ছড়ানো এবং নতুন সদস্য সংগ্রহ করা।
মার্কিন সামরিক বাহিনীর মতে, আইএসের বর্তমান বিশ্ব নেতা হলেন আবদুলকাদির মুমিন। তিনি বর্তমানে আইএসের সোমালিয়া শাখার প্রধান।
আইএসের সাম্প্রতিক কিছু বড় হামলা
কঙ্গোতে চলতি বছরের গত অক্টোবরে একটি গির্জায় নৈশকালীন প্রার্থনার সময় হামলায় ৪৩ জন নিহত হয়, যার দায় স্বীকার করে আইএস। গত ফেব্রুয়ারিতে সোমালিয়ায় একাধিক সামরিক ঘাঁটিতে আত্মঘাতী গাড়িবোমা হামলা চালায় আইএস। চলতি মাসে সিরিয়ায় দুই মার্কিন সেনা ও একজন দোভাষী নিহত হন, যার নেপথ্যে আইএসের হাত রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনার পর চলতি সপ্তাহে সিরিয়ায় আইএসের ঘাঁটি লক্ষ্য করে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে মার্কিন সামরিক বাহিনী।
নাইজেরিয়ায় মার্কিন হামলা এটাই প্রমাণ করে যে, আইএস এখন আর কেবল মধ্যপ্রাচ্যের সমস্যা নয়। বিশেষ করে, সাহেল ও পশ্চিম আফ্রিকায় তাদের ক্রমবর্ধমান শক্তি বিশ্ব নিরাপত্তার জন্য নতুন এক চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রয়টার্স থেকে সংক্ষেপে অনূদিত

বড়দিনের রাতে নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সোকোটো রাজ্যে মার্কিন বাহিনীর বিমান হামলা বিশ্বজুড়ে নতুন করে আলোচনায় নিয়ে এসেছে জঙ্গিগোষ্ঠী ‘ইসলামিক স্টেট’ বা আইএসকে। মধ্যপ্রাচ্যে পরাজয়ের পর গোষ্ঠীটি এখন আফ্রিকায় তাদের জাল বিস্তার করছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, নাইজেরিয়ায় খ্রিষ্টানদের লক্ষ্য করে নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালানোর কারণে তিনি এ হামলার নির্দেশ দিয়েছেন।
ইসলামিক স্টেট কী
ইসলামিক স্টেট (যাকে আইএসআইএস বা দায়েশ নামেও ডাকা হয়) একটি সুন্নি চরমপন্থী গোষ্ঠী। ইরাক ও সিরিয়ায় উত্থান ঘটিয়ে তারা একসময় ‘খিলাফত’ ঘোষণা করেছিল। এরপর ২০১৪ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে ইরাক ও সিরিয়ার বিশাল অংশ তাদের দখলে ছিল। তখন তারা কঠোর শরিয়াহ আইন জারি করে এবং প্রকাশ্যে শিরশ্ছেদ ও নির্যাতনের মতো নৃশংসতা চালিয়ে বিশ্বকে স্তব্ধ করে দেয়।
পরে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনীর ক্রমাগত অভিযানের মুখে ইরাকের মসুল ও সিরিয়ার রাক্কায় তাদের পতন ঘটে। তবে সংগঠনটি পুরোপুরি নির্মূল না হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে।
বর্তমানে তারা কোথায় সক্রিয়
মধ্যপ্রাচ্যের মূল ভূখণ্ড হারানোর পর আইএস এখন মূলত স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন সেলের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, কঙ্গো এবং সাহেল অঞ্চলে আইএস অত্যন্ত শক্তিশালী। নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘আইএসডব্লিউএপি’ এবং উত্তর-পশ্চিমে বিভিন্ন অনুসারী গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে।
এশিয়া মহাদেশের মধ্যে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে ‘আইএস-খোরাসান’ নামে তারা সক্রিয়। এ ছাড়া ফিলিপাইনের মিন্দানাও অঞ্চলেও তাদের অনুসারী রয়েছে। জাতিসংঘ মনে করে, বর্তমানে তাদের অন্তত ১০ হাজার সক্রিয় সদস্য রয়েছে।
লক্ষ্য ও বর্তমান কৌশল
আইএসের মূল লক্ষ্য তাদের চরমপন্থী মতাদর্শ বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে দেওয়া। তবে সরাসরি যুদ্ধের বদলে তারা এখন কিছু নতুন কৌশল নিয়েছে। যেমন, অ্যাফিলিয়েট নেটওয়ার্ক—নিজেরা সরাসরি যুক্ত না হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানীয় জঙ্গিগোষ্ঠীকে নিজেদের ‘শাখা’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে প্রভাব বিস্তার করা। লোন উলফ অ্যাটাক—সংঘবদ্ধ হামলার পরিবর্তে একজন বা দুই ব্যক্তির সমন্বয়ে বড় ধরনের হামলা। সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই বিচে ইহুদিদের এক অনুষ্ঠানে বন্দুক হামলার পেছনে আইএসের এই কৌশল ছিল বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। অনলাইন প্রচারণা—টেলিগ্রামের মতো প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে আতঙ্ক ছড়ানো এবং নতুন সদস্য সংগ্রহ করা।
মার্কিন সামরিক বাহিনীর মতে, আইএসের বর্তমান বিশ্ব নেতা হলেন আবদুলকাদির মুমিন। তিনি বর্তমানে আইএসের সোমালিয়া শাখার প্রধান।
আইএসের সাম্প্রতিক কিছু বড় হামলা
কঙ্গোতে চলতি বছরের গত অক্টোবরে একটি গির্জায় নৈশকালীন প্রার্থনার সময় হামলায় ৪৩ জন নিহত হয়, যার দায় স্বীকার করে আইএস। গত ফেব্রুয়ারিতে সোমালিয়ায় একাধিক সামরিক ঘাঁটিতে আত্মঘাতী গাড়িবোমা হামলা চালায় আইএস। চলতি মাসে সিরিয়ায় দুই মার্কিন সেনা ও একজন দোভাষী নিহত হন, যার নেপথ্যে আইএসের হাত রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনার পর চলতি সপ্তাহে সিরিয়ায় আইএসের ঘাঁটি লক্ষ্য করে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে মার্কিন সামরিক বাহিনী।
নাইজেরিয়ায় মার্কিন হামলা এটাই প্রমাণ করে যে, আইএস এখন আর কেবল মধ্যপ্রাচ্যের সমস্যা নয়। বিশেষ করে, সাহেল ও পশ্চিম আফ্রিকায় তাদের ক্রমবর্ধমান শক্তি বিশ্ব নিরাপত্তার জন্য নতুন এক চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রয়টার্স থেকে সংক্ষেপে অনূদিত

জায়নবাদ অনুসারে, ইহুদিরা প্রতিশ্রুত ইসরায়েল ভূখণ্ড প্রতিষ্ঠা করতে চায়, যেখানে কোনো মুসলমান থাকবে না। আর তাই অখণ্ড ইসরায়েল প্রতিষ্ঠায় বাধা ফিলিস্তিনি মুসলমানেরা। কাজেই, তাদের উচ্ছেদ করতে হবে কিংবা যেকোনো মূল্যে নিকেশ করতে হবে। প্রয়োজনে চালাতে হবে ‘জাতিগত নিধন’। ঠিক সেই কাজটিই গাজায় করছে ইসরায়েল।
১৯ মার্চ ২০২৫
গত ২৬ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম জাতিসংঘ সদস্য দেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তকে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর একটি সাহসী সম্প্রসারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
১০ ঘণ্টা আগে
নাইজেরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ মুসলমান, ৪৫ শতাংশ খ্রিষ্টান এবং অন্যরা আফ্রিকার ঐতিহ্যগত কিছু ধর্মে বিশ্বাসী। খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক মনোযোগ পেলেও বহু বিশ্লেষকের মতে, বিষয়টি কেবল ধর্মীয় নিপীড়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এর পেছন
১ দিন আগে
ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে।
৬ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

নাইজেরিয়ার সরকার খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়ন ঠেকাতে ব্যর্থ—এমন অভিযোগে কয়েক সপ্তাহ ধরে সমালোচনার পর অবশেষে বড়দিনের রাতে (২৫ ডিসেম্বর) পশ্চিম আফ্রিকার দেশটিতে বিমান হামলা চালিয়েছে মার্কিন বাহিনী। সরাসরি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সোকোটো রাজ্যে এ হামলা চালানো হয়।
ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান বলছে, ট্রাম্প প্রশাসন আইএস জঙ্গিদের একাধিক আস্তানা লক্ষ্য করে এসব হামলা চালায়। হামলায় মার্কিন নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ থেকে টমাহক মিসাইল নিক্ষেপ করা হয়েছিল। এসব হামলায় একাধিক আইএস জঙ্গি নিহত ও তাঁদের আস্তানা ধ্বংস হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে, তবে সঠিক সংখ্যা এখনো জানানো হয়নি।
ট্রাম্প প্রশাসনের সাম্প্রতিক বিদেশি সামরিক হস্তক্ষেপগুলোর সর্বশেষ উদাহরণ নাইজেরিয়ায় হামলা। অথচ ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী প্রচারণায় তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে ‘অন্তহীন যুদ্ধ’ থেকে বের করে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দাবি করেছেন, এই হামলার মূল উদ্দেশ্য ছিল নাইজেরিয়ায় বসবাসরত খ্রিষ্টানদের ওপর চলমান হত্যাযজ্ঞ বন্ধ করা। তাঁর মতে, আইএস জঙ্গিরা পরিকল্পিতভাবে খ্রিষ্টানদের লক্ষ্যবস্তু বানাচ্ছে। হামলার ঘোষণা দিয়ে ট্রাম্প তাঁর ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে লিখেছিলেন, ‘আমি আগেই এই সন্ত্রাসীদের সতর্ক করেছিলাম, তারা যদি খ্রিষ্টানদের হত্যা বন্ধ না করে, তবে তাদের চড়ম মূল্য দিতে হবে। আজ রাতে (বড়দিন) ঠিক তা-ই ঘটেছে।’
গত অক্টোবর ও নভেম্বর মাসেও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নাইজেরিয়ার নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে ‘খ্রিষ্টান গণহত্যার’ শামিল বলে অভিহিত করেছিলেন।
মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের এক কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এপিকে জানান, নাইজেরিয়া সরকারের অনুমোদন নিয়ে দেশটির সঙ্গে সমন্বয় করেই এসব হামলা চালানো হয়েছে। নাইজেরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, এই সহযোগিতার মধ্যে গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদান ও কৌশলগত সমন্বয় ছিল।
কেন নাইজেরিয়ায় হামলা চালাল ট্রাম্প প্রশাসন
অনেক আগে থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের ডানপন্থী রাজনীতিক গোষ্ঠীগুলো নাইজেরিয়ায় খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়নের অভিযোগ তুলছে। গত সেপ্টেম্বরে রিপাবলিকান সিনেটর টেড ক্রুজ কিছু নাইজেরীয় কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞার আহ্বান জানান। তিনি দাবি করেন, যারা ‘ইসলামপন্থী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর মাধ্যমে খ্রিষ্টান ও অন্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা সহজতর করছে’, তাদের নিষিদ্ধ করা উচিত।
তবে বর্তমানে বিষয়টি মার্কিন ডানপন্থী ও ইভানজেলিক্যাল খ্রিষ্টান মহলে বড় ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে। আবার এই ডানপন্থী ও ইভানজেলিক্যাল খ্রিষ্টানরাই ট্রাম্পের বড় সমর্থক। বিশ্লেষকদের মতে, নিজের সমর্থকদের তুষ্ট করতে এবং বিশ্বজুড়ে ‘খ্রিষ্টানদের রক্ষাকর্তা’ হিসেবে নিজেকে জাহির করতেই ট্রাম্প এই ত্বরিত সামরিক পদক্ষেপ নিয়েছেন।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা আইনের আওতায় নাইজেরিয়াকে ‘বিশেষ উদ্বেগের দেশ’ হিসেবে চিহ্নিত করেন ট্রাম্প। বেশ কিছু মার্কিন আইনপ্রণেতা ও রক্ষণশীল খ্রিষ্টান গোষ্ঠীর লাগাতার লবিংয়ের পর এই সিদ্ধান্ত আসে। এর কিছুদিন পরই তিনি নাইজেরিয়ায় সম্ভাব্য সামরিক অভিযানের পরিকল্পনা করতে পেন্টাগনকে নির্দেশ দেন। সে সময় ট্রাম্প বলেন, নাইজেরিয়া সরকার যদি খ্রিষ্টান হত্যাকাণ্ড বন্ধ না করে, তবে তিনি ‘গানস-এ-ব্লেজিং’ অর্থাৎ পূর্ণ শক্তি নিয়ে হস্তক্ষেপ করতে পারেন।
নাইজেরিয়ায় কি আসলেই খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়ন চলছে
নাইজেরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ মুসলমান, ৪৫ শতাংশ খ্রিষ্টান এবং অন্যরা আফ্রিকার ঐতিহ্যগত কিছু ধর্মে বিশ্বাসী। খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক মনোযোগ পেলেও বহু বিশ্লেষকের মতে, বিষয়টি কেবল ধর্মীয় নিপীড়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; এর পেছনে নানা কারণ রয়েছে।
উদাহরণ হিসেবে, যাযাবর মুসলিম পশুপালক ও খ্রিষ্টান কৃষক সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রাণঘাতী সংঘর্ষ মূলত চারণভূমি ও পানির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে। তবে ধর্মীয় ও জাতিগত বিভাজন এটিকে আরও জটিল করে তুলেছে। আবার অনেক বিশ্লেষকের মতে, যাজকদের অপহরণের ঘটনা ধর্মীয় বিদ্বেষের চেয়ে অর্থনৈতিক লাভের উদ্দেশ্যেই বেশি ঘটে, কারণ, তাঁরা প্রভাবশালী ব্যক্তি এবং তাঁদের অনুসারী বা প্রতিষ্ঠান দ্রুত মুক্তিপণের টাকা জোগাড় করতে পারে।
নাইজেরিয়া সরকারের অবস্থান
ট্রাম্প প্রশাসনের হামলার পর নাইজেরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আইএস-নিধনে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতার প্রশংসা করেছে। কিন্তু খ্রিষ্টান নিপীড়নের বিষয়টির সঙ্গে মার্কিন অভিযানের কোনো সম্পর্ক আছে কি না, এ বিষয়ে কিছু বলেনি।
এক বিবৃতিতে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, খ্রিষ্টান, মুসলমান কিংবা অন্য কোনো সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে পরিচালিত সব ধরনের সহিংসতাই নাইজেরিয়ার মূল্যবোধ এবং আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার প্রতি অবমাননা।
নাইজেরিয়ার বাস্তবতাও আসলে এমন। দীর্ঘদিন ধরে দেশটি নিরাপত্তা পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে। গত কয়েক বছরে দেশটিতে হাজারো মানুষ নিহত এবং শত শত মানুষ অপহৃত হয়েছে।
উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ২০০৯ সাল থেকে বোকো হারাম ও ইসলামিক স্টেট ওয়েস্ট আফ্রিকা প্রভিন্স (আইএসডব্লিউএপি) বিদ্রোহ চালিয়ে যাচ্ছে। এতে কয়েক দশক ধরে কয়েক হাজার মানুষ নিহত এবং লাখো মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে সশস্ত্র অপরাধী চক্র, যাদের সাধারণত ‘ডাকাত’ বলা হয়, তারাও গণ-অপহরণ ও হামলা চালাচ্ছে। এমন পরিস্থিতি মুসলমান ও খ্রিষ্টান উভয় সম্প্রদায়কেই প্রভাবিত করছে।
এর আগে ট্রাম্পের অভিযোগের জবাবে নাইজেরিয়ার সরকার বিষয়টি স্বীকার করে বলেছিল, দেশটিতে কেবল খ্রিষ্টান নয়—বিভিন্ন ধর্মের মানুষই চরমপন্থী গোষ্ঠীগুলোর হাতে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে।
গত মাসে নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট বোলা আহমেদ তিনুবু বলেন, নাইজেরিয়াকে ধর্মীয়ভাবে অসহিষ্ণু দেশ হিসেবে চিত্রিত করা বাস্তবতার প্রতিফলন নয়। তিনি বলেন, ‘ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সহনশীলতা আমাদের সম্মিলিত পরিচয়ের একটি মূল ভিত্তি এবং এটি সব সময়ই থাকবে। নাইজেরিয়া এমন একটি দেশ, যেখানে সংবিধান সব ধর্মের নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করে।’
এদিকে, ‘অন্তহীন যুদ্ধ’ বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এলেও নাইজেরিয়ায় ট্রাম্পের নতুন সামরিক হস্তক্ষেপ আফ্রিকার ভূরাজনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। অনেকে বলছেন, ‘খ্রিষ্টান নিপীড়ন’ আসলে ট্রাম্পের অজুহাত; তাঁর লক্ষ্য নাইজেরিয়ার তেলের খনি।
দ্য গার্ডিয়ান থেকে অনুবাদ করেছেন জগতপতি বর্মা

নাইজেরিয়ার সরকার খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়ন ঠেকাতে ব্যর্থ—এমন অভিযোগে কয়েক সপ্তাহ ধরে সমালোচনার পর অবশেষে বড়দিনের রাতে (২৫ ডিসেম্বর) পশ্চিম আফ্রিকার দেশটিতে বিমান হামলা চালিয়েছে মার্কিন বাহিনী। সরাসরি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সোকোটো রাজ্যে এ হামলা চালানো হয়।
ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান বলছে, ট্রাম্প প্রশাসন আইএস জঙ্গিদের একাধিক আস্তানা লক্ষ্য করে এসব হামলা চালায়। হামলায় মার্কিন নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ থেকে টমাহক মিসাইল নিক্ষেপ করা হয়েছিল। এসব হামলায় একাধিক আইএস জঙ্গি নিহত ও তাঁদের আস্তানা ধ্বংস হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে, তবে সঠিক সংখ্যা এখনো জানানো হয়নি।
ট্রাম্প প্রশাসনের সাম্প্রতিক বিদেশি সামরিক হস্তক্ষেপগুলোর সর্বশেষ উদাহরণ নাইজেরিয়ায় হামলা। অথচ ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী প্রচারণায় তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে ‘অন্তহীন যুদ্ধ’ থেকে বের করে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দাবি করেছেন, এই হামলার মূল উদ্দেশ্য ছিল নাইজেরিয়ায় বসবাসরত খ্রিষ্টানদের ওপর চলমান হত্যাযজ্ঞ বন্ধ করা। তাঁর মতে, আইএস জঙ্গিরা পরিকল্পিতভাবে খ্রিষ্টানদের লক্ষ্যবস্তু বানাচ্ছে। হামলার ঘোষণা দিয়ে ট্রাম্প তাঁর ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে লিখেছিলেন, ‘আমি আগেই এই সন্ত্রাসীদের সতর্ক করেছিলাম, তারা যদি খ্রিষ্টানদের হত্যা বন্ধ না করে, তবে তাদের চড়ম মূল্য দিতে হবে। আজ রাতে (বড়দিন) ঠিক তা-ই ঘটেছে।’
গত অক্টোবর ও নভেম্বর মাসেও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নাইজেরিয়ার নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে ‘খ্রিষ্টান গণহত্যার’ শামিল বলে অভিহিত করেছিলেন।
মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের এক কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এপিকে জানান, নাইজেরিয়া সরকারের অনুমোদন নিয়ে দেশটির সঙ্গে সমন্বয় করেই এসব হামলা চালানো হয়েছে। নাইজেরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, এই সহযোগিতার মধ্যে গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদান ও কৌশলগত সমন্বয় ছিল।
কেন নাইজেরিয়ায় হামলা চালাল ট্রাম্প প্রশাসন
অনেক আগে থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের ডানপন্থী রাজনীতিক গোষ্ঠীগুলো নাইজেরিয়ায় খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়নের অভিযোগ তুলছে। গত সেপ্টেম্বরে রিপাবলিকান সিনেটর টেড ক্রুজ কিছু নাইজেরীয় কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞার আহ্বান জানান। তিনি দাবি করেন, যারা ‘ইসলামপন্থী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর মাধ্যমে খ্রিষ্টান ও অন্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা সহজতর করছে’, তাদের নিষিদ্ধ করা উচিত।
তবে বর্তমানে বিষয়টি মার্কিন ডানপন্থী ও ইভানজেলিক্যাল খ্রিষ্টান মহলে বড় ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে। আবার এই ডানপন্থী ও ইভানজেলিক্যাল খ্রিষ্টানরাই ট্রাম্পের বড় সমর্থক। বিশ্লেষকদের মতে, নিজের সমর্থকদের তুষ্ট করতে এবং বিশ্বজুড়ে ‘খ্রিষ্টানদের রক্ষাকর্তা’ হিসেবে নিজেকে জাহির করতেই ট্রাম্প এই ত্বরিত সামরিক পদক্ষেপ নিয়েছেন।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা আইনের আওতায় নাইজেরিয়াকে ‘বিশেষ উদ্বেগের দেশ’ হিসেবে চিহ্নিত করেন ট্রাম্প। বেশ কিছু মার্কিন আইনপ্রণেতা ও রক্ষণশীল খ্রিষ্টান গোষ্ঠীর লাগাতার লবিংয়ের পর এই সিদ্ধান্ত আসে। এর কিছুদিন পরই তিনি নাইজেরিয়ায় সম্ভাব্য সামরিক অভিযানের পরিকল্পনা করতে পেন্টাগনকে নির্দেশ দেন। সে সময় ট্রাম্প বলেন, নাইজেরিয়া সরকার যদি খ্রিষ্টান হত্যাকাণ্ড বন্ধ না করে, তবে তিনি ‘গানস-এ-ব্লেজিং’ অর্থাৎ পূর্ণ শক্তি নিয়ে হস্তক্ষেপ করতে পারেন।
নাইজেরিয়ায় কি আসলেই খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়ন চলছে
নাইজেরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ মুসলমান, ৪৫ শতাংশ খ্রিষ্টান এবং অন্যরা আফ্রিকার ঐতিহ্যগত কিছু ধর্মে বিশ্বাসী। খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক মনোযোগ পেলেও বহু বিশ্লেষকের মতে, বিষয়টি কেবল ধর্মীয় নিপীড়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; এর পেছনে নানা কারণ রয়েছে।
উদাহরণ হিসেবে, যাযাবর মুসলিম পশুপালক ও খ্রিষ্টান কৃষক সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রাণঘাতী সংঘর্ষ মূলত চারণভূমি ও পানির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে। তবে ধর্মীয় ও জাতিগত বিভাজন এটিকে আরও জটিল করে তুলেছে। আবার অনেক বিশ্লেষকের মতে, যাজকদের অপহরণের ঘটনা ধর্মীয় বিদ্বেষের চেয়ে অর্থনৈতিক লাভের উদ্দেশ্যেই বেশি ঘটে, কারণ, তাঁরা প্রভাবশালী ব্যক্তি এবং তাঁদের অনুসারী বা প্রতিষ্ঠান দ্রুত মুক্তিপণের টাকা জোগাড় করতে পারে।
নাইজেরিয়া সরকারের অবস্থান
ট্রাম্প প্রশাসনের হামলার পর নাইজেরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আইএস-নিধনে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতার প্রশংসা করেছে। কিন্তু খ্রিষ্টান নিপীড়নের বিষয়টির সঙ্গে মার্কিন অভিযানের কোনো সম্পর্ক আছে কি না, এ বিষয়ে কিছু বলেনি।
এক বিবৃতিতে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, খ্রিষ্টান, মুসলমান কিংবা অন্য কোনো সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে পরিচালিত সব ধরনের সহিংসতাই নাইজেরিয়ার মূল্যবোধ এবং আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার প্রতি অবমাননা।
নাইজেরিয়ার বাস্তবতাও আসলে এমন। দীর্ঘদিন ধরে দেশটি নিরাপত্তা পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে। গত কয়েক বছরে দেশটিতে হাজারো মানুষ নিহত এবং শত শত মানুষ অপহৃত হয়েছে।
উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ২০০৯ সাল থেকে বোকো হারাম ও ইসলামিক স্টেট ওয়েস্ট আফ্রিকা প্রভিন্স (আইএসডব্লিউএপি) বিদ্রোহ চালিয়ে যাচ্ছে। এতে কয়েক দশক ধরে কয়েক হাজার মানুষ নিহত এবং লাখো মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে সশস্ত্র অপরাধী চক্র, যাদের সাধারণত ‘ডাকাত’ বলা হয়, তারাও গণ-অপহরণ ও হামলা চালাচ্ছে। এমন পরিস্থিতি মুসলমান ও খ্রিষ্টান উভয় সম্প্রদায়কেই প্রভাবিত করছে।
এর আগে ট্রাম্পের অভিযোগের জবাবে নাইজেরিয়ার সরকার বিষয়টি স্বীকার করে বলেছিল, দেশটিতে কেবল খ্রিষ্টান নয়—বিভিন্ন ধর্মের মানুষই চরমপন্থী গোষ্ঠীগুলোর হাতে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে।
গত মাসে নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট বোলা আহমেদ তিনুবু বলেন, নাইজেরিয়াকে ধর্মীয়ভাবে অসহিষ্ণু দেশ হিসেবে চিত্রিত করা বাস্তবতার প্রতিফলন নয়। তিনি বলেন, ‘ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সহনশীলতা আমাদের সম্মিলিত পরিচয়ের একটি মূল ভিত্তি এবং এটি সব সময়ই থাকবে। নাইজেরিয়া এমন একটি দেশ, যেখানে সংবিধান সব ধর্মের নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করে।’
এদিকে, ‘অন্তহীন যুদ্ধ’ বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এলেও নাইজেরিয়ায় ট্রাম্পের নতুন সামরিক হস্তক্ষেপ আফ্রিকার ভূরাজনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। অনেকে বলছেন, ‘খ্রিষ্টান নিপীড়ন’ আসলে ট্রাম্পের অজুহাত; তাঁর লক্ষ্য নাইজেরিয়ার তেলের খনি।
দ্য গার্ডিয়ান থেকে অনুবাদ করেছেন জগতপতি বর্মা

জায়নবাদ অনুসারে, ইহুদিরা প্রতিশ্রুত ইসরায়েল ভূখণ্ড প্রতিষ্ঠা করতে চায়, যেখানে কোনো মুসলমান থাকবে না। আর তাই অখণ্ড ইসরায়েল প্রতিষ্ঠায় বাধা ফিলিস্তিনি মুসলমানেরা। কাজেই, তাদের উচ্ছেদ করতে হবে কিংবা যেকোনো মূল্যে নিকেশ করতে হবে। প্রয়োজনে চালাতে হবে ‘জাতিগত নিধন’। ঠিক সেই কাজটিই গাজায় করছে ইসরায়েল।
১৯ মার্চ ২০২৫
গত ২৬ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম জাতিসংঘ সদস্য দেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তকে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর একটি সাহসী সম্প্রসারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
১০ ঘণ্টা আগে
মধ্যপ্রাচ্যের মূল ভূখণ্ড হারানোর পর আইএস এখন মূলত স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন সেলের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, কঙ্গো এবং সাহেল অঞ্চলে আইএস অত্যন্ত শক্তিশালী। নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘আইএসডব্লিউএপি’ এবং উত্তর-পশ্চিমে বিভিন্ন অনুসারী গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে।
১ দিন আগে
ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে।
৬ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে। এই প্রেক্ষাপটে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিয়ো লুলা দা সিলভা ভেনেজুয়েলায় মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপ মানবিক বিপর্যয় ডেকে আনবে বলে সতর্ক করেছেন। তাঁর মতে, এই সতর্কতা শুধু ভেনেজুয়েলাকে ঘিরে নয়—পুরো দক্ষিণ আমেরিকার ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার প্রশ্নও তুলে ধরছে।
ভেনেজুয়েলার সংকটের মূল কারণ দেশটির দীর্ঘস্থায়ী রাজনৈতিক অস্থিরতা, বিতর্কিত নির্বাচন, অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা এবং মানবাধিকার পরিস্থিতি। প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর সরকারকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের একটি অংশ কর্তৃত্ববাদী ও অগণতান্ত্রিক বলে মনে করে। এর জবাবে ওয়াশিংটন একের পর এক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এসব নিষেধাজ্ঞার মূল লক্ষ্য ভেনেজুয়েলার তেল রপ্তানি, যা দেশটির আয়ের প্রধান উৎস।
ভেনেজুয়েলা বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ তেল মজুতের অধিকারী। ফলে তাদের তেল শুধু অর্থনীতি নয়, কূটনীতিরও কেন্দ্রে অবস্থান করছে। যুক্তরাষ্ট্র মনে করে, ভেনেজুয়েলার তেল বিক্রির পথ বন্ধ করতে পারলে মাদুরো সরকার দুর্বল হবে। এই লক্ষ্যেই সাম্প্রতিক সময়ে দেশটির নিষেধাজ্ঞাভুক্ত তেল ট্যাংকারগুলোকে অবরোধের মতো কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে মার্কিন বাহিনী। তবে এই পদক্ষেপকে সরাসরি যুদ্ধের দিকে ঠেলে দেওয়ার ঝুঁকি হিসেবে দেখছেন দক্ষিণ আমেরিকার অনেক নেতা।
ব্রাজিল ও মেক্সিকোর মতো লাতিন শক্তিগুলো এই কারণেই যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হস্তক্ষেপের সম্ভাবনার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, দক্ষিণ আমেরিকার ইতিহাস বহিঃশক্তির সামরিক হস্তক্ষেপের তিক্ত অভিজ্ঞতায় ভরা। ফকল্যান্ড যুদ্ধের চার দশক পর আবারও কোনো অন্য মহাদেশীয় শক্তির সামরিক উপস্থিতি এই মহাদেশকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে—এমন আশঙ্কাই তিনি প্রকাশ করেছেন।
এদিকে রাশিয়া ও চীন ভেনেজুয়েলার সরকারের প্রতি সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। রাশিয়ার ক্ষেত্রে এটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব মোকাবিলার কৌশল, আর চীনের জন্য এটি তেল ও ঋণনির্ভর অর্থনৈতিক স্বার্থের প্রশ্ন। ফলে ভেনেজুয়েলা ক্রমেই যুক্তরাষ্ট্র বনাম রাশিয়া–চীন প্রভাব বিস্তারের আরেকটি ময়দানে পরিণত হচ্ছে।
‘মার্কোসুর’ সম্মেলনে লাতিন আমেরিকার দেশগুলো যে যৌথ অবস্থান নিয়েছে, তা এই বাস্তবতাকেই প্রতিফলিত করে। তারা ভেনেজুয়েলায় গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষার কথা বলেছে, তবে স্পষ্টভাবে সামরিক পথ প্রত্যাখ্যান করেছে। তাদের মতে, সংকটের সমাধান হতে পারে কেবল সংলাপ ও শান্তিপূর্ণ কূটনীতির মাধ্যমে।
সব মিলিয়ে ভেনেজুয়েলার সংকট এখন আর একটি দেশের অভ্যন্তরীণ সমস্যা নয়। তেল, আদর্শিক দ্বন্দ্ব, আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও বৈশ্বিক ক্ষমতার লড়াই—সবকিছু মিলিয়ে এটি আন্তর্জাতিক রাজনীতির এক স্পর্শকাতর সংঘাতক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে।

ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে। এই প্রেক্ষাপটে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিয়ো লুলা দা সিলভা ভেনেজুয়েলায় মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপ মানবিক বিপর্যয় ডেকে আনবে বলে সতর্ক করেছেন। তাঁর মতে, এই সতর্কতা শুধু ভেনেজুয়েলাকে ঘিরে নয়—পুরো দক্ষিণ আমেরিকার ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার প্রশ্নও তুলে ধরছে।
ভেনেজুয়েলার সংকটের মূল কারণ দেশটির দীর্ঘস্থায়ী রাজনৈতিক অস্থিরতা, বিতর্কিত নির্বাচন, অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা এবং মানবাধিকার পরিস্থিতি। প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর সরকারকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের একটি অংশ কর্তৃত্ববাদী ও অগণতান্ত্রিক বলে মনে করে। এর জবাবে ওয়াশিংটন একের পর এক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এসব নিষেধাজ্ঞার মূল লক্ষ্য ভেনেজুয়েলার তেল রপ্তানি, যা দেশটির আয়ের প্রধান উৎস।
ভেনেজুয়েলা বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ তেল মজুতের অধিকারী। ফলে তাদের তেল শুধু অর্থনীতি নয়, কূটনীতিরও কেন্দ্রে অবস্থান করছে। যুক্তরাষ্ট্র মনে করে, ভেনেজুয়েলার তেল বিক্রির পথ বন্ধ করতে পারলে মাদুরো সরকার দুর্বল হবে। এই লক্ষ্যেই সাম্প্রতিক সময়ে দেশটির নিষেধাজ্ঞাভুক্ত তেল ট্যাংকারগুলোকে অবরোধের মতো কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে মার্কিন বাহিনী। তবে এই পদক্ষেপকে সরাসরি যুদ্ধের দিকে ঠেলে দেওয়ার ঝুঁকি হিসেবে দেখছেন দক্ষিণ আমেরিকার অনেক নেতা।
ব্রাজিল ও মেক্সিকোর মতো লাতিন শক্তিগুলো এই কারণেই যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হস্তক্ষেপের সম্ভাবনার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, দক্ষিণ আমেরিকার ইতিহাস বহিঃশক্তির সামরিক হস্তক্ষেপের তিক্ত অভিজ্ঞতায় ভরা। ফকল্যান্ড যুদ্ধের চার দশক পর আবারও কোনো অন্য মহাদেশীয় শক্তির সামরিক উপস্থিতি এই মহাদেশকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে—এমন আশঙ্কাই তিনি প্রকাশ করেছেন।
এদিকে রাশিয়া ও চীন ভেনেজুয়েলার সরকারের প্রতি সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। রাশিয়ার ক্ষেত্রে এটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব মোকাবিলার কৌশল, আর চীনের জন্য এটি তেল ও ঋণনির্ভর অর্থনৈতিক স্বার্থের প্রশ্ন। ফলে ভেনেজুয়েলা ক্রমেই যুক্তরাষ্ট্র বনাম রাশিয়া–চীন প্রভাব বিস্তারের আরেকটি ময়দানে পরিণত হচ্ছে।
‘মার্কোসুর’ সম্মেলনে লাতিন আমেরিকার দেশগুলো যে যৌথ অবস্থান নিয়েছে, তা এই বাস্তবতাকেই প্রতিফলিত করে। তারা ভেনেজুয়েলায় গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষার কথা বলেছে, তবে স্পষ্টভাবে সামরিক পথ প্রত্যাখ্যান করেছে। তাদের মতে, সংকটের সমাধান হতে পারে কেবল সংলাপ ও শান্তিপূর্ণ কূটনীতির মাধ্যমে।
সব মিলিয়ে ভেনেজুয়েলার সংকট এখন আর একটি দেশের অভ্যন্তরীণ সমস্যা নয়। তেল, আদর্শিক দ্বন্দ্ব, আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও বৈশ্বিক ক্ষমতার লড়াই—সবকিছু মিলিয়ে এটি আন্তর্জাতিক রাজনীতির এক স্পর্শকাতর সংঘাতক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে।

জায়নবাদ অনুসারে, ইহুদিরা প্রতিশ্রুত ইসরায়েল ভূখণ্ড প্রতিষ্ঠা করতে চায়, যেখানে কোনো মুসলমান থাকবে না। আর তাই অখণ্ড ইসরায়েল প্রতিষ্ঠায় বাধা ফিলিস্তিনি মুসলমানেরা। কাজেই, তাদের উচ্ছেদ করতে হবে কিংবা যেকোনো মূল্যে নিকেশ করতে হবে। প্রয়োজনে চালাতে হবে ‘জাতিগত নিধন’। ঠিক সেই কাজটিই গাজায় করছে ইসরায়েল।
১৯ মার্চ ২০২৫
গত ২৬ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম জাতিসংঘ সদস্য দেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তকে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর একটি সাহসী সম্প্রসারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
১০ ঘণ্টা আগে
মধ্যপ্রাচ্যের মূল ভূখণ্ড হারানোর পর আইএস এখন মূলত স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন সেলের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, কঙ্গো এবং সাহেল অঞ্চলে আইএস অত্যন্ত শক্তিশালী। নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘আইএসডব্লিউএপি’ এবং উত্তর-পশ্চিমে বিভিন্ন অনুসারী গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে।
১ দিন আগে
নাইজেরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ মুসলমান, ৪৫ শতাংশ খ্রিষ্টান এবং অন্যরা আফ্রিকার ঐতিহ্যগত কিছু ধর্মে বিশ্বাসী। খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক মনোযোগ পেলেও বহু বিশ্লেষকের মতে, বিষয়টি কেবল ধর্মীয় নিপীড়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এর পেছন
১ দিন আগে