Ajker Patrika

মিতু হত্যা মামলার আসামি ভোলা ভারতে পালানোর সময় গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
আপডেট : ২৩ অক্টোবর ২০২১, ১৭: ১২
মিতু হত্যা মামলার আসামি ভোলা ভারতে পালানোর সময় গ্রেপ্তার

চট্টগ্রামের চাঞ্চল্যকর মাহমুদা আক্তার মিতু হত্যা মামলার আসামি এহতেশামুল হক ওরফে ভোলাকে (৪১) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্তবর্তী এলাকা বেনাপোল থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টার করছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

গ্রেপ্তারের পর আজ শনিবার বিকেলে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. শফি উদ্দিনের আদালতে আসামি ভোলার ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে।

ভোলা বাকলিয়া থানাধীন রাজাখালী এলাকায় মৃত সিরাজুল হকের ছেলে।

২০১৬ সালে ৫ জুন ভোরে নগরীর জিইসি মোড়ে ছেলেকে স্কুল বাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় খুন হন সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা আক্তার মিতু।  এ মামলায় কদিন আগে ভোলার বিরুদ্ধে আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছিল।

ভোলার গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করলেও এ ব্যাপারে অন্য কোনো মন্তব্য এখনই করতে রাজি হননি মামলাটির তদারকি সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন পিবিআইয়ের পরিদর্শক সন্তোষ কুমার চাকমা।

আদালতের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র নিশ্চিত করেছেন, মহানগর হাকিম শফিউদ্দিনের আদালতে ১৬৪ ধারায় আসামি ভোলার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নেওয়া হচ্ছে।

চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের পিপি মো. ফখরুদ্দিন চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, গত ১৫ সেপ্টেম্বর মহামান্য হাইকোর্ট মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলার আসামি এহতেশামুল হক ভোলার চার সপ্তাহের জামিন মঞ্জুর করেন। একই সঙ্গে হাইকোর্ট জামিনের মেয়াদ শেষে আসামিকে বিচারিক (নিম্ন) আদালতে আত্মসমর্পণ করার নির্দেশ দিয়েছেন। গত ১১ অক্টোবর চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ শেখ আশফাকুর রহমানের আদালতে আসামি ভোলা আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। এ সময় আদালত মামলার মূল নথি তলব করে পরবর্তী ধার্য তারিখে শুনানির জন্য রেখে দেন। পরে আদালত আসামি ভোলার অনুপস্থিতিতে তাঁর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন। একই সঙ্গে তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। 

জানা যায়, ২০১৬ সালে ২৮ জুন  মিতু খুনের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয় চট্টগ্রাম তৎকালীন গোয়েন্দা পুলিশে অতিরিক্ত উপকমিশনারের দায়িত্ব পালন করে আসা বাবুল আক্তারের ‘সোর্স হিসেবে পরিচিত এহতেশামুল হক ভোলা। সে সময় তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় পয়েন্ট ৩২ বোরের পিস্তলটি। যা  মিতু হত্যাকাণ্ডে ব্যবহার করা হয়েছিল বলে জানিয়েছিল পুলিশ। হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর পাশাপাশি ভোলার বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনেও একটি মামলা করা হয়েছিল। এরপর প্রায় সাড়ে তিন বছর কারাভোগের পর ২০১৯ সালে ডিসেম্বরে জামিনে মুক্তি পান ভোলা। 

পরে তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) আবেদনে মাহমুদা আক্তার মিতু হত্যা মামলার তিন পলাতক আসামির দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত। এ তিন আসামি হলেন- কামরুল ইসলাম শিকদার মুছা, এহতেশামুল হক ভোলা ও খাইরুল ইসলাম কালু।

২০১৬ সালের ৫জুন মিতু খুনের ঘটনায় পাঁচলাইশ থানায় নিহতের স্বামী বাবুল আক্তার বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে একটি মামলা করেন।  তবে শুরু থেকেই নিহত মিতুর বাবা সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মোশাররফ দাবি করে আসছেন নিজের জামাই বাবুল আক্তার এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। পরকীয়ার জেরে এ খুনের ঘটনা ঘটেছে বলে তিনি দাবি করেন। ২০২০ সালে জানুয়ারিতে মিতু হত্যা মামলাটির তদন্তভার পিবিআইয়ের হাতে আসে।২০২১ সালে ১১ মে মঙ্গলবার মামলার বাদী বাবুল আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে নিয়ে নিজেদের হেফাজতে নেয় পিবিআই। পরদিন ১২ মে বাবুলের বাদী হয়ে দায়ের করা মামলাটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেন পিবিআইর তদন্ত কর্মকর্তা। সেখানে বলা হয়- বাবুল নিজেই তাঁর স্ত্রী হত্যায় জড়িত। এদিন বাবুলসহ আরও কয়েকজনকে আসামি করে নতুন মামলার আবেদন করা হয়। একইদিন মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন পাঁচলাইশ থানায় নিজের জামাতাকে প্রধান আসামি করে আটজনের নামে নতুন একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় গ্রেপ্তারের পর কারাগারে রয়েছে বাবুল আক্তার। পিবিআই তদন্তে দাবি করেছে, বাবুল আক্তারের নির্দেশে তার সোর্স মুসার পরিকল্পনায় মিতু খুনের ঘটনা ঘটেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

উদীচী ট্র্যাজেডি দিবসে ৩ মিনিট স্তব্ধ নেত্রকোনা

নেত্রকোনা প্রতিনিধি
নেত্রকোনায় উদীচী কার্যালয়ে বোমা হামলায় নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে নানা কর্মসূচি পালিত হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
নেত্রকোনায় উদীচী কার্যালয়ে বোমা হামলায় নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে নানা কর্মসূচি পালিত হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

আজ ৮ ডিসেম্বর, নেত্রকোনা ট্র্যাজেডি দিবস। দুই দশক আগে ২০০৫ সালের এই দিনে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী নেত্রকোনা কার্যালয়ের সামনে আত্মঘাতী বোমা হামলা করে জঙ্গিসংগঠন জেএমবি। ওই ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে আজ সোমবার ১০টা ৪০ মিনিট থেকে তিন মিনিট ‘স্তব্ধ নেত্রকোনা’ কর্মসূচি পালিত হয়।

নেত্রকোনা ট্র্যাজেডি দিবস উদ্‌যাপন কমিটি এই কর্মসূচি দেয়।

কর্মসূচি অনুযায়ী, ঘড়ির কাটায় ১০টা ৪০ বাজার সঙ্গে সঙ্গে নেত্রকোনাবাসী তিন মিনিট নীরবতা পালন করেন। এ সময় শহরের রাস্তায় যানবাহনগুলো দাঁড়িয়ে থাকে, হাঁটেননি কোনো পথচারীও। দোকানিরাও এ সময় নেমে আসেন রাস্তায়। তাঁরা শ্রদ্ধা জানান ২০ বছর আগে নেত্রকোনা উদীচীতে বোমা হামলায় নিহত ব্যক্তিদের প্রতি। পাশাপাশি ঘৃণা জানানো হয় জঙ্গিগোষ্ঠীকে।

দিনটি উপলক্ষে আজ সকাল ৯টা ১০ মিনিটে জেলা শহরের উদীচী কার্যালয়ের সামনে কালো পতাকা উত্তোলন ও কালো ব্যাজ ধারণ, উদীচী ট্র্যাজেডি স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ, স্মৃতিচারণ ও গণসংগীত হয়। সেখানে মানব না এই বন্ধনে, তীরহারা এই ঢেউয়ের সাগর, কারা মোর ঘর ভেঙেছে, এ লড়াই বাঁচার লড়াই, প্রিয় ফুল খেলবার দিন নয় অদ্য ইত্যাদি গণসংগীত গান শিল্পীরা। এ সময় ট্র্যাজেডি দিবস উদ্‌যাপন কমিটির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা হায়দার জাহান চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও উদীচীর সাধারণ সম্পাদক মো. আলমগীরের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন জেলা উদীচীর সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাম্মেল হক, প্রবীণ সাংবাদিক শ্যামলেন্দু পাল, বোমা হামলায় আহত সংস্কৃতিকর্মী তুষার কান্তি রায়, জেলা উদীচীর সভাপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান খান, গবেষক আলী আহাম্মদ খান আইয়োব, জাতীয় রবীন্দ্র সংগীত সম্মেলন পরিষদ নেত্রকোনা শাখার সভাপতি পূরবী কুণ্ডু, কবি এনামূল হক পলাশ, নারী নেত্রী কোহিনূর বেগম, নারী প্রগতির কেন্দ্র ব্যবস্থাপক মৃণাল চক্রবর্তী, প্রথম আলোর প্রতিনিধি পল্লব চক্রবর্তী প্রমুখ। পরে তিন মিনিট ‘স্তব্ধ নেত্রকোনা’ কর্মসূচি পালন শেষে সন্ত্রাস, মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী মানববন্ধন হয়। শেষে শহীদদের কবর জিয়ারত, শ্মশানের স্মৃতিফলকে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও শহীদদের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করা হয়।

আজ সমাবেশ চলাকালে নেত্রকোনা উদীচীর সহসভাপতি মাসুদুর রহমান খান বলেন, ‘দ্রুত বিচার ও বিস্ফোরক মামলার রায় কার্যকর হওয়ায় আমরা খুশি। তবে জঙ্গিবাদের মূল উৎপাটন করতে হলে আরও শিকড়ে যেতে হবে। স্থানীয় মদদদাতাদের খুঁজে বের করতে হবে। তা না হলে মৌলবাদ, জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস নির্মূল সম্ভব হবে না।’

২০০৫ সালের ৮ ডিসেম্বর উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী নেত্রকোনা সংসদ কার্যালয়ের সামনে জেএমবির বোমা হামলায় প্রাণ হারান জেলা উদীচীর সাবেক সহসাধারণ সম্পাদক খাজা হায়দার হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক সুদীপ্তা পাল শেলি, মোটরসাইকেল মেকানিকস যাদব দাস, পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রী রাণী আক্তার, মাছ বিক্রেতা আফতাব উদ্দিন, শ্রমিক রইছ মিয়া ও ভিক্ষুক জয়নাল। এ ছাড়া বোমা হামলাকারী আল বাকি মো. কাফিও নিহত হন। আহত হন অর্ধশতাধিক।

এদিকে ঘটনার ২০ বছর পার হলেও এখনো সেই স্মৃতি তাড়া করে বেড়ায় নিহত ব্যক্তিদের স্বজনদের। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম খাজা হায়দার হোসেনকে হারিয়ে এখনো দিশেহারা তাঁর স্ত্রী শাহানাজ পারভিন। স্বামীর রেখে যাওয়া এক চিলতে জায়গার ওপর একটি টিনের চালাঘরে একমাত্র ছেলেকে নিয়ে থাকেন তিনি। আর শহরের নিউটাউন এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকে সুদীপ্তা পাল শেলির পরিবার। একমাত্র উপার্জনক্ষম মেয়েকে হারানোর কষ্ট বুকে নিয়ে দিন পার করছেন মা অরুণা রাণী পাল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ধর্ম অবমাননার অভিযোগ: তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী রিমান্ডে

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

ধর্ম অবমাননার অভিযোগে করা মামলায় রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজের ২০২৩–২৪ সেশনের এক শিক্ষার্থীকে দুই দিনের রিমান্ডে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আজ সোমবার (৮ ডিসেম্বর) ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সেফাত উল্লাহ তাঁকে রিমান্ডে নেওয়ার এ নির্দেশ দেন।

কারাগার থেকে ওই শিক্ষার্থীকে আদালতে হাজির করা হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তাঁকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন। অন্যদিকে শিক্ষার্থীর পক্ষে রিমান্ড বাতিল করে জামিনের আবেদন করেন তাঁর আইনজীবী। শুনানি শেষে আদালত জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করেন এবং দুদিনের পুলিশ রিমান্ডে দেওয়ার নির্দেশ দেন।

ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের অতিরিক্ত পিপি মুহাম্মদ শামসুদ্দোহা সুমন রিমান্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

গত ২৬ নভেম্বর তিতুমীর কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা ওই শিক্ষার্থীকে ডেকে কলেজে নেন এবং বনানী থানা-পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন।

ওই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে অভিযোগ, ‘ফারিহা আক্তার’ নামের একটি ফেসবুক আইডি ‘শাহ মাহমুদ’ নামের আরেক ফেসবুক আইডির একটি পোস্টের নিচে মন্তব্য করে। ওই মন্তব্যে নবী মুহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে কটূক্তি করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। পরে তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা জানতে পারেন, ফারিহা আক্তার নামের আইডিটি নকল এবং সেটি ব্যবহার করতেন ওই শিক্ষার্থী।

ওই মন্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষার্থীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। পরে শিক্ষার্থীরা তাঁকে ক্যাম্পাসে আটক করেন এবং ঘটনাটি কলেজ প্রশাসনকে অবহিত করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কলেজ কর্তৃপক্ষ তাঁকে অধ্যক্ষের কক্ষে নিয়ে আসে। সেখানে প্রশাসনের উপস্থিতিতে ওই শিক্ষার্থী নিজের কর্মকাণ্ডের কথা স্বীকার করেন। তাঁকে আটকের পর বনানী থানায় ধর্ম অবমাননার অভিযোগে মামলা হয়।

মামলায় বলা হয়েছে, ওই শিক্ষার্থী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্যসহ মুসলিম নারীদের পোশাক ও আচরণ নিয়ে আপত্তিকর কথা লিখতেন ফেসবুকে। এগুলো শুধু ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানে না, বরং নারীদের মর্যাদাকেও অপমান করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ব্রাকসু নির্বাচন কমিশনকে মেরুদণ্ডহীন আখ্যা দিল ছাত্রদল-সমর্থিত প্যানেল

বেরোবি প্রতিনিধি 
ব্রাকসু নির্বাচন কমিশনকে মেরুদণ্ডহীন আখ্যা দিল ছাত্রদল-সমর্থিত প্যানেল

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (ব্রাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন কমিশনের প্রতি অনাস্থা প্রকাশ এবং মেরুদণ্ডহীন আখ্যা দিয়েছে ছাত্রদল-সমর্থিত প্যানেল ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী সংসদ। নির্বাচনের চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় একাধিক ভুলত্রুটি ও এক পক্ষের চাপে তড়িঘড়ি করে নির্বাচনের দিকে ধাবিত হচ্ছে—এমন অভিযোগ তুলে আজ সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের দক্ষিণ গেটে সংবাদ সম্মেলন করে এসব কথা বলেন ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী সংসদের নেতারা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বেরোবি শাখা ছাত্রদলের সহসভাপতি মো. মাইদুল ইসলাম বাপ্পি বলেন, শিক্ষার্থীদের বহুল প্রত্যাশিত ব্রাকসুর গঠনতন্ত্র অনুমোদন হলেও শুরু থেকে প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনের চরম অযোগ্যতা ও ব্যর্থতার কারণে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ আজ হাস্যকর বিষয়ে পরিণত হয়েছে।

শিক্ষার্থীদের শীতকালীন ছুটির দাবির বিষয়টি পাশ কাটিয়ে একটি গোষ্ঠীকে সুবিধা দেওয়ার জন্য গঠনতন্ত্র ও ভোটার তালিকায় অসংখ্য ভুলত্রুটি নিয়ে তড়িঘড়ি করে একটি বিতর্কিত নির্বাচনের দিকে এগোচ্ছে নির্বাচন কমিশন। ব্যর্থতার দায় নিয়ে দুবার পদত্যাগ ও একবার নির্বাচনী কার্যক্রম স্থগিত করার পর তারা কথা দিয়েছিল—ভোটার তালিকায় বিদ্যমান ত্রুটিগুলো তারা সংশোধন করে পরবর্তী কার্যক্রম চালিয়ে যাবে।

মাইদুল আরও বলেন, ‘অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, এই প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশন বিতর্কিত। ত্রুটিগুলো নিয়েই তারা আবারও অধিকাংশ শিক্ষার্থীর শীতকালীন ছুটির বিষয়টিকে উপেক্ষা করে একটি পক্ষের অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়ন করার জন্য একটি প্রহসনমূলক নির্বাচনের নাটক মঞ্চস্থ করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। মেরুদণ্ডহীন নির্বাচন কমিশনের প্রতি আমরা অনাস্থা প্রকাশ করছি, কারণ, এই কমিশনের সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দেওয়ার সক্ষমতা নেই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খাঞ্জা বিল দখল নিয়ে দুপক্ষের সংঘর্ষ, আহত ৩০

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি
হবিগঞ্জের লাখাইয়ে দুপক্ষের সংঘর্ষ। ছবি: আজকের পত্রিকা
হবিগঞ্জের লাখাইয়ে দুপক্ষের সংঘর্ষ। ছবি: আজকের পত্রিকা

হবিগঞ্জের লাখাইয়ে ধলেশ্বরীর খাঞ্জা বিল দখল নিয়ে দুপক্ষের সংঘর্ষে ৩০ জন আহত হয়েছে। আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এ সংঘর্ষ শুরু হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সংঘর্ষ থামাতে ব্যর্থ হয়। পরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা বেলা ১টার দিকে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

স্থানীয়রা জানায়, ধলেশ্বরী খাঞ্জা বিলের দখল নিয়ে শিবপুর গ্রামের জনকল্যাণ সমবায় সমিতি ও সন্তোষপুর আনন্দময়ী মৎস্যজীবী সমিতির মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। শিবপুরের হারিছ মিয়া জনকল্যাণ সমবায় সমিতির এবং স্বজন গ্রামের আনন্দময়ী মৎস্যজীবী সমিতির নেতৃত্ব দিচ্ছেন ইউপি চেয়ারম্যান আরিফ আহমেদ রুপম। আজ উভয় পক্ষ বিলটি দখল নিয়ে ফের সংঘর্ষে জড়ায়। সংঘর্ষে দুপক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হয়। এই দুপক্ষের মধ্যে এর আগে তিনবার সংঘর্ষ হয়েছে।

লাখাই থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কৃষ্ণচন্দ্র মিশ্র বলেন, ধলেশ্বরী খাঞ্জা বিল নিয়ে দুটি সমিতির মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। এর জেরে দুপুরে দুপক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়ায়। থানা-পুলিশ ও সেনাবাহিনী গিয়ে সংঘর্ষ থামায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তিনি বলেন, এর আগেও বিল নিয়ে দুপক্ষের লোকজন একাধিকবার সংঘর্ষে জড়িয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত