Ajker Patrika

অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় বিদ্যুৎকর্মীদের ওপর হামলা, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

লালমনিরহাট প্রতিনিধি
অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় বিদ্যুৎকর্মীদের ওপর হামলা, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলায় অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় বিদ্যুৎ কর্মকর্তা-কর্মচারীর ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে এক যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে। এতে বিদুৎকর্মীসহ ১০ জন আহত হয়েছেন। 

আজ সোমবার দুপুরে উপজেলার মহিষখোচা বাজারে হামলার এই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় যুবলীগ নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

গ্রেপ্তার যুবলীগ নেতা জিন্নাত আলী উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের বারঘড়িয়া গ্রামের নুরল হকের ছেলে। তিনি মহিষখোচা ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য। 

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, যুবলীগ নেতা জিন্নাত আলী দীর্ঘদিন ধরে মহিষখোচা বাজারে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে ওয়ার্কশপ ও বাজারের ১৫–২০টি দোকানে ব্যবসা করে আসছেন। বিগত সময় এ অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার প্রস্তুতি নিলে দলীয় প্রভাবে তা করতে পারেনি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি আদিতমারী জোনাল অফিস। 

আজ সোমবার দুপুরে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আদিতমারী জোনাল অফিসের প্রশাসনিক কর্মকর্তা শাহ জালালের নেতৃত্বে ৯ জনের একটি দল যুবলীগ নেতার অবৈধ সংযোগের বিষয়টি তদন্তে যান। এ সময় অবৈধ সংযোগের বিষয়টি বুঝতে পেয়ে বিদ্যুৎ কর্মকর্তাদের ওপর রড লাঠিসোঁটা নিয়ে অতর্কিতভাবে হামলা চালায় যুবলীগ নেতা জিন্নাত আলী ও তাঁর লোকজন। 

একপর্যায়ে পাশের দোকানে আত্মরক্ষা করলে সেখানে তাদেরকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। এতে বিদ্যুৎ অফিসের ৯ জন এবং যুবলীগ নেতার ভাই এরশাদ আলী বিবাদ মিটাতে গিয়ে আহত হন। খবর পেয়ে আদিতমারী থানা-পুলিশ ও সেনা সদস্যরা গিয়ে বিদ্যুৎ অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদ্ধার করে আদিতমারী হাসপাতালে পাঠান। 

এ ঘটনায় তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে যুবলীগ নেতা জিন্নাত আলীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আহতদের মধ্যে সহকারী জুনিয়র প্রকৌশলী অন্নদা প্রসাদ রায় (৩১) ও সেলিম রেজা (৪৫) হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিলেও বাকিরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে চলে যান। 

এ ঘটনায় আদিতমারী জোনাল অফিসের প্রশাসনিক কর্মকর্তা শাহ জালাল বাদী হয়ে যুবলীগ নেতা জিন্নাত আলী ও তাঁর ছেলে রুবেল মিয়ার (১৯) নামে মামলা করেছেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা ৬-৭ জনের বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাঁধাসহ কয়েকটি ধারায় আদিতমারী থানায় একটি মামলা করেন। 

হামলায় আহত ব্যক্তিরা। ছবি: আজকের পত্রিকা হাসপাতালে আহতদের দেখতে আসা আদিতমারী জোনাল অফিসের জেনারেল ম্যানেজার আইয়ুব আলী বলেন, ‘অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে গেলে যুবলীগ নেতার হামলায় ৯ জনের দলের সবাই আহত হয়েছেন। আমরা মামলা করেছি। আইনগতভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতিপূর্বেও যুবলীগ নেতা সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ ও তাঁর ব্যক্তিগত সহকারী কর্মকর্তার (এপিএস) মিজানুর রহমান মিজানের প্রভাব দেখিয়েছিল।’ 

আদিতমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদ উন নবী বলেন, খবর পেয়ে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় মূল হোতা জিন্নাত আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

প্রাথমিকভাবে ১২৫ আসনে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা

আজকের রাশিফল: অতিরিক্ত রাগ লজ্জায় ফেলবে, ঘরে শান্তি চাইলে রান্না নিয়ে চুপ থাকুন

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার ২

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিএনপি-জামায়াতসহ সব দলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান

­হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
নোয়াখালী-৬ আসনের আফাজিয়া বাজারে পথসভা। ছবি: আজকের পত্রিকা
নোয়াখালী-৬ আসনের আফাজিয়া বাজারে পথসভা। ছবি: আজকের পত্রিকা

বিএনপি-জামায়াত-গণঅধিকারসহ সব দলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ। তিনি বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত-এনসিপি-গণঅধিকারসহ যত দল আছে এবং যারা হাতিয়াতে আছে, তাদের সবাইকে বলছি, আপনারা ঐক্যবদ্ধ হন। আর আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে দ্বীপ হাতিয়াকে বাঁচাই।’

আজ বুধবার নোয়াখালী-৬ (হাতিয়া) আসনের আফাজিয়া বাজারে এক পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন।

আবদুল হান্নান মাসউদ বলেন, ‘আমরা হাতিয়ার লোকজন ঐক্যবদ্ধ হয়ে এ দ্বীপকে ভূমিদস্যু থেকে বাঁচাব, জলদস্যু থেকে বাঁচাব, নদীভাঙন থেকে বাঁচাব। তাই আমি দলমত-নির্বিশেষে সবাইকে আহ্বান করব, আসেন, আমরা সবাই মিলে যাই, সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে হাতিয়াকে বদলাই।

‘হাতিয়াকে বাঁচাতে হলে দলে দলে লড়াই করা যাবে না, মারামারি, হানাহানি করা যাবে না। হাতিয়ার মানুষ যদি নিজেদের মধ্যে আরেকবার সংঘাতে জড়ায়, তাহলে আর হাতিয়ার মানুষের মুক্তি মিলবে না।’

এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আরও বলেন, ‘আমি আজ এখানে কোনো নির্বাচনী জনসভা করতে আসিনি। যদিও আমাকে আমার দল থেকে নির্বাচন করার জন্য মনোনয়ন দিয়ে শাপলা কলি দেওয়া হয়েছে।

‘কিন্তু আমি বলব, হাতিয়ার মানুষ না চাইলে আমি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব না। হাতিয়ার মানুষ চাইলে আমি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব। হাতিয়ার উন্নয়নের স্বার্থে আমরা কোনো দলের বিরুদ্ধে বলব না, তাই দলবল-নির্বিশেষে আমরা সবাইকে নিয়ে নতুন একটি হাতিয়া গড়তে চাই।’

এর আগে পথসভাকে কেন্দ্র করে দুপুর থেকে দ্বীপের বিভিন্ন এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে আফাজিয়া ঘাটে আসতে থাকেন লোকজন। পথসভায় এনসিপির কেন্দ্রীয় ও উপজেলা কমিটির নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

প্রাথমিকভাবে ১২৫ আসনে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা

আজকের রাশিফল: অতিরিক্ত রাগ লজ্জায় ফেলবে, ঘরে শান্তি চাইলে রান্না নিয়ে চুপ থাকুন

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার ২

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চট্টগ্রাম বন্দরে অফডক বন্ধের কর্মসূচি থেকে সরলেন ডিপোমালিকেরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
চট্টগ্রাম বন্দর। ছবি: সংগৃহীত
চট্টগ্রাম বন্দর। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম বন্দরে আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে বেসরকারি কনটেইনার ডিপোগুলোর কার্যক্রম বন্ধ রাখার পূর্বঘোষিত সিদ্ধান্ত থেকে সরে গিয়ে এক মাস পিছিয়েছেন ডিপোমালিকেরা। আজ বুধবার বিকেলে চট্টগ্রাম বন্দর কার্যালয়ে বন্দর কর্তৃপক্ষ, চট্টগ্রাম কাস্টমস ও বেসরকারি ডিপোমালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপোস অ্যাসোসিয়েশনের (বিকডা) মধ্যকার বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

বিকডার পক্ষ থেকে জানানো হয়, বিকডার সঙ্গে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ও চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস কর্মকর্তাদের আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে তাঁদের আগামীকালের কর্মসূচি এক মাসের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। এ দিন আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখার ব্যাপারে সবাই সম্মত হয়েছেন।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব ওমর ফারুক এ সিদ্ধান্তের বিষয়টি আজকের পত্রিকাকে নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে চট্টগ্রাম বন্দরে অফডকের মাশুল বাড়ানো নিয়ে আগামীকাল সকাল ৬টা থেকে বেসরকারি কনটেইনার ডিপোগুলোর কার্যক্রম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বেসরকারি ডিপোমালিকেরা।

ডিপোমালিকেরা জানান, বিদ্যমান মাশুল বা চার্জ দিয়ে কার্যক্রম চালানো তাঁদের পক্ষে আর সম্ভব হচ্ছে না। অথচ তাঁদের মাশুল বাড়ানোর অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। ১১ ডিসেম্বর থেকে তাঁরা আর রপ্তানিপণ্য লোড করতে বা খালি কনটেইনার হ্যান্ডলিং করতে পারবেন না।

বিকডার তথ্যমতে, চট্টগ্রাম বন্দরে সর্বশেষ ২০১৬ সালে ট্যারিফ বা মাশুল বাড়ানো হয়েছিল। গত নয় বছরে শ্রমিকদের মজুরি কয়েকবার বাড়লেও বেসরকারি ডিপোর ট্যারিফ অপরিবর্তিত রয়েছে। পুরোনো হারে কার্যক্রম চালানো অসম্ভব হয়ে পড়ায় ডিপোমালিকেরা অপারেশন বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

বন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হলে চট্টগ্রাম বন্দরের সব ধরনের পণ্য জাহাজীকরণ ও এমটি কনটেইনার হ্যান্ডলিং পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। এতে মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়বে তৈরি পোশাকশিল্পসহ রপ্তানিমুখী শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো।

বন্দর ব্যবহারকারীরা বলছেন, শতভাগ রপ্তানিপণ্য, খালি কনটেইনারের বড় অংশ ও ৬৫ ধরনের আমদানিপণ্য হ্যান্ডলিং করে ১৯টি বেসরকারি কনটেইনার ডিপো বা অফডক কর্তৃপক্ষ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

প্রাথমিকভাবে ১২৫ আসনে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা

আজকের রাশিফল: অতিরিক্ত রাগ লজ্জায় ফেলবে, ঘরে শান্তি চাইলে রান্না নিয়ে চুপ থাকুন

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার ২

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ব্যবসায়ীর কাছে কোটি টাকা চাঁদা দাবি, তিন পুলিশ কর্মকর্তাসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

কোটি টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে সাতক্ষীরার সাবেক তিন পুলিশ কর্মকর্তাসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। আজ বুধবার জেলার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বিলাস মণ্ডলের আদালতে মামলাটি করেন ব্যবসায়ী ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আল ফেরদাউস আলফা। আদালত মামলা আমলে নিয়ে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে বাদীর আইনজীবী খায়রুল বদিউজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, এ মামলার পরবর্তী দিন নির্ধারিত হয়েছে ২০২৬ সালের ২০ এপ্রিল। এ ছাড়া বিচারিক হাকিম মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলার আসামিরা হলেন সদর সার্কেলের সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মীর্জা সালাউদ্দীন, সদর থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান, গোয়েন্দা পুলিশের সাবেক ওসি মহিদুল ইসলাম, সাবেক পিপি আব্দুল লতিফ ও তাঁর ছেলে মো. রাসেল।

মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের ২৯ ডিসেম্বর দুপুরে সদর উপজেলার বাঁকাল চেকপোস্টে বাদীর দেড় কোটি টাকার ভারতীয় সামুদ্রিক মাছ জব্দ করে বিজিবি। পরে বাদীর বৈধ কাগজপত্র বিজিবির কাছে পাঠানো হয়। কিন্তু বিজিবি কাগজপত্র যথাযথ বুঝতে না পেরে সেই মাছ সাতক্ষীরা সদর থানায় পাঠায়।

বৈধ কাগজ পাঠালেও মাছ ছাড়া হবে না—এমন হুমকি দিয়ে সদর থানার তৎকালীন ওসি মোস্তাফিজুর রহমান ফোনে বাদীর কাছে দেড় কোটি টাকা দাবি করেন। একপর্যায়ে বাদী ফোন অফ করতে বাধ্য হন।

পরে মধ্যরাতে সদর সার্কেলের তৎকালীন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মীর্জা সালাউদ্দীন ও ডিবির ওসি মহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে ১০-১২ জন সাদা পোশাকধারী পুলিশ বাদীর পলাশপোলস্থ বাড়িতে গিয়ে ১ কোটি টাকা চাঁদা দাবি করেন।

সে সময় বাড়িতে থাকা ১৫ লাখ টাকা দিয়েও রক্ষা পাননি বাদী। তাঁর ভাই আব্দুল আলিম ও তাঁকে ডিবি পুলিশের কার্যালয়ে তুলে নিয়ে ব্যাপক নির্যাতন করে পুলিশ। চাঁদা না দেওয়ায় সদর থানায় মাছ আটকের ঘটনায় করা মামলায় তাঁদের অজ্ঞাতনামা আসামি দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। অপর দিকে আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে জব্দ করা দেড় কোটি টাকার মাছ মাত্র ১ লাখ ৯৬ হাজার টাকায় বিক্রি দেখিয়ে বাকি টাকা আত্মসাৎ করেন।

মামলার বিবরণীতে আরও বলা হয়, মামলার জামিন করিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে বাদীর কাছ থেকে ৩৫ লাখ টাকা চাঁদা দিতে বাধ্য করেন সাতক্ষীরা জজ আদালতের তৎকালীন পিপি আব্দুল লতিফ ও তাঁর ছেলে মো. রাসেল।

আসামিদের শারীরিক ও মানসিক অত্যাচারে বাদী তাঁর দৃষ্টিশক্তি প্রায় হারিয়ে ফেলেন, আর্থিক ও সামাজিকভাবে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তাই আদালতের কাছে ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করা হয়েছে আরজিতে। তৎকালীন সময়ে অনুকূল পরিবেশ না থাকায় মামলা করতে বিলম্ব হয়েছে বলে আরজিতে উল্লেখ করা হয়।

জানতে চাইলে মামলার বাদী আল ফেরদাউস আলফা বলেন, ‘সাতক্ষীরার সাবেক এই তিন পুলিশ কর্মকর্তা ও সরকারি কৌঁসুলির কারণে আমি আর্থিক, শারীরিক ও মানসিকভাবে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। আমি আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’

অপর দিকে জেলার সাবেক তিন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলার বিষয়ে মন্তব্য করতে অপারগতা প্রকাশ করেন বর্তমান সাতক্ষীরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুকিত খান। তিনি বলেন, ‘মীর্জা সালাউদ্দীনসহ তিন কর্মকর্তার বর্তমান অবস্থা বা অবস্থান সম্পর্কে আমার কোনো কিছু জানা নেই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

প্রাথমিকভাবে ১২৫ আসনে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা

আজকের রাশিফল: অতিরিক্ত রাগ লজ্জায় ফেলবে, ঘরে শান্তি চাইলে রান্না নিয়ে চুপ থাকুন

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার ২

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মা-মেয়ে খুন: প্রথমবার শ্বশুরবাড়িতে গৃহকর্মী আয়েশা, ফিরলেন গ্রেপ্তার হয়ে

ঝালকাঠি প্রতিনিধি  নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল
ঝালকাঠির নলছিটিতে আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার আয়েশা আক্তার (বাঁ থেকে তৃতীয়) ও তাঁর পাশে জামাল সিকদার রাব্বি। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঝালকাঠির নলছিটিতে আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার আয়েশা আক্তার (বাঁ থেকে তৃতীয়) ও তাঁর পাশে জামাল সিকদার রাব্বি। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুনের মামলার আসামি আয়েশা আক্তারকে নিয়ে প্রথমবারের মতো ঝালকাঠির নলছিটিতে নিজ বাড়িতে আসেন জামাল সিকদার রাব্বি। ১৫ বছর আগে বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ হলে তিনি বাড়ি ছাড়েন। এরপর আর তাঁকে এলাকায় ফিরতে দেখা যায়নি।

আজ বুধবার সকালে হঠাৎ আয়েশাকে নিয়ে বাড়িতে হাজির হন রাব্বি। আয়েশাকে সবার কাছে পরিচয় করিয়ে দেন তাঁর স্ত্রী হিসেবে। কিন্তু কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তাঁদের বাড়িতে এসে হাজির হয় মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ। বেরিয়ে আসে, তিনিই আলোচিত জোড়া খুনের মামলার পলাতক আসামি আয়েশা।

পুলিশ, স্থানীয় বাসিন্দা ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জামাল স্ত্রীকে নিয়ে বাড়িতে বেড়ানোর জন্য নয়, আত্মগোপনে এসেছিলেন। দীর্ঘ বছর পর স্ত্রীকে নিয়ে বাড়িতে আসার কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে আলোচিত হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হওয়ার ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

আজ দুপুরে ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার দপদপিয়া ইউনিয়নের কয়ারচর এলাকা থেকে মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ আয়েশাকে গ্রেপ্তার করে। তিনি নরসিংদীর সলিমগঞ্জ এলাকার রবিউল ইসলামের মেয়ে। হত্যাকাণ্ডের পর ঢাকা থেকে নলছিটির দপদপিয়া ইউনিয়নের কয়ারচর এলাকায় জামালের সঙ্গে তাঁর বাড়িতে আসেন আয়েশা। পুলিশের অভিযানে তাঁর স্বামী জামাল সিকদার রাব্বিকেও আটক করা হয়েছে। তিনি ওই এলাকার জাকির সিকদারের ছেলে। রাব্বি ও আয়েশা ঢাকায় থাকেন। একসময় কারখানার শ্রমিক ছিলেন এই যুবক।

দপদপিয়া ইউনিয়ন পরিষদের কয়ারচর ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আব্দুল মন্নান মৃধা চুন্নু বলেন, প্রায় ১৫ বছর আগে জামাল সিকদার রাব্বির বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ হয়। তখন রাব্বিকে রেখে অন্য সন্তানকে নিয়ে বাড়ি থেকে চলে যান তাঁর মা। এরপর রাব্বি বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। পরে কখনো তাঁকে এই এলাকায় দেখা যায়নি। আজ সকালে তিনি একটি মেয়েকে (আয়েশা) নিয়ে বাড়িতে আসেন এবং তাঁকে তাঁর স্ত্রী হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেন। রাব্বির বাবা প্রবাসে থাকেন। তাঁর বৃদ্ধ দাদি একাই বাড়িতে থাকেন।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, রাব্বি তাঁর নানার সহায়তায় চাচার বাসায় ওঠেন। তিনি নিজেও বাবার বাড়ি চিনতে পারছিলেন না। এলাকাবাসী জানতেন, রাব্বি ধনী পরিবারের কোনো মেয়েকে বিয়ে করেছেন। আজ সকালে রাব্বি স্ত্রীকে নিয়ে চাচার বাড়িতে পৌঁছান। দুপুরে ঢাকা থেকে পুলিশ এসে মামলার আসামি আয়েশাকে গ্রেপ্তার এবং রাব্বিকে আটক করে নিয়ে যায়।

ঝালকাঠিতে অভিযানে অংশ নেওয়া মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. সহিদুল ইসলাম মাসুম সাংবাদিকদের বলেন, মোহাম্মদপুরে গৃহকর্তার বাসা থেকে কিছু মালামাল চুরি করার পর সেখানে ধস্তাধস্তি হয়। এ সময় আয়েশা আক্তার ছুরিকাঘাত করে গৃহকর্তার স্ত্রী লায়লা আফরোজ (৪৮) ও তাঁর মেয়ে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজকে (১৫) হত্যা করেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অভিযান চালিয়ে আয়েশাকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে তিনি এসব কথা বলেন।

অভিযানে তেজগাঁও বিভাগের সহকারী পুলিশ কমিশনার আব্দুল্লাহ আল মামুনও ছিলেন। পরে আয়েশাকে নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন পুলিশ সদস্যরা।

এর আগে গত সোমবার সকালে শাহজাহান রোডের ১৪ তলা একটি আবাসিক ভবনের সপ্তম তলায় লায়লা আফরোজ ও তাঁর মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। গতকাল মঙ্গলবার তাঁদের মরদেহ নাটোরে দাফন করা হয়েছে। মামলার এজাহারে বাসা থেকে মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ টাকাসহ মূল্যবান জিনিস খোয়া যাওয়ার কথা বলা হয়েছে।

ভবনের ভেতরের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, হত্যাকাণ্ডের পর এক নারী স্কুলড্রেস পরে কাঁধে ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন। চার দিন আগে আয়েশা পরিচয় দিয়ে ওই বাসায় গৃহকর্মীর কাজ নেওয়া তরুণী এই জোড়া খুনে জড়িত বলে সন্দেহ হয় স্বজনদের।

ঘটনার পর থেকে ওই তরুণী পলাতক ছিলেন। হত্যাকাণ্ডের পর সন্দেহভাজন গৃহকর্মীকে আসামি করে সোমবার রাতে লায়লা আফরোজের স্বামী আ জ ম আজিজুল ইসলাম বাদী হয়ে মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করেন। লায়লা ও তাঁর মেয়ের মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষে গতকাল গ্রামের বাড়ি নাটোর পৌরসভার দক্ষিণ বড়গাছায় নেওয়া হয়। জোহরের নামাজের পর জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাঁদের মরদেহ দাফন করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

প্রাথমিকভাবে ১২৫ আসনে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা

আজকের রাশিফল: অতিরিক্ত রাগ লজ্জায় ফেলবে, ঘরে শান্তি চাইলে রান্না নিয়ে চুপ থাকুন

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার ২

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত