Ajker Patrika

চিকিৎসক ধর্ষণ-হত্যা: পশ্চিমবঙ্গ ও কেন্দ্র সরকারকে রাজনীতি না করতে সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শ 

আপডেট : ২২ আগস্ট ২০২৪, ১৯: ১৬
চিকিৎসক ধর্ষণ-হত্যা: পশ্চিমবঙ্গ ও কেন্দ্র সরকারকে রাজনীতি না করতে সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শ 

পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতার একটি হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যার বিষয়টি নিয়ে রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারকে রাজনীতি না করার পরামর্শ দিয়েছেন ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। আজ বৃহস্পতিবার ভারতের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় এই পরামর্শ দেন। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। 

সুপ্রিম কোর্টে শুনানির সময় ভারতের সলিসিটার জেনারেল তুষার মেহতা ও পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কৌঁসুলি কপিল সিবালের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়ের সময় প্রধান বিচারপতি এই পর্যবেক্ষণ দেন। শুনানির সময় কপিল সিবাল আদালতকে অনুরোধ করেন যেন, এই ইস্যুতে কোনো উসকানিমূলক বিবৃতি দেওয়া না হয়। 

এর জবাবে ভারতের সলিসিটার জেনারেল তুষার মেহতা বলেন, ‘কেউ কোনো বিবৃতি দেবে না, ঠিক আছে। কিন্তু আমাদের কাছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের একজন মন্ত্রীর বক্তব্য আছে। এটা খুবই গুরুতর বিষয়। (ওই মন্ত্রী বলেছিলেন) কেউ যদি নেত্রীর (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) বিরুদ্ধে আঙুল তোলেন, তাহলে সেই আঙুল কেটে ফেলা হবে।’ 
 
এরপরই প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘দয়া করে বিষয়টি নিয়ে রাজনীতি করবেন না, এটাকে রাজনৈতিক ইস্যু বানাবেন না। আইন তার গতিতে চলবে। আমরা নিশ্চিত করছি, দ্রুত ও দক্ষ তদন্তের পর আইন তার স্বাভাবিক গতিপথ ধরে চলবে।’ 

প্রধান বিচারপতির এই বক্তব্য এমন একসময়ে এল যখন পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতাসীন তৃণমূল ও বিরোধী এবং কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন বিজেপি একে অপরকে দোষারোপ করছে। বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূল সরকার ব্যর্থ হয়েছে। বিপরীতে তৃণমূল কংগ্রেস বলেছে, রাজ্য সরকারের গায়ে কালিমা লেপন করতেই বিজেপি এসব মিথ্যা অভিযোগ আনছে। 

ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় ছাড়াও শুনানির সময় এই বেঞ্চে উপস্থিত ছিলেন বিচারপতি জে বি পারদিওয়ালা ও বিচারপতি মনোজ মিশ্রা। শুনানির একপর্যায়ে এই বেঞ্চ চিকিৎসকদের কল্যাণ ও নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এ সময় বেঞ্চের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, ‘আমরা শুধু নির্দেশিকা নির্ধারণ করতে যাচ্ছি না, আমরা একটি প্রয়োগযোগ্য নির্দেশনা পাস করতে যাচ্ছি।’ 

প্রধান বিচারপতি বলেন, বিচার বিভাগ ও চিকিৎসার মতো খাতগুলো আন্দোলনে যেতে পারে না। এর আগে, একই বেঞ্চ বলেছিলেন, চিকিৎসকদের অবশ্যই কাজ শুরু করতে হবে। কারণ, এই দেশের গরিব জনগণের স্বাস্থ্যকে অবহেলায় ফেলে দেওয়ার সুযোগ নেই।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

তাইওয়ানে বিপুল অস্ত্র বিক্রির অনুমোদন, নিজের বিপদ ডেকে আনছে যুক্তরাষ্ট্র—হুমকি চীনের

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আজ দুপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে অবরোধ করেন কারখানার শ্রমিকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ দুপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে অবরোধ করেন কারখানার শ্রমিকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

তাইওয়ানে ১১ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বিক্রির অনুমোদন দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। চীনের ক্রমবর্ধমান সামরিক চাপের মুখে গতকাল বুধবার ট্রাম্প প্রশাসন এই ঘোষণা দেয়, যা তাইওয়ানের ইতিহাসে যুক্তরাষ্ট্রের একক বৃহত্তম অস্ত্র বিক্রির চুক্তি।

তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, প্রস্তাবিত অস্ত্র বিক্রির তালিকায় মোট আট ধরনের সামরিক সরঞ্জাম রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো—৮২টি হাই মোবিলিটি আর্টিলারি রকেট সিস্টেম বা হিমার্স; এটি ইউক্রেন যুদ্ধে রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে অত্যন্ত কার্যকর হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। ৪২০টি আর্মি ট্যাকটিক্যাল মিসাইল সিস্টেম, যা মাঝারি পাল্লার মধ্যে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম। ১ বিলিয়ন ডলার মূল্যের ‘অ্যালটিয়াস’ লোটারিং মিউনিশন বা কামিকাজে ড্রোন। অন্যান্য সরঞ্জামের মধ্যে আছে—৬০টি সেলফ-প্রপেলড হাউইজার সিস্টেম, জ্যাভলিন ও টাউ অ্যান্টি-ট্যাংক মিসাইল ও হেলিকপ্টারের খুচরা যন্ত্রাংশ।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, তাইওয়ানের আত্মরক্ষার স্বার্থে যুক্তরাষ্ট্র সামরিক সহায়তা অব্যাহত রেখেছে। একই সঙ্গে শক্তিশালী প্রতিরোধক্ষমতা গড়ে তোলা ও অসম যুদ্ধকৌশলের সুবিধা কাজে লাগাতে সহায়তা করছে, যা আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার ভিত্তি।

দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, অস্ত্র প্যাকেজটি মার্কিন কংগ্রেসে উত্থাপন করা হয়েছে। এই পর্যায়ে কংগ্রেস চাইলে চুক্তিটি বাতিল বা সংশোধন করতে পারে। তবে তাইওয়ানে অস্ত্র বিক্রির বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে তেমন দ্বিমত নেই, বরং সমর্থন রয়েছে।

এই চুক্তির বিভিন্ন দিক নিয়ে আলাদা এক বিবৃতিতে পেন্টাগন জানায়, অস্ত্র বিক্রি যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয়, অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তার স্বার্থ রক্ষা করে। পাশাপাশি এটি তাইওয়ানের সশস্ত্র বাহিনী আধুনিকীকরণ ও ‘প্রতিরক্ষা সক্ষমতা’ বাড়াতে সহায়তা করবে।

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের তাগিদে তাইওয়ানও তার সামরিক বাহিনীকে ‘অসম যুদ্ধকৌশল’-এর উপযোগী করে গড়ে তুলছে। এর মধ্যে রয়েছে—ছোট, চলনশীল ও তুলনামূলকভাবে কম খরচের অস্ত্র ব্যবহার, যেমন ড্রোন। এগুলো লক্ষ্যভিত্তিক আঘাত হানতে সক্ষম।

তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের মুখপাত্র কারেন কুও এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘শক্তি প্রদর্শনের মাধ্যমেই আমরা শান্তি রক্ষা করব। এই অস্ত্র সহায়তা আমাদের অসম যুদ্ধ চালানোর ক্ষমতা ও আত্মরক্ষার সংকল্পকে আরও দৃঢ় করবে।’

গত ২৬ নভেম্বর চীনের ক্রমবর্ধমান সামরিক হুমকির মুখে নিজেদের সুরক্ষায় অতিরিক্ত ৪ হাজার কোটি ডলারের একটি প্রতিরক্ষা বাজেট ঘোষণা করে তাইওয়ান। প্রেসিডেন্ট লাই চিংতে এ ঘোষণা দিয়ে বলেন, ‘ইতিহাসে প্রমাণ আছে, আগ্রাসনের মুখে আপস করার চেষ্টা কেবল ‘‘দাসত্ব’’ নিয়ে আসে। তাই জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়ে কোনো আপসের সুযোগ নেই। সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের মূল মূল্যবোধই আমাদের জাতির ভিত্তি।’

এদিকে, চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্ত ‘তাইওয়ান প্রণালিতে শান্তি ও স্থিতিশীলতাকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে’। তারা এমন চুক্তি বাতিলের দাবি জানিয়েছে।

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র গুও জিয়াকুন এক বিবৃতিতে বলেন, অস্ত্র দিয়ে তাইওয়ানের স্বাধীনতাকে সহায়তা করে যুক্তরাষ্ট্র নিজেই নিজের বিপদ ডেকে আনছে। তাইওয়ানকে ব্যবহার করে চীনকে ঠেকানোর চেষ্টা কখনোই সফল হবে না।

যুক্তরাষ্ট্র–তাইওয়ান বিজনেস কাউন্সিলের সভাপতি রুপার্ট হ্যামন্ড চেম্বার্স বলেন, হিমার্সের মতো অস্ত্র ইউক্রেন রাশিয়ার বিরুদ্ধে ব্যবহার করেছে। এটি তাইওয়ানে চীনের সম্ভাব্য আগ্রাসন ঠেকাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

এই ঘোষণা আসে গত সপ্তাহে তাইওয়ানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিন চিয়া-লুংয়ের যুক্তরাষ্ট্র সফরের পর। সংশ্লিষ্ট একটি সূত্রের বরাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, তিনি ওয়াশিংটনে মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। তবে বৈঠকের বিষয়ে বিস্তারিত কিছুই জানা যায়নি। তাইওয়ানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও এ বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক সম্পর্ক থাকলেও তাইওয়ানের সঙ্গে তাদের অনানুষ্ঠানিক সম্পর্ক রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রই তাইওয়ানের সবচেয়ে বড় অস্ত্র সরবরাহকারী। এ ছাড়া ‘তাইওয়ান রিলেশনস অ্যাক্ট’ অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ানকে আত্মরক্ষার সরঞ্জাম দিতে আইনত বাধ্য। তবে এই অস্ত্র বিক্রি দীর্ঘদিন ধরেই চীন-যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কে বড় বিতর্কের বিষয়।

চলতি মাসের শুরুতে প্রকাশিত ট্রাম্প প্রশাসনের জাতীয় নিরাপত্তা কৌশলে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ানকে ব্যবহার করে চীনের সঙ্গে সম্ভাব্য সংঘাত প্রতিরোধ এবং ওই অঞ্চলে ‘সামরিক শ্রেষ্ঠত্ব’ বজায় রাখতে চায়। সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য তাইওয়ানের কৌশলগত গুরুত্বও তুলে ধরা হয়। এতে বলা হয়, তাইওয়ানের অবস্থান উত্তর-পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াকে দুটি ভিন্ন সামরিক অঞ্চলে ভাগ করে দেয়।

নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, এই রেকর্ড পরিমাণ অস্ত্র বিক্রির মাধ্যমে ট্রাম্প প্রশাসন বেইজিংকে একটি স্পষ্ট বার্তা দিল—দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় মার্কিন প্রভাব এবং তাইওয়ানের নিরাপত্তা রক্ষায় তারা আপসহীন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

অবসরের আগে ফরমায়েশি রায়, বিচারকদের অসততায় উদ্বিগ্ন ভারতের প্রধান বিচারপতি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ভারতের প্রধান বিচারপতি সূর্য কান্ত। ছবি: সংগৃহীত
ভারতের প্রধান বিচারপতি সূর্য কান্ত। ছবি: সংগৃহীত

ভারতের প্রধান বিচারপতি সূর্য কান্ত বলেছেন, অবসরের ঠিক আগে বিচারকদের একটি অংশ প্রভাবিত হয়ে রায় দিচ্ছেন, যা উদ্বেগজনক।

আজ বৃহস্পতিবার মধ্যপ্রদেশের এক জেলা বিচারকের করা আবেদন শুনছিলেন সুপ্রিম কোর্ট। ওই বিচারক অবসরের মাত্র ১০ দিন আগে তাঁর বরখাস্তের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন।

সূর্য কান্তের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে বিচারপতি জয়মাল্য বাগচিও ছিলেন। তাঁরা বিচারকদের ফরমায়েশি রায় দেওয়ার বিষয়টি তুলে ধরে বলেন, কিছু বিচারক অবসরের আগে ‘ছক্কা হাঁকানোর’ চেষ্টা করছেন।

এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, অভিযোগ অনুযায়ী, বিচারকের দেওয়া দুটি বিচারিক আদেশের সঙ্গে ওই জেলা বিচারকের বরখাস্তের বিষয়টি যুক্ত ছিল।

শুনানিকালে বেঞ্চ মন্তব্য করে, ‘আবেদনকারী অবসরের ঠিক আগে ছক্কা হাঁকাতে শুরু করেছিলেন। এটি একটি দুর্ভাগ্যজনক প্রবণতা। আমি এ নিয়ে বিস্তারিত বলতে চাই না।’

ওই জেলা বিচারকের মূলত গত ৩০ নভেম্বর অবসর নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দুটি বিচারিক আদেশের জেরে তাঁকে ১৯ নভেম্বর বরখাস্ত করা হয়। পরে ২০ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্ট মধ্যপ্রদেশ সরকারকে তাঁর অবসর এক বছর পিছিয়ে দিতে নির্দেশ দেন। কারণ, রাজ্য সরকার কর্মীদের অবসরের বয়স ৬২ বছরে উন্নীত করে।

এ পরিস্থিতি নিয়ে কটাক্ষ করে প্রধান বিচারপতি সূর্য কান্ত বলেন, ‘যখন তিনি ওই দুটি আদেশ দিয়েছিলেন, তখন তিনি জানতেন না যে তাঁর অবসর বয়স এক বছর বাড়ানো হয়েছে। অবসরের আগে বিচারকদের এভাবে একের পর এক আদেশ দেওয়ার প্রবণতা বাড়ছে।’

এ সময় বেঞ্চ প্রশ্ন তোলে—কেন ওই জেলা বিচারক তাঁর বরখাস্তের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে যাননি।

বিচারকের পক্ষে আইনজীবী জানান, যেহেতু এটি ফুল কোর্টের সিদ্ধান্ত ছিল, তাই ন্যায়বিচারের আশায় তিনি সরাসরি সুপ্রিম কোর্টে আসাই সমীচীন মনে করেছিলেন।

বিচারকের পক্ষে উপস্থিত জ্যেষ্ঠ আইনজীবী বিপিন সাংঘি আদালতকে জানান, ওই কর্মকর্তার কর্মজীবন ছিল ‘চমৎকার’ এবং তাঁর বার্ষিক মূল্যায়ন প্রতিবেদনগুলোতে তিনি খুব ভালো রেটিং পেয়েছেন।

তিনি প্রশ্ন তোলেন—যেসব বিচারিক আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করা যায় এবং উচ্চতর আদালত চাইলে সংশোধন করতে পারেন, সেসব আদেশের জন্য কীভাবে একজন কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা যায়।

জবাবে বেঞ্চ জানান, ভুল আদেশ দেওয়ার কারণে কোনো বিচারিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শৃঙ্খলামূলক ব্যবস্থা নেওয়া যায় না কিংবা তাঁকে বরখাস্তও করা যায় না। কিন্তু যদি আদেশগুলো স্পষ্টভাবে অসৎ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়—তাহলে বিষয়টি ভিন্ন।

আদালত আরও উল্লেখ করেন, অতীতে এমন বহু ঘটনা ঘটেছে, যেখানে ফুল কোর্টের সিদ্ধান্ত হাইকোর্ট বিচারিক ক্ষমতা প্রয়োগ করে বাতিল করেছেন। এসব বিবেচনায় সুপ্রিম কোর্ট আবেদনটি শুনতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আবেদনকারীকে হাইকোর্টে যাওয়ার নির্দেশ দেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মুসলিম স্ত্রীকে নিয়ে বিবাদ, ভারতে বাবা-মাকে মেরে খণ্ডিত দেহ নদীতে ফেলল ছেলে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬: ১৯
বাবা-মাকে হত্যার অভিযোগে প্রকৌশলী আম্বেশকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ছবি: এনডিটিভি
বাবা-মাকে হত্যার অভিযোগে প্রকৌশলী আম্বেশকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ছবি: এনডিটিভি

মুসলিম নারীকে বিয়ে করেছিলেন ছেলে। বাবা-মা মেনে নিলেন না এ বিয়ে। দীর্ঘদিন ধরে মনোমালিন্যের পর ছেলে ও তাঁর স্ত্রী সিদ্ধান্ত নিলেন বিবাহ বিচ্ছেদের। কিন্তু খোরপোশ দিতে যে অর্থের প্রয়োজন, তা না থাকায় বাবার কাছে টাকা চেয়েও পেলেন না। আর এই ক্ষোভের জেরে বাবা-মাকে হত্যার পর দেহ খণ্ড-বিখণ্ড করে নদীতে ফেলে দিলেন ছেলে। এমন ঘটনা ঘটেছে ভারতের উত্তরপ্রদেশের জৌনপুরে।

নিখোঁজ এক ষাটোর্ধ্ব দম্পতির সন্ধানে নেমে এই হত্যাকাণ্ডের কথা জানতে পারে পুলিশ। বাবা-মাকে হত্যার অভিযোগে ছেলে আম্বেশকে আটক করেছে পুলিশ। পেশায় প্রকৌশলী আম্বেশ তাঁর বাবা শ্যাম বাহাদুর (৬২) ও মা ববিতা (৬০)-কে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন বলে পুলিশের বরাতে এনডিটিভি জানিয়েছে।

পুলিশ জানায়, আম্বেশের মুসলিম স্ত্রীকে পরিবার মেনে নিতে অস্বীকার করায় দীর্ঘদিন ধরে বাবা-মায়ের সঙ্গে তাঁর বিবাদ চলছিল। একপর্যায়ে আম্বেশ ও তাঁর স্ত্রী আলাদা হয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এ সময় অ্যালিমনি দেওয়ার জন্য আম্বেশের অর্থের প্রয়োজন হয়। তিনি তাঁর বাবার কাছে টাকা চেয়েছিলেন, কিন্তু বাবা তা দিতে অস্বীকার করেন। এ নিয়ে বিরোধ থেকে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

এনডিটিভির প্রতিবেদনে জানা যায়, গত ১৩ ডিসেম্বর আম্বেশের বোন বন্দনা জৌনপুরের জাফরবাদ থানায় তাঁর বাবা-মা এবং ভাই নিখোঁজ হওয়ার একটি ডায়েরি করেন।

বন্দনা জানান, গত ৮ ডিসেম্বর আম্বেশ তাঁকে ফোন করে বলেন, বাবা-মা ঝগড়া করে বাড়ি থেকে চলে গেছেন। তিনি তাঁদের খুঁজতে বের হচ্ছেন। এরপর আম্বেশের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তাঁর সঙ্গে আর যোগাযোগ করা যায়নি।

এক সপ্তাহ পর আম্বেশকে যখন পুলিশ আটক করে, তখন তিনি ভেঙে পড়েন এবং নিজের অপরাধ স্বীকার করেন।

পুলিশি তদন্তে জানা যায়, রেলওয়ের অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী শ্যাম বাহাদুরের একমাত্র ছেলে আম্বেশ প্রায় পাঁচ বছর আগে এক মুসলিম নারীকে বিয়ে করেছিলেন। তাঁর বাবা-মা এই বিয়ে মেনে নেননি এবং পুত্রবধূকে বাড়িতে ঢুকতে দেননি। তাঁদের দুটি সন্তান থাকলেও শ্যাম বাহাদুর বারবার আম্বেশকে চাপ দিচ্ছিলেন তাঁর স্ত্রীকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য। শেষ পর্যন্ত আম্বেশ স্ত্রীকে ডিভোর্স দিতে রাজি হন এবং স্ত্রী খোরপোশ হিসেবে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করেন।

গত ৮ ডিসেম্বর সেই টাকার জন্যই আম্বেশ তাঁর বাবার সাহায্য চান। বাবা তা দিতে অস্বীকার করলে মা ববিতার সঙ্গে আম্বেশের কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে আম্বেশ রান্নাঘরে গিয়ে শিল-পাটার শিল দিয়ে তাঁর মায়ের মাথায় আঘাত করেন। এ সময় তাঁর বাবা প্রতিবেশিদের ডাকতে নিলে বাবার মাথায়ও আঘাত করেন আম্বেশ। ঘটনাস্থলেই বৃদ্ধ দম্পতির মৃত্যু হয়।

পুলিশ জানায়, হত্যার পর প্রমাণ লোপাটের জন্য আম্বেশ মৃতদেহগুলো সরিয়ে ফেলার পরিকল্পনা করেন। বড় কোনো ব্যাগ না পেয়ে গ্যারেজে থাকা ছোট বস্তা আনেন। করাত দিয়ে বাবা-মায়ের দেহ ছয় টুকরো করে বস্তায় ভরে গাড়ির ডিকিতে তুলে নেন। পরে ভোরের দিকে নদীতে ফেলে দেন।

বোন বন্দনাকে ফোন করার পর ছয় দিন ধরে নিখোঁজ ছিলেন আম্বেশ। এ সময় তিনি বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাফেরা করেন এবং মোবাইল ফোন বন্ধ রাখেন। ১৪ ডিসেম্বর জৌনপুরে ফিরে আসেন তিনি। বাবা-মায়ের কথা জিজ্ঞেস করা হলে তিনি এড়িয়ে যান। পরে পরিবারের সদস্যদের সন্দেহ হলে তাঁরাই পুলিশে খবর দেন।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আম্বেশ পুলিশকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেন। তবে একপর্যায়ে তিনি ভেঙে পড়েন এবং বাবা–মাকে হত্যার কথা স্বীকার করেন।

স্বীকারোক্তির পর পুলিশ দেহ উদ্ধারের অভিযান শুরু করে। এ সময় শ্যাম বাহাদুরের দেহের একটি অংশ উদ্ধার করা হয়। পাশাপাশি, হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত করাত এবং শিলপাটাও উদ্ধার করা হয়েছে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আয়ুষ শ্রীবাস্তব জানান, নদীতে তল্লাশির জন্য ডুবুরি দল নামানো হয়েছে। বাকি দেহাংশও দ্রুত উদ্ধার করা হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

যুক্তরাষ্ট্র ছাড়ার কথা ভাবছেন আতঙ্কিত শিক্ষকেরা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬: ২০
যুক্তরাষ্ট্রের ৮১ লাখ শিক্ষকের মধ্যে ৮ লাখ ৫৭ হাজার ২০০ জন অভিবাসী। ছবি: আলজাজিরা
যুক্তরাষ্ট্রের ৮১ লাখ শিক্ষকের মধ্যে ৮ লাখ ৫৭ হাজার ২০০ জন অভিবাসী। ছবি: আলজাজিরা

যুক্তরাষ্ট্রে একটি স্কুলে পড়ান সুজানা। গত দুই বছরে সপ্তাহের প্রতিটি দিন সুজানার কেটেছে শিশুদের জিনিসপত্র সযত্নে সাজানো, ছবি ও বইয়ের মাধ্যমে শেখানো এবং গানের চর্চা করিয়ে। কিন্তু গত অক্টোবরে পাল্টে গেল তাঁর এই জীবন। খবর পেলেন, শিশুদের শিক্ষক হিসেবে যে উপভোগ্য সময় তিনি কাটাতেন, সেই কাজের অনুমতি নবায়নের আবেদন বাতিল হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ১০ শতাংশ শিক্ষক অভিবাসী, যাদের মধ্যে একজন সুজানা। আর তাঁর এই পরিচয়ই এখন আবারও ঠেলে দিয়েছে অনিশ্চিত জীবনের দিকে।

প্রায় এক দশক আগে গুয়াতেমালার সহিংসতা থেকে পালিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে এসেছিলেন সুজানা।

যুক্তরাষ্ট্রে বিদেশ থেকে শিক্ষক নিয়োগ বাড়লেও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ‘অভিবাসী হঠাও’ নীতি তাঁদের জীবিকার জন্য হুমকি সৃষ্টি করেছে। পাশাপাশি এভাবে শিক্ষককে হারানো শিক্ষার্থীদের মানসিকভাবেও প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন শিক্ষকেরা।

ওয়াশিংটন ডিসির কমিউনিকিডস প্রি-স্কুলের শিক্ষক সুজানা আল জাজিরাকে বলছিলেন, ‘শিক্ষার্থীদের এই খবরটা কীভাবে জানাব ভাবছিলাম। তাদের মধ্যে অনেকের বয়স তিন থেকে চার বছর। আবার অনেকে এত ছোট বিষয়টা বোঝার ক্ষমতা নেই।’

স্প্যানিশ ভাষায় সুজানা বলতে থাকেন, ‘এক সপ্তাহের মধ্যে আমি সবকিছু হারালাম। যখন আমি শিক্ষার্থীদের বিদায় জানালাম, তারা জানতে চেয়েছিল কেন। আমি শুধু বলতে পেরেছিলাম, ‘আমি কেবল তোমাদের বিদায় বলতে পারি।’

সুজানা স্মৃতিচারণ করে বলেন, ‘কিছু শিশু আমাকে জড়িয়ে ধরেছিল। ওদের কথা ভেবে আমার মন কেঁদে উঠেছিল।’

যুক্তরাষ্ট্রে বর্তমানে বিদেশে জন্ম নিয়েছেন এমন শিক্ষক কাজ করছেন, এর সঠিক কোনো হিসাব নেই। তবে ২০১৯ সালে প্রকাশিত জর্জ মেসন বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের ৮১ লাখ শিক্ষকের মধ্যে ৮ লাখ ৫৭ হাজার ২০০ জন অভিবাসী। তাঁরা প্রি-স্কুল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের নানা শিক্ষার দায়িত্বে নিযুক্ত আছেন।

যুক্তরাষ্ট্র সরকার শুধু ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষে প্রি-কিন্ডারগার্টেন, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শূন্যপদ পূরণের জন্য ৬ হাজার ৭১৬ জন পূর্ণকালীন শিক্ষককে অস্থায়ী এক্সচেঞ্জ ভিসায় দেশে এনেছে। এর মধ্যে অনেক শিক্ষক ফিলিপাইন থেকে এসেছিলেন, পাশাপাশি জ্যামাইকা, স্পেন ও কলম্বিয়ার মতো দেশ থেকেও অনেকে ছিলেন।

তবে ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে অভিবাসীদের জন্য তৈরি হওয়া অনিশ্চয়তা স্কুলগুলোতে বেশ বিঘ্ন সৃষ্টি করেছে, কেন না তাঁরা অভিবাসী শিক্ষকদের ওপর অনেক বেশি নির্ভরশীল।

সুজানার কর্মস্থল কমিউনিকিডস প্রি-স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি রাউল ইচেভারিয়া অনুমান করে বলেন, কমিউনিকিডসের প্রায় ৯০ শতাংশ কর্মী অভিবাসী। এদের মধ্যে নাগরিকত্ব পাওয়া এবং বৈধ অনুমোদনের সঙ্গে কাজ করা অভিবাসী উভয়েই রয়েছেন।

অভিবাসনের বৈধ পথ বাতিলের কারণে কয়েকজন শিক্ষকের চাকরি ঝুঁকির মুখে পড়েছে বলে জানান ইচেভারিয়া।

স্কুলের আরও পাঁচজন শিক্ষকের কাজের ক্ষমতা অস্থায়ী কাজের অনুমতি (Temporary Protected Status, TPS) বাতিল হয়েছে। ইচেভারিয়া জানান, এই পাঁচজন শিক্ষক মূলত ভেনেজুয়েলা থেকে এসেছেন। কিন্তু অক্টোবর মাসে ট্রাম্প প্রশাসন কমিউনিকিডসের শিক্ষকদেরসহ ৩ লাখ ৫০ হাজারেরও বেশি ভেনেজুয়েলার নাগরিকের টিপিএস বাতিল করে।

ইউএস সিটিজেনশিপ অ্যান্ড ইমিগ্রেশন সার্ভিসেসের ওয়েবসাইট থেকে জানা গেছে, ২০২৬ সালের ২ অক্টোবর তাদের যুক্তরাষ্ট্রে বৈধভাবে কাজ করার অনুমোদন শেষ হবে।

কমিউনিকিডস প্রি-স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা ইচেভারিয়া বলেন, ‘এই শিক্ষকেরা জীবিকার সুযোগ হারিয়েছেন। আর আমার স্কুলে স্প্যানিশ, ফরাসি ও ম্যান্ডারিনের মতো ভাষায় দক্ষ শিক্ষকের প্রয়োজন রয়েছে।’

সরকারের এ সিদ্ধান্তে স্কুলগুলো শিক্ষক সংকটে পড়ছে। এরইমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিটি রাজ্যই ফেডারেল সরকারের কাছে শিক্ষক ঘাটতির তথ্য জানিয়েছে। তবে এ নীতির সমর্থকেরা বলেন, শিক্ষাক্ষেত্রে উচ্চ চাপ এবং কম বেতন শিক্ষকদের আকর্ষণ ও ধরে রাখাকে কঠিন করে তোলে। ফলে কিছু রাজ্য শিক্ষাক্ষেত্রে কর্মী সংগ্রহের জন্য বিদেশিদের দিকে ঝুঁকছে।

ইচেভারিয়া জানান, এই নীতির প্রভাব সবচেয়ে বেশি শিক্ষার্থীদের ওপর পড়েছে। তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শিক্ষকের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হয়। হঠাৎ এক রাতের মধ্যে তারা সেই শিক্ষককে হারায়। তখন তাদের মনের অবস্থা কি হতে পারে!’

তিনি মনে করেন, যখন এই সম্পর্কগুলো ভেঙে যায়, তখন মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা এবং শিক্ষার ক্ষেত্রে পশ্চাৎপদতা দেখা দিতে পারে, বিশেষ করে ছোট বয়সী শিশুদের মধ্যে।

আমেরিকান এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যাসোসিয়েশনের ২০২৪ সালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, শিক্ষকেরা যদি বছরের মধ্যবর্তী সময়ে বিদ্যালয় ছাড়েন, তখন শিশুদের ভাষা দক্ষতা বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর প্রভাব শিশুর আত্মসম্মান এবং মানসিক স্থিতিশীলতাকেও ছোঁয়।

কমিউনিকিডস-এ পড়া এক শিশু অভিভাবক মিশেল হাওয়েল জানান, শিক্ষককে হারানো ক্লাসরুমের পরিবেশকেও সংবেদনশীল করে তুলেছে।

তিনি বলেন, ‘সেখানে শিক্ষকেরা শুধুমাত্র ছোট শিশুদের শিক্ষক নন। তারা যেন বাড়িতে যুক্ত হওয়া নতুন এক সদস্য।’

তিনি আরও বলেন, ‘তারা শিশুদের জড়িয়ে ধরে, অভিভাবকের মতো আগলে রাখে। যখন সেই মানুষগুলো থাকে না, তা শুধু শিশুদের জন্যই নয়, সবার জন্যই মেনে নেওয়া কঠিন।’

স্কুল সাইকোলজিস্ট মারিয়া সি (ছদ্মনাম) বলেন, কোনো প্রিয় ব্যক্তি বা শিক্ষকের হঠাৎ অনুপস্থিতি শিশুর শরীরে কর্টিসল হরমোন বৃদ্ধি করতে পারে, যা বিপদের মুহূর্তে শিশুকে সুরক্ষা দেয়। যখন এই চাপ দীর্ঘস্থায়ী হয়, তখন একই হরমোন সাহায্যের চেয়ে ক্ষতি করতে শুরু করে। এটি শিশুর স্মৃতি, মনোযোগ এবং আবেগ নিয়ন্ত্রণে ব্যাঘাত সৃষ্টি করে। তিনি যেসব শিশুর সঙ্গে কাজ করেন, তারা এই বহিষ্কার নীতির কারণে সৃষ্ট অস্থিরতার সঙ্গে লড়াই করছে।

মারিয়া বলেন, ‘কিছু শিশুর ক্ষেত্রে এটি উদ্বেগের মতো প্রকাশ পায়। অন্যদের ক্ষেত্রে হতাশা বা হঠাৎ রাগের প্রকাশ দেখা যায়। তারা সারাদিন “লড়াই বা পালানো” মোডে থাকে।’

পাঁচ থেকে বারো বছর বয়সী শিশুদের মধ্যে এটা বেশি দেখা যাচ্ছে বলে জানান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত