পরাগ মাঝি, ঢাকা

যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকো শহরের নাম করা আইনজীবী মেলভিন বেল্লির বসার ঘরে রাখা ফোনটি বেজেই চলেছে। এক-দুবার নয়, অনেকবার। কিন্তু আইনজীবী বাড়িতে নেই। তিনি ছিলেন ইউরোপ সফরে।
এতবার ফোন বাজার পর অনিচ্ছা সত্ত্বেও ফোন ধরলেন এক গৃহকর্মী। ফোনের ওপারে থাকা লোকটি বললেন, ‘জানো, আজ আমার জন্মদিন।’ গৃহকর্মী শুনে বললেন, ‘হ্যাপি বার্থ ডে।’ এবার লোকটি বললেন, ‘জানো আজ আমি কী করে জন্মদিন পালন করব?’ গৃহকর্মী আনন্দিত হয়ে বললেন, ‘বড় পার্টি?’ ফোনের লোকটি বললেন, ‘ওসব কিছুই না, আজ আমি একজনকে খুন করব, জন্মদিনের খুন।’ গৃহকর্মী আর কী বলবেন, ভাবতে পারছিলেন না। শুধু জানতে চাইলেন, ‘কে তুমি?’ লোকটি বললেন, ‘জোডিয়াক।’ এরপর ফোন রেখে দিলেন।
এ ঘটনা ছিল ১৯৬৯ সালের ২০ ডিসেম্বরের সন্ধ্যার। আর ফোন করা সেই লোকটি হলেন, বলে কয়ে খুন করে বেড়ানো পৃথিবীর দুর্ধর্ষতম সিরিয়াল কিলার জোডিয়াক। গত শতকের ’৬০ ও ’৭০-এর দশকে নর্দার্ন ক্যালিফোর্নিয়ায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিলেন এই খুনি।
শুধু আইনজীবী বেল্লির বাসাই নয়, তখনকার দিনের প্রভাবশালী সান ফ্রান্সিসকো ক্রনিকলসহ সব পত্রিকায় তিনি খুন করার বার্তা দিয়ে একের পর এক চিঠি লিখতেন। আবার নিজের নাম-পরিচয় এবং ধরা পড়ার সূত্র উল্লেখ করে চিঠি লিখতেন পুলিশের কাছেও। তবে এসব সূত্র লিখতেন ক্রিপ্টোগ্রাফি বা সাংকেতিক ভাষায়, যার কোড আজ অবধি কেউ ভাঙতে পারেনি। তাই খুনিও অধরাই থেকে গেছেন।
জোডিয়াক কিলার তাঁর চিঠিতে নিজ হাতে ৩৭ জনকে খুন করেছিলেন বলে উল্লেখ করেন। যদিও পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো সাতটি নৃশংস খুনের ব্যাপারে একমত হয়েছিল। আর এই বিষয়ে তদন্ত সংস্থাগুলোর লুকোছাপা করারও প্রবণতা ছিল। কারণ, হত্যাকাণ্ডের সংখ্যা যত বাড়ছিল, জোডিয়াক কিলারকে ধরার জন্য তাদের ওপর চাপও তত বাড়ছিল।
বেল্লির বাসায় ‘বার্থডে কল’ করা সেদিনের সেই জোডিয়াক তত দিনে বেশ কয়েকটি খুন করে ফেলেন। গোয়েন্দা সংস্থাগুলো আবিষ্কার করেছিল, বেল্লির বাসায় ফোন করার ঠিক এক বছর আগে অর্থাৎ ১৯৬৮ সালের ২০ ডিসেম্বর জন্মদিনের দিনটিতেই প্রথম স্বীকৃত হত্যাকাণ্ডটি চালিয়েছিলেন জোডিয়াক। সেদিন রাতে তাঁর শিকার ছিলেন দুই কিশোর-কিশোরী। এর মধ্যে ছেলেটির বয়স ছিল ১৭ বছর আর ১৬-তে পা রেখেছিল মেয়েটি। তবে এই বয়সেই তারা একে অপরের প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছিল। দুই-তিন সপ্তাহ আগেই একটি চার্চে পরিচয় হয়েছিল তাদের। সেই থেকে শুরু।
ঘটনার দিন প্রথমবারের মতো ডেটিংয়ে বেরিয়েছিলেন ডেভিড আর বেটি। মায়ের র্যাম্বলার মডেলের স্টেশন ওয়াগন গাড়িটি সঙ্গে নিয়েছিলেন ডেভিড। গাড়ি যেহেতু আছে, প্রেমিকাকে নিয়ে শহরে আর থাকে কে? ডেভিডও তাই বেটিকে নিয়ে ক্যালিফোর্নিয়ার ভ্যালেজো শহরের বাইরে লেক হারম্যান রোডের লাভারস লেনে গিয়েছিল চুটিয়ে প্রেম করতে। প্রথম দিন বলেই হয়তো তাদের উত্তেজনা ছিল অনেক বেশি। কিছুতেই ছাড়তে চাইছিল না একে অপরকে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা কেটে যাচ্ছিল লাভারস লেনে।
রাত ১১টা পেরিয়ে গেলেও ওই এলাকাটিতে তাদের দেখতে পেয়েছিলেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। ততক্ষণে নিরিবিলি হয়ে এসেছিল চারপাশ। তারপরই ঘটে সেই ঘটনাটি। গাড়ির ভেতরে ডেভিড আর বেটি যখন প্রেমে মত্ত তখনই তাদের দিকে এগিয়ে আসেন গাট্টাগোট্টা শরীরের এক ব্যক্তি। কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই জানালা দিয়ে খুব কাছ থেকে ডেভিডের মাথায় একটি গুলি ঢুকিয়ে দেন লোকটি। ঘটনার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বেটি অবশ্য গাড়ির দরজা খুলে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেছিল। কিন্তু পেছন থেকে পরপর পাঁচটি গুলি চালিয়ে তাকে হত্যা করেন সেই আততায়ী।
মর্মান্তিক এই হত্যাকাণ্ডটি যে জোডিয়াক করেছিলেন, সেই খবর জানা ছিল না কারও। হত্যাকাণ্ডের পর তদন্ত করেও খুনিকে শনাক্ত করা যায়নি। তবে এই ঘটনার সাত মাস পর ১৯৬৯ সালের ১ আগস্ট একটি রহস্যময় চিঠি পায় সান ফ্রান্সিসকো ক্রনিকল। এই চিঠিতে তিন সপ্তাহেরও বেশি সময় আগের একটি খুনের দায় স্বীকার করেন খুনি নিজেই। চিঠিতে তিনি সাত মাস আগে সংঘটিত ডেভিড ও বেটির হত্যাকাণ্ডেরও সুনিপুণ বিবরণ দেন।
যে খুনের বর্ণনা দিয়ে জোডিয়াক প্রথমবারের মতো গণমাধ্যমকে চিঠি লিখেছিলেন, সেটি সংঘটিত হয়েছিল ১৯৬৯ সালের ৪ জুলাই। সেদিনও তাঁর শিকার ছিলেন এক প্রেমিক যুগল। তবে তাঁদের সম্পর্কটি ছিল পরকীয়ার। ২২ বছরের বিবাহিত ডারলিন আর তাঁর প্রেমিক ছিলেন ১৯ বছরের মাইকেল ম্যাগিউ। সাত মাস আগে যেখানে হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছিল, তার মাত্র ৪ কিলোমিটার দূরেই ভ্যালেজোর ব্লু রক স্প্রিং পার্কে সময় কাটাতে গিয়েছিলেন তাঁরা। এই জুটিও গাড়ির ভেতরেই অবস্থান করছিলেন এবং যথারীতি রাত গভীর হয়ে আসছিল। এমনই একসময় তাঁদের গাড়িটির পেছনে এসে দাঁড়ায় আরেকটি গাড়ি। হেডলাইট জ্বালানো অবস্থায়ই ওই গাড়ি থেকে একটি ফ্ল্যাশ লাইট নিয়ে বেরিয়ে আসেন এক ব্যক্তি। প্রেমিক যুগল ভেবেছিলেন, হয়তো কোনো পুলিশ অফিসার এগিয়ে আসছেন তাঁদের দিকে। তাই পকেট থেকে আইডি কার্ড বের করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তাঁরা। কিন্তু লোকটি কাছে এসেই সোজা গুলি করে বসেন ম্যাগিউকে। পাশে বসা ডারলিনকেও পরপর কয়েকটি গুলি করেন তিনি। পরে নিজের গাড়িতে গিয়ে ম্যাগিউয়ের গোঙানোর আওয়াজ শুনে আবারও তাঁদের দিকে ফিরে আসেন লোকটি এবং দুজনকে আরও কয়েকটি গুলি করে চলে যান। এই ঘটনায় ডারলিন মারা গেলেও সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে গিয়েছিলেন ম্যাগিউ। তাঁর কাছ থেকেই খুনির বাহ্যিক শরীর নিয়ে কিছু প্রাথমিক ধারণা পেয়েছিল পুলিশ। খুনির কল পেয়ে সেখানে ছুটে গিয়েছিল পুলিশ সদস্যরা। ম্যাগিউয়ে বর্ণনা অনুযায়ী, খুনি ছিলেন ছয় ফুটের কাছাকাছি লম্বা। আর ভারী স্বাস্থ্যের অধিকারী, তাঁর বয়স ৩০-এর মতো হবে।
জোডিয়াকের অপরাধকে শুধু তাঁর নৃশংসতা দিয়েই চিহ্নিত করা হয় না। এসব খুনের বিষয়ে গণমাধ্যম আর পুলিশের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগের ঘটনাগুলোও ব্যাপকভাবে আলোচিত। ১৯৬৯ সালের ১ আগস্ট সান ফ্রান্সিসকো ক্রনিকল, ভ্যালেজো টাইমস-হেরাল্ড এবং সান ফ্রান্সিসকো অ্যাক্সামিনার পত্রিকাকে পাঠানো তাঁর চিঠিগুলো ছিল প্রায় অভিন্ন। চিঠিগুলোতে হত্যার দায় স্বীকারের পাশাপাশি সাংকেতিক অক্ষর ব্যবহার করে তিনি যে নোট পাঠিয়েছিলেন, তার পাঠোদ্ধারের দাবি করেছিলেন এক অধ্যাপক দম্পতি। তাঁদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সাংকেতিক ভাষায় খুনি লিখেছিলেন, ‘আমি মানুষকে হত্যা করতে পছন্দ করি। কারণ, এটি অনেক মজার খেলা। এটি বনে শিকারের চেয়েও বেশি মজার। কারণ, মানুষ সবচেয়ে বিপজ্জনক প্রাণী।’
চিঠির শেষে বন্দুকের নিশানার একটি চিহ্নও এঁকে দিয়েছিলেন খুনি। এই চিহ্নটিকে জোডিয়াকের সাংকেতিক স্বাক্ষর হিসেবে ধরে নেওয়া হয়েছিল। পুলিশের নথি অনুযায়ী, জোডিয়াক তাঁর তৃতীয় হত্যাকাণ্ডটি ঘটান ১৯৬৯ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর। সেদিন ব্যারিয়েসা লেকের পাড়ে শান্তিপূর্ণ বিকেল উপভোগ করতে গিয়েছিলেন তরুণ দম্পতি ব্রায়ান হার্টনেল এবং সেসেলিয়া শেপার্ড। কিন্তু জনবিরল সেই স্থানটিতে তাঁদের সামনে কালো হুডিযুক্ত পোশাক পরা এক লোক হাজির হন। হাতে পিস্তলের ভয় দেখিয়ে তিনি দুজনকে বেঁধে ফেলেছিলেন। পরে ওই দম্পতিকে নির্মমভাবে একের পর এক ছুরিকাঘাত শুরু করেন ব্যক্তিটি। সেই যাত্রায়ও বেঁচে যান শুধু পুরুষটি, প্রাণ হারান তাঁর সঙ্গী সেসেলিয়া। ঘটনার পর তাঁদের গাড়িতে একটি বার্তা লিখে রেখে যান হত্যাকারী। সেই বার্তার নিচেই বন্দুকের নিশানার মতো সেই জোডিয়াক স্বাক্ষরও করেন।
এই ঘটনার ১৪ দিনের মাথায় জোডিয়াক আরও একজনকে খুন করেন। তাঁর এবারের শিকার ছিলেন সান ফ্রান্সিসকোর ট্যাক্সিচালক পল স্টাইন। বলা যায়, এই হত্যাকাণ্ডের সময়ই জোডিয়াককে ধরার খুব কাছাকাছি গিয়েও ব্যর্থ হয়েছিল পুলিশ। সেদিন শহরের প্রেসিডিয়ো হাইটের ম্যাপল স্ট্রিটে যাত্রীবেশে থাকা জোডিয়াক ট্যাক্সিচালক পল স্টাইনকে গুলি করে মানিব্যাগ, চাবি এবং শার্টের একটি অংশ ছিঁড়ে নিয়ে পালিয়ে যান। ঘটনাস্থলসংলগ্ন একটি বাড়ি থেকে সেদিন তিন কিশোর এই খুনের বিষয়টি পুলিশকে ফোন করে জানায়। তবে তাদের দেওয়া তথ্য নথিভুক্ত করতে গিয়ে একটি ছোট্ট ভুল করে বসেন ফোন অপারেটর পুলিশ। অপরাধীর বাহ্যিক বর্ণনার তথ্যে তিনি শ্বেতাঙ্গর স্থানে কৃষ্ণাঙ্গ লিখে ফেলেন। ঘটনাস্থলের খুব কাছেই থাকা এক পুলিশ কর্মকর্তাকে খুনির বিষয়ে যখন তথ্য সরবরাহ করা হচ্ছিল, ধারণা করা হয় তখন তাঁর সামনে দিয়েই যাচ্ছিলেন সন্দেহভাজন। কিন্তু শ্বেতাঙ্গ হওয়ায় তাঁর প্রতি কোনো মনোযোগই দেননি ওই পুলিশ কর্মকর্তা।
তিন দিন পর ১৪ অক্টোবর জোডিয়াকের আরও একটি চিঠি পাওয়া যায়। এই চিঠিতে তিনি জানান, ট্যাক্সিচালককে নিজের হাতেই খুন করেছেন। প্রমাণ হিসেবে রক্তমাখা শার্টের ছেঁড়া অংশও পাঠান তিনি।
ঘটনার এই পর্যায়ে এসে নিজের শ্রেষ্ঠত্বও দাবি করেন জোডিয়াক। পত্রিকায় পাঠানো চিঠির মাধ্যমে শহরের সব মানুষকে জোডিয়াক শব্দের আদ্যক্ষর ‘জেড’ চিহ্নিত বোতাম ব্যবহারের নির্দেশ দেন তিনি। পাশাপাশি এটাও জানিয়ে দেন, এবার তাঁর শিকার হবে স্কুলের শিশুরা। বোমা মেরে স্কুল বাস উড়িয়ে দেওয়ারও হুমকি দেন তিনি। এই হুমকিগুলো শহরজুড়ে আতঙ্কের সৃষ্টি করে। পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর তৎপরতাকে আরও বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু ব্যাপক অনুসন্ধানের পরও জোডিয়াক অধরাই থেকে যান। পুলিশ ও গোয়েন্দা বাহিনী তাঁর অনুসন্ধান করতে গিয়ে অসংখ্য সূত্রকে অনুসরণ করেছে। শত শত সন্দেহভাজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। কিন্তু কাউকেই নিশ্চিতভাবে জোডিয়াক হিসেবে সাব্যস্ত করা সম্ভব হয়নি। বিভিন্ন খুনের সূত্র দিয়ে তাঁর সর্বশেষ চিঠিটি পাওয়া গিয়েছিল ১৯৭৪ সালে।
জোডিয়াককে খুঁজতে গিয়ে বছরের পর বছর ধরে অসংখ্য সন্দেহভাজন আবির্ভূত হয়েছেন। এদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি যাকে সন্দেহ করা হয়েছিল, তিনি ছিলেন আর্থার লেই অ্যালেন নামে সাবেক এক স্কুলশিক্ষক। সহিংসতার অতীত রেকর্ড থাকা ছাড়াও ক্রিপ্টোগ্রাফি তথা সাংকেতিক অক্ষর ও শব্দের প্রতি তাঁর ঝোঁক ছিল। জোডিয়াক ব্র্যান্ডের একটি হাতঘড়িও ছিল তাঁর এবং একসময় তিনি নৌবাহিনীতেও ছিলেন, যেমনটি জোডিয়াক নিজেই দাবি করেছিলেন এক চিঠিতে। আরও একটি বিষয় হলো বেশ কয়েকটি হত্যাকাণ্ডের কাছাকাছি অবস্থানেই বসবাস করতেন আর্থার লেই। তাঁর ওপর ব্যাপক নজরদারি ও জিজ্ঞাসাবাদের পরও কোনো হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার নিশ্চিত প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এর ফলে আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁকে অভিযুক্তও করা সম্ভব হয়নি।
জোডিয়াক কিলারের মামলাটি আমেরিকার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় রহস্যগুলোর মধ্যে একটি। ধরা পড়া এড়াতে তাঁর অসাধারণ দক্ষতা এবং নিরাপত্তাব্যবস্থাকে তাঁর চ্যালেঞ্জ জানানোর বিষয়টি আজও মানুষকে ভাবনার মধ্যে রেখেছে। জোডিয়াককে নিয়ে অসংখ্য বই, সিনেমা ও তথ্যচিত্র নির্মিত হয়েছে। এসব তত্ত্বে সম্ভাব্য সমাধানেরও অনেক সূত্র দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কোনো কিছুই তদন্তকারীদের নিশ্চিত করতে পারেনি। জোডিয়াক শেষ পর্যন্ত অধরাই থেকে গেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকো শহরের নাম করা আইনজীবী মেলভিন বেল্লির বসার ঘরে রাখা ফোনটি বেজেই চলেছে। এক-দুবার নয়, অনেকবার। কিন্তু আইনজীবী বাড়িতে নেই। তিনি ছিলেন ইউরোপ সফরে।
এতবার ফোন বাজার পর অনিচ্ছা সত্ত্বেও ফোন ধরলেন এক গৃহকর্মী। ফোনের ওপারে থাকা লোকটি বললেন, ‘জানো, আজ আমার জন্মদিন।’ গৃহকর্মী শুনে বললেন, ‘হ্যাপি বার্থ ডে।’ এবার লোকটি বললেন, ‘জানো আজ আমি কী করে জন্মদিন পালন করব?’ গৃহকর্মী আনন্দিত হয়ে বললেন, ‘বড় পার্টি?’ ফোনের লোকটি বললেন, ‘ওসব কিছুই না, আজ আমি একজনকে খুন করব, জন্মদিনের খুন।’ গৃহকর্মী আর কী বলবেন, ভাবতে পারছিলেন না। শুধু জানতে চাইলেন, ‘কে তুমি?’ লোকটি বললেন, ‘জোডিয়াক।’ এরপর ফোন রেখে দিলেন।
এ ঘটনা ছিল ১৯৬৯ সালের ২০ ডিসেম্বরের সন্ধ্যার। আর ফোন করা সেই লোকটি হলেন, বলে কয়ে খুন করে বেড়ানো পৃথিবীর দুর্ধর্ষতম সিরিয়াল কিলার জোডিয়াক। গত শতকের ’৬০ ও ’৭০-এর দশকে নর্দার্ন ক্যালিফোর্নিয়ায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিলেন এই খুনি।
শুধু আইনজীবী বেল্লির বাসাই নয়, তখনকার দিনের প্রভাবশালী সান ফ্রান্সিসকো ক্রনিকলসহ সব পত্রিকায় তিনি খুন করার বার্তা দিয়ে একের পর এক চিঠি লিখতেন। আবার নিজের নাম-পরিচয় এবং ধরা পড়ার সূত্র উল্লেখ করে চিঠি লিখতেন পুলিশের কাছেও। তবে এসব সূত্র লিখতেন ক্রিপ্টোগ্রাফি বা সাংকেতিক ভাষায়, যার কোড আজ অবধি কেউ ভাঙতে পারেনি। তাই খুনিও অধরাই থেকে গেছেন।
জোডিয়াক কিলার তাঁর চিঠিতে নিজ হাতে ৩৭ জনকে খুন করেছিলেন বলে উল্লেখ করেন। যদিও পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো সাতটি নৃশংস খুনের ব্যাপারে একমত হয়েছিল। আর এই বিষয়ে তদন্ত সংস্থাগুলোর লুকোছাপা করারও প্রবণতা ছিল। কারণ, হত্যাকাণ্ডের সংখ্যা যত বাড়ছিল, জোডিয়াক কিলারকে ধরার জন্য তাদের ওপর চাপও তত বাড়ছিল।
বেল্লির বাসায় ‘বার্থডে কল’ করা সেদিনের সেই জোডিয়াক তত দিনে বেশ কয়েকটি খুন করে ফেলেন। গোয়েন্দা সংস্থাগুলো আবিষ্কার করেছিল, বেল্লির বাসায় ফোন করার ঠিক এক বছর আগে অর্থাৎ ১৯৬৮ সালের ২০ ডিসেম্বর জন্মদিনের দিনটিতেই প্রথম স্বীকৃত হত্যাকাণ্ডটি চালিয়েছিলেন জোডিয়াক। সেদিন রাতে তাঁর শিকার ছিলেন দুই কিশোর-কিশোরী। এর মধ্যে ছেলেটির বয়স ছিল ১৭ বছর আর ১৬-তে পা রেখেছিল মেয়েটি। তবে এই বয়সেই তারা একে অপরের প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছিল। দুই-তিন সপ্তাহ আগেই একটি চার্চে পরিচয় হয়েছিল তাদের। সেই থেকে শুরু।
ঘটনার দিন প্রথমবারের মতো ডেটিংয়ে বেরিয়েছিলেন ডেভিড আর বেটি। মায়ের র্যাম্বলার মডেলের স্টেশন ওয়াগন গাড়িটি সঙ্গে নিয়েছিলেন ডেভিড। গাড়ি যেহেতু আছে, প্রেমিকাকে নিয়ে শহরে আর থাকে কে? ডেভিডও তাই বেটিকে নিয়ে ক্যালিফোর্নিয়ার ভ্যালেজো শহরের বাইরে লেক হারম্যান রোডের লাভারস লেনে গিয়েছিল চুটিয়ে প্রেম করতে। প্রথম দিন বলেই হয়তো তাদের উত্তেজনা ছিল অনেক বেশি। কিছুতেই ছাড়তে চাইছিল না একে অপরকে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা কেটে যাচ্ছিল লাভারস লেনে।
রাত ১১টা পেরিয়ে গেলেও ওই এলাকাটিতে তাদের দেখতে পেয়েছিলেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। ততক্ষণে নিরিবিলি হয়ে এসেছিল চারপাশ। তারপরই ঘটে সেই ঘটনাটি। গাড়ির ভেতরে ডেভিড আর বেটি যখন প্রেমে মত্ত তখনই তাদের দিকে এগিয়ে আসেন গাট্টাগোট্টা শরীরের এক ব্যক্তি। কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই জানালা দিয়ে খুব কাছ থেকে ডেভিডের মাথায় একটি গুলি ঢুকিয়ে দেন লোকটি। ঘটনার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বেটি অবশ্য গাড়ির দরজা খুলে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেছিল। কিন্তু পেছন থেকে পরপর পাঁচটি গুলি চালিয়ে তাকে হত্যা করেন সেই আততায়ী।
মর্মান্তিক এই হত্যাকাণ্ডটি যে জোডিয়াক করেছিলেন, সেই খবর জানা ছিল না কারও। হত্যাকাণ্ডের পর তদন্ত করেও খুনিকে শনাক্ত করা যায়নি। তবে এই ঘটনার সাত মাস পর ১৯৬৯ সালের ১ আগস্ট একটি রহস্যময় চিঠি পায় সান ফ্রান্সিসকো ক্রনিকল। এই চিঠিতে তিন সপ্তাহেরও বেশি সময় আগের একটি খুনের দায় স্বীকার করেন খুনি নিজেই। চিঠিতে তিনি সাত মাস আগে সংঘটিত ডেভিড ও বেটির হত্যাকাণ্ডেরও সুনিপুণ বিবরণ দেন।
যে খুনের বর্ণনা দিয়ে জোডিয়াক প্রথমবারের মতো গণমাধ্যমকে চিঠি লিখেছিলেন, সেটি সংঘটিত হয়েছিল ১৯৬৯ সালের ৪ জুলাই। সেদিনও তাঁর শিকার ছিলেন এক প্রেমিক যুগল। তবে তাঁদের সম্পর্কটি ছিল পরকীয়ার। ২২ বছরের বিবাহিত ডারলিন আর তাঁর প্রেমিক ছিলেন ১৯ বছরের মাইকেল ম্যাগিউ। সাত মাস আগে যেখানে হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছিল, তার মাত্র ৪ কিলোমিটার দূরেই ভ্যালেজোর ব্লু রক স্প্রিং পার্কে সময় কাটাতে গিয়েছিলেন তাঁরা। এই জুটিও গাড়ির ভেতরেই অবস্থান করছিলেন এবং যথারীতি রাত গভীর হয়ে আসছিল। এমনই একসময় তাঁদের গাড়িটির পেছনে এসে দাঁড়ায় আরেকটি গাড়ি। হেডলাইট জ্বালানো অবস্থায়ই ওই গাড়ি থেকে একটি ফ্ল্যাশ লাইট নিয়ে বেরিয়ে আসেন এক ব্যক্তি। প্রেমিক যুগল ভেবেছিলেন, হয়তো কোনো পুলিশ অফিসার এগিয়ে আসছেন তাঁদের দিকে। তাই পকেট থেকে আইডি কার্ড বের করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তাঁরা। কিন্তু লোকটি কাছে এসেই সোজা গুলি করে বসেন ম্যাগিউকে। পাশে বসা ডারলিনকেও পরপর কয়েকটি গুলি করেন তিনি। পরে নিজের গাড়িতে গিয়ে ম্যাগিউয়ের গোঙানোর আওয়াজ শুনে আবারও তাঁদের দিকে ফিরে আসেন লোকটি এবং দুজনকে আরও কয়েকটি গুলি করে চলে যান। এই ঘটনায় ডারলিন মারা গেলেও সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে গিয়েছিলেন ম্যাগিউ। তাঁর কাছ থেকেই খুনির বাহ্যিক শরীর নিয়ে কিছু প্রাথমিক ধারণা পেয়েছিল পুলিশ। খুনির কল পেয়ে সেখানে ছুটে গিয়েছিল পুলিশ সদস্যরা। ম্যাগিউয়ে বর্ণনা অনুযায়ী, খুনি ছিলেন ছয় ফুটের কাছাকাছি লম্বা। আর ভারী স্বাস্থ্যের অধিকারী, তাঁর বয়স ৩০-এর মতো হবে।
জোডিয়াকের অপরাধকে শুধু তাঁর নৃশংসতা দিয়েই চিহ্নিত করা হয় না। এসব খুনের বিষয়ে গণমাধ্যম আর পুলিশের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগের ঘটনাগুলোও ব্যাপকভাবে আলোচিত। ১৯৬৯ সালের ১ আগস্ট সান ফ্রান্সিসকো ক্রনিকল, ভ্যালেজো টাইমস-হেরাল্ড এবং সান ফ্রান্সিসকো অ্যাক্সামিনার পত্রিকাকে পাঠানো তাঁর চিঠিগুলো ছিল প্রায় অভিন্ন। চিঠিগুলোতে হত্যার দায় স্বীকারের পাশাপাশি সাংকেতিক অক্ষর ব্যবহার করে তিনি যে নোট পাঠিয়েছিলেন, তার পাঠোদ্ধারের দাবি করেছিলেন এক অধ্যাপক দম্পতি। তাঁদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সাংকেতিক ভাষায় খুনি লিখেছিলেন, ‘আমি মানুষকে হত্যা করতে পছন্দ করি। কারণ, এটি অনেক মজার খেলা। এটি বনে শিকারের চেয়েও বেশি মজার। কারণ, মানুষ সবচেয়ে বিপজ্জনক প্রাণী।’
চিঠির শেষে বন্দুকের নিশানার একটি চিহ্নও এঁকে দিয়েছিলেন খুনি। এই চিহ্নটিকে জোডিয়াকের সাংকেতিক স্বাক্ষর হিসেবে ধরে নেওয়া হয়েছিল। পুলিশের নথি অনুযায়ী, জোডিয়াক তাঁর তৃতীয় হত্যাকাণ্ডটি ঘটান ১৯৬৯ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর। সেদিন ব্যারিয়েসা লেকের পাড়ে শান্তিপূর্ণ বিকেল উপভোগ করতে গিয়েছিলেন তরুণ দম্পতি ব্রায়ান হার্টনেল এবং সেসেলিয়া শেপার্ড। কিন্তু জনবিরল সেই স্থানটিতে তাঁদের সামনে কালো হুডিযুক্ত পোশাক পরা এক লোক হাজির হন। হাতে পিস্তলের ভয় দেখিয়ে তিনি দুজনকে বেঁধে ফেলেছিলেন। পরে ওই দম্পতিকে নির্মমভাবে একের পর এক ছুরিকাঘাত শুরু করেন ব্যক্তিটি। সেই যাত্রায়ও বেঁচে যান শুধু পুরুষটি, প্রাণ হারান তাঁর সঙ্গী সেসেলিয়া। ঘটনার পর তাঁদের গাড়িতে একটি বার্তা লিখে রেখে যান হত্যাকারী। সেই বার্তার নিচেই বন্দুকের নিশানার মতো সেই জোডিয়াক স্বাক্ষরও করেন।
এই ঘটনার ১৪ দিনের মাথায় জোডিয়াক আরও একজনকে খুন করেন। তাঁর এবারের শিকার ছিলেন সান ফ্রান্সিসকোর ট্যাক্সিচালক পল স্টাইন। বলা যায়, এই হত্যাকাণ্ডের সময়ই জোডিয়াককে ধরার খুব কাছাকাছি গিয়েও ব্যর্থ হয়েছিল পুলিশ। সেদিন শহরের প্রেসিডিয়ো হাইটের ম্যাপল স্ট্রিটে যাত্রীবেশে থাকা জোডিয়াক ট্যাক্সিচালক পল স্টাইনকে গুলি করে মানিব্যাগ, চাবি এবং শার্টের একটি অংশ ছিঁড়ে নিয়ে পালিয়ে যান। ঘটনাস্থলসংলগ্ন একটি বাড়ি থেকে সেদিন তিন কিশোর এই খুনের বিষয়টি পুলিশকে ফোন করে জানায়। তবে তাদের দেওয়া তথ্য নথিভুক্ত করতে গিয়ে একটি ছোট্ট ভুল করে বসেন ফোন অপারেটর পুলিশ। অপরাধীর বাহ্যিক বর্ণনার তথ্যে তিনি শ্বেতাঙ্গর স্থানে কৃষ্ণাঙ্গ লিখে ফেলেন। ঘটনাস্থলের খুব কাছেই থাকা এক পুলিশ কর্মকর্তাকে খুনির বিষয়ে যখন তথ্য সরবরাহ করা হচ্ছিল, ধারণা করা হয় তখন তাঁর সামনে দিয়েই যাচ্ছিলেন সন্দেহভাজন। কিন্তু শ্বেতাঙ্গ হওয়ায় তাঁর প্রতি কোনো মনোযোগই দেননি ওই পুলিশ কর্মকর্তা।
তিন দিন পর ১৪ অক্টোবর জোডিয়াকের আরও একটি চিঠি পাওয়া যায়। এই চিঠিতে তিনি জানান, ট্যাক্সিচালককে নিজের হাতেই খুন করেছেন। প্রমাণ হিসেবে রক্তমাখা শার্টের ছেঁড়া অংশও পাঠান তিনি।
ঘটনার এই পর্যায়ে এসে নিজের শ্রেষ্ঠত্বও দাবি করেন জোডিয়াক। পত্রিকায় পাঠানো চিঠির মাধ্যমে শহরের সব মানুষকে জোডিয়াক শব্দের আদ্যক্ষর ‘জেড’ চিহ্নিত বোতাম ব্যবহারের নির্দেশ দেন তিনি। পাশাপাশি এটাও জানিয়ে দেন, এবার তাঁর শিকার হবে স্কুলের শিশুরা। বোমা মেরে স্কুল বাস উড়িয়ে দেওয়ারও হুমকি দেন তিনি। এই হুমকিগুলো শহরজুড়ে আতঙ্কের সৃষ্টি করে। পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর তৎপরতাকে আরও বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু ব্যাপক অনুসন্ধানের পরও জোডিয়াক অধরাই থেকে যান। পুলিশ ও গোয়েন্দা বাহিনী তাঁর অনুসন্ধান করতে গিয়ে অসংখ্য সূত্রকে অনুসরণ করেছে। শত শত সন্দেহভাজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। কিন্তু কাউকেই নিশ্চিতভাবে জোডিয়াক হিসেবে সাব্যস্ত করা সম্ভব হয়নি। বিভিন্ন খুনের সূত্র দিয়ে তাঁর সর্বশেষ চিঠিটি পাওয়া গিয়েছিল ১৯৭৪ সালে।
জোডিয়াককে খুঁজতে গিয়ে বছরের পর বছর ধরে অসংখ্য সন্দেহভাজন আবির্ভূত হয়েছেন। এদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি যাকে সন্দেহ করা হয়েছিল, তিনি ছিলেন আর্থার লেই অ্যালেন নামে সাবেক এক স্কুলশিক্ষক। সহিংসতার অতীত রেকর্ড থাকা ছাড়াও ক্রিপ্টোগ্রাফি তথা সাংকেতিক অক্ষর ও শব্দের প্রতি তাঁর ঝোঁক ছিল। জোডিয়াক ব্র্যান্ডের একটি হাতঘড়িও ছিল তাঁর এবং একসময় তিনি নৌবাহিনীতেও ছিলেন, যেমনটি জোডিয়াক নিজেই দাবি করেছিলেন এক চিঠিতে। আরও একটি বিষয় হলো বেশ কয়েকটি হত্যাকাণ্ডের কাছাকাছি অবস্থানেই বসবাস করতেন আর্থার লেই। তাঁর ওপর ব্যাপক নজরদারি ও জিজ্ঞাসাবাদের পরও কোনো হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার নিশ্চিত প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এর ফলে আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁকে অভিযুক্তও করা সম্ভব হয়নি।
জোডিয়াক কিলারের মামলাটি আমেরিকার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় রহস্যগুলোর মধ্যে একটি। ধরা পড়া এড়াতে তাঁর অসাধারণ দক্ষতা এবং নিরাপত্তাব্যবস্থাকে তাঁর চ্যালেঞ্জ জানানোর বিষয়টি আজও মানুষকে ভাবনার মধ্যে রেখেছে। জোডিয়াককে নিয়ে অসংখ্য বই, সিনেমা ও তথ্যচিত্র নির্মিত হয়েছে। এসব তত্ত্বে সম্ভাব্য সমাধানেরও অনেক সূত্র দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কোনো কিছুই তদন্তকারীদের নিশ্চিত করতে পারেনি। জোডিয়াক শেষ পর্যন্ত অধরাই থেকে গেছেন।

জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
৬ দিন আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
১০ দিন আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২০ নভেম্বর ২০২৫
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২০ নভেম্বর ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
হাদিকে গুলির ঘটনায় মাস্ক পরা দুই তরুণ জড়িত বলে তাঁর সহযোদ্ধাদের সন্দেহ। তাঁদের দাবি, কয়েকদিন ধরে দুই তরুণ মাস্ক পরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হাদির সঙ্গে গণসংযোগে অংশ নিচ্ছেন। বার বার তাঁদের মাস্ক খুলতে বলা হলেও তাঁরা রাজি হননি। হাদিঘনিষ্ঠদের সন্দেহ, এই তরুণরা হাদিকে হত্যার উদ্দেশ্যে তাঁর গতিবিধি বোঝার জন্য তাঁর সঙ্গে যুক্ত হন।
দুজনের মধ্যে মাস্ক পরা একজন হাদির পাশে বসে আছে— এমন একটি ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই তাকে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ হিসেবে দেখিয়েছেন। তবে মাস্ক করা এই তরুণই যে হাদিকে গুলি করেছেন, কিংবা এই তরুণই যে ফয়সাল, তা নিশ্চিত করে বলছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে ‘সন্দেহভাজন’ হিসেবে শনাক্ত একজনের ছবি প্রকাশ করে ধরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ডিএমপির বিবৃতিতে বলা হয়, ‘শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিজয়নগর বক্স কালভার্ট এলাকায় মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তদের হামলায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদি গুরুতর আহত হন। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ হামলাকারীদের গ্রেফতারে রাজধানীতে জোর অভিযান পরিচালনা করছে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ছবির ব্যক্তিকে প্রাথমিকভাবে সনাক্ত করা গেছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ তাকে হন্য হয়ে খুঁজছে। উক্ত ব্যক্তি সম্পর্কে কোন তথ্য থাকলে বা তার সন্ধান পেলে দ্রুত নিম্নলিখিত মোবাইল নম্বর অথবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে পুলিশকে জানানোর জন্য বিনীত অনুরোধ করা হলো।’
পুলিশের বিবৃতিতে এই তরুণের নাম উল্লেখ করা না হলেও ছবি দেখে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ বলে আন্দাজ করা যায়। এই তরুণকেও আগে হাদীর সঙ্গে দেখা গেছে। তবে গত কয়েকদিন ধরে হাদির সঙ্গে গণসংযোগে থাকা মাস্ক পরা তরুণটিই ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ এমন কোনো তথ্য পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, গত ৯ ডিসেম্বর বাংলামোটর এলাকায় হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে গিয়ে হাদির পাশে বসে আলোচনা শুনেছিলেন ফয়সাল করিম। সেই আলোচনার ছবিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
ফয়সাল করিম নামের তরুণ কার্যক্রমনিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধঘোষিত সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ২০১৯ সালের ১১ মে ঘোষিত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তিনি সদস্য হন। তাঁর পুরো নাম ফয়সাল করিম দাউদ খান।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে গুলিবিদ্ধ হন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা–৮ সংসদীয় আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ওসমান হাদি। হাদিকে বহনকারী রিকশাকে অনুসরণ করে পেছন দিকে থেকে মোটরসাইকেলে এসে তাঁকে গুলি করে চলে যায় আততায়ীরা। হাদি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার নামে ওসমান হাদির প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন জায়গায় তাঁর সঙ্গে ফয়সাল করিমের কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেই ছবিগুলোতে থাকা ফয়সাল করিমের সঙ্গে মাস্ক পরা ব্যক্তির চেহারার কিছুটা সাদৃশ্য আছে। সেকারণে গুলি ছোড়ার ঘটনায় তাঁকে সন্দেহ করা হচ্ছে।
এর মধ্যেই দুপুরে ডিএমপি সন্দেহভাজনকে শনাক্তের কথা জানায় এবং ওসমান হাদিকে গুলি করা ব্যক্তিকে ধরিয়ে দিতে পারলে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

পেশাদারদের যোগাযোগমাধ্যম লিংকডইনে ফয়সাল করিমের নামে প্রোফাইল আছে। সেখানে তিনি নিজেকে অ্যাপল সফট আইটি, ওয়াইসিইউ টেকনোলজি ও এনলিস্ট ওয়ার্ক নামে তিন প্রতিষ্ঠানের মালিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
লিংকডইন প্রোফাইলের তথ্য অনুযায়ী, ফয়সাল করিম ২০১৩ সালে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটারবিজ্ঞানে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। পরে আরেকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি এমবিএ করেছেন বলে সেখানে উল্লেখ রয়েছে।
২০২৪ সালে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনকারীদের দমনে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা–কর্মীদের সঙ্গে মাঠে ছিলেন বলে ছাত্রলীগের সূত্র জানিয়েছে।
ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় নাম আসার পর ফয়সাল করিমের সঙ্গে আওয়ামী লীগ আমলে বাংলাদেশের দুইবারের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কিছু নেতার ছবি ফেসবুকে প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে হাদির সঙ্গে ঢাকা–৮ আসনে গণসংযোগ এবং বাংলামোটরে হাদির প্রতিষ্ঠিত ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারের আড্ডায় ফয়সালের অংশ নেওয়ার ছবিও ভাইরাল হয়েছে। অনেকে ধারণা করছেন, ফয়সাল করিম ওসমান হাদিকে বেশ কিছুদিন ধরে অনুসরণ করছিলেন।
২০১৬ সালে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সহযোগিতা ও সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে ‘ব্যাটল অব ৭১’ নামে একটি কম্পিউটার গেম তৈরি করেছিল ফয়সাল করিমের মালিকানাধীন ওয়াইসিইউ টেকনোলজি লিমিটেড। সে বছরের নভেম্বরে ওই গেমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বেসিসের তৎকালীন সভাপতি এবং পরে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারও উপস্থিত ছিলেন।
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘আসনভিত্তিক নির্বাচন পরিচালনা ও সমন্বয়ক কমিটি’ করেছিল কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। ঢাকা–১২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। এই আসনের সমন্বয়ক কমিটির সদস্য ছিলেন ফয়সাল করিম।
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর গত বছরের ২৮ অক্টোবর ঢাকার আদাবরের বাইতুল আমান হাউজিং সোসাইটি এলাকায় ব্রিটিশ কলাম্বিয়া স্কুলের চতুর্থ তলায় অফিসে অস্ত্রের মুখে ১৭ লাখ টাকা লুটের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় আদাবর থানার মামলার প্রধান আসামি ছিলেন ফয়সাল করিম।
মামলা হওয়ার কিছুদিন পর ৭ নভেম্বর আদাবর এলাকা থেকে ফয়সাল করিমকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তাঁর কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন ও পাঁচটি গুলিও উদ্ধার করা হয়। ওই মামলায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট থেকে জামিন পান ফয়সাল করিম। জামিনের সময়সীমা বাড়াতে গত ১২ আগস্ট আবারও আবেদন করলে হাইকোর্ট নতুন করে তাঁর এক বছরের জামিন মঞ্জুর করেন।
জামিনে থাকা অবস্থায় এবার তাঁর বিরুদ্ধে ওসমান হাদিকে গুলি করার অভিযোগ এল। এত অল্প সময়ের মধ্যে তিনি কীভাবে জামিন পেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। কারণ, কোনো অপরাধমূলক কাজের প্রমাণ না থাকলেও অভ্যুত্থানের পর শুধু মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা নিয়ে আলোচনা সভা করায় গ্রেপ্তার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাংবাদিকের জামিন বারবার নাকচ করা হয়েছিল। আর এ রকম লুটের ঘটনায় দুটি অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিকে এতো দ্রুত জামিন দেওয়া হলো কীভাবে, সেই প্রশ্ন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখন আলোচনা–সমালোচনায় সরব।

জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
হাদিকে গুলির ঘটনায় মাস্ক পরা দুই তরুণ জড়িত বলে তাঁর সহযোদ্ধাদের সন্দেহ। তাঁদের দাবি, কয়েকদিন ধরে দুই তরুণ মাস্ক পরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হাদির সঙ্গে গণসংযোগে অংশ নিচ্ছেন। বার বার তাঁদের মাস্ক খুলতে বলা হলেও তাঁরা রাজি হননি। হাদিঘনিষ্ঠদের সন্দেহ, এই তরুণরা হাদিকে হত্যার উদ্দেশ্যে তাঁর গতিবিধি বোঝার জন্য তাঁর সঙ্গে যুক্ত হন।
দুজনের মধ্যে মাস্ক পরা একজন হাদির পাশে বসে আছে— এমন একটি ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই তাকে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ হিসেবে দেখিয়েছেন। তবে মাস্ক করা এই তরুণই যে হাদিকে গুলি করেছেন, কিংবা এই তরুণই যে ফয়সাল, তা নিশ্চিত করে বলছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে ‘সন্দেহভাজন’ হিসেবে শনাক্ত একজনের ছবি প্রকাশ করে ধরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ডিএমপির বিবৃতিতে বলা হয়, ‘শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিজয়নগর বক্স কালভার্ট এলাকায় মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তদের হামলায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদি গুরুতর আহত হন। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ হামলাকারীদের গ্রেফতারে রাজধানীতে জোর অভিযান পরিচালনা করছে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ছবির ব্যক্তিকে প্রাথমিকভাবে সনাক্ত করা গেছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ তাকে হন্য হয়ে খুঁজছে। উক্ত ব্যক্তি সম্পর্কে কোন তথ্য থাকলে বা তার সন্ধান পেলে দ্রুত নিম্নলিখিত মোবাইল নম্বর অথবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে পুলিশকে জানানোর জন্য বিনীত অনুরোধ করা হলো।’
পুলিশের বিবৃতিতে এই তরুণের নাম উল্লেখ করা না হলেও ছবি দেখে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ বলে আন্দাজ করা যায়। এই তরুণকেও আগে হাদীর সঙ্গে দেখা গেছে। তবে গত কয়েকদিন ধরে হাদির সঙ্গে গণসংযোগে থাকা মাস্ক পরা তরুণটিই ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ এমন কোনো তথ্য পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, গত ৯ ডিসেম্বর বাংলামোটর এলাকায় হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে গিয়ে হাদির পাশে বসে আলোচনা শুনেছিলেন ফয়সাল করিম। সেই আলোচনার ছবিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
ফয়সাল করিম নামের তরুণ কার্যক্রমনিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধঘোষিত সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ২০১৯ সালের ১১ মে ঘোষিত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তিনি সদস্য হন। তাঁর পুরো নাম ফয়সাল করিম দাউদ খান।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে গুলিবিদ্ধ হন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা–৮ সংসদীয় আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ওসমান হাদি। হাদিকে বহনকারী রিকশাকে অনুসরণ করে পেছন দিকে থেকে মোটরসাইকেলে এসে তাঁকে গুলি করে চলে যায় আততায়ীরা। হাদি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার নামে ওসমান হাদির প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন জায়গায় তাঁর সঙ্গে ফয়সাল করিমের কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেই ছবিগুলোতে থাকা ফয়সাল করিমের সঙ্গে মাস্ক পরা ব্যক্তির চেহারার কিছুটা সাদৃশ্য আছে। সেকারণে গুলি ছোড়ার ঘটনায় তাঁকে সন্দেহ করা হচ্ছে।
এর মধ্যেই দুপুরে ডিএমপি সন্দেহভাজনকে শনাক্তের কথা জানায় এবং ওসমান হাদিকে গুলি করা ব্যক্তিকে ধরিয়ে দিতে পারলে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

পেশাদারদের যোগাযোগমাধ্যম লিংকডইনে ফয়সাল করিমের নামে প্রোফাইল আছে। সেখানে তিনি নিজেকে অ্যাপল সফট আইটি, ওয়াইসিইউ টেকনোলজি ও এনলিস্ট ওয়ার্ক নামে তিন প্রতিষ্ঠানের মালিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
লিংকডইন প্রোফাইলের তথ্য অনুযায়ী, ফয়সাল করিম ২০১৩ সালে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটারবিজ্ঞানে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। পরে আরেকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি এমবিএ করেছেন বলে সেখানে উল্লেখ রয়েছে।
২০২৪ সালে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনকারীদের দমনে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা–কর্মীদের সঙ্গে মাঠে ছিলেন বলে ছাত্রলীগের সূত্র জানিয়েছে।
ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় নাম আসার পর ফয়সাল করিমের সঙ্গে আওয়ামী লীগ আমলে বাংলাদেশের দুইবারের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কিছু নেতার ছবি ফেসবুকে প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে হাদির সঙ্গে ঢাকা–৮ আসনে গণসংযোগ এবং বাংলামোটরে হাদির প্রতিষ্ঠিত ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারের আড্ডায় ফয়সালের অংশ নেওয়ার ছবিও ভাইরাল হয়েছে। অনেকে ধারণা করছেন, ফয়সাল করিম ওসমান হাদিকে বেশ কিছুদিন ধরে অনুসরণ করছিলেন।
২০১৬ সালে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সহযোগিতা ও সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে ‘ব্যাটল অব ৭১’ নামে একটি কম্পিউটার গেম তৈরি করেছিল ফয়সাল করিমের মালিকানাধীন ওয়াইসিইউ টেকনোলজি লিমিটেড। সে বছরের নভেম্বরে ওই গেমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বেসিসের তৎকালীন সভাপতি এবং পরে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারও উপস্থিত ছিলেন।
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘আসনভিত্তিক নির্বাচন পরিচালনা ও সমন্বয়ক কমিটি’ করেছিল কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। ঢাকা–১২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। এই আসনের সমন্বয়ক কমিটির সদস্য ছিলেন ফয়সাল করিম।
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর গত বছরের ২৮ অক্টোবর ঢাকার আদাবরের বাইতুল আমান হাউজিং সোসাইটি এলাকায় ব্রিটিশ কলাম্বিয়া স্কুলের চতুর্থ তলায় অফিসে অস্ত্রের মুখে ১৭ লাখ টাকা লুটের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় আদাবর থানার মামলার প্রধান আসামি ছিলেন ফয়সাল করিম।
মামলা হওয়ার কিছুদিন পর ৭ নভেম্বর আদাবর এলাকা থেকে ফয়সাল করিমকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তাঁর কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন ও পাঁচটি গুলিও উদ্ধার করা হয়। ওই মামলায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট থেকে জামিন পান ফয়সাল করিম। জামিনের সময়সীমা বাড়াতে গত ১২ আগস্ট আবারও আবেদন করলে হাইকোর্ট নতুন করে তাঁর এক বছরের জামিন মঞ্জুর করেন।
জামিনে থাকা অবস্থায় এবার তাঁর বিরুদ্ধে ওসমান হাদিকে গুলি করার অভিযোগ এল। এত অল্প সময়ের মধ্যে তিনি কীভাবে জামিন পেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। কারণ, কোনো অপরাধমূলক কাজের প্রমাণ না থাকলেও অভ্যুত্থানের পর শুধু মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা নিয়ে আলোচনা সভা করায় গ্রেপ্তার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাংবাদিকের জামিন বারবার নাকচ করা হয়েছিল। আর এ রকম লুটের ঘটনায় দুটি অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিকে এতো দ্রুত জামিন দেওয়া হলো কীভাবে, সেই প্রশ্ন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখন আলোচনা–সমালোচনায় সরব।

এবার লোকটি বললেন, ‘জানো, আজ আমি কী করে জন্মদিন পালন করব?’ গৃহকর্মী আনন্দিত হয়ে বললেন, ‘বড় পার্টি?’ ফোনের লোকটি বললেন, ‘ওসব কিছুই না, আজ আমি একজনকে খুন করব, জন্মদিনের খুন।’
২১ জুন ২০২৪
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
১০ দিন আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২০ নভেম্বর ২০২৫
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২০ নভেম্বর ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় করা হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
স্ত্রী লায়লা আফরোজ (৪৮) ও মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫) হত্যার ঘটনায় গতকাল মামলাটি করেন নাটোরের স্থায়ী বাসিন্দা আ জ ম আজিজুল ইসলাম। মামলায় কথিত গৃহকর্মী মোছা. আয়েশাকে (২০) একমাত্র আসামি করা হয়েছে। তবে এজাহারে তাঁর বাবার নাম ও ঠিকানায় ‘অজ্ঞাত’ লেখা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে আজকের পত্রিকাকে মামলার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রকিবুজ্জামান তালুকদার। গতকাল সকাল ৭টা ৫১ মিনিট থেকে ৯টা ৩৫ মিনিটের মধ্যে যেকোনো সময় এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এজাহারে বাদী আজিজুল লিখেছেন, তিনি পেশায় একজন শিক্ষক। মোহাম্মদপুরে পরিবার নিয়ে থাকেন। চার দিন আগে উল্লিখিত আসামি তাঁর বাসায় খণ্ডকালীন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। গতকাল সকাল ৭টার দিকে তিনি (আজিজুল) তাঁর কর্মস্থল উত্তরায় চলে যান। কর্মস্থলে থাকাকালে তিনি তাঁর স্ত্রীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
পরে তিনি বেলা ১১টার দিকে বাসায় আসেন। এসে দেখতে পান, তাঁর স্ত্রীর গলাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কাটা। স্ত্রী রক্তাক্ত জখম হয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন আর মেয়ের গলার নিচে ডান পাশে কাটা। মেয়ে গুরুতর অবস্থায় বাসার প্রধান ফটকে পড়ে আছে। মেয়ের এই অবস্থা দেখে তিনি দ্রুত তাকে উদ্ধার করেন। পরিচ্ছন্নতাকর্মী আশিকের মাধ্যমে মেয়েকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
মামলায় আজিজুল আরও লিখেছেন, তিনি বাসার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করেন। এতে তিনি দেখতে পান, আসামি সকাল ৭টা ৫১ মিনিটের সময় কাজ করার জন্য বাসায় আসেন। সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটের সময় আসামি তাঁর (বাদী) মেয়ের স্কুলড্রেস পরে বাসা থেকে পালিয়ে যান। যাওয়ার সময় একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থসহ অন্যান্য মূলবান সামগ্রী নিয়ে যান আসামি।
মামলায় বাদী লিখেছেন, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে তিনি নিশ্চিত হন যে, অজ্ঞাত কারণে আসামি তাঁর (বাদী) স্ত্রী ও মেয়েকে ছুরি বা অন্য কোনো ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে হত্যা করেন।
মা-মেয়ে হত্যার আসামিকে শনাক্ত করা যায়নি। মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ জানায়, গৃহকর্মীর পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি। পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় করা হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
স্ত্রী লায়লা আফরোজ (৪৮) ও মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫) হত্যার ঘটনায় গতকাল মামলাটি করেন নাটোরের স্থায়ী বাসিন্দা আ জ ম আজিজুল ইসলাম। মামলায় কথিত গৃহকর্মী মোছা. আয়েশাকে (২০) একমাত্র আসামি করা হয়েছে। তবে এজাহারে তাঁর বাবার নাম ও ঠিকানায় ‘অজ্ঞাত’ লেখা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে আজকের পত্রিকাকে মামলার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রকিবুজ্জামান তালুকদার। গতকাল সকাল ৭টা ৫১ মিনিট থেকে ৯টা ৩৫ মিনিটের মধ্যে যেকোনো সময় এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এজাহারে বাদী আজিজুল লিখেছেন, তিনি পেশায় একজন শিক্ষক। মোহাম্মদপুরে পরিবার নিয়ে থাকেন। চার দিন আগে উল্লিখিত আসামি তাঁর বাসায় খণ্ডকালীন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। গতকাল সকাল ৭টার দিকে তিনি (আজিজুল) তাঁর কর্মস্থল উত্তরায় চলে যান। কর্মস্থলে থাকাকালে তিনি তাঁর স্ত্রীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
পরে তিনি বেলা ১১টার দিকে বাসায় আসেন। এসে দেখতে পান, তাঁর স্ত্রীর গলাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কাটা। স্ত্রী রক্তাক্ত জখম হয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন আর মেয়ের গলার নিচে ডান পাশে কাটা। মেয়ে গুরুতর অবস্থায় বাসার প্রধান ফটকে পড়ে আছে। মেয়ের এই অবস্থা দেখে তিনি দ্রুত তাকে উদ্ধার করেন। পরিচ্ছন্নতাকর্মী আশিকের মাধ্যমে মেয়েকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
মামলায় আজিজুল আরও লিখেছেন, তিনি বাসার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করেন। এতে তিনি দেখতে পান, আসামি সকাল ৭টা ৫১ মিনিটের সময় কাজ করার জন্য বাসায় আসেন। সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটের সময় আসামি তাঁর (বাদী) মেয়ের স্কুলড্রেস পরে বাসা থেকে পালিয়ে যান। যাওয়ার সময় একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থসহ অন্যান্য মূলবান সামগ্রী নিয়ে যান আসামি।
মামলায় বাদী লিখেছেন, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে তিনি নিশ্চিত হন যে, অজ্ঞাত কারণে আসামি তাঁর (বাদী) স্ত্রী ও মেয়েকে ছুরি বা অন্য কোনো ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে হত্যা করেন।
মা-মেয়ে হত্যার আসামিকে শনাক্ত করা যায়নি। মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ জানায়, গৃহকর্মীর পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি। পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে।

এবার লোকটি বললেন, ‘জানো, আজ আমি কী করে জন্মদিন পালন করব?’ গৃহকর্মী আনন্দিত হয়ে বললেন, ‘বড় পার্টি?’ ফোনের লোকটি বললেন, ‘ওসব কিছুই না, আজ আমি একজনকে খুন করব, জন্মদিনের খুন।’
২১ জুন ২০২৪
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
৬ দিন আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২০ নভেম্বর ২০২৫
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২০ নভেম্বর ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সৌদি আরবে এক প্রবাসী ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে বাংলাদেশে তাঁর পরিবারের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে একটি চক্র। না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব ও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে (এমএফএস) ধাপে ধাপে মোট ৩৫ লাখ টাকা পাঠালে সৌদি আরবের রিয়াদে অচেতন অবস্থায় তাঁকে ফেলে যায় অপহরণকারীরা।
গত মঙ্গলবার অপহরণকারী এই চক্রের বাংলাদেশি সদস্য মো. জিয়াউর রহমানকে (৪২) মাগুরার শালিখা থানার হরিপুর বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি মো. রাসেল নামের ওই প্রবাসীকে অপহরণের পর সে মাসের ২১ তারিখে তাঁর শ্বশুর রাজধানীর খিলগাঁও থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মামলাটি সিআইডির ঢাকা মেট্রো (পূর্ব) ইউনিট তদন্ত করছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মো. রাসেল ২০ বছর ধরে রিয়াদে ব্যবসা করছেন। ১২ জানুয়ারি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা তাঁকে অপহরণ করে তাঁর বড় ভাই সাইফুল ইসলামের কাছে ইমু ও ভিওআইপিতে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। কয়েক ধাপে টাকা পাঠানোর পর তাঁকে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে যায় অপহরণকারীরা।

সৌদি আরবে এক প্রবাসী ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে বাংলাদেশে তাঁর পরিবারের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে একটি চক্র। না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব ও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে (এমএফএস) ধাপে ধাপে মোট ৩৫ লাখ টাকা পাঠালে সৌদি আরবের রিয়াদে অচেতন অবস্থায় তাঁকে ফেলে যায় অপহরণকারীরা।
গত মঙ্গলবার অপহরণকারী এই চক্রের বাংলাদেশি সদস্য মো. জিয়াউর রহমানকে (৪২) মাগুরার শালিখা থানার হরিপুর বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি মো. রাসেল নামের ওই প্রবাসীকে অপহরণের পর সে মাসের ২১ তারিখে তাঁর শ্বশুর রাজধানীর খিলগাঁও থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মামলাটি সিআইডির ঢাকা মেট্রো (পূর্ব) ইউনিট তদন্ত করছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মো. রাসেল ২০ বছর ধরে রিয়াদে ব্যবসা করছেন। ১২ জানুয়ারি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা তাঁকে অপহরণ করে তাঁর বড় ভাই সাইফুল ইসলামের কাছে ইমু ও ভিওআইপিতে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। কয়েক ধাপে টাকা পাঠানোর পর তাঁকে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে যায় অপহরণকারীরা।

এবার লোকটি বললেন, ‘জানো, আজ আমি কী করে জন্মদিন পালন করব?’ গৃহকর্মী আনন্দিত হয়ে বললেন, ‘বড় পার্টি?’ ফোনের লোকটি বললেন, ‘ওসব কিছুই না, আজ আমি একজনকে খুন করব, জন্মদিনের খুন।’
২১ জুন ২০২৪
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
৬ দিন আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
১০ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২০ নভেম্বর ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

অরাজকতা প্রতিহত করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে অসদাচরণ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী। তিনি বলেছেন, পুলিশ যখন অরাজকতা ঠেকানোর চেষ্টা করছে, তখন তাদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক।
ডিএমপি কমিশনার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘আমার অফিসারদের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ করবেন না।’
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সাম্প্রতিক অরাজকতা প্রতিরোধের সময় পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ‘পুলিশ যখন অরাজকতা প্রতিহত করার চেষ্টা করছিল, তখন আমার অফিসারদের সঙ্গে যে ধরনের ব্যবহার করা হয়েছে, তা অত্যন্ত হতাশাজনক। আমার অফিসারদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করবেন না। আমরা সংঘাতে জড়াতে চাই না; আমরা সেবা দিতে চাই। আপনারা যেটি করতে চাচ্ছিলেন, সেটি করলে সমাজে, ঢাকায় এবং পুরো দেশে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো।’
কমিশনার জানান, একটি গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হয়েছে। এখন যদি একই ধরনের কার্যকলাপ দেখা যায়, তাহলে সমাজে অস্থিরতা বাড়বে। এ জন্যই পুলিশের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছিলেন। কিন্তু তাঁদের প্রতি এমন আচরণ কোনো শিক্ষিত ও সচেতন মানুষের কাছ থেকে প্রত্যাশিত নয়।
পল্লবী থানার সামনে ককটেল বিস্ফোরণে এক পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমার নিরপরাধ অফিসারকে যেভাবে ককটেল মেরে আহত করা হয়েছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এতে সদস্যদের মনোবল নষ্ট হয় এবং এর ক্ষতি সমাজকেই ভোগ করতে হয়। যদি পুলিশের মনোবল ভেঙে যায়, তবে ৫ আগস্টের পর যেভাবে ৮০ বছরের বৃদ্ধও লাঠি হাতে নিয়ে মহল্লা পাহারা দিয়েছেন, সেই পরিস্থিতি আবার তৈরি হতে পারে।’
যারা ককটেল ছোড়া বা এ ধরনের দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে পুলিশ সদস্যদের মনোবল ভাঙার চেষ্টা করছে, তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন—‘এই কাজটি করবেন না।’
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
ডিএমপি কমিশনার জানান, দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তিনির্ভর অপরাধ মোকাবিলায় আধুনিক সক্ষমতা গড়ে তুলতেই ডিবির সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন করা হয়েছে। এখানে থাকবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিযুক্ত ল্যাব, দক্ষ তদন্তকারী দল, ডিজিটাল ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ এবং ২৪ ঘণ্টার রেসপন্স টিম। ফেসবুক পেজ, ই-মেইল এবং ডিবির অনলাইন চ্যানেলের মাধ্যমে নাগরিকেরা সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারবেন। প্রযুক্তিনির্ভর, সময়োপযোগী ও প্রমাণভিত্তিক পুলিশ সেবা নিশ্চিত করাই তাদের লক্ষ্য।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, বর্তমান সময়ে অনলাইন জালিয়াতি, প্রতারণা, ডিজিটাল হয়রানি, মানহানি, অনলাইন গ্যাম্বলিংসহ নানা অপরাধ মানুষের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও আর্থিক সুরক্ষাকে হুমকির মুখে ফেলছে। তাই জনগণের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ডিএমপি তার সক্ষমতা বাড়িয়ে চলেছে।
নারী ও কিশোরদের সুরক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে সাইবার সাপোর্ট সেন্টার কাজ করবে উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারী ও কিশোরদের ওপর হয়রানির অভিযোগ দ্রুত সমাধানের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে। হয়রানির শিকার হলে দ্রুত সহায়তা নিশ্চিত করাই তাদের অন্যতম অঙ্গীকার।
সাইবার নিরাপত্তা শুধু পুলিশের দায়িত্ব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সমাজের সচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিরাপদ অনলাইন পরিবেশ গড়ে তুলতে তিনি সম্মিলিত উদ্যোগের ওপর গুরুত্ব দেন।

অরাজকতা প্রতিহত করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে অসদাচরণ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী। তিনি বলেছেন, পুলিশ যখন অরাজকতা ঠেকানোর চেষ্টা করছে, তখন তাদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক।
ডিএমপি কমিশনার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘আমার অফিসারদের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ করবেন না।’
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সাম্প্রতিক অরাজকতা প্রতিরোধের সময় পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ‘পুলিশ যখন অরাজকতা প্রতিহত করার চেষ্টা করছিল, তখন আমার অফিসারদের সঙ্গে যে ধরনের ব্যবহার করা হয়েছে, তা অত্যন্ত হতাশাজনক। আমার অফিসারদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করবেন না। আমরা সংঘাতে জড়াতে চাই না; আমরা সেবা দিতে চাই। আপনারা যেটি করতে চাচ্ছিলেন, সেটি করলে সমাজে, ঢাকায় এবং পুরো দেশে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো।’
কমিশনার জানান, একটি গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হয়েছে। এখন যদি একই ধরনের কার্যকলাপ দেখা যায়, তাহলে সমাজে অস্থিরতা বাড়বে। এ জন্যই পুলিশের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছিলেন। কিন্তু তাঁদের প্রতি এমন আচরণ কোনো শিক্ষিত ও সচেতন মানুষের কাছ থেকে প্রত্যাশিত নয়।
পল্লবী থানার সামনে ককটেল বিস্ফোরণে এক পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমার নিরপরাধ অফিসারকে যেভাবে ককটেল মেরে আহত করা হয়েছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এতে সদস্যদের মনোবল নষ্ট হয় এবং এর ক্ষতি সমাজকেই ভোগ করতে হয়। যদি পুলিশের মনোবল ভেঙে যায়, তবে ৫ আগস্টের পর যেভাবে ৮০ বছরের বৃদ্ধও লাঠি হাতে নিয়ে মহল্লা পাহারা দিয়েছেন, সেই পরিস্থিতি আবার তৈরি হতে পারে।’
যারা ককটেল ছোড়া বা এ ধরনের দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে পুলিশ সদস্যদের মনোবল ভাঙার চেষ্টা করছে, তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন—‘এই কাজটি করবেন না।’
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
ডিএমপি কমিশনার জানান, দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তিনির্ভর অপরাধ মোকাবিলায় আধুনিক সক্ষমতা গড়ে তুলতেই ডিবির সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন করা হয়েছে। এখানে থাকবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিযুক্ত ল্যাব, দক্ষ তদন্তকারী দল, ডিজিটাল ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ এবং ২৪ ঘণ্টার রেসপন্স টিম। ফেসবুক পেজ, ই-মেইল এবং ডিবির অনলাইন চ্যানেলের মাধ্যমে নাগরিকেরা সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারবেন। প্রযুক্তিনির্ভর, সময়োপযোগী ও প্রমাণভিত্তিক পুলিশ সেবা নিশ্চিত করাই তাদের লক্ষ্য।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, বর্তমান সময়ে অনলাইন জালিয়াতি, প্রতারণা, ডিজিটাল হয়রানি, মানহানি, অনলাইন গ্যাম্বলিংসহ নানা অপরাধ মানুষের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও আর্থিক সুরক্ষাকে হুমকির মুখে ফেলছে। তাই জনগণের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ডিএমপি তার সক্ষমতা বাড়িয়ে চলেছে।
নারী ও কিশোরদের সুরক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে সাইবার সাপোর্ট সেন্টার কাজ করবে উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারী ও কিশোরদের ওপর হয়রানির অভিযোগ দ্রুত সমাধানের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে। হয়রানির শিকার হলে দ্রুত সহায়তা নিশ্চিত করাই তাদের অন্যতম অঙ্গীকার।
সাইবার নিরাপত্তা শুধু পুলিশের দায়িত্ব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সমাজের সচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিরাপদ অনলাইন পরিবেশ গড়ে তুলতে তিনি সম্মিলিত উদ্যোগের ওপর গুরুত্ব দেন।

এবার লোকটি বললেন, ‘জানো, আজ আমি কী করে জন্মদিন পালন করব?’ গৃহকর্মী আনন্দিত হয়ে বললেন, ‘বড় পার্টি?’ ফোনের লোকটি বললেন, ‘ওসব কিছুই না, আজ আমি একজনকে খুন করব, জন্মদিনের খুন।’
২১ জুন ২০২৪
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
৬ দিন আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
১০ দিন আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২০ নভেম্বর ২০২৫