Ajker Patrika

এমপি আনোয়ারুলকে হত্যার নেপথ্যে ‘সোনার টাকা নিয়ে বিরোধ’

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা ও কলকাতা প্রতিনিধি
আপডেট : ২৪ মে ২০২৪, ০৮: ০৯
এমপি আনোয়ারুলকে হত্যার নেপথ্যে ‘সোনার টাকা নিয়ে বিরোধ’

ভারতে গিয়ে নিখোঁজ ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আনোয়ারুল আজীম আনার কলকাতায় খুন হয়েছেন। মরদেহ উদ্ধার না হলেও সুনির্দিষ্ট কিছু প্রমাণের ভিত্তিতে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ও কলকাতা পুলিশ জানিয়েছে, কলকাতার নিউ টাউনের অভিজাত আবাসিক এলাকার সঞ্জীবা গার্ডেনসের একটি ফ্ল্যাটে ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয় তাঁকে। হত্যার পর মরদেহ টুকরা টুকরা করে অজ্ঞাতনামা স্থানে গুম করে ফেলেছে খুনিরা। এ ঘটনায় পুলিশ ঢাকার মোহাম্মদপুর ও সাভার থেকে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে। তাঁরা ৫ কোটি টাকার চুক্তিতে কলকাতায় ভাড়াটে খুনি হিসেবে কাজ করেছেন। পুরো কিলিং মিশনে নেতৃত্ব দেন আমানউল্লাহ নামের একজন। তাঁকে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় দায়ের করা মামলায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

এমপি আনার হত্যায় ঢাকা ও কলকাতায় দুটি পৃথক মামলা হয়েছে। কলকাতার মামলাটি পশ্চিমবঙ্গের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) তদন্ত করছে।

দুই দেশের পুলিশের সন্দেহ, হত্যাকাণ্ডের পেছনে রয়েছে সোনা কারবারের টাকা লেনদেন নিয়ে বিরোধ। ছোটবেলার বন্ধু ও ব্যবসায়িক অংশীদার আক্তারুজ্জামান শাহীনের পরিকল্পনায় এই হত্যাকাণ্ড হয়। খুন করার আগে বিলাসবহুল একটি ফ্ল্যাট ভাড়া করে দেশ থেকে ছয়জনের একটি কিলিং স্কোয়াড নিয়ে যান তিনি। পরে ব্যবসায়িক আলোচনা করতে ফ্ল্যাটে ডেকে এমপি আনোয়ারুল আজীমকে হত্যা করা হয়। টুকরা টুকরা করে কাটা হয় লাশ। এরপর উবার ভাড়া করে ট্রলিতে ভরে সেই লাশ গুম করেন কিলিং মিশনের সদস্যরা।

ঝিনাইদহ-৪ আসনের তিনবারের এমপি আনোয়ারুল আজীম কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। ১১ মে তিনি দর্শনা-গেদে সীমান্ত দিয়ে চিকিৎসার কথা বলে ভারতে যান। সেখানে গিয়ে বরাহনগরের স্বর্ণ ব্যবসায়ী বন্ধু গোপাল বিশ্বাসের বাড়িতে ওঠেন। কিন্তু ১৬ মে থেকে তাঁর সঙ্গে আর যোগাযোগ করতে না পারায় ১৮ মে বরাহনগর থানায় একটি নিখোঁজের সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন গোপাল বিশ্বাস।

গতকাল বুধবার সকালে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে আনারের খুন হওয়ার খবর আসে। পরে দুপুরে ঢাকার ধানমন্ডিতে নিজের বাসায় পুলিশ কর্মকর্তাদের নিয়ে বৈঠকে বসেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে এসে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, যতটুকু তথ্য তাঁরা পেয়েছেন, তাতে বাংলাদেশের লোকজনই পরিকল্পিতভাবে আনোয়ারুল আজীমকে খুন করেছেন।

খুন করতে ফ্ল্যাট ভাড়া 
ঢাকার গোয়েন্দা ও কলকাতা পুলিশ সূত্র বলছে, এককভাবে এই খুনের পরিকল্পনা করেন এমপি আনোয়ারুল আজীমের বাল্যবন্ধু আক্তারুজ্জামান শাহীন। তিনি ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর পৌরসভা মেয়র মো. সহিদুজ্জামানের ছোট ভাই। শাহীন আমেরিকারও নাগরিক। খুনের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে শাহীন গত ৩০ এপ্রিল কলকাতায় যান। সেখানে নিউ টাউনের সঞ্জীবা গার্ডেনস এলাকার ইউভি ৫৬ নম্বর ফ্ল্যাট ভাড়া নেন। তাঁর সঙ্গে অবৈধভাবে কলকাতায় নিয়ে যান আমানউল্লাহকে। আমানউল্লাহর নেতৃত্বে ওই ফ্ল্যাটে আরও ওঠেন পাঁচজন। সেই ফ্ল্যাটে ১০ দিন বসে এমপিকে খুনের পরিকল্পনা করেন তাঁরা। সব পরিকল্পনা চূড়ান্ত হওয়ার পর গোপনে ১০ মে দেশে ফেরেন আক্তারুজ্জামান শাহীন। শাহীনের কথায় ১১ মে দর্শনা-গেদে সীমান্ত দিয়ে চিকিৎসার কথা বলে ভারতে যান আনোয়ারুল আজীম। ১৩ মে সকালে সঞ্জীবা গার্ডেনস এলাকার ইউভি ৫৬ ফ্ল্যাটে যান তিনি। সেখানে পুরোনো কিছু ব্যবসায়িক হিসাব মেটানোর কথা ছিল। কিন্তু এমপিকে খুন করতে আগে থেকেই ওই ফ্ল্যাটে অবস্থান করছিলেন দুই খুনের মামলায় ২০ বছর জেল খাটা আমানউল্লাহ। তাঁর সঙ্গে ছিলেন সহযোগী সিয়াম, জিহাদ, ফয়সাল শাহাজিদ, মোস্তাফিজুর রহমান ফকির। তাঁরা এমপি আনারকে খুনের পর প্রায় দুই ঘণ্টা সময় নিয়ে দা দিয়ে মরদেহ কয়েক টুকরা করেন। পরে লাশের টুকরোগুলো ট্রলিতে ভরে ফেলেন। রক্তের দাগ মুছে ফেলতে ডিটারজেন্ট দিয়ে ধুয়ে ফেলা হয় ফ্ল্যাটটি।

যেভাবে রহস্য উদ্ঘাটন করল পুলিশ
এমপি আনারের বন্ধু গোপাল বিশ্বাস জিডিতে উল্লেখ করেন, ১৩ মে দুপুরে সেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে আর ফেরেননি আনোয়ারুল আজীম। পরে দেশে তাঁর ছোট মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন ঢাকায় গোয়েন্দা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁর বাবার নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি জানান। পরের কয়েক দিনে দুই দেশের পুলিশের মধ্যে যোগাযোগের পর বুধবার সকালে কলকাতার সংবাদমাধ্যমে এমপি আনারের খুন হওয়ার খবর আসে।

দুই দেশের পুলিশ সূত্র বলছে, খুনের পর ১৩ মে বিকেলে একটি উবারে চালিত গাড়িতে করে লাশের টুকরো ভর্তি ট্রলি নিয়ে বের হয়ে যান কিলিং মিশনের দুই সদস্য। পুলিশ সদস্যরা অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে সেই উবারচালককে আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদ করেন। যে উবার অ্যাকাউন্ট থেকে তাঁকে সেদিন ডাকা হয়েছিল, তা খুঁজে পায় পুলিশ। সেখানে ভেসে আসে এক বাংলাদেশির ফোন নম্বর। সেই নম্বরের সূত্র ধরে গ্রেপ্তার হন কিলিং মিশনের হোতা আমানউল্লাহ। গ্রেপ্তার হওয়ার পরে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তিনি অনেক বিষয়ে তথ্য দেন।

এদিকে ঘটনাস্থল নিউ টাউনের সঞ্জীবা গার্ডেনস থেকে বেরিয়ে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের আইজি (সিআইডি) অখিলেশ চতুর্বেদী জানান, এমপি নিখোঁজের ঘটনায় ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট থেকে একটি বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করা হয়। এরপরে পুলিশ এই ফ্ল্যাট শনাক্ত করে। কারণ, এখানেই তাঁকে শেষবার দেখা গিয়েছিল। পরবর্তী বিষয়গুলো খতিয়ে দেখতে আরও তদন্ত চলছে। সিআইডি এই তদন্তের দায়িত্ব নিয়েছে।

পরিবারের সদস্যরা যা বলছেন
গতকাল সকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ব্রিফিংয়ের কিছুক্ষণ পর ঢাকায় গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন এমপি আনারের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার বাবাকে হত্যা করা হয়েছে। আমি বাবার হত্যার বিচার চাই। আমি দেখতে চাই, কারা আমাকে এতিম করল। কারা হত্যাকারী। বাবার হত্যাকারীদের ফাঁসিতে ঝুলে মৃত্যু দেখে যেতে চাই। আমি এর শেষ দেখতে চাই, তারা কেন বাবাকে হত্যা করেছে?’

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি অনুরোধ জানিয়ে ডরিন বলেন, ‘আমার একটাই অনুরোধ, আমার বাবার হত্যার সুষ্ঠু বিচার করুন। একসময় বাবা ১৪ বছর মিথ্যা মামলায় পালিয়ে পালিয়ে থেকেছেন। তখনো আমি আমার বাবাকে কাছে পাইনি। এখন আবার বাবাকে হারিয়ে ফেললাম।’

আক্তারুজ্জামান শাহীন এখন দুবাইয়ে
গোয়েন্দা পুলিশ সূত্র বলছে, ১৩ মে এমপি খুন ও লাশ গুম নিশ্চিত করার পর ১৫ মে আকাশপথে কলকাতায় যান আক্তারুজ্জামান শাহীন। সেখানে গিয়ে কিলিং মিশনে অংশ নেওয়া পাঁচ সদস্যকে বৈধ ও অবৈধ পথে দেশে ফেরত পাঠান তিনি। এরপর ১৮ মে ভারত থেকে নেপালে চলে যান তিনি। তবে এ ঘটনার পুরো সময় সেই ফ্ল্যাটে একজন মেয়ে ছিলেন। আক্তারুজ্জামান শাহীনের বান্ধবী পরিচয় দেওয়া মেয়েটির নাম শিলাস্ত্রী। তাঁর বাড়ি টাঙ্গাইলে। গোয়েন্দা পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, তবে হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে শিলাস্ত্রী আগে থেকে কিছু জানতেন না।

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, কিলিং মিশনের প্রধান ব্যক্তি আমানউল্লাহ দেশে গ্রেপ্তারের পর নেপাল থেকে সটকে পড়েন শাহীন। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার তিনি দুবাইয়ে চলে যান।

আক্তারুজ্জামান শাহীনের বিষয়ে জানতে চাইলে তাঁর বড় ভাই সহিদুজ্জামান বলেন, নিহত এমপি আনোয়ারুল আজীমের সঙ্গে তাঁর বন্ধুত্ব ছিল। তাঁরা একসঙ্গে স্বর্ণের ব্যবসা করতেন কি না জানা নেই। তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ কম হয়। হত্যার সঙ্গে জড়িত কি না, এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে তিনি দাবি করেন।
 
২০ বছর জেল খাটেন আমানউল্লাহ
গোয়েন্দা পুলিশের তথ্যমতে, এমপি আনারকে নেতৃত্ব দেওয়া আমানউল্লাহ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা বিভাগে পড়াশোনা করেছেন। পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টির নেতা ছিলেন। পরে রাজশাহীতেই একটি হত্যা মামলায় ১৯৯১ থেকে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত জেল খাটেন। পরে ২০০০ সালে যশোরের অভয়নগর এলাকায় আরেকটি হত্যা মামলায় ২০০০ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত জেল খাটেন। এমপি আনারকে হত্যার জন্য ৩০ এপ্রিল বেনাপোল দিয়ে অবৈধভাবে সীমান্ত পার হয়ে কলকাতায় যান তিনি।

আরও পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তারেক রহমানের জন্য নির্ধারিত ফ্লাইটের দুই কেবিন ক্রুকে প্রত্যাহার

‘আমি তো মামলা করি না, ডাইরেক্ট ওয়ারেন্ট করাই’

কুকুর লেলিয়ে পুরুষ ফিলিস্তিনিকে ধর্ষণ—বিবিসির প্রতিবেদনে ইসরায়েলি কারাগারে নির্যাতনের চিত্র

পত্রিকা অফিসে হামলার গোয়েন্দা তথ্য ছিল, আমলে নেওয়া হয়নি: সালাহউদ্দিন

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হাদি হত্যা: ফয়সালসহ সংশিষ্টদের অ্যাকাউন্টে ১২৭ কোটি টাকার লেনদেন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
হাদিকে গুলি করা সন্দেহভাজন। ছবি: সংগৃহীত
হাদিকে গুলি করা সন্দেহভাজন। ছবি: সংগৃহীত

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান বিন হাদি হত্যাকাণ্ডে প্রধান আসামি ফয়সাল করিম মাসুদ ও তাঁর স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবে ১২৭ কোটি টাকার বেশি অস্বাভাবিক লেনদেনের তথ্য পেয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। প্রাথমিকভাবে এসব লেনদেন সন্দেহজনক হিসেবে চিহ্নিত হওয়ায় মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে অর্থ পাচার সংক্রান্ত অনুসন্ধান শুরু করেছে সিআইডি।

আজ রোববার (২১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডির অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) আবু তালেব এসব তথ্য জানান।

সিআইডি জানায়, বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থা থেকে প্রাপ্ত তথ্য পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণের মাধ্যমে এই অস্বাভাবিক লেনদেনের তথ্য পাওয়া যায়। এসব অর্থ মানিলন্ডারিং, সংঘবদ্ধ অপরাধ এবং সন্ত্রাসী কার্যক্রমে অর্থায়নের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

গত ১২ ডিসেম্বর দুপুরে ঢাকার পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে ওসমান হাদি মাথায় গুলিবিদ্ধ হন। ঘটনার পরপরই সিআইডি এই হত্যাকাণ্ডের ছায়া তদন্ত শুরু করে। তদন্তের ধারাবাহিকতায় গ্রেপ্তার অভিযানের সময় উদ্ধার করা বিভিন্ন ব্যাংকের চেকবই সিআইডি গুরুত্বসহকারে বিশ্লেষণ করে। এতে দেখা যায়, প্রধান আসামি ও তাঁর স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে থাকা একাধিক চেক বইয়ে বিভিন্ন অঙ্কের অর্থের উল্লেখ রয়েছে। যদিও এসব লেনদেন চূড়ান্তভাবে সম্পন্ন হয়নি, তবুও এসব রেকর্ডের সমষ্টিগত মূল্য প্রায় ২১৮ কোটি টাকা।

সিআইডির প্রাথমিক বিশ্লেষণে আরও উঠে এসেছে, ফয়সাল ও তাঁর সংশ্লিষ্টদের বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে ১২৭ কোটি টাকার বেশি অস্বাভাবিক লেনদেন সংঘটিত হয়েছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে মানিলন্ডারিং বিষয়ে পৃথক অনুসন্ধান শুরু করা হয়েছে। একই সঙ্গে ফয়সাল ও তাঁর স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবে থাকা প্রায় ৬৫ লাখ টাকা রাষ্ট্রের অনুকূলে দ্রুত বাজেয়াপ্ত করার লক্ষ্যে আইনি প্রক্রিয়া গ্রহণ করা হচ্ছে।

সিআইডি জানিয়েছে, এসব অর্থের মূল সরবরাহকারী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান চিহ্নিত করার পাশাপাশি হত্যাকাণ্ডের পেছনে পরিকল্পনা, অর্থায়ন ও অস্ত্র সরবরাহে কোনো সংঘবদ্ধ ও শক্তিশালী নেটওয়ার্ক জড়িত ছিল কি না, সে বিষয়েও একাধিক তদন্ত দল কাজ করছে। অন্যান্য সংস্থার সমন্বয়ে মূল হোতাকে গ্রেপ্তার এবং পুরো অপরাধচক্র উন্মোচনে সিআইডির তদন্ত ও অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তারেক রহমানের জন্য নির্ধারিত ফ্লাইটের দুই কেবিন ক্রুকে প্রত্যাহার

‘আমি তো মামলা করি না, ডাইরেক্ট ওয়ারেন্ট করাই’

কুকুর লেলিয়ে পুরুষ ফিলিস্তিনিকে ধর্ষণ—বিবিসির প্রতিবেদনে ইসরায়েলি কারাগারে নির্যাতনের চিত্র

পত্রিকা অফিসে হামলার গোয়েন্দা তথ্য ছিল, আমলে নেওয়া হয়নি: সালাহউদ্দিন

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎হাদি হত্যা মামলার প্রধান আসামি ফয়সালের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফয়সাল করিম মাসুদ। ছবি: সংগৃহীত
ফয়সাল করিম মাসুদ। ছবি: সংগৃহীত

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদি হত্যা মামলার প্রধান আসামি ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খানের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। আজ রোববার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আওলাদ হোসাইন মোহাম্মদ জুনায়েদ এ আদেশ দেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) পরিদর্শক ফয়সাল আহমেদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এ নির্দেশ দেন। আদালতের প্রসিকিউশন বিভাগের দপ্তর থেকে ফয়সালের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারির বিষয়টি জানা যায়। এর পাশাপাশি পুলিশের বিশেষ শাখাকে (এসবি) প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণেরও নির্দেশ দেওয়া হয়।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনে বলা হয়েছে, ১২ ডিসেম্বর রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স-কালভার্ট রোডে বিজয়নগর এলাকায় শরিফ ওসমান বিন হাদি একটি রিকশায় যাওয়ার সময় মোটরসাইকেল আসা দুই ব্যক্তির একজনের গুলিতে আহত হন।

ঘটনার পরপর তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর নেওয়ার পর সেখানকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় গত বৃহস্পতিবার মারা যান হাদি।

এ ঘটনায় ১৪ ডিসেম্বর পল্টন থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করেন ইনকিলাব মঞ্চের যুগ্ম সচিব আব্দুল্লাহ আল জাবের। হাদির মৃত্যুর পর মামলাটি হত্যা মামলায় রূপ নেয়।

ঘটনার পর থেকেই মামলার প্রধান আসামি ফয়সালকে গ্রেপ্তারের সর্বাত্মক চেষ্টা চালানো হচ্ছে। কিন্তু তাঁকে এখনো গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। প্রধান আসামি ফয়সাল দেশে থাকলে যাতে বিদেশ গমন করতে না পারে সে জন্য আদালতের নিষেধাজ্ঞা জারি করা প্রয়োজন।

এদিকে অতিরিক্ত আইজিপি খন্দকার রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, হাদি হত্যা মামলার প্রধান আসামি ফয়সাল করিম মাসুদের অবস্থান সম্পর্কে তাঁদের কাছে সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই। ফয়সাল দেশের বাইরে চলে গেছেন, এমন নির্ভরযোগ্য তথ্যও পাওয়া যায়নি বলে জানান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তারেক রহমানের জন্য নির্ধারিত ফ্লাইটের দুই কেবিন ক্রুকে প্রত্যাহার

‘আমি তো মামলা করি না, ডাইরেক্ট ওয়ারেন্ট করাই’

কুকুর লেলিয়ে পুরুষ ফিলিস্তিনিকে ধর্ষণ—বিবিসির প্রতিবেদনে ইসরায়েলি কারাগারে নির্যাতনের চিত্র

পত্রিকা অফিসে হামলার গোয়েন্দা তথ্য ছিল, আমলে নেওয়া হয়নি: সালাহউদ্দিন

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আগামী পাঁচ দিন শীতের অনুভূতি বাড়বে

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আজ সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত কুয়াশার চাদরে ঢাকা ছিল রংপুরের মিঠাপুকুর। ছবি: প্রদীপ কুমার গোসামী
আজ সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত কুয়াশার চাদরে ঢাকা ছিল রংপুরের মিঠাপুকুর। ছবি: প্রদীপ কুমার গোসামী

পৌষের শুরুতেই ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়ছে সড়ক, মাঠ ও জনপদ। গতকাল থেকে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় শীতের তীব্রতা বাড়তে শুরু করেছে। হিমেল হাওয়ার সঙ্গে ঘন কুয়াশা মিশে সাধারণ মানুষের জীবনে শীতের প্রভাব স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

আজ রোববার (২১ ডিসেম্বর) আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী পাঁচ দিন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। বিশেষ করে দেশের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলে শীতের প্রকোপ বেশি থাকবে।

শীতের কারণে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বিশেষ করে মহাসড়ক ও নদীপথে সতর্কতার সঙ্গে চলাচল করতে হচ্ছে চালক ও নৌযান সংশ্লিষ্টদের। শীতের কারণে ফুটপাতে থাকা নিম্ন আয়ের মানুষ ও ছিন্নমূলদের কষ্টও বেড়েছে।

আজ রোববার (২১ ডিসেম্বর) আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, পরবর্তী ১২০ ঘণ্টা অর্থাৎ পাঁচ দিন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। একই সঙ্গে দিনের তাপমাত্রা কিছুটা কমে শীতের অনুভূতি আরও বাড়বে।

আবহাওয়াবিদ আফরোজা সুলতানা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘চলতি সপ্তাহে শৈত্যপ্রবাহের কোনো সম্ভাবনা নেই। শীত তীব্রতা প্রকট না হলেও চলতি সপ্তাহে শীত কিছুটা বাড়বে।’

আবহাওয়া অধিদপ্তরে পূর্বাভাসে আরও বলা হয়েছে, মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করলেও এর বর্ধিতাংশ উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এই পরিস্থিতির কারণে দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকবে এবং কুয়াশার প্রবণতা বাড়বে।

আবহাওয়া অফিস বলছে, ২২ ও ২৩ ডিসেম্বর দেশের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলে কুয়াশা আরও ঘন হতে পারে। এ সময় রাত ও দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমার সম্ভাবনা রয়েছে। ২৪ ও ২৫ ডিসেম্বরেও শীতের দাপট অব্যাহত থাকবে। তবে বড় কোনো আবহাওয়াগত পরিবর্তনের ইঙ্গিত নেই।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তারেক রহমানের জন্য নির্ধারিত ফ্লাইটের দুই কেবিন ক্রুকে প্রত্যাহার

‘আমি তো মামলা করি না, ডাইরেক্ট ওয়ারেন্ট করাই’

কুকুর লেলিয়ে পুরুষ ফিলিস্তিনিকে ধর্ষণ—বিবিসির প্রতিবেদনে ইসরায়েলি কারাগারে নির্যাতনের চিত্র

পত্রিকা অফিসে হামলার গোয়েন্দা তথ্য ছিল, আমলে নেওয়া হয়নি: সালাহউদ্দিন

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

অবশেষে প্রজাপতি প্রতীকে নিবন্ধন পেল আমজনতার দল

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ০৯
নিবন্ধন সনদ হাতে তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত
নিবন্ধন সনদ হাতে তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে অবশেষে আমজনতার দলকে নিবন্ধন দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নিবন্ধনসংক্রান্ত দাবি আপত্তি নিষ্পত্তির পর প্রজাপতি প্রতীকে দলটিকে নিবন্ধন সনদ দেওয়া হয়েছে।

আজ রোববার সন্ধ্যায় ইসির জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ স্বাক্ষরিত সনদটি আমজনতার দলের সাধারণ সম্পাদক তারেক রহমানকে হস্তান্তর করা হয়।

এর আগে দুটি দাবি আপত্তির বিষয়ে ১৫ ডিসেম্বর শুনানি করে নির্বাচন কমিশন।

নিবন্ধন পাওয়ার পর তারেক রহমান বলেন, ‘আমরা কোনো জোটে যাব না। এককভাবে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেব।’

রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন না পাওয়ায় গত নভেম্বরের শুরুতে আগারগাঁওয়ে ইসি ভবনের প্রধান ফটকের সামনে আমরণ অনশন শুরু করেন তারেক রহমান।

তারেক তখন সংবাদমাধ্যমকে বলেছিলেন, নিবন্ধনের সব যোগ্যতা পূরণ করা হলেও তাঁর দলকে নিবন্ধন দিচ্ছে না ইসি। বিভিন্ন সময়ে অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা করায় আমজনতার দল নিবন্ধন পাচ্ছে না বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

বিএনপি, গণঅধিকার পরিষদসহ কয়েকটি দল সে সময় তারেক রহমানের প্রতি সংহতি জানিয়ে তাঁর দলকে নিবন্ধন দিতে ইসির প্রতি আহ্বান জানায়।

একপর্যায়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদের অনুরোধে প্রায় ১৩৩ ঘণ্টা পর অনশন ভাঙেন তারেক রহমান।

এ পরিস্থিতিতে গত ১৮ নভেম্বর রিভিউয়ের জন্য আবেদন করার পর আমজনতার দলকে পর্যালোচনায় রাখে ইসি। একই সঙ্গে আরও ছয়টি দলকে পর্যালোচনা করার সিদ্ধান্ত হয়।

দলগুলো হলো—বাংলাদেশ বেকার মুক্তি পরিষদ, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক পার্টি (বিজিপি), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদ (শাজাহান সিরাজ), জাতীয় জনতা পার্টি, বাংলাদেশ জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি ও জনতার দল।

এর মধ্যে আমজনতার দল আজ নিবন্ধন সনদ পেল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তারেক রহমানের জন্য নির্ধারিত ফ্লাইটের দুই কেবিন ক্রুকে প্রত্যাহার

‘আমি তো মামলা করি না, ডাইরেক্ট ওয়ারেন্ট করাই’

কুকুর লেলিয়ে পুরুষ ফিলিস্তিনিকে ধর্ষণ—বিবিসির প্রতিবেদনে ইসরায়েলি কারাগারে নির্যাতনের চিত্র

পত্রিকা অফিসে হামলার গোয়েন্দা তথ্য ছিল, আমলে নেওয়া হয়নি: সালাহউদ্দিন

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত