Ajker Patrika

ফরিদপুরে মন্দিরে আগুনে শ্রমিকদের সম্পৃক্ততার প্রমাণ নেই, হামলা সন্দেহের বশে

সৌগত বসু, ফরিদপুর থেকে
আপডেট : ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১২: ২৫
ফরিদপুরে মন্দিরে আগুনে শ্রমিকদের সম্পৃক্ততার প্রমাণ নেই, হামলা সন্দেহের বশে

ফরিদপুরের মধুখালী থানার ডুমাইন ইউনিয়নের পঞ্চপল্লী গ্রামের কালী মন্দিরে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আগুনের সূত্রপাত কীভাবে হলো তা এখনও নিশ্চিত জানে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এই ঘটনায় উত্তেজিত এলাকাবাসীর মারধরে দুই শ্রমিক নিহত হয়েছেন। কিন্তু অগ্নিকাণ্ডের সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ততার কোনো প্রমাণ এখনও পাওয়া যায়নি। হিন্দু অধ্যুষিত এলাকায় কয়েকজন মুসলিম ছিলেন কেবল ওই নির্মাণ শ্রমিকেরাই। সেই কারণে উত্তেজনার মধ্যে নিছক সন্দেহের বশে তাঁদের ওপর হামলা হয়েছে। 

আজকের পত্রিকার সরেজমিন অনুসন্ধান ও এলাকাবাসীর ভাষ্য অনুযায়ী, মন্দিরটি সর্বজনীন। ডুমাইন ইউনিয়নের কৃষ্ণনগর গ্রাম আর পঞ্চপল্লী এলাকা। এই এলাকাটি পাঁচটি গ্রাম নিয়ে। সবগুলো গ্রামই হিন্দু অধ্যুষিত। আশেপাশের এলাকাগুলোও হিন্দু অধ্যুষিত এলাকা। আগুন লাগার খবরে বেশি লোক জড়ো হয় আশেপাশের এলাকা থেকে।

গতকাল সন্ধ্যার পর মন্দিরে প্রদীপ জ্বালানোর ১০–১৫ মিনিটের মধ্যেই আগুনের সূত্রপাত ঘটে। তখন পাশে শুধুমাত্র সাতজন নির্মাণ শ্রমিক সেখানে ছিলেন। কিন্তু তাদেরকে আগুন দিতে কেউ দেখেনি বা আগুন দেওয়ার হীন উদ্দেশ্য তাদের থাকতে পারে এমন- সন্দেহ করার কোনো যৌক্তিক কারণও খুঁজে পাওয়া যায়নি। স্কুলে বা তাঁর আশপাশে কোনো সিসি ক্যামেরাও নেই।

আজ শুক্রবার সকালে পঞ্চপল্লী এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পঞ্চপল্লী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কয়েক গজ পেছনে মন্দিরের অবস্থান। স্কুলের কক্ষ থেকে মন্দিরের সবকিছুই দেখা যায়। সেখানে চারটি মূর্তি রয়েছে। এর মধ্যে কালী ও শিব মূর্তি ছিল একসঙ্গে। আর ২ ফুট দূরে দুই পাশে অন্য দুটি মূর্তি। আগুনে পুড়েছে শুধুমাত্র কালী মূর্তি। এই মূর্তির পরনের শাড়ি ও হাতে থাকা শাড়ি পুড়ে গেছে। মূর্তির সামনে প্রায় দুই ফুট দূরত্বে দুটি প্রদীপ রয়েছে। 

এই বিদ্যালয়ের ওয়াশ ব্লক (বাথরুম ও হাত ধোয়ার জায়গা) তৈরির কাজ চলছে। সেখানকার যে কক্ষে শ্রমিকদের অবস্থান সেখানে গিয়ে দেখা যায়, মন্দিরের সামনে থেকে কক্ষের পেছনের গ্রিলের জানালার অংশ ভেঙে ফেলা হয়েছে। পুরো কক্ষে ইট ছড়িয়ে আছে। আর কক্ষের তিন জায়গায় রক্তের ছোপ দাগ। কক্ষে শ্রমিকদের কাপড় ও ব্যাগ রয়েছে। কক্ষে প্রবেশের দুটি দরজার একটি ভাঙা অবস্থায় আছে। 

ঘটনা শুরু যেভাবে 
পঞ্চপল্লী গ্রামে এই মন্দিরটির বয়স প্রায় ৬০ বছর। মন্দিরের পেছনেই বসতি রয়েছে। আর এর মধ্যে প্রভাষ কুমার মন্ডলের (৫০) পরিবার মন্দিরটিতে প্রতি সন্ধ্যায় সন্ধ্যা প্রদীপ জ্বালান। প্রতিদিনের মতোই প্রভাষ কুমারের স্ত্রী তপতী রানী মন্ডল (৪০) সন্ধ্যায় সন্ধ্যা প্রদীপ জ্বালিয়ে বাড়ি ফিরে আসেন। মন্দির থেকে তাঁর বাড়ির দূরত্ব প্রায় ৩০ গজের মতো। 

তপতি রানী আজকের পত্রিকাকে জানান, গতকাল সন্ধ্যা প্রদীপ জ্বালানোর সময় সাতজন নির্মাণ শ্রমিক স্কুলের মধ্যেই ছিলেন। প্রদীপ জ্বালিয়ে বাড়িতে ফিরে আসার কিছু সময় পর গোবরের জ্বালানি সংগ্রহ করতে তিনি আবারও মন্দিরের সামনে যান। তখন নির্মাণ শ্রমিকদের তিনি মন্দিরের সামনে দেখেন। তাঁরা নিজেদের মধ্যে কথা বলছিলেন। 

তপতি বলেন, শ্রমিকেরা গালিগালাজ করলেও মন্দির ও হিন্দু নিয়ে কিছু বলেননি। এরপর তাঁরা পাশে রাখা একটি নসিমনের (ইঞ্জিনচালিত বড় ভ্যান) কাছে যান। এই নসিমনে স্কুলের নির্মাণসামগ্রী ছিল। এরপর তপতি রানী আবার বাড়ি ফিরে আসেন।

তপতি রানী আরও বলেন, নির্মাণশ্রমিকদের সঙ্গে কখনো তাঁদের ঝামেলা হয়নি। ঘটনার দিন সন্ধ্যাতেও তাঁদের সঙ্গে তাঁর কোনো কথা হয়নি। তবে দ্বিতীয়বার যাওয়ার সময় তিনি তাদেরকে গালিগালাজ করতে শোনেন। সেসময় তাঁরা মন্দিরের সামনেই ছিলেন।

তবে কী বিষয় নিয়ে শ্রমিকেরা গালিগালাজ করছিলেন তা নির্দিষ্ট করে বলতে পারেননি তপতি রানী।

বিদ্যালয়ের গ্রিল ভেঙে ফেলা হয়েছে। ছবি: আজকের পত্রিকাজানা যায়, তপতির স্বামী প্রভাষ কুমার মন্ডলের পরিবার শুরু থেকেই এই মন্দির রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করেন। প্রভাষ কুমারের মা মনমতি মন্ডল, এরপর তার পিসি (ফুফু) গোলাপী মন্ডল, এরপর তাঁর ভাইয়ের বউ সন্ধ্যা রানী মন্ডল এর আগে মন্দিরে সন্ধ্যাপ্রদীপ ও বাকি কাজ করতেন। তাঁরা সবাই এখন মৃত। এরপর থেকে মালতি রানী মন্দিরের সন্ধ্যা প্রদীপ জ্বালান।

প্রভাষ কুমার মন্ডল আজকের পত্রিকাকে বলেন, সন্ধ্যা প্রদীপ দেওয়ার কিছুক্ষণ পরই আগুন আগুন চিৎকার শুনে তাঁরা মন্দিরের কাছে গিয়ে দেখতে পান, কালী মূর্তির শাড়িতে আগুন, সেটা আস্তে আস্তে পাশে থাকা কাপড়ের জিনিসেও ছড়িয়ে যায়। এলাকায় পানির সংকট আছে। সেজন্য আগুন নেভাতে তাদের কিছু সময় লাগে। তবে মূর্তি ছাড়া অন্য কিছুতে আগুন লাগেনি। আগুন নেভানোর সময় নির্মাণ শ্রমিকেরা ওই স্থানেই ছিলেন। এর মধ্যেই আশপাশের মানুষের ভিড় বাড়তে থাকলে তারা স্কুলের মধ্যে তাদের কক্ষে চলে যান।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীরা বলেন, আগুন নেভানোর সময় নির্মাণ শ্রমিকদের সঙ্গে স্থানীয়দের কথা–কাটাকাটি হয়। আর এর জেরে স্থানীরা নির্মাণ শ্রমিকদের মারধর করে বেঁধে রাখেন কক্ষের মধ্যে। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একজন বলেন, শুরুতে মধুখালী থানা পুলিশ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ খুবই অল্প মানুষ ছিল। তাঁদেরও অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। আর এই সময়েই স্কুলের ওই কক্ষ ভেঙে নির্মাণশ্রমিকদের ওপর হামলা চালানো হয়। মন্দির সংশ্লিষ্ট এলাকার চেয়ে আশেপাশের অঞ্চলের মানুষই বেশি ছিল তখন। তাই তাদের থামানো যায়নি।

শ্রমিকদের যে কক্ষে আটকে রাখা হয়েছে সে কক্ষের দরজা ভেঙে ফেলে উত্তেজিত জনতা। ছবি: আজকের পত্রিকাস্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা সীতা রানী বিশ্বাস আজকের পত্রিকাকে বলেন, নির্মাণ শ্রমিকরা গত মঙ্গলবার কাজ করতে এসেছেন। তাঁরা স্কুলের মধ্যেই থাকেন। মাঝে মাঝে নির্মাণ সামগ্রী এলে সেগুলো আনতে বাইরে যান। 

স্কুলের আরেক শিক্ষক উত্তম কুমার বিশ্বাস বলেন, গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার সময় তাঁরা এই ঘটনা শুনতে পান। স্কুলে আসার পর দেখেন স্থানীয় প্রশাসন সেখানে উপস্থিত রয়েছে। তবে উত্তেজিত জনতাকে শান্ত করা যাচ্ছিল না। এ সময় নির্মাণ শ্রমিকদের একটি কক্ষে আটকে রাখা হয়। কিন্তু আস্তে আস্তে আশেপাশের এলাকা থেকে শত শত মানুষ এখানে ভিড় করেন। এরপর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। 

স্কুলের শিক্ষক স্বপন কুমার বিশ্বাস বলেন, তিনি খবর পেয়ে যখন স্কুলে আসেন তখন নির্মাণশ্রমিকরা স্কুলের ভেতরের কক্ষে ছিলেন। এসময় মধুখালি থানার পুলিশ, ডুমাইন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান তপন ওই কক্ষে তাঁদের সঙ্গেই ছিলেন। তবে তাঁরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেননি। এসময় উত্তেজিত জনতা বাইরে থেকে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। একটি ইট তাঁর শরীরেও লেগেছে।

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সিরাজুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, তাঁরা গতকাল ঘটনা শোনার পরই এখানে এসেছেন। কিন্তু উত্তেজিত জনতাকে শান্ত করা যায়নি। 

আগুনে কালী প্রতিমার শাড়ি পুড়ে যায়। ছবি: আজকের পত্রিকাডুমাইন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান তপন আজকের পত্রিকাকে বলেন, একজন ইউপি সদস্য তাঁকে ফোন করে কালী মন্দিরে আগুনের কথা জানান। তিনি আনুমানিক সাড়ে ৭টার সময় সেখানে উপস্থিত হন। তিনি সেখানে যাওয়ার পর দেখতে পান নির্মাণ শ্রমিকদের দড়ি দিয়ে বেঁধে ওই কক্ষে রাখা হয়েছিল। 

এ সময় নির্মাণ শ্রমিকদের সঙ্গে কোনো কথা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তপন বলেন, তিনি তাঁদেরকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন তাঁরা আগুন দিয়েছে কিনা। নির্মাণ শ্রমিকরা তাঁকে জানিয়েছিলেন, তাঁরা কেউ আগুন দেয়নি। সন্দেহ করে তাঁদেরকে এভাবে হেনস্তা করা হচ্ছে। 

রাত ১১টার পর অতিরিক্ত পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনাস্থলে থাকা মধুখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিরাজুল ইসলাম একই ধরনের বক্তব্য দেন। 

আগুন কে দিল
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একাধিক সূত্র বলছে, বাতাসের কারণে আগুন লাগতে পারে। আর পুরো এলাকা হিন্দু অধ্যুষিত হওয়াতে একমাত্র ওই নির্মাণ শ্রমিকেরা মুসলিম ছিলেন। তাই তাঁদেরকেই সন্দেহ করা হয়। আগুন কে বা কারা লাগিয়েছে সেটা জানা না গেলেও আগুন লাগার পর তা ভিন্ন খাতে নেওয়া হয়েছে। সেটির সঙ্গে স্কুলের প্রকল্পের বিষয় থাকতে পারে।

তবে স্থানীয়রা বলছেন, মূর্তির সামনে থাকা প্রদীপ থেকে মূর্তির দূরত্ব অনেক বেশি। আর মূর্তি মাটি থেকে উঁচু একটা জায়গায় রয়েছে। তাই বাতাসে আগুন লাগা সম্ভব নয়। আশেপাশে কাঠ আর টিনের তৈরি মন্দির এবং দুটি মূর্তি থাকলেও সেগুলো অক্ষত রয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বলেন, সকালে স্থানীয়দের সঙ্গে নির্মাণ শ্রমিকদের কথা কাটাকাটি হয়। এরপর সন্ধ্যায় প্রতিমার গায়ে আগুন লাগলে সব সন্দেহ তাঁদের ওপর পড়ে।

অতিরিক্ত ডিআইজি (ঢাকা রেঞ্জ) মো. মারুফ হোসেন সরদার বলেন, ‘কোনো একটা ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল একটা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় আমরা তদন্ত করছি। তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে। এই ঘটনায় একজন আটক আছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। 
এই ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

চট্টগ্রাম-১৫ আসন

বিএনপির প্রার্থীকে জামায়াত মনোনীত উল্লেখ নির্বাচন কর্মকর্তার ছকে

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
বিএনপির প্রার্থীকে জামায়াত মনোনীত উল্লেখ নির্বাচন কর্মকর্তার ছকে

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসন থেকে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী নাজমুল মোস্তাফা আমীনকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী হিসেবে উল্লেখ করেছে জেলা রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়। এ ঘটনায় বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে।

বুধবার লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় থেকে নাজমুল মোস্তাফা আমীন মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন। তিনি বিএনপির প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করলেও পরে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো তথ্যে তাঁকে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

জেলা রিটার্নিং অফিসারের তথ্যমতে, বুধবার চট্টগ্রামের ১৬টি সংসদীয় আসন থেকে মোট ১২ জন প্রার্থী মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। তাঁদের মধ্যে বিএনপির ৭ জন, জামায়াতে ইসলামীর ১ জন, এলডিপির ১ জন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ১ জন এবং স্বতন্ত্র ২ জন রয়েছেন।

বুধবার সন্ধ্যা ৬টা ১৫ মিনিটে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় থেকে পাঠানো তথ্যে উল্লেখ করা হয়, চট্টগ্রাম-১৫ আসন থেকে দুজন প্রার্থী মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। তাঁদের মধ্যে মুজিবুর রহমানকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের এবং নাজমুল মোস্তাফা আমীনকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী হিসেবে দেখানো হয়।

তবে চট্টগ্রাম-১৫ আসনে বিএনপির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে নাজমুল মোস্তাফা আমীনকে।

এ বিষয়ে লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার মো. সাইফুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, উপজেলা থেকে নাজমুল মোস্তাফা আমীনকে বিএনপি প্রার্থী হিসেবে উল্লেখ করেই রিটার্নিং অফিসারের কাছে তথ্য পাঠানো হয়েছে।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং অফিসার মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞার সঙ্গে একাধিকবার মোবাইল ফোন ও হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

বিএনপি মনোনীত প্রার্থী নাজমুল মোস্তাফা আমীন বলেন, যথাযথভাবে মনোনয়ন ফরম পূরণ ও জমা দেওয়ার পরও তাঁকে অন্য দলের প্রার্থী হিসেবে উল্লেখ করা দুঃখজনক ও মানহানিকর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জনগণ নির্বাচনমুখী হলে কেউ বাধা দিতে পারবে না: জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী

মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। ছবি: আজকের পত্রিকা
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। ছবি: আজকের পত্রিকা

স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, জনগণ যখন নির্বাচনমুখী হবে, সে সময় তাদের কেউ বাধা দিয়ে রাখতে পারবে না। নির্বাচন ভালোভাবে হয়ে যাবে। তিনি বলেন, ‘এখন দলগুলো যদি একজন আরেকজনের সঙ্গে প্রতিযোগিতা না করে সহাবস্থানে থাকে, তাহলে আমাদের জন্য ভালো।’

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার রাজদিয়া আব্দুল জব্বার পাইলট বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে চারতলা ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা শেষে সাংবাদিকদের জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এসব কথা বলেন।

উপদেষ্টা বলেন, ‘নির্বাচনকে ঘিরে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন সাংবাদিকেরা। আপনারা যদি বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশ করেন এবং জনগণকে সঠিক তথ্য দিয়ে উদ্বুদ্ধ করেন, তাহলে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি আপনাদের মাধ্যমে দেশবাসীর কাছে অনুরোধ জানাতে চাই, ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির সুস্থতার জন্য সবাই দোয়া করবেন, যেন তিনি দ্রুত সুস্থ হয়ে আমাদের মাঝে ফিরে আসতে পারেন।’

কৃষি প্রসঙ্গে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘এবার আলুচাষিরা লোকসানের মাথায়, আমরা একটা প্রণোদনা দেওয়ার চিন্তাভাবনা করছি। এবার আলুচাষিরা শুধু মুন্সিগঞ্জে না, সব জায়গায় লোকসানের সম্মুখীন। কোল্ড স্টোরেজগুলো বন্ধ করার কথা ছিল নভেম্বরে, আমরা বলছি যে ডিসেম্বর পর্যন্ত খোলা রাখতে হবে।’ আলুতে লোকসান হলেও এ বছর ধান উৎপাদনে ভালো ফলন হয়েছে বলে জানান তিনি।

এর আগে স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা সিরাজদিখান উপজেলার কুসুমপুর উচ্চবিদ্যালয় ও কুসুমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ইছাপুরা সরকারি মডেল উচ্চবিদ্যালয়, বিক্রমপুর কুঞ্জবিহারী সরকারি কলেজের ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি রেজাউল করিম মল্লিক, জেলা প্রশাসক সৈয়দা নুরমহল আশরাফী, মুন্সিগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার মেনহাজুল আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) ফিরোজ কবির, সিরাজদিখান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুম্পা ঘোষ, সহকারী কমিশনার (ভূমি) তৌহিদুল ইসলাম বারী, সিরাজদিখান সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আনোয়ার পারভেজ ও থানার ওসি আব্দুল হান্নান, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কুদ্দুস ধীরেনসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। উল্লেখ্য, উপজেলার পাঁচটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৬ কোটি ৭৪ লাখ টাকার উন্নয়নকাজ হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নিরাপত্তার ঘেরাটোপে সর্বসাধারণের চলাচল যেন ব্যাহত না হয়: ডিএমপি কমিশনার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ডিএমপি সদর দপ্তরে আজ বৃহস্পতিবার আয়োজিত সভায় কথা বলেন ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী। ছবি: আজকের পত্রিকা
ডিএমপি সদর দপ্তরে আজ বৃহস্পতিবার আয়োজিত সভায় কথা বলেন ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেছেন, স্বাভাবিক পরিস্থিতি বজায় রেখে জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। নিরাপত্তার ঘেরাটোপে যেন সর্বসাধারণের স্বাভাবিক চলাচল ব্যাহত না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। পবিত্র বড়দিন যেন ভাবগাম্ভীর্য ও উৎসবমুখর পরিবেশে পালিত হয়, সে লক্ষ্যে পর্যাপ্ত নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

২৫ ডিসেম্বর খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় উৎসব বড়দিন এবং ইংরেজি বর্ষবিদায় ও নববর্ষ উপলক্ষে ডিএমপি সদর দপ্তরে আজ আয়োজিত সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, ঢাকা মহানগরীতে ৭৩টি গির্জায় বড়দিন উপলক্ষে ধর্মীয় অনুষ্ঠান হবে। এ জন্য যেকোনো গুজব বা অপপ্রচার রোধে সাইবার প্যাট্রলিং জোরদার করা হয়েছে এবং গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।

সাজ্জাত আলী বলেন, আগামী দিনে রাজধানীতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট রয়েছে। থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষে যেন কোনো রকম অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, সে জন্য সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে। এ ছাড়া মোটরকার রেসিং থেকে বিরত থাকার জন্য নগরবাসীকে অনুরোধ জানান তিনি। থার্টি ফার্স্ট নাইটে কেউ মোটর রেসিং করলে তাঁর গাড়ি জব্দ করা হবে বলেও জানান তিনি।

সভায় অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (প্রশাসন) মো. সরওয়ার বলেন, থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষে যেকোনো অনুষ্ঠানের জন্য আগে থেকে অনুমতি নিতে হবে।

অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এস এন মো. নজরুল ইসলাম বলেন, নিরাপত্তার বিষয়ে কোনো শৈথিল্য প্রদর্শন করা যাবে না। পটকা ও বিস্ফোরক দ্রব্য কেনাবেচা বন্ধ রাখতে হবে।

সভায় খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের নেতারা ছাড়াও অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম) মো. মাসুদ করিম, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো. আনিছুর রহমান এবং ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার, উপপুলিশ কমিশনার ও সংশ্লিষ্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সিলেটে দুই মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে নিহত তিন

সিলেট প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

সিলেটের গোলাপগঞ্জে দুই মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন। গতকাল বুধবার দিবাগত রাতে উপজেলার গোলাপগঞ্জ সদর ইউনিয়নের উত্তর গোয়াসপুর এলাকার সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে আরও একজন আহত হয়েছেন।

নিহতরা হলেন গোলাপগঞ্জ সদর ইউনিয়নের গোয়াসপুর গ্রামের আব্দুল আহাদ (৪২), উপজেলার রানাপিং ছত্রিশ গ্রামের সাব্বির আহমদ (২১) এবং সদর ইউনিয়নের ফাজিলপুর গ্রামের আরিফুল হক জয় (৩৫)। দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন মৌলভীবাজারের জুড়ি উপজেলার বাছিরপুর গ্রামের বাছিরপুর গ্রামের জাকির আহমদ (২০)।

পুলিশ জানায়, গতকাল রাত ১২টার দিকে উত্তর গোয়াসপুর এলাকায় সিলেট থেকে গোলাপগঞ্জগামী মোটরসাইকেলের সঙ্গে বিপরীত দিক থেকে আসা আরেকটি মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে দুই মোটরসাইকেলের চার আরোহী গুরুতর আহত হন। পরে তাঁদের উদ্ধার করে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান স্থানীয়রা। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আবদুল আহাদ ও সাব্বির আহমদের মৃত্যু হয়। পরে ওই রাতেই আরিফুল হক জয়ের মৃত্যু হয়।

এ তথ্য নিশ্চিত করে গোলাপগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আরিফুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। আহত ব্যক্তির অবস্থাও গুরুতর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত