Ajker Patrika

এমপি শম্ভুর ৫ বছরে সম্পত্তি বেড়েছে চার গুণ 

বরগুনা প্রতিনিধি
আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৮: ১১
এমপি শম্ভুর ৫ বছরে সম্পত্তি বেড়েছে চার গুণ 

বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর নিজের কোনো বাড়ি বা অ্যাপার্টমেন্ট নেই। তবে তাঁর স্ত্রী মাধবী দেবনাথের নামে ২৯ লাখ ৪৫ হাজার ১২৪ টাকার এবং ৫৩ লাখ ২৪ হাজার টাকার দুটি অ্যাপার্টমেন্ট আছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দাখিল করা হলফনামায় এমপি ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু এমন তথ্য উল্লেখ করেছেন। 

হলফনামা ঘেঁটে দেখা যায়, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে এমপি শম্ভু ও স্ত্রীর বার্ষিক আয়সহ মোট স্থাবর-অস্থাবর মোট ৮ কোটি ৫০ লাখ ৭৭ হাজার ২০৮ টাকার সম্পদ রয়েছে। তবে ৫ বছর আগে ২০১৮ সালে শম্ভু ও তাঁর স্ত্রীর বার্ষিক আয়সহ মোট সম্পদ ছিল ২ কোটি ৩৪ লাখ ২০ হাজার ৯৭০ টাকার। অর্থাৎ, গত পাঁচ বছরে শম্ভু ও তাঁর স্ত্রীর সম্পদ বেড়েছে ৬ কোটি ১৬ লাখ ৫৬ হাজার ২৩৮ টাকার। অর্থাৎ, ৫ বছরে চার গুণেরও বেশি সম্পদ বেড়েছে এমপি শম্ভু ও তাঁর স্ত্রী মাধবী দেবনাথের।

তবে একমাত্র ছেলে সুনাম দেবনাথের কোনো আয় বা সম্পদের তথ্য দুটি নির্বাচনের কোনো হলফনামায়ই উল্লেখ করা হয়নি। এ ছাড়া এমপি ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর আমতলা সড়কে একটি ও বরগুনা সদর রোডে উপজেলা পরিষদসংলগ্ন একটি বাড়ি থাকলেও হলফনামায় এসব বাড়ির কোনো তথ্য দেননি। 

ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু দুটি নির্বাচনেই নিজের পেশা দেখিয়েছেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট ও বরগুনা জজকোর্টের আইনজীবী ও আইনি পরামর্শক। যদিও ১৯৯১ সালে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর পেশায় অনিয়মিত এবং ১৯৯৬ সালের পর থেকে তিনি আইন পেশা একপ্রকার ছেড়েই দিয়ে পুরোপুরি রাজনীতিতে যুক্ত হয়েছেন।  

২০১৮ ও ২০২৩ সালের দুটি সংসদ নির্বাচনেই এমপি শম্ভু আয়ের প্রধান উৎস দেখিয়েছেন আইন পেশা। এ ছাড়া ব্যাংকে জমা, সুদের টাকা ও এমপি হিসেবে সম্মানী—এই তিনটি তাঁর আয়ের প্রধান উৎস হিসেবে হলফনামায় দেখিয়েছেন। 

২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় এমপি শম্ভু আইন পেশা থেকে ২০ লাখ ৬০ হাজার, ব্যাংকে আমানতের বিপরীতে সুদ ৯১ হাজার ৮৩৬ টাকা ও এমপি হিসেবে সম্মানী বাবদ ৩৩ লাখ টাকা বার্ষিক আয় দেখিয়েছিলেন। কিন্তু পাঁচ বছরের ব্যবধানে আইন পেশা থেকে আয় কমে ১০ লাখ ১৫ হাজার ৫০০ টাকা হলেও ব্যাংক সুদ ১ লাখ টাকা থেকে বেড়ে ১২ লাখ ৬২ হাজার ৬৩১ টাকা হয়েছে। তবে এমপি হিসেবে সম্মানী বাবদ তিনি ৩২ লাখ ৬০ হাজার পেয়েছেন। 

২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এমপি শম্ভু হলফনামায় অস্থাবর সম্পদের মধ্যে তাঁর হাতে নগদ ১ লাখ ৩০ হাজার, ব্যাংকে জমা ২০ লাখ ৯৫ হাজার ৪৭৩ টাকা এবং এফডিআর জমা ৬০ হাজার টাকা। এ ছাড়া তাঁর স্ত্রীর কাছে নগদ ২ লাখ ১৩ হাজার ৬৮ টাকা এবং সঞ্চয় ১২ লাখ টাকার কথা উল্লেখ করেছিলেন। এ ছাড়া ৩০ হাজার টাকা দামের ২০ তোলা স্বর্ণালংকার, ২০ হাজার টাকার ইলেকট্রনিক (টিভি, ফ্রিজ ওভেন) ও ২ লাখ টাকার আসবাব  (চেয়ার, টেবিল ও সোফা) রয়েছে বলে উল্লেখ করেছিলেন। 

এ ছাড়া স্ত্রীর ২০ তোলা স্বর্ণ যার দাম ৬ হাজার, ১২ হাজার টাকার ইলেকট্রনিকস ও আসবাব থাকার কথা উল্লেখ ছিল। ওই বছর এমপি শম্ভুর কাছে ৬৪ হাজার টাকার পিস্তল ও শটগান রয়েছে বলে উল্লেখ  করেছিলেন। 

কিন্তু ২০২৩ সালে তাঁর অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নগদ ১ লাখ ৩০ হাজার থেকে বেড়ে ২ লাখ, ব্যাংক জমা ২০ লাখ থেকে বেড়ে ৩৩ লাখ ৮০ হাজার ৩৯২ টাকা, এফডিআর ও সঞ্চয় ৬০ হাজার থেকে ৪৫ লাখ এবং ২২ লাখ ৪৭ হাজার ৯৪৭ টাকা হয়েছে। 

এ ছাড় স্ত্রীর কাছে গতবার নগদ আড়াই লাখ থাকলেও এবার তা কমে নগদ ২৫ হাজার, স্ত্রীর ব্যাংকে জমা ১২ থেকে বেড়ে ১৫ লাখ ৮৩ হাজার ৭১৪ টাকা, এফডিআর জমা আছে ৩১ লাখ ২৪ হাজার ৫১৪ টাকা হয়েছে। তবে স্বর্ণালংকার ১৬ তোলা থেকে বাড়েনি দুজনার কারোরই। 

এ ছাড়া নিজের ২০ হাজার টাকার ইলেকট্রনিকস সামগ্রী ও আসবাব ২০ হাজার টাকা থেকে বড়ে ৪০ হাজার, ১২ হাজার টাকার থেকে বেড়ে মোট ২০ হাজার টাকার ইলেকট্রনিক ও আসবাব রয়েছে বলে হলফনামায় উল্লেখ করা হয়েছে। 

২০১৮ সালে এমপি শম্ভুর কাছে ৬৪ হাজার টাকার পিস্তল ও শটগান থাকলেও এবার তাঁর কাছে ২২ বোরের একটি রাইফেল, একটি পিস্তল রয়েছে। যার দাম ২ লাখ টাকা।

২০১৮ সালের হলফনামায় তাঁর নামে ৬৫ লাখ ২৭ হাজার ৮৬৭ টাকা মূল্যের একটি ল্যান্ড ক্রুইজার, ১৫ লাখ ৬০ হাজার ৬০০ টাকা মূলের একটি টয়োটা গাড়ি এবং তাঁর স্ত্রী মাধবী দেবনাথের একটি ১৬ লাখ টাকা মূল্যেও মাইক্রোবাস থাকার কথা উল্লেখ্য করলেও ২০২৩ সালের হলফনামায় ৮১ লাখ ২৯ হাজার ৩৮৬ টাকার একটিসহ ২৪ লাখ টাকা মূল্যের একটি গাড়ির থাকার উল্লেখ করেছেন। এ ছাড়া তাঁর স্ত্রীর নামে ৪৫ লাখ টাকা একটি গাড়ি রয়েছে। তবে গাড়ির ব্র্যান্ড ও মডেল উল্লেখ করেননি।

২০১৮ সালে শম্ভুর স্থাবর সম্পদের ছিল তিন একর কৃষিজমির কথা উল্লেখ থাকলেও জমির দামের কোনো তথ্য দেননি। আবার এবার তিনি ৮৯ লাখ ৯৮ হাজার টাকার কৃষিজমি থাকার উল্লেখ করলেও জমির পরিমাণ উল্লেখ করেননি। 

২০১৮ সালে তাঁর ৩ একর ৪০ শতাংশ অকৃষিজমি, যার আনুমানিক মূল্য ২ লাখ টাকা দেখিয়েছিলেন। তবে ২০২৩ সালে জমির পরিমাণ উল্লেখ না করলেও এবার তাঁর ৯ লাখ ৮৫ হাজার টাকা অকৃষিজমি ও জমি বাবদ আরও অগ্রিম ৪ লাখ টাকা দেওয়ার কথা হলফনামায় উল্লেখ রয়েছে। 

স্ত্রী মাধবী দেবনাথের নামে কৃষি বা অকৃষি কোনো জমিই নেই। তবে মাধবী দেবনাথের ২০১৮ সালে ২৯ লাখ ৪৫ হাজার ১২৪ টাকার একটি অ্যাপার্টমেন্ট থাকলেও এবার ৫৩ লাখ ২৪ হাজার টাকার আরও একটি অ্যাপার্টমেন্ট যুক্ত হয়েছে। অর্থাৎ, মাধবী দেবনাথের ৮২ লাখ ৬৯ হাজার ১২৪ টাকা মূল্যের দুটি অ্যাপার্টমেন্ট রয়েছে। 

হলফনামায় উল্লিখিত তথ্যের বিষয়ে জানতে বরগুনা-১ আসনের এমপি ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর ব্যবহৃত মোবাইলে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি। এ ছাড়া তাঁর ব্যবহৃত নম্বরের ওয়াটসঅ্যাপে খুদে বার্তা পাঠিলেও সাড়া মেলেনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ইসলামপুরে পুলিশের অভিযানে আওয়ামী লীগের তিন নেতা আটক

ইসলামপুর (জামালপুর) প্রতিনিধি  
আটক করা আওয়ামী লীগের তিন নেতা। ছবি: সংগৃহীত
আটক করা আওয়ামী লীগের তিন নেতা। ছবি: সংগৃহীত

জামালপুরের ইসলামপুরে পুলিশের বিশেষ অভিযানে আওয়ামী লীগের তিন নেতাকে আটক করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের আটক করা হয়।

আটক ব্যক্তিরা হলেন পলবান্ধা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আক্রাম হোসেন মাস্টার, কুলকান্দী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাসমত আলী সরদার এবং উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সোনাহার সরকার।

এ বিষয়ে ইসলামপুর থানার ডিউটি অফিসার ও সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) অমৃত চন্দ্র সেন বলেন, আওয়ামী লীগ নেতা হাসমত আলী সরদারকে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের শাখা-২ (ডিবি) সদস্যরা আটক করে মঙ্গলবার রাতে থানায় হস্তান্তর করেন। এ ছাড়া একই দিন রাতে পৃথক অভিযানে আক্রাম হোসেন মাস্টার ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা সোনাহার সরকারকে আটক করা হয়েছে।

অমৃত চন্দ্র সেন আরও বলেন, আটক তিনজনের বিরুদ্ধে ইসলামপুর থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা রয়েছে। ওই মামলায় তাঁদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে জামালপুরের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঠানোর প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে বিএনপির দলীয় স্লোগান, নিষেধ করায় তোপের মুখে ইউএনও

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি হোসেনপুর সংবাদদাতা
আপডেট : ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ০১
ছবি: ফেসবুক থেকে সংগৃহীত
ছবি: ফেসবুক থেকে সংগৃহীত

কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে মহান বিজয় দিবস ২০২৫ উদ্‌যাপন অনুষ্ঠানে দলীয় স্লোগান নিষিদ্ধ করাকে কেন্দ্র করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাজী নাহিদ ইভাকে তোপের মুখে পড়তে হয়েছে। এই ঘটনায় অনুষ্ঠানে কিছু সময়ের জন্য উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।

মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানের আগে একটি মিছিলে বিএনপির নেতা-কর্মীরা ‘স্বাধীনতার ঘোষক জিয়া—লও লও লও সালাম’ স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় মঞ্চের একপাশ থেকে ইউএনও কাজী নাহিদ ইভা রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে দলীয় স্লোগান না দিতে নির্দেশ দেন।

ইউএনওর এই নির্দেশে বিএনপির নেতা-কর্মীরা উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। একপর্যায়ে তাঁরা ইউএনওকে আওয়ামী লীগের দোসর আখ্যা দিয়ে হট্টগোল শুরু করেন। এতে অনুষ্ঠানের স্বাভাবিক পরিবেশ ব্যাহত হয়। পরিস্থিতির একপর্যায়ে ইউএনওর বদলির দাবিও তোলেন বিএনপির কিছু নেতা-কর্মী।

ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। উত্তেজনার কারণে কিছু সময়ের জন্য অনুষ্ঠান স্থগিত থাকে। পরে বিএনপির সিনিয়র নেতাদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। এরপর বাকি অনুষ্ঠান নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হয়।

ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে জেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মাজহারুল ইসলাম, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরুল হক রাজন, যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাবেক হোসেনপুর পৌর মেয়র মাহবুবুর রহমান, যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাবেক সাহেদল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল হাসিম সবুজসহ বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের একাধিক নেতা-কর্মীকে উপস্থিত থাকতে দেখা যায়।

এ বিষয়ে জেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের নেতা-কর্মীদের আমরাই মাঠের ভেতরে আর মিছিল করতে নিষেধ করতে ছিলাম। তবু ইউএনও মহোদয় রেগে এসে এখানে কোনো দলীয় স্লোগান হবে না বলে স্লোগান বন্ধ করতে নিষেধ করেন। তাঁর আচরণটা রূঢ় ছিল, যা আমরা একজন প্রশাসনের দায়িত্বশীল ব্যক্তির কাছ থেকে প্রত্যাশা করি না। দলীয় লোকজন তো তখন এমনিতেই স্লোগান বন্ধ করে অনুষ্ঠান স্থলে বসে পড়ত। আমরাও তো অনুষ্ঠান উপভোগ করতে গিয়েছিলাম।’ তিনি আরও বলেন, ভিডিও ভাইরাল হওয়ায় বিষয়টি বড় আকার ধারণ করেছে।

উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরুল হক রাজন বলেন, ইউএনওর আচরণ তাঁদের কাছে ভালো মনে হয়নি। এ বিষয়ে পরে কথা বলবেন বলে তিনি আর মন্তব্য করতে চাননি।

ইউএনও কাজী নাহিদ ইভার বক্তব্য জানতে তাঁর সরকারি নম্বরে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। পরে হোয়াটসঅ্যাপে খুদে বার্তা পাঠানো হলেও কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহসী মাসনাদ বলেন, রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে দলীয় স্লোগান কোনোভাবেই কাম্য নয়। এ ধরনের পরিস্থিতি সৃষ্টি প্রশাসনকে হেয় করার শামিল। এটি রাজনৈতিক দলগুলোর অভ্যন্তরীণ বিভাজনের ফলও হতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নড়াইল-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা বিএনপি নেতা নাগিবের

নড়াইল প্রতিনিধি 
ছোটকালিয়া মোড়ে দলীয় কার্যালয়ে কথা বলেন অধ্যাপক বি এম নাগিব হোসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
ছোটকালিয়া মোড়ে দলীয় কার্যালয়ে কথা বলেন অধ্যাপক বি এম নাগিব হোসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নড়াইল-১ আসনে (কালিয়া ও নড়াইল সদর উপজেলার একাংশ) বিএনপির দলীয় মনোনয়ন পুনর্বিবেচনা করা না হলে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপি ও জিয়া পরিষদের নেতা অধ্যাপক বি এম নাগিব হোসেন। তিনি বি এম বাকির হোসেন স্মৃতি সংসদের সভাপতি।

মঙ্গলবার সকালে কালিয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণের পর ছোটকালিয়া মোড়ে দলীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সভায় তিনি এই ঘোষণা দেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন কালিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি সরদার আনোয়ার হোসেন, কালিয়া পৌর বিএনপির সহসভাপতি রবিউল ইসলাম রবি, কালিয়া উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম কিবরিয়া মিঠু, জেলা কৃষক দলের সাবেক সভাপতি এম রেজাউল করিম, বড়নাল-ইলিয়াছাবাদ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মোল্যা খায়রুজ্জামান, নড়াইল পৌর বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি মো. আজিজুর রহমান, কালিয়া উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মাহিনুর ইসলাম মাহি, জেলা জাসাসের সাধারণ সম্পাদক এস এম ইকরাম রেজাসহ বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা।

স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার কারণ জানতে চাইলে অধ্যাপক নাগিব হোসেন বলেন, নড়াইল-১ আসনে বিএনপির যাঁকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে, তিনি জনবিচ্ছিন্ন একজন নেতা। তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে তাঁর তেমন কোনো সম্পৃক্ততা নেই। এ কারণেই তিনি আগেও এই আসনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের কাছে বড় ব্যবধানে পরাজিত হয়েছেন। বারবার পরাজয়ের ফলে কালিয়ায় বিএনপি অনেকটা অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে।

নাগিব হোসেন আরও বলেন, ‘আমিসহ প্রকৃত ত্যাগী বিএনপি নেতারা দল কিংবা ধানের শীষের বিপক্ষে নই। আমরা দলকে তৃণমূলে সুসংগঠিত করতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছি।’

দলের সর্বস্তরের নেতাদের সমর্থন পাওয়ায় একটি পরিবারের বিরাগভাজন হয়েছেন দাবি করে অধ্যাপক নাগিব বলেন, ওই পরিবারের সদস্য ও তাঁদের কয়েকজন অনুসারী তাঁকে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে নানা ধরনের হুমকি ও ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন। বিষয়টি তিনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অবহিত করেছেন।

অধ্যাপক নাগিব আরও বলেন, নির্বাচিত হলে এলাকার সড়ক যোগাযোগ, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন, দুর্নীতি নির্মূল, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা, বেকার সমস্যা সমাধান, স্বনির্ভরতা অর্জন এবং মৌলিক অধিকার বাস্তবায়নে কাজ করবেন।

উল্লেখ্য, নড়াইল-১ আসনে বিএনপির হাইকমান্ড ঘোষিত প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন জেলা বিএনপির সভাপতি বিশ্বাস জাহাঙ্গীর আলম। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত প্রার্থী জেলা সেক্রেটারি মাওলানা ওবায়দুল্লাহ কায়সার এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মনোনীত প্রার্থী মাওলানা আব্দুল আজিজ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বারি লাউ-৪ চাষে সফলতা রাইখালী পাহাড়ি কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের

কাপ্তাই (রাঙামাটি) প্রতিনিধি 
রাইখালী পাহাড়ি কৃষি গবেষণা কেন্দ্র থেকে মঙ্গলবার সকালে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাইখালী পাহাড়ি কৃষি গবেষণা কেন্দ্র থেকে মঙ্গলবার সকালে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

কৃষকের বাতিঘর হিসেবে পরিচিত রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার রাইখালী পাহাড়ি কৃষি গবেষণা কেন্দ্র নতুন নতুন কৃষিপ্রযুক্তি উদ্ভাবনের মাধ্যমে দেশের কৃষিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে। ১৯৭৬ সালে প্রতিষ্ঠিত গবেষণা কেন্দ্রটি ইতিমধ্যে ২১টি সবজি ও ফলের জাত উদ্ভাবন করে কৃষি খাতে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এনেছে।

এরই ধারাবাহিকতায় পাহাড়ি অঞ্চলে সম্প্রসারণের লক্ষ্যে এবার ‘বারি লাউ-৪’ জাতের প্রজনন বীজ উৎপাদন ও চাষে সফলতা পেয়েছেন কেন্দ্রের কৃষিবিজ্ঞানীরা। চলতি বছরের ৪ সেপ্টেম্বর থেকে গবেষণা কেন্দ্রের এক একর জমিতে এই জাতের লাউ চাষ করা হয়। বীজ বপনের প্রায় ৭০ দিনের মধ্যেই প্রতিটি গাছে ফলন আসে। বর্তমানে গবেষণা কেন্দ্রে সারি সারি লাউগাছে ঝুলছে লাউ।

মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় গবেষণা কেন্দ্রে গিয়ে কথা হয় কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মুহাম্মদ জিয়াউর রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, বারি লাউ-৪ একটি তাপ সহনশীল জাত, যা সারা বছর চাষ করা যায়। পার্বত্য অঞ্চলে চাষের জন্য এটি বিশেষভাবে উপযোগী। এই জাতের লাউ গাঢ় সবুজ রঙের এবং ফলের গায়ে সাদাটে দাগ থাকে। প্রতিটি গাছে ১০ থেকে ১২টি ফল পাওয়া যায়। প্রতিটি ফলের গড় ওজন প্রায় ২ দশমিক ৫ কেজি। ফলের দৈর্ঘ্য ৪২ থেকে ৪৫ সেন্টিমিটার এবং ব্যাস ১২ থেকে ১৩ সেন্টিমিটার।

তিনি আরও জানান, চারা রোপণের ৭০ থেকে ৮০ দিনের মধ্যে লাউ সংগ্রহ করা যায়। এই জাতের জীবনকাল ১৩০ থেকে ১৫০ দিন। হেক্টরপ্রতি ফলন ৮০ থেকে ৮৫ টন পর্যন্ত হতে পারে। তাপ সহনশীল হওয়ায় গ্রীষ্মকালেও চাষ করে কৃষকেরা লাভবান হতে পারবেন।

ড. জিয়াউর রহমান বলেন, বারি লাউ-৪ দেশের সব এলাকাতেই চাষ করা সম্ভব। গ্রীষ্মকালীন চাষের জন্য ফাল্গুনের শেষে আগাম ফসল হিসেবে চাষ করা যায়। চৈত্র মাসে বীজ বপন করে বৈশাখ মাসে চারা রোপণ করা যায়।

এদিকে রাইখালী ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের কৃষক পাইদো অং মারমা বলেন, গত অক্টোবর মাসে তিনি এই গবেষণা কেন্দ্র থেকে বারি লাউ-৪-এর বীজ ও সার সংগ্রহ করেন। সেগুলো বিনা মূল্যে দেওয়া হয়। এক বিঘা জমিতে তিনি লাউ চাষ করেছেন। বর্তমানে গাছগুলো ভালোভাবে বেড়ে উঠেছে। ভালো ফলনের আশা করছেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত