বিভুরঞ্জন সরকার

রাজনীতির আকাশের রং কি বদলাচ্ছে? কালো মেঘের আনাগোনা কি বাড়ছে? বিদেশে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা ও দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রশ্নে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও ক্ষমতাপ্রত্যাশী বিএনপির মধ্যে একধরনের ঠান্ডা লড়াই অনেক দিন ধরেই চলছে। এখন কেউ কেউ আশঙ্কা করছেন, এই ঠান্ডা লড়াই বুঝি গরম হাওয়ায় রূপ নিতে চলেছে। দুই দল বিভিন্ন ইস্যুতে বাহাস করছে। কেউ কাউকে সামান্য ছাড় দেওয়ার মনোভাব দেখাচ্ছে না। একে অপরের বিরুদ্ধে শব্দবোমা নিক্ষেপ করেই চলেছে। অবশ্য বিএনপির নিক্ষেপ করা শব্দবোমা আওয়ামী লীগ তেমন গায়ে মাখছে না। হয়তো এগুলো মেয়াদোত্তীর্ণ অথবা ভেজা, তাই বিস্ফোরণ ঘটছে না।
বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, অক্টোবর মাসের মধ্যে তারা এক দফা দাবি তথা সরকারের পতন ঘটিয়ে ছাড়বে। অক্টোবর মাস শুরু হয়েছে। সরকার পতনের মতো গণ-অভ্যুত্থান বা ওলট-পালট রাজনৈতিক হাওয়া বইতে দেখা যাচ্ছে না। বিএনপির হুংকার বা হুমকি-ধমকি সম্পর্কে এখন সাধারণ ধারণা এমন যে এই দলটির গর্জন আছে, বর্ষণ তেমন হয় না।
এই তো গত ২৪ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়ার মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর দাবিতে আয়োজিত সমাবেশে ‘কেঁদেকেটে’ আবেগ ছড়িয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছিলেন, হাসপাতালের চিকিৎসকেরা বলেছেন আপনাদের কিছু করার থাকলে করেন। খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা ভালো নয়। অবিলম্বে বিদেশে নিয়ে উন্নত চিকিৎসা দিতে না পারলে বাঁচানো দুষ্কর হবে।
এ সময় সরকারকে আলটিমেটাম দিয়ে ফখরুল বলেন, ‘আমাদের নেত্রী জীবন-মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তাঁকে বাইরে চিকিৎসার ব্যবস্থা করুন, অন্যথায় এর সমস্ত দায়দায়িত্ব এই সরকারকেই নিতে হবে।’
৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম শেষ হয়েছে, খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার আবেদন নাকচ করে তাঁকে জেলে গিয়ে আবার আদালতে আবেদন করার কথা জানিয়েছে সরকার।
এ নিয়েও দুই দলের মধ্যে চলছে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য। সরকারপক্ষ বলছে, আইন অনুযায়ী এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে বিএনপি বলছে, খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার ক্ষেত্রে বিএনপিকে শেখ হাসিনা সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচনে যাওয়ার শর্ত দেওয়া হয়েছিল। খালেদা জিয়া সেই শর্ত না মানায় তাঁকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়নি।
খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার ক্ষেত্রে বিএনপিকে নির্বাচনে যাওয়ার শর্তের কথা নাকচ করেছে সরকার। এ প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, ‘বাজে কথা, ভুয়া কথা। এ ধরনের প্রস্তাবনা কেউ কাউকে দিয়েছে কি না, তা আমার জানা নেই। প্রধানমন্ত্রী আইনের বাইরে কোনো কথা বলেননি। খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রে আইন অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
লিভারের জটিলতা ছাড়াও ৭৮ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ফুসফুস, কিডনি, হৃদ্রোগ, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন সমস্যা রয়েছে। গত ৯ আগস্ট গুলশানের বাসা ফিরোজায় গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্তে তাঁকে বসুন্ধরার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই হাসপাতালেই এখনো তিনি চিকিৎসাধীন। বর্তমানে করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে ১৯ সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ড তাঁকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখে চিকিৎসা দিচ্ছে।
গত ২৫ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার বোনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার অনুমতি চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেন। এরপর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ আবেদন মতামতের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। রোববার খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার আবেদন নাকচ করে আইন মন্ত্রণালয় জানায়, বিদেশে যেতে হলে খালেদা জিয়াকে জেলে গিয়ে আবার আদালতে আবেদন করতে হবে; কিন্তু বিদেশে পাঠানোর অনুমতির জন্য আদালতে যেতে রাজি নয় খালেদা জিয়ার পরিবার ও বিএনপি। বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের দাবি, সরকার চাইলে সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে নির্বাহী আদেশে মুক্তি দিয়ে বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ করে দিতে পারে।
সরকার কেন এটা চাইবে, সে প্রশ্নটাই এখন বড় হয়ে আসছে। বিএনপি বা খালেদা জিয়ার সরকারের মিত্রপক্ষ নয়। তা ছাড়া দুটি দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত হয়ে জেলে যাওয়ার পর থেকেই খালেদা জিয়ার অসুস্থতা ও চিকিৎসা নিয়ে বিএনপি কম রাজনীতি করেনি। একাধিক বার বলা হয়েছে যে খালেদা জিয়ার অবস্থা সংকটাপন্ন। বিদেশে না নিলে তিনি সুস্থ হয়ে উঠবেন না। বিদেশে যাওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় না নিলেও সরকারের নির্বাহী আদেশে দণ্ড স্থগিত করে জেলের বাইরে, অর্থাৎ বাসায় থেকে চিকিৎসার সুযোগ তাঁকে দেওয়া হয়েছে। এটা সরকারের একধরনের উদারতা বৈকি!
এখন যদি খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য পাঠাতে হয়, তাহলে সরকারের সঙ্গে কোনো সমঝোতা না করে কি সেটা সম্ভব? আমাদের দেশের যে রাজনৈতিক বাস্তবতা এবং সরকার ও বিরোধী দলের মধ্যে যে অহিনকুল সম্পর্ক, তাতে আদালতে সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে মানবিকতা দেখাতে বললে নিজেদেরও তো কিছুটা মানবিকতা দেখানো উচিত নয় কি? সম্পর্ক বা সদ্ভাব বিষয়টি তো ওয়ান ওয়ে ট্রাফিকের মতো নয়। দুই পক্ষেরই নমনীয়তা থাকতে হয়, ছাড় দেওয়ার মানসিকতা থাকতে হয়। বিএনপি সরকার বা আওয়ামী লীগের কাছে নমনীয়তা ও মানবিক আচরণ প্রত্যাশা করে, কিন্তু নিজেরা থাকবে অনমনীয়।
বিএনপি আওয়ামী লীগ সরকারকে অবৈধ বা দখলদার সরকার বলছে। এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে না যাওয়ার নীতি নিয়েছে। সরকার পতনের লক্ষ্য ঠিক করেছে। বলা হচ্ছে, অক্টোবর মাসের মধ্যেই নাকি সরকারের পতন ঘটবে। এমনও বলা হচ্ছে, সরকারদলীয় লোকদের দেশছাড়া করা হবে, তারা নাকি পালানোর পথও পাবে না।
সত্যি কি আওয়ামী লীগ সরকার একেবারেই জনবিচ্ছিন্ন? এই সরকারের পায়ের নিচে মাটি নেই?
দেশের রাজনীতিতে এখন চলছে চরমভাবে নীতিহীনতার চর্চা। এ অবস্থায় ‘নীতিকথা’ বলে বা নীতিগত অবস্থানের দোহাই দিয়ে কোনো পক্ষই সুবিধা নিতে পারবে বলে মনে হয় না। বিএনপি যদি দলীয় নেত্রীকে সত্যি শ্রদ্ধা করে, তাঁর স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বিগ্ন থাকে, তাহলে সরকারের সঙ্গে একটি সমঝোতায় না এসে উপায় কী? বিএনপির এক দফার আন্দোলনের সঙ্গে এখন যদি সরকারপক্ষ খালেদা জিয়ার মুক্তি ও চিকিৎসা ইস্যুটি সম্পৃক্ত করতে চায়, তাহলে খুব দোষ দেওয়া যাবে কি?
এবার আসা যাক, বিএনপির গণ-অভ্যুত্থান বা সরকার পতনের আন্দোলন প্রসঙ্গে। এর আগে বহুবার বিএনপি দিন-তারিখ দিয়েছে কিন্তু তাতে কাজ হয়নি। এটা মনে রাখতে হবে, গণ-অভ্যুত্থান কখনো দিন-তারিখ দিয়ে হয় না। হয় না কোনো নেতা বা দলের ডাকেও। মানুষের ভেতরে তীব্র ঘৃণা, রাগ, অসন্তোষ, আক্রোশ জমা না হলে জীবনপণ করে কেন সরকারের বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়বে? আওয়ামী লীগ সরকার যতই অজনপ্রিয় হোক না কেন, মনে রাখতে হবে প্রায় প্রতিটি পরিবারেই আওয়ামী লীগের সমর্থক আছে। যদি আওয়ামী লীগের সমর্থক না-ও থাকে, তাহলে আছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি ভালোবাসার মানুষ। তা ছাড়া শাসক হিসেবে শেখ হাসিনার চেয়ে অন্য কোনো নেতাকে বোধ হয় দেশের মানুষ এখনো এগিয়ে রাখছে না।
এই রাজনৈতিক বাস্তবতায় অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে দেশে গণ-অভ্যুত্থান হয়ে যাবে, এটা কি বিশ্বাসযোগ্য মনে হয়? দলীয় জাগরণ হতে পারে, সভা-সমাবেশ বড় হতে পারে, দলীয় কর্মীরা চাঙা হতে পারে এবং তা হয়তো হচ্ছেও। কিন্তু বিএনপি তো এটাকেও কাজে লাগাতে পারছে না। মানুষকে নির্বাচনমুখী না করে মারমুখী করে তোলা কোনো গণতান্ত্রিক দলের কাম্য হতে পারে না। এক দফা আদায় না করে নির্বাচনে যাওয়া যাবে না, এটা তো পরাজয়ের দিকে টানবে। পরিণতিতে তৈরি হবে হতাশা।
গণ-অভ্যুত্থানের খোয়াব না দেখে নীরব ভোটবিপ্লবের কৌশলে যাওয়াই বোধ হয় ভালো পথ। কারণ ভোট ছাড়া ক্ষমতায় যাওয়ার গণতান্ত্রিক কোনো উপায় নেই। আর শেষ বিচারে ভোট কিন্তু দেবে ব্যক্তি নিজে। তার চাওয়া, পাওয়া, আশা, ভয়, এত দিনের দুর্বিনীত আচরণ—সবকিছুই তার ছাপের মধ্যে পড়বে। বাইডেন বা হাস কিংবা মোদি বা মিলার এসে ভোট দিয়ে যাবেন না। নিজেকেই সেই কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে হবে।
কেউ কেউ মনে করছেন, দেশের রাজনীতির বড় দুই পক্ষের কেউই দেয়ালের লেখা পড়েন না। দীর্ঘদিন যাঁরা ক্ষমতায় আছেন, তাঁদেরও আয়নার সামনে দাঁড়াতে হবে। দেশ থেকে অর্থ পাচারকারী, ব্যাংক লুটপাটকারী ও সিন্ডিকেট করে জিনিসপত্রের দাম যারা বাড়ায়, তারাই যদি আবারও সামনে এসে দাঁড়ায়, নীরব ভোটবিপ্লব হয়ে যাবে। তাই গলা কাঁপানো জাঁদরেল নেতা বা হুংকার দেওয়া নিপীড়নকারী স্থানীয় নেতাদেরও কিছুটা দূরে সরিয়ে দিতে হবে। এটা করতে গেলেও হয়তো কিছু ষড়যন্ত্র হবে, বিদ্রোহ হবে। সেটাও মোকাবিলা করতে হবে। কারও জন্যই পথ খুব মসৃণ নয়।
খুব সতর্কভাবে না এগোলে কয়েক দশকের বিশাল সব অর্জন, সব সম্ভাবনা বিলীন হয়ে যাবে।
শেষ আরেকটি কথা, রিমোট কন্ট্রোল দিয়ে টিভি চলে, এসি চলে কিন্তু রিমোটে আন্দোলন বা নির্বাচন চলে না। এর সঙ্গে মানুষ যুক্ত, তার জীবন যুক্ত, তার মন-মানসিকতা যুক্ত। সেটা কি আর রিমোটে হয়?

রাজনীতির আকাশের রং কি বদলাচ্ছে? কালো মেঘের আনাগোনা কি বাড়ছে? বিদেশে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা ও দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রশ্নে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও ক্ষমতাপ্রত্যাশী বিএনপির মধ্যে একধরনের ঠান্ডা লড়াই অনেক দিন ধরেই চলছে। এখন কেউ কেউ আশঙ্কা করছেন, এই ঠান্ডা লড়াই বুঝি গরম হাওয়ায় রূপ নিতে চলেছে। দুই দল বিভিন্ন ইস্যুতে বাহাস করছে। কেউ কাউকে সামান্য ছাড় দেওয়ার মনোভাব দেখাচ্ছে না। একে অপরের বিরুদ্ধে শব্দবোমা নিক্ষেপ করেই চলেছে। অবশ্য বিএনপির নিক্ষেপ করা শব্দবোমা আওয়ামী লীগ তেমন গায়ে মাখছে না। হয়তো এগুলো মেয়াদোত্তীর্ণ অথবা ভেজা, তাই বিস্ফোরণ ঘটছে না।
বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, অক্টোবর মাসের মধ্যে তারা এক দফা দাবি তথা সরকারের পতন ঘটিয়ে ছাড়বে। অক্টোবর মাস শুরু হয়েছে। সরকার পতনের মতো গণ-অভ্যুত্থান বা ওলট-পালট রাজনৈতিক হাওয়া বইতে দেখা যাচ্ছে না। বিএনপির হুংকার বা হুমকি-ধমকি সম্পর্কে এখন সাধারণ ধারণা এমন যে এই দলটির গর্জন আছে, বর্ষণ তেমন হয় না।
এই তো গত ২৪ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়ার মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর দাবিতে আয়োজিত সমাবেশে ‘কেঁদেকেটে’ আবেগ ছড়িয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছিলেন, হাসপাতালের চিকিৎসকেরা বলেছেন আপনাদের কিছু করার থাকলে করেন। খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা ভালো নয়। অবিলম্বে বিদেশে নিয়ে উন্নত চিকিৎসা দিতে না পারলে বাঁচানো দুষ্কর হবে।
এ সময় সরকারকে আলটিমেটাম দিয়ে ফখরুল বলেন, ‘আমাদের নেত্রী জীবন-মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তাঁকে বাইরে চিকিৎসার ব্যবস্থা করুন, অন্যথায় এর সমস্ত দায়দায়িত্ব এই সরকারকেই নিতে হবে।’
৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম শেষ হয়েছে, খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার আবেদন নাকচ করে তাঁকে জেলে গিয়ে আবার আদালতে আবেদন করার কথা জানিয়েছে সরকার।
এ নিয়েও দুই দলের মধ্যে চলছে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য। সরকারপক্ষ বলছে, আইন অনুযায়ী এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে বিএনপি বলছে, খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার ক্ষেত্রে বিএনপিকে শেখ হাসিনা সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচনে যাওয়ার শর্ত দেওয়া হয়েছিল। খালেদা জিয়া সেই শর্ত না মানায় তাঁকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়নি।
খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার ক্ষেত্রে বিএনপিকে নির্বাচনে যাওয়ার শর্তের কথা নাকচ করেছে সরকার। এ প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, ‘বাজে কথা, ভুয়া কথা। এ ধরনের প্রস্তাবনা কেউ কাউকে দিয়েছে কি না, তা আমার জানা নেই। প্রধানমন্ত্রী আইনের বাইরে কোনো কথা বলেননি। খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রে আইন অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
লিভারের জটিলতা ছাড়াও ৭৮ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ফুসফুস, কিডনি, হৃদ্রোগ, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন সমস্যা রয়েছে। গত ৯ আগস্ট গুলশানের বাসা ফিরোজায় গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্তে তাঁকে বসুন্ধরার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই হাসপাতালেই এখনো তিনি চিকিৎসাধীন। বর্তমানে করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে ১৯ সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ড তাঁকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখে চিকিৎসা দিচ্ছে।
গত ২৫ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার বোনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার অনুমতি চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেন। এরপর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ আবেদন মতামতের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। রোববার খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার আবেদন নাকচ করে আইন মন্ত্রণালয় জানায়, বিদেশে যেতে হলে খালেদা জিয়াকে জেলে গিয়ে আবার আদালতে আবেদন করতে হবে; কিন্তু বিদেশে পাঠানোর অনুমতির জন্য আদালতে যেতে রাজি নয় খালেদা জিয়ার পরিবার ও বিএনপি। বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের দাবি, সরকার চাইলে সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে নির্বাহী আদেশে মুক্তি দিয়ে বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ করে দিতে পারে।
সরকার কেন এটা চাইবে, সে প্রশ্নটাই এখন বড় হয়ে আসছে। বিএনপি বা খালেদা জিয়ার সরকারের মিত্রপক্ষ নয়। তা ছাড়া দুটি দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত হয়ে জেলে যাওয়ার পর থেকেই খালেদা জিয়ার অসুস্থতা ও চিকিৎসা নিয়ে বিএনপি কম রাজনীতি করেনি। একাধিক বার বলা হয়েছে যে খালেদা জিয়ার অবস্থা সংকটাপন্ন। বিদেশে না নিলে তিনি সুস্থ হয়ে উঠবেন না। বিদেশে যাওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় না নিলেও সরকারের নির্বাহী আদেশে দণ্ড স্থগিত করে জেলের বাইরে, অর্থাৎ বাসায় থেকে চিকিৎসার সুযোগ তাঁকে দেওয়া হয়েছে। এটা সরকারের একধরনের উদারতা বৈকি!
এখন যদি খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য পাঠাতে হয়, তাহলে সরকারের সঙ্গে কোনো সমঝোতা না করে কি সেটা সম্ভব? আমাদের দেশের যে রাজনৈতিক বাস্তবতা এবং সরকার ও বিরোধী দলের মধ্যে যে অহিনকুল সম্পর্ক, তাতে আদালতে সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে মানবিকতা দেখাতে বললে নিজেদেরও তো কিছুটা মানবিকতা দেখানো উচিত নয় কি? সম্পর্ক বা সদ্ভাব বিষয়টি তো ওয়ান ওয়ে ট্রাফিকের মতো নয়। দুই পক্ষেরই নমনীয়তা থাকতে হয়, ছাড় দেওয়ার মানসিকতা থাকতে হয়। বিএনপি সরকার বা আওয়ামী লীগের কাছে নমনীয়তা ও মানবিক আচরণ প্রত্যাশা করে, কিন্তু নিজেরা থাকবে অনমনীয়।
বিএনপি আওয়ামী লীগ সরকারকে অবৈধ বা দখলদার সরকার বলছে। এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে না যাওয়ার নীতি নিয়েছে। সরকার পতনের লক্ষ্য ঠিক করেছে। বলা হচ্ছে, অক্টোবর মাসের মধ্যেই নাকি সরকারের পতন ঘটবে। এমনও বলা হচ্ছে, সরকারদলীয় লোকদের দেশছাড়া করা হবে, তারা নাকি পালানোর পথও পাবে না।
সত্যি কি আওয়ামী লীগ সরকার একেবারেই জনবিচ্ছিন্ন? এই সরকারের পায়ের নিচে মাটি নেই?
দেশের রাজনীতিতে এখন চলছে চরমভাবে নীতিহীনতার চর্চা। এ অবস্থায় ‘নীতিকথা’ বলে বা নীতিগত অবস্থানের দোহাই দিয়ে কোনো পক্ষই সুবিধা নিতে পারবে বলে মনে হয় না। বিএনপি যদি দলীয় নেত্রীকে সত্যি শ্রদ্ধা করে, তাঁর স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বিগ্ন থাকে, তাহলে সরকারের সঙ্গে একটি সমঝোতায় না এসে উপায় কী? বিএনপির এক দফার আন্দোলনের সঙ্গে এখন যদি সরকারপক্ষ খালেদা জিয়ার মুক্তি ও চিকিৎসা ইস্যুটি সম্পৃক্ত করতে চায়, তাহলে খুব দোষ দেওয়া যাবে কি?
এবার আসা যাক, বিএনপির গণ-অভ্যুত্থান বা সরকার পতনের আন্দোলন প্রসঙ্গে। এর আগে বহুবার বিএনপি দিন-তারিখ দিয়েছে কিন্তু তাতে কাজ হয়নি। এটা মনে রাখতে হবে, গণ-অভ্যুত্থান কখনো দিন-তারিখ দিয়ে হয় না। হয় না কোনো নেতা বা দলের ডাকেও। মানুষের ভেতরে তীব্র ঘৃণা, রাগ, অসন্তোষ, আক্রোশ জমা না হলে জীবনপণ করে কেন সরকারের বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়বে? আওয়ামী লীগ সরকার যতই অজনপ্রিয় হোক না কেন, মনে রাখতে হবে প্রায় প্রতিটি পরিবারেই আওয়ামী লীগের সমর্থক আছে। যদি আওয়ামী লীগের সমর্থক না-ও থাকে, তাহলে আছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি ভালোবাসার মানুষ। তা ছাড়া শাসক হিসেবে শেখ হাসিনার চেয়ে অন্য কোনো নেতাকে বোধ হয় দেশের মানুষ এখনো এগিয়ে রাখছে না।
এই রাজনৈতিক বাস্তবতায় অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে দেশে গণ-অভ্যুত্থান হয়ে যাবে, এটা কি বিশ্বাসযোগ্য মনে হয়? দলীয় জাগরণ হতে পারে, সভা-সমাবেশ বড় হতে পারে, দলীয় কর্মীরা চাঙা হতে পারে এবং তা হয়তো হচ্ছেও। কিন্তু বিএনপি তো এটাকেও কাজে লাগাতে পারছে না। মানুষকে নির্বাচনমুখী না করে মারমুখী করে তোলা কোনো গণতান্ত্রিক দলের কাম্য হতে পারে না। এক দফা আদায় না করে নির্বাচনে যাওয়া যাবে না, এটা তো পরাজয়ের দিকে টানবে। পরিণতিতে তৈরি হবে হতাশা।
গণ-অভ্যুত্থানের খোয়াব না দেখে নীরব ভোটবিপ্লবের কৌশলে যাওয়াই বোধ হয় ভালো পথ। কারণ ভোট ছাড়া ক্ষমতায় যাওয়ার গণতান্ত্রিক কোনো উপায় নেই। আর শেষ বিচারে ভোট কিন্তু দেবে ব্যক্তি নিজে। তার চাওয়া, পাওয়া, আশা, ভয়, এত দিনের দুর্বিনীত আচরণ—সবকিছুই তার ছাপের মধ্যে পড়বে। বাইডেন বা হাস কিংবা মোদি বা মিলার এসে ভোট দিয়ে যাবেন না। নিজেকেই সেই কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে হবে।
কেউ কেউ মনে করছেন, দেশের রাজনীতির বড় দুই পক্ষের কেউই দেয়ালের লেখা পড়েন না। দীর্ঘদিন যাঁরা ক্ষমতায় আছেন, তাঁদেরও আয়নার সামনে দাঁড়াতে হবে। দেশ থেকে অর্থ পাচারকারী, ব্যাংক লুটপাটকারী ও সিন্ডিকেট করে জিনিসপত্রের দাম যারা বাড়ায়, তারাই যদি আবারও সামনে এসে দাঁড়ায়, নীরব ভোটবিপ্লব হয়ে যাবে। তাই গলা কাঁপানো জাঁদরেল নেতা বা হুংকার দেওয়া নিপীড়নকারী স্থানীয় নেতাদেরও কিছুটা দূরে সরিয়ে দিতে হবে। এটা করতে গেলেও হয়তো কিছু ষড়যন্ত্র হবে, বিদ্রোহ হবে। সেটাও মোকাবিলা করতে হবে। কারও জন্যই পথ খুব মসৃণ নয়।
খুব সতর্কভাবে না এগোলে কয়েক দশকের বিশাল সব অর্জন, সব সম্ভাবনা বিলীন হয়ে যাবে।
শেষ আরেকটি কথা, রিমোট কন্ট্রোল দিয়ে টিভি চলে, এসি চলে কিন্তু রিমোটে আন্দোলন বা নির্বাচন চলে না। এর সঙ্গে মানুষ যুক্ত, তার জীবন যুক্ত, তার মন-মানসিকতা যুক্ত। সেটা কি আর রিমোটে হয়?
বিভুরঞ্জন সরকার

রাজনীতির আকাশের রং কি বদলাচ্ছে? কালো মেঘের আনাগোনা কি বাড়ছে? বিদেশে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা ও দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রশ্নে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও ক্ষমতাপ্রত্যাশী বিএনপির মধ্যে একধরনের ঠান্ডা লড়াই অনেক দিন ধরেই চলছে। এখন কেউ কেউ আশঙ্কা করছেন, এই ঠান্ডা লড়াই বুঝি গরম হাওয়ায় রূপ নিতে চলেছে। দুই দল বিভিন্ন ইস্যুতে বাহাস করছে। কেউ কাউকে সামান্য ছাড় দেওয়ার মনোভাব দেখাচ্ছে না। একে অপরের বিরুদ্ধে শব্দবোমা নিক্ষেপ করেই চলেছে। অবশ্য বিএনপির নিক্ষেপ করা শব্দবোমা আওয়ামী লীগ তেমন গায়ে মাখছে না। হয়তো এগুলো মেয়াদোত্তীর্ণ অথবা ভেজা, তাই বিস্ফোরণ ঘটছে না।
বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, অক্টোবর মাসের মধ্যে তারা এক দফা দাবি তথা সরকারের পতন ঘটিয়ে ছাড়বে। অক্টোবর মাস শুরু হয়েছে। সরকার পতনের মতো গণ-অভ্যুত্থান বা ওলট-পালট রাজনৈতিক হাওয়া বইতে দেখা যাচ্ছে না। বিএনপির হুংকার বা হুমকি-ধমকি সম্পর্কে এখন সাধারণ ধারণা এমন যে এই দলটির গর্জন আছে, বর্ষণ তেমন হয় না।
এই তো গত ২৪ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়ার মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর দাবিতে আয়োজিত সমাবেশে ‘কেঁদেকেটে’ আবেগ ছড়িয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছিলেন, হাসপাতালের চিকিৎসকেরা বলেছেন আপনাদের কিছু করার থাকলে করেন। খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা ভালো নয়। অবিলম্বে বিদেশে নিয়ে উন্নত চিকিৎসা দিতে না পারলে বাঁচানো দুষ্কর হবে।
এ সময় সরকারকে আলটিমেটাম দিয়ে ফখরুল বলেন, ‘আমাদের নেত্রী জীবন-মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তাঁকে বাইরে চিকিৎসার ব্যবস্থা করুন, অন্যথায় এর সমস্ত দায়দায়িত্ব এই সরকারকেই নিতে হবে।’
৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম শেষ হয়েছে, খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার আবেদন নাকচ করে তাঁকে জেলে গিয়ে আবার আদালতে আবেদন করার কথা জানিয়েছে সরকার।
এ নিয়েও দুই দলের মধ্যে চলছে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য। সরকারপক্ষ বলছে, আইন অনুযায়ী এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে বিএনপি বলছে, খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার ক্ষেত্রে বিএনপিকে শেখ হাসিনা সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচনে যাওয়ার শর্ত দেওয়া হয়েছিল। খালেদা জিয়া সেই শর্ত না মানায় তাঁকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়নি।
খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার ক্ষেত্রে বিএনপিকে নির্বাচনে যাওয়ার শর্তের কথা নাকচ করেছে সরকার। এ প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, ‘বাজে কথা, ভুয়া কথা। এ ধরনের প্রস্তাবনা কেউ কাউকে দিয়েছে কি না, তা আমার জানা নেই। প্রধানমন্ত্রী আইনের বাইরে কোনো কথা বলেননি। খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রে আইন অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
লিভারের জটিলতা ছাড়াও ৭৮ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ফুসফুস, কিডনি, হৃদ্রোগ, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন সমস্যা রয়েছে। গত ৯ আগস্ট গুলশানের বাসা ফিরোজায় গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্তে তাঁকে বসুন্ধরার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই হাসপাতালেই এখনো তিনি চিকিৎসাধীন। বর্তমানে করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে ১৯ সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ড তাঁকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখে চিকিৎসা দিচ্ছে।
গত ২৫ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার বোনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার অনুমতি চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেন। এরপর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ আবেদন মতামতের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। রোববার খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার আবেদন নাকচ করে আইন মন্ত্রণালয় জানায়, বিদেশে যেতে হলে খালেদা জিয়াকে জেলে গিয়ে আবার আদালতে আবেদন করতে হবে; কিন্তু বিদেশে পাঠানোর অনুমতির জন্য আদালতে যেতে রাজি নয় খালেদা জিয়ার পরিবার ও বিএনপি। বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের দাবি, সরকার চাইলে সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে নির্বাহী আদেশে মুক্তি দিয়ে বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ করে দিতে পারে।
সরকার কেন এটা চাইবে, সে প্রশ্নটাই এখন বড় হয়ে আসছে। বিএনপি বা খালেদা জিয়ার সরকারের মিত্রপক্ষ নয়। তা ছাড়া দুটি দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত হয়ে জেলে যাওয়ার পর থেকেই খালেদা জিয়ার অসুস্থতা ও চিকিৎসা নিয়ে বিএনপি কম রাজনীতি করেনি। একাধিক বার বলা হয়েছে যে খালেদা জিয়ার অবস্থা সংকটাপন্ন। বিদেশে না নিলে তিনি সুস্থ হয়ে উঠবেন না। বিদেশে যাওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় না নিলেও সরকারের নির্বাহী আদেশে দণ্ড স্থগিত করে জেলের বাইরে, অর্থাৎ বাসায় থেকে চিকিৎসার সুযোগ তাঁকে দেওয়া হয়েছে। এটা সরকারের একধরনের উদারতা বৈকি!
এখন যদি খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য পাঠাতে হয়, তাহলে সরকারের সঙ্গে কোনো সমঝোতা না করে কি সেটা সম্ভব? আমাদের দেশের যে রাজনৈতিক বাস্তবতা এবং সরকার ও বিরোধী দলের মধ্যে যে অহিনকুল সম্পর্ক, তাতে আদালতে সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে মানবিকতা দেখাতে বললে নিজেদেরও তো কিছুটা মানবিকতা দেখানো উচিত নয় কি? সম্পর্ক বা সদ্ভাব বিষয়টি তো ওয়ান ওয়ে ট্রাফিকের মতো নয়। দুই পক্ষেরই নমনীয়তা থাকতে হয়, ছাড় দেওয়ার মানসিকতা থাকতে হয়। বিএনপি সরকার বা আওয়ামী লীগের কাছে নমনীয়তা ও মানবিক আচরণ প্রত্যাশা করে, কিন্তু নিজেরা থাকবে অনমনীয়।
বিএনপি আওয়ামী লীগ সরকারকে অবৈধ বা দখলদার সরকার বলছে। এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে না যাওয়ার নীতি নিয়েছে। সরকার পতনের লক্ষ্য ঠিক করেছে। বলা হচ্ছে, অক্টোবর মাসের মধ্যেই নাকি সরকারের পতন ঘটবে। এমনও বলা হচ্ছে, সরকারদলীয় লোকদের দেশছাড়া করা হবে, তারা নাকি পালানোর পথও পাবে না।
সত্যি কি আওয়ামী লীগ সরকার একেবারেই জনবিচ্ছিন্ন? এই সরকারের পায়ের নিচে মাটি নেই?
দেশের রাজনীতিতে এখন চলছে চরমভাবে নীতিহীনতার চর্চা। এ অবস্থায় ‘নীতিকথা’ বলে বা নীতিগত অবস্থানের দোহাই দিয়ে কোনো পক্ষই সুবিধা নিতে পারবে বলে মনে হয় না। বিএনপি যদি দলীয় নেত্রীকে সত্যি শ্রদ্ধা করে, তাঁর স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বিগ্ন থাকে, তাহলে সরকারের সঙ্গে একটি সমঝোতায় না এসে উপায় কী? বিএনপির এক দফার আন্দোলনের সঙ্গে এখন যদি সরকারপক্ষ খালেদা জিয়ার মুক্তি ও চিকিৎসা ইস্যুটি সম্পৃক্ত করতে চায়, তাহলে খুব দোষ দেওয়া যাবে কি?
এবার আসা যাক, বিএনপির গণ-অভ্যুত্থান বা সরকার পতনের আন্দোলন প্রসঙ্গে। এর আগে বহুবার বিএনপি দিন-তারিখ দিয়েছে কিন্তু তাতে কাজ হয়নি। এটা মনে রাখতে হবে, গণ-অভ্যুত্থান কখনো দিন-তারিখ দিয়ে হয় না। হয় না কোনো নেতা বা দলের ডাকেও। মানুষের ভেতরে তীব্র ঘৃণা, রাগ, অসন্তোষ, আক্রোশ জমা না হলে জীবনপণ করে কেন সরকারের বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়বে? আওয়ামী লীগ সরকার যতই অজনপ্রিয় হোক না কেন, মনে রাখতে হবে প্রায় প্রতিটি পরিবারেই আওয়ামী লীগের সমর্থক আছে। যদি আওয়ামী লীগের সমর্থক না-ও থাকে, তাহলে আছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি ভালোবাসার মানুষ। তা ছাড়া শাসক হিসেবে শেখ হাসিনার চেয়ে অন্য কোনো নেতাকে বোধ হয় দেশের মানুষ এখনো এগিয়ে রাখছে না।
এই রাজনৈতিক বাস্তবতায় অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে দেশে গণ-অভ্যুত্থান হয়ে যাবে, এটা কি বিশ্বাসযোগ্য মনে হয়? দলীয় জাগরণ হতে পারে, সভা-সমাবেশ বড় হতে পারে, দলীয় কর্মীরা চাঙা হতে পারে এবং তা হয়তো হচ্ছেও। কিন্তু বিএনপি তো এটাকেও কাজে লাগাতে পারছে না। মানুষকে নির্বাচনমুখী না করে মারমুখী করে তোলা কোনো গণতান্ত্রিক দলের কাম্য হতে পারে না। এক দফা আদায় না করে নির্বাচনে যাওয়া যাবে না, এটা তো পরাজয়ের দিকে টানবে। পরিণতিতে তৈরি হবে হতাশা।
গণ-অভ্যুত্থানের খোয়াব না দেখে নীরব ভোটবিপ্লবের কৌশলে যাওয়াই বোধ হয় ভালো পথ। কারণ ভোট ছাড়া ক্ষমতায় যাওয়ার গণতান্ত্রিক কোনো উপায় নেই। আর শেষ বিচারে ভোট কিন্তু দেবে ব্যক্তি নিজে। তার চাওয়া, পাওয়া, আশা, ভয়, এত দিনের দুর্বিনীত আচরণ—সবকিছুই তার ছাপের মধ্যে পড়বে। বাইডেন বা হাস কিংবা মোদি বা মিলার এসে ভোট দিয়ে যাবেন না। নিজেকেই সেই কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে হবে।
কেউ কেউ মনে করছেন, দেশের রাজনীতির বড় দুই পক্ষের কেউই দেয়ালের লেখা পড়েন না। দীর্ঘদিন যাঁরা ক্ষমতায় আছেন, তাঁদেরও আয়নার সামনে দাঁড়াতে হবে। দেশ থেকে অর্থ পাচারকারী, ব্যাংক লুটপাটকারী ও সিন্ডিকেট করে জিনিসপত্রের দাম যারা বাড়ায়, তারাই যদি আবারও সামনে এসে দাঁড়ায়, নীরব ভোটবিপ্লব হয়ে যাবে। তাই গলা কাঁপানো জাঁদরেল নেতা বা হুংকার দেওয়া নিপীড়নকারী স্থানীয় নেতাদেরও কিছুটা দূরে সরিয়ে দিতে হবে। এটা করতে গেলেও হয়তো কিছু ষড়যন্ত্র হবে, বিদ্রোহ হবে। সেটাও মোকাবিলা করতে হবে। কারও জন্যই পথ খুব মসৃণ নয়।
খুব সতর্কভাবে না এগোলে কয়েক দশকের বিশাল সব অর্জন, সব সম্ভাবনা বিলীন হয়ে যাবে।
শেষ আরেকটি কথা, রিমোট কন্ট্রোল দিয়ে টিভি চলে, এসি চলে কিন্তু রিমোটে আন্দোলন বা নির্বাচন চলে না। এর সঙ্গে মানুষ যুক্ত, তার জীবন যুক্ত, তার মন-মানসিকতা যুক্ত। সেটা কি আর রিমোটে হয়?

রাজনীতির আকাশের রং কি বদলাচ্ছে? কালো মেঘের আনাগোনা কি বাড়ছে? বিদেশে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা ও দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রশ্নে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও ক্ষমতাপ্রত্যাশী বিএনপির মধ্যে একধরনের ঠান্ডা লড়াই অনেক দিন ধরেই চলছে। এখন কেউ কেউ আশঙ্কা করছেন, এই ঠান্ডা লড়াই বুঝি গরম হাওয়ায় রূপ নিতে চলেছে। দুই দল বিভিন্ন ইস্যুতে বাহাস করছে। কেউ কাউকে সামান্য ছাড় দেওয়ার মনোভাব দেখাচ্ছে না। একে অপরের বিরুদ্ধে শব্দবোমা নিক্ষেপ করেই চলেছে। অবশ্য বিএনপির নিক্ষেপ করা শব্দবোমা আওয়ামী লীগ তেমন গায়ে মাখছে না। হয়তো এগুলো মেয়াদোত্তীর্ণ অথবা ভেজা, তাই বিস্ফোরণ ঘটছে না।
বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, অক্টোবর মাসের মধ্যে তারা এক দফা দাবি তথা সরকারের পতন ঘটিয়ে ছাড়বে। অক্টোবর মাস শুরু হয়েছে। সরকার পতনের মতো গণ-অভ্যুত্থান বা ওলট-পালট রাজনৈতিক হাওয়া বইতে দেখা যাচ্ছে না। বিএনপির হুংকার বা হুমকি-ধমকি সম্পর্কে এখন সাধারণ ধারণা এমন যে এই দলটির গর্জন আছে, বর্ষণ তেমন হয় না।
এই তো গত ২৪ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়ার মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর দাবিতে আয়োজিত সমাবেশে ‘কেঁদেকেটে’ আবেগ ছড়িয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছিলেন, হাসপাতালের চিকিৎসকেরা বলেছেন আপনাদের কিছু করার থাকলে করেন। খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা ভালো নয়। অবিলম্বে বিদেশে নিয়ে উন্নত চিকিৎসা দিতে না পারলে বাঁচানো দুষ্কর হবে।
এ সময় সরকারকে আলটিমেটাম দিয়ে ফখরুল বলেন, ‘আমাদের নেত্রী জীবন-মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তাঁকে বাইরে চিকিৎসার ব্যবস্থা করুন, অন্যথায় এর সমস্ত দায়দায়িত্ব এই সরকারকেই নিতে হবে।’
৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম শেষ হয়েছে, খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার আবেদন নাকচ করে তাঁকে জেলে গিয়ে আবার আদালতে আবেদন করার কথা জানিয়েছে সরকার।
এ নিয়েও দুই দলের মধ্যে চলছে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য। সরকারপক্ষ বলছে, আইন অনুযায়ী এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে বিএনপি বলছে, খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার ক্ষেত্রে বিএনপিকে শেখ হাসিনা সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচনে যাওয়ার শর্ত দেওয়া হয়েছিল। খালেদা জিয়া সেই শর্ত না মানায় তাঁকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়নি।
খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার ক্ষেত্রে বিএনপিকে নির্বাচনে যাওয়ার শর্তের কথা নাকচ করেছে সরকার। এ প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, ‘বাজে কথা, ভুয়া কথা। এ ধরনের প্রস্তাবনা কেউ কাউকে দিয়েছে কি না, তা আমার জানা নেই। প্রধানমন্ত্রী আইনের বাইরে কোনো কথা বলেননি। খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রে আইন অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
লিভারের জটিলতা ছাড়াও ৭৮ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ফুসফুস, কিডনি, হৃদ্রোগ, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন সমস্যা রয়েছে। গত ৯ আগস্ট গুলশানের বাসা ফিরোজায় গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্তে তাঁকে বসুন্ধরার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই হাসপাতালেই এখনো তিনি চিকিৎসাধীন। বর্তমানে করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে ১৯ সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ড তাঁকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখে চিকিৎসা দিচ্ছে।
গত ২৫ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার বোনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার অনুমতি চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেন। এরপর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ আবেদন মতামতের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। রোববার খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার আবেদন নাকচ করে আইন মন্ত্রণালয় জানায়, বিদেশে যেতে হলে খালেদা জিয়াকে জেলে গিয়ে আবার আদালতে আবেদন করতে হবে; কিন্তু বিদেশে পাঠানোর অনুমতির জন্য আদালতে যেতে রাজি নয় খালেদা জিয়ার পরিবার ও বিএনপি। বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের দাবি, সরকার চাইলে সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে নির্বাহী আদেশে মুক্তি দিয়ে বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ করে দিতে পারে।
সরকার কেন এটা চাইবে, সে প্রশ্নটাই এখন বড় হয়ে আসছে। বিএনপি বা খালেদা জিয়ার সরকারের মিত্রপক্ষ নয়। তা ছাড়া দুটি দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত হয়ে জেলে যাওয়ার পর থেকেই খালেদা জিয়ার অসুস্থতা ও চিকিৎসা নিয়ে বিএনপি কম রাজনীতি করেনি। একাধিক বার বলা হয়েছে যে খালেদা জিয়ার অবস্থা সংকটাপন্ন। বিদেশে না নিলে তিনি সুস্থ হয়ে উঠবেন না। বিদেশে যাওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় না নিলেও সরকারের নির্বাহী আদেশে দণ্ড স্থগিত করে জেলের বাইরে, অর্থাৎ বাসায় থেকে চিকিৎসার সুযোগ তাঁকে দেওয়া হয়েছে। এটা সরকারের একধরনের উদারতা বৈকি!
এখন যদি খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য পাঠাতে হয়, তাহলে সরকারের সঙ্গে কোনো সমঝোতা না করে কি সেটা সম্ভব? আমাদের দেশের যে রাজনৈতিক বাস্তবতা এবং সরকার ও বিরোধী দলের মধ্যে যে অহিনকুল সম্পর্ক, তাতে আদালতে সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে মানবিকতা দেখাতে বললে নিজেদেরও তো কিছুটা মানবিকতা দেখানো উচিত নয় কি? সম্পর্ক বা সদ্ভাব বিষয়টি তো ওয়ান ওয়ে ট্রাফিকের মতো নয়। দুই পক্ষেরই নমনীয়তা থাকতে হয়, ছাড় দেওয়ার মানসিকতা থাকতে হয়। বিএনপি সরকার বা আওয়ামী লীগের কাছে নমনীয়তা ও মানবিক আচরণ প্রত্যাশা করে, কিন্তু নিজেরা থাকবে অনমনীয়।
বিএনপি আওয়ামী লীগ সরকারকে অবৈধ বা দখলদার সরকার বলছে। এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে না যাওয়ার নীতি নিয়েছে। সরকার পতনের লক্ষ্য ঠিক করেছে। বলা হচ্ছে, অক্টোবর মাসের মধ্যেই নাকি সরকারের পতন ঘটবে। এমনও বলা হচ্ছে, সরকারদলীয় লোকদের দেশছাড়া করা হবে, তারা নাকি পালানোর পথও পাবে না।
সত্যি কি আওয়ামী লীগ সরকার একেবারেই জনবিচ্ছিন্ন? এই সরকারের পায়ের নিচে মাটি নেই?
দেশের রাজনীতিতে এখন চলছে চরমভাবে নীতিহীনতার চর্চা। এ অবস্থায় ‘নীতিকথা’ বলে বা নীতিগত অবস্থানের দোহাই দিয়ে কোনো পক্ষই সুবিধা নিতে পারবে বলে মনে হয় না। বিএনপি যদি দলীয় নেত্রীকে সত্যি শ্রদ্ধা করে, তাঁর স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বিগ্ন থাকে, তাহলে সরকারের সঙ্গে একটি সমঝোতায় না এসে উপায় কী? বিএনপির এক দফার আন্দোলনের সঙ্গে এখন যদি সরকারপক্ষ খালেদা জিয়ার মুক্তি ও চিকিৎসা ইস্যুটি সম্পৃক্ত করতে চায়, তাহলে খুব দোষ দেওয়া যাবে কি?
এবার আসা যাক, বিএনপির গণ-অভ্যুত্থান বা সরকার পতনের আন্দোলন প্রসঙ্গে। এর আগে বহুবার বিএনপি দিন-তারিখ দিয়েছে কিন্তু তাতে কাজ হয়নি। এটা মনে রাখতে হবে, গণ-অভ্যুত্থান কখনো দিন-তারিখ দিয়ে হয় না। হয় না কোনো নেতা বা দলের ডাকেও। মানুষের ভেতরে তীব্র ঘৃণা, রাগ, অসন্তোষ, আক্রোশ জমা না হলে জীবনপণ করে কেন সরকারের বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়বে? আওয়ামী লীগ সরকার যতই অজনপ্রিয় হোক না কেন, মনে রাখতে হবে প্রায় প্রতিটি পরিবারেই আওয়ামী লীগের সমর্থক আছে। যদি আওয়ামী লীগের সমর্থক না-ও থাকে, তাহলে আছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি ভালোবাসার মানুষ। তা ছাড়া শাসক হিসেবে শেখ হাসিনার চেয়ে অন্য কোনো নেতাকে বোধ হয় দেশের মানুষ এখনো এগিয়ে রাখছে না।
এই রাজনৈতিক বাস্তবতায় অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে দেশে গণ-অভ্যুত্থান হয়ে যাবে, এটা কি বিশ্বাসযোগ্য মনে হয়? দলীয় জাগরণ হতে পারে, সভা-সমাবেশ বড় হতে পারে, দলীয় কর্মীরা চাঙা হতে পারে এবং তা হয়তো হচ্ছেও। কিন্তু বিএনপি তো এটাকেও কাজে লাগাতে পারছে না। মানুষকে নির্বাচনমুখী না করে মারমুখী করে তোলা কোনো গণতান্ত্রিক দলের কাম্য হতে পারে না। এক দফা আদায় না করে নির্বাচনে যাওয়া যাবে না, এটা তো পরাজয়ের দিকে টানবে। পরিণতিতে তৈরি হবে হতাশা।
গণ-অভ্যুত্থানের খোয়াব না দেখে নীরব ভোটবিপ্লবের কৌশলে যাওয়াই বোধ হয় ভালো পথ। কারণ ভোট ছাড়া ক্ষমতায় যাওয়ার গণতান্ত্রিক কোনো উপায় নেই। আর শেষ বিচারে ভোট কিন্তু দেবে ব্যক্তি নিজে। তার চাওয়া, পাওয়া, আশা, ভয়, এত দিনের দুর্বিনীত আচরণ—সবকিছুই তার ছাপের মধ্যে পড়বে। বাইডেন বা হাস কিংবা মোদি বা মিলার এসে ভোট দিয়ে যাবেন না। নিজেকেই সেই কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে হবে।
কেউ কেউ মনে করছেন, দেশের রাজনীতির বড় দুই পক্ষের কেউই দেয়ালের লেখা পড়েন না। দীর্ঘদিন যাঁরা ক্ষমতায় আছেন, তাঁদেরও আয়নার সামনে দাঁড়াতে হবে। দেশ থেকে অর্থ পাচারকারী, ব্যাংক লুটপাটকারী ও সিন্ডিকেট করে জিনিসপত্রের দাম যারা বাড়ায়, তারাই যদি আবারও সামনে এসে দাঁড়ায়, নীরব ভোটবিপ্লব হয়ে যাবে। তাই গলা কাঁপানো জাঁদরেল নেতা বা হুংকার দেওয়া নিপীড়নকারী স্থানীয় নেতাদেরও কিছুটা দূরে সরিয়ে দিতে হবে। এটা করতে গেলেও হয়তো কিছু ষড়যন্ত্র হবে, বিদ্রোহ হবে। সেটাও মোকাবিলা করতে হবে। কারও জন্যই পথ খুব মসৃণ নয়।
খুব সতর্কভাবে না এগোলে কয়েক দশকের বিশাল সব অর্জন, সব সম্ভাবনা বিলীন হয়ে যাবে।
শেষ আরেকটি কথা, রিমোট কন্ট্রোল দিয়ে টিভি চলে, এসি চলে কিন্তু রিমোটে আন্দোলন বা নির্বাচন চলে না। এর সঙ্গে মানুষ যুক্ত, তার জীবন যুক্ত, তার মন-মানসিকতা যুক্ত। সেটা কি আর রিমোটে হয়?

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

রাজনীতির আকাশের রং কি বদলাচ্ছে? কালো মেঘের আনাগোনা কি বাড়ছে? বিদেশে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা ও দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রশ্নে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও ক্ষমতাপ্রত্যাশী বিএনপির মধ্যে একধরনের ঠান্ডা লড়াই অনেক দিন ধরেই চলছে। এখন
০৪ অক্টোবর ২০২৩
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

রাজনীতির আকাশের রং কি বদলাচ্ছে? কালো মেঘের আনাগোনা কি বাড়ছে? বিদেশে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা ও দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রশ্নে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও ক্ষমতাপ্রত্যাশী বিএনপির মধ্যে একধরনের ঠান্ডা লড়াই অনেক দিন ধরেই চলছে। এখন
০৪ অক্টোবর ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

রাজনীতির আকাশের রং কি বদলাচ্ছে? কালো মেঘের আনাগোনা কি বাড়ছে? বিদেশে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা ও দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রশ্নে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও ক্ষমতাপ্রত্যাশী বিএনপির মধ্যে একধরনের ঠান্ডা লড়াই অনেক দিন ধরেই চলছে। এখন
০৪ অক্টোবর ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

রাজনীতির আকাশের রং কি বদলাচ্ছে? কালো মেঘের আনাগোনা কি বাড়ছে? বিদেশে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা ও দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রশ্নে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও ক্ষমতাপ্রত্যাশী বিএনপির মধ্যে একধরনের ঠান্ডা লড়াই অনেক দিন ধরেই চলছে। এখন
০৪ অক্টোবর ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫