হাসান মামুন

গত মে মাসে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের জন্য ভিসা নীতি ঘোষণার পর থেকেই সংশ্লিষ্ট মহলগুলোয় একটা দুশ্চিন্তা ভর করেছে। সেটা আতঙ্কে রূপ নিচ্ছে বলেই মনে হয়। এ বিষয়ে আজকের পত্রিকা ও একটি বিজনেস ডেইলিতে সম্প্রতি প্রকাশিত দুটি প্রতিবেদনের উল্লেখ করব।
আজকের পত্রিকায় ১২ আগস্ট প্রকাশিত প্রতিবেদনের শিরোনাম, ‘ভোট-নিষেধাজ্ঞায় ফিসফাস জনপ্রশাসনে’। এর দুদিন আগে অন্য পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনের শিরোনাম, ‘মার্কিন নিষেধাজ্ঞা ও জব্দ আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে ব্যবসায়ীদের মধ্যে’। দুটি প্রতিবেদনই বেরিয়েছে প্রথম পৃষ্ঠায়। সেগুলোর প্রাসঙ্গিক অংশটুকু নিবন্ধের শেষে ব্যবহার করব।
বিশেষ ভিসা নীতি ঘোষণার বেশ কয়েক মাস আগে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়োজিত এলিট ফোর্স এবং তার কয়েকজন সিনিয়র কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগেই ওই নিষেধাজ্ঞা আসে। আগে দেশের ভেতর থেকে যে এ নিয়ে কোনো প্রতিবাদ তোলা হয়নি, তা কিন্তু নয়। সেটা কেবল বিরোধী দলের তরফ থেকে তোলা হয়েছে, তা-ও নয়।
মানবাধিকার সংগঠন, ভুক্তভোগী পরিবার এবং তারপর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা থেকেও বারবার বক্তব্য দেওয়া হয়েছে। চেষ্টা করা হয়েছে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণের। ন্যায়সংগত প্রতিবাদ রচনাও এখানে সহজ নয়। রীতিমতো আইন করে সেটা নিয়ন্ত্রণের বাড়তি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগমুহূর্তে। সেটাও অবশ্য সম্প্রতি ‘বাতিলের’ ঘোষণা দিয়েছে সরকার। এর জায়গায় নতুন কী আইন প্রণীত হবে, তা নিয়ে অবশ্য প্রশ্ন আছে। আছে সন্দেহ-অবিশ্বাস।
এ রকম একটা জায়গায় আমরা পৌঁছে গেছি দুর্ভাগ্যবশত। আইন আদৌ জনস্বার্থে প্রণীত হবে কি না, সেটা নিয়ে সন্দেহের জায়গা তৈরি হয়েছে অভিজ্ঞতার কারণেই। এটা আরও এ জন্য যে, সরকার বা এর কোনো সংস্থার কাজে দেশের ভেতর থেকে আপত্তি উঠলেও তা গুরুত্ব পায় না। সেটা ঠিকই গুরুত্বপূর্ণ, অনেক ক্ষেত্রে অলঙ্ঘনীয় হয়ে ওঠে বাইরে থেকে ‘চাপ’ হিসেবে এলে।
সরকার অবশ্য প্রায়ই বলে থাকে, তারা কোনো ‘চাপ অনুভব’ করছে না। তবে আমরা দেখেছি, এলিট ফোর্সের ওপর নিষেধাজ্ঞা আসার পর তার বিরুদ্ধে ক্রসফায়ারসহ আইনবহির্ভূত পদক্ষেপ গ্রহণের অভিযোগ অনেক কমে এসেছে। সম্প্রতি বিরোধী দলের এক দফার আন্দোলন মোকাবিলায়ও তাদের রাজপথে সক্রিয় দেখা যাচ্ছে না।
পুলিশ ও ক্ষমতাসীন দলের কর্মীদের দিয়ে যেভাবে এটা মোকাবিলার চেষ্টা হচ্ছে, তা নিয়েও জোর আপত্তি এসেছে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় থেকে। এতেও পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে আশা করা যায়।
কথা হলো, কেন আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডল থেকে ‘চাপ’ আসতে হবে? দেশের ভেতর থেকে ওঠা প্রতিবাদ কেন ‘চাপ’ বলে বিবেচিত হবে না? কোন ক্ষেত্রে কীভাবে কী করতে হবে প্রশাসনকে–সেই নির্দেশনা কি দেশের আইন আর বিধিবিধানে নেই? কার্যত সেগুলোর কত শতাংশ অনুসৃত হচ্ছে, সে প্রশ্ন সংগত কারণেই ওঠে।
এলিট ফোর্সের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথাটা তোলা হলো এটা বলতে যে তখন থেকেই স্পষ্টভাবে ‘চাপ’ আসতে শুরু করেছে—এখন পর্যন্ত বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী দেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে। যে সংকট সৃষ্টি হয়েছে, বিশেষত রাজনৈতিক অঙ্গনে, সেখান থেকে বেরোতে তখন থেকেই সরকারের উচিত ছিল সিরিয়াস হওয়া। এটা যে শুধু মানবাধিকার পরিস্থিতি উন্নয়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, তা উপলব্ধি করে উচিত ছিল আগামী নির্বাচনটি গ্রহণযোগ্যভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে সব অংশীজনকে একটা বিশ্বাসযোগ্য প্রক্রিয়ায় নিয়ে আসা। নির্বাচনটি যে এবার ‘অংশগ্রহণমূলক’ করতেই হবে, সে উপলব্ধি আসা দরকার ছিল প্রথম নিষেধাজ্ঞা জারির ঘটনাতেই। তা হয়নি।
হলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী হিসেবে পুলিশের কাজের ধারায়ও পরিবর্তন আসত। তাহলে বিরোধী দলের আন্দোলন মোকাবিলায় তাকে কীভাবে কী করতে হবে, সে ‘নির্দেশনা’ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় থেকে আসার প্রয়োজন হতো না এত দিন পর। বিরোধী দলের কর্মসূচির দিন নিয়ম করে পাল্টা কর্মসূচি দিয়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করার চেষ্টাও মনে হয় এখন বাদ দিতে হবে। অথচ এর সবই দেশের ভেতর থেকে অব্যাহতভাবে বলা হয়েছে এত দিন। বিরোধী দল তো একনাগাড়ে প্রতিবাদ জানিয়ে গেছে। অতীতে ক্ষমতায় থাকতে তারাও কমবেশি একইভাবে প্রশাসন ও দল পরিচালনা করেছিল বলে তাদের ওপর চলমান এ অন্যায়কে তো সঠিক বলা যায় না।
বিশেষ করে ভিসা নীতি ঘোষণার সময় প্রথমদিকে যা-ই বলা হোক, ক্রমে বোঝা যাচ্ছে–এতে সরকার ও প্রশাসনের ওপর ‘চাপ’ বেড়েছে কতটা। নির্বাচনের বেশ কয়েক মাস আগে এ ধরনের নীতি ঘোষণায় বুঝতে কষ্ট হয় না, যুক্তরাষ্ট্র এখানে কেমন নির্বাচন চায়। তাদের চাওয়াটা অবশ্য এত গুরুত্ব পেত না, যদি এ দেশের সিংহভাগ মানুষের প্রত্যাশার সঙ্গে সেটা না যেত।
সংবিধানেও কি দেশের সকল পর্যায়ে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের ওপর জোর দেওয়া হয়নি? সত্যি বলতে, দু-দুটি অগ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচনের পর স্থানীয় পর্যায়েও নির্বাচনব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। পেশাজীবী সংগঠনেও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন হয় না বললেই চলে। রাষ্ট্র ও সমাজে এর বহুমুখী ক্ষতিকর প্রভাবের কথা কে অস্বীকার করতে পারে? রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোও এতে অবক্ষয়ের শিকার হয়ে পড়েছে।
সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জনপ্রশাসন। পুলিশও এর বাইরে নয়। এ প্রেক্ষাপটেই দেখতে হবে আজকের পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনটি। প্রশাসনের উচ্চপর্যায়ে ভিসা নীতির আওতায় পড়ে যাওয়ার বিষয়ে ‘অস্বস্তি’ শুরুর খবর অবশ্য এর আগেও এসেছে মিডিয়ায়। তবে আলোচ্য প্রতিবেদনে সুনির্দিষ্ট ঘটনার উল্লেখ রয়েছে।
একজন পদস্থ কর্মকর্তা মার্কিন দূতাবাসে ভিসা চাইতে গেলে তাঁকে দীর্ঘ সময় যেভাবে জেরা করা হয়, তাতে তিনি রীতিমতো উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। সে ঘটনা বর্ণনা করেছেন সমপর্যায়ের ঘনিষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক ঘরোয়া বৈঠকে; বিশেষ করে ২০১৮ সালের নির্বাচনে প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের যে ভূমিকা পালনের কথা আন্তর্জাতিক পর্যায় পর্যন্ত পৌঁছেছে, তাতে তাঁদের অনেকেরই এমন অভিজ্ঞতার মুখে পড়াটা তো এখন বিচিত্র নয়।
কথা হলো, তাঁদের ওই ধরনের ভূমিকা গ্রহণ কি আইনসম্মত ছিল? যাঁরা তাঁদের ওই ভূমিকা পালনে প্ররোচিত বা বাধ্য করেছিল, তারাও কি সেটা করার অধিকার রাখে? এমন কথা চালু আছে যে ওটা ছিল ‘আসন সমঝোতার’ নির্বাচন। সেটাও হীন রাজনৈতিক বিষয়–যদিও অনেকে বলছে, ওই সমঝোতা কার্যকর করা গেলেও দেশে একটা মোটামুটি জনপ্রতিনিধিত্বমূলক সংসদ পাওয়া যেত।
গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় উত্তরণের সুযোগও হয়তো তৈরি হতো সেই পথ ধরে। এর বদলে কী ঘটেছে, তা আমরা জানি। এখন দেশের ভেতর বিরোধীরা শুরু করেছে এক দফার আন্দোলন। বাইরে থেকে প্রভাবশালী দেশ আর সংস্থার ‘চাপ’ও ক্রমেই বাড়ছে এবং সেটা স্পষ্টতই নির্বাচন ঘিরে।
এই নিবন্ধ লেখার সময় দুই কংগ্রেসম্যান বাংলাদেশ সফরে এসেছেন। দুজন যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান দুই দল থেকে নির্বাচিত হলেও তাঁরা এসেছেন অভিন্ন কাজে। এটা হলো ওই সব দেশের ‘গণতন্ত্রের সৌন্দর্য’, যা থেকে আমরা বেদনাদায়কভাবে বঞ্চিত আছি স্বাধীনতার এত বছর পরও। যা-ই হোক, তাঁরা রোহিঙ্গা ইস্যুতে কাজ করতে এলেও নির্বাচন সম্পর্কে জানা-বোঝারও চেষ্টা করবেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলবেন তাঁরা। এর আগে একটি তাৎপর্যপূর্ণ সফর করে গেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের বৈশ্বিক দুর্নীতি দমন বিভাগের সমন্বয়কারী। আগেভাগে অত বোঝা না গেলেও তাঁর সফর চলাকালে বোঝা গেছে এর গুরুত্ব।
একটি সংবাদপত্রকে দেওয়া সাক্ষাৎকারেও তিনি স্পষ্ট করেছেন, বাংলাদেশে চলমান দুর্নীতি, অর্থ পাচার এবং এ-সংক্রান্ত আইন ও পদক্ষেপ খতিয়ে দেখতেই তিনি এসেছিলেন। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলেও দিয়েছেন তাঁর কাজ সম্পর্কে ধারণা। মূলত এতেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে, বিশেষ করে ক্ষমতার সঙ্গে সম্পর্কিত দুর্নীতিবাজদের মধ্যে।
তাঁরা শুধু ভিসা নিষেধাজ্ঞা নয়; পাচার করা অর্থসম্পদ জব্দ হওয়ার আতঙ্কে খোঁজখবর নিতে শুরু করেছেন—এ বিষয়ে ভালো জানাশোনা আছে, এমন লোকজনের কাছে। সে বিষয়েই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সহযোগী দৈনিক। একটি আলোচিত বিজনেস গ্রুপের বড় অর্থ পাচার-সম্পর্কিত প্রতিবেদনও এসেছে আরেক ইংরেজি দৈনিকে–একই সময়ে। এগুলোর কোনোটাই উদ্দেশ্যহীন বলে মনে হওয়ার কারণ নেই। কিন্তু বেপরোয়া দুর্নীতির মাধ্যমে আত্মসাৎ করা অর্থ পাচার নিয়ে আলোচনা কি হয়নি দেশের মধ্যে? এটা কি নতুন কিছু?
সাবেক অর্থমন্ত্রীও কি জাতীয় সংসদে দাঁড়িয়ে এ বিষয়ে অসহায়ত্ব প্রকাশ করেননি? শেষে আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকেও বলতে হচ্ছে, বিদেশে দুর্নীতিবাজদের সম্পদ জব্দ হলে তিনি বরং খুশি। হায়, ব্যাপারটা যদি ব্যক্তিবিশেষের খুশি আর অখুশির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকত!
লেখক: সাংবাদিক, বিশ্লেষক

গত মে মাসে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের জন্য ভিসা নীতি ঘোষণার পর থেকেই সংশ্লিষ্ট মহলগুলোয় একটা দুশ্চিন্তা ভর করেছে। সেটা আতঙ্কে রূপ নিচ্ছে বলেই মনে হয়। এ বিষয়ে আজকের পত্রিকা ও একটি বিজনেস ডেইলিতে সম্প্রতি প্রকাশিত দুটি প্রতিবেদনের উল্লেখ করব।
আজকের পত্রিকায় ১২ আগস্ট প্রকাশিত প্রতিবেদনের শিরোনাম, ‘ভোট-নিষেধাজ্ঞায় ফিসফাস জনপ্রশাসনে’। এর দুদিন আগে অন্য পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনের শিরোনাম, ‘মার্কিন নিষেধাজ্ঞা ও জব্দ আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে ব্যবসায়ীদের মধ্যে’। দুটি প্রতিবেদনই বেরিয়েছে প্রথম পৃষ্ঠায়। সেগুলোর প্রাসঙ্গিক অংশটুকু নিবন্ধের শেষে ব্যবহার করব।
বিশেষ ভিসা নীতি ঘোষণার বেশ কয়েক মাস আগে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়োজিত এলিট ফোর্স এবং তার কয়েকজন সিনিয়র কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগেই ওই নিষেধাজ্ঞা আসে। আগে দেশের ভেতর থেকে যে এ নিয়ে কোনো প্রতিবাদ তোলা হয়নি, তা কিন্তু নয়। সেটা কেবল বিরোধী দলের তরফ থেকে তোলা হয়েছে, তা-ও নয়।
মানবাধিকার সংগঠন, ভুক্তভোগী পরিবার এবং তারপর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা থেকেও বারবার বক্তব্য দেওয়া হয়েছে। চেষ্টা করা হয়েছে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণের। ন্যায়সংগত প্রতিবাদ রচনাও এখানে সহজ নয়। রীতিমতো আইন করে সেটা নিয়ন্ত্রণের বাড়তি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগমুহূর্তে। সেটাও অবশ্য সম্প্রতি ‘বাতিলের’ ঘোষণা দিয়েছে সরকার। এর জায়গায় নতুন কী আইন প্রণীত হবে, তা নিয়ে অবশ্য প্রশ্ন আছে। আছে সন্দেহ-অবিশ্বাস।
এ রকম একটা জায়গায় আমরা পৌঁছে গেছি দুর্ভাগ্যবশত। আইন আদৌ জনস্বার্থে প্রণীত হবে কি না, সেটা নিয়ে সন্দেহের জায়গা তৈরি হয়েছে অভিজ্ঞতার কারণেই। এটা আরও এ জন্য যে, সরকার বা এর কোনো সংস্থার কাজে দেশের ভেতর থেকে আপত্তি উঠলেও তা গুরুত্ব পায় না। সেটা ঠিকই গুরুত্বপূর্ণ, অনেক ক্ষেত্রে অলঙ্ঘনীয় হয়ে ওঠে বাইরে থেকে ‘চাপ’ হিসেবে এলে।
সরকার অবশ্য প্রায়ই বলে থাকে, তারা কোনো ‘চাপ অনুভব’ করছে না। তবে আমরা দেখেছি, এলিট ফোর্সের ওপর নিষেধাজ্ঞা আসার পর তার বিরুদ্ধে ক্রসফায়ারসহ আইনবহির্ভূত পদক্ষেপ গ্রহণের অভিযোগ অনেক কমে এসেছে। সম্প্রতি বিরোধী দলের এক দফার আন্দোলন মোকাবিলায়ও তাদের রাজপথে সক্রিয় দেখা যাচ্ছে না।
পুলিশ ও ক্ষমতাসীন দলের কর্মীদের দিয়ে যেভাবে এটা মোকাবিলার চেষ্টা হচ্ছে, তা নিয়েও জোর আপত্তি এসেছে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় থেকে। এতেও পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে আশা করা যায়।
কথা হলো, কেন আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডল থেকে ‘চাপ’ আসতে হবে? দেশের ভেতর থেকে ওঠা প্রতিবাদ কেন ‘চাপ’ বলে বিবেচিত হবে না? কোন ক্ষেত্রে কীভাবে কী করতে হবে প্রশাসনকে–সেই নির্দেশনা কি দেশের আইন আর বিধিবিধানে নেই? কার্যত সেগুলোর কত শতাংশ অনুসৃত হচ্ছে, সে প্রশ্ন সংগত কারণেই ওঠে।
এলিট ফোর্সের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথাটা তোলা হলো এটা বলতে যে তখন থেকেই স্পষ্টভাবে ‘চাপ’ আসতে শুরু করেছে—এখন পর্যন্ত বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী দেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে। যে সংকট সৃষ্টি হয়েছে, বিশেষত রাজনৈতিক অঙ্গনে, সেখান থেকে বেরোতে তখন থেকেই সরকারের উচিত ছিল সিরিয়াস হওয়া। এটা যে শুধু মানবাধিকার পরিস্থিতি উন্নয়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, তা উপলব্ধি করে উচিত ছিল আগামী নির্বাচনটি গ্রহণযোগ্যভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে সব অংশীজনকে একটা বিশ্বাসযোগ্য প্রক্রিয়ায় নিয়ে আসা। নির্বাচনটি যে এবার ‘অংশগ্রহণমূলক’ করতেই হবে, সে উপলব্ধি আসা দরকার ছিল প্রথম নিষেধাজ্ঞা জারির ঘটনাতেই। তা হয়নি।
হলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী হিসেবে পুলিশের কাজের ধারায়ও পরিবর্তন আসত। তাহলে বিরোধী দলের আন্দোলন মোকাবিলায় তাকে কীভাবে কী করতে হবে, সে ‘নির্দেশনা’ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় থেকে আসার প্রয়োজন হতো না এত দিন পর। বিরোধী দলের কর্মসূচির দিন নিয়ম করে পাল্টা কর্মসূচি দিয়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করার চেষ্টাও মনে হয় এখন বাদ দিতে হবে। অথচ এর সবই দেশের ভেতর থেকে অব্যাহতভাবে বলা হয়েছে এত দিন। বিরোধী দল তো একনাগাড়ে প্রতিবাদ জানিয়ে গেছে। অতীতে ক্ষমতায় থাকতে তারাও কমবেশি একইভাবে প্রশাসন ও দল পরিচালনা করেছিল বলে তাদের ওপর চলমান এ অন্যায়কে তো সঠিক বলা যায় না।
বিশেষ করে ভিসা নীতি ঘোষণার সময় প্রথমদিকে যা-ই বলা হোক, ক্রমে বোঝা যাচ্ছে–এতে সরকার ও প্রশাসনের ওপর ‘চাপ’ বেড়েছে কতটা। নির্বাচনের বেশ কয়েক মাস আগে এ ধরনের নীতি ঘোষণায় বুঝতে কষ্ট হয় না, যুক্তরাষ্ট্র এখানে কেমন নির্বাচন চায়। তাদের চাওয়াটা অবশ্য এত গুরুত্ব পেত না, যদি এ দেশের সিংহভাগ মানুষের প্রত্যাশার সঙ্গে সেটা না যেত।
সংবিধানেও কি দেশের সকল পর্যায়ে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের ওপর জোর দেওয়া হয়নি? সত্যি বলতে, দু-দুটি অগ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচনের পর স্থানীয় পর্যায়েও নির্বাচনব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। পেশাজীবী সংগঠনেও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন হয় না বললেই চলে। রাষ্ট্র ও সমাজে এর বহুমুখী ক্ষতিকর প্রভাবের কথা কে অস্বীকার করতে পারে? রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোও এতে অবক্ষয়ের শিকার হয়ে পড়েছে।
সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জনপ্রশাসন। পুলিশও এর বাইরে নয়। এ প্রেক্ষাপটেই দেখতে হবে আজকের পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনটি। প্রশাসনের উচ্চপর্যায়ে ভিসা নীতির আওতায় পড়ে যাওয়ার বিষয়ে ‘অস্বস্তি’ শুরুর খবর অবশ্য এর আগেও এসেছে মিডিয়ায়। তবে আলোচ্য প্রতিবেদনে সুনির্দিষ্ট ঘটনার উল্লেখ রয়েছে।
একজন পদস্থ কর্মকর্তা মার্কিন দূতাবাসে ভিসা চাইতে গেলে তাঁকে দীর্ঘ সময় যেভাবে জেরা করা হয়, তাতে তিনি রীতিমতো উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। সে ঘটনা বর্ণনা করেছেন সমপর্যায়ের ঘনিষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক ঘরোয়া বৈঠকে; বিশেষ করে ২০১৮ সালের নির্বাচনে প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের যে ভূমিকা পালনের কথা আন্তর্জাতিক পর্যায় পর্যন্ত পৌঁছেছে, তাতে তাঁদের অনেকেরই এমন অভিজ্ঞতার মুখে পড়াটা তো এখন বিচিত্র নয়।
কথা হলো, তাঁদের ওই ধরনের ভূমিকা গ্রহণ কি আইনসম্মত ছিল? যাঁরা তাঁদের ওই ভূমিকা পালনে প্ররোচিত বা বাধ্য করেছিল, তারাও কি সেটা করার অধিকার রাখে? এমন কথা চালু আছে যে ওটা ছিল ‘আসন সমঝোতার’ নির্বাচন। সেটাও হীন রাজনৈতিক বিষয়–যদিও অনেকে বলছে, ওই সমঝোতা কার্যকর করা গেলেও দেশে একটা মোটামুটি জনপ্রতিনিধিত্বমূলক সংসদ পাওয়া যেত।
গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় উত্তরণের সুযোগও হয়তো তৈরি হতো সেই পথ ধরে। এর বদলে কী ঘটেছে, তা আমরা জানি। এখন দেশের ভেতর বিরোধীরা শুরু করেছে এক দফার আন্দোলন। বাইরে থেকে প্রভাবশালী দেশ আর সংস্থার ‘চাপ’ও ক্রমেই বাড়ছে এবং সেটা স্পষ্টতই নির্বাচন ঘিরে।
এই নিবন্ধ লেখার সময় দুই কংগ্রেসম্যান বাংলাদেশ সফরে এসেছেন। দুজন যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান দুই দল থেকে নির্বাচিত হলেও তাঁরা এসেছেন অভিন্ন কাজে। এটা হলো ওই সব দেশের ‘গণতন্ত্রের সৌন্দর্য’, যা থেকে আমরা বেদনাদায়কভাবে বঞ্চিত আছি স্বাধীনতার এত বছর পরও। যা-ই হোক, তাঁরা রোহিঙ্গা ইস্যুতে কাজ করতে এলেও নির্বাচন সম্পর্কে জানা-বোঝারও চেষ্টা করবেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলবেন তাঁরা। এর আগে একটি তাৎপর্যপূর্ণ সফর করে গেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের বৈশ্বিক দুর্নীতি দমন বিভাগের সমন্বয়কারী। আগেভাগে অত বোঝা না গেলেও তাঁর সফর চলাকালে বোঝা গেছে এর গুরুত্ব।
একটি সংবাদপত্রকে দেওয়া সাক্ষাৎকারেও তিনি স্পষ্ট করেছেন, বাংলাদেশে চলমান দুর্নীতি, অর্থ পাচার এবং এ-সংক্রান্ত আইন ও পদক্ষেপ খতিয়ে দেখতেই তিনি এসেছিলেন। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলেও দিয়েছেন তাঁর কাজ সম্পর্কে ধারণা। মূলত এতেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে, বিশেষ করে ক্ষমতার সঙ্গে সম্পর্কিত দুর্নীতিবাজদের মধ্যে।
তাঁরা শুধু ভিসা নিষেধাজ্ঞা নয়; পাচার করা অর্থসম্পদ জব্দ হওয়ার আতঙ্কে খোঁজখবর নিতে শুরু করেছেন—এ বিষয়ে ভালো জানাশোনা আছে, এমন লোকজনের কাছে। সে বিষয়েই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সহযোগী দৈনিক। একটি আলোচিত বিজনেস গ্রুপের বড় অর্থ পাচার-সম্পর্কিত প্রতিবেদনও এসেছে আরেক ইংরেজি দৈনিকে–একই সময়ে। এগুলোর কোনোটাই উদ্দেশ্যহীন বলে মনে হওয়ার কারণ নেই। কিন্তু বেপরোয়া দুর্নীতির মাধ্যমে আত্মসাৎ করা অর্থ পাচার নিয়ে আলোচনা কি হয়নি দেশের মধ্যে? এটা কি নতুন কিছু?
সাবেক অর্থমন্ত্রীও কি জাতীয় সংসদে দাঁড়িয়ে এ বিষয়ে অসহায়ত্ব প্রকাশ করেননি? শেষে আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকেও বলতে হচ্ছে, বিদেশে দুর্নীতিবাজদের সম্পদ জব্দ হলে তিনি বরং খুশি। হায়, ব্যাপারটা যদি ব্যক্তিবিশেষের খুশি আর অখুশির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকত!
লেখক: সাংবাদিক, বিশ্লেষক

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত মে মাসে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের জন্য ভিসা নীতি ঘোষণার পর থেকেই সংশ্লিষ্ট মহলগুলোয় একটা দুশ্চিন্তা ভর করেছে। সেটা আতঙ্কে রূপ নিচ্ছে বলেই মনে হয়। এ বিষয়ে আজকের পত্রিকা ও একটি বিজনেস ডেইলিতে সম্প্রতি প্রকাশিত দুটি প্রতিবেদনের উল্লেখ করব।
১৪ আগস্ট ২০২৩
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

গত মে মাসে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের জন্য ভিসা নীতি ঘোষণার পর থেকেই সংশ্লিষ্ট মহলগুলোয় একটা দুশ্চিন্তা ভর করেছে। সেটা আতঙ্কে রূপ নিচ্ছে বলেই মনে হয়। এ বিষয়ে আজকের পত্রিকা ও একটি বিজনেস ডেইলিতে সম্প্রতি প্রকাশিত দুটি প্রতিবেদনের উল্লেখ করব।
১৪ আগস্ট ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

গত মে মাসে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের জন্য ভিসা নীতি ঘোষণার পর থেকেই সংশ্লিষ্ট মহলগুলোয় একটা দুশ্চিন্তা ভর করেছে। সেটা আতঙ্কে রূপ নিচ্ছে বলেই মনে হয়। এ বিষয়ে আজকের পত্রিকা ও একটি বিজনেস ডেইলিতে সম্প্রতি প্রকাশিত দুটি প্রতিবেদনের উল্লেখ করব।
১৪ আগস্ট ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

গত মে মাসে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের জন্য ভিসা নীতি ঘোষণার পর থেকেই সংশ্লিষ্ট মহলগুলোয় একটা দুশ্চিন্তা ভর করেছে। সেটা আতঙ্কে রূপ নিচ্ছে বলেই মনে হয়। এ বিষয়ে আজকের পত্রিকা ও একটি বিজনেস ডেইলিতে সম্প্রতি প্রকাশিত দুটি প্রতিবেদনের উল্লেখ করব।
১৪ আগস্ট ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫