Ajker Patrika

আজকের তারাবিহ-৮: মদিনার যে মসজিদ পুড়িয়ে দিয়েছিলেন মহানবী (সা.)

রায়হান রাশেদ
আপডেট : ০৮ মার্চ ২০২৫, ১৪: ৫৪
আজকের তারাবিহ-৮: মদিনার যে মসজিদ পুড়িয়ে দিয়েছিলেন মহানবী (সা.)

আজ খতমে তারাবিহে পবিত্র কোরআনের ১১তম পারা তিলাওয়াত করা হবে। সুরা তওবার ৯৪ থেকে সুরা হুদের ৫ নম্বর আয়াত পর্যন্ত। এই অংশে সত্য সাক্ষ্যদানকারীদের পুরস্কার, মসজিদ নির্মাণ, তাকওয়া অর্জন, জ্ঞান ও গবেষণার গুরুত্ব, নবীজির অনুসরণ, কিয়ামতের ঘটনা ও মুমিনের গুণাবলিসহ বিভিন্ন বিষয়ের বিবরণ রয়েছে। এখানে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি বিষয় তুলে ধরা হলো—

যে মসজিদ পুড়িয়ে দিয়েছিলেন মহানবী (সা.) 
মসজিদ আল্লাহ ঘর। আল্লাহর পছন্দনীয় জায়গা। মুমিনজীবনের আনুষ্ঠানিক সেজদা করার পবিত্র স্থান। মুসলমানদের বিশ্বাস, চেতনা, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের ধারক মসজিদ। মুসলিম সমাজের মূল কেন্দ্র হলো মসজিদ। মুসলমান যেখানে বসতি গড়বে, সেখানে গড়ে উঠবে মসজিদ—এটা নবীজির শিক্ষা। রাসুল (সা.) মদিনায় হিজরতের সময় যাত্রাবিরতিকালে কুবা নামক স্থানে ইসলামের প্রথম মসজিদ নির্মাণ করেন। পরে মদিনায় পৌঁছে তিনি মসজিদে নববি স্থাপন করেন। 

মসজিদ নির্মাণ সওয়াবের কাজ। আল্লাহকে খুশি করার মাধ্যম। আল্লাহ মানুষকে মসজিদ নির্মাণে উৎসাহিত করেছেন। নবীজি তাগিদ করেছেন। জান্নাতের সুসংবাদ দিয়েছেন। তবে মসজিদ নির্মাণ হতে হবে তাকওয়ার ওপর ভিত্তি করে। আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য। মুসলমানদের কল্যাণের জন্য। আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠার জন্য। 

ইসলামের ক্ষতিসাধন হয়—এমন মসজিদ নির্মাণ করা যাবে না। মহানবী (সা.)-এর আমলেই মুসলিমদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করার জন্য একটি মসজিদ নির্মিত হয়েছিল। মদিনার অদূরে, কুবা এলাকায়। মসজিদটি ইসলামের ইতিহাসে ‘মসজিদে জিরার’ নামে পরিচিত। পরে নবী (সা.) মসজিদটি ধ্বংস করার নির্দেশ দেন। 

রাসুল (সা.) তখন তাবুক যুদ্ধে যাচ্ছিলেন। এক ঘণ্টা পথ চলে জুআওয়ান নামক স্থানে থামলেন। মসজিদে জিরার নির্মাণকারীরা নবীজির কাছে এসে বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল, দুর্বলদের জন্য এবং বৃষ্টির রাতে নামাজ পড়ার জন্য আমরা একটি মসজিদ নির্মাণ করেছি। আমরা চাই যে, আপনি তাতে আসবেন এবং নামাজ পড়ে মসজিদটি উদ্বোধন করে দেবেন।’ নবীজি (সা.) বললেন, ‘আমি সফরে যাচ্ছি। ফেরার পথে তোমাদের এখানে যাব, ইনশাআল্লাহ।’ 

মূলত মুসলমানদের ক্ষতি করার জন্য খ্রিষ্টান পাদরি আবু আমিরের উসকানিতে কিছু অমুসলিম ইসলাম গ্রহণের ভান করে ওই মসজিদ বানায়। সেখানে তারা লোক দেখানো নামাজ পড়ত আর ফেতনা-অশান্তি সৃষ্টি এবং মুসলিমদের বিরুদ্ধে বহিঃশত্রুর আক্রমণের সুযোগ তৈরিসহ নানা রকম ষড়যন্ত্র করত। তাবুক থেকে ফেরার পথে নবীজিকে সতর্ক করে আল্লাহ বলেন, ‘আর যারা মসজিদ তৈরি করেছে ক্ষতিসাধন, কুফুরি আর মুমিনদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে, আর যে ব্যক্তি আগে থেকেই আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে তার ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহারের নিমিত্তে, তারা অবশ্যই শপথ করবে যে, আমাদের উদ্দেশ্য সৎ ব্যতীত নয়। আল্লাহ সাক্ষ্য দিচ্ছেন, তারা নিশ্চিত মিথ্যাবাদী।’ (সুরা তওবা: ১০৭)

রাসুলুল্লাহ (সা.) তখনই দুই সাহাবিকে এই মসজিদ পুড়িয়ে দেওয়ার জন্য পাঠালেন। নবীজি মদিনায় পৌঁছার আগেই তাঁরা মসজিদটি একেবারে জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে ধ্বংস করে দেন। 

মুমিনদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি, সামাজিক অবক্ষয় ও বিশৃঙ্খলার জন্য মসজিদ বানানো ভয়াবহ পাপ। লোক দেখানো, আধিপত্য বিস্তার, কালো টাকা সাদা বা মানুষের প্রশংসা কিংবা পাপ লুকানোর জন্য মসজিদ নির্মাণ করা গুনাহ। 

সুরা তওবায় বর্ণিত মুমিনের ৯ গুণ
সুরা তওবার ১১২ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তাআলা মুমিনদের কিছু গুণের কথা বলে সুসংবাদ দিয়েছেন। যথা—
 ১. তারা তওবাকারী
 ২. ইবাদতকারী
 ৩. আল্লাহর প্রশংসাকারী
 ৪. রোজাদার
 ৫. রুকুকারী 
৬. সিজদাকারী
 ৭. ভালো কাজের আদেশদাতা
 ৮. মন্দ কাজে বাধাদানকারী
 ৯. আল্লাহর নির্ধারিত সীমারেখা হেফাজতকারী

জ্ঞানর্চচা ও গবেষণার গুরুত্ব
ইসলামে জ্ঞান অর্জনের গুরুত্ব অপরিসীম। দ্বীনের জ্ঞান অর্জন করা প্রত্যেক মুসলমান নারী-পুরুষের জন্য আবশ্যক। মানুষের দুনিয়া ও আখেরাতের জীবনে সুখ, শান্তি, সফলতা ও উন্নতির জন্য যতগুলো শাস্ত্রের জ্ঞানচর্চা দরকার, ইসলাম সেই সমুদয় শাস্ত্রের জ্ঞান চর্চাকে উৎসাহিত করে। নবীজি (সা.)-এর নির্দেশে সাহাবিরা বিদেশি ভাষা শিখেছেন। অনেক সাহাবি সাহিত্য, ব্যবসা-বাণিজ্য, হস্তশিল্প, কৃষি ইত্যাদি বিষয়ে জ্ঞানার্জন করেছেন। নবীজির যুগে মসজিদে নববির বারান্দায় দ্বীনি জ্ঞান অর্জনের জন্য নিবেদিত একদল মানুষ পড়ে থাকতেন। সেখানে তাঁরা দিন-রাত কাটাতেন। ইসলামের ইতিহাসে যাঁরা ‘আসহাবে সুফফা’ নামে পরিচিত।

চিকিৎসা, গণিত, কৃষি, রাষ্ট্রনীতি, প্রয়োজনীয় বিজ্ঞান, দর্শন ইত্যাদির মৌলিক পর্যায়ের জ্ঞান শেখা ও এসব নিয়ে গবেষণা করা অপরিহার্য। গোটা জনপদে যদি এই জ্ঞানের পারদর্শী কেউ না থাকে, তাহলে সবাই কষ্টে পতিত হবে। তবে যা মানুষকে অকল্যাণের দিকে নিয়ে যায়, তা চর্চা করা হারাম। 

আল্লাহ তাআলা চান না যে সবাই একই কাজ করুক। একই বিষয়ে পারদর্শী হোক। তিনি চান, একেকজন একেক বিষয়ে পারদর্শী হয়ে উঠুক। কিছু লোক জ্ঞান অর্জনে লেগে থাকুক। তাবুক যুদ্ধে যখন মুসলমানেরা সবচেয়ে বড় যুদ্ধের মুখোমুখি হচ্ছেন, সবাইকে যুদ্ধে যাওয়ার জন্য নবীজি আদেশ দিয়েছেন, তখন আল্লাহ বলেন, ‘আর সমস্ত মুমিনের অভিযানে (একসঙ্গে যুদ্ধে) বের হওয়া সংগত নয়। তাই তাদের প্রত্যেক দলের একটি অংশ কেন বের হলো না, যাতে দ্বীনের জ্ঞান লাভ করে এবং সংবাদ (জ্ঞান) দান করে স্বজাতিকে, যখন তারা তাদের কাছে প্রত্যাবর্তন করবে, যেন তারা (গুনাহ থেকে) বাঁচতে পারে।’ (সুরা তওবা: ১২২) 

মুসলমানদের জীবন-মরণের খেলা, রোমান সম্রাট হিরাক্লিয়াসের বিশাল বাহিনীর সঙ্গে যেখানে যুদ্ধ করতে হচ্ছে, তা-ও মদিনার বাইরে গিয়ে, কড়া রোদের উত্তপ্ত মরুভূমির পথ পাড়ি দিয়ে, যে যুদ্ধ নিয়ে মুসলমানদের মধ্যে শঙ্কা বিরাজ করছে, সে যুদ্ধে পর্যন্ত আল্লাহ কিছু লোককে জ্ঞানার্জনের জন্য মদিনায় রেখে যেতে বলছেন; গবেষণায় থাকতে বলছেন।

সুরা ইউনুসের বিষয়বস্তু
সুরা ইউনুস মক্কায় অবতীর্ণ। এ সুরার আয়াত সংখ্যা ১০৯। কোরআনুল কারিমের ১০ নম্বর সুরা এটি। এ সুরায় ইমানের মৌলিক আকিদা-বিশ্বাস, পবিত্র কোরআনের মাহাত্ম্য ও মানুষের প্রতি চ্যালেঞ্জ, কিছু উপদেশ ও ঐতিহাসিক ঘটনাবলি সম্পর্কে আলোচনা রয়েছে। সুরার একটি অংশে ইউনুস (আ.)-এর ঘটনার বর্ণনা রয়েছে, সে দৃষ্টিকোণ থেকে এ সুরার নাম রাখা হয়—সুরা ইউনুস।

এ ছাড়া আজকের তারাবিহে মুনাফিকদের থেকে দূরত্ব বজায়, সত্যবাদীদের সংস্পর্শে থাকার নির্দেশ, নবীজির বিশেষ গুণ, মুনাফিকদের নিন্দা, কোরআন আল্লাহর কালাম, বিপদ কেটে গেলে আল্লাহকে ভুলে যাওয়া, দ্বীনের ব্যাপারে ছলচাতুরীর পরিণাম ইত্যাদি বিষয় আলোচিত হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রস্রাবের চাপ নিয়ে নামাজ আদায়ের বিধান

ইসলাম ডেস্ক 
আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ৫৭
নামাজ আদায় করছেন মুসল্লিরা। ছবি: সংগৃহীত
নামাজ আদায় করছেন মুসল্লিরা। ছবি: সংগৃহীত

অনেক সময় মসজিদে জামাত শুরু হওয়ার পর প্রস্রাবের বেগ বা চাপ অনুভূত হয়। এ অবস্থায় নামাজ আদায় বা জামাতে শরিক হওয়ার বিষয়ে ইসলামের সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে—

চাপের পরিমাণ ও বিধান: যদি প্রস্রাবের চাপ খুব সামান্য হয় এবং তাতে নামাজের মনোযোগ বা একাগ্রতা (খুশুখুজু) বিঘ্নিত না হয়, তবে ওই অবস্থায় নামাজ আদায় দোষণীয় নয়। কিন্তু চাপের পরিমাণ যদি এমন হয় যে মনোযোগসহকারে নামাজ আদায় কঠিন হয়ে পড়ে, তবে জামাত ছেড়ে দিয়ে আগে হাজত বা জরুরত সেরে নেওয়া আবশ্যক। কারণ, প্রস্রাবের তীব্র চাপ নিয়ে নামাজ আদায় মাকরুহ।

হাদিসের নির্দেশনা: প্রস্রাবের বেগ নিয়ে নামাজ আদায় করার বিষয়ে কঠোর সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ ও পরকালের বিশ্বাসী ব্যক্তির জন্য প্রস্রাবের চাপ থেকে স্বস্তি লাভ করা পর্যন্ত নামাজ আদায় বৈধ নয়।’ (সুনানে আবু দাউদ: ৯১)। অন্য এক হাদিসে নবীজি (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘নামাজের জামাত শুরু হওয়ার পর তোমাদের কারও শৌচাগারে যাওয়ার প্রয়োজন দেখা দিলে সে যেন আগে তা সেরে নেয়।’ (সুনানে আবু দাউদ: ৮৮)

নামাজের মূল প্রাণ হলো আল্লাহর সামনে বিনয় ও একাগ্রতার সঙ্গে দাঁড়ানো। শারীরিক অস্বস্তি নিয়ে নামাজ আদায় করলে একাগ্রতা বজায় থাকে না। তাই আগে প্রয়োজন সেরে, নতুনভাবে অজু করে নামাজ আদায় করাই উত্তম; এতে জামাত ছুটে গেলেও পরে একা বা অন্য জামাতে আদায় করা যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আজকের নামাজের সময়সূচি: ২২ ডিসেম্বর ২০২৫

ইসলাম ডেস্ক 
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত।

প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।

আজ সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ০৭ পৌষ ১৪৩২ বাংলা, ০১ রজব ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—

আজকের নামাজের সময়সূচি
নামাজ ওয়াক্ত শুরুওয়াক্ত শেষ
তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময়০০: ০০০৫: ১৫ মিনিট
ফজর০৫: ১৬ মিনিট০৬: ৩৬ মিনিট
জোহর১১: ৫৮ মিনিট০৩: ৪০ মিনিট
আসর০৩: ৪১ মিনিট০৫: ১৬ মিনিট
মাগরিব০৫: ১৮ মিনিট০৬: ৩৭ মিনিট
এশা০৬: ৩৮ মিনিট০৫: ১৫ মিনিট

উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:

বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট

যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট

নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।

আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির বৈঠক আজ

ইসলাম ডেস্ক 
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪: ১১
ছবি: বাসস
ছবি: বাসস

জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির বৈঠক বসছে আজ। রোববার (২১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা সোয়া ৫টায় (বাদ মাগরিব) ইসলামিক ফাউন্ডেশন বায়তুল মোকাররম সভাকক্ষে ১৪৪৭ হিজরি সনের রজব মাসের চাঁদ দেখার সংবাদ পর্যালোচনা ও এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের লক্ষ্যে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।

সভায় সভাপতিত্ব করবেন ধর্মবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন।

বাংলাদেশের আকাশে কোথাও রজব মাসের চাঁদ দেখা গেলে তা ০২-৪১০৫৩২৯৪, ০২-২২৬৬৪০৫১০ ও ০২-২২৩৩৮৩৩৯৭ টেলিফোন নম্বরে অথবা সংশ্লিষ্ট জেলার জেলা প্রশাসক বা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানানোর জন্য অনুরোধ জানিয়েছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শীতকালে মুমিনের আত্মিক শিক্ষা ও নৈতিক দায়িত্ব

ডা. মুহাম্মাদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ 
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৭: ৫০
শীতকালে মুমিনের আত্মিক শিক্ষা ও নৈতিক দায়িত্ব

শীতকাল কেবল আবহাওয়ার একটি পরিবর্তন নয়, বরং এটি মুমিনের শারীরিক, মানসিক ও আত্মিক প্রশিক্ষণের এক বিশেষ ঋতু। প্রকৃতির এই পরিবর্তন আমাদের মহান আল্লাহর অসীম মহিমা ও শক্তির কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। পবিত্র কোরআনে তিনি ইরশাদ করেছেন, ‘নিশ্চয়ই আসমান ও জমিনের সৃষ্টিতে এবং রাত ও দিনের পালাবদলে জ্ঞানীদের জন্য নিদর্শন রয়েছে।’ (সুরা নুর: ৪৪)

ইসলামে সুস্থতার গুরুত্ব অপরিসীম। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘একজন সবল ও সুস্থ মুমিন আল্লাহর কাছে দুর্বল মুমিনের চেয়ে অধিক উত্তম ও প্রিয়।’ (সহিহ মুসলিম)। শীতকালে শুষ্ক আবহাওয়ায় রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়, তাই মুমিনের উচিত সতর্ক থাকা। পর্যাপ্ত উষ্ণ কাপড় পরিধান করা, পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ, বিশুদ্ধ পানি পান এবং নিয়মিত হালকা ব্যায়ামের মাধ্যমে শরীরকে ইবাদতের উপযোগী রাখা জরুরি।

শীতকালকে মুমিনের ইবাদতের বসন্ত বলা হয়। কেননা এ সময় দিন ছোট হওয়ায় সহজে রোজা রাখা যায় এবং রাত দীর্ঘ হওয়ায় আরামের ঘুম বিসর্জন দিয়ে মহান আল্লাহর সান্নিধ্যে তাহাজ্জুদ আদায় করা সহজ হয়।

শীতের তীব্রতায় সমাজের অসহায় ও ছিন্নমূল মানুষগুলো নিদারুণ কষ্টে ভোগে। মুমিনের ইবাদত কেবল নামাজ-রোজায় সীমাবদ্ধ নয়, বরং আর্তমানবতার সেবাও ইবাদতের অংশ। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘হে মুমিনগণ, তোমরা যা উপার্জন করো এবং যা আমি তোমাদের জন্য জমিন থেকে উৎপন্ন করেছি, তা থেকে উত্তম বস্তু ব্যয় করো।’ (সুরা বাকারা: ২৬৭)। হাদিসে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি কোনো অভাবী মানুষের দুঃখ দূর করবে, আল্লাহ দুনিয়া ও আখিরাতে তার দুঃখ দূর করে দেবেন।’ (জামে তিরমিজি)। তাই সাধ্যানুযায়ী শীতবস্ত্র ও খাদ্য দিয়ে দরিদ্রদের পাশে দাঁড়ানো আমাদের ইমানি দায়িত্ব।

শীতকাল আমাদের স্বাস্থ্য সচেতনতা, ধৈর্য, সহমর্মিতা এবং আধ্যাত্মিক উন্নতির শিক্ষা দেয়। তাই প্রত্যেক মুমিনের উচিত এই ঋতুকে অবহেলায় না কাটিয়ে ইবাদত, আর্তমানবতার সেবা ও আত্মশুদ্ধির মাধ্যমে সার্থক করে তোলা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত