শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

সেকশন

 

রায় হওয়ার আগে আসামি ‘কনডেম’ সেলে

আপডেট : ২৫ মার্চ ২০২৩, ১০:৫০

খাদিজাতুল কুবরা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের দুই মামলায় কারাগারে থাকা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী খাদিজাতুল কুবরাকে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের কনডেম সেলে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। কারা কর্তৃপক্ষ বলেছে, অসদাচরণ করায় তাঁকে শাস্তিমূলক সেলে রাখা হয়েছে। বিষয়টিকে মানবাধিকারের লঙ্ঘন বলছেন মানবাধিকারকর্মী নূর খান লিটন।

২০২০ সালে করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের দুই মামলায় গ্রেপ্তার খাদিজা প্রায় আট মাস ধরে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগারে রয়েছেন। অভিযোগ উঠেছে, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত কয়েদিদের জন্য নির্দিষ্ট কনডেম সেলে তাঁকে রাখা হয়েছে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার (ভারপ্রাপ্ত) মো. ওবায়দুর রহমান গতকাল শুক্রবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কারা হাসপাতালের যন্ত্রপাতি, চিকিৎসক নিয়ে বিদ্রূপ করেন খাদিজা। একজন চিকিৎসকের সঙ্গে খুবই বাজে ব্যবহার করেন। কারারক্ষীদের সঙ্গেও অসদাচরণ করেন। এ জন্য আমি তাঁকে ২২ মার্চ সাত দিনের শাস্তি দিয়েছি। আইন অনুযায়ী, অসদাচরণ করায় তাঁকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। তাঁকে সাধারণ সেল থেকে বের করে শাস্তিমূলক সেলে রাখা হয়েছে। আজ (শুক্রবার) শাস্তির তৃতীয় দিন চলছে। চার দিন পর তাঁকে আবার সাধারণ সেলে ফিরিয়ে নেওয়া হবে।’ শাস্তিমূলক সেলটি কেমন, নাম কী–জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি শাস্তিমূলক সেল, তবে কনডেম সেল নয়। তিনি আরও বলেন, দুই ঘণ্টার জন্য তাঁকে সেলের বাইরে আনা হয়। সেলে তাঁর সঙ্গে আরও দুই বন্দীকে রাখা হয়েছে।

ওবায়দুর রহমান বলেন, ২৩ মার্চ খাদিজার সঙ্গে তাঁর স্বজনেরা দেখা করেন। সে সময় হয়তো তিনি এমন কিছু বলেছেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের কারা হাসপাতালে যন্ত্রপাতি না থাকায় খাদিজার স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য প্রথমে গাজীপুর পাঠানো হয়। এরপর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) নেওয়া হয়। কিন্তু সেদিন চিকিৎসক না থাকায় তাঁকে দেখানো যায়নি। আগামী সপ্তাহে আবার সেখানে পাঠানো হবে। বর্তমানে তাঁর শারীরিক অবস্থা খুব ভালো।’

খাদিজা কারও সঙ্গে খারাপ আচরণ করতে পারেন না দাবি করেন তাঁর বোন সিরাজাম মুনীরা। তিনি বলেন, এত দিন কারাগারে কারও সঙ্গে খারাপ আচরণ করল না, এখন হঠাৎ করে খারাপ আচরণের কথা আসছে। ছোট্ট একটা মেয়ে আট মাস ধরে কারাগারে। তাঁর মানসিক অবস্থা কী, তা বোঝা উচিত।  

সিরাজাম মুনীরা বলেন, ‘খাদিজা অসুস্থ। আমরা আবেদন করলে আদালত তাঁকে চিকিৎসকের কাছে নিতে বলেছেন।’ খাদিজার বাবা কুয়েতপ্রবাসী। পরিবার বলেছে, কনডেম সেলে রাখার খবরে তাঁরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন।

সূত্র জানায়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী খাদিজা ফেসবুক ও ইউটিউবে একটি ওয়েবিনারের উপস্থাপক ছিলেন। ওই ওয়েবিনারে অতিথি বক্তা ছিলেন বিদেশে অবস্থানরত মেজর (অব.) দেলোয়ার হোসেন। ওই ওয়েবিনারের পর খাদিজা ও দেলোয়ারের বিরুদ্ধে ২০২০ সালের ১১ ও ১৯ অক্টোবর রাজধানীর কলাবাগান ও নিউমার্কেট থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দুটি মামলা করে পুলিশ। এ দুই মামলায় অভিযোগপত্র দেওয়ার পর আদালত খাদিজার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। গত বছরের আগস্টে তাঁকে মিরপুর থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এর পর থেকে তিনি কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগারে রয়েছেন। একাধিকবার নিম্ন আদালতে জামিনের আবেদন করলেও তা নামঞ্জুর হয়। দেলোয়ারের বিরুদ্ধে এর আগেও একই অভিযোগে মামলা আছে। মামলায় তাঁদের বিরুদ্ধে বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে ঘোলা করার চেষ্টা, সরকারবিরোধী কর্মকাণ্ড এবং বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার অভিযোগ আনা হয়।

এদিকে খাদিজাকে কনডেম সেলে রাখার খবরে বিষয়টিকে মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন বলে মন্তব্য করেছেন মানবাধিকারকর্মী ও আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) নির্বাহী পরিচালক নূর খান লিটন। তিনি বলেন, একজন বন্দীর কিছু অধিকার রয়েছে। তাঁর নিরাপত্তা, চিকিৎসার বিষয়টি কারা কর্তৃপক্ষের দেখা উচিত।

মন্তব্য

আপনার পরিচয় গোপন রাখতে
আমি নীতিমালা মেনে মন্তব্য করছি।
Show
 
    সব মন্তব্য

    ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে

    পঠিতসর্বশেষ

    এলাকার খবর

     

    ঢাবি ও জাবিতে দুজনকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা

    নির্বাচন কমিশন রাখবে না এনটিএমসির ‘আবদার’

    একজন ‘ভাড়া’ শিক্ষকে চলে ৫ শিক্ষকের স্কুল

    রাজধানীতে যানজটে আরও মন্থর গতি

    বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন

    এখনো যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে গুলিবিদ্ধ রিদওয়ান

    দরপত্রে অংশ না নিয়েই কাজ চান নেতারা

    এখন একটা সাংবিধানিক প্রতিবিপ্লব ঘটে গেছে: ফরহাদ মজহার

    ট্রেনের নিচে ঝাঁপ বিমানবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তার, দ্বিখণ্ডিত লাশের পাশে সুইসাইড নোট

    রাজধানীর মোহাম্মদপুরে দুই যুবককে কুপিয়ে হত্যা

    ফেরার সময় ফুল নিয়ে ফিরতে পারলেই সফলতা: নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনিযুক্ত উপাচার্য 

    রাশিয়ার সবচেয়ে ধনী নারীর কাছে স্বামী এখন শত্রু

    সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রি পার, বৃষ্টি কবে জানাল আবহাওয়া অধিদপ্তর