দুবাইয়ের আলোচিত স্বর্ণ ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভ খানের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই বলে জানিয়েছেন পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ। এই নামে তিনি কাউকে চেনেনও না। তবে ২০১৮ সালে পুলিশ পরিদর্শক মামুন ইমরান খানের লাশ উদ্ধারের পর আরাভকে আটকের পরও গ্রেপ্তার না দেখিয়ে তিনদিন পর ছেড়ে দেয় পুলিশ। এই ছেড়ে দেওয়ার ঘটনায় পুলিশের তৎকালীন শীর্ষ এক কর্মকর্তার চাপের (বর্তমানে অবসরে) কথা জানিয়েছেন ঢাকা গোয়েন্দা পুলিশের খিলগাঁও জোনাল টিমের এক কর্মকর্তা।
গতকাল শনিবার বেলা ৩টায় নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে এসব কথা জানান বেনজীর। বেনজীর লিখেছেন, ‘আরাভ ওরফে রবিউল ওরফে হৃদয় নামে আমি কাউকে চিনি না। আমার সঙ্গে তাঁর এমনকি প্রাথমিক পরিচয়ও নাই।’
২০১৮ সালের ৭ জুলাই ঢাকায় পুলিশ পরিদর্শক মামুন এমরান খুন হন। এই ঘটনায় ডিবি তদন্ত শেষে গোপালগঞ্জের তরুণ রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভ খানসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়। ওই সময় তাঁকে ধরেও ছেড়ে দেওয়ার বিষয়ে বেনজীর আহমেদের প্রভাব ছিল বলে গুঞ্জনের মধ্যেই তিনি ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে বিষয়টি পরিষ্কার করেছেন।
তিন দিন ডিবি কার্যালয়ে রেখে আরাভকে ছেড়ে দেয় পুলিশ
৯ জুলাই পুলিশ পরিদর্শক মামুন এমরান খানের লাশ উদ্ধারের পর তাঁর বন্ধু রহমত উল্ল্যাহকে গ্রেপ্তার করে ডিবি। এরপর ওই বছরের ১০ জুলাই বনানী থানায় একটি হত্যা মামলা হয়। রহমত উল্ল্যাহর তথ্যানুযায়ী আরও কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। একই সময় রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভ খানকেও আটক করেছিল ডিবি। তবে আরাভকে কখনো গ্রেপ্তার দেখায়নি ডিবি।
ওই সময়ে মামলার তদন্তের সঙ্গে জড়িত ঢাকা গোয়েন্দা পুলিশের খিলগাঁও জোনাল টিমের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘রাজনৈতিক এক শীর্ষ প্রবীণ নেতা ও পুলিশের তৎকালীন শীর্ষ এক কর্মকর্তা (বর্তমানে অবসরে) চাপ প্রয়োগ করেন। আরাভকে চাপে পড়ে ছাড়তে বাধ্য হন।’
পুলিশ পরিদর্শক মামুন ইমরান খান হত্যার ঘটনার সময় ডিএমপির ডিবিপ্রধান ছিলেন ডিআইজি আব্দুল বাতেন। তিনি বর্তমানে রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি। কারও চাপে পড়ে আরাভকে ছেড়ে দিয়েছিলেন কি না? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অনেক আগের ঘটনা তো, তাই বলতে পারছি না।’
চলচ্চিত্র প্রযোজক নজরুল ইসলাম রাজকেও আটক করা হয়েছিল
পুলিশ পরিদর্শক যে ফ্ল্যাটটিতে খুন হন, সেটি আরাভ খানের নামে ভাড়া নেওয়া হলেও ডিবি জানতে পারে এর নেপথ্যে চলচ্চিত্র প্রযোজক নজরুল ইসলাম রাজ রয়েছেন। আরাভ ও রাজ দুজনেরই গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জে। রাজের নাম আসার পর তাঁকেও ডিবি কার্যালয় নিয়ে আসা হয় তখন। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে ডিবি জানতে পারে, ২০১৪ সাল থেকে বনানী, গুলশান, নিকেতন, মহাখালী, খিলগাঁও, রামপুরা এলাকায় রাজ ও আরাভের নিয়ন্ত্রিত অনেকগুলো ফ্ল্যাট আছে। যেখানে বিভিন্ন ডিজে পার্টিসহ অনৈতিক কার্যক্রম হয়। দেশের ধনাঢ্য ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের পার্টিতে ডাকা হতো। কোনো কোনো ব্যক্তিকে নারীদের সঙ্গে আপত্তিকর ছবি তুলে ব্ল্যাকমেল করে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিতেন তাঁরা। এভাবে রাতারাতি তাঁরা অনেক টাকার মালিক হয়ে যান।
আরাভের সঙ্গে তাঁর সখ্যের বিষয়ে বক্তব্য জানতে রাজের মোবাইল নম্বরে ফোন ও খুদে বার্তা দিলেও তিনি সাড়া দেননি।
আরও খবর পড়ুন:
- খেপে গিয়ে প্রভাবশালীদের কাছ থেকে তাঁর সম্পর্কে জানতে বললেন আরাভ খান
- আরাভকে চিনি না, ফেসবুকে জানালেন বেনজীর
- আরাভ খানের ৬ বিয়ে, হঠাৎ উত্থানে বিস্মিত চাচাতো ভাই
- আরাভ খানের আমন্ত্রণে দুবাই গেলেন যেসব তারকা
- আরাভ খান কি আসলেই আমিন খানের ছোট ভাই
- মাহি ও তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে পুলিশের মামলা
- স্বামীর গাড়ির শোরুমে হামলা-ভাঙচুর, জিএমপি কমিশনারকে দুষলেন চিত্রনায়িকা মাহি
- চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির রিমান্ড নামঞ্জুর, কারাগারে পাঠালো আদালত
- চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি গ্রেপ্তার
মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে