রাজধানীর কদমতলীতে সাত বছরের শিশু আব্দুল্লাহকে হত্যার দায়ে এক আসামিকে আমৃত্যু ও আরেক আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে। আজ রোববার চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মোহাম্মদ মোরশেদ আলম এ রায় ঘোষণা করেন।
আমৃত্যু কারাদণ্ডে দণ্ডিত আসামি হলেন মো. হানিফ। পাশাপাশি পঞ্চাশ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়েছে তাকে। অপর আসামি জাহিদ হোসেনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি পাঁচ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে পাঁচ মাস সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামির ৩০ বছর সাজা খাটতে হবে।
রায় ঘোষণার সবাই আসামিরা পলাতক ছিলেন। আদালত তাদের বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানাসহ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন। তারা গ্রেপ্তার হওয়ার পর বা আদালতে আত্মসমর্পণের পর এই সাজা কার্যকর হবে। এই মামলায় আসামিরা গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। পরে জামিন পেয়ে তারা পালিয়ে যান।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, ২০১৬ সালের ২১ সেপ্টেম্বর আসামিরা সাত বছর বয়সী আব্দুল্লাহকে কদমতলী থানার উজালা ম্যাচ ফ্যাক্টরির পশ্চিম পাশের বাউন্ডারি ওয়ালের ভেতরে পতিত জায়গায় নিয়ে যান। সেখানে পাথর দিয়ে মাথায় ও মুখে আঘাত করে হত্যা করেন। এরপর পাথর দিয়েই চাপা দিয়ে ফেলে রেখে যান। এ ঘটনায় কদমতলী থানায় অজ্ঞাত আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের হয়।
পরে এই দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। এদের মধ্যে হানিফ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়ে হত্যার দায়ী স্বীকার করেন।
২০১৮ সালের ১৭ জানুয়ারি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবির উপপরিদর্শক এরশাদ হোসেন আদালতে হানিফ ও জাহিদের অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২০১৮ সালের ১১ জুলাই আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।
বিচার চলাকালীন আদালত বিভিন্ন সময়ে ১২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন।
নিহত শিশু আব্দুল্লাহর মা আয়েশা আক্তার রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, ‘আমার সাত বছরের ছেলে আব্দুল্লাহকে পাথর দিয়ে আঘাত করে নির্মম হত্যা করেছে হানিফ আর জাহিদ। তারা এই মামলায় জামিন পেয়ে বাদীর পরিবারের সবাইকে ভয়ভীতি দেখিয়েছেন। টাকার বিনিময়ে আপস করতে চেয়েছেন। কিন্তু বাদী আপস করেননি। রায়ে তিনি খুশি। তবে আসামিরা পলাতক থাকায় বাদীর পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানাই।’
মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে