Ajker Patrika

১৪৯৭-১৯৯৭: এক নজরে ব্রিটিশ সাম্রাজ্য

আপডেট : ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৮: ৩৩
১৪৯৭-১৯৯৭: এক নজরে ব্রিটিশ সাম্রাজ্য

ব্যাপক বিস্তৃত, দীর্ঘস্থায়ী এবং সুদূরপ্রসারী প্রভাব বিস্তারি সাম্রাজ্যবাদী আচরণের জন্য ব্রিটিশ সাম্রাজ্যকে স্মরণ করতেই হবে। বলতে গেলে এই সাম্রাজ্যই বিশ্বায়ন এবং আন্ত যোগাযোগের যুগের সূচনা করেছিল। ব্রিটিশ সাম্রাজ্য ষোড়শ শতাব্দীতে সুগঠিত হতে শুরু করে। পরের বছরগুলোতে খুব দ্রুতই এই সাম্রাজ্যের বিস্তার চলতে থাকে অপ্রতিরোধ্য গতিতে। বিংশ শতাব্দী পর্যন্ত এর নাটকীয় বিকাশ অব্যাহত থাকে। 

ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ কিছু ঘটনার টাইমলাইন: 

১৪৯৭: জন ক্যাবটকে রাজা হেনরি সপ্তম আটলান্টিকের মধ্য দিয়ে এশিয়ার একটি রুট আবিষ্কার করার জন্য অভিযানে পাঠান। ক্যাবট নিউফাউন্ডল্যান্ডের উপকূলে পৌঁছাতে সক্ষম হন এবং বিশ্বাস করেন যে এটিই এশিয়া। 

১৫০২: সপ্তম হেনরি উত্তর আমেরিকায় আরেকটি সমুদ্রযাত্রা শুরু করেন। ইংরেজ এবং পর্তুগিজদের যৌথ উদ্যোগ ছিল এটি। 

১৫৪৭: ইংরেজ রাজ নিয়োজিত ইতালীয় অভিযাত্রী সেবাস্তিয়ান ক্যাবট স্প্যানিশ এবং পর্তুগিজদের সমুদ্র অনুসন্ধান সম্পর্কে নানা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নিয়ে ইংল্যান্ডে ফিরে আসেন। 

১৫৫২: ইংরেজ নৌ কর্মকর্তা টমাস উইন্ডহাম গিনি থেকে চিনি এবং গুড় আনেন। 

১৫৫৪: স্যার হিউ উইলবি, একজন ইংরেজ সৈনিক এবং দক্ষ নৌযান চালক দূর প্রাচ্যে যাওয়ার জন্য উত্তর: পূর্বের একটি পথের সন্ধানে পরিচালিত জাহাজ বহরের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। অভিযানের থাকতেই তিনি মারা যান। তবে বহরেরই অন্য একটি জাহাজ রাশিয়ার সঙ্গে একটি বাণিজ্য চুক্তি করতে সফল হয়। 

১৫৫৬: টিউডরা আয়ারল্যান্ড জয় করে। সেখানকার জমি দখল করে বিপুলসংখ্যক ইংরেজের পুনর্বাসন করেন। ইংরেজরা আইরিশদের তাদের বাপ দাদার ভূমি থেকে উচ্ছেদ করে নিজেরা ভোগ দখল করে। 

১৫৬২: ইংরেজ নৌ কমান্ডার জন হকিন্স পশ্চিম আফ্রিকা এবং নিউ ওয়ার্ল্ডের মধ্যে ক্রীতদাস বাণিজ্যে যুক্ত হন। নিউ ওয়ার্ল্ড হলো পৃথিবীর পশ্চিম গোলার্ধের অধিকাংশ অংশ যা মূলত আমেরিকা নামেই পরিচিত। ফ্রান্সিস ড্রেকের পাশাপাশি হকিন্সও আমেরিকার স্প্যানিশ বন্দরগুলো ব্যক্তিগত সম্পত্তিতে পরিণত করার অনুমতি পান। এই নতুন ‘আবিষ্কারের যুগে’ তাঁরা স্প্যানিশ এবং পর্তুগিজদের সঙ্গে পাল্লা দেওয়ার হিম্মত দেখান। 

১৫৭৭: ফ্রান্সিস ড্রেক বিশ্ব ভ্রমণ শুরু করেন। শেষ করে ১৫৮০ সালে। 

১৫৭৮: অটোমান সাম্রাজ্যের সঙ্গে বাণিজ্যের জন্য লন্ডনে লেভান্ট ট্রেডিং কোম্পানি প্রতিষ্ঠিত হয়। 

১৫৯৭: দোষী সাব্যস্ত অপরাধীদের বিভিন্ন উপনিবেশে নির্বাসন দেওয়ার অনুমতি দিয়ে পার্লামেন্টে আইন পাস হয়। 

১৬০০: ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি গঠিত হয়। 

১৬০৪: গায়ানায় একটি উপনিবেশ স্থাপনের চেষ্টা করা হয়। 

১৬০৭: ক্যাপ্টেন জন স্মিথ এবং ভার্জিনিয়া কোম্পানি জেমস টাউনে আমেরিকায় প্রথম স্থায়ী আবাস স্থাপন করতে সক্ষম হয়। 

১৬১৫: বাণিজ্য অধিকার নিয়ে ইংরেজদের সঙ্গে বিরোধে বোম্বেতে পর্তুগিজদের পরাজয়। 

১৬১৭: স্যার ওয়াল্টার রেলি ‘এল ডোরাডো’ খুঁজে পেতে সমুদ্রযাত্রা শুরু করেন। তবে এরই মধ্যে গুটিবসন্ত মহামারি নিউ ইংল্যান্ডে ছড়িয়ে পড়ে। এই মহামারি আমেরিকার নেটিভ জনগোষ্ঠীকে প্রায় নিঃশেষ করে দেয়। এল ডোরাডো হলো দক্ষিণ আমেরিকার এক কল্পিত স্বর্ণনগরী। 

মেফ্লাওয়ার জাহাজে করে আমেরিকায় পৌছান পিউরিটানেরা।১৬২০: কিছু ব্রিটিশ পরিবারকে নিয়ে প্লাইমাউথ বন্দর থেকে যাত্রা শুরু করে বিখ্যাত মেফ্লাওয়ার জাহাজ। প্রায় একশ যাত্রী আরোহী ছিল জাহাজে। প্রধানত পিউরিটানরা আটলান্টিকজুড়ে নিপীড়ন থেকে মুক্ত একটি নতুন জীবনের সন্ধানে বেরিয়ে পড়েছিলেন। এই পিউরিটানরা মূলত ইংল্যান্ডের একটি ধর্মীয় গোষ্ঠী। তাঁরা ধর্ম সংস্কার আন্দোলন করতে গিয়ে নির্যাতনের শিকার হন। পরে ১৬২০ সালে আমেরিকা গিয়ে আশ্রয় নেন। 

১৬২৪: সেন্ট কিটসে সফলভাবে বসতি স্থাপন করে ইংরেজ দখলদারেরা। 

১৬২৭: বার্বাডোসে বসতি স্থাপন করে ঔপনিবেশিক ব্রিটিশ। 

১৬২৮: নেভিসে বসতি স্থাপন। 

১৬৩৩: বাংলায় ইংরেজদের বাণিজ্য কেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত হয়। 

১৬৩৯: ইংরেজরা মাদ্রাজে বসতি স্থাপন করে। 

১৬৫৫: জ্যামাইকা দ্বীপটি স্প্যানিশদের কাছ থেকে কেড়ে নিয়ে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। 

১৬৬০: রয়্যাল আফ্রিকান কোম্পানির প্রতিষ্ঠা। ডাচদের মতো প্রতিদ্বন্দ্বী শক্তির হাত থেকে বাণিজ্য পথ এবং পণ্যের নিরাপত্তায় নেভিগেশন আইন পাস করা হয়। 

১৬৬১: রাজা দ্বিতীয় চার্লস ক্যাথরিন ডি ব্রাগানজাকে বিয়ে করেন। পর্তুগিজদের কাছ থেকে যৌতুক হিসেবে পান ট্যাঙ্গিয়ার এবং বোম্বে। 

১৬৬৪: ইংরেজরা ডাচ উপনিবেশ নিউ নেদারল্যান্ডের নিয়ন্ত্রণ নেয়। সেখানে নতুন বসতি স্থাপন শুরু করে এবং নাম পরিবর্তন করে রাখে নিউইয়র্ক। 

১৬৬৬: বাহামাতে উপনিবেশ স্থাপন করে ব্রিটেন। 

১৬৬৮: ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বোম্বে দখল করে। 

১৬৯০: জব চার্নক আনুষ্ঠানিকভাবে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির পক্ষে কলকাতা প্রতিষ্ঠা করেন। অবশ্য এই তথ্য বিতর্কিত। 

১৭০৮: ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি এবং একটি প্রতিদ্বন্দ্বী কোম্পানি ইউনাইটেড কোম্পানি অব মার্চেন্টস অব ইংল্যান্ডে একীভূত হয়। এই কোম্পানি পূর্ব ইন্ডিজে বাণিজ্য করত। 

১৭১৩: উট্রেকটের চুক্তি স্পেনে উত্তরাধিকার নিয়ে দ্বন্দ্ব সংঘাতের সফল সমাপ্তি ঘটায়। এই চুক্তির ফলে ব্রিটেন আমেরিকা এবং ভূমধ্যসাগরে উল্লেখযোগ্য অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ পায়। এর মধ্যে নিউফাউন্ডল্যান্ড, সেন্ট কিটস, হাডসন উপসাগরের পাশাপাশি জিব্রাল্টার এবং মিনোর্কাও রয়েছে। চুক্তিতে স্প্যানিশ উপনিবেশগুলোতে দাস আমদানির অধিকারও পায় ব্রিটেন। 

১৭১৯: ব্রিটিশ সরকার আয়ারল্যান্ডকে ব্রিটেনের অবিচ্ছেদ্য অংশ ঘোষণা করে। 

জিব্রালটার প্রণালী দখল করে নেয় ব্রিটিশরা।১৭২৭: স্পেন এবং ব্রিটেনের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়। স্প্যানিশরা জিব্রাল্টার অবরোধ করে। একই বছর কোয়েকারেরা (প্রোটেস্ট্যান্ট খ্রিষ্টান) উপনিবেশগুলোতে দাসপ্রথা বিলুপ্তির দাবি তোলেন। 

১৭৩১: ইংল্যান্ডের কারখানার শ্রমিকদের আমেরিকায় অভিবাসনে বাধা দেওয়া হয়। 

১৭৪৬: মাদ্রাজ ফরাসিদের দখলে চলে যায়। 

১৭৫০: ব্রিটিশ এবং ফরাসিরা উত্তর আমেরিকার সীমানা নিয়ে আলোচনায় শুরু করে। 

১৭৫৬: মিনোর্কা আবার স্প্যানিশদের দখল চলে যায়। 

১৭৬৩: কিছু অঞ্চল, বসতি এবং বাণিজ্য বন্দরে একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ইউরোপীয় শক্তিগুলোর মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে থাকে। এর ফলশ্রুতিতে প্যারিস চুক্তি হয়। চুক্তির আওতায় সাম্রাজ্যের ভূমি পুনর্বণ্টন করা হয়। কানাডার নিম্নাঞ্চল, মিসিসিপি, ফ্লোরিডা, ভারত এবং সেনেগাল পর্যন্ত এলাকার নিয়ন্ত্রণ পায় ব্রিটেন। চুক্তির অংশ হিসেবে ব্রিটিশরা কিউবা ও ম্যানিলা স্প্যানিশদের কাছে ফিরিয়ে দেয়। 

১৭৬৫: আমেরিকান উপনিবেশগুলোতে স্ট্যাম্প অ্যাক্ট এবং কোয়ার্টারিং অ্যাক্ট ভালোভাবে গ্রহণ করা হয়নি। 

১৭৬৯: বাংলার মহা দুর্ভিক্ষে এক কোটির বেশি মানুষের মৃত্যু হয়। একই বছর ক্যাপ্টেন জেমস কুক নিউজিল্যান্ডে যাওয়ার আগে তাহিতিতে পৌঁছান। 

১৭৭০: ক্যাপ্টেন জেমস কুক ব্রিটেনের পক্ষে নিউ সাউথ ওয়েলসের নিয়ন্ত্রণ দখল করেন। 

১৭৭৩: ব্রিটেনের কর আরোপের ক্ষমতার প্রতিক্রিয়ায় আমেরিকায় বোস্টন টি পার্টি বিদ্রোহ দানা বাঁধতে থাকে। ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে আমেরিকায় ক্রমবর্ধমান অসন্তোষের লক্ষণ স্পষ্ট হয়। দ্রুতই বিরোধীরা সহিংস বিদ্রোহ শুরু করে। 

১৭৭৫: আমেরিকান স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হয়। ১৭৮৩ সাল পর্যন্ত এ যুদ্ধ স্থায়ী হয়। 

১৭৮৩: আমেরিকার স্বাধীনতা যুদ্ধের আন্তর্জাতিক সংঘাতের সমাপ্তি ঘরে ফরাসিদের মধ্যস্থতায় ভার্সাই চুক্তির মাধ্যমে। ব্রিটেন ১৩টি উপনিবেশের স্বাধীনতাকে স্বীকৃতি দিতে বাধ্য হয়। ফ্লোরিডা স্প্যানিশদের কাছে আর সেনেগাল ফ্রান্সের হাতে ফিরে যায়। চুক্তির অংশ হিসেবে ব্রিটেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং কানাডায় সাম্রাজ্যের নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখে। 

১৭৮৭: ব্রিটিশ রাজনীতিবিদ উইলিয়াম উইলবারফোর্স ব্রিটিশ উপনিবেশগুলিতে দাসত্বের অবসানের জন্য তাঁর প্রচার: প্রচারণা শুরু করেন। এর ফলে সিয়েরা লিওনে একটি মুক্ত উপনিবেশ প্রতিষ্ঠিত হয়। উইলিয়াম উইলবারফোর্স ছিলেন ক্ল্যাফাম সম্প্রদায়ের সদস্য। এই ক্ল্যাফাম সেক্ট বা ক্ল্যাফাম সেইন্টসরা ১৭৮০ থেকে ১৮৪০: এর দশকে ক্ল্যাফাম এলাকার অধিবাসী সমাজসংস্কারকদের একটি দল। এই গোষ্ঠীর বেশিরভাগ সদস্য কিন্তু সরকারের ঘনিষ্ঠ এবং বেশ অবস্থাপন্ন ছিল। 

১৭৮৮: ইংল্যান্ড থেকে দাগি আসামিদের বহনকারী প্রথম জাহাজ অস্ট্রেলিয়ার বোটানি বে: তে পৌঁছে। বিশ্বজুড়ে মূলত ছোট অপরাধে দোষী সাব্যস্ত কয়েকশ লোককে নির্বাসনের একটি সূচনা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। 

১৮০১: আইরিশ অ্যাক্ট অব ইউনিয়ন ব্রিটেন এবং আয়ারল্যান্ডকে একীভূত করে। 

১৮০৫: ট্রাফালগারের যুদ্ধে অ্যাডমিরাল নেলসনের বিজয় রাজকীয় নৌবাহিনীকে সমুদ্রের নিয়ন্ত্রণ এনে দেয়। 

১৮০৬: আটলান্টিকের উপকূলে দক্ষিণ আফ্রিকা সংলগ্ন কেপ অব গুড হোপ ব্রিটিশদের দখলে যায়। 

১৮০৭: ব্রিটিশ জাহাজে বা ব্রিটিশ উপনিবেশগুলোতে ক্রীতদাসের চালান নিষিদ্ধ হয়। 

১৮১৩: ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ভারতের সঙ্গে তার বাণিজ্যে একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ হারায়। 

১৮১৬: ভিয়েনার কংগ্রেস ইউরোপীয় শক্তিগুলোর মধ্যে শান্তিপূর্ণ অবস্থান প্রতিষ্ঠার আরেকটি চেষ্টা করে। ব্রিটেন ডাচ এবং ফরাসি উপনিবেশ ফিরিয়ে দেয়। 

১৮১৯: স্যার স্ট্যামফোর্ড রাফেলস সিঙ্গাপুর প্রতিষ্ঠা করেন। 

১৮২১: সিয়েরা লিওন, গাম্বিয়া এবং গোল্ড কোস্ট মিলে গঠিত হয় ব্রিটিশ পশ্চিম আফ্রিকা। 

১৮৩৩: সমগ্র ব্রিটিশ সাম্রাজ্যে দাসত্ব প্রথা বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। 

১৮৩৯: চীন এবং ব্রিটেনের মধ্যে আফিম যুদ্ধ। আফিমের ব্যবসার ফলে জনসাধারণের মধ্যে ব্যাপক আসক্তি দেখা দেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে চীনে আফিম ব্যবসা নিষিদ্ধ করে। সেই সঙ্গে কারও কাছে আফিম পাওয়া গেলেই ধ্বংস করার নির্দেশ জারি করা হয়। ব্রিটিশরা এটিকে মুক্ত বাণিজ্যের ওপর আঘাত এবং ব্রিটিশ সম্পত্তি ধ্বংস হিসেবে দেখে। এরপরই শুরু হয় আফিমের যুদ্ধ। 

১৮৪১: ব্রিটেন হংকং দ্বীপ দখল করে নেয়। 

নানকিং চুক্তির মাধ্যমে চীনের সঙ্গে ব্রিটেনের আফিম যুদ্ধের সমাপ্তি। ১৮৪২: নানকিংয়ের চুক্তি আফিম যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটায়। হংকংকে ব্রিটিশদের হাতে তুলে দেয় চীন। 

১৮৪৩: নিউজিল্যান্ডে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে আদিবাসী মাওরি বিদ্রোহ শুরু হয়। 

১৮৫৩: ভারতে রেলপথ নির্মাণ শুরু করে ব্রিটেন। 

১৮৫৮: ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। 

১৮৭০: অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড এবং কানাডা থেকে ব্রিটিশ সৈন্য প্রত্যাহার করা হয়। 

১৮৭৬: রানী ভিক্টোরিয়া ভারতের সম্রাজ্ঞী উপাধি পান। 

১৮৭৮: সাইপ্রাস দখল করে ব্রিটেন। 

১৮০০: ব্রিটিশ এবং দক্ষিণ আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রের মধ্যে প্রথম বোয়ার যুদ্ধ শুরু হয়। 

১৮৮৯: ব্রিটিশ দক্ষিণ আফ্রিকা কোম্পানি রাজকীয় সমর্থন ও অনুমোদন পায়। রোডেশিয়া প্রতিষ্ঠিত হয়। 

১৮৯৪: উগান্ডাকে ব্রিটেন নিয়ন্ত্রিত স্বশাসিত রাষ্ট্র ঘোষণা করা হয়। 

১৮৯৫: ট্রান্সভাল প্রজাতন্ত্রের বিরুদ্ধে ব্রিটিশদের কুখ্যাত ‘জেমসন রেইড’ বা অভিযান ব্যর্থ হয়। 
 
১৮৯৯: দ্বিতীয় বোয়ার যুদ্ধের শুরু। ব্রিটিশ সাম্রাজ্য এবং ট্রান্সভাল প্রজাতন্ত্র ও অরেঞ্জ ফ্রি স্টেট নামে পরিচিত দুটি বোয়ার রাজ্যের মধ্যে লড়াই শুরু হয়। উইটওয়াটারসরান্ড সোনার খনি থেকে অর্জিত লাভ এবং আগের পুঞ্জীভূত বঞ্চনার শতাব্দী পুরোনো ক্ষোভ দুই শক্তিকে দ্বন্দ্বে ঠেলে দেয়। 

১৯১৭: বেলফোর ঘোষণার মাধ্যমে ফিলিস্তিনে ‘ইহুদি জনগণের জন্য ঘর’: এর জায়োনিস্ট দাবির প্রতি সমর্থন ঘোষণা করে ব্রিটেন। 

১৯৩১: ওয়েস্টমিনস্টারের সংবিধি ডোমিনিয়নগুলোকে (ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অধীন স্বশাসিত রাষ্ট্র) সাংবিধানিক স্বায়ত্তশাসন দেয়। 

১৯৪৭: ভারতের স্বাধীনতার ঘোষণা এবং ভারত ও পাকিস্তানের বিভাজন। 

১৯৪৮: ফিলিস্তিন থেকে ব্রিটিশ সেনা প্রত্যাহার। 

১৯৫২: কেনিয়ায় শ্বেতাঙ্গ ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে করে মাউ মাউ বিদ্রোহ শুরু হয়। 

১৯২১ সালে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের সূর্য ছিল মধ্যগগনে। এরপর ক্রমেই অস্তমিত হয়েছে।১৯৫৬: সুদান স্বাধীনতা লাভ করে। পরের বছর ঘানা তাদের অনুসরণ করে। আফ্রিকার মূল ভূখণ্ডজুড়ে একের পর এক ব্রিটিশ উপনিবেশ পরের দশকে স্বাধীনতা ঘোষণা করে, যার সমাপ্তি ঘটে ১৯৬৬ সালে। একটি ব্যতিক্রম ছিল নামিবিয়া, তারা ১৯৯০ সালে স্বাধীনতা অর্জন করে। পরবর্তী দশকগুলোতে বিশ্বজুড়ে আরও অনেক দেশ স্বাধীনতা অর্জনের আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করে। কিছু দেশ নির্দিষ্ট তারিখে ঔপনিবেশিক শাসন ত্যাগ করে এবং অন্যরা ডমিনিয়ন হিসেবে দীর্ঘ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জন করে। ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের ভাঙন বিংশ শতাব্দীর ভূগোলের চেহারা বদলে দেয় এবং বিশ্ব সম্পর্কের একটি নতুন যুগের সূচনা করে। 

১৯৭২: এশিয়ানদের উগান্ডা থেকে বহিষ্কার করা হয়। 

১৯৮২: ফকল্যান্ডস যুদ্ধ। ফকল্যান্ডস যুদ্ধ ছিল আর্জেন্টিনা এবং যুক্তরাজ্যের মধ্যে দশ সপ্তাহের অঘোষিত যুদ্ধ। দক্ষিণ আটলান্টিকের দুটি ব্রিটিশ উপনিবেশ: ফকল্যান্ড দ্বীপপুঞ্জ, দক্ষিণ জর্জিয়া এবং দক্ষিণ স্যান্ডউইচ দ্বীপপুঞ্জের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে এ যুদ্ধ বাঁধে। 

১৯৯৭: হংকং চীনা সরকারের কাছে ফিরিয়ে দেয় যুক্তরাজ্য। 

বর্তমানে যে অবস্থায় আছে 
ব্রিটেন এবং কমনওয়েলথ জাতিসমূহ। ব্রিটিশ সাম্রাজ্য শত শত বছর ধরে প্রাণ: প্রকৃতি, মানুষ, ভ্রমণ, অর্থনীতি, প্রযুক্তি, রাজনীতি এবং সংস্কৃতি গঠনে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রভাবক ছিল। ভালো হোক বা খারাপ হোক, ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের প্রভাব ইতিহাসের বইয়ে জায়গা করে নিয়েছে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জাপানের পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের চেষ্টাকে প্রতিহতের ঘোষণা উত্তর কোরিয়ার

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উন। ছবি: এএফপি
উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উন। ছবি: এএফপি

জাপানের পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের যে কোনো প্রচেষ্টা কঠোরভাবে প্রতিহত করার হুঁশিয়ারি দিয়েছে উত্তর কোরিয়া। দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম কেসিএনএ রোববার (২১ ডিসেম্বর) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, জাপানের পারমাণবিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা যে কোনো মূল্যে রোধ করা উচিত, কারণ এটি মানবজাতির জন্য ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।

উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন ‘ইনস্টিটিউট ফর জাপান স্টাডিজ’-এর পরিচালক এক বিবৃতিতে বলেন, জাপানের পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের চেষ্টা শুধু এশিয়া নয়, পুরো বিশ্বের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করবে। তাঁর ভাষায়, ‘জাপানের পারমাণবিক হওয়ার প্রচেষ্টা মানবজাতির জন্য এক মহাবিপর্যয় বয়ে আনবে।’

যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, উত্তর কোরিয়ার এই প্রতিক্রিয়ার পেছনে রয়েছে জাপানের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক কর্মকর্তার সাম্প্রতিক মন্তব্য। জাপানের বার্তা সংস্থা কিয়োদো নিউজের খবরে বলা হয়, ওই কর্মকর্তা প্রকাশ্যে বলেছেন, টোকিওর পারমাণবিক অস্ত্র রাখা উচিত।

এই প্রেক্ষাপটে উত্তর কোরিয়া দাবি করেছে, এটি কোনো বিচ্ছিন্ন বা বেপরোয়া মন্তব্য নয়; বরং জাপানের বহুদিনের পারমাণবিক অস্ত্রায়নের আকাঙ্ক্ষারই প্রতিফলন।

উত্তর কোরিয়ার মতে, জাপান তাদের তথাকথিত ‘অ-পারমাণবিক নীতি’ পুনর্বিবেচনার কথা বলে কার্যত একটি ‘লাল রেখা’ অতিক্রম করেছে। বিবৃতিতে বলা হয়, জাপানের কর্মকর্তাদের মন্তব্যগুলোই বলে দিচ্ছে, টোকিও এখন প্রকাশ্যেই পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের বাসনা জানাচ্ছে।

উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম আরও দাবি করেছে, যুক্তরাষ্ট্র যখন গত অক্টোবরে দক্ষিণ কোরিয়াকে একটি পারমাণবিক সাবমেরিন নির্মাণের অনুমোদন দেয়, তার পরপরই জাপানে এই ধরনের বক্তব্য জোরালো হতে শুরু করে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি জে মিয়ংয়ের সঙ্গে বাণিজ্য ও নিরাপত্তা ইস্যুতে শীর্ষ বৈঠকের পর ওই অনুমোদন দিয়েছিলেন।

উত্তর কোরিয়ার ওই কর্মকর্তা সতর্ক করে বলেন—জাপান যদি পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করে, তবে এশিয়া ভয়াবহ পারমাণবিক বিপর্যয়ের মুখে পড়বে। তবে তিনি পিয়ংইয়ংয়ের নিজস্ব পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।

ধারণা করা হয়, উত্তর কোরিয়া নিজেই একটি ক্রমবর্ধমান পারমাণবিক অস্ত্রভান্ডারের অধিকারী। আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা ও নিরস্ত্রীকরণের আহ্বান থাকার পরও দেশটি তার পারমাণবিক সক্ষমতা বজায় রাখা ও সম্প্রসারণের ঘোষণা দিয়ে আসছে। গত সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘে দেওয়া ভাষণে উত্তর কোরিয়ার উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী কিম সন গিয়ং বলেন—পারমাণবিক অস্ত্র তাদের রাষ্ট্রীয় আইন, জাতীয় নীতি এবং সার্বভৌম অধিকারের অংশ, যা তারা কোনো পরিস্থিতিতেই ত্যাগ করবে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভেনেজুয়েলার আরও একটি তেলের ট্যাংকার ধাওয়া করছে মার্কিন বাহিনী

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩: ১৪
ক্যারিবিয়ান সাগরে পানামা পতাকাবাহী সেঞ্চুরি নামের একটি তেলবাহী জাহাজের ওপর মার্কিন সামরিক বাহিনীর টহল। ছবি: রয়টার্সের সৌজন্যে
ক্যারিবিয়ান সাগরে পানামা পতাকাবাহী সেঞ্চুরি নামের একটি তেলবাহী জাহাজের ওপর মার্কিন সামরিক বাহিনীর টহল। ছবি: রয়টার্সের সৌজন্যে

ভেনেজুয়েলা উপকূলে আন্তর্জাতিক জলসীমায় আরও একটি তেলের ট্যাংকার ধাওয়া করছে মার্কিন কোস্ট গার্ড। আজ রোববার (২১ ডিসেম্বর) তিনজন মার্কিন কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এটি সফল হলে এক সপ্তাহের মধ্যে ভেনেজুয়েলাসংশ্লিষ্ট তিনটি তেলবাহী জাহাজ জব্দ করার ঘটনা ঘটবে।

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত সপ্তাহে ভেনেজুয়েলার ওপর ‘সর্বাত্মক নৌ অবরোধ’ ঘোষণার পর থেকে এই চিরুনি অভিযান শুরু হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মার্কিন কোস্ট গার্ড বর্তমানে একটি তেল ট্যাংকারকে ধাওয়া করছে। তবে অভিযানের সুনির্দিষ্ট অবস্থান বা জাহাজটির পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।

এই অভিযান নিয়ে হোয়াইট হাউস বা পেন্টাগন থেকে তাৎক্ষণিক কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

হোয়াইট হাউসের ন্যাশনাল ইকোনমিক কাউন্সিলের ডিরেক্টর কেভিন হ্যাসেট আজ জানিয়েছেন, এর আগে জব্দ করা দুটি ট্যাংকার ‘ব্ল্যাক মার্কেট’ বা কালোবাজারের মাধ্যমে বিভিন্ন নিষিদ্ধ দেশে তেল সরবরাহ করছিল।

কেভিন হ্যাসেট দাবি করেছেন, এই আটকের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রে তেলের দাম বাড়ার কোনো কারণ নেই। তাঁর মতে, এগুলো বিচ্ছিন্ন ঘটনা এবং কেবল কালোবাজারি জাহাজগুলোকেই লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে।

তবে বাজার বিশ্লেষক ও তেল ব্যবসায়ীরা ভিন্নমত পোষণ করছেন। একজন তেল ব্যবসায়ী রয়টার্সকে বলেন, এই ধরনের পদক্ষেপ ভূরাজনৈতিক ঝুঁকি বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়। আগামীকাল সোমবার এশিয়ার বাজারে তেলের দাম বাড়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। তবে ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ হওয়ার সম্ভাবনা তেলের দামের এই ঊর্ধ্বগতিকে কিছুটা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে।

গত সেপ্টেম্বর থেকে প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর ওপর চাপ বাড়াতে ট্রাম্প প্রশাসন এই অঞ্চলে সামরিক উপস্থিতি কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। গত কয়েক মাসে প্রশান্ত মহাসাগর ও ক্যারিবিয়ান সাগরে ভেনেজুয়েলাসংশ্লিষ্ট ভেসেলগুলোর ওপর অন্তত দুই ডজন সামরিক হামলা চালানো হয়েছে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের তথ্যমতে, এসব সামরিক অভিযানে এখন পর্যন্ত অন্তত ১০০ জন নিহত হয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভেনেজুয়েলায় মার্কিন হস্তক্ষেপ নিয়ে সতর্ক করলেন লুলা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা। ছবি: সংগৃহীত
ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা। ছবি: সংগৃহীত

ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রমবর্ধমান চাপ ও সম্ভাব্য সামরিক পদক্ষেপ ‘ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়’ ডেকে আনবে বলে সতর্ক করেছেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা। তিনি মত দিয়েছেন, ভেনেজুয়েলায় কোনো ধরনের সশস্ত্র হস্তক্ষেপ শুধু ওই দেশের জন্য নয়, বরং পুরো পৃথিবীর জন্যই এক বিপজ্জনক দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।

ব্রাজিলের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর ফোজ দো ইগুয়াসুতে দক্ষিণ আমেরিকার আঞ্চলিক জোট ‘মারকোসুর’-এর শীর্ষ সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে লুলা এই মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘ভেনেজুয়েলায় সশস্ত্র হস্তক্ষেপ একটি মানবিক বিপর্যয়ে রূপ নেবে। এটি এমন একটি নজির সৃষ্টি করবে, যা বৈশ্বিক স্থিতিশীলতার জন্য মারাত্মক হুমকি।’

এ বিষয়ে এক প্রতিবেদনে রোববার (২১ ডিসেম্বর) রয়টার্স জানিয়েছে, ভেনেজুয়েলা ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে উত্তেজনা সম্প্রতি আরও বেড়েছে। গত মঙ্গলবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভেনেজুয়েলায় যাতায়াতকারী সব নিষেধাজ্ঞাভুক্ত তেলবাহী জাহাজের ওপর ‘অবরোধ’ আরোপের নির্দেশ দেন। ওয়াশিংটনের এই পদক্ষেপকে নিকোলাস মাদুরো সরকারের ওপর চাপ বাড়ানোর নতুন কৌশল হিসেবে দেখা হচ্ছে। ভেনেজুয়েলার অর্থনীতির প্রধান চালিকাশক্তি তেল খাতকে লক্ষ্য করেই এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

লুলা স্মরণ করিয়ে দেন, ফকল্যান্ডস যুদ্ধের চার দশকেরও বেশি সময় পর দক্ষিণ আমেরিকা আবারও অন্য মহাদেশীয় কোনো শক্তির সামরিক উপস্থিতির আশঙ্কায় ভুগছে। তিনি বলেন, ‘দক্ষিণ আমেরিকা আবার এমন এক ভূতের ছায়ায় পড়ছে, যেখানে এই অঞ্চলের বাইরে থেকে আসা সামরিক শক্তি আমাদের শান্তিকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।’

চলতি সপ্তাহের শুরুতেই লাতিন আমেরিকার দুই বৃহত্তম অর্থনীতির শীর্ষ নেতা ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা দ্য সিলভা এবং মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লাউদিয়া শেইনবাউম ভেনেজুয়েলা পরিস্থিতিতে সংযম দেখানোর আহ্বান জানিয়েছিলেন। তবে গত শনিবারের বক্তব্যে লুলা আরও কঠোর দেখিয়েছেন।

‘মারকোসুর’ সম্মেলন শেষে দেওয়া এক যৌথ ঘোষণায় লাতিন আমেরিকার নেতারা ভেনেজুয়েলায় গণতান্ত্রিক নীতি ও মানবাধিকার রক্ষায় শান্তিপূর্ণ পথেই অগ্রসর হওয়ার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। এই ঘোষণায় আর্জেন্টিনা, প্যারাগুয়ে ও পানামার প্রেসিডেন্টদের পাশাপাশি বলিভিয়া, ইকুয়েডর ও পেরুর শীর্ষ কর্মকর্তারাও সমর্থন জানান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ট্রেনের ভাড়া বাড়ছে ভারতেও

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
২৬ ডিসেম্বর থেকে ট্রেনের ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারতের রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। ছবি: সংগৃহীত
২৬ ডিসেম্বর থেকে ট্রেনের ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারতের রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। ছবি: সংগৃহীত

ভারতেও ট্রেনের ভাড়া বাড়ছে। পকেটে টান পড়তে যাচ্ছে সাধারণ যাত্রীদের। ২৬ ডিসেম্বর থেকে ট্রেনের ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। তবে স্বস্তির খবর হলো, লোকাল ট্রেনের ভাড়া অপরিবর্তিত থাকছে। মূলত দূরপাল্লার যাত্রীদের জন্যই এই বাড়তি ভাড়া কার্যকর হবে।

ভারতের রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের ঘোষণা অনুযায়ী, ভ্রমণের দূরত্ব ও কোচের ধরনভেদে নতুন ভাড়ার হার নির্ধারিত হবে। ২১৫ কিলোমিটার পর্যন্ত সাধারণ শ্রেণিতে ভাড়ায় কোনো পরিবর্তন নেই। তবে ২১৫ কিলোমিটারের বেশি দূরত্বের ক্ষেত্রে প্রতি কিলোমিটারে এক পয়সা করে ভাড়া বাড়বে।

মেল বা এক্সপ্রেস ট্রেনের (নন-এসি) যাত্রীদের জন্য প্রতি কিলোমিটারে ভাড়া বাড়বে দুই পয়সা। এসি কোচ বা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কোচের ক্ষেত্রেও কিলোমিটার প্রতি দুই পয়সা ভাড়া বাড়ানো হয়েছে।

তবে যদি কোনো যাত্রী নন-এসি কোচে ৫০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেন, নতুন নিয়ম অনুযায়ী তাঁকে আগের চেয়ে ১০ রুপি বেশি ভাড়া দিতে হবে।

কেন এই ভাড়া বৃদ্ধি

রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গত এক দশকে রেলপথ সম্প্রসারণের ফলে জনবল এবং অন্যান্য ব্যয় বহুগুণ বেড়েছে। রেলওয়ের বর্তমান জনবল ব্যয় দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১৫ হাজার কোটি রুপিতে এবং পেনশনের পেছনে খরচ হচ্ছে ৬০ হাজার কোটি রুপি। সব মিলিয়ে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে মোট পরিচালনা ব্যয় বেড়ে হয়েছে ২ লাখ ৬৩ হাজার কোটি রুপি।

যাত্রীদের ভাড়া ও পণ্য পরিবহনের মাধ্যমে খরচ সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছে রেলওয়ে। এর আগে গত জুলাই মাসেও ভাড়া বাড়ানো হয়েছিল (নন-এসিতে এক পয়সা ও এসিতে দুই পয়সা)। তারও আগে ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি বড় ধরনের ভাড়া বৃদ্ধি কার্যকর করা হয়েছিল, যেখানে এসি কোচে ভাড়া বেড়েছিল কিলোমিটার প্রতি চার পয়সা পর্যন্ত।

রেলওয়ে কর্মকর্তাদের মতে, উন্নত সেবা এবং ক্রমবর্ধমান ব্যয় মেটাতে এই সামান্য ভাড়া বৃদ্ধি অপরিহার্য হয়ে পড়েছিল। কর্তৃপক্ষ আশা করছে, এই ভাড়া বৃদ্ধির ফলে রেলওয়ের বার্ষিক আয় প্রায় ৬০০ কোটি রুপি বাড়বে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত