কামরুল হাসান

মিন্টো রোডের ডিবি অফিসের পুরোনো ভবনে ঢুকতেই একটি কাঠের সিঁড়ি ওপরে উঠে গেছে। সিঁড়ির মুখ থেকে বাঁয়ে ঘুরলে ডানে ছোট একটি হাজতখানা। দরজায় লোহার গ্রিল দেওয়া, বাইরে থেকে ভেতরের সবকিছুই দেখা যায়। সেটা পার হলেই একটি কক্ষ, সেখানে বসেন ডিসি সৈয়দ বজলুল করিম, যিনি সবার কাছে পরিচিত ‘বি করিম’ নামে।
ডিবি অফিসের ফটকে তখন এত কড়াকড়ি ছিল না। আমরা যেতাম বিনা বাধায়, কোনো রকম আগাম অনুমতি ছাড়াই। তো একদিন দুপুরে গিয়ে দেখি, সেই হাজতখানার খালি মেঝেতে ইয়া লম্বা এক লোক শুয়ে গুনগুন করে গান গাইছেন। তাঁর পরনে টি-শার্ট আর হাফপ্যান্ট। হাজতের আশপাশে কেউ নেই। উল্টো দিকে একটি পুরোনো সোফায় এক পুলিশ সদস্য বসে কী যেন পড়ছেন। শুয়ে থাকা লোকটার মুখ দেয়ালের দিকে বলে প্রথমে চিনতে পারিনি। এগিয়ে গিয়ে তাকাতেই চমকে উঠি, ও মা! এ যে আজিজ মোহাম্মদ ভাই! মানে ধনকুবের আজিজ মোহাম্মদ ভাই।
এ ঘটনা ১৯৯৯ সালের জানুয়ারির। তার আগে বলে রাখি, আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের সঙ্গে দেশের অনেক সাংবাদিকের পরিচয় ছিল বা আছে। নানা ঘটন-অঘটনে বরাবরই তিনি ছিলেন আলোচনায়। সংবাদের প্রয়োজনে আমরা অনেকবার তাঁর অফিসে বা বাসায় গিয়ে বক্তব্য নিয়েছি। সেই সুবাদে অনেকের মতো তিনি আমাকেও চিনতেন। সেই আজিজ মোহাম্মদ ভাইকে হাজতে দেখে বেশ অবাক হলাম। কিন্তু তিনি খুব স্বাভাবিক। আমাকে দেখে মৃদু হেসে বললেন, ‘কী মিয়া, তামাশা দেখছ, দেখো।’
এবার বলি, আজিজ মোহাম্মদ ভাই কেন হাজতে এলেন। ১৯৯৭-৯৮ সালের দিকে বনানীর ১৭ নম্বর রোডের আবদিন টাওয়ারে সাততলায় ‘ক্লাব ট্রাম্পস’ নামে একটি ডিসকো ক্লাব গড়ে উঠেছিল। সেটা করেছিলেন আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের চাচাশ্বশুর, আরেক আলোচিত ব্যবসায়ী বান্টি ইসলাম। সেই ক্লাবে ১৯৯৮ সালের ১৮ ডিসেম্বর খুন হন চিত্রনায়িকা দিতির স্বামী চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী। ক্লাবের ভেতরেই তাঁকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ নিয়ে গুলশান থানায় মামলা হয়। তদন্ত আসে ডিবিতে। সেই মামলায় ১৯৯৯ সালের ৩ জানুয়ারি গুলশান থেকে প্রথমে বান্টি ইসলামকে গ্রেপ্তার করে ডিবি।
তিন দিন পর ৬ জানুয়ারি গুলশান লেডিস পার্কের সামনে থেকে এসবির সহকারী পুলিশ সুপার খলিলুর রহমান গ্রেপ্তার করেন আজিজ মোহাম্মদ ভাইকে। পরে এসবি তাঁকে ডিবির কাছে হস্তান্তর করে। সোহেল চৌধুরী খুনের মামলায় বান্টি ও আজিজ মোহাম্মদ ভাই ছাড়া আরও আসামি ছিলেন তারিক সাঈদ মামুন, সেলিম খান, হারুন অর রশীদ ওরফে লেদার লিটন, ফারুক আব্বাসী, আশীষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতল চৌধুরী এবং শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমন। ১৯৯৯ সালের ৩০ জুলাই ডিবি পুলিশের সহকারী কমিশনার আবুল কাশেম ব্যাপারী ৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন। হাইকোর্টের আদেশে এই মামলার কার্যক্রম এখন অবধি স্থগিত আছে।
হাজতে বসে আজিজ মোহাম্মদ ভাই আমাকে বলেন, গ্রেপ্তারের প্রথম কয়েক দিন তাঁকে অন্য জায়গায় রাখা হয়েছিল। আজ তাঁকে ডিবির হাজতে আনা হয়েছে। ডিবির ডিসি বি করিম তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন কয়েক দফা। এটুকু বলতেই সামনে বসা কনস্টেবল এগিয়ে এসে বললেন, ‘ওনার সঙ্গে কথা বলতে মানা আছে।’
তখন সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলার ফলোআপ করতে আমরা প্রতিদিনই বি করিমের কাছে যেতাম। আজিজ মোহাম্মদ ভাইকে জিজ্ঞাসাবাদের ব্যাপারে তাঁকে নানা দরকারি-অদরকারি প্রশ্ন করতাম। বি করিমও বেশ রসিক মানুষ, বিরক্ত না হয়ে তিনি সব প্রশ্নের জবাব দিতেন। একদিন তিনি আমাকে সিলেটি ভাষায় বললেন, ‘তাইন তো খুন লইয়া কুনতা মাতইন না, খালি কুন পুরির লগে কিতা সম্পর্ক ইতা খালি ইনাইয়া-বিনাইয়া গফ করইন।’ (তিনি তো খুন নিয়ে কিছু বলেন না। শুধু কোন মেয়ের সঙ্গে কী সম্পর্ক, সেই গল্প ইনিয়ে-বিনিয়ে বলেন।)
আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের সঙ্গে আমাকে প্রথম পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন এক সিনে সাংবাদিক। তখন ৩৪ বিজয়নগর ঠিকানার ভবনটির নিচতলায় ছিল লাল-সবুজ পত্রিকার অফিস আর ওপরে এমবি ফ্লিমস। একদিন সেই সাংবাদিক আমাকে নিয়ে গেলেন আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে।
আমরা দুজন দোতলার একটি কক্ষে ঢুকে দেখি ইয়া মোটা এক লোকের পাশে বসে শ্যামলা রঙের হালকা-পাতলা এক তরুণী বয়স্ক লোকটার ডান হাতের আঙুল ফুটিয়ে দিচ্ছেন আর ‘দাদু দাদু’ করছেন। সাংবাদিক সাহেব সেই মোটা লোকটিকে দেখিয়ে বললেন, ইনিই চিত্রপরিচালক এহতেশাম। আর মেয়েটিকে দেখিয়ে বললেন, তাঁর নতুন ছবিতে নায়িকা হচ্ছেন, নাম শাবনূর। সিমেনার নাম ‘চাঁদনি রাতে’। পরে শুনেছি, ছবিটি ফ্লপ করেছিল।
এহতেশামের পাশের রুমে বসতেন সিনেমা প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান এমবি ফ্লিমসের মালিক আজিজ মোহাম্মদ ভাই। আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের সঙ্গে অনেকক্ষণ কথা হয়েছিল, যার বেশির ভাগই ছিল বিভিন্ন নায়িকা প্রসঙ্গে। তিনি কথা বলেন হেসে হেসে আর একটু পরপর নিভে যাওয়া চুরুটে আগুন দেন। তাঁর কথা বলার ধরন এবং চুরুট টানা আমার খুব পছন্দ হয়েছিল।
১৯৯৩-৯৪ সালের দিকে একটি টুথপেস্টের বিজ্ঞাপন খুব জনপ্রিয় হয়েছিল। সেই বিজ্ঞাপনের মডেল ছিলেন নওরিন ইসলাম নামে এক তরুণী। তাঁর বাবা ববি ইসলাম ইংরেজি দৈনিক মর্নিং সানের মালিক। ববি ইসলামের ছোট ভাই বান্টি ইসলাম ছিলেন আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের বন্ধু। ববির বাড়িতে যাতায়াতের সুবাদে বয়সের বিস্তর ব্যবধান থাকার পরও নওরিনের সঙ্গে আজিজ মোহাম্মদের সম্পর্ক তৈরি হয়। একপর্যায়ে পরিবারের অমতে আজিজ মোহাম্মদ ভাইকে বিয়ে করেন নওরিন। সেই সংসার এখনো আছে। নওরিন এখন তিন ছেলে ও দুই মেয়ের মা। তবে নওরিনকে বিয়ে করার আগে আজিজ মোহাম্মদ ভাই এক পাকিস্তানি তরুণীকে বিয়ে করেছিলেন।
যত দূর শুনেছি, ১৯৪৭-এ দেশভাগের পর আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের পরিবার ভারতের কানপুর থেকে পুরান ঢাকায় আসে। তাঁরা মূলত পারস্য বংশোদ্ভূত ‘শিয়া’ সম্প্রদায়ের লোক। আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের জন্ম ১৯৬২ সালে, আরমানিটোলায়। তাঁর বাবা মোহাম্মদ ভাই ইস্পাতের ব্যবসা শুরু করেন। ধীরে ধীরে অলিম্পিক ব্যাটারি, অলিম্পিক বলপেন, অলিম্পিক ব্রেড ও বিস্কুট, এমবি ফার্মাসিউটিক্যালস, এমবি ফিল্মসহ একাধিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। মোহাম্মদ ভাইয়ের বয়স হয়ে গেলে ব্যবসা দেখাশোনার দায়িত্ব পড়ে ছেলে আজিজ মোহাম্মদের ওপর। এতে খুব কম বয়সে তিনি বিপুল বিত্তের মালিক হন। সেই অর্থের একটি বিরাট অংশ নিজের ভোগবিলাসে ব্যয় করতে থাকেন। তাঁর গুলশানের বাড়িতে ছিল বিশাল একটি বার। সেখানে নিয়মিত পার্টি হতো। দেশের হোমরাচোমরারা সেই পার্টিতে যেতেন। দেশ ছাড়াও বোম্বের অভিনেতা-অভিনেত্রীরা আসতেন তাঁর বাড়িতে। একবার সেই বাড়ির পার্টিতে উপস্থিত অভিনেত্রী মুনমুন সেন ও মমতা কুলকার্নির ছবিও ছাপা হয়েছিল কাগজে। গুলশান-বনানীর অনেক তরুণী সেই পার্টিতে আসতেন উদ্ভট পোশাক পরে। শুনেছি, এসব পার্টিতে তিনি নিজে কখনো মদ পান করতেন না। পার্টির সময় চুরুট হাতে ঘুরে বেড়াতেন। সেসব পার্টিতে মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রদূতও আসতেন। আসতেন অনেক অচেনা মানুষ। এঁদের সঙ্গে আলাদা কথা বলতেন আজিজ মোহাম্মদ ভাই।
শোনা যায়, সেই সময় নামীদামি অনেক অভিনেত্রী ও তারকার সঙ্গে আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের বিশেষ সম্পর্ক ছিল। সেই গল্প রসিয়ে রসিয়ে করতেন আর বলতেন, মেয়েদের ‘মন জয়’ করতে তিনি দামি উপহার দিতেন।
আজিজ মোহাম্মদ একবার আমাকে বলেছিলেন, এক বান্ধবীকে নিয়ে এরশাদের সঙ্গে তাঁর অনেক ঝামেলা হয়। এরপর এরশাদ তাঁকে গ্রেপ্তার করিয়েছিলেন। পরে তাঁকে মুক্ত করতে প্রিন্স করিম আগা খান নিজে বাংলাদেশে আসেন।
ভোগবিলাস নিয়ে আজিজ ভাইয়ের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উঠলেও প্রথম খুনের অভিযোগ ওঠে জনপ্রিয় চিত্রনায়ক সালমান শাহ মারা যাওয়ার পর। সালমান শাহর মা অভিযোগ করেন, সালমানের স্ত্রী সামিরার সঙ্গে সম্পর্কের সুবাদে আজিজ ভাই তাঁর ছেলে সালমান শাহকে খুন করিয়েছেন। এ ঘটনার দুই বছর পর সোহেল চৌধুরী খুনের ঘটনায় গ্রেপ্তার হন তিনি। তবে তিনি সব সময় কিছু না কিছু করে আলোচনায় থাকতেন।
১৯৯৬ সালের শেয়ার কেলেঙ্কারির ঘটনায় পুঁজিবাজারবিষয়ক বিশেষ ট্রাইব্যুনাল তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। কিন্তু তাঁকে গ্রেপ্তার হতে হয়নি। এর আগে এটিভি নামে একটি স্যাটেলাইট চ্যানেল করেছিলেন তিনি। ব্যাংকক থেকে সেই চ্যানেল সম্প্রচার করা হতো। এ নিয়েও তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হলে চ্যানেলটি বন্ধ হয়ে যায়। সে সময় এসবি পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে। তবে খুনের মামলায় জামিন পাওয়ার পর তিনি আর দেশে থাকেননি। বিদেশে চলে যান, আর ফিরেও আসেননি।
আজিজ মোহাম্মদ ভাই দেশে না থাকলেও তাঁর আত্মীয়স্বজনও কম যান না। ২০০৭ সালে ইয়াবা ট্যাবলেট তৈরির জন্য তাঁর ভাতিজা আমিন হুদাকে র্যাব গ্রেপ্তার করে। সে সময় ইয়াবার সঙ্গে আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের নাম আসে। ২০১৩ সালে আমিন হুদার ৭৯ বছরের জেল হয়। পরে তিনি কারাগারে মারা যান।
২০১৯ সালের অক্টোবরে আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের গুলশানের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর বিপুল পরিমাণ মদের বোতল, সিসা ও ক্যাসিনোসামগ্রী উদ্ধার করে। ২০২১ সালের আগস্টে এনবিআর তাঁর যাবতীয় ব্যাংক হিসাব জব্দ করে।
আজিজ মোহাম্মদ ভাই এখন পরিবার নিয়ে থাইল্যান্ডে থাকেন। স্ত্রী নওরিন দেশে এসে ব্যবসা দেখেন। মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, হংকং ও সিঙ্গাপুরে আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের হোটেল ও রিসোর্ট আছে। শোনা যায়, মুম্বাইয়ের ডন দাউদ ইব্রাহিমের সঙ্গেও তাঁর ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ আছে। কিন্তু এসব নিয়ে আমি যতবার তাঁর কাছে জানতে চেয়েছি, তিনি বলেছেন, তাঁর বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগই ভিত্তিহীন; বরং মিডিয়াই তাঁকে ডন হিসেবে বারবার প্রতিষ্ঠিত করেছে।
জানি না, তাঁর বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ আদৌ সত্য কি না। হয়তো সময়ই বলে দেবে চমকে ঘেরা এই রহস্যময় লোকটি আসলেই কেমন।
আরও পড়ুন:

মিন্টো রোডের ডিবি অফিসের পুরোনো ভবনে ঢুকতেই একটি কাঠের সিঁড়ি ওপরে উঠে গেছে। সিঁড়ির মুখ থেকে বাঁয়ে ঘুরলে ডানে ছোট একটি হাজতখানা। দরজায় লোহার গ্রিল দেওয়া, বাইরে থেকে ভেতরের সবকিছুই দেখা যায়। সেটা পার হলেই একটি কক্ষ, সেখানে বসেন ডিসি সৈয়দ বজলুল করিম, যিনি সবার কাছে পরিচিত ‘বি করিম’ নামে।
ডিবি অফিসের ফটকে তখন এত কড়াকড়ি ছিল না। আমরা যেতাম বিনা বাধায়, কোনো রকম আগাম অনুমতি ছাড়াই। তো একদিন দুপুরে গিয়ে দেখি, সেই হাজতখানার খালি মেঝেতে ইয়া লম্বা এক লোক শুয়ে গুনগুন করে গান গাইছেন। তাঁর পরনে টি-শার্ট আর হাফপ্যান্ট। হাজতের আশপাশে কেউ নেই। উল্টো দিকে একটি পুরোনো সোফায় এক পুলিশ সদস্য বসে কী যেন পড়ছেন। শুয়ে থাকা লোকটার মুখ দেয়ালের দিকে বলে প্রথমে চিনতে পারিনি। এগিয়ে গিয়ে তাকাতেই চমকে উঠি, ও মা! এ যে আজিজ মোহাম্মদ ভাই! মানে ধনকুবের আজিজ মোহাম্মদ ভাই।
এ ঘটনা ১৯৯৯ সালের জানুয়ারির। তার আগে বলে রাখি, আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের সঙ্গে দেশের অনেক সাংবাদিকের পরিচয় ছিল বা আছে। নানা ঘটন-অঘটনে বরাবরই তিনি ছিলেন আলোচনায়। সংবাদের প্রয়োজনে আমরা অনেকবার তাঁর অফিসে বা বাসায় গিয়ে বক্তব্য নিয়েছি। সেই সুবাদে অনেকের মতো তিনি আমাকেও চিনতেন। সেই আজিজ মোহাম্মদ ভাইকে হাজতে দেখে বেশ অবাক হলাম। কিন্তু তিনি খুব স্বাভাবিক। আমাকে দেখে মৃদু হেসে বললেন, ‘কী মিয়া, তামাশা দেখছ, দেখো।’
এবার বলি, আজিজ মোহাম্মদ ভাই কেন হাজতে এলেন। ১৯৯৭-৯৮ সালের দিকে বনানীর ১৭ নম্বর রোডের আবদিন টাওয়ারে সাততলায় ‘ক্লাব ট্রাম্পস’ নামে একটি ডিসকো ক্লাব গড়ে উঠেছিল। সেটা করেছিলেন আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের চাচাশ্বশুর, আরেক আলোচিত ব্যবসায়ী বান্টি ইসলাম। সেই ক্লাবে ১৯৯৮ সালের ১৮ ডিসেম্বর খুন হন চিত্রনায়িকা দিতির স্বামী চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী। ক্লাবের ভেতরেই তাঁকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ নিয়ে গুলশান থানায় মামলা হয়। তদন্ত আসে ডিবিতে। সেই মামলায় ১৯৯৯ সালের ৩ জানুয়ারি গুলশান থেকে প্রথমে বান্টি ইসলামকে গ্রেপ্তার করে ডিবি।
তিন দিন পর ৬ জানুয়ারি গুলশান লেডিস পার্কের সামনে থেকে এসবির সহকারী পুলিশ সুপার খলিলুর রহমান গ্রেপ্তার করেন আজিজ মোহাম্মদ ভাইকে। পরে এসবি তাঁকে ডিবির কাছে হস্তান্তর করে। সোহেল চৌধুরী খুনের মামলায় বান্টি ও আজিজ মোহাম্মদ ভাই ছাড়া আরও আসামি ছিলেন তারিক সাঈদ মামুন, সেলিম খান, হারুন অর রশীদ ওরফে লেদার লিটন, ফারুক আব্বাসী, আশীষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতল চৌধুরী এবং শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমন। ১৯৯৯ সালের ৩০ জুলাই ডিবি পুলিশের সহকারী কমিশনার আবুল কাশেম ব্যাপারী ৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন। হাইকোর্টের আদেশে এই মামলার কার্যক্রম এখন অবধি স্থগিত আছে।
হাজতে বসে আজিজ মোহাম্মদ ভাই আমাকে বলেন, গ্রেপ্তারের প্রথম কয়েক দিন তাঁকে অন্য জায়গায় রাখা হয়েছিল। আজ তাঁকে ডিবির হাজতে আনা হয়েছে। ডিবির ডিসি বি করিম তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন কয়েক দফা। এটুকু বলতেই সামনে বসা কনস্টেবল এগিয়ে এসে বললেন, ‘ওনার সঙ্গে কথা বলতে মানা আছে।’
তখন সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলার ফলোআপ করতে আমরা প্রতিদিনই বি করিমের কাছে যেতাম। আজিজ মোহাম্মদ ভাইকে জিজ্ঞাসাবাদের ব্যাপারে তাঁকে নানা দরকারি-অদরকারি প্রশ্ন করতাম। বি করিমও বেশ রসিক মানুষ, বিরক্ত না হয়ে তিনি সব প্রশ্নের জবাব দিতেন। একদিন তিনি আমাকে সিলেটি ভাষায় বললেন, ‘তাইন তো খুন লইয়া কুনতা মাতইন না, খালি কুন পুরির লগে কিতা সম্পর্ক ইতা খালি ইনাইয়া-বিনাইয়া গফ করইন।’ (তিনি তো খুন নিয়ে কিছু বলেন না। শুধু কোন মেয়ের সঙ্গে কী সম্পর্ক, সেই গল্প ইনিয়ে-বিনিয়ে বলেন।)
আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের সঙ্গে আমাকে প্রথম পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন এক সিনে সাংবাদিক। তখন ৩৪ বিজয়নগর ঠিকানার ভবনটির নিচতলায় ছিল লাল-সবুজ পত্রিকার অফিস আর ওপরে এমবি ফ্লিমস। একদিন সেই সাংবাদিক আমাকে নিয়ে গেলেন আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে।
আমরা দুজন দোতলার একটি কক্ষে ঢুকে দেখি ইয়া মোটা এক লোকের পাশে বসে শ্যামলা রঙের হালকা-পাতলা এক তরুণী বয়স্ক লোকটার ডান হাতের আঙুল ফুটিয়ে দিচ্ছেন আর ‘দাদু দাদু’ করছেন। সাংবাদিক সাহেব সেই মোটা লোকটিকে দেখিয়ে বললেন, ইনিই চিত্রপরিচালক এহতেশাম। আর মেয়েটিকে দেখিয়ে বললেন, তাঁর নতুন ছবিতে নায়িকা হচ্ছেন, নাম শাবনূর। সিমেনার নাম ‘চাঁদনি রাতে’। পরে শুনেছি, ছবিটি ফ্লপ করেছিল।
এহতেশামের পাশের রুমে বসতেন সিনেমা প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান এমবি ফ্লিমসের মালিক আজিজ মোহাম্মদ ভাই। আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের সঙ্গে অনেকক্ষণ কথা হয়েছিল, যার বেশির ভাগই ছিল বিভিন্ন নায়িকা প্রসঙ্গে। তিনি কথা বলেন হেসে হেসে আর একটু পরপর নিভে যাওয়া চুরুটে আগুন দেন। তাঁর কথা বলার ধরন এবং চুরুট টানা আমার খুব পছন্দ হয়েছিল।
১৯৯৩-৯৪ সালের দিকে একটি টুথপেস্টের বিজ্ঞাপন খুব জনপ্রিয় হয়েছিল। সেই বিজ্ঞাপনের মডেল ছিলেন নওরিন ইসলাম নামে এক তরুণী। তাঁর বাবা ববি ইসলাম ইংরেজি দৈনিক মর্নিং সানের মালিক। ববি ইসলামের ছোট ভাই বান্টি ইসলাম ছিলেন আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের বন্ধু। ববির বাড়িতে যাতায়াতের সুবাদে বয়সের বিস্তর ব্যবধান থাকার পরও নওরিনের সঙ্গে আজিজ মোহাম্মদের সম্পর্ক তৈরি হয়। একপর্যায়ে পরিবারের অমতে আজিজ মোহাম্মদ ভাইকে বিয়ে করেন নওরিন। সেই সংসার এখনো আছে। নওরিন এখন তিন ছেলে ও দুই মেয়ের মা। তবে নওরিনকে বিয়ে করার আগে আজিজ মোহাম্মদ ভাই এক পাকিস্তানি তরুণীকে বিয়ে করেছিলেন।
যত দূর শুনেছি, ১৯৪৭-এ দেশভাগের পর আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের পরিবার ভারতের কানপুর থেকে পুরান ঢাকায় আসে। তাঁরা মূলত পারস্য বংশোদ্ভূত ‘শিয়া’ সম্প্রদায়ের লোক। আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের জন্ম ১৯৬২ সালে, আরমানিটোলায়। তাঁর বাবা মোহাম্মদ ভাই ইস্পাতের ব্যবসা শুরু করেন। ধীরে ধীরে অলিম্পিক ব্যাটারি, অলিম্পিক বলপেন, অলিম্পিক ব্রেড ও বিস্কুট, এমবি ফার্মাসিউটিক্যালস, এমবি ফিল্মসহ একাধিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। মোহাম্মদ ভাইয়ের বয়স হয়ে গেলে ব্যবসা দেখাশোনার দায়িত্ব পড়ে ছেলে আজিজ মোহাম্মদের ওপর। এতে খুব কম বয়সে তিনি বিপুল বিত্তের মালিক হন। সেই অর্থের একটি বিরাট অংশ নিজের ভোগবিলাসে ব্যয় করতে থাকেন। তাঁর গুলশানের বাড়িতে ছিল বিশাল একটি বার। সেখানে নিয়মিত পার্টি হতো। দেশের হোমরাচোমরারা সেই পার্টিতে যেতেন। দেশ ছাড়াও বোম্বের অভিনেতা-অভিনেত্রীরা আসতেন তাঁর বাড়িতে। একবার সেই বাড়ির পার্টিতে উপস্থিত অভিনেত্রী মুনমুন সেন ও মমতা কুলকার্নির ছবিও ছাপা হয়েছিল কাগজে। গুলশান-বনানীর অনেক তরুণী সেই পার্টিতে আসতেন উদ্ভট পোশাক পরে। শুনেছি, এসব পার্টিতে তিনি নিজে কখনো মদ পান করতেন না। পার্টির সময় চুরুট হাতে ঘুরে বেড়াতেন। সেসব পার্টিতে মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রদূতও আসতেন। আসতেন অনেক অচেনা মানুষ। এঁদের সঙ্গে আলাদা কথা বলতেন আজিজ মোহাম্মদ ভাই।
শোনা যায়, সেই সময় নামীদামি অনেক অভিনেত্রী ও তারকার সঙ্গে আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের বিশেষ সম্পর্ক ছিল। সেই গল্প রসিয়ে রসিয়ে করতেন আর বলতেন, মেয়েদের ‘মন জয়’ করতে তিনি দামি উপহার দিতেন।
আজিজ মোহাম্মদ একবার আমাকে বলেছিলেন, এক বান্ধবীকে নিয়ে এরশাদের সঙ্গে তাঁর অনেক ঝামেলা হয়। এরপর এরশাদ তাঁকে গ্রেপ্তার করিয়েছিলেন। পরে তাঁকে মুক্ত করতে প্রিন্স করিম আগা খান নিজে বাংলাদেশে আসেন।
ভোগবিলাস নিয়ে আজিজ ভাইয়ের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উঠলেও প্রথম খুনের অভিযোগ ওঠে জনপ্রিয় চিত্রনায়ক সালমান শাহ মারা যাওয়ার পর। সালমান শাহর মা অভিযোগ করেন, সালমানের স্ত্রী সামিরার সঙ্গে সম্পর্কের সুবাদে আজিজ ভাই তাঁর ছেলে সালমান শাহকে খুন করিয়েছেন। এ ঘটনার দুই বছর পর সোহেল চৌধুরী খুনের ঘটনায় গ্রেপ্তার হন তিনি। তবে তিনি সব সময় কিছু না কিছু করে আলোচনায় থাকতেন।
১৯৯৬ সালের শেয়ার কেলেঙ্কারির ঘটনায় পুঁজিবাজারবিষয়ক বিশেষ ট্রাইব্যুনাল তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। কিন্তু তাঁকে গ্রেপ্তার হতে হয়নি। এর আগে এটিভি নামে একটি স্যাটেলাইট চ্যানেল করেছিলেন তিনি। ব্যাংকক থেকে সেই চ্যানেল সম্প্রচার করা হতো। এ নিয়েও তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হলে চ্যানেলটি বন্ধ হয়ে যায়। সে সময় এসবি পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে। তবে খুনের মামলায় জামিন পাওয়ার পর তিনি আর দেশে থাকেননি। বিদেশে চলে যান, আর ফিরেও আসেননি।
আজিজ মোহাম্মদ ভাই দেশে না থাকলেও তাঁর আত্মীয়স্বজনও কম যান না। ২০০৭ সালে ইয়াবা ট্যাবলেট তৈরির জন্য তাঁর ভাতিজা আমিন হুদাকে র্যাব গ্রেপ্তার করে। সে সময় ইয়াবার সঙ্গে আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের নাম আসে। ২০১৩ সালে আমিন হুদার ৭৯ বছরের জেল হয়। পরে তিনি কারাগারে মারা যান।
২০১৯ সালের অক্টোবরে আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের গুলশানের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর বিপুল পরিমাণ মদের বোতল, সিসা ও ক্যাসিনোসামগ্রী উদ্ধার করে। ২০২১ সালের আগস্টে এনবিআর তাঁর যাবতীয় ব্যাংক হিসাব জব্দ করে।
আজিজ মোহাম্মদ ভাই এখন পরিবার নিয়ে থাইল্যান্ডে থাকেন। স্ত্রী নওরিন দেশে এসে ব্যবসা দেখেন। মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, হংকং ও সিঙ্গাপুরে আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের হোটেল ও রিসোর্ট আছে। শোনা যায়, মুম্বাইয়ের ডন দাউদ ইব্রাহিমের সঙ্গেও তাঁর ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ আছে। কিন্তু এসব নিয়ে আমি যতবার তাঁর কাছে জানতে চেয়েছি, তিনি বলেছেন, তাঁর বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগই ভিত্তিহীন; বরং মিডিয়াই তাঁকে ডন হিসেবে বারবার প্রতিষ্ঠিত করেছে।
জানি না, তাঁর বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ আদৌ সত্য কি না। হয়তো সময়ই বলে দেবে চমকে ঘেরা এই রহস্যময় লোকটি আসলেই কেমন।
আরও পড়ুন:
কামরুল হাসান

মিন্টো রোডের ডিবি অফিসের পুরোনো ভবনে ঢুকতেই একটি কাঠের সিঁড়ি ওপরে উঠে গেছে। সিঁড়ির মুখ থেকে বাঁয়ে ঘুরলে ডানে ছোট একটি হাজতখানা। দরজায় লোহার গ্রিল দেওয়া, বাইরে থেকে ভেতরের সবকিছুই দেখা যায়। সেটা পার হলেই একটি কক্ষ, সেখানে বসেন ডিসি সৈয়দ বজলুল করিম, যিনি সবার কাছে পরিচিত ‘বি করিম’ নামে।
ডিবি অফিসের ফটকে তখন এত কড়াকড়ি ছিল না। আমরা যেতাম বিনা বাধায়, কোনো রকম আগাম অনুমতি ছাড়াই। তো একদিন দুপুরে গিয়ে দেখি, সেই হাজতখানার খালি মেঝেতে ইয়া লম্বা এক লোক শুয়ে গুনগুন করে গান গাইছেন। তাঁর পরনে টি-শার্ট আর হাফপ্যান্ট। হাজতের আশপাশে কেউ নেই। উল্টো দিকে একটি পুরোনো সোফায় এক পুলিশ সদস্য বসে কী যেন পড়ছেন। শুয়ে থাকা লোকটার মুখ দেয়ালের দিকে বলে প্রথমে চিনতে পারিনি। এগিয়ে গিয়ে তাকাতেই চমকে উঠি, ও মা! এ যে আজিজ মোহাম্মদ ভাই! মানে ধনকুবের আজিজ মোহাম্মদ ভাই।
এ ঘটনা ১৯৯৯ সালের জানুয়ারির। তার আগে বলে রাখি, আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের সঙ্গে দেশের অনেক সাংবাদিকের পরিচয় ছিল বা আছে। নানা ঘটন-অঘটনে বরাবরই তিনি ছিলেন আলোচনায়। সংবাদের প্রয়োজনে আমরা অনেকবার তাঁর অফিসে বা বাসায় গিয়ে বক্তব্য নিয়েছি। সেই সুবাদে অনেকের মতো তিনি আমাকেও চিনতেন। সেই আজিজ মোহাম্মদ ভাইকে হাজতে দেখে বেশ অবাক হলাম। কিন্তু তিনি খুব স্বাভাবিক। আমাকে দেখে মৃদু হেসে বললেন, ‘কী মিয়া, তামাশা দেখছ, দেখো।’
এবার বলি, আজিজ মোহাম্মদ ভাই কেন হাজতে এলেন। ১৯৯৭-৯৮ সালের দিকে বনানীর ১৭ নম্বর রোডের আবদিন টাওয়ারে সাততলায় ‘ক্লাব ট্রাম্পস’ নামে একটি ডিসকো ক্লাব গড়ে উঠেছিল। সেটা করেছিলেন আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের চাচাশ্বশুর, আরেক আলোচিত ব্যবসায়ী বান্টি ইসলাম। সেই ক্লাবে ১৯৯৮ সালের ১৮ ডিসেম্বর খুন হন চিত্রনায়িকা দিতির স্বামী চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী। ক্লাবের ভেতরেই তাঁকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ নিয়ে গুলশান থানায় মামলা হয়। তদন্ত আসে ডিবিতে। সেই মামলায় ১৯৯৯ সালের ৩ জানুয়ারি গুলশান থেকে প্রথমে বান্টি ইসলামকে গ্রেপ্তার করে ডিবি।
তিন দিন পর ৬ জানুয়ারি গুলশান লেডিস পার্কের সামনে থেকে এসবির সহকারী পুলিশ সুপার খলিলুর রহমান গ্রেপ্তার করেন আজিজ মোহাম্মদ ভাইকে। পরে এসবি তাঁকে ডিবির কাছে হস্তান্তর করে। সোহেল চৌধুরী খুনের মামলায় বান্টি ও আজিজ মোহাম্মদ ভাই ছাড়া আরও আসামি ছিলেন তারিক সাঈদ মামুন, সেলিম খান, হারুন অর রশীদ ওরফে লেদার লিটন, ফারুক আব্বাসী, আশীষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতল চৌধুরী এবং শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমন। ১৯৯৯ সালের ৩০ জুলাই ডিবি পুলিশের সহকারী কমিশনার আবুল কাশেম ব্যাপারী ৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন। হাইকোর্টের আদেশে এই মামলার কার্যক্রম এখন অবধি স্থগিত আছে।
হাজতে বসে আজিজ মোহাম্মদ ভাই আমাকে বলেন, গ্রেপ্তারের প্রথম কয়েক দিন তাঁকে অন্য জায়গায় রাখা হয়েছিল। আজ তাঁকে ডিবির হাজতে আনা হয়েছে। ডিবির ডিসি বি করিম তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন কয়েক দফা। এটুকু বলতেই সামনে বসা কনস্টেবল এগিয়ে এসে বললেন, ‘ওনার সঙ্গে কথা বলতে মানা আছে।’
তখন সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলার ফলোআপ করতে আমরা প্রতিদিনই বি করিমের কাছে যেতাম। আজিজ মোহাম্মদ ভাইকে জিজ্ঞাসাবাদের ব্যাপারে তাঁকে নানা দরকারি-অদরকারি প্রশ্ন করতাম। বি করিমও বেশ রসিক মানুষ, বিরক্ত না হয়ে তিনি সব প্রশ্নের জবাব দিতেন। একদিন তিনি আমাকে সিলেটি ভাষায় বললেন, ‘তাইন তো খুন লইয়া কুনতা মাতইন না, খালি কুন পুরির লগে কিতা সম্পর্ক ইতা খালি ইনাইয়া-বিনাইয়া গফ করইন।’ (তিনি তো খুন নিয়ে কিছু বলেন না। শুধু কোন মেয়ের সঙ্গে কী সম্পর্ক, সেই গল্প ইনিয়ে-বিনিয়ে বলেন।)
আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের সঙ্গে আমাকে প্রথম পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন এক সিনে সাংবাদিক। তখন ৩৪ বিজয়নগর ঠিকানার ভবনটির নিচতলায় ছিল লাল-সবুজ পত্রিকার অফিস আর ওপরে এমবি ফ্লিমস। একদিন সেই সাংবাদিক আমাকে নিয়ে গেলেন আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে।
আমরা দুজন দোতলার একটি কক্ষে ঢুকে দেখি ইয়া মোটা এক লোকের পাশে বসে শ্যামলা রঙের হালকা-পাতলা এক তরুণী বয়স্ক লোকটার ডান হাতের আঙুল ফুটিয়ে দিচ্ছেন আর ‘দাদু দাদু’ করছেন। সাংবাদিক সাহেব সেই মোটা লোকটিকে দেখিয়ে বললেন, ইনিই চিত্রপরিচালক এহতেশাম। আর মেয়েটিকে দেখিয়ে বললেন, তাঁর নতুন ছবিতে নায়িকা হচ্ছেন, নাম শাবনূর। সিমেনার নাম ‘চাঁদনি রাতে’। পরে শুনেছি, ছবিটি ফ্লপ করেছিল।
এহতেশামের পাশের রুমে বসতেন সিনেমা প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান এমবি ফ্লিমসের মালিক আজিজ মোহাম্মদ ভাই। আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের সঙ্গে অনেকক্ষণ কথা হয়েছিল, যার বেশির ভাগই ছিল বিভিন্ন নায়িকা প্রসঙ্গে। তিনি কথা বলেন হেসে হেসে আর একটু পরপর নিভে যাওয়া চুরুটে আগুন দেন। তাঁর কথা বলার ধরন এবং চুরুট টানা আমার খুব পছন্দ হয়েছিল।
১৯৯৩-৯৪ সালের দিকে একটি টুথপেস্টের বিজ্ঞাপন খুব জনপ্রিয় হয়েছিল। সেই বিজ্ঞাপনের মডেল ছিলেন নওরিন ইসলাম নামে এক তরুণী। তাঁর বাবা ববি ইসলাম ইংরেজি দৈনিক মর্নিং সানের মালিক। ববি ইসলামের ছোট ভাই বান্টি ইসলাম ছিলেন আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের বন্ধু। ববির বাড়িতে যাতায়াতের সুবাদে বয়সের বিস্তর ব্যবধান থাকার পরও নওরিনের সঙ্গে আজিজ মোহাম্মদের সম্পর্ক তৈরি হয়। একপর্যায়ে পরিবারের অমতে আজিজ মোহাম্মদ ভাইকে বিয়ে করেন নওরিন। সেই সংসার এখনো আছে। নওরিন এখন তিন ছেলে ও দুই মেয়ের মা। তবে নওরিনকে বিয়ে করার আগে আজিজ মোহাম্মদ ভাই এক পাকিস্তানি তরুণীকে বিয়ে করেছিলেন।
যত দূর শুনেছি, ১৯৪৭-এ দেশভাগের পর আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের পরিবার ভারতের কানপুর থেকে পুরান ঢাকায় আসে। তাঁরা মূলত পারস্য বংশোদ্ভূত ‘শিয়া’ সম্প্রদায়ের লোক। আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের জন্ম ১৯৬২ সালে, আরমানিটোলায়। তাঁর বাবা মোহাম্মদ ভাই ইস্পাতের ব্যবসা শুরু করেন। ধীরে ধীরে অলিম্পিক ব্যাটারি, অলিম্পিক বলপেন, অলিম্পিক ব্রেড ও বিস্কুট, এমবি ফার্মাসিউটিক্যালস, এমবি ফিল্মসহ একাধিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। মোহাম্মদ ভাইয়ের বয়স হয়ে গেলে ব্যবসা দেখাশোনার দায়িত্ব পড়ে ছেলে আজিজ মোহাম্মদের ওপর। এতে খুব কম বয়সে তিনি বিপুল বিত্তের মালিক হন। সেই অর্থের একটি বিরাট অংশ নিজের ভোগবিলাসে ব্যয় করতে থাকেন। তাঁর গুলশানের বাড়িতে ছিল বিশাল একটি বার। সেখানে নিয়মিত পার্টি হতো। দেশের হোমরাচোমরারা সেই পার্টিতে যেতেন। দেশ ছাড়াও বোম্বের অভিনেতা-অভিনেত্রীরা আসতেন তাঁর বাড়িতে। একবার সেই বাড়ির পার্টিতে উপস্থিত অভিনেত্রী মুনমুন সেন ও মমতা কুলকার্নির ছবিও ছাপা হয়েছিল কাগজে। গুলশান-বনানীর অনেক তরুণী সেই পার্টিতে আসতেন উদ্ভট পোশাক পরে। শুনেছি, এসব পার্টিতে তিনি নিজে কখনো মদ পান করতেন না। পার্টির সময় চুরুট হাতে ঘুরে বেড়াতেন। সেসব পার্টিতে মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রদূতও আসতেন। আসতেন অনেক অচেনা মানুষ। এঁদের সঙ্গে আলাদা কথা বলতেন আজিজ মোহাম্মদ ভাই।
শোনা যায়, সেই সময় নামীদামি অনেক অভিনেত্রী ও তারকার সঙ্গে আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের বিশেষ সম্পর্ক ছিল। সেই গল্প রসিয়ে রসিয়ে করতেন আর বলতেন, মেয়েদের ‘মন জয়’ করতে তিনি দামি উপহার দিতেন।
আজিজ মোহাম্মদ একবার আমাকে বলেছিলেন, এক বান্ধবীকে নিয়ে এরশাদের সঙ্গে তাঁর অনেক ঝামেলা হয়। এরপর এরশাদ তাঁকে গ্রেপ্তার করিয়েছিলেন। পরে তাঁকে মুক্ত করতে প্রিন্স করিম আগা খান নিজে বাংলাদেশে আসেন।
ভোগবিলাস নিয়ে আজিজ ভাইয়ের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উঠলেও প্রথম খুনের অভিযোগ ওঠে জনপ্রিয় চিত্রনায়ক সালমান শাহ মারা যাওয়ার পর। সালমান শাহর মা অভিযোগ করেন, সালমানের স্ত্রী সামিরার সঙ্গে সম্পর্কের সুবাদে আজিজ ভাই তাঁর ছেলে সালমান শাহকে খুন করিয়েছেন। এ ঘটনার দুই বছর পর সোহেল চৌধুরী খুনের ঘটনায় গ্রেপ্তার হন তিনি। তবে তিনি সব সময় কিছু না কিছু করে আলোচনায় থাকতেন।
১৯৯৬ সালের শেয়ার কেলেঙ্কারির ঘটনায় পুঁজিবাজারবিষয়ক বিশেষ ট্রাইব্যুনাল তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। কিন্তু তাঁকে গ্রেপ্তার হতে হয়নি। এর আগে এটিভি নামে একটি স্যাটেলাইট চ্যানেল করেছিলেন তিনি। ব্যাংকক থেকে সেই চ্যানেল সম্প্রচার করা হতো। এ নিয়েও তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হলে চ্যানেলটি বন্ধ হয়ে যায়। সে সময় এসবি পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে। তবে খুনের মামলায় জামিন পাওয়ার পর তিনি আর দেশে থাকেননি। বিদেশে চলে যান, আর ফিরেও আসেননি।
আজিজ মোহাম্মদ ভাই দেশে না থাকলেও তাঁর আত্মীয়স্বজনও কম যান না। ২০০৭ সালে ইয়াবা ট্যাবলেট তৈরির জন্য তাঁর ভাতিজা আমিন হুদাকে র্যাব গ্রেপ্তার করে। সে সময় ইয়াবার সঙ্গে আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের নাম আসে। ২০১৩ সালে আমিন হুদার ৭৯ বছরের জেল হয়। পরে তিনি কারাগারে মারা যান।
২০১৯ সালের অক্টোবরে আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের গুলশানের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর বিপুল পরিমাণ মদের বোতল, সিসা ও ক্যাসিনোসামগ্রী উদ্ধার করে। ২০২১ সালের আগস্টে এনবিআর তাঁর যাবতীয় ব্যাংক হিসাব জব্দ করে।
আজিজ মোহাম্মদ ভাই এখন পরিবার নিয়ে থাইল্যান্ডে থাকেন। স্ত্রী নওরিন দেশে এসে ব্যবসা দেখেন। মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, হংকং ও সিঙ্গাপুরে আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের হোটেল ও রিসোর্ট আছে। শোনা যায়, মুম্বাইয়ের ডন দাউদ ইব্রাহিমের সঙ্গেও তাঁর ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ আছে। কিন্তু এসব নিয়ে আমি যতবার তাঁর কাছে জানতে চেয়েছি, তিনি বলেছেন, তাঁর বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগই ভিত্তিহীন; বরং মিডিয়াই তাঁকে ডন হিসেবে বারবার প্রতিষ্ঠিত করেছে।
জানি না, তাঁর বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ আদৌ সত্য কি না। হয়তো সময়ই বলে দেবে চমকে ঘেরা এই রহস্যময় লোকটি আসলেই কেমন।
আরও পড়ুন:

মিন্টো রোডের ডিবি অফিসের পুরোনো ভবনে ঢুকতেই একটি কাঠের সিঁড়ি ওপরে উঠে গেছে। সিঁড়ির মুখ থেকে বাঁয়ে ঘুরলে ডানে ছোট একটি হাজতখানা। দরজায় লোহার গ্রিল দেওয়া, বাইরে থেকে ভেতরের সবকিছুই দেখা যায়। সেটা পার হলেই একটি কক্ষ, সেখানে বসেন ডিসি সৈয়দ বজলুল করিম, যিনি সবার কাছে পরিচিত ‘বি করিম’ নামে।
ডিবি অফিসের ফটকে তখন এত কড়াকড়ি ছিল না। আমরা যেতাম বিনা বাধায়, কোনো রকম আগাম অনুমতি ছাড়াই। তো একদিন দুপুরে গিয়ে দেখি, সেই হাজতখানার খালি মেঝেতে ইয়া লম্বা এক লোক শুয়ে গুনগুন করে গান গাইছেন। তাঁর পরনে টি-শার্ট আর হাফপ্যান্ট। হাজতের আশপাশে কেউ নেই। উল্টো দিকে একটি পুরোনো সোফায় এক পুলিশ সদস্য বসে কী যেন পড়ছেন। শুয়ে থাকা লোকটার মুখ দেয়ালের দিকে বলে প্রথমে চিনতে পারিনি। এগিয়ে গিয়ে তাকাতেই চমকে উঠি, ও মা! এ যে আজিজ মোহাম্মদ ভাই! মানে ধনকুবের আজিজ মোহাম্মদ ভাই।
এ ঘটনা ১৯৯৯ সালের জানুয়ারির। তার আগে বলে রাখি, আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের সঙ্গে দেশের অনেক সাংবাদিকের পরিচয় ছিল বা আছে। নানা ঘটন-অঘটনে বরাবরই তিনি ছিলেন আলোচনায়। সংবাদের প্রয়োজনে আমরা অনেকবার তাঁর অফিসে বা বাসায় গিয়ে বক্তব্য নিয়েছি। সেই সুবাদে অনেকের মতো তিনি আমাকেও চিনতেন। সেই আজিজ মোহাম্মদ ভাইকে হাজতে দেখে বেশ অবাক হলাম। কিন্তু তিনি খুব স্বাভাবিক। আমাকে দেখে মৃদু হেসে বললেন, ‘কী মিয়া, তামাশা দেখছ, দেখো।’
এবার বলি, আজিজ মোহাম্মদ ভাই কেন হাজতে এলেন। ১৯৯৭-৯৮ সালের দিকে বনানীর ১৭ নম্বর রোডের আবদিন টাওয়ারে সাততলায় ‘ক্লাব ট্রাম্পস’ নামে একটি ডিসকো ক্লাব গড়ে উঠেছিল। সেটা করেছিলেন আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের চাচাশ্বশুর, আরেক আলোচিত ব্যবসায়ী বান্টি ইসলাম। সেই ক্লাবে ১৯৯৮ সালের ১৮ ডিসেম্বর খুন হন চিত্রনায়িকা দিতির স্বামী চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী। ক্লাবের ভেতরেই তাঁকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ নিয়ে গুলশান থানায় মামলা হয়। তদন্ত আসে ডিবিতে। সেই মামলায় ১৯৯৯ সালের ৩ জানুয়ারি গুলশান থেকে প্রথমে বান্টি ইসলামকে গ্রেপ্তার করে ডিবি।
তিন দিন পর ৬ জানুয়ারি গুলশান লেডিস পার্কের সামনে থেকে এসবির সহকারী পুলিশ সুপার খলিলুর রহমান গ্রেপ্তার করেন আজিজ মোহাম্মদ ভাইকে। পরে এসবি তাঁকে ডিবির কাছে হস্তান্তর করে। সোহেল চৌধুরী খুনের মামলায় বান্টি ও আজিজ মোহাম্মদ ভাই ছাড়া আরও আসামি ছিলেন তারিক সাঈদ মামুন, সেলিম খান, হারুন অর রশীদ ওরফে লেদার লিটন, ফারুক আব্বাসী, আশীষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতল চৌধুরী এবং শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমন। ১৯৯৯ সালের ৩০ জুলাই ডিবি পুলিশের সহকারী কমিশনার আবুল কাশেম ব্যাপারী ৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন। হাইকোর্টের আদেশে এই মামলার কার্যক্রম এখন অবধি স্থগিত আছে।
হাজতে বসে আজিজ মোহাম্মদ ভাই আমাকে বলেন, গ্রেপ্তারের প্রথম কয়েক দিন তাঁকে অন্য জায়গায় রাখা হয়েছিল। আজ তাঁকে ডিবির হাজতে আনা হয়েছে। ডিবির ডিসি বি করিম তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন কয়েক দফা। এটুকু বলতেই সামনে বসা কনস্টেবল এগিয়ে এসে বললেন, ‘ওনার সঙ্গে কথা বলতে মানা আছে।’
তখন সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলার ফলোআপ করতে আমরা প্রতিদিনই বি করিমের কাছে যেতাম। আজিজ মোহাম্মদ ভাইকে জিজ্ঞাসাবাদের ব্যাপারে তাঁকে নানা দরকারি-অদরকারি প্রশ্ন করতাম। বি করিমও বেশ রসিক মানুষ, বিরক্ত না হয়ে তিনি সব প্রশ্নের জবাব দিতেন। একদিন তিনি আমাকে সিলেটি ভাষায় বললেন, ‘তাইন তো খুন লইয়া কুনতা মাতইন না, খালি কুন পুরির লগে কিতা সম্পর্ক ইতা খালি ইনাইয়া-বিনাইয়া গফ করইন।’ (তিনি তো খুন নিয়ে কিছু বলেন না। শুধু কোন মেয়ের সঙ্গে কী সম্পর্ক, সেই গল্প ইনিয়ে-বিনিয়ে বলেন।)
আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের সঙ্গে আমাকে প্রথম পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন এক সিনে সাংবাদিক। তখন ৩৪ বিজয়নগর ঠিকানার ভবনটির নিচতলায় ছিল লাল-সবুজ পত্রিকার অফিস আর ওপরে এমবি ফ্লিমস। একদিন সেই সাংবাদিক আমাকে নিয়ে গেলেন আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে।
আমরা দুজন দোতলার একটি কক্ষে ঢুকে দেখি ইয়া মোটা এক লোকের পাশে বসে শ্যামলা রঙের হালকা-পাতলা এক তরুণী বয়স্ক লোকটার ডান হাতের আঙুল ফুটিয়ে দিচ্ছেন আর ‘দাদু দাদু’ করছেন। সাংবাদিক সাহেব সেই মোটা লোকটিকে দেখিয়ে বললেন, ইনিই চিত্রপরিচালক এহতেশাম। আর মেয়েটিকে দেখিয়ে বললেন, তাঁর নতুন ছবিতে নায়িকা হচ্ছেন, নাম শাবনূর। সিমেনার নাম ‘চাঁদনি রাতে’। পরে শুনেছি, ছবিটি ফ্লপ করেছিল।
এহতেশামের পাশের রুমে বসতেন সিনেমা প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান এমবি ফ্লিমসের মালিক আজিজ মোহাম্মদ ভাই। আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের সঙ্গে অনেকক্ষণ কথা হয়েছিল, যার বেশির ভাগই ছিল বিভিন্ন নায়িকা প্রসঙ্গে। তিনি কথা বলেন হেসে হেসে আর একটু পরপর নিভে যাওয়া চুরুটে আগুন দেন। তাঁর কথা বলার ধরন এবং চুরুট টানা আমার খুব পছন্দ হয়েছিল।
১৯৯৩-৯৪ সালের দিকে একটি টুথপেস্টের বিজ্ঞাপন খুব জনপ্রিয় হয়েছিল। সেই বিজ্ঞাপনের মডেল ছিলেন নওরিন ইসলাম নামে এক তরুণী। তাঁর বাবা ববি ইসলাম ইংরেজি দৈনিক মর্নিং সানের মালিক। ববি ইসলামের ছোট ভাই বান্টি ইসলাম ছিলেন আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের বন্ধু। ববির বাড়িতে যাতায়াতের সুবাদে বয়সের বিস্তর ব্যবধান থাকার পরও নওরিনের সঙ্গে আজিজ মোহাম্মদের সম্পর্ক তৈরি হয়। একপর্যায়ে পরিবারের অমতে আজিজ মোহাম্মদ ভাইকে বিয়ে করেন নওরিন। সেই সংসার এখনো আছে। নওরিন এখন তিন ছেলে ও দুই মেয়ের মা। তবে নওরিনকে বিয়ে করার আগে আজিজ মোহাম্মদ ভাই এক পাকিস্তানি তরুণীকে বিয়ে করেছিলেন।
যত দূর শুনেছি, ১৯৪৭-এ দেশভাগের পর আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের পরিবার ভারতের কানপুর থেকে পুরান ঢাকায় আসে। তাঁরা মূলত পারস্য বংশোদ্ভূত ‘শিয়া’ সম্প্রদায়ের লোক। আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের জন্ম ১৯৬২ সালে, আরমানিটোলায়। তাঁর বাবা মোহাম্মদ ভাই ইস্পাতের ব্যবসা শুরু করেন। ধীরে ধীরে অলিম্পিক ব্যাটারি, অলিম্পিক বলপেন, অলিম্পিক ব্রেড ও বিস্কুট, এমবি ফার্মাসিউটিক্যালস, এমবি ফিল্মসহ একাধিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। মোহাম্মদ ভাইয়ের বয়স হয়ে গেলে ব্যবসা দেখাশোনার দায়িত্ব পড়ে ছেলে আজিজ মোহাম্মদের ওপর। এতে খুব কম বয়সে তিনি বিপুল বিত্তের মালিক হন। সেই অর্থের একটি বিরাট অংশ নিজের ভোগবিলাসে ব্যয় করতে থাকেন। তাঁর গুলশানের বাড়িতে ছিল বিশাল একটি বার। সেখানে নিয়মিত পার্টি হতো। দেশের হোমরাচোমরারা সেই পার্টিতে যেতেন। দেশ ছাড়াও বোম্বের অভিনেতা-অভিনেত্রীরা আসতেন তাঁর বাড়িতে। একবার সেই বাড়ির পার্টিতে উপস্থিত অভিনেত্রী মুনমুন সেন ও মমতা কুলকার্নির ছবিও ছাপা হয়েছিল কাগজে। গুলশান-বনানীর অনেক তরুণী সেই পার্টিতে আসতেন উদ্ভট পোশাক পরে। শুনেছি, এসব পার্টিতে তিনি নিজে কখনো মদ পান করতেন না। পার্টির সময় চুরুট হাতে ঘুরে বেড়াতেন। সেসব পার্টিতে মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রদূতও আসতেন। আসতেন অনেক অচেনা মানুষ। এঁদের সঙ্গে আলাদা কথা বলতেন আজিজ মোহাম্মদ ভাই।
শোনা যায়, সেই সময় নামীদামি অনেক অভিনেত্রী ও তারকার সঙ্গে আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের বিশেষ সম্পর্ক ছিল। সেই গল্প রসিয়ে রসিয়ে করতেন আর বলতেন, মেয়েদের ‘মন জয়’ করতে তিনি দামি উপহার দিতেন।
আজিজ মোহাম্মদ একবার আমাকে বলেছিলেন, এক বান্ধবীকে নিয়ে এরশাদের সঙ্গে তাঁর অনেক ঝামেলা হয়। এরপর এরশাদ তাঁকে গ্রেপ্তার করিয়েছিলেন। পরে তাঁকে মুক্ত করতে প্রিন্স করিম আগা খান নিজে বাংলাদেশে আসেন।
ভোগবিলাস নিয়ে আজিজ ভাইয়ের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উঠলেও প্রথম খুনের অভিযোগ ওঠে জনপ্রিয় চিত্রনায়ক সালমান শাহ মারা যাওয়ার পর। সালমান শাহর মা অভিযোগ করেন, সালমানের স্ত্রী সামিরার সঙ্গে সম্পর্কের সুবাদে আজিজ ভাই তাঁর ছেলে সালমান শাহকে খুন করিয়েছেন। এ ঘটনার দুই বছর পর সোহেল চৌধুরী খুনের ঘটনায় গ্রেপ্তার হন তিনি। তবে তিনি সব সময় কিছু না কিছু করে আলোচনায় থাকতেন।
১৯৯৬ সালের শেয়ার কেলেঙ্কারির ঘটনায় পুঁজিবাজারবিষয়ক বিশেষ ট্রাইব্যুনাল তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। কিন্তু তাঁকে গ্রেপ্তার হতে হয়নি। এর আগে এটিভি নামে একটি স্যাটেলাইট চ্যানেল করেছিলেন তিনি। ব্যাংকক থেকে সেই চ্যানেল সম্প্রচার করা হতো। এ নিয়েও তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হলে চ্যানেলটি বন্ধ হয়ে যায়। সে সময় এসবি পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে। তবে খুনের মামলায় জামিন পাওয়ার পর তিনি আর দেশে থাকেননি। বিদেশে চলে যান, আর ফিরেও আসেননি।
আজিজ মোহাম্মদ ভাই দেশে না থাকলেও তাঁর আত্মীয়স্বজনও কম যান না। ২০০৭ সালে ইয়াবা ট্যাবলেট তৈরির জন্য তাঁর ভাতিজা আমিন হুদাকে র্যাব গ্রেপ্তার করে। সে সময় ইয়াবার সঙ্গে আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের নাম আসে। ২০১৩ সালে আমিন হুদার ৭৯ বছরের জেল হয়। পরে তিনি কারাগারে মারা যান।
২০১৯ সালের অক্টোবরে আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের গুলশানের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর বিপুল পরিমাণ মদের বোতল, সিসা ও ক্যাসিনোসামগ্রী উদ্ধার করে। ২০২১ সালের আগস্টে এনবিআর তাঁর যাবতীয় ব্যাংক হিসাব জব্দ করে।
আজিজ মোহাম্মদ ভাই এখন পরিবার নিয়ে থাইল্যান্ডে থাকেন। স্ত্রী নওরিন দেশে এসে ব্যবসা দেখেন। মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, হংকং ও সিঙ্গাপুরে আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের হোটেল ও রিসোর্ট আছে। শোনা যায়, মুম্বাইয়ের ডন দাউদ ইব্রাহিমের সঙ্গেও তাঁর ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ আছে। কিন্তু এসব নিয়ে আমি যতবার তাঁর কাছে জানতে চেয়েছি, তিনি বলেছেন, তাঁর বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগই ভিত্তিহীন; বরং মিডিয়াই তাঁকে ডন হিসেবে বারবার প্রতিষ্ঠিত করেছে।
জানি না, তাঁর বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ আদৌ সত্য কি না। হয়তো সময়ই বলে দেবে চমকে ঘেরা এই রহস্যময় লোকটি আসলেই কেমন।
আরও পড়ুন:

জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
৬ ঘণ্টা আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
৪ দিন আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২৩ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২৪ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
হাদিকে গুলির ঘটনায় মাস্ক পরা দুই তরুণ জড়িত বলে তাঁর সহযোদ্ধাদের সন্দেহ। তাঁদের দাবি, কয়েকদিন ধরে দুই তরুণ মাস্ক পরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হাদির সঙ্গে গণসংযোগে অংশ নিচ্ছেন। বার বার তাঁদের মাস্ক খুলতে বলা হলেও তাঁরা রাজি হননি। হাদিঘনিষ্ঠদের সন্দেহ, এই তরুণরা হাদিকে হত্যার উদ্দেশ্যে তাঁর গতিবিধি বোঝার জন্য তাঁর সঙ্গে যুক্ত হন।
দুজনের মধ্যে মাস্ক পরা একজন হাদির পাশে বসে আছে— এমন একটি ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই তাকে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ হিসেবে দেখিয়েছেন। তবে মাস্ক করা এই তরুণই যে হাদিকে গুলি করেছেন, কিংবা এই তরুণই যে ফয়সাল, তা নিশ্চিত করে বলছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে ‘সন্দেহভাজন’ হিসেবে শনাক্ত একজনের ছবি প্রকাশ করে ধরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ডিএমপির বিবৃতিতে বলা হয়, ‘শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিজয়নগর বক্স কালভার্ট এলাকায় মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তদের হামলায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদি গুরুতর আহত হন। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ হামলাকারীদের গ্রেফতারে রাজধানীতে জোর অভিযান পরিচালনা করছে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ছবির ব্যক্তিকে প্রাথমিকভাবে সনাক্ত করা গেছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ তাকে হন্য হয়ে খুঁজছে। উক্ত ব্যক্তি সম্পর্কে কোন তথ্য থাকলে বা তার সন্ধান পেলে দ্রুত নিম্নলিখিত মোবাইল নম্বর অথবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে পুলিশকে জানানোর জন্য বিনীত অনুরোধ করা হলো।’
পুলিশের বিবৃতিতে এই তরুণের নাম উল্লেখ করা না হলেও ছবি দেখে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ বলে আন্দাজ করা যায়। এই তরুণকেও আগে হাদীর সঙ্গে দেখা গেছে। তবে গত কয়েকদিন ধরে হাদির সঙ্গে গণসংযোগে থাকা মাস্ক পরা তরুণটিই ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ এমন কোনো তথ্য পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, গত ৯ ডিসেম্বর বাংলামোটর এলাকায় হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে গিয়ে হাদির পাশে বসে আলোচনা শুনেছিলেন ফয়সাল করিম। সেই আলোচনার ছবিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
ফয়সাল করিম নামের তরুণ কার্যক্রমনিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধঘোষিত সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ২০১৯ সালের ১১ মে ঘোষিত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তিনি সদস্য হন। তাঁর পুরো নাম ফয়সাল করিম দাউদ খান।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে গুলিবিদ্ধ হন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা–৮ সংসদীয় আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ওসমান হাদি। হাদিকে বহনকারী রিকশাকে অনুসরণ করে পেছন দিকে থেকে মোটরসাইকেলে এসে তাঁকে গুলি করে চলে যায় আততায়ীরা। হাদি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার নামে ওসমান হাদির প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন জায়গায় তাঁর সঙ্গে ফয়সাল করিমের কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেই ছবিগুলোতে থাকা ফয়সাল করিমের সঙ্গে মাস্ক পরা ব্যক্তির চেহারার কিছুটা সাদৃশ্য আছে। সেকারণে গুলি ছোড়ার ঘটনায় তাঁকে সন্দেহ করা হচ্ছে।
এর মধ্যেই দুপুরে ডিএমপি সন্দেহভাজনকে শনাক্তের কথা জানায় এবং ওসমান হাদিকে গুলি করা ব্যক্তিকে ধরিয়ে দিতে পারলে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

পেশাদারদের যোগাযোগমাধ্যম লিংকডইনে ফয়সাল করিমের নামে প্রোফাইল আছে। সেখানে তিনি নিজেকে অ্যাপল সফট আইটি, ওয়াইসিইউ টেকনোলজি ও এনলিস্ট ওয়ার্ক নামে তিন প্রতিষ্ঠানের মালিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
লিংকডইন প্রোফাইলের তথ্য অনুযায়ী, ফয়সাল করিম ২০১৩ সালে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটারবিজ্ঞানে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। পরে আরেকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি এমবিএ করেছেন বলে সেখানে উল্লেখ রয়েছে।
২০২৪ সালে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনকারীদের দমনে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা–কর্মীদের সঙ্গে মাঠে ছিলেন বলে ছাত্রলীগের সূত্র জানিয়েছে।
ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় নাম আসার পর ফয়সাল করিমের সঙ্গে আওয়ামী লীগ আমলে বাংলাদেশের দুইবারের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কিছু নেতার ছবি ফেসবুকে প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে হাদির সঙ্গে ঢাকা–৮ আসনে গণসংযোগ এবং বাংলামোটরে হাদির প্রতিষ্ঠিত ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারের আড্ডায় ফয়সালের অংশ নেওয়ার ছবিও ভাইরাল হয়েছে। অনেকে ধারণা করছেন, ফয়সাল করিম ওসমান হাদিকে বেশ কিছুদিন ধরে অনুসরণ করছিলেন।
২০১৬ সালে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সহযোগিতা ও সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে ‘ব্যাটল অব ৭১’ নামে একটি কম্পিউটার গেম তৈরি করেছিল ফয়সাল করিমের মালিকানাধীন ওয়াইসিইউ টেকনোলজি লিমিটেড। সে বছরের নভেম্বরে ওই গেমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বেসিসের তৎকালীন সভাপতি এবং পরে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারও উপস্থিত ছিলেন।
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘আসনভিত্তিক নির্বাচন পরিচালনা ও সমন্বয়ক কমিটি’ করেছিল কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। ঢাকা–১২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। এই আসনের সমন্বয়ক কমিটির সদস্য ছিলেন ফয়সাল করিম।
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর গত বছরের ২৮ অক্টোবর ঢাকার আদাবরের বাইতুল আমান হাউজিং সোসাইটি এলাকায় ব্রিটিশ কলাম্বিয়া স্কুলের চতুর্থ তলায় অফিসে অস্ত্রের মুখে ১৭ লাখ টাকা লুটের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় আদাবর থানার মামলার প্রধান আসামি ছিলেন ফয়সাল করিম।
মামলা হওয়ার কিছুদিন পর ৭ নভেম্বর আদাবর এলাকা থেকে ফয়সাল করিমকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তাঁর কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন ও পাঁচটি গুলিও উদ্ধার করা হয়। ওই মামলায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট থেকে জামিন পান ফয়সাল করিম। জামিনের সময়সীমা বাড়াতে গত ১২ আগস্ট আবারও আবেদন করলে হাইকোর্ট নতুন করে তাঁর এক বছরের জামিন মঞ্জুর করেন।
জামিনে থাকা অবস্থায় এবার তাঁর বিরুদ্ধে ওসমান হাদিকে গুলি করার অভিযোগ এল। এত অল্প সময়ের মধ্যে তিনি কীভাবে জামিন পেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। কারণ, কোনো অপরাধমূলক কাজের প্রমাণ না থাকলেও অভ্যুত্থানের পর শুধু মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা নিয়ে আলোচনা সভা করায় গ্রেপ্তার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাংবাদিকের জামিন বারবার নাকচ করা হয়েছিল। আর এ রকম লুটের ঘটনায় দুটি অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিকে এতো দ্রুত জামিন দেওয়া হলো কীভাবে, সেই প্রশ্ন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখন আলোচনা–সমালোচনায় সরব।

জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
হাদিকে গুলির ঘটনায় মাস্ক পরা দুই তরুণ জড়িত বলে তাঁর সহযোদ্ধাদের সন্দেহ। তাঁদের দাবি, কয়েকদিন ধরে দুই তরুণ মাস্ক পরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হাদির সঙ্গে গণসংযোগে অংশ নিচ্ছেন। বার বার তাঁদের মাস্ক খুলতে বলা হলেও তাঁরা রাজি হননি। হাদিঘনিষ্ঠদের সন্দেহ, এই তরুণরা হাদিকে হত্যার উদ্দেশ্যে তাঁর গতিবিধি বোঝার জন্য তাঁর সঙ্গে যুক্ত হন।
দুজনের মধ্যে মাস্ক পরা একজন হাদির পাশে বসে আছে— এমন একটি ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই তাকে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ হিসেবে দেখিয়েছেন। তবে মাস্ক করা এই তরুণই যে হাদিকে গুলি করেছেন, কিংবা এই তরুণই যে ফয়সাল, তা নিশ্চিত করে বলছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে ‘সন্দেহভাজন’ হিসেবে শনাক্ত একজনের ছবি প্রকাশ করে ধরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ডিএমপির বিবৃতিতে বলা হয়, ‘শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিজয়নগর বক্স কালভার্ট এলাকায় মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তদের হামলায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদি গুরুতর আহত হন। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ হামলাকারীদের গ্রেফতারে রাজধানীতে জোর অভিযান পরিচালনা করছে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ছবির ব্যক্তিকে প্রাথমিকভাবে সনাক্ত করা গেছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ তাকে হন্য হয়ে খুঁজছে। উক্ত ব্যক্তি সম্পর্কে কোন তথ্য থাকলে বা তার সন্ধান পেলে দ্রুত নিম্নলিখিত মোবাইল নম্বর অথবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে পুলিশকে জানানোর জন্য বিনীত অনুরোধ করা হলো।’
পুলিশের বিবৃতিতে এই তরুণের নাম উল্লেখ করা না হলেও ছবি দেখে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ বলে আন্দাজ করা যায়। এই তরুণকেও আগে হাদীর সঙ্গে দেখা গেছে। তবে গত কয়েকদিন ধরে হাদির সঙ্গে গণসংযোগে থাকা মাস্ক পরা তরুণটিই ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ এমন কোনো তথ্য পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, গত ৯ ডিসেম্বর বাংলামোটর এলাকায় হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে গিয়ে হাদির পাশে বসে আলোচনা শুনেছিলেন ফয়সাল করিম। সেই আলোচনার ছবিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
ফয়সাল করিম নামের তরুণ কার্যক্রমনিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধঘোষিত সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ২০১৯ সালের ১১ মে ঘোষিত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তিনি সদস্য হন। তাঁর পুরো নাম ফয়সাল করিম দাউদ খান।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে গুলিবিদ্ধ হন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা–৮ সংসদীয় আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ওসমান হাদি। হাদিকে বহনকারী রিকশাকে অনুসরণ করে পেছন দিকে থেকে মোটরসাইকেলে এসে তাঁকে গুলি করে চলে যায় আততায়ীরা। হাদি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার নামে ওসমান হাদির প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন জায়গায় তাঁর সঙ্গে ফয়সাল করিমের কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেই ছবিগুলোতে থাকা ফয়সাল করিমের সঙ্গে মাস্ক পরা ব্যক্তির চেহারার কিছুটা সাদৃশ্য আছে। সেকারণে গুলি ছোড়ার ঘটনায় তাঁকে সন্দেহ করা হচ্ছে।
এর মধ্যেই দুপুরে ডিএমপি সন্দেহভাজনকে শনাক্তের কথা জানায় এবং ওসমান হাদিকে গুলি করা ব্যক্তিকে ধরিয়ে দিতে পারলে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

পেশাদারদের যোগাযোগমাধ্যম লিংকডইনে ফয়সাল করিমের নামে প্রোফাইল আছে। সেখানে তিনি নিজেকে অ্যাপল সফট আইটি, ওয়াইসিইউ টেকনোলজি ও এনলিস্ট ওয়ার্ক নামে তিন প্রতিষ্ঠানের মালিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
লিংকডইন প্রোফাইলের তথ্য অনুযায়ী, ফয়সাল করিম ২০১৩ সালে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটারবিজ্ঞানে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। পরে আরেকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি এমবিএ করেছেন বলে সেখানে উল্লেখ রয়েছে।
২০২৪ সালে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনকারীদের দমনে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা–কর্মীদের সঙ্গে মাঠে ছিলেন বলে ছাত্রলীগের সূত্র জানিয়েছে।
ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় নাম আসার পর ফয়সাল করিমের সঙ্গে আওয়ামী লীগ আমলে বাংলাদেশের দুইবারের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কিছু নেতার ছবি ফেসবুকে প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে হাদির সঙ্গে ঢাকা–৮ আসনে গণসংযোগ এবং বাংলামোটরে হাদির প্রতিষ্ঠিত ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারের আড্ডায় ফয়সালের অংশ নেওয়ার ছবিও ভাইরাল হয়েছে। অনেকে ধারণা করছেন, ফয়সাল করিম ওসমান হাদিকে বেশ কিছুদিন ধরে অনুসরণ করছিলেন।
২০১৬ সালে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সহযোগিতা ও সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে ‘ব্যাটল অব ৭১’ নামে একটি কম্পিউটার গেম তৈরি করেছিল ফয়সাল করিমের মালিকানাধীন ওয়াইসিইউ টেকনোলজি লিমিটেড। সে বছরের নভেম্বরে ওই গেমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বেসিসের তৎকালীন সভাপতি এবং পরে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারও উপস্থিত ছিলেন।
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘আসনভিত্তিক নির্বাচন পরিচালনা ও সমন্বয়ক কমিটি’ করেছিল কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। ঢাকা–১২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। এই আসনের সমন্বয়ক কমিটির সদস্য ছিলেন ফয়সাল করিম।
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর গত বছরের ২৮ অক্টোবর ঢাকার আদাবরের বাইতুল আমান হাউজিং সোসাইটি এলাকায় ব্রিটিশ কলাম্বিয়া স্কুলের চতুর্থ তলায় অফিসে অস্ত্রের মুখে ১৭ লাখ টাকা লুটের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় আদাবর থানার মামলার প্রধান আসামি ছিলেন ফয়সাল করিম।
মামলা হওয়ার কিছুদিন পর ৭ নভেম্বর আদাবর এলাকা থেকে ফয়সাল করিমকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তাঁর কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন ও পাঁচটি গুলিও উদ্ধার করা হয়। ওই মামলায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট থেকে জামিন পান ফয়সাল করিম। জামিনের সময়সীমা বাড়াতে গত ১২ আগস্ট আবারও আবেদন করলে হাইকোর্ট নতুন করে তাঁর এক বছরের জামিন মঞ্জুর করেন।
জামিনে থাকা অবস্থায় এবার তাঁর বিরুদ্ধে ওসমান হাদিকে গুলি করার অভিযোগ এল। এত অল্প সময়ের মধ্যে তিনি কীভাবে জামিন পেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। কারণ, কোনো অপরাধমূলক কাজের প্রমাণ না থাকলেও অভ্যুত্থানের পর শুধু মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা নিয়ে আলোচনা সভা করায় গ্রেপ্তার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাংবাদিকের জামিন বারবার নাকচ করা হয়েছিল। আর এ রকম লুটের ঘটনায় দুটি অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিকে এতো দ্রুত জামিন দেওয়া হলো কীভাবে, সেই প্রশ্ন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখন আলোচনা–সমালোচনায় সরব।

ডিবি অফিসের ফটকে তখন এত কড়াকড়ি ছিল না। আমরা যেতাম বিনা বাধায়, কোনো রকম আগাম অনুমতি ছাড়াই। তো একদিন দুপুরে গিয়ে দেখি, সেই হাজতখানার খালি মেঝেতে ইয়া লম্বা এক লোক শুয়ে গুনগুন করে গান গাইছেন। তাঁর পরনে টি-শার্ট আর হাফপ্যান্ট। হাজতের আশপাশে কেউ নেই। উল্টো দিকে
১৮ ডিসেম্বর ২০২১
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
৪ দিন আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২৩ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২৪ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় করা হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
স্ত্রী লায়লা আফরোজ (৪৮) ও মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫) হত্যার ঘটনায় গতকাল মামলাটি করেন নাটোরের স্থায়ী বাসিন্দা আ জ ম আজিজুল ইসলাম। মামলায় কথিত গৃহকর্মী মোছা. আয়েশাকে (২০) একমাত্র আসামি করা হয়েছে। তবে এজাহারে তাঁর বাবার নাম ও ঠিকানায় ‘অজ্ঞাত’ লেখা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে আজকের পত্রিকাকে মামলার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রকিবুজ্জামান তালুকদার। গতকাল সকাল ৭টা ৫১ মিনিট থেকে ৯টা ৩৫ মিনিটের মধ্যে যেকোনো সময় এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এজাহারে বাদী আজিজুল লিখেছেন, তিনি পেশায় একজন শিক্ষক। মোহাম্মদপুরে পরিবার নিয়ে থাকেন। চার দিন আগে উল্লিখিত আসামি তাঁর বাসায় খণ্ডকালীন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। গতকাল সকাল ৭টার দিকে তিনি (আজিজুল) তাঁর কর্মস্থল উত্তরায় চলে যান। কর্মস্থলে থাকাকালে তিনি তাঁর স্ত্রীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
পরে তিনি বেলা ১১টার দিকে বাসায় আসেন। এসে দেখতে পান, তাঁর স্ত্রীর গলাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কাটা। স্ত্রী রক্তাক্ত জখম হয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন আর মেয়ের গলার নিচে ডান পাশে কাটা। মেয়ে গুরুতর অবস্থায় বাসার প্রধান ফটকে পড়ে আছে। মেয়ের এই অবস্থা দেখে তিনি দ্রুত তাকে উদ্ধার করেন। পরিচ্ছন্নতাকর্মী আশিকের মাধ্যমে মেয়েকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
মামলায় আজিজুল আরও লিখেছেন, তিনি বাসার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করেন। এতে তিনি দেখতে পান, আসামি সকাল ৭টা ৫১ মিনিটের সময় কাজ করার জন্য বাসায় আসেন। সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটের সময় আসামি তাঁর (বাদী) মেয়ের স্কুলড্রেস পরে বাসা থেকে পালিয়ে যান। যাওয়ার সময় একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থসহ অন্যান্য মূলবান সামগ্রী নিয়ে যান আসামি।
মামলায় বাদী লিখেছেন, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে তিনি নিশ্চিত হন যে, অজ্ঞাত কারণে আসামি তাঁর (বাদী) স্ত্রী ও মেয়েকে ছুরি বা অন্য কোনো ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে হত্যা করেন।
মা-মেয়ে হত্যার আসামিকে শনাক্ত করা যায়নি। মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ জানায়, গৃহকর্মীর পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি। পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় করা হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
স্ত্রী লায়লা আফরোজ (৪৮) ও মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫) হত্যার ঘটনায় গতকাল মামলাটি করেন নাটোরের স্থায়ী বাসিন্দা আ জ ম আজিজুল ইসলাম। মামলায় কথিত গৃহকর্মী মোছা. আয়েশাকে (২০) একমাত্র আসামি করা হয়েছে। তবে এজাহারে তাঁর বাবার নাম ও ঠিকানায় ‘অজ্ঞাত’ লেখা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে আজকের পত্রিকাকে মামলার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রকিবুজ্জামান তালুকদার। গতকাল সকাল ৭টা ৫১ মিনিট থেকে ৯টা ৩৫ মিনিটের মধ্যে যেকোনো সময় এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এজাহারে বাদী আজিজুল লিখেছেন, তিনি পেশায় একজন শিক্ষক। মোহাম্মদপুরে পরিবার নিয়ে থাকেন। চার দিন আগে উল্লিখিত আসামি তাঁর বাসায় খণ্ডকালীন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। গতকাল সকাল ৭টার দিকে তিনি (আজিজুল) তাঁর কর্মস্থল উত্তরায় চলে যান। কর্মস্থলে থাকাকালে তিনি তাঁর স্ত্রীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
পরে তিনি বেলা ১১টার দিকে বাসায় আসেন। এসে দেখতে পান, তাঁর স্ত্রীর গলাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কাটা। স্ত্রী রক্তাক্ত জখম হয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন আর মেয়ের গলার নিচে ডান পাশে কাটা। মেয়ে গুরুতর অবস্থায় বাসার প্রধান ফটকে পড়ে আছে। মেয়ের এই অবস্থা দেখে তিনি দ্রুত তাকে উদ্ধার করেন। পরিচ্ছন্নতাকর্মী আশিকের মাধ্যমে মেয়েকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
মামলায় আজিজুল আরও লিখেছেন, তিনি বাসার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করেন। এতে তিনি দেখতে পান, আসামি সকাল ৭টা ৫১ মিনিটের সময় কাজ করার জন্য বাসায় আসেন। সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটের সময় আসামি তাঁর (বাদী) মেয়ের স্কুলড্রেস পরে বাসা থেকে পালিয়ে যান। যাওয়ার সময় একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থসহ অন্যান্য মূলবান সামগ্রী নিয়ে যান আসামি।
মামলায় বাদী লিখেছেন, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে তিনি নিশ্চিত হন যে, অজ্ঞাত কারণে আসামি তাঁর (বাদী) স্ত্রী ও মেয়েকে ছুরি বা অন্য কোনো ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে হত্যা করেন।
মা-মেয়ে হত্যার আসামিকে শনাক্ত করা যায়নি। মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ জানায়, গৃহকর্মীর পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি। পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে।

ডিবি অফিসের ফটকে তখন এত কড়াকড়ি ছিল না। আমরা যেতাম বিনা বাধায়, কোনো রকম আগাম অনুমতি ছাড়াই। তো একদিন দুপুরে গিয়ে দেখি, সেই হাজতখানার খালি মেঝেতে ইয়া লম্বা এক লোক শুয়ে গুনগুন করে গান গাইছেন। তাঁর পরনে টি-শার্ট আর হাফপ্যান্ট। হাজতের আশপাশে কেউ নেই। উল্টো দিকে
১৮ ডিসেম্বর ২০২১
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
৬ ঘণ্টা আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২৩ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২৪ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সৌদি আরবে এক প্রবাসী ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে বাংলাদেশে তাঁর পরিবারের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে একটি চক্র। না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব ও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে (এমএফএস) ধাপে ধাপে মোট ৩৫ লাখ টাকা পাঠালে সৌদি আরবের রিয়াদে অচেতন অবস্থায় তাঁকে ফেলে যায় অপহরণকারীরা।
গত মঙ্গলবার অপহরণকারী এই চক্রের বাংলাদেশি সদস্য মো. জিয়াউর রহমানকে (৪২) মাগুরার শালিখা থানার হরিপুর বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি মো. রাসেল নামের ওই প্রবাসীকে অপহরণের পর সে মাসের ২১ তারিখে তাঁর শ্বশুর রাজধানীর খিলগাঁও থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মামলাটি সিআইডির ঢাকা মেট্রো (পূর্ব) ইউনিট তদন্ত করছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মো. রাসেল ২০ বছর ধরে রিয়াদে ব্যবসা করছেন। ১২ জানুয়ারি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা তাঁকে অপহরণ করে তাঁর বড় ভাই সাইফুল ইসলামের কাছে ইমু ও ভিওআইপিতে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। কয়েক ধাপে টাকা পাঠানোর পর তাঁকে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে যায় অপহরণকারীরা।

সৌদি আরবে এক প্রবাসী ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে বাংলাদেশে তাঁর পরিবারের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে একটি চক্র। না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব ও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে (এমএফএস) ধাপে ধাপে মোট ৩৫ লাখ টাকা পাঠালে সৌদি আরবের রিয়াদে অচেতন অবস্থায় তাঁকে ফেলে যায় অপহরণকারীরা।
গত মঙ্গলবার অপহরণকারী এই চক্রের বাংলাদেশি সদস্য মো. জিয়াউর রহমানকে (৪২) মাগুরার শালিখা থানার হরিপুর বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি মো. রাসেল নামের ওই প্রবাসীকে অপহরণের পর সে মাসের ২১ তারিখে তাঁর শ্বশুর রাজধানীর খিলগাঁও থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মামলাটি সিআইডির ঢাকা মেট্রো (পূর্ব) ইউনিট তদন্ত করছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মো. রাসেল ২০ বছর ধরে রিয়াদে ব্যবসা করছেন। ১২ জানুয়ারি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা তাঁকে অপহরণ করে তাঁর বড় ভাই সাইফুল ইসলামের কাছে ইমু ও ভিওআইপিতে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। কয়েক ধাপে টাকা পাঠানোর পর তাঁকে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে যায় অপহরণকারীরা।

ডিবি অফিসের ফটকে তখন এত কড়াকড়ি ছিল না। আমরা যেতাম বিনা বাধায়, কোনো রকম আগাম অনুমতি ছাড়াই। তো একদিন দুপুরে গিয়ে দেখি, সেই হাজতখানার খালি মেঝেতে ইয়া লম্বা এক লোক শুয়ে গুনগুন করে গান গাইছেন। তাঁর পরনে টি-শার্ট আর হাফপ্যান্ট। হাজতের আশপাশে কেউ নেই। উল্টো দিকে
১৮ ডিসেম্বর ২০২১
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
৬ ঘণ্টা আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
৪ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২৪ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

অরাজকতা প্রতিহত করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে অসদাচরণ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী। তিনি বলেছেন, পুলিশ যখন অরাজকতা ঠেকানোর চেষ্টা করছে, তখন তাদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক।
ডিএমপি কমিশনার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘আমার অফিসারদের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ করবেন না।’
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সাম্প্রতিক অরাজকতা প্রতিরোধের সময় পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ‘পুলিশ যখন অরাজকতা প্রতিহত করার চেষ্টা করছিল, তখন আমার অফিসারদের সঙ্গে যে ধরনের ব্যবহার করা হয়েছে, তা অত্যন্ত হতাশাজনক। আমার অফিসারদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করবেন না। আমরা সংঘাতে জড়াতে চাই না; আমরা সেবা দিতে চাই। আপনারা যেটি করতে চাচ্ছিলেন, সেটি করলে সমাজে, ঢাকায় এবং পুরো দেশে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো।’
কমিশনার জানান, একটি গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হয়েছে। এখন যদি একই ধরনের কার্যকলাপ দেখা যায়, তাহলে সমাজে অস্থিরতা বাড়বে। এ জন্যই পুলিশের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছিলেন। কিন্তু তাঁদের প্রতি এমন আচরণ কোনো শিক্ষিত ও সচেতন মানুষের কাছ থেকে প্রত্যাশিত নয়।
পল্লবী থানার সামনে ককটেল বিস্ফোরণে এক পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমার নিরপরাধ অফিসারকে যেভাবে ককটেল মেরে আহত করা হয়েছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এতে সদস্যদের মনোবল নষ্ট হয় এবং এর ক্ষতি সমাজকেই ভোগ করতে হয়। যদি পুলিশের মনোবল ভেঙে যায়, তবে ৫ আগস্টের পর যেভাবে ৮০ বছরের বৃদ্ধও লাঠি হাতে নিয়ে মহল্লা পাহারা দিয়েছেন, সেই পরিস্থিতি আবার তৈরি হতে পারে।’
যারা ককটেল ছোড়া বা এ ধরনের দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে পুলিশ সদস্যদের মনোবল ভাঙার চেষ্টা করছে, তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন—‘এই কাজটি করবেন না।’
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
ডিএমপি কমিশনার জানান, দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তিনির্ভর অপরাধ মোকাবিলায় আধুনিক সক্ষমতা গড়ে তুলতেই ডিবির সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন করা হয়েছে। এখানে থাকবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিযুক্ত ল্যাব, দক্ষ তদন্তকারী দল, ডিজিটাল ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ এবং ২৪ ঘণ্টার রেসপন্স টিম। ফেসবুক পেজ, ই-মেইল এবং ডিবির অনলাইন চ্যানেলের মাধ্যমে নাগরিকেরা সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারবেন। প্রযুক্তিনির্ভর, সময়োপযোগী ও প্রমাণভিত্তিক পুলিশ সেবা নিশ্চিত করাই তাদের লক্ষ্য।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, বর্তমান সময়ে অনলাইন জালিয়াতি, প্রতারণা, ডিজিটাল হয়রানি, মানহানি, অনলাইন গ্যাম্বলিংসহ নানা অপরাধ মানুষের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও আর্থিক সুরক্ষাকে হুমকির মুখে ফেলছে। তাই জনগণের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ডিএমপি তার সক্ষমতা বাড়িয়ে চলেছে।
নারী ও কিশোরদের সুরক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে সাইবার সাপোর্ট সেন্টার কাজ করবে উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারী ও কিশোরদের ওপর হয়রানির অভিযোগ দ্রুত সমাধানের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে। হয়রানির শিকার হলে দ্রুত সহায়তা নিশ্চিত করাই তাদের অন্যতম অঙ্গীকার।
সাইবার নিরাপত্তা শুধু পুলিশের দায়িত্ব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সমাজের সচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিরাপদ অনলাইন পরিবেশ গড়ে তুলতে তিনি সম্মিলিত উদ্যোগের ওপর গুরুত্ব দেন।

অরাজকতা প্রতিহত করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে অসদাচরণ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী। তিনি বলেছেন, পুলিশ যখন অরাজকতা ঠেকানোর চেষ্টা করছে, তখন তাদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক।
ডিএমপি কমিশনার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘আমার অফিসারদের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ করবেন না।’
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সাম্প্রতিক অরাজকতা প্রতিরোধের সময় পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ‘পুলিশ যখন অরাজকতা প্রতিহত করার চেষ্টা করছিল, তখন আমার অফিসারদের সঙ্গে যে ধরনের ব্যবহার করা হয়েছে, তা অত্যন্ত হতাশাজনক। আমার অফিসারদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করবেন না। আমরা সংঘাতে জড়াতে চাই না; আমরা সেবা দিতে চাই। আপনারা যেটি করতে চাচ্ছিলেন, সেটি করলে সমাজে, ঢাকায় এবং পুরো দেশে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো।’
কমিশনার জানান, একটি গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হয়েছে। এখন যদি একই ধরনের কার্যকলাপ দেখা যায়, তাহলে সমাজে অস্থিরতা বাড়বে। এ জন্যই পুলিশের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছিলেন। কিন্তু তাঁদের প্রতি এমন আচরণ কোনো শিক্ষিত ও সচেতন মানুষের কাছ থেকে প্রত্যাশিত নয়।
পল্লবী থানার সামনে ককটেল বিস্ফোরণে এক পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমার নিরপরাধ অফিসারকে যেভাবে ককটেল মেরে আহত করা হয়েছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এতে সদস্যদের মনোবল নষ্ট হয় এবং এর ক্ষতি সমাজকেই ভোগ করতে হয়। যদি পুলিশের মনোবল ভেঙে যায়, তবে ৫ আগস্টের পর যেভাবে ৮০ বছরের বৃদ্ধও লাঠি হাতে নিয়ে মহল্লা পাহারা দিয়েছেন, সেই পরিস্থিতি আবার তৈরি হতে পারে।’
যারা ককটেল ছোড়া বা এ ধরনের দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে পুলিশ সদস্যদের মনোবল ভাঙার চেষ্টা করছে, তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন—‘এই কাজটি করবেন না।’
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
ডিএমপি কমিশনার জানান, দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তিনির্ভর অপরাধ মোকাবিলায় আধুনিক সক্ষমতা গড়ে তুলতেই ডিবির সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন করা হয়েছে। এখানে থাকবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিযুক্ত ল্যাব, দক্ষ তদন্তকারী দল, ডিজিটাল ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ এবং ২৪ ঘণ্টার রেসপন্স টিম। ফেসবুক পেজ, ই-মেইল এবং ডিবির অনলাইন চ্যানেলের মাধ্যমে নাগরিকেরা সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারবেন। প্রযুক্তিনির্ভর, সময়োপযোগী ও প্রমাণভিত্তিক পুলিশ সেবা নিশ্চিত করাই তাদের লক্ষ্য।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, বর্তমান সময়ে অনলাইন জালিয়াতি, প্রতারণা, ডিজিটাল হয়রানি, মানহানি, অনলাইন গ্যাম্বলিংসহ নানা অপরাধ মানুষের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও আর্থিক সুরক্ষাকে হুমকির মুখে ফেলছে। তাই জনগণের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ডিএমপি তার সক্ষমতা বাড়িয়ে চলেছে।
নারী ও কিশোরদের সুরক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে সাইবার সাপোর্ট সেন্টার কাজ করবে উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারী ও কিশোরদের ওপর হয়রানির অভিযোগ দ্রুত সমাধানের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে। হয়রানির শিকার হলে দ্রুত সহায়তা নিশ্চিত করাই তাদের অন্যতম অঙ্গীকার।
সাইবার নিরাপত্তা শুধু পুলিশের দায়িত্ব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সমাজের সচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিরাপদ অনলাইন পরিবেশ গড়ে তুলতে তিনি সম্মিলিত উদ্যোগের ওপর গুরুত্ব দেন।

ডিবি অফিসের ফটকে তখন এত কড়াকড়ি ছিল না। আমরা যেতাম বিনা বাধায়, কোনো রকম আগাম অনুমতি ছাড়াই। তো একদিন দুপুরে গিয়ে দেখি, সেই হাজতখানার খালি মেঝেতে ইয়া লম্বা এক লোক শুয়ে গুনগুন করে গান গাইছেন। তাঁর পরনে টি-শার্ট আর হাফপ্যান্ট। হাজতের আশপাশে কেউ নেই। উল্টো দিকে
১৮ ডিসেম্বর ২০২১
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
৬ ঘণ্টা আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
৪ দিন আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২৩ দিন আগে